- Get link
- X
- Other Apps
কে সাক্ষ্য দিতে পারে?
পাগল বা মানসিক রোগীর কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য?
একজন বোবা ব্যক্তি কি সাক্ষী হতে পারে?
স্বামী বা স্ত্রী কি একে অপরের সাক্ষী হতে পারে?
একজন আসামী কি সাক্ষী হতে পারে?
কোন কোন ব্যক্তি সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য কিন্তু সাক্ষ্য দিতে বাধ্য নয়?
কোন কোন ক্ষেত্রে জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যায়?
স্বামী এবং স্ত্রী কোন ধরণের যোগাযোগ প্রকাশ করতে বাধ্য না?
রাষ্ট্রীয় বিষয়ে কি সাক্ষ্য দেয়া যাবে?
সরকারী বার্তা কি প্রকাশ করা যাবে?
সাক্ষ্য আইনের ১২৩ এবং ১২৪ ধারার মধ্যে পার্থক্য কি?
পেশাগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষাধিকার কি?
দুষ্কর্মের সহযোগী কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য?
কোন ঘটনা প্রমাণের জন্য কতজন সাক্ষী প্রয়োজন?
পাগল বা মানসিক রোগীর কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য?
একজন বোবা ব্যক্তি কি সাক্ষী হতে পারে?
স্বামী বা স্ত্রী কি একে অপরের সাক্ষী হতে পারে?
একজন আসামী কি সাক্ষী হতে পারে?
কোন কোন ব্যক্তি সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য কিন্তু সাক্ষ্য দিতে বাধ্য নয়?
কোন কোন ক্ষেত্রে জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যায়?
স্বামী এবং স্ত্রী কোন ধরণের যোগাযোগ প্রকাশ করতে বাধ্য না?
রাষ্ট্রীয় বিষয়ে কি সাক্ষ্য দেয়া যাবে?
সরকারী বার্তা কি প্রকাশ করা যাবে?
সাক্ষ্য আইনের ১২৩ এবং ১২৪ ধারার মধ্যে পার্থক্য কি?
পেশাগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষাধিকার কি?
দুষ্কর্মের সহযোগী কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য?
কোন ঘটনা প্রমাণের জন্য কতজন সাক্ষী প্রয়োজন?
সাক্ষীসমূহ [Of Witnesses ]
সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ১১৮ থেকে ১৩৪ ধারায় সাক্ষী সম্পর্কিত বিধান করা হয়েছে।
কে সাক্ষ্য দিতে পারে?
সাক্ষ্য আইনের ধারা ১১৮ অনুযায়ী সকল ব্যক্তি সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য যদি আদালত মনে করে যে, উক্ত ব্যক্তির নিকট জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন সে বুঝতে এবং সেই প্রশ্নের যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে সে সক্ষম। যদি সে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন বুঝতে এবং উত্তর দিতে অক্ষম হয়, তাহলে আদালত তাকে যোগ্য সাক্ষী বলে বিবেচনা করবেনা। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য কিনা তা তার বোধ শক্তির উপর নির্ভর করে। ১১৮ ধারায় নিম্নলিখিত কারণে আদালত কোন ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দেওয়ার অযোগ্য বিবেচনা করতে পারে যদি তার নিকট জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন বুঝতে এবং সেই প্রশ্নের যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে অক্ষম হয়।
১. অল্প বয়স্ক
২. অতিবৃদ্ধ বয়স্ক
৩. দৈহিক বা মানসিক ব্যাধিগ্রস্থ
৪. অনুরূপ অন্যকোন কারণ যেমন অসুস্থতা বা মদপ্য বা মাতাল।
কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য কিনা তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে দেখতে হবে তার নিকট জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন সে বুঝতে বা সেই প্রশ্নের যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে সে সক্ষম কিনা। যদি সে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন বুঝতে এবং যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে সক্ষম হয়, তাহলে সে যোগ্য সাক্ষী বলে গণ্য হবে। এই ক্ষেত্রে বয়স বা দৈহিক অবস্থা ইত্যাদি কোনো বাধা না।
পাগল বা মানসিক রোগী কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য?
