- Get link
- X
- Other Apps
মোকদ্দমা খারিজ আদেশ রদ করার দরখাস্ত/ মোকদ্দমা পুনর্বহাল করা দরখাস্ত মুসাবিদা:
প্রশ্ন: দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ১/২০০৩ চূড়ান্ত শুনানীর জন্য ২০/১/০৩ তারিখ ধার্য ছিল। মামলা শুনানীকালে বাদী অনুপস্থিত ছিল কিন্তু বিবাদী হাজির হয়। আদালত তদবিরের অভাবে মামলা খারিজ করে। মামলা পুনর্বহালের জন্য একটি দরখাস্ত মুসাবিদা করুন। এই প্রশ্নটি বার কাউন্সিল পরীক্ষা, ১০ অক্টোবর ২০০৩ সালে এসেছিল।
এ সম্পর্কে আইনের বিধান কি বলে একটু জেনে নেয়া যাক। আলোচ্য প্রশ্নে বলা হয়েছে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ১/২০০৩ চূড়ান্ত শুনানীর জন্য ২০/১/০৩ তারিখ ধার্য ছিল। মামলা শুনানীকালে বাদী অনুপস্থিত ছিল কিন্তু বিবাদী হাজির হয়। বাদী অনুপস্থিত থাকার কারণে তার পক্ষে কেউ তদবির করেনি। সুতরাং তদবীরের অভাবে আদালত মোকদ্দমাটি খারিজ করে দেয়। এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান হলো দেওয়ানী কার্যবিধির ৯ আদেশের ৮ বিধিতে বলা হয়েছে মোকদ্দমার শুনানীর দিন বাদী হাজির না হলে কিন্তু বিবাদী হাজির হলে আদালত মোকদ্দমাটি খারিজ করে দিতে পারে।
মোকদ্দমা খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে বাদীর প্রতিকার কি?
৯ আদেশের ৮ বিধি অনুযায়ী বাদী অনুপস্থিত থাকার কারণে আদালত মোকদ্দমা খারিজ করে দিলে, বাদী নতুন করে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারেনা কিন্তু খারিজ আদেশ রদ করে মোকদ্দমাটি পুনরায় চালু করতে পারে বা পুনর্বহাল করতে পারে। এই ক্ষেত্রে বাদীকে উক্ত মোকদ্দমা খারিজ আদেশ বাতিলের আবেদন করতে হবে। এই ক্ষেত্রে মোকদ্দমা পুনর্বহাল করা অর্থ হলো মোকদ্দমা খারিজ আদেশ বাতিল করে মোকদ্দমাটি টিকিয়ে রাখা। মোকদ্দমা খারিজ আদেশ বাতিলের জন্য বাদী দুই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
১. বাদী খারিজ আদেশ বাতিলের জন্য ৯ আদেশের ৯ বিধি অনুযায়ী পিটিশন (আবেদন) রুজু করে মোকদ্দমাটি পুনর্বহাল করতে পারবে।
২. বাদী খারিজ আদেশ সরাসরি বাতিলের জন্য ৯ আদেশের ৯ক বিধি অনুযায়ী পিটিশন বা আবেদন রুজু করে মোকদ্দমাটি পুনর্বহাল করতে পারবে। পহেলা মে ২০০৬ সালে দেওয়ানী কার্যবিধি (সংশোধন) এর মাধ্যমে ৯ক বিধিটি যুক্ত করা হয় এবং মোকদ্দমা খারিজ আদেশ সরাসরি বাতিলের আবেদন করার বিধান যুক্ত করা হয়। ৯ক বিধি অনুযায়ী মোকদ্দমা খারিজ আদেশ সরাসরি বাতিলের আবেদন করার সুবিধা হলো অতি দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তি করা যায় এবং এই ক্ষেত্রে আদালতে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করার কোন প্রয়োজন হয় না। তবে এই ক্ষেত্রে খারিজ আদেশ প্রদানের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে হলফনামা বা Affidavit সহকারে মামলা খারিজ আদেশ সরাসরি রদ করার আবেদন দায়ের করতে হয়। চূড়ান্ত শুনানীর দিন বাদী হাজির না হওয়ার পর্যাপ্ত কারণ আবেদনে দেখাতে হবে। এই ক্ষেত্রে বাদী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া, তার পক্ষের আইনজীবীর অসুস্থতা, নিকট আত্মীয়ের অসুস্থতা কে হাজির না হওয়ার জন্য উপযুক্ত কারণ হিসেবে আদালত গ্রহণ করতে পারে। সুতরাং আলোচ্য প্রশ্ন অনুযায়ী মোকদ্দমাটি পুনর্বহাল করতে ৯ আদেশের ৯ক বিধি অনুযায়ী মোকদ্দমার খারিজ আদেশ সরাসরি বাতিলের আবেদন করা যুক্তিযুক্ত।
নিম্নে খারিজ আদেশ বাতিলপূর্বক মোকদ্দমাটি পুনর্বহালের একটি দরখাস্ত (পিটিশন) মুসাবিদা করা হলো।
মোকাম: প্রথম সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, যশোর
সূত্র: দেওয়ানী মোকদ্দমা নং: ১/২০০৩
আব্দুর রহমান
পিতা: মো: জাহান আলী
চালুয়াহাটী, মনিরামপুর, যশোর
