- Get link
- X
- Other Apps
একত্রে বিচার এর দরখাস্ত মুসাবিদা
আদালতে দায়েরের জন্য কজ টাইটেলে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখপূর্বক একত্রে শুনানীর জন্য একটি দরখাস্ত মুসাবিদা করুন। এক্ষেত্রে শুনানীর জন্য যুক্তি এবং কারণসমূহ দরখাস্তে বর্ণনা করুন।
বাদী জামালউদ্দিন নালিশী সম্পত্তিতে তাহার স্বত্ব ঘোষণার জন্য যশোর ২য় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ৬৩/২০০৩ দায়ের করে। বিবাদী নূরউদ্দিন স্বত্ব ঘোষণা ও বাটোয়ারার জন্য অন্য একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ১০০/২০০৩ দায়ের করে। উভয় মোকদ্দমা একই পক্ষগণের মধ্যে এবং একই নালিশী সম্পত্তি সংক্রান্ত। উভয় মোকদ্দমা একত্রে বিচার করা যায় কি না আপনার মক্কেল জামালউদ্দিন তাহা আপনার নিকট জানতে চায়। আপনার মক্কেল স্পষ্টত: সময় ও অর্থ বাঁচাতে চায়। এখন আপনি তাকে কি উপদেশ দিবেন এবং আদালতে দায়েরের জন্য কজ টাইটেলে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখপূর্বক একত্রে শুনানীর জন্য একটি দরখাস্ত মুসাবিদা করুন। এক্ষেত্রে শুনানীর জন্য যুক্তি এবং কারণসমূহ দরখাস্তে বর্ণনা করুন। এই প্রশ্নটি বার কাউন্সিল পরীক্ষা, ২৭ অক্টোবর ২০০০ এবং ১০ অক্টোবর ২০০৩ সালে এসেছিল।
নমুনা উত্তর
উপদেশ:
দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ এবং ১৫১ ধারা একত্রে অধ্যায়ন পূর্বক মক্কেল জামালউদ্দিনকে এই উপদেশ প্রদান করবো যে, উক্ত দুইটি মোকদ্দমার বিচার একত্রে করা যেতে পারে।
কারণ:
দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ ধারার রেস-সাবজুডিস নীতি অনুযায়ী একই পক্ষদ্বয়ের মধ্যে একই বিষয় নিয়ে একই কারণে দুইটি মোকদ্দমা একই সময়ে একই এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে বিচারাধীন থাকতে পারে না। রেস-সাবজুডিস নীতি প্রয়োগ করে এই দুইটি মোকদ্দমার মধ্যে পরবর্তীতে দায়েরকৃত মোকদ্দমার বিচার স্থগিত করা হয়। আলোচ্য প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে বাদী জামালউদ্দিন নালিশী সম্পত্তিতে তার স্বত্ব ঘোষণার জন্য যশোর ২য় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ৬৩/২০০৩ দায়ের করে। বিবাদী নূরউদ্দিন স্বত্ব ঘোষণা ও বাটোয়ারার জন্য অন্য একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ১০০/২০০৩ দায়ের করে। উভয় মোকদ্দমা একই পক্ষগণের মধ্যে এবং একই নালিশী সম্পত্তি সংক্রান্ত। সুতরাং দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ ধারার রেস-সাবজুডিস নীতি প্রয়োগ করে পরবর্তীতে দায়ের করা ১০০/২০০৩ নং মোকদ্দমাটির বিচার পূর্বে দাখিল করা ৬৩/২০০৩ নং মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচার স্থগিত থাকবে। প্রশ্নে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হলো