- Get link
- X
- Other Apps
সুখাধিকার বা Easement কি?
কখন সুখাধিকারসমূহ অর্জন করা হয়?
বিরুদ্ধ দখল বা Adverse Possession কি?
কোন আইনের ক্ষেত্রে তামাদি আইন প্রয়োগ করা যায় না?
দখলবলে মালিকানা স্বত্ব অর্জন
সুখাধিকার বা Easement কি?
১৮৮২ সালের সুখাধিকার আইন এবং তামাদি আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী সুখাধিকার হলো এমন কোন এক ধরণের অধিকার যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অন্যকোন ব্যক্তির জমি বিশেষ কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে। সুখাধিকার দুইভাবে অর্জন হতে পারে যথা;
১. দীর্ঘকালীন ভোগদখলজনিত অধিকার বা প্রেসক্রিপশন এর মাধ্যমে [by Prescription]
২. সুখাধিকার অর্জন এর মাধ্যমে [by Easement]
কখন সুখাধিকারসমূহ অর্জন করা হয়?
যে ক্ষেত্রে কোন দালানে আলো বা বাতাসের প্রবেশ ও ব্যবহার সুখাধিকার হিসাবে এবং অধিকার হিসাবে অব্যাহতভাবে বিশ (২০) বৎসর যাবত শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ করা হয়েছে, এবং যে ক্ষেত্রে কোন পথ বা জলস্রোত অথবা কোন পানির ব্যবহার অথবা অন্য যে কোন সুখাধিকার (ইতিবাচক, নেতিবাচক যাই হোক না কেন) কোন ব্যক্তি সুখাধিকার ও অধিকার হিসাবে তাতে স্বত্ব দাবী করে অব্যাহতভাবে এবং বিশ (২০) বৎসর যাবত শান্তিপূর্ণভাবে ও প্রকাশ্যে ভোগ করেছে, সে ক্ষেত্রে অনুরূপ আলো-বাতাসের প্রবেশ ও ব্যবহার, পথ, জলস্রোত, পানির ব্যবহার অথবা অন্য কোন সুখাধিকার নিরঙ্কুশ ও অলঙ্ঘনীয় অধিকারে পরিণত হবে। সরকারী কোন সম্পত্তিতে সুখাধিকার অর্জন করতে হলে উক্ত অধিকার একনাগাড়ে ৬০ বছর ধরে ভোগ করতে হবে।সরকারী কোন সম্পত্তি ছাড়া অন্যকোন সম্পত্তিতে সুখাধিকার অর্জন করতে হলে উক্ত জমিতে একনাগাড়ে ২০ বছর ধরে ভোগ করতে হবে। সুখাধিকার মামলায় বিশ বৎসর বলতে মামলা দায়েরের তারিখের অব্যাহত পূর্ববর্তী দুই (২) বৎসরের মধ্যে সমাপ্ত বিশ বৎসর বুঝাবে।
বিরুদ্ধ দখল বা Adverse Possession কি?
বিরুদ্ধ দখল বা ১২ বৎসর দখলে থাকার কারণে স্থাবর সম্পত্তিতে যে স্বত্ব তৈরি হয় তা দখলি স্বত্ব নামে পরিচিত। তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বিরুদ্ধ দখল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ২৮ ধারায় বলা হয়েছে কোন সম্পত্তিতে দখল উদ্ধারের জন্য মোকদ্দমা দায়েরের যে তামাদির মেয়াদ আইনে উল্লেখ করা হয়েছে, তা উত্তীর্ণ হওয়ার পর সেই সম্পত্তিতে বাদীর অধিকার বিলুপ্ত হবে। তামাদি আইনের প্রথম তফসিলের ১৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, স্থাবর সম্পত্তি বেদখলের তারিখ হতে ১২ বৎসরের মধ্যে দখল উদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ ধারায় মামলা দায়ের করতে হয় । যদি বাদী এই নির্ধারিত সময়ে মামলা দায়ের না করে তাহলে তামাদি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী সম্পত্তিতে তার অধিকার সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হবে এবং বিবাদীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সম্পত্তিতে বিবাদীর এরুপ দখল লাভ বিরুদ্ধে দখল বলে পরিচিত। অর্থাৎ বিবাদী ১২ বৎসর যাবৎ স্থাবর সম্পত্তিতে নিরবিচ্ছন্ন ও বাধাহীনভাবে দখলে থাকলে এবং বাদী ১২ বৎসরের মধ্যে দখল উদ্ধারে কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ না করলে বিবাদী উক্ত সম্পত্তিতে বিরুদ্ধ দখল অর্জন করে।
কোন আইনের ক্ষেত্রে তামাদি আইন প্রয়োগ করা যায় না?
