- Get link
- X
- Other Apps
বার কাউন্সিল বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি পর্ব ৬
প্রশ্ন: একটি পক্ষ কিভাবে আরজি দাখিলের মাধ্যমে মোকদ্দমা দায়ের করে?-বিজেএস পরীক্ষা, ২০১৩
অথবা
প্রশ্ন: দেওয়ানি মামলা কিভাবে দায়ের করতে হয়? - বিজেএস পরীক্ষা, ২০০৮, বার কাউন্সিল পরীক্ষা, ১৯ জুন ২০০৯।
উত্তর:
দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়েরের পন্থা:
প্রত্যেকটি মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে আরজি দাখিলের মাধ্যমে। দেওয়ানী কার্যবিধির ২৬ ধারায় বিধান করা হয়েছে, প্রত্যেকটি মোকদ্দমা আরজি পেশ করে বা নির্ধারিত অন্য কোন পদ্ধতিতে দায়ের করতে হবে। ৪ আদেশের ১ বিধিতে বলা হয়েছে, আদালত বা তৎকর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত কর্মকর্তার নিকট, আরজি উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যেকটি মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে এবং মোকদ্দমায় যতজন বিবাদী থাকে, ততগুলি আরজির অবিকল নকল অনুরূপ সকল বিবাদীর উপর সমন জারীর জন্য আরজির সাথে দাখিল করতে হবে। সুতরাং, নিম্নলিখিতভাবে আরজি দাখিলের মাধ্যমে মোকদ্দমা দায়ের করা যায়।
১. আদালত বা নিযুক্ত কর্মকর্তার নিকট আরজি উপস্থাপন:
আদালত বা আরজি গ্রহণের জন্য নিযুক্ত কর্মকর্তার নিকট আরজি উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যেকটি মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে।
২. আরজির অবিকল নকল সরবরাহ করা:
মোকদ্দমায় যতজন বিবাদী থাকে, ততগুলি আরজির অবিকল নকল অনুরূপ সকল বিবাদীর উপর সমন জারির জন্য দাখিল করতে হবে।
৩. কোর্ট ফি পরিশোধ করা:
আরজি দাখিলের সময় সমন জারীর জন্য প্রদেয় কোর্ট ফি পরিশোধ করতে হবে।
৪. আগাম প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দাখিল করা:
প্রত্যেক বিবাদীর জন্য সমনের একটি নকলসহ বিবাদীর পূর্ণ ও সঠিক ঠিকানাযুক্ত যথোচিত খামে আগাম প্রাপ্তি স্বীকারপত্র আরজির সাথে বাদীকে দাখিল করতে হবে।
৫. ৬ ও ৭ আদেশের বিধিসমূহ প্রতিপালন:
দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ ও ৭ আদেশে উল্লিখিত বিধিসমূহ যতদূর প্রযোজ্য ততদূর প্রতিপালন করে আরজি দাখিল করতে হবে। অর্থাৎ, ৬ ও ৭ আদেশের বিধান প্রতিপালন করে আরজি মুসাবিদা করতে হবে। যেমন, আরজিতে শুধুমাত্র ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ করতে হবে, কোন সাক্ষ্য বা আইন উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই বা আরজি বাদী কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও সত্যপাঠ যুক্ত হতে হবে বা আরজির সাথে প্রয়োজনীয় দলিল দাখিল করতে হবে বা ৭ আদেশের ১ বিধিতে উল্লিখিত বিষয়সমূহ আরজিতে উল্লেখ করতে হবে।
