Skip to main content

HSC English First Paper English For Today - Unit 7 Lesson 1 Brojen Das

সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ Examination of Witnesses জবানবন্দি জেরা পুন:জবানবন্দি

সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ Examination of Witnesses
জবানবন্দি, জেরা এবং পুন:জবানবন্দি:
জবানবন্দি কি?
জেরা কি?
পুনঃজবানবন্দি কি?
সাক্ষ্য গ্রহণের ক্রম কি?
পুনঃজবানবন্দির মূল উদ্দেশ্য কি?
ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বা Leading question কি?
কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায় না?
কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়?
পূর্ববর্তী লিখিত বিবৃতি সম্পর্কে কি জেরা করা যায়?
জেরায় কি কি প্রশ্ন আইনসম্মত?
সাক্ষীকে প্রশ্ন করা সংক্রান্ত নীতি কি?
সাক্ষীর চরিত্র ক্ষতিগ্রস্থ করে এমন প্রশ্ন কি করা যায়?
যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া প্রশ্ন করলে আদালতের কি করণীয়?
অশালীন এবং কুৎসাজনক প্রশ্ন করলে আদালতের কি করণীয়?
বৈরী সাক্ষী কি?
সমর্থন সাক্ষ্য বা Corroborative Evidence কি?
সাক্ষীর স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করার বিধান কি?
স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করা কি?

সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ Examination of Witnesses

সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ১৩৭ থেকে ১৬৬ ধারা পর্যন্ত সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পর্কিত বিধান করা হয়েছে। সাক্ষ্য আইনের ১৩৭ ধারায় জবানবন্দি, জেরা এবং পুনঃজবানবন্দির সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ১৩৮ ধারায় সাক্ষ্য গ্রহণের ক্রম উল্লেখ করা হয়েছে।

জবানবন্দি, জেরা এবং পুন:জবানবন্দি:

সাক্ষীর শপথগ্রহণের পর সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের ৩টি ধাপ রয়েছে।

১. জবানবন্দি [Examination-in-Chief]

২. জেরা [Cross-Examination]

৩. পুনঃজবানবন্দি [Re-examination]

সাক্ষ্য আইনের ১৩৭ ধারায় জবানবন্দি, জেরা এবং পুনঃজবানবন্দি এর সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

জবানবন্দি কি?

যে পক্ষ কোন সাক্ষীকে হাজির করেছে, সেই পক্ষ যখন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে, তখন তাকে সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা বলা হয়।

জেরা কি?

বিরুদ্ধ পক্ষ কর্তৃক সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলে, তখন তাকে জেরা বলা হয়।

পুনঃজবানবন্দি কি?

জেরার পর সাক্ষী উপস্থিতকারী পক্ষ যদি পুনরায় সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করে, তবে তাকে পুনঃজবানবন্দি গ্রহণ করা বলা হয়। উদাহরণ: রাষ্ট্রপক্ষ ‘ক’ কে সাক্ষী হিসাবে আদালতে হাজির করে। রাষ্ট্রপক্ষ ‘ক’ কে প্রশ্ন করলে সেটা হবে জবানবন্দি গ্রহণ। আর আসামী পক্ষ ‘ক’ কে প্রশ্ন করলে সেটা হবে জেরা। জেরার পর রাষ্ট্রপক্ষ যদি আবার ‘ক’ কে প্রশ্ন করে তাহলে সেটা হবে পুনঃজবানবন্দি।

সাক্ষ্য গ্রহণের ক্রম কি?

সাক্ষ্য আইনের ১৩৮ ধারায় সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের ক্রম উল্লেখ করা হয়েছে। ১৩৮ ধারায় সাক্ষ্য গ্রহণের ৩টি ক্রম উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম ক্রম হলো সাক্ষী আহ্বানকারী পক্ষ কর্তৃক সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ, দ্বিতীয় ক্রম হলো সাক্ষীর আহ্বানকারী পক্ষের বিরোধী পক্ষ কর্তৃক সাক্ষীকে জেরা (ইচ্ছা করলে করতে পারে) এবং তারপর সাক্ষী আহ্বানকারী পক্ষ কর্তৃক পুনঃজবানবন্দি (যদি পক্ষদ্বয় ইচ্ছা করে) গ্রহণ করা হয় । সাক্ষ্য আইনের ১৩৮ ধারায় বিধান করা হয়েছে, প্রথমে সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করতে হবে। তৎপর (বিরুদ্ধ পক্ষ ইচ্ছা করলে) সাক্ষীকে জেরা করতে এবং তৎপর (সাক্ষী হাজিরকারী পক্ষ ইচ্ছা করলে) পুনঃজবানবন্দি গ্রহণ করতে পারবে।তবে সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ ও জেরা অবশ্যই প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কিত হতে হবে। সাক্ষী তার জবানবন্দিতে যে সকল ঘটনা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছে, শুধুমাত্র সেই সকল বিষয়ের মধ্যে জেরা সীমাবদ্ধ থাকার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ সাক্ষী তার জবানবন্দিতে যে সকল ঘটনা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছে, সেই সকল বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়েও জেরা করা যাবে। জেরার মূল উদ্দেশ্য হলো তর্কিত বিষয়ের সত্যতা উৎঘাটন করা।

