- Get link
- X
- Other Apps
চুক্তিভঙ্গের প্রতিকার কি?
কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করা যেতে পারে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন অর্থ কি?
কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যেতে পারে?
কিভাবে চুক্তিভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবে কি না তা নির্ণয় করা যায়?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মামলায় বাদীকে কি প্রমাণ করতে হবে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলায় কোর্ট ফি কত?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলার তামাদি মেয়াদ কতদিন?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চুক্তিটি কি নিবন্ধিত হওয়ার প্রয়োজন আছে?
যদি চুক্তির বিষয়বস্তু আংশিকভাবে বিলুপ্ত হয় তাহলে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ করা যায় কিনা?
যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ সামান্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা?
যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ উল্লেখযোগ্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা?
কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে?
কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশসহ বা অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে?
সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মোকদ্দমা দায়েরের সময় চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবী না করা হলে ফলাফল কি?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন মামলার তামাদির মেয়াদ কত বছর?
বায়না অর্থ বা চুক্তির প্রতিদান ফেরতের মামলা করা যায় কিনা?
কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করা যেতে পারে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন অর্থ কি?
কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যেতে পারে?
কিভাবে চুক্তিভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবে কি না তা নির্ণয় করা যায়?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মামলায় বাদীকে কি প্রমাণ করতে হবে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলায় কোর্ট ফি কত?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলার তামাদি মেয়াদ কতদিন?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চুক্তিটি কি নিবন্ধিত হওয়ার প্রয়োজন আছে?
যদি চুক্তির বিষয়বস্তু আংশিকভাবে বিলুপ্ত হয় তাহলে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ করা যায় কিনা?
যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ সামান্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা?
যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ উল্লেখযোগ্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা?
কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে?
কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশসহ বা অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে?
সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মোকদ্দমা দায়েরের সময় চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবী না করা হলে ফলাফল কি?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন মামলার তামাদির মেয়াদ কত বছর?
বায়না অর্থ বা চুক্তির প্রতিদান ফেরতের মামলা করা যায় কিনা?
চুক্তি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন প্রসঙ্গে [Of the Specific Performance of Contracts]
চুক্তিভঙ্গের প্রতিকার কি?
যখন কোন চুক্তিভঙ্গ করা হয়, তখন ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ নিম্নলিখিত এক বা একাধিক প্রতিকার প্রার্থনা করতে পারে।
1. চুক্তি রদ [Rescission of the contract]
২. ক্ষতিপূরণের মোকদ্দমা [Suit for damages]
৩. নিষেধাজ্ঞার জন্য মোকদ্দমা [Suit for an injunction]
৪. চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের জন্য মোকদ্দমা [Suit for specific performance of the contract]
চুক্তিভঙ্গের কারণে যে সকল প্রতিকার ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ পেতে পারে সেই সংক্রান্ত বিধান চুক্তি আইন ছাড়াও সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন ধারায় আলোচনা করা হয়েছে। যেমন সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১২ থেকে ৩০ ধারায় চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ বিষয়ে, ৩৫ থেকে ৩৮ ধারায় চুক্তি রদ বিষয়ে এবং চুক্তিভঙ্গের কারণে যদি নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা করে সেই ক্ষেত্রে ৫২ থেকে ৫৭ ধারা প্রযোজ্য হতে পারে। উল্লেখিত প্রতিকারগুলোর মধ্যে
ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ কোন প্রতিকার বা প্রতিকারগুলোর জন্য মোকদ্দমা করবে সেটা চুক্তি বিষয়বস্তু এবং আইন অনুসারে নির্ধারণ করতে হবে।
কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করা যেতে পারে? [Contracts which may be specifically enforced]
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন অর্থ কি?