পাগল বা মানসিক রোগী সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য হতে পারে যদি না তার মানসিক অবস্থা তাকে তার নিকট জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন বুঝতে বা তার যুক্তি সংগত উত্তর দিতে বারিত করে। অর্থাৎ মানসিক রোগী যদি এমন কোনো মানসিক অবস্থায় থাকে যখন সে তার নিকট জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন বুঝতে বা তার যুক্তি সংগত উত্তর দিতে সক্ষম, সেই ক্ষেত্রে উক্ত মানসিক রোগী যোগ্য সাক্ষী হবে।
একজন বোবা ব্যক্তি কি সাক্ষী হতে পারে?
সাক্ষ্য আইনের ১১৯ ধারায় একজন বোবা যে কথা বলতে অক্ষম সে সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য হতে পারে। সে লিখিত বা ইশারায় সাক্ষ্য দিতে পারে। বোবা সাক্ষী লিখে বা ইশারায় যে সাক্ষ্য দিয়ে থাকে তা মৌখিক সাক্ষ্য বলে বিবেচিত হবে।
স্বামী বা স্ত্রী কি একে অপরের সাক্ষী হতে পারে?
সাক্ষ্য আইনের ১২০ ধারা অনুযায়ী
১. সমস্ত দেওয়ানী মোকদ্দমায়,
i. মোকদ্দমার পক্ষগণ এবং
ii. কোন পক্ষের স্বামী বা স্ত্রী অবশ্যই যোগ্যতাসম্পন্ন সাক্ষী হবে।
২. যেকোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারী কার্যধারায়, সেই ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী অবশ্যই যোগ্যতাসম্পন্ন সাক্ষী হবে।
সকল দেওয়ানী মোকদ্দমায়, মোকদ্দমার পক্ষগণ ও কোন পক্ষের স্বামী অথবা স্ত্রী অবশ্যই যোগ্য সাক্ষী। অর্থাৎ সাক্ষ্য দিতে যোগ্য। আবার ফৌজদারী মামলায় কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সেই ব্যক্তির স্বামী অথবা স্ত্রী অবশ্যই যোগ্য সাক্ষী হবে। উদাহরণ: “ক” এর বিরুদ্ধে 'খ' যৌতুকের মামলা দায়ের করে। “ক” এর স্ত্রী “খ” এই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য।
একজন আসামী কি সাক্ষী হতে পারে?
ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪০ ধারায় একজন অভিযুক্ত শুধুমাত্র তার আত্মপক্ষসমর্থনে যোগ্য সাক্ষী হতে পারে বা আসামী শুধুমাত্র Defence Witness (DW) হতে পারে। ৩৪০ (৩) ধারা অনুসারে, লিখিত অনুরোধক্রমে আসামী আত্মপক্ষসমর্থনে সাক্ষ্য দিতে পারে। ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪০ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, 'ফৌজদারী আদালতে অভিযুক্ত যে কোনো ব্যক্তি তার আত্মপক্ষ সমর্থনে যোগ্য সাক্ষী হবে এবং তার বিরুদ্ধে বা একই বিচারে তার সাথে অভিযুক্ত করা হয়েছে এমন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য শপথপূর্বক সাক্ষ্য দিতে পারবে। শর্ত হলো তাকে সাক্ষী হিসাবে আহ্বান করা যাবে না তার লিখিত অনুরোধ ছাড়া।' অর্থাৎ সাক্ষী শুধুমাত্র লিখিত অনুরোধ করলে, আদালত তাকে আত্মপক্ষসমর্থনে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আহ্বান করতে পারে। ফৌজদারী আদালতে অভিযুক্ত যে কোনো ব্যক্তি তার আত্মপক্ষ সমর্থনে যোগ্য সাক্ষী হবে এবং তার বিরুদ্ধে বা একই বিচারে তার সাথে অভিযুক্ত করা হয়েছে এমন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য শপথপূর্বক সাক্ষ্য দিতে পারবে। শর্ত হলো তাকে সাক্ষী হিসাবে আহ্বান করা যাবে না তার লিখিত অনুরোধ ছাড়া। অর্থাৎ সাক্ষী শুধুমাত্র লিখিত অনুরোধ করলে, আদালত তাকে আত্মপক্ষসমর্থনে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আহ্বান করতে পারে। ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪০ ধারা অনুযায়ী একজন আসামী তার নিজের আত্মপক্ষসমর্থনে বা একই বিচারে অন্যান্য যে সকল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে পারে। একজন সাক্ষী কিন্তু কখনও রাষ্ট্রপক্ষের বা অভিযোগকারী পক্ষের সাক্ষী বা prosecution witness (Pw) হতে পারেনা বরং শুধুমাত্র বিবাদীপক্ষে বা defence witness (DW) হতে পারে। কারণ যে পক্ষ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে, সেই পক্ষের হয়ে আসামী তার নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে পারেনা এবং এটা সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