পুনঃজবানবন্দির মূল উদ্দেশ্য কি?

জেরায় সাক্ষী যে সকল বিষয়ের উল্লেখ করে, পুনঃজবানবন্দিতে সেইগুলির ব্যাখ্যা চাইতে হবে। অর্থাৎ পুনঃজবানবন্দির মূল উদ্দেশ্য হলো সাক্ষী জেরায় যে বক্তব্য দিয়েছে তার ব্যাখ্যা বা স্পষ্টকরণ করা। আদালত অনুমতি দিলে পুন: জবানবন্দিতে নতুন বিষয়ে সাক্ষীকে জিজ্ঞাসা করা যায়। যদি আদালতের অনুমতি নিয়ে পুনঃজবানবন্দিতে নতুন বিষয়ের সূচনা করা হয়, তবে বিরুদ্ধ পক্ষ সেই সকল বিষয়ে অধিকতর জেরা করতে পারবে। অর্থাৎ সাক্ষ্য আইনে অধিকতর জেরার বিধান আছে [ ধারা ১৩৮]

ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বা Leading question:

সাক্ষ্য আইনের ১৪১, ১৪২ এবং ১৪৩ ধারায় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন সম্পর্কিত বিধান আলোচনা করা হয়েছে। ১৪১ ধারায় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্নকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, ১৪২ ধারায় কখন ইঙ্গতবাহী প্রশ্ন করা যাবেনা এবং ১৪৩ ধারায় কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যেতে পারে তা উল্লেখ করা হয়েছে।

ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন কি?

সাক্ষ্য আইনের ১৪১ ধারা অনুযায়ী প্রশ্নকারী প্রশ্নের যে উত্তর আশা বা ইচ্ছা করে প্রশ্নের মধ্যে তার ইঙ্গিত থাকলে, সেই প্রশ্নকে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বলে। উদাহরণ: উকিল সাক্ষী “B” কে প্রশ্ন করলো আপনি কি ০১.০৩.২০২২ তারিখে 'C' কে খুলনাতে দেখেছিলেন। “B” উত্তরে বললো হ্যাঁ খুলনাতে দেখেছিলাম। এখানে প্রশ্নের মধ্যে উত্তরের ইঙ্গিত (খুলনা) ছিল।তাই এটা ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন।

কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায় না?

সাক্ষ্য আইনের ১৪২ ধারায় বিধান করা হয়েছে, বিরুদ্ধ পক্ষ যদি আপত্তি করে, তবে জবানবন্দি এবং পুনঃজবানবন্দি গ্রহণকালে আদালতের অনুমতি ব্যতিরেকে ইঙ্গিতপূর্ণ প্রশ্ন অবশ্যই জিজ্ঞাসা করা চলবে না। অর্থাৎ যদি বিরোধী পক্ষ বিরোধীতা করে অথবা আদালত অনুমতি না দেয়, তাহলে জবানবন্দির সময় এবং পুনঃজবানবন্দির সময় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায় না। বিপরীতভাবে বলা যায়, আদালতের অনুমতি নিয়ে জবানবন্দি এবং পুনঃজবানবন্দির সময় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যেতে পারে। জবানবন্দি এবং পুনঃজবানবন্দির সময় আদালত নিম্নলিখিত ৩টি ক্ষেত্রে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করার অনুমতি দিতে পারে।

১. পরিচায়মূলক বিষয়ে,

২. অবিসংবাদিত বা স্বীকৃত বিষয়ে,

৩. যে বিষয়টি যথেষ্টরূপে প্রমাণিত হয়েছে সেক্ষেত্রে আদালত ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করার অনুমতি দিতে পারে।

জবানবন্দি এবং পুনঃজবানবন্দির সময় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করার অনুমতি দেওয়া আদালতের জন্য বিবেচনামূলক।

কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়?