চুক্তিতে শর্তসমূহ যেভাবে উল্লেখ আছে বা চুক্তির শর্তসমূহ যেভাবে কার্যকর করার বিধান চুক্তিতে উল্লেখ আছে, যদি চুক্তির শর্তসমূহ সেইভাবে কার্যকর করা হয়, তাহলে চুক্তিটি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর বা বলবৎ হয়েছে বলে গণ্য হবে। যে পক্ষ চুক্তি ভঙ্গ করেছে সেই পক্ষ চুক্তি অনুসারে যে কার্য বা দায়িত্ব পালনে সম্মত হয়েছিল, আদালত সেই পক্ষকে সম্মত দায়িত্ব বা কার্যটি পালন করতে নির্দেশনা দিয়ে চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন করতে পারে। চুক্তির কোন পক্ষ চুক্তিভঙ্গ করলে অপর পক্ষ ক্ষতিপূরণ এবং চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন উভয় ধরণের প্রতিকার পেতে পারে। এই ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ হলো বিকল্প প্রতিকার এবং চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন হলো সুনির্দিষ্ট প্রতিকার। চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ এবং চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন উভয় ধরণের প্রতিকার থাকলেও, চুক্তিভঙ্গের জন্য সাধারণত যে প্রতিকারটি পাওয়া যায়, তাহলো ক্ষতিপূরণ বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ। কিন্তু যেক্ষেত্রে চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় না বা পর্যাপ্ত হয়। না, সেই ক্ষেত্রে আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের প্রতিকার মঞ্জুর করতে পারে। অর্থাৎ চুক্তিভঙ্গের জন্য সাধারণত ক্ষতিপূরণের প্রতিকার পাওয়া যায় এবং শুধুমাত্র কিছু ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের প্রতিকার দিতে পারে। কোন কোন ব্যতিক্রম শর্তে আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের প্রতিকার মঞ্জুর করতে পারে তা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১২ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।
কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যেতে পারে?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী আদালত ৪টি ক্ষেত্রে চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের আদেশ দিতে পারে।
যে ৪টি ক্ষেত্রে চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের আদেশ মঞ্জুর করা যেতে পারে তাহলো-
ক. যখন সম্মতিভুক্ত কার্যসম্পাদন পুরোপুরি বা আংশিক একটি অছি বা জিম্মার [Trust] অন্তর্ভূক্ত হয়।
খ. যখন সম্মতিভুক্ত কার্যসম্পাদন না করলে যে ক্ষতি হবে তার পরিমাণ নির্ণয়ের কোন মানদন্ড না থাকলে।
গ. যখন সম্মতিভুক্ত কাজটি এমন হয় যে, তা সম্পাদন না করলে আর্থিক ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে পর্যাপ্ত প্রতিকার লাভ করা যায় না।
ঘ. যখন এমন সম্ভাবনা থাকে যে, সম্মতিভূক্ত কার্যসম্পাদন না করার জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না।
অর্থাৎ কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎযোগ্য কিনা তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে-
১. চুক্তির বিষয়বস্তু ট্রাস্ট কিনা?
২. চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে কিনা বা পর্যাপ্ত হবে কিনা?
৩. চুক্তির বিষয়বস্তু স্থাবর সম্পত্তি কিনা?
