Skip to main content

Video Article Preposition Phrase Clause

বার কাউন্সিল বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি পর্ব ৫ Part 5

বার কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি - পর্ব ৫

প্রশ্ন: প্লীডিং (pleading) বলতে কি বোঝেন - বিজেএস পরীক্ষা, ২০১০,২০১৯, বার কাউন্সিল, ২০০৬।

প্লিডিংস অর্থ:

দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১ বিধিতে প্লিডিংসের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। প্লিডিংস অর্থ হলো আরজি বা লিখিত জবাব। বাদীর প্লিডিংস হলো আরজি এবং বিবাদীর প্লিডিংস হলো লিখিত জবাব। বাদীর আরজি বা বিবাদীর লিখিত জবাব একত্রে প্লিডিংস নামে পরিচিত। আরজি হলো বাদীর দাবি সম্বলিত কোন লিখিত বক্তব্য যা দাখিলের মাধ্যমে দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করা হয়। এখানে বাদী তার দাবী এবং দাবীর সমর্থনে ঘটনা উল্লেখ করে। লিখিত জবাব হলো বিবাদী কর্তৃক বাদীর দাবীর উত্তর সম্বলিত কোন লিখিত বক্তব্য । এখানে বিবাদী সাধারণত বাদীর দাবী অস্বীকার করে লিখিত বক্তব্য দেয়। প্লিডিংসের মূল উদ্দেশ্য হলো মোকদ্দমার পক্ষদ্বয়ের মধ্যে প্রকৃত বিরোধ নির্ধারণ করা, বিরোধের পরিধি সংক্ষিপ্ত করা এবং কোন কোন বিষয়ে দুই পক্ষের মতবিরোধ রয়েছে তা নির্ধারণ করা এবং ন্যায় বিচার ব্যাহত হওয়াকে প্রতিরোধ করা। আইন-শব্দকোষ অভিধানে প্লিডিংস বলতে নিম্নলিখিত সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে - দেওয়ানী মোকদ্দমায় একপক্ষ কর্তৃক অপর পক্ষের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিলকৃত লিখিত নালিশ বা জবাব, যা উক্ত পক্ষ বিচার-চলাকালে অপর পক্ষের বিরুদ্ধে প্রমাণ করতে ইচ্ছুক।

প্রশ্ন: প্লিডিং (Pleading ) এ সাক্ষ্য নয়, প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রকাশ করবে। ব্যাখ্যা কর - বিজেএস ২০১৩

অথবা

প্লীডিং-এ কি কি বিষয় থাকে? বিজেএস ২০১০

অথবা

আরজি ও লিখিত বিবৃতির অত্যাবশকীয় উপাদান কি কি? - বার কাউন্সিল ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০০৬।

অথবা

"The pleadings should contain facts and not law or evidence" একটি আদর্শ প্লিডিংস এর বৈশিষ্ট্য উল্লেখপূর্বক মন্তব্যটি The Code of Civil Procedure 1908 এর Order vi এর আলোকে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করুন। - বার কাউন্সিল ২০২০।

উত্তর:

প্লীডিংসের বৈশিষ্ট্য বা যে সকল বিষয় উল্লেখ করতে হয়:

প্লীডিংসে যে সকল বিষয় উল্লেখ করতে হবে সেটা দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ২ বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে। দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ২ বিধিতে বলা হয়েছে, প্লিডিংসে শুধুমাত্র তথ্য উল্লেখ করতে হবে, আইন বা সাক্ষ্য উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। ৬ আদেশের ২ বিধিতে আরও বলা হয়েছে, মোকদ্দমার পক্ষগণ তাদের দাবী বা আত্মপক্ষ সমর্থনে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর নির্ভর করে, সেইগুলির সংক্ষিপ্ত একটি বিবরণ প্রত্যেক প্লিডিংসে উল্লেখ করতে হবে, কিন্তু যে সকল সাক্ষ্য দ্বারা এইগুলি প্রমাণ করা হয়, তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। সুতরাং,দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ২ বিধি অনুসারে প্লিডিংসের সাধারণ নীতি বা বৈশিষ্ট্য বা উপাদান হলো