সাক্ষ্য আইনের ১৪৩ ধারায় বলা হয়েছে, জেরায় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যেতে পারে। যেহেতু বিরোধী পক্ষ জেরা করে, সেহেতু বিরোধী পক্ষই ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করতে পারে।

পূর্ববর্তী লিখিত বিবৃতি সম্পর্কে কি জেরা করা যায়?

সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ধারায় বিধান করা হয়েছে, কোন সাক্ষী পূর্ববর্তীকালে লিখিত কোন বিবৃতি দিয়ে থাকলে কিংবা তার প্রদত্ত কোন বিবৃতি লিপিবদ্ধ হলে, উক্ত পূর্ববর্তী লিখিত বক্তব্য সম্পর্কে ১৪৫ ধারায় জেরা করা যেতে পারে। উদাহরণ: ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬১ ধারায় পুলিশ সাক্ষীর জবানবন্দি লিখিত আকারে লিপিবদ্ধ করতে পারে। ১৬১ ধারায় সাক্ষী যে বক্তব্য দিয়েছে এবং উক্ত সাক্ষী জেরার সময় আদালতে যে সাক্ষ্য দিচ্ছে, তা যদি ১৬১ ধারায় প্রদত্ত সাক্ষ্য হতে ভিন্ন হয় বা পরস্পরবিরোধী হয়, তাহলে জেরাকারী আইনজীবী উক্ত সাক্ষীকে ১৬১ ধারায় প্রদত্ত পূর্ববর্তী বক্তব্যের যে অংশটি পরস্পরবিরোধী বা contraditory সেই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রশ্ন করতে পারে। ১৪৫ ধারার নিয়মটি একইভাবে প্রাথমিক তথ্য বিবরণী বা এজাহার বা ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধকৃত দোষস্বীকারমূলক বক্তব্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এই সকল লিখিত বক্তব্য সম্পর্কে ১৪৫ ধারায় জেরা করা যাবে।

জেরায় কি কি প্রশ্ন আইনসম্মত?

সাক্ষ্য আইনের ১৪৬ ধারা অনুযায়ী জেরায় নিম্নলিখিত ৩ ধরণের প্রশ্ন করা বৈধ। সেই সকল প্রশ্ন করা যায় যা দ্বারা সাক্ষীর-

১. সত্যবাদিতা পরীক্ষা করা যায় বা

২. তার পরিচয় ও মর্যাদা জানা যায় বা

৩. তার চরিত্রে আঘাত করে তার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে দূর্বলতা সৃষ্টি করা যায়। তবে শর্ত থাকে যে, ধর্ষণের অপরাধ বা ধর্ষণের চেষ্টার জন্য একটি মামলায়, ক্লজ (৩) এর অধীনে ভিক্টিমের সাধারণ অনৈতিক চরিত্র বা পূর্ববর্তী যৌন আচরণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যাবে না: আরও শর্ত থাকে যে, এই ধরনের প্রশ্ন শুধুমাত্র আদালতের অনুমতি নিয়েই জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে, যদি এটি ন্যায়বিচারের জন্য আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় বলে মনে হয়।

সাক্ষীকে প্রশ্ন করা সংক্রান্ত নীতি কি?

সাক্ষ্য আইনের ১৪৮ থেকে ১৫২ ধারায় সাক্ষীকে প্রশ্ন করা সংক্রান্ত নীতির বিধান করা হয়েছে। সাক্ষী এবং তার প্রদত্ত সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সত্যতা নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জেরা সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোন সাক্ষীকে জেরা করার সময় সে যেন অসমীচীন প্রশ্নের সম্মুখীন না হয় তা থেকে তাকে সুরক্ষা রাখাও অতীব জরুরী। সাক্ষ্য আইনের ১৪৮ থেকে ১৫২ ধারার উদ্দেশ্য হলো সাক্ষীদেরকে জেরায় অসমীচীন প্রশ্ন থেকে সুরক্ষা রাখা।

সাক্ষীর চরিত্র ক্ষতিগ্রস্থ করে এমন প্রশ্ন কি করা যায়?