তাহলে সোজা বাংলায় বলা যায়, চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ নির্ণয়ের কোন মানদণ্ড না থাকলে বা
পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ না থাকলে বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়া না গেলে, আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের প্রতিকার মঞ্জুর করতে পারে। বিপরীতভাবে বলা যায়, আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হলে বা নির্ণয় করা গেলে বা পাওয়া গেলে, আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের প্রতিকার দিবেনা বরং ক্ষতিপূরণ প্রতিকার দিবে। এখন প্রশ্ন হলো আদালত কিভাবে বুঝতে পারবে যে, কোন চুক্তিভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবে আর কোন চুক্তিভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবেনা।
কিভাবে চুক্তিভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবে কি না তা নির্ণয় করা যায়?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ১২ ধারার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যদিনা এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না ভিন্ন কিছু প্রমাণিত হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আদালত অবশ্যই অনুমান করবে যে, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চুক্তিভঙ্গের পর্যাপ্ত প্রতিকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব না, এবং অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চুক্তিভঙ্গের প্রতিকার এভাবে করা যায়। সুতরাং চুক্তিভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবে কি হবেনা তা নির্ধারণের জন্য দেখতে হবে চুক্তির বিষয়বস্তু কি? যদি চুক্তির বিষয়বস্তু স্থাবর সম্পত্তি যেমন জমি বিক্রয়ের চুক্তি বা জমি লিজের বা বন্ধকের চুক্তি হয়, তাহলে আদালত ধরে নিবে চুক্তি ভঙ্গের প্রতিকার পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব না এবং এই ক্ষেত্রে আদালত চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশ দিতে পারে । কিন্তু যদি চুক্তির বিষয়বস্তু অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের হয় যেমন গম বিক্রয়ের চুক্তি হয়, তাহলে আদালত ধরে নিবে চুক্তিভঙ্গের প্রতিকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে দেওয়া যায় এবং এই ক্ষেত্রে আদালত চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশ দিবে না বরং আর্থিক ক্ষতিপূরণ মঞ্জুর করতে পারে যদি বাদী প্রার্থনা করে। সুতরাং বলা যায়, আইনের সাধারণ নীতি হলো স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে
বলবৎযোগ্য কিন্তু অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎযোগ্য না। শুধুমাত্র কতিপয়
ব্যতিক্রম প্রেক্ষাপটে অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চুক্তিও সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎযোগ্য হতে পারে।
চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মামলায় বাদীকে কি প্রমাণ করতে হবে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের প্রতিকার মঞ্জুর করা বা না করা আদালতের বিবেচনামূলক ক্ষমতা। অর্থাৎ এটা আদালতের সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে। তাই চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের মোকদ্দমায় বাদী-
১. আদালতকে সন্তুষ্ট করবে যে, চুক্তিটি চুক্তি আইন অনুযায়ী একটি বৈধ চুক্তি এবং বাদী চুক্তিতে তার দায়িত্ব পালন করেছে বা করতে প্রস্তুত;
২. আদালতকে সন্তুষ্ট করবে যে, চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১২ ধারার ক থেকে ঘ অনুচ্ছেদে
উল্লেখিত শর্তের মধ্যে সর্বনিম্ন একটি শর্ত পূরণ করছে। অর্থাৎ চুক্তিটি যে এই ৪টি শর্তের যে কোন একটি শর্ত পূরণ করেছে তা বাদী প্রমাণ করবে। যেমন বাদী আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারে যে, চুক্তিটি ভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবেনা।
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলায় কোর্ট ফি কত?
১২ ধারায় চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলায় মূল্যের আনুপাতিক বা অ্যাডভেলোরাম কোর্ট ফি দিতে হবে। যেমন বিক্রয় চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের মোকদ্দমার ক্ষেত্রে চুক্তির প্রতিদান বা মূল্য অনুযায়ী কোর্ট ফি হিসাব করতে হবে।
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলার তামাদি মেয়াদ কতদিন?
তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের মোকদ্দমা দায়েরের
তামাদির মেয়াদ ১ বৎসর। যেক্ষেত্রে চুক্তি পালনের জন্য নির্ধারিত তারিখ থাকে তখন থেকে বা যখন অনুরুপ কোন তারিখ নির্দিষ্ট থাকে না, সেই ক্ষেত্রে বাদী যখন অবগত হয় যে চুক্তি পালন অস্বীকৃত হয়েছে, তখন থেকে চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মোকদ্দমা দায়েরের তামাদির মেয়াদ গণনা শুরু হয়।
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চুক্তিটি কি নিবন্ধিত হওয়ার প্রয়োজন আছে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চুক্তিটি নিবন্ধিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। মৌখিক চুক্তিও সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎযোগ্য। কিন্তু আইনে চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চুক্তির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হলে, সেই ক্ষেত্রে চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের জন্য চুক্তিটি অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে। যেমন ২১ক ধারা অনুসারে স্থাবর সম্পত্তির বায়না চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করার ক্ষেত্রে চুক্তিটি অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে।
যদি চুক্তির বিষয়বস্তু আংশিকভাবে বিলুপ্ত হয় তাহলে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ করা যায় কিনা?