প্রশ্ন: আরজিতে কী কী বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করতে হয়? বিজেএস পরীক্ষা, ২০০৮, বার কাউন্সিল পরীক্ষা, ১৯ জুন ২০০৯।
উত্তর:
আরজিতে যে সকল বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে:
আরজিতে যে সকল বিবরণ উল্লেখ করতে হবে তা দেওয়ানী কার্যবিধির ৭ আদেশের ১ বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে। নিম্নলিখিত বিষয়াদি উল্লেখপূর্বক একজন বাদী আরজি দাখিলের মাধ্যমে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে।
১. আদালতের নাম:
যে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করা হবে সেই আদালতের নাম আরজির উপরে লিখতে হয়।
২. মোকদ্দমার পক্ষদ্বয়ের বিবরণ:
বাদী এবং বিবাদীর নাম, পরিচিতি এবং বাসস্থান আরজিতে উল্লেখ করতে হবে। যদি বাদী বা বিবাদী নাবালক হয় বা মানসিক বিকারগ্রস্থ হয় সেই বিষয়ে একটি বিবৃতি দিতে হবে।
৩. মোকদ্দমার কারণ:
প্রত্যেক মোকদ্দমা কোন না কোন কারণে দায়ের করা হয়। সুতরাং কি কারণে মোকদ্দমা দায়ের করা হচ্ছে তা আরজিতে উল্লেখ করতে হবে, অন্যথায়, আরজিটি খারিজ হয়ে যাবে। মোকদ্দমার কারণ বলতে সাধারণত এমন কারণকে বোঝায় যা বাদীকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করে। মোকদ্দমা দায়েরের পূর্বে মোকদ্দমার কারণ উৎপত্তি হতে হবে। কখন মোকদ্দমার কারণ উৎপত্তি হয়েছিল বাদী আরজিতে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করবে। মোকদ্দমাটি তামাদিতে বারিত কিনা তা নির্ধারণে এটা ব্যবহার করা হয়। যেমন ভাড়া না দেওয়ার জন্য কোন ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে দখল পুনরুদ্ধারের মোকদ্দমায় কোন দিন হতে ভাড়াটিয়া ভাড়া দিচ্ছে না তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
৪. আদালতের এখতিয়ার:
আদালতের আর্থিক এবং আঞ্চলিক এখতিয়ার নির্ধারণ করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল বিষয় বাদী আরজিতে উল্লেখ করবে। যেমন, স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে মোকদ্দমা দায়ের করা হলে, সম্পত্তিটির বিবরণ উল্লেখ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তির তফসিল এবং চৌহদ্দি দিতে হবে।
৫. মোকদ্দমার বিষবস্তুর মূল্যমান:
আদালতের আর্থিক এবং কোর্ট ফি নির্ধারণ করার জন্য বাদী আরজিতে অবশ্যই মোকদ্দমার বিষবস্তুর মূল্যমান উল্লেখ করবে। আরজিতে যেমনটা উল্লেখ করা হয়েছে তেমনটা দেখে মোকদ্দমার মূল্যমান নির্ধারণ করতে হবে।
৬. তামাদির বিষয়:
যেখানে মোকদ্দমাটি তামাদিতে বারিত সেখানে কি কারণে মোকদ্দমাটি তামাদিতে বারিত হবে না অর্থাৎ মোকদ্দমাটি তামাদি হতে অব্যাহতি পাবে তার কারণ আরজিতে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। তামাদি আইন ১৯০৮ এর ১২ থেকে ২০ ধারা পর্যন্ত তামাদি হতে অব্যাহতি পাওয়ার কারণসমূহ আলোচনা করা হয়েছে। যদি বাদী নির্দিষ্ট মেয়াদের পর মোকদ্দমা দায়ের করে সেই ক্ষেত্রে যে সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সে তামাদি হতে অব্যাহতি প্রার্থনা করে সেই সকল কারণসমূহ আরজিতে অবশ্যই উল্লেখ করবে।
