- Get link
- X
- Other Apps
চুক্তি রদ Recission of Contracts দলিল সংশোধন Rectification of Instruments দলিল বাতিল Cancellation of Instrument
কোন কোন চুক্তি রদের মোকদ্দমা দায়ের করা যায়?
বাতিলযোগ্য চুক্তি কি?
অবসানযোগ্য বা পরিসমাপ্তযোগ্য চুক্তি কি?
অবৈধ চুক্তি কি?
চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের তামাদি মেয়াদ কত?
চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের কোর্ট ফি কত?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ এবং চুক্তি রদের মধ্যে পার্থক্য কি?
দলিল সংশোধন বলতে কি বুঝায়?
কোন কোন দলিল সংশোধন করা যায়?
কোন কোন ক্ষেত্রে আদালত দলিল সংশোধনের আদেশ দিতে পারে?
কে দলিল সংশোধনের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে?
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমায় কি প্রমাণ করতে হবে?
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমার তামাদির মেয়াদ কত?
কখন আদালত দলিল বাতিলের আদেশ দিতে পারে?
দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় আদালত কি প্রতিকার মঞ্জুর করতে পারে?
দলিল বাতিলের মোকদ্দমার তামাদি মেয়াদ কত?
দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় কোর্ট ফি কত?
বাতিলযোগ্য চুক্তি কি?
অবসানযোগ্য বা পরিসমাপ্তযোগ্য চুক্তি কি?
অবৈধ চুক্তি কি?
চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের তামাদি মেয়াদ কত?
চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের কোর্ট ফি কত?
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ এবং চুক্তি রদের মধ্যে পার্থক্য কি?
দলিল সংশোধন বলতে কি বুঝায়?
কোন কোন দলিল সংশোধন করা যায়?
কোন কোন ক্ষেত্রে আদালত দলিল সংশোধনের আদেশ দিতে পারে?
কে দলিল সংশোধনের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে?
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমায় কি প্রমাণ করতে হবে?
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমার তামাদির মেয়াদ কত?
কখন আদালত দলিল বাতিলের আদেশ দিতে পারে?
দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় আদালত কি প্রতিকার মঞ্জুর করতে পারে?
দলিল বাতিলের মোকদ্দমার তামাদি মেয়াদ কত?
দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় কোর্ট ফি কত?
চুক্তি রদ [Recission of Contracts]
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৫ ধারা অনুযায়ী চুক্তি রদের মামলা দয়ের করা যায়। ৩৫ ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র লিখিত চুক্তি রদের মোকদ্দমা দায়ের করা যায়।
কোন কোন চুক্তি রদের মোকদ্দমা দায়ের করা যায়?
৩৫ ধারার অধীন একটি লিখিত চুক্তি ৩টি ক্ষেত্রে রদের মোকদ্দমা দায়ের করা যায়-
ক. যেক্ষেত্রে চুক্তিটি লিখিত এবং বাতিলযোগ্য বা বাদী কর্তৃক রদযোগ্য বা সমাপ্তযোগ্য;
খ. যেক্ষেত্রে চুক্তিটি যে কারণে অবৈধ তা চুক্তি হতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়না এবং যার জন্য বাদী
অপেক্ষা বিবাদীকে বেশি দায়ী করা যায়।
গ. যেক্ষেত্রে বিক্রয় বা লিজ চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালনের আদেশ দেওয়া হয়েছে এবং আদালত বিক্রেতা বা লিজগ্রহীতাকে যে অর্থ পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছে তা সে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাতিলযোগ্য চুক্তি [Voidable contracts] কি?