মক্কেল জামালউদ্দিন জানতে চায় যে, উভয় মোকদ্দমা একত্রে বিচার করা যায় কিনা। এই ক্ষেত্রে কিছু সুস্পষ্ট বিচারিক নজীর রয়েছে। গুপ্তা বনাম ইষ্ট এশিয়াটিক কোং, এই মামলায় বলা হয়েছে ১০ ধারার বিধান প্রয়োগ করে আদালত যেমন পরবর্তীতে দায়েরকৃত মোকদ্দমাটি স্থগিত করতে পারে, ঠিক তেমনি ১৫১ ধারার সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করে আদালত একই পক্ষসমূহের মধ্যে বিভিন্ন মোকদ্দমা একত্রিকরণের আদেশ দিতে পারে যে ক্ষেত্রে বিচার্য বিষয় প্রকৃতিগতভাবে একই। ইণ্ডিয়ান ব্যাংক বনাম মহারাষ্ট্র স্ট্রেট কর্পোরেশন, এই মামলায় বলা হয়েছে যেহেতু ১০ ধারার উদ্দেশ্য হলো বিরোধপূর্ণ সিদ্ধান্ত পরিহার করা, তাই উপযুক্ত মোকদ্দমার ক্ষেত্রে উভয় মোকদ্দমা একত্রিকরণ করার আদেশ আদালত দিতে পারে। সুতরাং দেওয়ানী কার্যবিধির ১৫১ ধারায় উক্ত দুইটি মোকদ্দমা একত্রে বিচার করা জন্য আবেদন/দরখাস্তকরতে হবে। নিচে এই মর্মে একত্রে বিচার করা জন্য নমুনা দরখাস্ত মুসাবিদা করা হলো।
মোকাম: দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালত, যশোর
বিবিধ মোকদ্দমা নং -----/২০০৩ (দেওয়ানী মোকদ্দমা নং- ৬৩/২০০৩ হতে উদ্ভূত)
জামালউদ্দিন
পিতা: মো: আলাউদ্দিন
গ্রাম: কোমলপুর, পোষ্ট: ষোলখাদা
থানা: মনিরামপুর
জেলা:যশোর
--------বাদী (দরখাস্তকারী)
বনাম
নূরউদ্দিন
পিতা: আনিসুর রহমান
গ্রাম: কোমলপুর, পোষ্ট: ষোলখাদা
থানা: মনিরামপুর
জেলা: যশোর
-----বিবাদী (প্রতিপক্ষ)
বিষয়: দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ এবং ১৫১ ধারায় একত্রে বিবেচনাপূর্বক অত্র স্বত্ব ঘোষণা মোকদ্দমা নং-৬৩/২০০৩ এর সাথে মোকদ্দমা নং ১০০/২০০৩ একত্রে বিচারের প্রার্থনা।
দরখাস্তকারী পক্ষের বিনীত প্রার্থনা এই যে,
১. একই তফসিলভুক্ত সম্পত্তি নিয়ে বাদী এবং বিবাদীর মধ্যে দুইটি মোকদ্দমা ৬৩/২০০৩ এবং দেওয়ানী মোকদ্দমা ১০০/২০০৩ বিচারাধীন রয়েছে।
২. বাদী বা দরখাস্তকারী জামালউদ্দিন নালিশী সম্পত্তিতে তার স্বত্ব ঘোষণার জন্য ৬৩/২০০৩ মোকদ্দমা দায়ের করে এবং বিবাদী নূরউদ্দিন উক্ত একই নালিশী সম্পত্তি নিয়ে স্বত্ব ঘোষণা ও বাটোয়ারার জন্য অন্য একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ১০০/২০০৩ দায়ের করে।
৩. ৬৩/২০০৩ মোকদ্দমাটি সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য আছে। অপর দিকে দেওয়ানী মোকদ্দমা ১০০/২০০৩ সমন ফেরতের জন্য ধার্য আছে।
