- Get link
- X
- Other Apps
দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় আরজি মুসাবিদা
প্রশ্ন: আছমা একজন দরিদ্র মহিলা। সে তার ৪ শতাংশ জমিতে দখলে ছিল কিন্তু উক্ত জমিতে তাহার কোন স্বত্ব নাই। তাহার প্রতিবেশী, রফিক, বিত্তবান ও প্রভাবশালী। সে উক্ত জমিটি প্রকৃত মালিকের নিকট হইতে ক্রয় করার অজুহাতে ২৫ শে জুন ২০০৪ আছমাকে বেদখল করে। আছমা এ ব্যাপারে আপনার উপদেশ চায়। সে কোন আইনের বিধান বলে কি প্রতিকার পাইতে পারে তাহা উল্লেখপূর্বক একটি আরজি মুসাবিদা করুন।
এই প্রশ্নটি বার কাউন্সিল পরীক্ষা, ২৭ আগষ্ট ২০০৪ সালে এসেছিল।
আছমা যে আইনের অধীন যে প্রতিকার পেতে পারে:
আছমা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধারের প্রতিকার পেতে পারে। সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধারের জন্য আছমা নিম্নলিখিত কারণে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় মামলা করতে পারে।
১. আছমা উক্ত ৪ শতাংশ জমির দখলে ছিল এবং
২. ২৫ শে জুন ২০০৪ তারিখে প্রতিবেশী ও প্রভাবশালী রফিক আইনগত পন্থা ও সম্মতি ছাড়া আছমাকে দখলচ্যুত করেছে; এবং
৩. উক্ত জমিতে আছমার শুধুমাত্র দখল আছে কিন্তু কোন স্বত্ব নেই।
নিম্নে ৯ ধারা মতে দখল পুনরুদ্ধারের মোকদ্দমার একটি আরজি মুসাবিদা করা হলো:
বিজ্ঞ ১ম সহকারী জজ আদালত, যশোর
দেঃ মোঃ নং ....../২০০৪
আছমা বেগম
স্বামী: মো: আনোয়ার হোসন
৩২/ক লোন অফিস পাড়া,
যশোর-৭৪১০
.......বাদিনী
বনাম
রফিক,
পিতাঃ আমীর আলী
ঠিকানাঃ ২৫/ লোন অফিসপাড়া,
কোতয়ালী থানা,
যশোর-৭৪১০
.... বিবাদী
বিষয়: সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধারের আবেদন।
মোকদ্দমার তায়দাদ ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা
বাদিনী পক্ষের প্রার্থনা এই যে,
১. বাদিনী বাংলাদেশের একজন স্থায়ী নাগরিক এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি। তিনি পেশাই একজন শিক্ষিকা। অন্যদিকে, বিবাদী রফিক বিত্তবান এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি।
২. বাদিনী যশোরের কোতয়ালী থানার লোন অফিসপাড়ার মৌজার ৩২ নং খতিয়ানের ৪৫২ নং দাগের ৪ শতাংশ জমি বিগত ৭ (সাত) বছর ধরে কোন রকম বাধা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছে।
৩. অতপর বাদিনী প্রকৃত মালিকের নিকট হতে উক্ত সম্পত্তি ভাড়া নিয়ে ভোগ দখল করে আসছে এবং এই জন্য বাদিনী প্রকৃত মালিককে ভাড়া পরিশোধ করে আসছে। উক্ত সম্পত্তির প্রকৃত মালিক বর্তমানে আমেরিকাতে অবস্থান করছে।
৪. অতপর এই মোকদ্দমার বিবাদী মো: রফিক যে এলাকায় প্রভাবশালী এবং বিত্তবান দীর্ঘদীন ধরে বিরোধীয় তফসিলভুক্ত জমিটি ক্রয় করেছে মর্মে একটি অজুহাত দেখিয়ে আসছে যদিও এমন দাবীর স্বপক্ষে কোন সত্য এবং মূল দলিল সে দেখাতে পারেনি এবং এমন অসমর্থিত ক্রয়ের অজুহাতে সে বিবাদী আছমাকে দখলচ্যুত করার হুমকি দিয়ে আসছে।
৫. অতপর বিগত ২৫ শে জুন ২০০৪ ইং তারিখ সকাল ১০ টার সময় বাদিনীর প্রতিবেশী বিত্তবান ও প্রভাবশালী বিবাদী, রফিক ও তার ভাড়া করা সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়ে জোর পূর্বক বাদিনীকে বেআইনীভাবে উক্ত সম্পত্তি থেকে বেদখল করে।
