- Get link
- X
- Other Apps
নিরোধমূলক প্রতিকার কি?
কিভাবে নিরোধমূলক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়?
নিষেধাজ্ঞা কত প্রকার?
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি?
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি?
কখন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়?
কখন চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়?
কোন কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না?
নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞা কি?
নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞার শর্তসমূহ কি কি?
কিভাবে নিরোধমূলক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়?
নিষেধাজ্ঞা কত প্রকার?
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি?
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি?
কখন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়?
কখন চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়?
কোন কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না?
নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞা কি?
নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞার শর্তসমূহ কি কি?
নিরোধমূলক প্রতিকার [Preventive Relief ] কি?
যেভাবে নিরোধমূলক প্রতিকার মঞ্জুর করা যায় তা ৫২ ধারায়, অস্থায়ী এবং চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার সংজ্ঞা ৫৩ ধারায়, যে সকল ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় তা ৫৪ ধারায়, বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা ৫৫ ধারায় এবং যে সকল ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়না তা ৫৬ ধারায় আলোচনা করা হয়েছে।
কিভাবে নিরোধমূলক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়?
৫২ ধারায় বিধান করা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা, স্থায়ী বা অস্থায়ী দ্বারা আদালতের বিবেচনামূলক ক্ষমতাবলে নিরোধমূলক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়। নিরোধমূলক প্রতিকার বা প্রতিরোধমূলক প্রতিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে, নিষেধাজ্ঞা হলো সর্বোত্তম পন্থা। সাধারণত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে নিরোধমূলক প্রতিকার বা প্রতিরোধমূলক প্রতিকার দেওয়া হয়। সুতরাং নিষেধাজ্ঞা (অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা) হলো নিরোধমূলক বা প্রতিরোধমূলক প্রতিকারের উদাহরণ । উদাহরণ: 'ক' 'বি' এর সাথে এই মর্মে চুক্তি করে যে, সে 'বি' এর কোম্পানিতে চাকুরীতে যোগদানের তারিখ হতে পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে অন্যকোনো কোম্পানীতে যোগদান করবে না। এই সময়ের ভিতরে 'ক' যেন অন্য কোম্পানীতে যোগদান না করে তা থেকে তাকে বিরত রাখতে 'বি' আদালতে নিরোধমূলক প্রতিকার নিষেধাজ্ঞার জন্য আবেদন করতে পারে।
নিষেধাজ্ঞা কত প্রকার?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে তিন ধরণের নিষেধাজ্ঞার উল্লেখ আছে; যথা
১. অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা [Temporary Injunction]
২. স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা [Perpetual Injunction]
৩. বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা [Mandatory Injunction]
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার সংজ্ঞা:
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫৩ ধারায় অস্থায়ী এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি?
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা হলো এমন নিষেধাজ্ঞা যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অথবা আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এটা মোকদ্দমার যে কোনো পর্যায়ে মঞ্জুর করা যেতে পারে। তবে এটা কিভাবে মঞ্জুর করা হবে, তা দেওয়ানী কার্যবিধির ৩৯ আদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রধান উদ্দেশ্য হলো মোকদ্দমার পক্ষদ্বয়ের মধ্যে বিরোধীয় বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতি অবস্থা বজায় রাখা।
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি?
যে নিষেধাজ্ঞা মোকদ্দমার শুনানীর পর মামলার গুনাগুণের উপর ভিত্তি করে প্রদত্ত ডিক্রি দ্বারা মঞ্জুর করা হয়, তাকে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বলে। কিন্তু বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা নিরোধমূলক প্রতিকার না বরং আদেশাত্মক প্রতিকার। কারণ বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে সে যে কাজ করতে বাধ্য তাকে তা করতে আদেশ দেওয়া হয়, কোন কাজ করা হতে বিরত থাকার জন্য না। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মোকদ্দমার যে কোন পর্যায়ে মঞ্জুর করা যেতে পারে কিন্তু চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মোকদ্দমার শুনানীর পর মঞ্জুর করা হয়। চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পরিচালিত হয় সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন দ্বারা। কিন্তু অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পরিচালিত হয় দেওয়ানী কার্যবিধি দ্বারা বা দেওয়ানী কার্যবিধির ৩৯ আদেশ দ্বারা।
কখন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়?