৪. যেহেতু দুইটি মোকদ্দমা একই পক্ষগেণর মধ্যে এবং একই নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কিত এবং যেহেতু উভয় নালিশী সম্পত্তি বিজ্ঞ আদালতের এখতিয়ারাধীন এবং যেহেতু একই নালিশী সম্পত্তি নিয়ে একই পক্ষগণ সমরূপ প্রতিকার দাবী করে মোকদ্দমা দায়ের করেছে এবং যেহেতু উক্ত মোকদ্দমার পক্ষগণের মধ্যেকার বিচার্য বিষয় একই প্রকৃতির, সেহেতু দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ ধারার রেস-সাবজুডিস নীতির কারণে পরবর্তী মোকদ্দমার বিচার স্থগিত থাকার কথা। কিন্তু মোকদ্দমার বহুত্ব কমিয়ে সময় এবং ব্যয় বাঁচাতে উভয় মোকদ্দমার বিচার একত্রে করা আবশ্যক। এটা করা হলে একই বিষয়ে আদালতের ভিন্ন সিদ্ধান্ত প্রকাশের সম্ভাবনা থাকবে না।
৫. যেহেতু আদালতের উদ্দেশ্য হলো ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা এবং মোকদ্দমার পক্ষদ্বয়কে প্রার্থীত প্রতিকার প্রদান করা এবং বিরোধের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা, তাই আদালত উভয় মোকদ্দমা একত্রে বিচারের আদেশ প্রদান করে বিরোধটির সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করা অতিব জরুরী। অন্যথায় দরখাস্তকারী অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
অতএব, আদালতের নিকট বাদী পক্ষের প্রার্থনা এই যে, উপরে উল্লেখিত বিষয় বিবেচনা করে আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে, মোকদ্দমার বহুত্ব নিবারণে, একই বিষয়ে আদালতের ভিন্ন সিদ্ধান্ত পরিহার করতে এবং স্বল্প সময়ে এবং ব্যয়ে মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি করতে অত্র দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-৬৩/২০০৩ এবং দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-১০০/২০০৩ একত্রে বিচার করার আদেশ দিতে একান্ত মর্জি হয়।
এবং
আদালতের এমন আদেশের জন্য বাদী পক্ষ চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।
অদ্য তারিখ:
হলফনামা
আমি জালালউদ্দিন, পিতা: মো: আলাউদ্দিন, গ্রাম: কোমলপুর, থানা: মনিরামপুর, জেলা: যশোর, পেশা:
কৃষি, বয়স: ৫০, ধর্ম: ইসলাম, জাতীয়তা: জন্মসূত্রে বাংলাদেশী, জাতীয় পরিচয়পত্র নং------.এই মর্মে শপথপূর্বক ঘোষণা করছি যে,
১.আমি অত্র মামলার বাদী এবং তদবিরকার।
২. আমি অত্র মোকদ্দমার বিষয়বস্তু জানি এবং আমি দরখাস্তটি দায়ের করছি এবং অত্র হলফনামা সম্পাদন করতে সক্ষম।
৩. অত্র দরখাস্তের বিবরণসমূহ আমার জানা এবং আমার জ্ঞান মতে সত্য এবং সঠিক।
অত্র হলফনামা ও দরখাস্তের বিবরণ আমার জ্ঞান এবং বিশ্বাসমতে সঠিক এবং সত্য জেনে আমি অত্র হলফনামায় ০৫/০২/২০০৩ ইং তারিখে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় আদালতের হলফনামা পরিচালনাকারী কর্মকর্তার সামনে উপস্থিত হয়ে নিজ নাম স্বাক্ষর করলাম।
হলফকারীর স্বাক্ষর:
তাং-
হলফকারী আমার পরিচিত এবং তিনি আমার সামনে অত্র হলফনামায় তার নিজ নাম স্বাক্ষর করেছে। আমি তাকে সনাক্ত করলাম।
এ্যাডভোকেট
অদ্য তাং ০৫/০২/২০০৩, হলফকারী আমার সামনে অত্র হলফনামায় তার নিজ নাম দস্তখত করেছে।
হলফনামা পরিচালনাকারী/
হলফনামা কমিশনারের
দস্তখত এবং সীল।
হলফনামা কমিশনারের
দস্তখত এবং সীল।