- Get link
- X
- Other Apps
কিভাবে মৌখিক সাক্ষ্য দ্বারা ঘটনা প্রমাণ করতে হয়?
প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য কি?
দালিলিক সাক্ষ্য কি?
কিভাবে দলিলের বিবরণ প্রমাণ করা যেতে পারে?
প্রাথমিক সাক্ষ্য কি?
মাধ্যমিক সাক্ষ্য কি?
কোন কোন ক্ষেত্রে দলিল সম্পর্কে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দেওয়া যেতে পারে?
কখন ডিজিটাল রেকর্ড গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
সর্বোত্তম সাক্ষ্য কি?
শোনা সাক্ষ্য কি?
কোন কোন ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য কি?
দালিলিক সাক্ষ্য কি?
কিভাবে দলিলের বিবরণ প্রমাণ করা যেতে পারে?
প্রাথমিক সাক্ষ্য কি?
মাধ্যমিক সাক্ষ্য কি?
কোন কোন ক্ষেত্রে দলিল সম্পর্কে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দেওয়া যেতে পারে?
কখন ডিজিটাল রেকর্ড গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
সর্বোত্তম সাক্ষ্য কি?
শোনা সাক্ষ্য কি?
কোন কোন ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
মৌখিক সাক্ষ্য বা Oral Evidence
মৌখিক সাক্ষ্য কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ এর ৩ ধারায়। মৌখিক সাক্ষ্য দ্বারা কোন বিষয় প্রমাণ ৫৯ ধারায় আলোচনা করা হয়েছে এবং ৬০ ধারা অনুসারে মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যক্ষ হতে হবে।
কিভাবে মৌখিক সাক্ষ্য দ্বারা ঘটনা প্রমাণ করতে হয়?
৫৯ ধারায় বিধান করা হয়েছে, দলিলের বিষয়বস্তু ব্যতীত সকল বিষয় মৌখিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করা যেতে পারে অর্থাৎ দলিলের বিষয়বস্তু মৌখিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করা যায় না। কারণ হলো যেখানে কোন লিখিত দলিল বা নথি থাকে, সেই ক্ষেত্রে উক্ত লিখিত দলিল বা নথি দিয়েই উক্ত দলিলের বিবরণ প্রমাণ করতে হবে। দলিলের বিবরণ প্রমাণের ক্ষেত্রে উক্ত দলিলই হলো সর্বোত্তম সাক্ষ্য। সাক্ষ্য আইনের ৬০ ধারায় বলা হয়েছে, মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যক্ষ হতে হবে।
প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য কি?
সাক্ষ্য আইনের ৬০ ধারায় প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। মৌখিক সাক্ষ্য কখন প্রত্যক্ষ হবে সেটাই ৬০ ধারায় বিধান করা হয়েছে। ৬০ ধারা অনুসারে, মৌখিক সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ হবে বলতে বোঝায়
i.যে বিষয় দেখা যায়, সেই বিষয়ে কোন সাক্ষ্য দিতে হলে সেই ব্যক্তি সাক্ষ্য দিতে পারবে যে বিষয়টি দেখেছে বলে দাবি করে।
ii. আবার যে বিষয় শোনা যায়, সেই বিষয়ে কোন সাক্ষ্য দিতে হলে সেই ব্যক্তি সাক্ষ্য দিতে পারবে যে বিষয়টি শুনেছে বলে দাবি করে।
iii. যদি এটা এমন কোন ঘটনা হয় যেটা অন্য যে কোনো ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভবযোগ্য হয়, তাহলে এটা অবশ্যই সেই সাক্ষীর সাক্ষ্য হবে যে দাবী করে যে সে উক্ত ইন্দ্রিয় দ্বারা ঘটনাটি অনুভব করেছিল।