১. প্লিডিংসে শুধুমাত্র তথ্যাদি উল্লেখ থাকবে, আইন নয়;

২.উল্লিখিত তথ্যাদি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি হতে হবে;

৩. প্লিডিংসে সাক্ষ্য উল্লেখ থাকবে না; এবং

৪. উল্লিখিত তথ্যাদি সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করতে হবে ।

প্লিডিংসে যে সকল বিষয় উল্লেখ করতে হবে, সেগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

১. আইন নয়, তথ্যাদি উল্লেখ করতে হবে:

প্লীডিং-এর প্রথম নীতি হলো প্লীডিং-এ শুধুমাত্র তথ্যাদি উল্লেখ করতে হবে এবং আইন উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। যে আইনের অধীন প্রতিকার প্রার্থনা করা হচ্ছে, সেই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। প্লীডিংস-এ আইনগত প্রশ্ন আলোচনা করার প্রয়োজন নেই বা বিধিবদ্ধ আইনের ভাষা ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। পক্ষগণ যে সকল ঘটনা বা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের প্রতিকার প্রার্থনা করে, শুধুমাত্র সেই সকল তথ্যাদি বা ঘটনাদি বর্ণনা করবে এবং মোকদ্দমার তথ্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগ করার দায়িত্ব আদালতের।

২. গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি:

দেওয়ানি কার্যবিধির ৬ আদেশের ২ বিধি অনুসারে, প্লিডিংসে শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি উল্লেখ থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি বলতে এমন ঘটনা বোঝায় যেগুলো বাদীর মোকদ্দমা দায়েরের কারণ বা বিবাদীর আত্মপক্ষ সমর্থনের কারণ গঠন করে। বাদী তার মোকদ্দমার কারণ এবং বিবাদী তার আত্মপক্ষ সমর্থনের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য মোকদ্দমার বিচারের সময় যে সকল প্রাথমিক বা প্রধান বিষয় অবশ্যই প্রমাণ করবে, সেই সকল বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে গণ্য হবে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি হলো এমন ঘটনা যেগুলো কোন পক্ষ প্রমাণ করবে অন্যথায় সে মোকদ্দমায় পরাজিত হবে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি উল্লেখ করতে ব্যর্থ হলে মোকদ্দমা খারিজ হবে। যেমন, স্বত্বের ঘোষণার মামলায় বাদী কোন ধরণের দলিলের ভিত্তিতে এমন স্বত্ব দাবী করছে, সেই দলিলের প্রকৃতি - যেমন সেটা কি বিক্রয় দলিল নাকি দানপত্র বা উইল সেটা উল্লেখ করবে । বা যেক্ষেত্রে স্বত্বের অধিকারী ব্যতীত অন্যকোন ব্যক্তি দখলের জন্য মোকদ্দমা দায়ের করে, সেক্ষেত্রে তার দখল সমর্থনে প্রয়োজনীয় বিবরণ ও নথির বিবরণ প্লিডিংসে উল্লেখ করবে।

৩. সাক্ষ্য উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই:

প্লীডিং-এ শুধুমাত্র তথ্যাদি উল্লেখ করতে হবে, কোন সাক্ষ্য উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। যে সকল সাক্ষ্য দ্বারা প্লীডিং-এ উল্লিখিত তথ্যাদি বা ঘটনাদি প্রমাণ করা হবে, সেই সকল সাক্ষ্য প্লীডিং-এ উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। তথ্যাদি বা ঘটনা ২ প্রকার-

১. যে সকল তথ্যাদি (গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি) প্রমাণ করা প্রয়োজন (facta probanda) |

২. যে সকল তথ্যাদি (সাক্ষ্য বা বিবরণ) দ্বারা উক্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি প্রমাণ করা প্রয়োজন (facta probantia)।