৭. প্রতিকার:
প্রত্যেক আরজিতে বাদী অবশ্যই সুনির্দিষ্টভাবে তার প্রার্থীত প্রতিকার উল্লেখ করবে। যদি বাদী একই কারণে একাধিক প্রতিকার পাওয়ার অধিকারী হয় সেক্ষেত্রে বাদীকে তার সকল প্রতিকার আরজিতে উল্লেখ করতে হবে।
৮. পারস্পরিক দায় শোধ [Set-off]:
বাদী যে ক্ষেত্রে তার আংশিক দাবী পারস্পরিকভাবে পরিশোধের জন্য সম্মত হয়েছে বা বর্জন করেছে সেক্ষেত্রে দাবীর যে অংশ অনুরুপভাবে পরিশোধ বা বর্জন করা হয়েছে তা আরজিতে উল্লেখ করতে হবে।
৯. স্থাবর সম্পত্তির বিবরণ:
স্থাবর সম্পত্তির মামলায় আরজিতে উক্ত সম্পত্তি সনাক্ত করার উপযুক্ত বর্ণনা অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে এবং যদি চৌহদ্দি বা সেটেলমেন্ট রেকর্ড থাকে অনুরুপ চৌহদ্দি বা রেকর্ডের দাগ নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
১০. অর্থের দাবীর যথাযথ পরিমাণ:
যেক্ষেত্রে বাদী টাকা আদায় করতে চায়, সেই ক্ষেত্রে আরজিতে দাবীর যথাযথ পরিমাণ উল্লেখ করবে।কিন্তু যে ক্ষেত্রে বাদী মধ্যবর্তী মুনাফার জন্য বা বিবাদীর এবং তার মধ্যে অমীমাংসিত হিসাব বাবদ সম্ভাব্য পাওনা টাকার জন্য মোকদ্দমা করে, সেইক্ষেত্রে যে জন্য মোকদ্দমা করা হবে, তার আনুমানিক পরিমাণ উল্লেখ করবে।
প্রশ্ন: কোন কোন ক্ষেত্রে দেওয়ানী মামলার আরজি খারিজ যোগ্য? প্রাসঙ্গিক বিধান উল্লেখপূর্বক আলোচনা করুন। - বিজেএস পরীক্ষা, ২০১৭।
অথবা
প্রশ্ন: কোন কোন ক্ষেত্রে আরজি নাকচ (reject) করা যায়? সংশ্লিষ্ট বিধান উল্লেখপূর্বক আলোচনা করুন। - বিজেএস পরীক্ষা, ২০১০।
অথবা
প্রশ্ন: আরজি প্রত্যাখানের কারণসমূহ কি কি? - বিজেএস পরীক্ষা, ২০১৩।
অথবা
প্রশ্ন: কোন কোন ক্ষেত্রে মামলার আরজি খারিজ করা যায়? - বার কাউন্সিল ৩১ জুলাই ২০১৫
অথবা
প্রশ্ন: আরজি খারিজের কারণসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করুন। ঐরুপ আরজি খারিজ করা হইলে প্রতিকার কি? - বার কাউন্সিল, ২০০৯।
অথবা
প্রশ্ন: কি কি কারণে একটি মামলার আরজি খারিজ করা যায়? আরজি খারিজের আইনগত তাৎপর্য কি? আরজি খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে বাদীর প্রতিকার আছে কি? বার কাউন্সিল ৮ এপ্রিল ২০০৫, ৯ ডিসেম্বর ২০০৬।
উত্তর:
আরজি খারিজের কারণসমূহ:
দেওয়ানী কার্যবিধির ৭ আদেশের ১১ বিধিতে আরজি খারিজ বা প্রত্যাখ্যানের কারণসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে।
১. আরজিতে মোকদ্দমার কারণ উল্লেখ না করলে:
আরজিতে মোকদ্দমার কারণ উল্লেখ না করলে, দেওয়ানী কার্যবিধির ৭ আদেশের ১১ বিধি অনুসারে, আরজিটি খারিজ হবে। আরজিতে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেখানে যদি মোকদ্দমার কোন কারণ উল্লেখ না করা হয়, আদালত আরজিটি খারিজ করে দিতে বাধ্য। কোন আরজি খারিজ করা হবে কি হবে না তা নির্ধারণ করতে আদালত আরজি এবং তার সাথে দাখিলকৃত দলিলাদি বিবেচনা করবে অন্য কিছু না। আবুল হাসনাত বনাম এরশাদ আলী বেগম ৪২ ডিএলআর ২৪৪ মামলায় বলা হয়েছে, আরজি প্রত্যাখ্যানের আবেদন বিবেচনার সময় বিবাদীর দরখাস্ত নহে বরং বাদী কর্তৃক দাখিলকৃত আরজি বিবেচনা করতে হবে। আদালত কেবল বাদীর মামলা পর্যালোচনা করবে। বিবাদী কর্তৃক দাখিলকৃত লিখিত জবাব এই ক্ষেত্রে আদালতের বিবেচ্য বিষয় না।
২. মোকদ্দমার মূল্যমান (তায়দাদ) কম দেখালে:
আরজিতে দাবীকৃত প্রতিকারের চেয়ে মোকদ্দমার মূল্যমান বা তায়দাদ কম উল্লেখ করা হলে এবং আদালতের নির্দেশিত সময়ের অর্থাৎ অনধিক ২১ দিনের মধ্যে বাদী মোকদ্দমার মূল্যমান সংশোধন করতে ব্যর্থ হলে, আদালত আরজিটি খারিজ করে দিবে।
৩. কম মূল্যের স্ট্যাম্প পেপারে আরজি লিখলে:
কম মূল্যের স্ট্যাম্পযুক্ত কাগজে দাখিলকৃত আরজি প্রয়োজনীয় কার্টিজ পেপারে ২১ দিনের মধ্যে লিখে আদালতের নির্দেশক্রমে জমা দিতে ব্যর্থ হলে, আদালত আরজি প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
৪. মোকদ্দমাটি আইন দ্বারা বারিত হলে:
যখন আরজিতে উল্লেখিত বক্তব্য দেখে বোঝা যায় যে, মোকদ্দমাটি আইন দ্বারা বারিত সেই ক্ষেত্রে আদালত আরজিটি খারিজ করে দিতে পারে। স্থাবর সম্পত্তির বায়না চুক্তি বলবৎকরণের মোকদ্দমায় দায়েরের সময় চুক্তির অবশিষ্ট্য চুক্তি মূল্য জমা না দিলে আরজি প্রত্যাখ্যান করতে পারে বা যেক্ষেত্রে মোকদ্দমা দায়ের করার আগে অপর পক্ষকে নোটিশ আইনত বাধ্যতামূলক, সেক্ষেত্রে নোটিশ না দিয়ে মোকদ্দমা দায়ের করা হলে, বা মোকদ্দমাটি তামাদিতে বারিত হলে আরজিটি খারিজ হয়ে যাবে।
৫. আরজির অনুলিপি জমা না দিলে:
আদেশ ৪ বিধি ১ এবং আদেশ ৭ এর ৯(১ক) বিধিতে বলা হয়েছে, মামলায় যত সংখ্যক বিবাদী থাকে সমনের উদ্দেশ্যে তত সংখ্যক আরজির অনুলিপি বা কপি আদালতে জমা দিতে হবে। আরজির সাথে প্রত্যেক বিবাদীর জন্য সমন ও আরজির কপি না দিলে, আদালত প্রয়োজনীয় সমন ও আরজির কপি সরবরাহ করার জন্য অনধিক ২১ দিন সময় দিবে। আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাদী প্রয়োজনীয় সমন ও আরজির কপি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে, আদালত আরজি প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
৬. আরজি খারিজের অন্যান্য কারণসমূহ:
কিছু ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে আদালত ১৫১ ধারার অধীন তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করে আরজি খারিজ করে দিতে পারে। যেমন বাদী কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত নয় এমন কোন ব্যক্তি আরজিতে স্বাক্ষর করলে এবং এই ভুল সংশোধন করার জন্য আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাদী উক্ত স্বাক্ষর সংশোধন না করলে আদালত আরজি খারিজ করে দিতে পারে।