যেহেতু বাদী কর্তৃক বাতিলযোগ্য চুক্তি আদালত রদ করতে পারে, সেহেতু চুক্তি রদের মোকদ্দমায় বাদীকে প্রমাণ করতে হবে যে, চুক্তিটি একটি বাতিলযোগ্য চুক্তি। সুতরাং চুক্তি কখন বাতিলযোগ্য হয়, সেটা চুক্তি আইন অনুসারে নির্ধারণ করতে হবে। বাতিলযোগ্য চুক্তি হলো এমন সম্মতি যা এক বা একাধিক পক্ষের ইচ্ছাক্রমে কার্যকর করা যায়, কিন্তু অপরপক্ষ বা পক্ষসমূহের ইচ্ছাক্রমে কার্যকর করা যায় না। চুক্তি আইন, ১৮৭২ এর ১৯, ১৯ক, ৩৯, ৫৩, ৫৫ ধারায় উল্লেখিত ক্ষেত্রে একটি চুক্তি বাতিলযোগ্য হতে পারে। চুক্তি আইন, ১৮৭২ এর ১৯ ও ১৯ক ধারায় বিধান করা হয়েছে, জবরদস্তি, প্রতারণা বা মিথ্যা বর্ণনা দ্বারা সম্মতি আদায় করা হলে বা চুক্তিতে অসংগত প্রভাব দ্বারা সম্মতি আদায় করা হলে, যে পক্ষের সম্মতি আদায় করা হয়েছে, সেই পক্ষের ইচ্ছাক্রমে চুক্তিটি বাতিলযোগ্য হবে।
উদাহরণ : প্রতারণা করার অভিপ্রায়ে A মিথ্যা বর্ণনা প্রদান করে যে, তার কারখানায় বছরে পাঁচ শত মণ সার প্রস্তুত করা হয় এবং B-কে উক্ত কারখানা ক্রয় করতে প্ররোচিত করে। চুক্তিটি B-এর ইচ্ছাক্রমে বাতিলযোগ্য হবে।
অবসানযোগ্য বা পরিসমাপ্তযোগ্য চুক্তি [Terminable Contract] কি?
অবসানযোগ্য চুক্তি হলো এমন চুক্তি যেক্ষেত্রে চুক্তিতে শর্ত থাকে যে, কোন নির্দিষ্ট ঘটনা ঘটা সাপেক্ষে চুক্তিটি অবসান বা সমাপ্ত হতে পারে বা চুক্তি প্রতিপালন না করলে বা চুক্তির কোন শর্ত ভঙ্গ করলে চুক্তি সমাপ্ত বা অবসান হতে পারে। যেমন চুক্তিতে উল্লেখ আছে যে, ক্রেতা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিক্রয় অর্থ পরিশোধ করবে। যদি ক্রেতা উক্ত নির্ধারিত সময়ে অর্থ পরিশোধ না করতে পারে, তাহলে চুক্তিটি রদ বা সমাপ্ত হবে।
অবৈধ চুক্তি [unlawful contract] কি?
যেক্ষেত্রে চুক্তিটি যে কারণে অবৈধ তা চুক্তি হতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়না এবং যার জন্য বাদী অপেক্ষা বিবাদীকে বেশি দায়ী করা যায় অর্থাৎ যেক্ষেত্রে উভয় পক্ষ সমানভাবে দোষী না, সেই ক্ষেত্রে চুক্তি রদ করা যেতে পারে। চুক্তিটি যে অবৈধ সেটা চুক্তির নথি হতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না শুধুমাত্র এই কারণেরই চুক্তি রদ করা যাবেনা বরং যে কারণে চুক্তিটি অবৈধ উক্ত কারণের জন্য বাদী অপেক্ষা বিবাদী অধিকতর দায়ী হতে হবে।
কে চুক্তি রদের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে?
চুক্তিতে স্বার্থ আছে এমন যেকোনো ব্যক্তি চুক্তি রদের
মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। সুতরাং শুধুমাত্র চুক্তির পক্ষ ছাড়াও যেকোনো ব্যক্তি চুক্তিতে যার স্বার্থ আছে সে চুক্তি রদের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। সুতরাং চুক্তি রদের মোকদ্দমার ক্ষেত্রে বাদীকে উক্ত চুক্তির পক্ষ হওয়ার প্রয়োজন নেই। উদাহরণ : যৌথ হিন্দু পরিবারের ম্যানেজার কোন চুক্তি সম্পাদন করলে উক্ত চুক্তি রদের জন্য যৌথ হিন্দু পরিবারের যেকোনো সদস্য মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে যদিও উক্ত সদস্য উক্ত চুক্তির পক্ষ না।
চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের তামাদি মেয়াদ কত?