সাক্ষ্য আইনের ১৪৮ ধারা অনুযায়ী এমন ধরণের কোনো প্রশ্ন যা মামলা বা মামলার কার্যধারার সাথে সম্পর্কিত নয় কিন্তু এটা সাক্ষীকে তার চরিত্র ক্ষতিগ্রস্থ করে তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রভাবিত করবে সেই ধরণের কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে সাক্ষী বাধ্য হবে কি হবেনা তা আদালত নির্ধারণ করবে, এমনকি আদালত সাক্ষীকে সতর্ক করতে পারবে যে, সে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য না । এছাড়াও সাক্ষ্য আইনের ১৪৯ ধারা অনুযায়ী এমন প্রশ্ন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া করা যাবে না।

যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া প্রশ্ন করলে আদালতের কি করণীয়?

সাক্ষ্য আইনের ১৫০ ধারা অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া প্রশ্ন করা হলে অ্যাডভোকেট পেশাগতভাবে যে হাইকোর্ট ডিভিশন অথবা যে কর্তৃপক্ষের অধীন, আদালত মামলার সমস্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে সেই কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিতে পারে।

অশালীন এবং কুৎসাজনক প্রশ্ন করলে আদালতের কি করণীয়?

সাক্ষ্য আইনের ১৫১ ধারায় সাক্ষীকে অশালীন এবং কুৎসাজনক প্রশ্ন করা আদালত নিষিদ্ধ করতে পারে। কিন্তু ১৫১ ধারায় শুধুমাত্র নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে অশালীন এবং কুৎসাজনক প্রশ্ন করা যেতে পারে-

১. যে প্রশ্নটি সরাসরি বিচার্য বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত বা

২. প্রশ্নটি এমন বিষয়ের সাথে জড়িত যা বিচার্য বিষয়ের অস্তিত্ব নির্ধারণের জন্য জানা প্রয়োজনীয়।

অন্যদিকে সাক্ষ্য আইনের ১৫২ ধারায় সাক্ষীকে অপমান বা বিরক্ত করার উদ্দেশ্যে করা প্রশ্ন আদালত নিষিদ্ধ করবে। সাক্ষ্য আইনের ১৫৩ ধারা অনুযায়ী কোন সাক্ষী যদি মিথ্যাভাবে উত্তর প্রদান করে, তাকে পরবর্তীতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য দণ্ডবিধির ১৯৩ ধারায় দণ্ড দেওয়া যেতে পারে।

 বৈরী সাক্ষী বা Hostile Witness কি?

সাক্ষ্য আইনের ১৫৪ ধারায় সুস্পষ্টভাবে বৈরী সাক্ষী বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। বৈরী সাক্ষী হলো এমন একজন সাক্ষী যে, সে যে উপায়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে তা থেকে বোঝা যায় যে, সে আদালতের নিকট সত্য বলতে ইচ্ছা প্রকাশ করছে না। বৈরী সাক্ষী বলতে মিথ্যুক সাক্ষী বোঝায় না। সাক্ষী যে সাক্ষ্য দিচ্ছে তা থেকে সাক্ষীর বৈরীতা বুঝতে হবে। বিষয়টি হলো যখন যে পক্ষ কোন সাক্ষীকে আহ্বান করে বা ডাকে, সেই পক্ষ উক্ত সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সাক্ষী আহ্বানকারী পক্ষ যখন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করে, তখন সাক্ষীর নিকট যে প্রশ্ন করা হয় তখন সে উক্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করতে পারে বা বৈরী হতে পারে। সাক্ষী আহ্বানকারী পক্ষ এমন ধরণের সাক্ষীকে বৈরী সাক্ষী হিসাবে ঘোষণা করতে পারে। যেমন: মামলার অভিযোগকারী পক্ষ A -কে সাক্ষী হিসাবে তলব করলো। সাধারণত A অভিযোগকারীর পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। কিন্তু A ইচ্ছাকৃতভাবে অভিযোগকারীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করলো। এই ক্ষেত্রে A কে বৈরী সাক্ষ্য হিসাবে ঘোষণা করা যেতে পারে।

কখন সাক্ষী আহ্বানকারী পক্ষ নিজের সাক্ষীকে জেরা করতে পারে?

সাক্ষী আহ্বানকারী পক্ষ আদালতের অনুমতি নিয়ে বৈরী সাক্ষীকে অর্থাৎ নিজের সাক্ষীকে সে সকল প্রশ্ন করতে পারে যে সকল প্রশ্ন বিরুদ্ধ পক্ষ জেরায় করতে পারে। এটা নিজের সাক্ষীকে জেরা করার মত। অর্থাৎ ১৫৪ ধারার অধীন নিজের সাক্ষী যখন বৈরী হয়ে যায়, তখন আদালতের অনুমতি নিয়ে নিজের সাক্ষীকে জেরা করা যায়। এই ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক কিন্তু অনুমতি দেওয়া আদালতের জন্য বিবেচনামূলক।

কখন সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে অভিযোগ করা যায়?

সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ধারায় বিরোধী পক্ষ বা যে পক্ষ সাক্ষী আহ্বান করে সেই পক্ষ আদালতের অনুমতি নিয়ে ৪টি উপায়ে সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে অভিযোগ করতে পারে।

১. সাক্ষী যে বিশ্বাসের অযোগ্য তা ব্যক্তিদ্বয়ের সাক্ষ্য দ্বারা;

২. সাক্ষীকে যে ঘুষ দেওয়া হয়েছে বা সাক্ষী যে ঘুষের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে, অথবা অন্যকোন দুর্নীতিমূলক প্রলোভনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে তা প্রমাণ করে;

৩. বর্তমান সাক্ষ্যের সাথে পূর্বে প্রদত্ত সাক্ষ্যের অসামঞ্জস্যতা প্রমাণ করে।

সমর্থন সাক্ষ্য বা Corroborative Evidence কি?

সাক্ষ্য আইনের ১৫৭ ধারায় একই ঘটনার বিষয়ে সাক্ষীর পরবর্তী সাক্ষ্য সমর্থন করানোর জন্য পূর্ববর্তী সাক্ষ্য প্রমাণ করা যেতে পারে। এই ধারার অধীন এমন বক্তব্য শুধুমাত্র গ্রহণযোগ্য হবে যদি-

১. যখন ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল তখন বক্তব্যটি প্রদান করা হয়;

২. বক্তব্যটি আইনত এখতিয়ারসম্পন্ন কোন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রদত্ত হলে।

ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রদত্ত দোষস্বীকারমূলক বক্তব্য তদন্তের সময় পুলিশ কর্তৃক লিপিবদ্ধকৃত সাক্ষীর জবানবন্দি ইত্যাদি পরবর্তী সাক্ষ্য সমর্থন করানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ এবং ১৫৭ ধারার মধ্যে পার্থক্য হলো ১৪৫ ধারা শুধুমাত্র লিখিত বক্তব্য সম্পর্কে জেরায় প্রশ্ন করা যায় কিন্তু ১৫৭ ধারা লিখিত এবং মৌখিক উভয় বক্তব্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

সাক্ষীর স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করার বিধান কি?

যখন কোন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছে সে কতটুকু পর্যন্ত এবং কি উপায়ে তার স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তার পূর্বে প্রদত্ত কোন লিখিত বক্তব্য উল্লেখ করতে পারে তা সাক্ষ্য আইনের ১৫৯ থেকে ১৬১ ধারায় আলোচনা করা হয়েছে।

স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করা কি?

সাক্ষ্য আইনের ১৫৯ ধারা অনুযায়ী সাধারণ নিয়ম হলো একজন সাক্ষী সে নিজে যা মনে করতে পারে সেই বিষয়টি সাক্ষ্যে উল্লেখ করবে। কিন্তু কোন সাক্ষী যখন সাক্ষ্য দিচ্ছে তখন তার দ্বারা বা তার নির্দেশে তৈরীকৃত পূর্বের কোন লিখিত বিবৃতি ব্যবহার করে সে তার স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। উদাহরণ: কোন অভিযোগকারী এজাহার দায়ের করার সময় চুরিকৃত সম্পদের যে তালিকা দিয়েছিল তা উক্ত অভিযোগকারী আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় উক্ত তালিকা সম্পর্কে স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ব্যবহার করতে পারে।স্মৃতি পুনরুজ্জীত করার জন্য কোন সাক্ষী কর্তৃক যে লিখিত বিবৃতি ব্যবহার করা হয়েছে,বিরোধী পক্ষ উক্ত লিখিত বিবৃতি দেখতে চাইতে পারে, উক্ত সাক্ষীকে জেরা করতে পারে বা উক্ত সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করতে পারে। এটা বলা হয়েছে সাক্ষ্য আইনের ১৬১ ধারায়। সাক্ষ্য আইনের ১৬৫ ধারার অধীন প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে যথাযথ প্রমাণ পেতে আদালত কোনো সাক্ষীকে প্রশ্ন করতে পারে। সাক্ষ্য আইনের ১৬৬ ধারার অধীন জুরি কোনো সাক্ষীকে প্রশ্ন করতে পারে।