iv. যদি ঘটনাটি কোন মতামতকে উল্লেখ করে বা উক্ত মতামতের কারণসমূহকে উল্লেখ করে, তাহলে এটা এমন ব্যক্তির সাক্ষ্য হতে হবে যে উক্ত কারণসমূহের উপর ভিত্তি করে মতামত দিয়েছে। অর্থাৎ সাক্ষ্য আইনের ৬০ ধারায় শুধুমাত্র যে সকল মৌখিক সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ, শুধুমাত্র সেই সকল মৌখিক সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে। যেহেতু শোনা সাক্ষ্য [Hearsay Evidencel প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য না, তাই ৬০ ধারা অনুযায়ী শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য না। শোনা সাক্ষ্য কোন সাক্ষীর নিজস্ব সাক্ষ্য না, বরং সে অন্যের নিকট হতে যে সাক্ষ্য শুনেছে সেই সাক্ষ্য হলো শোনা সাক্ষ্য । উদাহরণ: B কে জখম করে হত্যার জন্য A অভিযুক্ত। C, D, E, F এবং G হলো সাক্ষী। C বলে যে, সে দেখেছে A, B- কে জখম করতে। D বলে যে, সে B এর চিৎকার শুনেছে যে, A তাকে জখম করছে। E বলে যে, সে A কে দেখেছে একটি রক্তমাখা ছুরি নিয়ে দৌড়াতে এবং B কে রক্তমাখা জামা পরিধান অবস্থায় দেখেছে। F একজন ডাক্তার। F বলে যে, যে অস্ত্র A এর দখলে পাওয়া গেছে সেই অস্ত্র দিয়ে সম্ভবত B কে জখম করা হতে পারে যা B এর মৃত্যু ঘটিয়েছে। G বলে যে, সে C এর নিকট হতে শুনেছে যে, C দেখেছে A, B কে জখম করছে। এই ক্ষেত্রে C,D, E, এবং F এর সাক্ষ্য হলো প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য। কিন্তু G এর সাক্ষ্য হলো শোনা সাক্ষ্য। সুতরাং C,D, E, এবং F এর মৌখিক সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ হওয়ায় তা গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু G এর সাক্ষ্য শোনা সাক্ষ্য হওয়ায় তা গ্রহণযোগ্য নয়।
দালিলিক সাক্ষ্য বা Documentary Evidence কি?
সাক্ষ্য আইনের ৩ ধারায় দালিলিক সাক্ষ্যকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। দালিলিক সাক্ষ্য ২ প্রকার যথা ১) প্রাথমিক সাক্ষ্য এবং মাধ্যমিক সাক্ষ্য। ৬১ ধারায় বলা হয়েছে, প্রাথমিক বা মাধ্যমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিলের বিবরণ প্রমাণ করা যেতে পাতে। ৬২ ধারায় প্রাথমিক সাক্ষ্য এবং ৬৩ ধারায় মাধ্যমিক সাক্ষ্যকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। ৬৪ ধারায় বিধান করা হয়েছে, ব্যতিক্রম ছাড়া সকল ক্ষেত্রে প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিল প্রমাণ করতে হবে। কোন কোন ব্যতিক্রম প্রেক্ষাপটে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিলের বিবরণ প্রমাণ করা যেতে পারে সেটা ৬৫ ধারায় বলা হয়েছে। ৬৫খ ধারায় ডিজিটাল রেকর্ড দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে বিধান করা হয়েছে।[ সাক্ষ্য আইন (সংশোধন) ২০২২]
কিভাবে দলিলের বিবরণ প্রমাণ করা যেতে পারে?