তামাদি আইন ১৯০৮ এর ১১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের তামাদির মেয়াদ ১ বৎসর। যে সকল বিষয় বাদীকে চুক্তি বাতিল করার অধিকার প্রদান করে, সেগুলি সম্পর্কে বাদী যখন প্রথমে অবগত হয়, সেদিন থেকে ১ বছরের মধ্যে চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে।
চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের কোর্ট ফি কত?
চুক্তি রদের মোকদ্দমায় অ্যাডভোলেরাম কোর্ট ফি দিতে হবে।
এছাড়াও সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৭ ধারায় বাদী লিখিত চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎ করণের বিকল্প হিসাবে চুক্তি রদের জন্য আবেদন করতে পারে। ৩৮ ধারার অধীন আদালত চুক্তি রদ করে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুর করতে পারে।
চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ এবং চুক্তি রদের মধ্যে পার্থক্য কি?
১. চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মোকদ্দমায় আদালত চুক্তিতে উল্লেখিত কোন সুনির্দিষ্ট বাধ্যবাধকতা পালনের জন্য আদেশ প্রদান করে। বিপরীতভাবে, চুক্তি রদের ক্ষেত্রে পক্ষগণকে বাধ্যবাধকতা পালন থেকে অব্যাহতি দিয়ে থাকে।
২. চুক্তি রদের মোকদ্দমায় বিকল্প হিসাবে বাদী চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের আবেদন করতে পারেনা। কিন্তু চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মোকদ্দমায় বাদী বিকল্পভাবে চুক্তি রদের আবেদন করতে পারে। চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মোকদ্দমায় বাদী প্রার্থনা করতে পারে যে, যদি চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ করা সম্ভব না হয়, তাহলে চুক্তিটি রদ করা হোক । যদি আদালত চুক্তি বলবৎকর করতে প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে বিকল্প হিসাবে চুক্তি রদের আদেশ দিতে পারে [ধারা ৩৭]।
দলিল সংশোধন [Rectification of Instruments]
দলিল সংশোধন বলতে কি বুঝায়?
দলিল সংশোধন অর্থ হলো দলিলের পক্ষসমূহের দলিল সম্পাদনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কার্যকর করতে কোন দলিলের ভুল সংশোধন করা। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩১ ধারার বিধানমতে দলিল সংশোধন করা যায়।
কোন কোন দলিল সংশোধন করা যায়?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩১ ধারায় নিম্নলিখিত ২ ধরণের দলিল সংশোধন করা যায়-
১. লিখিত চুক্তি সংশোধন, বা
২. অন্যান্য লিখিত দলিল সংশোধন করা যায়।
কোন কোন ক্ষেত্রে আদালত দলিল সংশোধনের আদেশ দিতে পারে?
নিম্নলিখিত ৩টি ক্ষেত্রে আদালত দলিল সংশোধনের আদেশ দিতে পারে-
১. দলিলের কোন পক্ষের প্রতারণার কারণে, বা
২. পক্ষসমূহের পারস্পরিক ভুলের কারণে,
৩. কোন লিখিত চুক্তি বা অন্য কোন লিখিত দলিলের পক্ষসমূহের সত্যিকার মনোভাব ব্যক্ত না হলে, আদালত দলিলের পক্ষসমূহের দলিল সম্পাদনের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিরুপণের জন্য দলিল সংশোধনের আদেশ দিতে পারে। যদি আদালত এটা পরিষ্কারভাবে প্রমাণ পায় যে, দলিলটি তৈরীতে প্রতারণা বা পারস্পরিক ভুল ছিল এবং দলিলটি সংশোধন পক্ষসমূহের প্রকৃত উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে পারে, তাহলে আদালত দলিলটি সংশোধনের আদেশ দিতে পারে। উদাহরণ: A এবং তার দুই ভাতিজার মধ্যে সম্পত্তি বিক্রয়ের চুক্তি হয়। পরবর্তীতে বিক্রয় দলিল তৈরী করার সময় শুধুমাত্র একজন ভাতিজার নাম দলিলে লেখা হয়। এই ক্ষেত্রে আদালত বিক্রয় দলিলটি সংশোধনের আদেশ দিতে পারে যদি প্রমাণিত হয় যে প্রতারণা করে বা পারস্পরিক ভুলের কারণে অপর ভাতিজার নাম দলিলে লেখা হয়নি।
কে দলিল সংশোধনের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে?