৬. অতপর উক্ত বিরোধীয় সম্পত্তিতে বিবাদীর কোন মালিকানা বা দখল স্বত্ব নেই বরং সে একটি জাল দলিল দেখিয়ে বাদিনীকে উক্ত সম্পত্তি হতে বেদখল করেছে।
৭. অতপর বাদিনী বিবাদী কর্তৃক আইন বহির্ভূত দখলচ্যুত হওয়ার কারণে উক্ত সম্পত্তি পুনরায় দখল অর্জন করতে আইনত অধিকার রাখে।
৮. মোকদ্দমার কারণ: যেহেতু বিবাদী বাদিনীকে গত ২৫ শে জুন ২০০৪ তারিখে উক্ত সম্পত্তি হতে বেদখল করেছে, এবং যেহেতু আইনগত পন্থা এবং সম্মতি ব্যতীত দখলচ্যুত করা হয়েছে, সেহেতু উক্ত দখলচ্যুত করা হলো মোকদ্দমার দায়েরের মূল কারণ।
৯. মোকদ্দমার তামাদিঃ যেহেতু বিবাদী বাদিনীকে গত ২৫ শে জুন ২০০৪ তারিখে উক্ত সম্পত্তি হতে বেদখল করেছে এবং যেহেতু বাদিনী বিবাদী কর্তৃক দখলচ্যুত হওয়ার তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে অত্র বিজ্ঞ আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেছে, তাই মোকদ্দমাটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়ের হয়েছে।
১০. আদালতের এখতিয়ার: যেহেতু বিরোধীয় সম্পত্তির যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে তা নির্ধারণ করে যে উক্ত মোকদ্দমাটি বিচার করার আঞ্চলিক এখতিয়ার আদালতের আছে এবং যেহেতু মোকদ্দমার বিষয়বস্তুর মূল্যমান ২০০০০০ (দুই লক্ষ) টাকা, তাই মোকদ্দমা বিচার করার আর্থিক এখতিয়ারও আদালতের আছে।
১১. মোকদ্দমার মূল্যমান: যেহেতু বর্তমান মোকদ্দমাটি সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় একটি দখল পুনরুদ্ধারের মোকদ্দমা এবং যেহেতু মোকদ্দমার বিষয়বস্তুর মূল্যমান ২০০০০০ (দুই লক্ষ) টাকা, তাই মোকদ্দমার বিষয়বস্তুর মূল্যমানের উপর মূল্যানুপাতিক কোর্ট ফির অর্ধেক কোর্ট ফি পরিশোধসহ আরজি দাখিল করা হয়েছে এবং এই মামলা শুনানী এবং বিচার করতে অত্র আদালতের এখতিয়ার আছে।
১২. বাদিনী উক্ত সম্পত্তিতে দখলের অধিকারী এবং যদি বাদিনীর পক্ষে দখল পুনরুদ্ধারের ডিক্রী প্রদান না করা হয়, তাহলে বাদিনীর অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
অতএব, বিজ্ঞ আদালতে বিনীত প্রার্থনা এই যে, উপরোক্ত অবস্থা ও কারণাদি বিবেচনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাদিনীকে উক্ত সম্পত্তিতে তার দখল অর্পণ করতে এবং বাদিনীর পক্ষে ও বিবাদীর বিপক্ষে আদালত প্রয়োজনীয় খরচ পরিশোধ করতে আদেশ প্রদানে একান্ত মর্জি হয়।
এবং
আইন, ন্যায়নীতি ও ন্যায়বিচারে বাদিনী আর যে সকল প্রতিকার পাওয়ার অধিকারী বলে বিবেচিত, সেগুলো বাদিনী বরাবর প্রদানে হুজুরের মর্জি হয়।
এবং
আদালতের এমন আদেশে বাদিনী পক্ষ চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।
তফসিল
জেলা: যশোর, থানা: কোতয়ালী, মৌজা: লোন অফিসপাড়া, আর এস খতিয়ান: ৩২, দাগ নং: ৪৫২, সম্পত্তির পরিমাণ: ৪ শতাংশ।
চৌহদ্দি
উত্তরে: সরকারী রাস্তা;
দক্ষিণে: বসতবাড়ী (৪২৫ দাগ)
পূর্বে: মনোজ মল্লিকের বাড়ী ( ৪৩০ দাগ)
পশ্চিমে: দোকান
সত্যপাঠ
উপরোক্ত বিবরণ আমার জ্ঞান ও বিশ্বাসমতে সত্য ও সঠিক জেনে নিযুক্ত এ্যাডভোকেট সাহেবের চেম্বারে বসে অত্র ২৯-০৬-২০০৪ তারিখে সকাল ১১.০০ টায় নিজ নাম স্বাক্ষর করলাম।
সত্যপাঠকারীর স্বাক্ষর:
তারিখ