প্লিডিংসে শুধুমাত্র যে সকল তথ্যাদি বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি প্রমাণ করা প্রয়োজন বা (facta probanda) উল্লেখ থাকবে কিন্তু যে সকল সাক্ষ্য বা বিবরণ দ্বারা উক্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি প্রমাণ করা হবে সেই সকল সাক্ষ্য বা facta probantia উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। যেমন, ক একটি বীমা কোম্পানীর সাথে বীমা করেছিল। উক্ত বীমার একটি শর্ত ছিলো যে, বীমাকারী আত্মহত্যা করলে, উক্ত বীমা পলিসি বাতিল হবে। ক পিস্তল দিয়ে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছিল এবং অতপর, বীমা কোম্পনীীর বিরুদ্ধে বীমা দাবী জন্য মোকদ্দমা করা হয়েছিল। ক আত্মহত্যা করেছে এটা হলো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি (facta probanda) এবং বীমা কোম্পানী শুধুমাত্র সেটা প্লিডিংসে (লিখিত জবাবে) উল্লেখ করবে। অন্যান্য ঘটনা যেমন, কিছু সপ্তাহ যাবৎ ক হতাশ ছিলো, বা মৃত্যুর আগের দিন সে পিস্তল ক্রয় করেছিল এবং উক্ত পিস্তল দিয়ে নিজেকে গুলি করেছিল বা ক-কে তার স্ত্রী হত্যা করতে চেয়েছিল মর্মে চিঠি লিখে গেছে ইত্যাদি হলো facta probantia এবং এইগুলো উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই ।

৪. সংক্ষিপ্ত আকারে তথ্যাদি উপস্থাপন:

প্লিডিংসের পক্ষগণ তাদের দাবী বা আত্মপক্ষ সমর্থনের উপর যে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর নির্ভর করে, সেই গুলির সংক্ষিপ্ত আকারে একটি বিবরণ প্রত্যেক প্লিডিংসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

প্রশ্ন: প্লিডিং এর সমর্থনে দলিলাদি দাখিলের পদ্ধতি  আলোচনা করুন। বিজেএস ২০১০

অথবা

আরজির সাথে কী কী দাখিল করতে হয়। এর আইনগত ফলাফল কী? বিজেএস ২০১৯।

উত্তর:

প্লিডিং এর সমর্থনে দলিলাদি দাখিলের পদ্ধতি:

প্লিডিং এর সমর্থনে দলিলাদি দাখিলের পদ্ধতি দেওয়ানী কার্যবিধির ৭ আদেশের ১৪ ও ১৫ বিধিতে এবং ৮ আদেশের ১ বিধির ২ থেকে ৬ উপ-বিধিতে বর্ণনা করা হয়েছে।

১. আরজির সাথে দলিল দাখিল:

দেওয়ানী কার্যবিধির ৭ আদেশের ১৪ বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী যেসব দলিলের ভিত্তিতে মোকদ্দমা দায়ের করে, তা আরজির সাথে দাখিল করতে হবে। বাদী তার দাবীর সমর্থনপূর্বক প্রমাণ হিসেবে অন্য কোন দলিলের উপর নির্ভর করলে এবং তা তার হস্তগত বা আওতাধীনে না থাকলে, সে ক্ষেত্রে উক্ত দলিলসমূহের একটি তালিকা প্রস্তুত করবে এবং উক্ত দলিল কার দখলে বা হস্তগত তা উল্লেখ করে আরজির সাথে যুক্ত করবে - আদেশ-৭ বিধি ১৫।

২. লিখিত জবাব দাখিলের সাথে দলিলাদি দাখিল:

বিবাদী তারা আত্মপক্ষ সমর্থনের যে সকল দলিলের উপর নির্ভর করে সেই সকল দলিল কিভাবে উপস্থাপন করবে সেটা দেওয়ানী কার্যবিধির ৮ আদেশের ১ বিধির ২ থেকে ৬ উপবিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

i. বিবাদী তার আত্মপক্ষ সমর্থনে তার দখলে থাকা যে সকল দলিলের উপর নির্ভর করে, লিখিত জবাব দাখিলের সময় বিবাদী উক্ত দলিলসমূহ দাখিল করবে।

ii. অন্যদিকে, বিবাদী তার আত্মপক্ষ সমর্থনে বা পারস্পরিক দাবীর সমর্থনে অন্য কোন দলিলের উপর নির্ভর করলে এবং সেগুলো তার হস্তগত বা আওতাধীনে না থাকলে, সে ক্ষেত্রে উক্ত দলিলসমূহের একটি তালিকা প্রস্তুত করবে এবং উক্ত দলিল কার দখলে বা হস্তগত তা উল্লেখ করে লিখিত জবাবের সাথে যুক্ত করবে। - বিধি ১৫।

iii. লিখিত জবাব দাখিল করার সময় উপস্থাপন করা প্রয়োজনীয় ছিলো এমন দলিল দাখিল না

করা হলে, উক্ত দলিল পরবর্তীতে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে দাখিল করা যেতে পারে।

প্রশ্ন: প্লীডিংস সংশোধন বলতে আপনি কি বুঝেন? প্লীডিংস সংশোধনের ক্ষেত্রে নিয়ামক শর্তাবলী কি কি? -৩১ জুলাই ২০১৫, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১০

অথবা

আরজি ও জবাব সংশোধন বলতে আপনি কি বোঝেন? আরজি ও জবাব সংশোধনের ক্ষেত্রে নিয়ামক বিবেচনাগুলো কি? বার কাউন্সিল, ২রা জুন ২০০৭

অথবা

দেওয়ানী কার্যবিধিতে 'আরজি সংশোধনী' সংক্রান্ত বিধানসমূহ আলোচনা করুন। - বার কাউন্সিল ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০০৬

অথবা

কখন আরজি এবং লিখিত জবাব সংশোধন করার আবেদন করা যায়? কি কি কারণে উক্ত আবেদন মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর করা যায়? সংশ্লিষ্ট বিধানসমূহের আলোকে আলোচনা করুন। - বিজেএস ২০০৭

উত্তর:

প্লীডিংস বা আরজি ও জবাব সংশোধনের অর্থ:

প্লীডিংস সংশোধন বলতে আরজি সংশোধন বা লিখিত জবাব সংশোধনকে বোঝায়। প্লীডিংস বা আরজি ও লিখিত জবাব সংশোধন বলতে আরজিতে বা লিখিত জবাবে যে সকল বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তা পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন বা বিয়োজন কে বোঝায়। বাদী পক্ষ তার আরজি সংশোধনের জন্য এবং বিবাদী পক্ষ তার লিখিত জবাব সংশোধনের জন্য পিটিশন বা দরখাস্ত দায়ের করতে পারে। দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১৭ বিধি অনুসারে, মোকদ্দমার যে কোন পর্যায়ে প্লিডিংস সংশোধন করার আবেদন করা যায়। অর্থাৎ মোকদ্দমার যে কোন পর্যায়ে বাদী তার আরজি বা বিবাদী তার লিখিত জবাব সংশোধনের আবেদন করতে পারে। বিচার কার্য শুরুর পর আরজি বা লিখিত জবাব সংশোধনের জন্য দাখিলকৃত কোন আবেদন আদালত অনুমোদন করবে না যদিনা আদালত অভিমত পোষণ করে যে, 'যথাযথ নিষ্ঠার’ সত্ত্বেও পক্ষগণ বিচারকার্য শুরুর পূর্বে সংশোধনের আবেদন করতে পারেনি। সুতরাং, বিচার কার্য শুরুর পরও আরজি বা লিখিত জবাব সংশোধনের আবেদন করা যায়। তবে এই ক্ষেত্রে এটা দেখাতে হবে যে, 'যথাযথ নিষ্ঠার’ পরও বিচারকার্য শুরুর পূর্বে সংশোধনের আবেদন করতে পারেনি। আরজি সংশোধনের আবেদন বিচার শুরুর আগে, বিচার চলাকালে, বিচারের পর বা আপীলে বা রিভিশনে বা আপীল বিভাগে এমনকি কোন কার্যধারা বাস্তবায়নের সময় করা যায়।