কোন দলিলের বিবরণ প্রাথমিক সাক্ষ্য অথবা মাধ্যমিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করা যেতে পারে। ৬১ ধারা অনুযায়ী কোন দলিলের বিবরণ ২ প্রকার সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করা যেতে পারে।
১. প্রাথমিক সাক্ষ্য অর্থাৎ স্বয়ং দলিলটি দ্বারা
২. মাধ্যমিক সাক্ষ্য অর্থাৎ প্রাথমিক দলিলের নকল (কপি) দ্বারা)
যদিও ৬১ ধারায় বলা হয়েছে, কোন দলিলের বিষয়বস্তু প্রাথমিক সাক্ষ্য অথবা মাধ্যমিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করা যেতে পারে, কিন্তু ৬৪ ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, ব্যতিক্রম ছাড়া সকল ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিল প্রমাণ করতে হবে।
৬১ ধারা ও ৬৪ ধারা একত্রে পড়লে এটা বলা যায় যে, আইনের সাধারণ নিয়ম হলো, সকল ক্ষেত্রে প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিলের বিবরণ প্রমাণ করতে হবে। শুধুমাত্র ব্যতিক্রম প্রেক্ষাপটে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দ্বারা মলির প্রমাণ করতে হবে। কোন কোন ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে মাধ্যমিক সাক্ষা দ্বারা দলিলের বিবরণ প্রমাণ করা যেতে পারে তা সাক্ষ্য আইনের ৬৫ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। যে মূল দলিলের বিবরণ প্রমাণ করতে হতে হবে, উক্ত মূল দলিলটি আদালতের দেখার জন্য উপস্থাপন করতে হবে। যদি কোন পক্ষ উক্ত মূল দলিলটি আদালতে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সে দলিলটি উপস্থাপন করতে কেন ব্যর্থ হলো তার কারণ ব্যাখ্যা করবে এবং শুধুমাত্র তার পর আদালত উক্ত পক্ষকে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দিয়ে উক্ত দলিলের বিবরণ প্রমাণ করতে অনুমতি দিতে পারে।
প্রাথমিক সাক্ষ্য কি?
যে স্বয়ং বা মূল দলিলটি পরীক্ষণের জন্য আদালতের নিকট দাখিল করা হয়, সেই দলিলটিকে প্রাথমিক সাক্ষ্য বা মূল দালিলিক সাক্ষ্য বলে। উদাহরণ: "ক" "খ" এর বিরুদ্ধে আদালতে এই মর্মে মামলা করে যে 'ক' এবং 'খ' এর মধ্যে একটি বায়না পত্র (বিক্রয় চুক্তি) সম্পাদিত হলেও 'খ' এখন জমি বিক্রয় করতে অস্বীকার করছে। বিক্রয় চুক্তির বিষয়বস্তু (অর্থাৎ চুক্তির শর্ত) প্রমাণ করতে হলে যদি সংশ্লিষ্ট চুক্তিপত্রটিই আদালতের পরিদর্শনের জন্য উপস্থাপন করা হয় তবে উক্ত দলিলটি হবে প্রাথমিক সাক্ষ্য। কিন্তু বিক্রয় দলিলের ফটোকপি উপস্থাপন করা হলে ফটোকপিটি হবে মূল দলিলের মাধ্যমিক সাক্ষ্য। কোন দলিল কতিপয় খণ্ডে সম্পাদিত হলে প্রত্যেক অংশই ঐ দলিলের প্রাথমিক সাক্ষ্য। যেমন একটি দলিলের কতিপয় ৫টি খণ্ড আছে। প্রত্যেকটি খণ্ড প্রাথমিক সাক্ষ্য ।
মাধ্যমিক সাক্ষ্য কি?