কোন কোন ব্যক্তি সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য কিন্তু সাক্ষ্য দিতে বাধ্য নয়?
কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্যতা এবং সাক্ষ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা এক কথা না। কোন সাক্ষী সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য হলেও, তাকে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যেতে নাও পারে। যদিও সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য সকল সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যায়, কিন্তু এই নিয়মের কিছু ব্যতিক্রম আছে। সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী কিছু কিছু ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য হওয়ার পরও তাদেরকে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না। এই সকল ক্ষেত্রে কতিপয় ব্যক্তিকে বিশেষাধিকার বা special privilege দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে যে সকল ব্যক্তিদের বিশেষাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং কোন কোন শর্তে দেওয়া হয়েছে সেটা সাক্ষ্য আইনের ১২১ থেকে ১২৯ ধারায় আলোচনা করা হয়েছে।
১. সাক্ষ্য আইনের ১২১, ১২২, ১২৪, ১২৫ এবং ১২৯ ধারায় কোন সাক্ষীকে কতিপয় প্রশ্নের উত্তর দিতে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে;
২. সাক্ষ্য আইনের ১২৩, ১২৬ এবং ১২৭ ধারায় আদালত কোন সাক্ষীকে কতিপয় বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে অনুমতি দিবেনা।
জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটগণকে সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষাধিকার দেওয়া হয়েছে
সাক্ষ্য আইনের ১২১ ধারা অনুযায়ী জজ এবং ম্যাজিস্ট্রেট যোগ্য সাক্ষী এবং তারা ইচ্ছা করলে সাক্ষ্য দিতে পারে। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট এবং জজ হিসাবে সম্পাদন করেছে এমন কোন কার্য সম্পর্কে সাক্ষ্য দিতে তাদের বাধ্য করা যাবেনা। কারণ ১২১ ধারায় জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটকে সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষাধিকার বা special privilege দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্য আইনের ১২১ ধারা অনুযায়ী জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটগণ যে আদালতের অধীন, সেই আদালতের বিশেষ আদেশ ব্যাতীত নিম্নলিখিত ২টি বিষয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে তাকে বাধ্য করা যাবে না;
১. জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে উক্ত আদালতে তার নিজস্ব কোনো কার্য সম্পর্কে বা
২. যে কোনো কিছু যা বিচারক বা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে সে আদালতে জানতে পারে।
কিন্তু তিনি উক্ত পদের কর্তব্য পালন করার সময় অন্যান্য যে সব ঘটনা তার উপস্থিতিতে ঘটেছে, সেইগুলি সম্পর্কে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা যেতে পারে।
কোন কোন ক্ষেত্রে জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যায়?