আদালত ৫৪ ধারার অধীন বাদীর অনুকূলে বিদ্যমান কোন বাধ্যবাধকতা ভঙ্গ রোধ করার জন্য চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে। এমন ধরণের বাধ্যবাধকতা যদি চুক্তি হতে সৃষ্ট হয়, তাহলে আদালত সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের দ্বিতীয় অধ্যায় অনুযায়ী প্রতিকার দিবে। উদাহরণ: 'ক' 'খ' কে কিছু জমি ভাড়া দিয়েছে এবং সেখান থেকে বালু উত্তোলন করবে না বলে চুক্তি করেছে। চুক্তি ভঙ্গ করে 'খ' যেন বালু না তুলতে পারে তা থেকে বিরত রাখতে 'ক' চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনা করতে পারে। ৫৪ ধারার অধীন আদালত ৫টি ক্ষেত্রে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে। যখন বিবাদী বাদীর সম্পত্তি ব্যবহার বা উপভোগের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে বা হস্তক্ষেপ করার হুমকি দেয়, তখন আদালত নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে;
ক. যেখানে বিবাদী বাদীর সম্পত্তির জিম্মাদার।
খ. যেখানে বাদীর অধিকারে হস্তক্ষেপের কারণে যে প্রকৃত ক্ষতি হয়েছে বা হবে তা নির্ধারণের কোন মানদণ্ড নেই।
গ. যেখানে হস্তক্ষেপ এমন যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত প্রতিকার হবে না।
ঘ. যেখানে এমন হস্তক্ষেপের আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না।
ঙ. যেখানে বিচারিক কার্যধারার বহুত্ব নিবারণের জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা প্রয়োজন।
কখন চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়?
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মঞ্জুরের জন্য ৫৪ ধারার ক থেকে ঘ পর্যন্ত উল্লেখিত শর্ত এবং চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের জন্য ১২ ধারার ক থেকে ঘ পর্যন্ত উল্লেখিত শর্তসমূহ একই। কারণ চুক্তিভঙ্গের ক্ষেত্রে যেমন চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের মোকদ্দমা দায়ের করা যায় ঠিক তেমনি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমাও দায়ের করা যায়। যদি আপনি চুক্তিতে উল্লেখিত বাধ্যবাধকতা পালনে কোন ব্যক্তিকে বাধ্য করতে চান, তাহলে চুক্তি বলবৎকরণের মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি চুক্তিতে উল্লেখিত কোন বাধ্যবাধকতা ভঙ্গকারী কোনো পক্ষকে কোন কার্য করা হতে বিরত রাখতে চান, তাহলে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে। এই কারণে ১২ ধারার শর্তসমূহ এবং ৫৪ ধারার ক থেকে ঘ পর্যন্ত উল্লেখিত শর্তসমূহ একই।
কোন বাধ্যবাধকতা ভঙ্গ করা হতে স্থায়ীভাবে বিরত রাখতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা হয় এবং এমন বাধ্যবাধকতা চুক্তি হতে সৃষ্টি হতে পারে বা আইন দ্বারা সৃষ্টি হতে পারে বা ট্রাস্ট হতে বা টর্ট হতে সৃষ্টি হতে পারে। এমন বাধ্যবাধকতা চুক্তি হতে সৃষ্টি হলে অর্থাৎ চুক্তিতে উল্লেখিত কোন বাধ্যবাধকতা ভঙ্গ করা হতে বিরত রাখতে আপনি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা দায়ের করতে পারেন এবং এই ক্ষেত্রে আদালত সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে উল্লেখিত চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ সম্পর্কিত বিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞায় কি প্রমাণ করতে হয়?
বাদীর কোন আইনগত অধিকার লঙ্ঘন হলে অর্থাৎ যখন বিবাদী বাদীর সম্পত্তির অধিকার বা ভোগদখলের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে বা হস্তক্ষেপ করার হুমকি প্রদান করে, তখন আদালত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে। কিন্তু সকল প্রকারের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুরে ৫৪ ধারা আদালতকে ক্ষমতা দেয়নি। শুধুমাত্র বাদীর অনুকূলে বা বাদীর ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করা হলে শুধুমাত্র সেই ক্ষেত্রে আদালত চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে। বাদী অবশ্যই প্রমাণ করবে যে, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ধারায় সংজ্ঞায়িত বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করা হতে বিরত রাখতে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা প্রয়োজন । এছাড়াও সম্পত্তির ক্ষেত্রে বাদী অবশ্যই তার একচেটিয়া দখল প্রমাণ করবে। যদি বাদী সম্পত্তির দখলে থাকে, তাহলে শুধুমাত্র চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা রক্ষণীয় হবে।
চিরস্থায়ী মোকদ্দমা দায়েরের তামাদির মেয়াদ কত?