আরজি প্রত্যাখ্যানের আইনগত ফলাফল:
আরজি প্রত্যাখ্যানের আইনত ফলাফল হলো এটা দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ২ (২) অনুসারে ডিক্রি মর্মে গণ্য হবে এবং ডিক্রি হিসাবে আরজি প্রত্যাখ্যান বা নাকচের বিরুদ্ধে বাদী নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নিতে পারে।
১. ৭ আদেশের ১৩ বিধির অধীন পুনরায় একই কারণে নতুন আরজি দাখিল করতে পারে; বা
২. যেহেতু দেওয়ানী কার্যবিধির ২ (২) ধারা অনুযায়ী আরজি প্রত্যাখ্যান বা নাকচের আদেশ একটি ডিক্রি, তাই এর বিরুদ্ধে আপীল করা যায়।
আরজি খারিজের দরখাস্ত মঞ্জুর করে আদেশ দিলে প্রতিকার:
আরজি খারিজের বা প্রত্যাখ্যানের দরখাস্ত মঞ্জুর করে আদেশ দিলে, সেটা আরজি খারিজ বা প্রত্যাখ্যান মর্মে গণ্য হবে এবং এমন প্রত্যাখ্যান সিদ্ধান্ত ডিক্রি হিসাবে গণ্য হবে। এই ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে-
১. ৭ আদেশের ১৩ বিধির অধীন পুনরায় একই কারণে নতুন আরজি দাখিল করতে পারে; বা
২. যেহেতু দেওয়ানী কার্যবিধির ২ (২) ধারা অনুযায়ী আরজি প্রত্যাখ্যান বা নাকচের আদেশ একটি ডিক্রি, তাই এর বিরুদ্ধে আপীল করা যায়।
প্রশ্ন: "আরজি প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে আদালত শুধু আরজি ও এর সাথে দাখিলকৃত দলিলসমূহ বিবেচনা গ্রহণ করবেন, বিবাদী তার কোনো দরখাস্তে বা লিখিত বর্ণনায় কী যুক্তি উপস্থাপন করেছে সেটি নয়।” উক্তিটি নজির উল্লেখপূর্বক ব্যাখ্যা করুন। - বিজেএস পরীক্ষা, ২০১৯।
উত্তর:
আরজি খারিজ করতে শুধুমাত্র আরজি বিবেচনা করা :
আদালত যখন আরজি প্রত্যাখ্যানের আবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, উক্ত ক্ষেত্রে আরজিতে বর্ণিত বিবৃতির বাইরে যাওয়া আইনে অনুমোদিত না। এটা ভালোভাবে নিষ্পত্তিকৃত যে শুধুমাত্র আরজির বর্ণনা সাধারণভাবে অধ্যায়নের ভিত্তিতে ৭ আদেশের ১১ বিধির অধীন আরজি প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। ৭ আদেশের ১১ বিধির অধীন আরজি প্রত্যাখ্যানের আবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে আদালত আরজিতে বর্ণিত বিবৃতি বিবেচনায় নিতে পারে এবং আরজিটি প্রত্যাখ্যান করা হবে নাকি হবেনা, সেটা নির্ধারণ করতে আরজির বাইরে কিছু বিবেচনায় নিতে পারেনা। আইন দ্বারা বারিত হওয়ার কারণে আরজিটি প্রত্যাখ্যান করা হবে কিনা সেটা আরজিতে উল্লিখিত বিবৃতি থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং আরজিতে উল্লিখিত বিবৃতি ব্যতীত অন্যকোন বিষয় বা লিখিত জবাব থেকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবেনা।