জজ এবং ম্যাজিস্ট্রেটকে আদালতে তার নিজস্ব কার্য ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে তাকে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যেতে পারে বা উক্ত পদের কর্তব্য পালনের সময় যে সব ঘটনা তার উপস্থিতিতে ঘটেছে, সেই গুলি সম্পর্কে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন আদালতে জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে খুন সংঘটিত হয়, সেই ক্ষেত্রে উক্ত খুন সম্পর্কে যেকোন প্রশ্নের উত্তর দিতে উক্ত জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটকে বাধ্য করা যেতে পারে।
স্বামী এবং স্ত্রী কোন ধরণের যোগাযোগ প্রকাশ করতে বাধ্য না?
আমরা জানি সাক্ষ্য আইনের ১২০ ধারা অনুযায়ী দেওয়ানী মোকদ্দমায় স্বামী এবং স্ত্রী যোগ্য সাক্ষী এবং ফৌজদারী মামলায় স্বামী এবং স্ত্রী অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যোগ্য সাক্ষী। সাক্ষ্য আইনের ১২২ ধারায় স্বামী এবং স্ত্রীর সাক্ষী হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়নি বরং স্বামী এবং স্ত্রী কোন ধরণের যোগাযোগ প্রকাশ করতে বাধ্য না তা সাক্ষ্য আইনের ১২২ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। বিবাহ বলবৎ থাকাকালে স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে পত্র আলাপ (যোগাযোগ) প্রকাশ করতে তারা বাধ্য না। কিন্তু নিম্নলিখিত ব্যতিক্রমের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য না অর্থাৎ স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে পত্র আলাপ বা যোগাযোগ প্রকাশে কোন পক্ষকে বাধ্য করা যাবে-
১. যখন যে ব্যক্তি এমন যোগাযোগ করেছিল সে বা তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি সম্মতি প্রদান করে এবং
২. বিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে কোন মামলায় তা ফৌজদারী হোক বা দেওয়ানী হোক যেক্ষেত্রে একজনকে অন্যজনের প্রতি সংঘটিত কোনো অপরাধের জন্য বিচার করা হচ্ছে। যেমন তালাক মামলায় বা যৌতুকের মামলায়স্বামী বা স্ত্রী তাদের মধ্যেকার যোগাযোগ প্রকাশ করতে পারে বা তাদের বাধ্য করা যাবে।
রাষ্ট্রীয় বিষয়ে কি সাক্ষ্য দেয়া যাবে?
সাক্ষ্য আইনের ১২৩ ধারায় রাষ্ট্রকে সুরক্ষা বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে যে, 'রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি সম্পর্কিত অপ্রকাশিত সরকারি দলিলপত্র হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোন ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া তথ্য প্রদানের অনুমতি দেওয়া যাবে না। উক্ত কর্মকর্তা নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি উপযুক্ত বিবেচনা করে অনুমতি দিতে পারে বা নাও দিতে পারে।
১. যে তথ্য বা সাক্ষ্যটি চাওয়া হচ্ছে তা রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি সম্পর্কিত অপ্রকাশিত সরকারী দলিলপত্র হতে উদ্ভূত হতে হবে; এবং
২. এমন তথ্যের প্রকাশ যদি জনস্বার্থ বিরোধী হয়, তাহলে এমন তথ্য প্রকাশে বাধ্য করা যাবেনা।
সরকারী বার্তা কি প্রকাশ করা যাবে?
সাক্ষ্য আইনের ১২৪ ধারা অনুযায়ী কোন সরকারি কর্মকর্তা সরকারি পর্যায়ের যোগাযোগ প্রকাশ করতে বাধ্য না যদি প্রকাশ করলে জনস্বার্থ ব্যাঘাত ঘটবে বলে সে মনে করে।
সাক্ষ্য আইনের ১২৩ এবং ১২৪ ধারার মধ্যে পার্থক্য কি?
