- Get link
- X
- Other Apps
তামাদি আইনের বিলম্ব মওকুফ Condonation of Delay
কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে?কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ ধারার বিধান প্রযোজ্য?
কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ ধারার বিধান প্রযোজ্য না?
তামাদি আইনের ৫ ধারার আবেদনের ক্ষেত্রে বিলম্বের যথেষ্ট কারণ কি কি?
আইনগত অপারগতা বা Legal Disability কি?
কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ ধারার বিধান প্রযোজ্য?
কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ ধারার বিধান প্রযোজ্য না?
আইনগত অপারগতার ক্ষেত্রে কখন মোকদ্দমা দায়েরের তামাদির মেয়াদ গণনা শুরু হবে?
একাধিক বাদী অথবা দরখাস্তকারীর মধ্যে একজনের অপারগতা হলে তামাদি মেয়াদ কত?
তামাদি আইনের ৬ ও ৭ ধারার আইনগত অপারগতার বিশেষ ব্যতিক্রম কি?
অগ্রক্রয়ের মামলা করার তামাদি মেয়াদ কত?
কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে?
তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ৫ ধারায় তামাদির বিলম্ব মওকুফের আবেদন করতে হয়। সাধারণ নিয়ম হলো, কোন আপীল, রিভিউ এবং রিভিশন আইনে তামাদি আইনের প্রথম সিডিউলে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে দায়ের করতে হয়। আপীল, রিভিউ, রিভিশন বা আবেদন ইত্যাদি নির্ধারিত সময়ে দাখিল করতে না পারলে আদালত ৩ ধারার বিধান অনুযায়ী উক্ত দরখাস্ত খারিজ করে দিতে পারে। বিলম্বে আপীল, রিভিউ, রিভিশন বা কোন আবেদন করার কারণে যেন উক্ত আপীল, রিভিউ, রিভিশন বা আবেদনটি খারিজ না হয়, সেই জন্যে উক্ত আবেদনের সাথে ৫ ধারায় বিলম্ব মওকুফের আবেদন করতে বা সময় বৃদ্ধির আবেদন করতে হবে। আপীলকারী বা দরখাস্তকারী যদি আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারে যে, নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে আপীল দায়ের বা দরখাস্তটি দাখিল না করার যথেষ্ট কারণ ছিল, তাহলে আদালত বিলম্ব মওকুফের আবেদন মঞ্জুর করতে পারে।
কোন কোন বিচারিক কার্যক্রমে তামাদি আইনের ৫ ধারার বিধান প্রযোজ্য?
তামাদি আইনের ৫ ধারা নিম্নলিখিত ৫টি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থাৎ নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে বিলম্ব মওকুফের আবেদন করা যায় বা সময় বৃদ্ধির আবেদন দায়ের করা যায়।
১. আপীল:
২. আপীল করার অনুমতির দরখাস্ত;
৩. রায় রিভিউ এর আবেদন;
৪. রিভিশনের দরখাস্ত;
৫. অন্যকোন আবেদনের ক্ষেত্রে যেখানে ৫ ধারা প্রযোজ্য করা যায়।
কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ ধারার বিধান প্রযোজ্য না?
লিমিটেশন এ্যাক্ট বা তামাদি আইন ১৯০৮ এর ৫ ধারা স্যুটের বা মূল মামলা যেমন স্বত্ব ঘোষণা, চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদন, স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি দায়ের করার মেয়াদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ মূল মামলা বা স্যুট দায়ের করার জন্য নির্ধারিত সময় অতিক্রম হয়ে গেলে উক্ত সময় মওকুফ করার জন্য ৫ ধারায় আবেদন গ্রহণযোগ্য না।
তামাদি আইনের ৫ ধারার আবেদনের ক্ষেত্রে বিলম্বের যথেষ্ট কারণ কি কি?