চুক্তি আইনের ৫৬ ধারায় বলা হয়েছে, চুক্তি সম্পাদনের সময় চুক্তির বিষয়বস্তু বিদ্যমান থাকলেও, যদি চুক্তি বাস্তবায়নের সময় চুক্তির বিষয়বস্তু বিলুপ্ত হয়, তাহলে উক্ত চুক্তিটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী কার্য সম্পাদনের সময়, তা আংশিকভাবে বিলুপ্ত হবার
কারণে চুক্তি অনুসারে কার্য সম্পাদন পুরোপুরি অসম্ভব হবে না। অর্থাৎ অন্য কোন প্রতিকার থাকলে তার মাধ্যমে চুক্তিটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে যেমন আর্থিক ক্ষতিপূরণ মঞ্জুর করে বা ক্রয়মূল্য পরিশোধ করে চুক্তিটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ সামান্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী যেখানে চুক্তির অসম্পাদিত অংশ সামান্য সেক্ষেত্রে চুক্তির কোন এক পক্ষ যদি-
ক. চুক্তির সমস্ত অংশ পালনে অপারগ হয়,
খ. কিন্তু অসম্পাদিত অংশ সম্পূর্ণ অংশের মূল্যের দিক থেকে শুধুমাত্র একটি সামান্য অংশ হয়, এবং
গ. উক্ত পক্ষ আর্থিক ক্ষতিপূরণ স্বীকার করে নিলে
আদালত যেকোন পক্ষের মামলার প্রেক্ষাপটে- চুক্তির যতটুকু অংশ সম্পাদনযোগ্য ততটুকু অংশ সম্পাদন করার জন্য আদেশ দিবে এবং বাকি অসম্পাদিত অংশের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে।
যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ উল্লেখযোগ্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী যেখানে চুক্তির অসম্পাদিত অংশ উল্লেখযোগ্য সেক্ষেত্রে চুক্তির কোন এক পক্ষ যদি-
ক. চুক্তির সমস্ত অংশ পালনে অপারগ হয়, এবং
খ. যে অংশটুকু অসম্পাদিত হিসাবে আবশ্যিকভাবে পরিত্যাক্ত থাকবে তা সম্পূর্ণ কাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হয়, এবং
গ. আর্থিক ক্ষতিপূরণ স্বীকার না করলে, তাহলে
সে সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের ডিক্রি পাওয়ার অধিকারী হবেনা। কিন্তু আদালত অপর পক্ষের মামলার প্রেক্ষাপটে চুক্তিভঙ্গকারী পক্ষকে তার পক্ষে যতটুকু সম্পাদন করা সম্ভব, চুক্তির ততটুকু অংশ সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করার নির্দেশ দিতে পারে, যদি বাদীপক্ষ আরও কার্যসম্পাদনের দাবী পরিত্যাগ করে এবং কার্য সম্পাদনের ত্রুটি অথবা বিবাদীর ত্রুটির জন্য তার ক্ষতি বা অনিষ্টের জন্য সকল ক্ষতিপূরণের অধিকার ত্যাগ করে।
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের অতিরিক্ত হিসাবে বা পরিবর্তে ক্ষতিপূরণের বিধান:
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১৯(১) ধারায় চুক্তিভঙ্গের জন্য বাদী চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের আদেশসহ
অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পারে বা চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারে। ১৯ ধারা অনুযায়ী আদালত ২ ধরণের সিদ্ধান্ত দিতে পারে-সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ এবং চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশসহ বা অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ।
কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের মোকদ্দমায় যদি আদালত মনে করে,
i. চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের আদেশ দেওয়া উচিত হবে না, কিন্তু
ii. বাদী ও বিবাদীর মধ্যে একটা চুক্তি ছিল যা বিবাদী ভঙ্গ করেছে এবং যার জন্য বাদী ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী, তখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিবে।
কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশসহ বা অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের মোকদ্দমায় যদি আদালত মনে করে,
i. চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন আদেশ দেওয়া উচিত হবে, কিন্তু
ii. মোকদ্দমার ন্যায় বিচারের স্বার্থে এইটুকু যথেষ্ট না এবং চুক্তিভঙ্গের জন্য বাদীকে কিছু ক্ষতিপূরণও
প্রদান করা যায়, তাহলে আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশসহ অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুর করবে।
সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মোকদ্দমা দায়েরের সময় চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবী না করা হলে ফলাফল কি?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মোকদ্দমা দায়েরের সময় চুক্তিভঙ্গের জন্য বাদী ক্ষতিপূরণ দাবী করতে পারে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ২৯ ধারা অনুযায়ী যদি চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মোকদ্দমা দায়েরের সময় চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবী না করা হয়, তাহলে মোকদ্দমাটি খারিজ হলে বাদী পরবর্তীতে ক্ষতিপূরণের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারবে না।
চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন মামলার তামাদির মেয়াদ কত বছর?