সাক্ষ্য আইনের ১২৩ এবং ১২৪ ধারার মধ্যে পার্থক্য আছে। ১২৩ ধারা প্রযোজ্য হবে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি সম্পর্কিত অপ্রকাশিত সরকারী দলিলপত্র হতে উদ্ভূত তথ্য বিষয়ে। কিন্তু ১২৪ ধারা প্রযোজ্য হবে অফিস বা দাফতরিক গোপনীয়তায় সরকারী কর্মকতার সাথে যেকোন প্রকারের বার্তার আদান প্রদান বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেটা লিখিত হোক বা না হোক এবং উক্ত তথ্য রাষ্ট্রীয় বিষয় সম্পর্কিত হোক বা না হোক। ১২৩ ধারার অধীন তথ্য প্রকাশের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা তা সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানের বিবেচনার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ১২৪ ধারায় তথ্য প্রকাশ সরকারী কর্মকতার বিবেচনার উপর নির্ভরশীল সে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান হোক বা না হোক। কারণ এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রদানের অনুমতি প্রয়োজন না।
পেশাগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষাধিকার কি?
সাক্ষ্য আইনের ১২৬, ১২৭, ১২৮ এবং ১২৯ ধারায় যে সকল সুবিধা দেওয়া হয়েছে তা একই প্রকৃতির এবং একই উদ্দেশ্যে। এই ধারাগুলোতে মক্কেল এবং তার আইন উপদেষ্টা, বা আইন উপদেষ্টার ক্লার্ক বা কর্মচারীদের মধ্যেকার পেশাগত তথ্যের আদান প্রদান প্রকাশ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ তারা কখন প্রকাশ করতে পারবে এবং কখন প্রকাশ করতে পারবেনা, তা উল্লেখ করা হয়েছে। সাক্ষ্য আইনের ১২৬ ধারা অনুযায়ী অ্যাডভোকেট এবং মক্কেলের মধ্যে তথ্যের আদান প্রদান অ্যাডভোকেট প্রকাশ করতে বাধ্য না অথবা অ্যাডভোকেট মক্কেলের প্রকাশ্য অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করবে না। সাক্ষ্য আইনের ১২৬ ধারা শুধুমাত্র আইনজীবীর জন্য প্রযোজ্য না বরং নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের জন্যও প্রযোজ্য হবে:
১. উকিল বা আইনজীবী
২. দোভাষী
৩. উকিলের কেরাণী বা কর্মচারী
৪. মোক্তার
অর্থাৎ উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসাবে আহ্বান করা হলে, তারা মক্কেলের সাথে যে তথ্য আদান প্রদান করেছিল তা মক্কেলের অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করবে না। তবে নিম্নলিখিত পেশাগত যোগাযোগ প্রকাশে সাক্ষ্য আইনের ১২৬ ধারায় কোনো বাধা নেই।
১. যদি কোনো বেআইনী উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা হিসাবে যে যোগাযোগ করা হয় এবং
২. যদি আইনজীবী এমন কোনো ঘটনা দেখে যে, তার নিযুক্তির পর কোনো অপরাধ বা প্রতারণা সংঘটিত হয়েছে।
সাক্ষ্য আইনের ১২৬ ধারার অধীন পেশাগত যোগাযোগ প্রকাশে যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে তা আইনজীবী এবং মক্কেলের মধ্যে যখন পেশাগত সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে তখন থেকে কার্যকর হয় এবং যতদিন এই সম্পর্ক বহাল থাকবে ততদিন এই সুরক্ষা বহাল থাকবে। এমনকি পেশাগত সম্পর্ক বা নিয়োগ অবসান হওয়ার পরও এই সুরক্ষা বহাল থাকবে এবং আইনজীবী তার মক্কেলের সাথে যে পেশাগত যোগাযোগ হয়েছে তা প্রকাশ করতে পারবেনা। কিন্তু পেশাগত সম্পর্কের অবসানের পর যে সকল পেশাগত যোগাযোগ করা হয় সেগুলো ১২৬ ধারায় সুরক্ষা পাবেনা।
দুষ্কর্মের সহযোগী কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য?