চিরস্থায়ী মোকদ্দমা দায়েরের তামাদির মেয়াদ ৬ বৎসর। মোকদ্দমা দায়েরে কারণ উৎপত্তি হওয়ার তারিখ হতে ৬ বৎসরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে।
কোন কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না?
কোন কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না তা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫৬ ধারায় আলোচনা করা হয়েছে। ৫৬ ধারা অনুসারে ১১টি ক্ষেত্রে আদালত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করতে পারে। ৫৬ ধারার নীতি স্থায়ী এবং অস্থায়ী উভয় নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থাৎ আদালত অস্থায়ী বা স্থায়ী যে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করুক না কেন সে ক্ষেত্রে ৫৬ ধারার বিধান অবশ্যই পালন করবে। ৫৪ ধারায় উল্লেখিত যে সকল শর্তে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়, সেই সকল শর্তসমূহ এবং ৫৬ ধারায় উল্লেখিত যে সকল ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে, সেই সকল শর্তসমূহ একত্রে পড়তে হবে। যে সকল কারণে আদালত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করতে পারে তা হলো-
ক. এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে বিচারাধীন কোন বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য কোন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না। কিন্তু এই ধারার অধীন বিচারিক কার্যক্রমের পুনঃপৈৗনিকতা রোধ করার জন্য বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়।
খ. যে আদালতে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হচ্ছে সেই আদালতের অধীনস্থ আদালত ছাড়া অন্য কোন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়না। যেমন দেওয়ানী আদালত কর্তৃক মঞ্জুরকৃত কোন নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টে কোন কোম্পানী বিলোপ সাধনের বিচারাধীন কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে না। সমান এখতিয়ার সম্পন্ন দেওয়ানী আদালতে বিচারাধীন কোন মোকদ্দমা স্থগিত করার এখতিয়ার একে অপরের নেই।
গ. কোন ব্যক্তিকে আইন প্রণয়ন বিষয়ক কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হতে বিরত রাখার জন্য চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না।
ঘ. সরকারের কোন বিভাগের সরকারী কর্তব্য অথবা বিদেশী সরকারের কোন সার্বভৌম কাজে হস্তক্ষেপ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না। সরকারী বিভাগে নিষেধাজ্ঞা জারী করার ক্ষেত্রে আদালত অবশ্যই বিবেচনা করবে যে এটা সরকারী কাজকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্থ করবে কিনা।
ঙ. কোন ফৌজদারী কার্যধারা স্থগিত করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
চ. যে চুক্তির কার্য সম্পাদন সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করা যায় না, এরুপ কোন চুক্তিভঙ্গ নিরোধের উদ্দেশ্যে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
ছ. উৎপাতের অজুহাতে এমন কোন কাজ প্রতিরোধ করার জন্য যা যুক্তিসঙ্গতভাবে সুস্পষ্ট নয় যে, তা উৎপাতের পর্যায়ে পড়বে, সেক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
জ. একটি ক্রমাগত লঙ্ঘন রোধ করার জন্য যেক্ষেত্রে বাদীর মৌন সম্মতি আছে, সেক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
ঝ. যেক্ষেত্রে ট্রাস্ট ভঙ্গের মোকদ্দমা ব্যতীত অন্য কোন সাধারণ কার্যক্রমের মাধ্যমে সমপরিমাণ ফলপ্রসূ প্রতিকার নিশ্চিতভাবে পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
ঞ. যখন আবেদনকারী বা তার প্রতিনিধির আচরণ এমন হয় যে, তাকে আদালতের সাহায্য হতে বঞ্চিত করে, তখন আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
ট. যে ক্ষেত্রে মোকদ্দমার বিষয়বস্তুতে বাদীর কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকেনা, সেক্ষেত্রে আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
উদাহরণ : যশোর শিক্ষাবোর্ড, রাজগঞ্জ স্কুলে একটি অর্ন্তবর্তীকালীন কমিটি বা এডহক কমিটি ঘোষণা করে কিন্তু এই কমিটি ৬ মাসের মধ্যে স্কুল কমিটির নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়। অতপর যশোর শিক্ষা বোর্ড আরো একটি অন্তবর্তীকালীন কমিটি ঘোষণা করে, যে কমিটির সভাপতি করা হয় পূর্ববর্তী অন্তবর্তীকালীন কমিটির সভাপতিকে। এলাকার ৩ জন ব্যক্তি বাদী হয়ে, সহকারী জজের নিকট নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা দায়ের করে এই যুক্তিতে যে, যেহেতু প্রথম অন্তবর্তীকালীন কমিটি ৬ মাসের মধ্যে স্কুল কমিটির নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে, সেহেতু প্রথম অন্তবর্তীকালীন কমিটির সভাপতিকে যেন পরবর্তী অন্তবর্তীকালীন কমিটির সভাপতি না করা হয় সেই বিষয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এবং মোকদ্দমাটি বিচারাধীন থাকাবস্থায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা হয়। সহকারী জজ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করে এবং আপীলে জেলা জজ উক্ত আদেশ বহাল রাখে। হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন দায়ের করা হলে, ২টি যুক্তির ভিত্তিতে উক্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করে যথা-