বিভিন্ন মামলায় তামাদি আইনের ৫ ধারার আবেদনের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিলম্বের যথেষ্ট কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১. মামলা দায়েরের পর আইনে পরিবর্তন,
২. পক্ষগণের অসুস্থতা, পক্ষগণের কারাবাস,
৩. দারিদ্রতা বা অর্থের অভাব, যেক্ষেত্রে পক্ষ সরকারী কর্মকর্তা,
৪. অশিক্ষিত বা অজ্ঞতা, সাধারণ অবহেলা, আইনজীবির প্রকৃত ভুল ইত্যাদি বিলম্বের যথেষ্ট কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
উদাহরণ: ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির অধীন ডিক্রি বা আদেশের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে জেলা জজের নিকট আপীল দায়ের করা যায়। কিন্তু যথেষ্ট কারণে উক্ত ৩০ দিনের মধ্যে আপীল দায়ের না করতে পারলে, পরবর্তীতে বিলম্ব মওকুফের আবেদনসহ আপীল দায়ের করতে হবে। যদি বিলম্বের যথেষ্ট কারণ থাকে এবং বিলম্বের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা থাকলে আদালত উক্ত বিলম্ব মওকুফের আবেদন মঞ্জুর করে আপীল গ্রহণ করতে পারে কিন্তু মূল মামলা যেমন সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন; ১৮৭৭ এর ৯ ধারার অধীন দখল পুনরুদ্ধারের জন্য বেদখল হওয়ার তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হয়। এই ক্ষেত্রে কোন বেদখলকৃত ব্যক্তি ৬ মাসের মধ্যে মামলা দায়ের করতে না পারলে, মামলাটি তামাদি আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী আদালত খারিজ করে দিবে এবং বাদী তামাদি আইনের ৫ ধারার অধীন বিলম্ব মওকুফের জন্য আবেদন করলেও আদালত তা না-মঞ্জুর করে মামলা খারিজ করে দিতে বাধ্য। কারণ মূল মামলার ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৫ ধারা প্রযোজ্য না।
আইনগত অপারগতা [Legal Disability]
তামাদি আইনের ৬, ৭, ৮ এবং ৯ ধারায় আইনগত অপারগতার নিয়ম বর্ণনা করা হয়েছে। যে ব্যক্তির মামলা করার অধিকার সৃষ্টি হয়েছে সে যদি উক্ত সময় মামলা করতে আইনগতভাবে অপারগ থাকে, তাহলে তার মামলা করার তামাদির মেয়াদ কিভাবে গণনা করা হবে তা তামাদি আইনের ৬ থেকে ৯ ধারা পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে। তামাদি আইনের ধারা ৬ এবং ৭ এ যে সকল বিধান আলোচনা করা হয়েছে তার ব্যতিক্রম তামাদি আইনের ধারা ৮-এ উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ তামাদি আইনের ৮ ধারার বিধান সাপেক্ষে তামাদি আইনের ধারা ৬ এবং ৭ ধারা ব্যাখ্যা করতে হবে।
আইনগত অপারগতা বা Legal Disability কি?
তামাদি আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী ৩টি বিষয়কে আইনগত অপারগতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১. নাবালকত্ব বা Minority
২. উন্মাদ বা Insanity
৩. জড়বুদ্ধি বা চরম বুদ্ধিহীনতা বা Idiocy
কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ ধারার বিধান প্রযোজ্য?
তামাদি আইনের ৬ ধারার বিধান শুধুমাত্র-
১. মোকদ্দমা Suit] বা কার্যক্রম Proceedings] বা
২. ডিক্রি জারির আবেদন এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ ধারার বিধান প্রযোজ্য না?