যেক্ষেত্রে চুক্তিভঙ্গের জন্য চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালন ছাড়া শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয় সেক্ষেত্রে
চুক্তিভঙ্গের তারিখ হতে ৩ বছরের মধ্যে মামলা করতে হবে। অর্থাৎ চুক্তিভঙ্গের জন্য শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণের মামলা করতে হবে চুক্তিভঙ্গের তারিখ হতে ৩ বছরের মধ্যে। কিন্তু যেক্ষেত্রে চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের সাথে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ অর্থাৎ ১ বছর প্রযোজ্য হবে ।
বায়না অর্থ [Earnest Money] বা চুক্তির প্রতিদান ফেরতের মামলা করা যায় কিনা?
যেক্ষেত্রে বাদী সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ১৯ ধারায় চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের সাথে ক্ষতিপূরণের দাবী করতে পারতো কিন্তু করেনি, সেক্ষেত্রে মামলাটি খারিজ হলে বাদী ২৯ ধারার কারণে নতুন করে ক্ষতিপূরণের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারবেনা কিন্তু চুক্তির জন্য সমুদয় বা আংশিক পরিশোধিত বায়না অর্থ (প্রতিদান) ফেরতের মামলা করতে পারবে। চুক্তির জন্য বায়না অর্থ (প্রতিদান) চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মামলা খারিজ হওয়ার তারিখ হতে ৩ বছরের মধ্যে দায়ের করতে হবে [তামাদি আইন, ১৯০৮, অনুচ্ছেদ ৯৭]।
টপিকস
চুক্তিভঙ্গের প্রতিকার কি? কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করা যেতে পারে? চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন অর্থ কি? কোন কোন চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যেতে পারে? কিভাবে চুক্তিভঙ্গের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত হবে কি না তা নির্ণয় করা যায়? চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মামলায় বাদীকে কি প্রমাণ করতে হবে? চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলায় কোর্ট ফি কত? চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মামলার তামাদি মেয়াদ কতদিন? চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চুক্তিটি কি নিবন্ধিত হওয়ার প্রয়োজন আছে? যদি চুক্তির বিষয়বস্তু আংশিকভাবে বিলুপ্ত হয় তাহলে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ করা যায় কিনা? যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ সামান্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা? যদি চুক্তির অসম্পাদিত অংশ উল্লেখযোগ্য সেখানে চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পাদন করা যাবে কিনা? কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে? কখন আদালত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের আদেশসহ বা অতিরিক্ত হিসাবে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারে? সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের মোকদ্দমা দায়েরের সময় চুক্তিভঙ্গের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবী না করা হলে ফলাফল কি? চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন মামলার তামাদির মেয়াদ কত বছর? বায়না অর্থ বা চুক্তির প্রতিদান ফেরতের মামলা করা যায় কিনা?