আরজি বা লিখিত জবাব সংশোধনের আবেদন মঞ্জুরের কারণ:

১. বিরোধের প্রকৃত প্রশ্ন নির্ধারণ করতে:

দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১৭ বিধি অনুসারে আদালত মোকদ্দমার উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধের প্রকৃত প্রশ্ন নির্ধারণ করার উদ্দেশ্যে আরজি বা লিখিত জবাব সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করতে পারে। আরজি সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করার পূর্বে আদালত অবশ্যই নিশ্চিত হবে যে, মোকদ্দমার পক্ষগণের মধ্যেকার বিরোধীয় প্রকৃত প্রশ্ন নির্ধারণ করার উদ্দেশ্যে এমন সংশোধনী অপরিহার্য।

২. মোকদ্দমার বহুত্ব পরিহার করতে:

মোকদ্দমার পক্ষগণের মধ্যেকার সকল বিরোধ প্লিডিংসে অন্তর্ভুক্ত করতে ও মোকদ্দমার বহুত্ব পরিহার করতে প্লিডিংস সংশোধন করা প্রয়োজনীয় হলে, আদালত প্লিডিংস সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করতে পারে। প্লিডিংস সংশোধনের মৌলিক নীতি হলো, মোকদ্দমার পক্ষগণের মধ্যেকার সকল বিরোধ যতদূর সম্ভব প্লিডিংসে অন্তর্ভুক্ত করা এবং মোকদ্দমার বহুত্ব পরিহার করা।

৩. মোকদ্দমার মৌলিক চরিত্র অপরিবর্তিত থাকলে:

প্লিডিংস সংশোধনী অনুমোদিত হলেও যেক্ষেত্রে মোকদ্দমার মৌলিক প্রকৃতি একই থাকে, সেক্ষেত্রে সংশোধনীর আবেদন মঞ্জুর করা যেতে পারে। বিদ্যমান প্রতিকারের সাথে নতুন প্রতিকার সংযুক্ত করা হয়েছে শুধুমাত্র এই কারণে মোকদ্দমার প্রকৃতি এবং চরিত্র পরিবর্তন হয়েছে এমনটা বলা যায়না। যেমন, বিরোধীয় ভূমিতে শুধুমাত্র স্বত্বের ঘোষণার মোকদ্দমায় পরবর্তীতে আরজি সংশোধনের মাধ্যমে দখল উদ্ধারের প্রতিকার যুক্ত করা বা বাটোয়ারার প্রার্থনা যুক্ত করা মোকদ্দমার প্রকৃতি এবং চরিত্র পরিবর্তন হয়েছে মর্মে গণ্য করা যায় না। ম্যানেজার বনাম ও.আর চৌধুরী ৩১ ডিএলআর (এডি) ১৩৩ মামলায় বাদী প্রথমে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা দায়ের করেছিল। মোকদ্দমা চলমান থাকাকালীন বিবাদী বিরোধীয় ভূমিতে কতিপয় অবকাঠামো স্থাপন করেছিল। অতপর, বাদী দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১৭ বিধির অধীন স্বত্বের ঘোষণা এবং দখল উদ্ধারের প্রতিকার যুক্ত করতে আরজি সংশোধনের আবেদন করেছিল। প্রস্তাবিত সংশোধন অনুসারে, আবেদনকারী মূল্যানুপাতিক কোর্ট ফি প্রদান করেছিল এবং এমন দাবী তামাদিতে বারিত ছিলনা। বিচারিকআদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে। আপীল বিভাগ সিদ্ধান্ত বহাল রেখে মত প্রকাশ করে যে, প্রস্তাবিত সংশোধনটি মোকদ্দমার ঘটনা সত্যিকার অর্থে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে এবং সঠিক প্রতিকার প্রার্থনা করা হচ্ছে।

৪. আইনজীবীর ব্যর্থতা:

প্লিডিংস মুসাবিদা করতে আইনজীবীর ব্যর্থতা প্লিডিংস সংশোধনের কারণ হতে পারে। মোঃ আকরাম আলী এবং অন্যান্য বনাম মোঃ ইয়াসিন আলী এবং অন্যান্য ২১ বিএলটি (এডি) ১৭৫ মামলায় বলা হয়েছে, মফস্বল আদালতের প্লিডিংস উদারভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে এবং বিভ্রান্তমূলক প্লিডিংসের জন্য পক্ষগণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেনা বা শাস্তি পেতে পারেনা। মফস্বল আদালতগুলো যেখানে আজকাল মানসম্মত প্লিডিংস মুসাবিদা খুবই বিরল, সেটা সম্পর্কে আমরা নিজেদেরকে অচেতন করে রাখতে পারিনা । আইনজীবী বাধ্যতার কারণে সাধারণ মামলাকারীকে শাস্তি দেওয়া যায়না।

৫. অন্যান্য কারণ:

যেখানে বাদী ভুলভাবে আরজিতে বর্ণনা করেছে; বা যেখানে মামলার কারণ সম্পর্কিত বক্তব্যে ভুল বর্ণনা করা হয়েছে; বা যেখানে সরল বিশ্বাসে মামলার আরজিতে প্রয়োজনীয় বিবৃতি দেওয়া হয়নি; বা যেখানে মোকদ্দমাটি ভুল আইনে দায়ের করা হয়েছে, যেক্ষেত্রে এমন সংশোধনী অন্য পক্ষের জন্য অবিচার সৃষ্টি করেনা, সেক্ষেত্রে প্লিডিংস সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করা যেতে পারে।

যখন প্লীডিংস (আরজি বা লিখিত জবাব) সংশোধনের আবেদন অগ্রাহ্য (না-মঞ্জুর) করা হয়:

যদিও দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১৭ বিধিতে আদালতকে প্লিডিংস সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে আদালত প্লিডিংস সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করবে না তা বিচারিক বিবেচনার বিষয়।

১. মোকদ্দমার মৌলিক চরিত্র পরিবর্তন করলে:

প্লিডিংস সংশোধনের মাধ্যমে মোকদ্দমার প্রকৃতি এবং চরিত্র পরিবর্তন করা যায়না। প্লিডিংস সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করা যায় না, যেক্ষেত্রে এমন সংশোধনী মোকদ্দমার মৌলিক চরিত্র পরিবর্তন করে। সংশোধনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হবে যদি সংশোধনের ফলে নতুন, ভিন্ন এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোন বিরোধ সূচনা হয় বা মামলার মৌলিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হয়।

২. সংশোধনীটি তামাদিতে বারিত হলেঃ

যেক্ষেত্রে প্রস্তাবিত সংশোধনটি তামাদিতে বারিত, সেক্ষেত্রে এমন সংশোধনী মঞ্জুর করা যায়না। যদি সংশোধিত দাবীর ভিত্তিতে নতুন মোকদ্দমা সংশোধনের আবেদন করার তারিখে তামাদিতে বারিত হয়, সেক্ষেত্রে আদালত উক্ত সংশোধনী না-মঞ্জুর করবে।

৩. অন্যপক্ষের অনুকূলে কোন অধিকার সৃষ্টি করলে:

সংশোধনীটি এমন সময়ে করার আবেদন করা হয়েছে, যেক্ষেত্রে অন্যপক্ষের অনুকূলে কোন অধিকার সৃষ্টি হয়েছে, সেই ক্ষেত্রে উক্ত সংশোধনী না-মঞ্জুর হবে যদি উক্ত সংশোধনী অনুমোদিত হলে অন্যপক্ষকে তার পক্ষে তৈরী হওয়া কোন আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করলে।


বার কাউন্সিল পরীক্ষা এবং বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিজেএস লিখিত পরীক্ষার এই পর্বের প্রশ্নপত্র এবং উত্তর ডাউনলোড করতে নিচের বাটনে ক্লিক করুন