তামাদি আইনের ২৯ ধারা অনুযায়ী যেক্ষেত্রে কোন বিশেষ আইনে কোন মামলা, আপীল বা আবেদন দায়েরের জন্য তামাদি আইনের প্রথম তফসিলে বর্ণিত মেয়াদ অপেক্ষা ভিন্ন মেয়াদ উল্লেখ করেছে, সেই ক্ষেত্রে-
i.তামাদি আইনের ৩ ধারা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ বিশেষ আইনে উল্লেখিত তামাদির মেয়াদের পর মোকদ্দমা, আপীল বা আবেদন দায়ের করলে, তামাদি আইনের ৩ ধারার বিধান অনুসারে উক্ত মোকদ্দমা, আপীল বা আবেদন খারিজ হবে।
ii.কোন মামলা, আপীল বা আবেদন দাখিলের জন্য বিশেষ আইন দ্বারা নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ গণনা করার উদ্দেশ্যে-
ক. তামাদি আইনের ৪ ধারা, ৯ থেকে ১৮ ধারা, এবং ২২ ধারা প্রযোজ্য হবে সেই পর্যন্ত যে পর্যন্ত বিশেষ আইন দ্বারা ব্যক্তভাবে বাদ দেওয়া হয়নি।
খ. অবশিষ্ট ধারাসমূহ প্রযোজ্য হবেনা।
যেমন তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ৫ ধারা বিশেষ আইন যেমন বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ ও অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এ উল্লেখিত মোকদ্দমা, আপীল বা আবেদন দাখিলের জন্য প্রযোজ্য হবেনা। বিশেষ আইনে উল্লেখিত তামাদির মেয়াদের পর আপীল দায়ের করা হলে, তামাদি আইনের ৫ ধারায় বিলম্ব মওকূপের আবেদন গ্রহণযোগ্য না। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩০ ধারায় বলা হয়েছে, 'এই আইনের অধীন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের আদেশ, রায় বা শাস্তির বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে এমন আদেশ জারীর তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে আপীল দায়ের করা যাবে। উদাহরণ: বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর অধীন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক A দণ্ডিত হয়। সুতরাং A হাইকোর্ট বিভাগে আপীল করবে ৩০ দিনের মধ্যে। কিন্তু সে ৭০ দিন বিলম্বে আপীল করেছে এবং তামাদি আইনের ৫ ধারার অধীন বিলম্ব মওকুফের আবেদনও করেছে। এই ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৩ ধারা প্রযোজ্য এবং হাইকোর্ট বিভাগ আপীলটি খারিজ করে দিবে। যেহেতু বিশেষ আইনের ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৫ ধারা প্রযোজ্য হয়না, সেহেতু হাইকোর্ট বিভাগ ৫ ধারায় বিলম্ব মওকুফের আবেদনও গ্রহণ করবেনা।
তবে এখানে মনে রাখতে হবে যে, তামাদি আইনের কোন বিধান ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের (১৮৭২ সালের ৯নং আইন) ২৫ ধারাকে প্রভাবিত করবে না। এটা বলা হয়েছে তামাদি আইন ধারা ২৯(১)]। তামাদি আইনের কোন বিধান বিবাহ-বিচ্ছেদ আইন (১৯৬৯ সালের ৪নং আইন) অনুসারে আনীত মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এটা বলা হয়েছে তামাদি আইন ধারা ২৯(৩)]। যে সকল এলাকা ১৮৮২ সালের সুখাধিকার আইনের আওতাভুক্ত সে সকল এলাকা থেকে উদ্ভূত মামলার ক্ষেত্রে এই আইনের ২৬ ও ২৭ ধারা এবং ২ ধারায় বর্ণিত ‘সুখাধিকার’ এর সংজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না [এটা বলা হয়েছে তামাদি আইন ধারা ২৯(৪)]। তামাদি আইন মূল ফৌজদারী মামলায প্রযোজ্য নয়। তবে ফৌজদারী আপীলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
টপিকস
দখলবলে মালিকানা স্বত্ব অর্জন। সুখাধিকার বা Easement কি? কখন সুখাধিকারসমূহ অর্জন করা হয়? বিরুদ্ধ দখল বা Adverse Possession কি? কোন আইনের ক্ষেত্রে তামাদি আইন প্রয়োগ করা যায় না?