সাক্ষ্য আইনের ৬৩ ধারায় ৫ ধরণের দলিলকে মাধ্যমিক সাক্ষ্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ৬৩ ধারা অনুযায়ী মাধ্যমিক সাক্ষ্য হলো
১. কোন দলিলের প্রত্যয়িত নকল বা প্রতিলিপি বা certified copy
২. মূল দলিল হতে যান্ত্রিক উপায়ে প্রস্তুতকৃত কোন দলিলের নকল বা প্রতিলিপি যেগুলো ইহারা স্বয়ং প্রতিলিপির বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে এবং এমন প্রতিলিপিগুলোর সাথে তুলনাকৃত প্রতিলিপিসমূহ।
যেমন কোন একটি মূল দলিলের ছবি তোলা হলো এবং উক্ত ছবি হতে একটি হাতে লেখা কপি তৈরী করা হলো এবং হাতে লেখা কপিটি মূল দলিল এবং ছবির সাথে তুলনা করা হলো। এই ক্ষেত্রে মূল দলিলটি প্রাথমিক সাক্ষ্য। মূল দলিলের ছবিটি মাধ্যমিক সাক্ষ্য। ছবি দেখে যে হাতে লেখা কপি তৈরী করা হলো সেটাও মাধ্যমিক সাক্ষ্য।
৩. মূল দলিল হতে তৈরী করা প্রতিলিপি বা মূল দলিলের সাথে তুলনা করা প্রতিলিপি।
৪. যে পক্ষ দলিল সম্পাদন করেনি তার বিরুদ্ধে কোন দলিলের সঙ্গে হুবহু মিল আছে এমন কোন দলিল।
৫. যে ব্যক্তি নিজে দলিলটি দেখেছে, উক্ত দলিলটির বিবরণ সম্পর্কে উক্ত ব্যক্তির মৌখিক বিবরণ।
কোন কোন ক্ষেত্রে দলিল সম্পর্কে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দেওয়া যেতে পারে?
সাক্ষ্য আইনের ৬৪ ধারার বিধান মতে, ব্যতিক্রম ছাড়া সকল ক্ষেত্রে দলিল প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করতে হবে। কোন কোন ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিল প্রমাণ করা যায় তা সাক্ষ্য আইনের ৬৫ ধারায় বলা হয়েছে। সাক্ষ্য আইনের ৬৫ ধারায় ৭টি ব্যতিক্রম ক্ষেত্র উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে মাধ্যমিক সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য ।
১. যদি মূল দলিলটি
i. যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রমাণ করা হবে তার দখলে থাকলে বা
ii.এমন কোনো ব্যক্তির দখলে আছে যে নাগালের বাইরে বা
iii.এমন কোনো ব্যক্তির দখলে আছে যে আদালতের প্রক্রিয়ার বাইরে বা
iv. এমন কোন ব্যক্তির দখলে যে উক্ত দলিলটি উত্থাপন করতে বাধ্য কিন্তু ৬৬ ধারায় তাকে নোটিশ দেওয়ার পরও সে দলিলটি উত্থাপন করেনি।
২. যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে উক্ত মূল দলিলটি প্রমাণ করা হবে, সেই ব্যক্তি বা তার প্রতিনিধি মূল দলিলের
অস্তিত্ব, অবস্থা অথবা বিষয়বস্তু লিখিতভাবে স্বীকার করে নিলে।
৩. যেক্ষেত্রে মূল দলিল হারিয়ে গেছে বা নষ্ট হয়েছে।
৪. যেক্ষেত্রে মূল দলিল সহজে হস্তান্তরযোগ্য হবে না।
৫. যেক্ষেত্রে মূল দলিলটি সরকারী দলিল।
৬. যেক্ষেত্রে মূল দলিলের প্রত্যয়িত নকল সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহারের বিধান আছে।
৭. যে সকল দলিল আদালতে পরীক্ষা করে দেখা সুবিধাজনক না।
কখন ডিজিটাল রেকর্ড গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
ধারা-৬৫খ [ সাক্ষ্য আইন (সংশোধন) ২০২২] অনুযায়ী এই আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন ডিজিটাল রেকর্ডে থাকা যে কোন তথ্য যা কাগজে মুদ্রিত অথবা, কম্পিউটার দ্বারা প্রস্তুতকৃত (পরবর্তীতে 'কম্পিউটার আউটপুট হিসেবে অভিহিত হবে) আলোক (অপটিক্যাল) বা চৌম্বকীয় (ম্যাগনেটিক) মাধ্যমে সংরক্ষিত, ধারনকৃত বা অনুলিপিকৃত তা ডকুমেন্ট বা নথি হিসেবে গন্য হবে যদি অত্র ধারায় উল্লেখিত তথ্য ও কম্পিউটার সম্পর্কিত শর্তসমূহ পূরন করে। এটি মূল নথি উপস্থাপন বা এর দ্বারা প্রমান ব্যতী রেখেই মূল নথির উপাদানের বা প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য গ্রহনযোগ্য এমন কোন ঘটনার সাক্ষ্য হিসেবে যেকোন কার্যধারায় গ্রহনযোগ্য হবে।
সর্বোত্তম সাক্ষ্য কি?