ডাউনলোড

Popular posts from this blog

সাক্ষ্য আইন (সংশোধন), ২০২২ Evidence Act (Amendment) 2022

সাক্ষ্য আইন (সংশোধন), ২০২২ ডিজিটাল রেকর্ড বা ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড কি? ডিজিটাল রেকর্ড বা ইলেক্ট্রনিক রেকর্ডের প্রমাণ: ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদ কি? প্রত্যয়নকারী কর্তৃপক্ষ কি? ধারা ৪৫: বিশেষজ্ঞদের মতামত ধারা ৪৫ক: শারীরিক বা ফরেনসিক প্রমাণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত ধারা ৪৭ক: ডিজিটাল স্বাক্ষর সম্পর্কে মতামত যেখানে প্রাসঙ্গিক। ধারা-৬৫ক: ডিজিটাল রেকর্ড সম্পর্কিত প্রমাণের জন্য বিশেষ বিধান ধারা-৬৫খ: ডিজিটাল রেকর্ডের গ্রহণযোগ্যতা ধারা-৬৭ক: ডিজিটাল স্বাক্ষরের প্রমাণ ধারা-৭৩ক: শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য হিসাবে অনুমান ধারা-৭৩খ:- অন্যদের সাথে শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য তুলনা, স্বীকৃত বা প্রমাণিত ধারা-৮১ক। ডিজিটাল আকারে গেজেট হিসাবে অনুমান ধারা-৮৫ক: ডিজিটাল আকারে চুক্তির অনুমান। ধারা-৮৫খ: ডিজিটাল রেকর্ড এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরের অনুমান ধারা ৮৭গ: ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদ সম্পর্কে অনুমান ধারা-৮৮ক: ডিজিটাল কমিউনিকেশন সম্পর্কে অনুমান ধারা-৮৯ক: শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য হিসাবে অনুমান। ধারা-৯০ক: পাঁচ বছরের পুরনো ডিজিটাল রেকর্ডের অনুমান। ধারা-১৪৬: জেরায় আইনসঙ্গত প্রশ্ন। সাক্ষ্য আইন (সংশোধন), ২০

Write a paragraph on Pahela Baishakh পহেলা বৈশাখ

Write a paragraph on Pahela Baishakh (পহেলা বৈশাখ) Pahela Baishakh Pahela Baishakh is the part of our culture. It is the first day in Bangla calendar. This day is celebrated throughout the country. The main programme of this day is held in Ramna Botamul. Different socio-cultural organizations celebrate this day with due solemnity. People of all sorts of ages and lives attend this function. Colourful processions are brought out. Watery rice and hilsha fish are served during this function. Women and children put on traditional dresses. The whole country wears a festive look. Different cultural programmes are arranged where singers sing traditional bangla songs. Discussion meetings are held. Radio and television put on special programmes. Newspapers and dailies publish supplementary. Fairs are held here and there on this occasion. Shopkeepers and traders arrange ‘halk hata’ and sweet-meats are distributed. In villages, people go to others’ houses and exchange greetings. Thus Pahela Baisha

Most Important Preposition List of Appropriate Prepositions A to Z

The Most Important Prepositions List of Appropriate Prepositions A to Z Appropriate Prepositions starting with the letter "A" The Most Important Appropriate Prepositions starting with A Abide by (মেনে চলা): I shall abide by the rules of this country. Abound in / Abound with ( প্রচুর) : Tigers abound in the African forests. This jungle abounds with (Or, in) tigers. Absent from (a place) (অনুপস্থিত থাকা): He was absent from the parents meeting called by the principal. Absorbed in (মগ্ন): He is absorbed in writing his biography. Abstain from (বিরত থাকা): I shall abstain from doing any wrong with others. Abide with (সঙ্গে থাকা): He abides with his parents in the USA. Abide in (বাস করা): I abide in Narayangonj. Abound with (পূর্ণ থাকা): The Padma abounds with hilsa, a very tasty fish. Abhorance of (ঘৃণা): A sinner has no abhorance of sin. Abhorent to (ঘৃণা): Smoking is abhorent to me. Access to (প্রবেশাধিকার): I have free access to the manager of this company. Accompanied by a