আব্দুল কাদের বনাম পূবালী ব্যাংক, ৫৩ ডিএলআর (এডি) ৬২ মামলা-যেহেতু পূবালী ব্যাংক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী কিন্তু জাতীয়করণ ব্যাংক না সেহেতু ৮-৬-৮৬ তারিখে বাদীকে বাধ্যতামূলক অবসরের জন্য প্রদত্ত নোটিশ অবৈধ এবং তার উপর বাধ্যকর নয় মর্মে ঘোষণা চেয়ে এবং একই সাথে নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করে, বাদী মোকদ্দমা দায়ের করে। বিবাদী- ব্যাংক দেওয়ানী কার্যবিধির ৭ আদেশের ১১ বিধি ও ১৫১ ধারা অনুসারে আরজি প্রত্যাখ্যানের আবেদন করে যা নিম্ন আদালত কর্তৃক না-মঞ্জুর হয়। বিবাদী-ব্যাংক হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন দায়ের করলে, আরজিতে উল্লিখিত বিবৃতি বিবেচনা করে হাইকোর্ট বিভাগে দেখে যে, আরজিতে মোকদ্দমা দায়ের করার কোন কারণ উল্লেখ নেই এবং এই কারণে নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্ত বাতিল করে আরজি প্রত্যাখ্যান করে। আরজি প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে বাদী আপীল বিভাগে আপীল করলে, আপীল বিভাগ সিদ্ধান্ত প্রদান করে যে, আরজিতে বর্ণিত বিবৃতি মোকদ্দমার কারণ প্রকাশ করে কিনা সেটা সিদ্ধান্ত নিতে শুধুমাত্র আরজিতে বর্ণিত বিবৃতি বিবেচনা করতে হবে এবং আদালত যখন এমন আবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তখন আরজিতে বর্ণিত বিবৃতির বাইরে যাওয়া আইনে অনুমোদিত না। যেহেতু হাইকোর্ট বিভাগ আরজিতে বর্ণিত বিবৃতি বিবেচনা করে দেখেছে যে, উক্ত বিবৃতি মোকদ্দমার কোন কারণ প্রকাশ করেনা, সেহেতু হাইকোর্ট কর্তৃক আরজি প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত সঠিক”। ৭ আদেশের ১১ বিধির অধীন দাখিলকৃত আবেদন নিষ্পত্তি করতে শুধুমাত্র আরজি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে, অন্য কোন কাগজপত্র নয়, এমনকি ৭ আদেশের ১১ বিধির অধীন দাখিলকৃত আবেদনপত্রও বিবেচনায় নেওয়া যাবেনা।
প্রশ্ন: কোন কোন ক্ষেত্রে একটি আরজি ফেরত ও বাতিল করা হয়? -বিজিএস পরীক্ষা ২০০৭
অথবা
প্রশ্ন: ১৯০৮ সনের দেওয়ানী কার্যবিধির সংশ্লিষ্ট বিধানাবলীর আলোকে ফেরত সম্পর্কে আলোচনা করুন। বিজেএস পরীক্ষা ১৬ জুন ২০০৯
উত্তর:
যে সকল ক্ষেত্রে আরজি ফেরত দেওয়া যায়:
দেওয়ানী কার্যবিধির ৭ আদেশের ১০ বিধি অনুসারে আদালত আরজি ফেরত দিতে পারে। ৭ আদেশের ১০ বিধিতে বলা হয়েছে, মোকদ্দমার যে কোন পর্যায়ে, যে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করা উচিত ছিল, সেই আদালতে দাখিল করার জন্য আরজি ফেরত দেওয়া হবে। সুতরাং, যদি এমন কোন আদালতে আরজি দাখিল করা হয় যে আদালতের উক্ত মোকদ্দমার বিচার করার আর্থিক বা আঞ্চলিক এখতিয়ার নেই, সেই ক্ষেত্রে এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে আরজিটি দাখিলের জন্য আদালত আরজি ফেরত দিতে পারে।