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমা শুধুমাত্র উক্ত দলিলের পক্ষ বা তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বৈধ প্রতিনিধি দায়ের করতে পারে। অর্থাৎ দলিল সংশোধনের মোকদ্দমায় বাদীকে অবশ্যই উক্ত দলিলের পক্ষ হতে হবে বা উক্ত দলিলের পক্ষসমূহের প্রতিনিধি হতে হবে।
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমায় কি প্রমাণ করতে হবে?
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমার ক্ষেত্রে বাদীকে প্রমাণ করতে হবে যে, দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে প্রতারণা বা পারস্পরিক ভুল ছিল ।
দলিল সংশোধনের মোকদ্দমার তামাদির মেয়াদ কত?
তামাদি আইন ১৯০৮, অনুচ্ছেদ ৯৫ এবং ৯৬ অনুযায়ী দলিল সংশোধনের মোকদ্দমা দায়েরের সময়সীমা ৩ বৎসর। যে দিন হতে বাদী দলিলের ভুল বা প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারে সেদিন থেকে তামাদির মেয়াদ (৩ বছর) গণনা শুরু হবে।
তবে দলিল সংশোধনের আদেশ দেওয়া বা না দেওয়া আদালতের বিবেচনামূলক ক্ষমতা। দলিল সংশোধনের আদেশ সৎ বিশ্বাসে এবং মূল্যের বিনিময়ে অধিকার অর্জন করেছে এমন কোনো তৃতীয় পক্ষের অধিকার ক্ষুণ্ন করবেনা। অর্থাৎ আদালত দলিল সংশোধনের আদেশ দিবে না, যেক্ষেত্রে সৎ বিশ্বাসে এবং মূল্যের বিনিময়ে অধিকার অর্জন করেছে এমন কোনো তৃতীয় পক্ষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে। ৩৪ ধারা অনুযায়ী একটি দলিল সংশোধনের মোকদ্দমায় আদালত দলিল সংশোধনের আদেশ প্রদান করার পরে সংশোধিত বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে আদালতের মাধ্যমে কার্যকরী করা যেতে পারে।
দলিল বাতিল [Cancellation of Instrument]
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারায় দলিল বাতিলের মামলা দায়ের করতে হয়।
কখন আদালত দলিল বাতিলের আদেশ দিতে পারে?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী আদালত নিম্নলিখিত ২টি ক্ষেত্রে দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় দলিল বাতিলের আদেশ মঞ্জুর করতে পারে-
১. কোন লিখিত দলিল বাতিল [Void] বা বাতিলযোগ্য [Voidable] হলে;
২. যদি বাদীর যুক্তিসঙ্গত আশংকা থাকে যে, এরুপ দলিল যদি অনিষ্পন্ন অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে তা তার গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
উদাহরণ: 'ক' 'খ' কে জমি প্রদান করে। 'খ' জমিটি 'গ' এর নামে উইল করে মারা যায়। এর পরে 'ঘ' জমির দখল গ্রহণ করে এবং এই মর্মে একটি জাল দলিল পেশ করে এই মর্মে যে, তার পক্ষে জিম্মাদার হিসাবে
'খ' কে উক্ত জমি হস্তান্তর করা হয়েছিল। 'গ' এই জাল দলিল বাতিলের জন্য আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে।
দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় আদালত কি প্রতিকার মঞ্জুর করতে পারে?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী উল্লিখিত ২টি শর্ত পূরণ হলে, আদালত তার বিবেচনামূলক ক্ষমতাবলে নিম্নলিখিত আদেশসমূহ মঞ্জুর করতে পারে-
১. দলিলটিকে বাতিল বা বাতিলযোগ্য হিসাবে আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে পারে; এবং
২. দলিলটি অর্পণের আদেশ দিতে পারে; এবং
৩. দলিলটি বাতিল করতে পারে।
কে দলিল বাতিলের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে?