তামাদি আইনের ৬ ধারা আপীল, রিভিউ, রিভিশন বা আবেদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না। যেমন আপীল দায়েরের সময় যদি আপীলকারী আইনগত অপারগ হয়, তাহলে আপীল দায়েরের তামাদির মেয়াদ গণনা স্থগিত থাকবে না।
তামাদি আইনের ৬ থেকে ৮ ধারা কোন নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধি ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে যদি সে মামলায় বাদী হয় অর্থাৎ সে যদি মামলা দায়ের করে বা ডিক্রি জারির আবেদন করে। কিন্তু সে যদি বিবাদী হয় বা তার বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ থেকে ৮ ধারা প্রযোজ্য না এবং এই ক্ষেত্রে তামাদি আইনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা করতে হবে।
আইনগত অপারগতার ক্ষেত্রে কখন মোকদ্দমা দায়েরের তামাদির মেয়াদ গণনা শুরু হবে?
মামলা করার অধিকারী কোন ব্যক্তি যে সময়ে সে মামলা করার অধিকারী হয় উক্ত সময়ে সে নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধি থাকলে তার মামলা করার তামাদির মেয়াদ গণনা করা শুরু হবে যখন তার এই আইনগত অপারগতা অর্থাৎ নাবালকত্ব, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধিতার অবসান হবে তখন থেকে।
একাধিক বাদী অথবা দরখাস্তকারীর মধ্যে একজনের অপারগতা হলে তামাদি মেয়াদ কত?
তামাদি আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী যে ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি মামলা বা কার্যধারা দায়ের করার অধিকারী হয় বা ডিক্রি জারির জন্য দরখাস্ত দাখিল করার অধিকারী হয় এবং তাদের সকলেই আইনগত অক্ষম হলে তাদের কারোর বিরুদ্ধে তামাদি অতিবাহিত হবে না। কিন্তু যদি এমন হয় যে, তাদের মধ্যে এক বা একাধিক ব্যক্তি আইনগতভাবে অক্ষম কিন্তু বাকিরা আইনগতভাবে সক্ষম বা সুস্থ, সেই ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ সকলের বিরুদ্ধে অতিবাহিত হবে কি হবে না তা নিম্নলিখিত ভাবে নির্ধারণ করতে হবে;
১. যে সকল ব্যক্তি আইনগতভাবে অপারগ তাদের সম্মতি ছাড়া যে ব্যক্তি আইনগতভাবে অপারগ না সে যদি দায়মুক্তি বা ঋণ পরিশোধ করতে পারে তাহলে সকলের বিরুদ্ধে তামাদির মেয়াদ অতিবাহিত হবে।
২. কিন্তু আইনগতভাবে সক্ষম ব্যক্তি আইনগত অপারগ ব্যক্তিদের সম্মতি ছাড়া দায়মুক্তি বা ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে, তাদের কারোর বিরুদ্ধে তামাদির মেয়াদ অতিবাহিত হবেনা।
তামাদি আইনের ৬ ও ৭ ধারার আইনগত অপারগতার বিশেষ ব্যতিক্রম কি?
তামাদি আইনের ৮ ধারায় উল্লেখিত বিশেষ ব্যতিক্রম সাপেক্ষে ৬ ও ৭ ধারায় উল্লেখিত আইনগত অক্ষমতা বিশ্লেষণ করতে হবে। তামাদি আইনের ৬ ও ৭ ধারার বিধান নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবেনা।
১. অগ্রক্রয়ের অধিকার বলবৎকরণের মামলায় এবং
২. আইনগত অপারগতা অবসান হওয়ার থেকে বা আইনগত অক্ষম ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ার তিন (৩) বছরের বেশী সময় তামাদির মেয়াদ থাকবে না এবং এই সময়ের মধ্যে যেকোন মোকদ্দমা অবশ্যই দায়ের করতে হবে বা আবেদন করতে হবে।
অগ্রক্রয়ের মামলা করার তামাদি মেয়াদ কত?
তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে, অগ্রক্রয়ের মোকদ্দমা দায়ের করার তামাদির মেয়াদ ১ বৎসর। যখন ক্রেতা উক্ত সম্পত্তির দখল গ্রহণ করে তখন থেকে ১ বৎসর বা যেক্ষেত্রে বিক্রয়ের বিষয়বস্তুতে বাস্তবিক দখল স্বীকার করে না সেই ক্ষেত্রে বিক্রয় দলিলটি যখন নিবন্ধন করা হয়েছিল তখন থেকে ১ বৎসরের মধ্যে অগ্রক্রয়ের মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে। যদি বিক্রয় দলিলে বাস্তবিক দখল স্বীকার না করা হয় এবং যদি বিক্রয় দলিলটি নিবন্ধিত না হয়, উক্ত ক্ষেত্রে অগ্রক্রয়ের মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৬ বৎসরের মধ্যে।
যেক্ষেত্রে অগ্রক্রয়াধিকারী একজন আইনগতভাবে অক্ষম যেমন নাবালক, উক্ত ক্ষেত্রে অগ্রক্রয়ের অধিকার তার অভিভাবক দাবী করতে পারে কিন্তু মোকদ্দমাটি উপরে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে দায়ের করতে হবে এবং অগ্রক্রয়াধিকারী আইনগতভাবে অক্ষম বা একজন নাবালক এই কারণে ৮ ধারা অনুসারে তামাদির মেয়াদ গণনা স্থগিত থাকবেনা এবং আইনগত অক্ষম থাকার কারণে যদি উল্লেখিত সময়ের মধ্যে অগ্রক্রয়ের মোকদ্দমা দায়ের না করে, তাহলে মোকদ্দমাটি খারিজ হবে। কারণ অগ্রক্রয়ের ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ ও ৭ ধারা প্রযোজ্য হয়না।
উদাহরণ: তামাদি আইনের প্রথম তফসিলের ১২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বংশগত পদ লাভের জন্য মামলা দায়ের করার তামাদির মেয়াদ হলো ১২ বৎসর। ক নাবালক থাকাবস্থায় উক্ত বংশগত পদ লাভের জন্য মামলা দায়ের করার অধিকার অর্জন করে এবং এর ১১ বৎসর পর সে সাবালক হয়। সুতরাং ক মামলা করার জন্য অবশিষ্ট ১ বৎসর সময় পাবে। কিন্তু যেহেতু ক নাবালক ছিল, সেহেতু তামাদি আইনের ৮ ধারা অনুসারে সে তার নাবালকত্ব অবসান হওয়ার পর থেকে তথা সাবালক হওয়ার পর থেকে ৩ বৎসরের মধ্যে মোকদ্দমা দায়ের করার সময় পাবে। তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ৯ ধারায় বলা হয়েছে, যেক্ষেত্রে একবার তামাদির মেয়াদ গণনা শুরু হয়ে গেছে, মামলা করতে পরবর্তী কোন অপারগতা বা অক্ষমতা তা বন্ধ করতে পারেনা।
টপিকস
কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে? কোন কোন বিচারিক কার্যক্রমে তামাদি আইনের ৫ ধারার বিধান প্রযোজ্য? কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ ধারার বিধান প্রযোজ্য না? তামাদি আইনের ৫ ধারার আবেদনের ক্ষেত্রে বিলম্বের যথেষ্ট কারণ কি কি? আইনগত অপারগতা বা Legal Disability কি? কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ ধারার বিধান প্রযোজ্য? কোন কোন ক্ষেত্রে তামাদি আইনের ৬ ধারার বিধান প্রযোজ্য না? আইনগত অপারগতার ক্ষেত্রে কখন মোকদ্দমা দায়েরের তামাদির মেয়াদ গণনা শুরু হবে? একাধিক বাদী অথবা দরখাস্তকারীর মধ্যে একজনের অপারগতা হলে তামাদি মেয়াদ কত? তামাদি আইনের ৬ ও ৭ ধারার আইনগত অপারগতার বিশেষ ব্যতিক্রম কি? অগ্রক্রয়ের মামলা করার তামাদি মেয়াদ কত?
ইউটিউব ভিডিও -তামাদি আইনের বিলম্ব মওকুফ Condonation of Delay