টপিকস 

জবানবন্দি কি? জেরা কি? পুনঃজবানবন্দি কি? সাক্ষ্য গ্রহণের ক্রম কি? পুনঃজবানবন্দির মূল উদ্দেশ্য কি? ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বা Leading question কি? কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায় না? কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়? পূর্ববর্তী লিখিত বিবৃতি সম্পর্কে কি জেরা করা যায়? জেরায় কি কি প্রশ্ন আইনসম্মত? সাক্ষীকে প্রশ্ন করা সংক্রান্ত নীতি কি? সাক্ষীর চরিত্র ক্ষতিগ্রস্থ করে এমন প্রশ্ন কি করা যায়? যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া প্রশ্ন করলে আদালতের কি করণীয়? অশালীন এবং কুৎসাজনক প্রশ্ন করলে আদালতের কি করণীয়? বৈরী সাক্ষী কি? কখন সাক্ষী আহ্বানকারী পক্ষ নিজের সাক্ষীকে জেরা করতে পারে? কখন সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে অভিযোগ করা যায়? সমর্থন সাক্ষ্য বা Corroborative Evidence কি? সাক্ষীর স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করার বিধান কি? স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করা কি? 

ইউটিউব ভিডিও - সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ Examination of Witnesses জবানবন্দি জেরা পুন:জবানবন্দি

Popular posts from this blog

Write a paragraph on Pahela Baishakh পহেলা বৈশাখ

Write a paragraph on Pahela Baishakh (পহেলা বৈশাখ) Pahela Baishakh Pahela Baishakh is the part of our culture. It is the first day in Bangla calendar. This day is celebrated throughout the country. The main programme of this day is held in Ramna Botamul. Different socio-cultural organizations celebrate this day with due solemnity. People of all sorts of ages and lives attend this function. Colourful processions are brought out. Watery rice and hilsha fish are served during this function. Women and children put on traditional dresses. The whole country wears a festive look. Different cultural programmes are arranged where singers sing traditional bangla songs. Discussion meetings are held. Radio and television put on special programmes. Newspapers and dailies publish supplementary. Fairs are held here and there on this occasion. Shopkeepers and traders arrange ‘halk hata’ and sweet-meats are distributed. In villages, people go to others’ houses and exchange greetings. Thus Pahela Baisha...

Write a paragraph on environment pollution পরিবেশ দূষণ

Write a paragraph on environment pollution (পরিবেশ দূষণ) Environment Pollution Environment pollution means the pollution of air, water, sound, odour, soil and other elements of it. We need safe and clean environment. Pollution of it has tremendous bad effects. Any sort of pollution may bring the doom of life. At present, our environment is being polluted at an alarming rate, Air, the most important element of environment is polluted by smoke from railway engines and power-houses, or the burning of coal and oil or the making of bricks. Water, another vital element is being polluted by the use of chemicals and insecticides or oil seeping from damaged super tankers or by industrial discharge. Sound pollution is caused by the use of microphones and loud speakers. All these pollutions may wipe out our existence from the earth. The destruction of forest also causes environment imbalance that makes the wild animals wipe out. So, it is our moral duty to prevent environment pollution. We must ...

Ecotourism -Read the passage and answer the questions Unit 9 Lesson 3c English For Today

Read the passage and answer the questions Ecotourism is a booming business that many tour operators cite as being helpful to nature.(পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প একটি দ্রুত সমৃদ্ধিময় ব্যবসা যা পর্যটন পরিচালনাকারীবৃন্দ প্রকৃতির জন্য সহায়ক বলে আখ্যায়িত করেন) Every year, millions of people descend on protected and pristine natural areas to observe rare species. (প্রতি বছর, লক্ষ লক্ষ মানুষ দুর্লভ প্রজাতির প্রাণীগুলোকে দেখতে সংরক্ষিত এবং বিশুদ্ধতা বিরাজমান আছে এমন প্রাকৃতিক অঞ্চল ভ্রমণ করে থাকে।) However, a new report casts doubt on the value of this form of tourism.(যাহোক, একটি নতুন ধরণের পর্যটনের উপকারিতাকে সন্দেহের নজরে দেখছে।) In fact, it suggests that ecotourism is more damaging than helpful to nature. (বাস্তবে, এটি পরামর্শ দিচ্ছে যে পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প প্রকৃতির জন্য সহায়কের চেয়ে অধিকতর ক্ষতিকর।) Details are in a report published in the journal Trends in Ecology and Evolution’. (‘ট্রেন্ডস ইন ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন’ সাময়িক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত বলা হয়...