৩৯ ধারায় দলিল বাতিলের প্রতিকার শুধুমাত্র দলিলের পক্ষসমূহের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। অর্থাৎ শুধুমাত্র দলিলের পক্ষরাই যে দলিল বাতিলের মামলা করতে পারবে তা না বরং যেকোনো ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে দলিলটি বাতিল বা বাতিলযোগ্য বা যে ব্যক্তি উক্ত বাতিল এবং বাতিলযোগ্য দলিলের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে সে দলিলটি বাতিলের জন্য ৩৯ ধারায় মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। ৩৯ ধারায় নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণ দলিল বাতিলের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে-
১. দলিলের পক্ষ
২. যেকোন ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে দলিলটি বাতিল বা বাতিলযোগ্য, বা
৩. যে ব্যক্তি উক্ত বাতিল এবং বাতিলযোগ্য দলিলের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
অর্থাৎ দলিল বাতিলের মামলায় বাদীকে উক্ত দলিলের পক্ষ হওয়ার প্রয়োজন নেই বরং সে যদি প্রমাণ করতে পারে যে, বাতিল বা বাতিলযোগ্য দলিলটির কারণে সে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে, তাহলে সে মামলা দায়েরের অধিকারী । মসজিদের জমি ক্ষমতা বর্হিভূত বিক্রয়কে বাতিল ঘোষণা করার জন্য মতোয়াল্লি মামলা করতে পারে।
দলিল বাতিলের মোকদ্দমার তামাদি মেয়াদ কত?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারায় দলিল বাতিল বা দলিল রদ এর মামলা দায়েরের তামাদির মেয়াদ ৩ বৎসর [তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ৯১ অনুচ্ছেদ]। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারায় দলিল জাল বলে ঘোষণার জন্য মামলা দায়েরের তামাদির
মেয়াদ ৩ বৎসর [তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ৯২ এবং ৯৩ অনুচ্ছেদ]
দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় কোর্ট ফি কত?
দলিলে উল্লেখিত মূল্যের উপর অ্যাডভোলেরাম কোর্ট ফি দিতে হবে।
আরেকটি বিষয় জানা দরকার, তা হচ্ছে দলিল বাতিলের আদেশ দেওয়া আদালতের একটি স্বেচ্ছাধীন বা বিবেচনামূলক ক্ষমতা। দলিল যদি রেজিস্ট্রেশন আইন অনুসারে রেজিস্ট্রিকৃত হয়ে থাকে এবং যদি দলিলটি বাতিল করা হয়, তাহলে আদালত তার ডিক্রির কপি রেজিস্ট্রি অফিসারের নিকট পাঠাবে যার অফিসে দলিলটি রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল । দলিল বাতিলের মামলায় বাদীকে উক্ত দলিলের পক্ষ হওয়ার প্রয়োজন নেই।
টপিকস
কোন কোন চুক্তি রদের মোকদ্দমা দায়ের করা যায়?
বাতিলযোগ্য চুক্তি কি? অবসানযোগ্য বা পরিসমাপ্তযোগ্য চুক্তি কি? অবৈধ চুক্তি কি? চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের তামাদি মেয়াদ কত? চুক্তি রদের বা প্রত্যাহারের মামলা দায়েরের কোর্ট ফি কত? চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ এবং চুক্তি রদের মধ্যে পার্থক্য কি? দলিল সংশোধন বলতে কি বুঝায়? কোন কোন দলিল সংশোধন করা যায়? কোন কোন ক্ষেত্রে আদালত দলিল সংশোধনের আদেশ দিতে পারে? কে দলিল সংশোধনের মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে? দলিল সংশোধনের মোকদ্দমায় কি প্রমাণ করতে হবে? দলিল সংশোধনের মোকদ্দমার তামাদির মেয়াদ কত? কখন আদালত দলিল বাতিলের আদেশ দিতে পারে? দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় আদালত কি প্রতিকার মঞ্জুর করতে পারে? দলিল বাতিলের মোকদ্দমার তামাদি মেয়াদ কত? দলিল বাতিলের মোকদ্দমায় কোর্ট ফি কত?