সাক্ষ্য আইনের ১৩৩ ধারায় বিধান করা হয়েছে, দুষ্কর্মের সহযোগী আসামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য হবে এবং সহযোগীর অসমর্থিত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আসামীকে শাস্তি দেওয়া হলে কেবলমাত্র সেই কারণেই উক্ত শাস্তি বেআইনী হবেনা। সুতরাং সাক্ষ্য আইনের ১৩৩ ধারা অনুযায়ী একজন দুষ্কর্মের সহযোগী অন্যান্য সহযোগী আসামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য। কিন্তু সাক্ষ্য আইনের ১১৪ ধারা অনুযায়ী দুষ্কর্মের সহযোগীর সাক্ষ্য সমর্থিত হওয়া প্রয়োজন। অথচ সাক্ষ্য আইনের ১৩৩ ধারায় বলা হয়েছে এইরূপ সাক্ষ্য সমর্থিত না হলেও, আসামীকে দণ্ড দিলে তা বেআইনী হবে না। উদাহরণ: ৫ জন মিলে ডাকাতি করেছে। এখানে একজন অপর জনের দুষ্কর্মের (ডাকাতির) সহযোগী। এখানে একজন ডাকাত একে অপরের দুষ্কর্মের সহযোগী। কোন একজন অন্য ডাকাত বা দুষ্কর্মের সহযোগীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য। যখন কোন একজন ডাকাত সাক্ষ্য দিবে তার সাক্ষ্য অন্য ডাকাতের বা উক্ত মামলার অন্য সাক্ষীর সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত বা মিল হতে হবে এবং মেলানোর পর আদালত উক্ত ডাকাতের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য কিনা তা নির্ধারণ করবে এবং সেটা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। তবে এমন ডাকাতের সাক্ষ্য সমর্থন না করে যদি আদালত কোন দণ্ড দিয়ে থাকে সেই কারণে উক্ত দণ্ড অবৈধ হবে না।
কোন ঘটনা প্রমাণের জন্য কতজন সাক্ষী প্রয়োজন?
সাক্ষ্য আইনের ১৩৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোন মোকদ্দমায় কোন ঘটনা প্রমাণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যক সাক্ষীর প্রয়োজন হবে না। সুতরাং কোন মামলায় তা দেওয়ানি বা ফৌজদারি যাই হোক না কেন তা প্রমাণের জন্য কোন নির্দিষ্ট সংখ্যক সাক্ষ্যের প্রয়োজন নেই। ক্ষেত্রবিশেষে একজন সাক্ষী দিয়েও কোন ঘটনা প্রমাণ করা যেতে পারে।
টপিকস
কে সাক্ষ্য দিতে পারে? পাগল বা মানসিক রোগীর কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য? একজন বোবা ব্যক্তি কি সাক্ষী হতে পারে? স্বামী বা স্ত্রী কি একে অপরের সাক্ষী হতে পারে? একজন আসামী কি সাক্ষী হতে পারে? কোন কোন ব্যক্তি সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য কিন্তু সাক্ষ্য দিতে বাধ্য নয়? কোন কোন ক্ষেত্রে জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যায়? স্বামী এবং স্ত্রী কোন ধরণের যোগাযোগ প্রকাশ করতে বাধ্য না? রাষ্ট্রীয় বিষয়ে কি সাক্ষ্য দেয়া যাবে? সরকারী বার্তা কি প্রকাশ করা যাবে? সাক্ষ্য আইনের ১২৩ এবং ১২৪ ধারার মধ্যে পার্থক্য কি? পেশাগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষাধিকার কি? দুষ্কর্মের সহযোগী কি সাক্ষী হওয়ার যোগ্য? কোন ঘটনা প্রমাণের জন্য কতজন সাক্ষী প্রয়োজন?
ইউটিউব ভিডিও - সাক্ষীসমূহ Of Witnesses কে সাক্ষ্য দিতে পারে?