.....বাদী (দরখাস্তকারী)
বনাম
কেরামত আলী
পিতা: ইসহাক সরদার
চালুয়াহাটী, মনিরামপুর, যশোর
.....বিবাদী (প্রতিপক্ষ)
বিষয়: দেওয়ানী কার্যবিধির ৯ আদেশের ৯ক বিধি অনুযায়ী সরাসরি আরজি খারিজের আদেশ রদ করে মোকদ্দমা পুনর্বহালের জন্য বাদী পক্ষে দরখাস্ত।
বাদী পক্ষে আবেদন এই যে,
১. বাদী বিবাদীর বিরুদ্ধে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় ১/২০০৩ মোকদ্দমাটি অত্র বিজ্ঞ আদালতে দায়ের করে।
২. বাদী অত্যন্ত সতর্কতার সাথে মোকদ্দমাটি পরিচালনা করে আসছে এবং পূর্বে মোকদ্দমার জন্য নির্ধারিত সকল দিনে উপস্থিত থেকে এসেছে।
৩. গত ২০/১/০৩ ইং তারিখে মোকদ্দমার চূড়ান্ত শুনানীর জন্য বিজ্ঞ আদালত দিন নির্ধারণ করে।
৪. উক্ত নির্ধারিত তারিখে বাদী পক্ষের পিতা, মো: জাহান আলী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাকে যশোরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালে ( বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত) ভর্তি করা হয়। ফলে বাদী পক্ষ আদালতে হাজির হয়ে মোকদ্দমার জন্য প্রয়োজনীয় তদবির করতে পারেনি।
৫. শুনানীর দিন আদালত বাদী পক্ষকে উপস্থিত না পেয়ে মোকদ্দমাটি খারিজ করে দেয়।
৬. বাদী পক্ষ এবং বাদী পক্ষের আইনজীবী অত্যন্ত সচেতন এবং দক্ষতার সাথে এই মোকদ্দমাটি পরিচালনা করে আসলেও অপ্রত্যাশীত ঘটনার কারণে ইচ্ছা এবং প্রস্তুতি থাকার পরও বাদী পক্ষ আদালতে হাজির হতে পারেনি।
৭. মোকদ্দমাটি খারিজ আদেশ বাদীর জন্য অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হবে এবং তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
৮. একমাত্র উক্ত খারিজ আদেশ সরাসরি রদপূর্বক আদালতের ন্যায়বিচার বাদীকে এই অপূরণীয় ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।
৯. তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে উক্ত খারিজ আদেশ সরাসরি বাতিল করা অতীব জরুরী।
১০. অন্যান্য আইনগত বিষয় শুনানীর সময় উপস্থাপন করা হবে।
অতএব বিজ্ঞ আদালতের নিকট বিনীত প্রার্থনা এই যে, উপরে উল্লেখিত ঘটনার বাস্তবতা বিবেচনা করে ন্যায়বিচারের স্বার্থে গত ২০/০১/২০০৩ ইং তারিখে খারিজ আদেশটি সরাসরি বাতিলের আদেশ প্রদান করে মোকদ্দমাটি পুনর্বহালের আদেশ দিতে শুনানীর জন্য দিন ধার্য করতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।
এবং
আদালতের এমন আদেশের জন্য বাদী পক্ষ চির কৃতজ্ঞ থাকবে।
অদ্য তারিখ
হলফনামা
আমি মো: আব্দুর রহমান, পিতা: মো: জাহান আলী, গ্রাম: চালুয়াহাটী, থানা: মনিরামপুর, জেলা: যশোর, পেশা: কৃষি, বয়স: ৫০, ধর্ম: ইসলাম, জাতীয়তা: জন্মসূত্রে বাংলাদেশী, জাতীয় পরিচয়পত্র .......এই মর্মে শপথপূর্বক ঘোষণা করছি যে,
১. আমি অত্র মামলার বাদী এবং তদবিরকার।
২. আমি অত্র মোকদ্দমার বিষয়বস্তু জানি এবং আমি দরখাস্তটি দায়ের করছি এবং অত্র হলফনামা সম্পাদন করতে সক্ষম।
৩. অত্র দরখাস্তের বিবরণসমূহ আমার জানা এবং আমার জ্ঞান মতে সত্য এবং সঠিক।
অত্র হলফনামা ও দরখাস্তের বিবরণ আমার জ্ঞান এবং বিশ্বাসমতে সঠিক এবং সত্য জেনে আমি অত্র হলফনামায় ০৫/০২/২০০৩ ইং তারিখে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় আদালতের হলফনামা পরিচালনাকারী কর্মকর্তার সামনে উপস্থিত হয়ে নিজ নাম স্বাক্ষর করলাম।
হলফকারীর স্বাক্ষর:
তাং-
হলফকারী আমার পরিচিত এবং তিনি আমার সামনে অত্র হলফনামায় তার নিজ নাম স্বাক্ষর করেছে। আমি তাকে সনাক্ত করলাম।
এ্যাডভোকেট
অদ্য তাং ০৫/০২/২০০৩, হলফকারী
আমার সামনে অত্র হলফনামায় তার
নিজ নাম দস্তখত করেছে।
আমার সামনে অত্র হলফনামায় তার
নিজ নাম দস্তখত করেছে।
হলফনামা পরিচালনাকারী,
হলফনামা কমিশনারের
দস্তখত এবং সীল
হলফনামা কমিশনারের
দস্তখত এবং সীল