i.মোকদ্দমার বিষয়বস্তুতে বাদীদের কোন ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘিত হয়নি এবং
ii. ৫৬ (ঘ) ধারা অনুসারে, সরকারের কোন বিভাগের সরকারী কর্তব্য অথবা বিদেশী সরকারের কোন সার্বভৌম কাজে হস্তক্ষেপ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না। যেহেতু যশোর শিক্ষাবোর্ড একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান, সেহেতু শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক ঘোষিত অন্তবর্তীকালীন কমিটির প্রতি আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারেনা।
নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞা কি?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫৭ ধারায় আদালত নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ৫৭ ধারা প্রকৃতপক্ষে ৫৬ (চ) অনুচ্ছেদের একটি ব্যতিক্রম। ৫৬(চ) অনুচ্ছেদে বিধান করা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যায়না এমন কোনো চুক্তির শর্তভঙ্গ বন্ধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়না। ৫৬(চ) ধারা অনুসারে সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যায়না এমন কোনো চুক্তির শর্তভঙ্গ বন্ধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা না গেলেও, ৫৭ ধারা অনুসারে আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে। যদি চুক্তির পক্ষগণ মূল্যের বিনিময়ে সম্মত হয় যে, কোন নির্দিষ্ট কার্য করবেনা, সেই ক্ষেত্রে আদালত নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আদেশ দিতে পারে যে, চুক্তির পক্ষগণ এমন কার্যটি করবেনা বা করা হতে বিরত থাকবে।
নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞার শর্তসমূহ কি কি?
৫৭ ধারার অপরিহার্য উপাদান বা শর্ত হলো এই যে, চুক্তিটিতে অবশ্যই ২টি সম্মতি থাকতে হবে যথা-
১. কোন কার্য করার ইতিবাচক সম্মতি বা
২. কোন কার্য না করার ব্যক্ত এবং অব্যক্ত না-সূচক সম্মতি থাকতে হবে এবং না-সূচক সম্মতিটি চুক্তির অবশিষ্ট অংশ হতে অবশ্যই পৃথকযোগ্য হতে হবে। এবং আবেদনকারী অবশ্যই চুক্তিতে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে প্রতিপালন করেছে।
৩. এই ক্ষেত্রে আদালত হ্যাঁ-সূচক সম্মতির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণে বাধ্য করতে না পারলেও, না-সূচক সম্মতি পালনে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারবে।
উদাহরণ : যেমন A, B এর সাথে এই মর্মে চুক্তি করে যে, সে ১২ মাসের জন্য B এর থিয়েটারে গান গাইবে এবং অন্যত্র জনসম্মুখে গান পরিবেশন করবেনা। এখানে ইতিবাচক সম্মতি হলো A ১২ মাসের জন্য B এর থিয়েটারে গান গাইবে এবং না-সূচক সম্মতি হলো A অন্যত্র জনসম্মুখে গান পরিবেশন করবেনা। এই ক্ষেত্রে আদালত A কে B এর থিয়েটারে গান গাইতে বাধ্য করার জন্য চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎ করার ডিক্রি দিতে পারেনা কিন্তু A যেন অন্যত্র জনসম্মুখে গান পরিবেশন না করতে পারে বা তাকে গান গাওয়া হতে বিরত রাখতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। সুতরাং এই চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎ করার জন্য B ডিক্রি পাওয়ার অধিকারী না কিন্তু A যেন অন্যত্র জনসম্মুখে গান পরিবেশন না করতে পারে বা তাকে গান গাওয়া হতে বিরত রাখতে B নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে।
টপিকস
নিরোধমূলক প্রতিকার কি? কিভাবে নিরোধমূলক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়? নিষেধাজ্ঞা কত প্রকার? অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি? চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি? কখন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়? কখন চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণের ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়? কোন কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না? নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞা কি? নেতিবাচক চুক্তি পালনের জন্য নিষেধাজ্ঞার শর্তসমূহ কি কি?
ইউটিউব ভিডিও - নিরোধমূলক প্রতিকার Preventive Relief নিষেধাজ্ঞা Injunction কত প্রকার ও কি কি?