সর্বোত্তম সাক্ষ্যের ধারণা সাক্ষ্য আইনে ব্যক্তভাবে প্রকাশ করা না হলেও, সাক্ষ্য আইনে নিহিতভাবে উল্লেখ আছে। সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যক্ষ হতে হবে। মৌখিক সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ হলে সেই ক্ষেত্রে মৌখিক সাক্ষ্য সর্বোত্তম সাক্ষ্য হিসাবে গণ্য হবে এবং সেটা গ্রহণযোগ্য। যেমন যে বিষয় দেখা যায়, উক্ত বিষয় যিনি নিজের চোখে দেখেছে তিনি মৌখিক সাক্ষ্য দিলে সেটা সর্বোত্তম সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হবে। অন্যদিকে দালিলিক সাক্ষ্যের ক্ষেত্রে মূল বা প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিলের বিবরণ প্রমাণ করতে হয়। সুতরাং দালিলিক সাক্ষ্যের ক্ষেত্রে প্রাথমিক সাক্ষ্য হলো সর্বোত্তম সাক্ষ্য। সর্বোত্তম সাক্ষ্যের মূল নীতি হলো, প্রাথমিক সাক্ষ্য মাধ্যমিক সাক্ষ্যকে বিতাড়িত করে। অর্থাৎ যেখানে প্রাথমিক সাক্ষ্য থাকে বা মূল দলিলটি থাকে, সেখানে মাধ্যমিক সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য না। কোন কিছু প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত হলে, সেখানে মাধ্যমিক সাক্ষ্যের কোন গুরুত্ব থাকে না। সর্বোত্তম সাক্ষ্যের ধারণা সাক্ষ্য আইনের ৬০ ও ৬৪ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ ৬০ ধারায় বলা হয়েছে, মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যক্ষ হতে হবে এবং ৬৪ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যতিক্রম ছাড়া সকল ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিল প্রমাণ করতে হবে।
শোনা সাক্ষ্য বা Hearsay Evidence কি?
শোনা সাক্ষ্য কোন সাক্ষীর নিজস্ব সাক্ষ্য না, বরং সে অন্যের নিকট হতে যে সাক্ষ্য শুনেছে সেই সাক্ষ্য হলো শোনা সাক্ষ্য। যেহেতু শোনা সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য না, তাই ৬০ ধারা অনুযায়ী শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য না।
কোন কোন ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
আইনের সাধারণ নিয়ম হলো শোনা সাক্ষ্য, সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য না। কিন্তু কিছু ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে। নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য, সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে: ৬ ধারার অধীন সংঘটিত ব্যাপারে বা Res gestae নীতির ক্ষেত্রে। ৩২ এবং ৩৩ ধারায় মৃত ব্যক্তি, বা খুঁজে পাওয়া যায় না এমন ব্যক্তির বক্তব্যের ক্ষেত্রে যেমন মৃত্যুকালীন ঘোষণার ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য প্রাসঙ্গিক। Admissions and Confessions এর ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে। উদাহরণ: A মারা যাওয়ার আগে তার মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে B এর নিকট বক্তব্য দিলো। অর্থাৎ A এর মৃত্যুর কারণ B শুনেছে এবং এই কারণে B এর সাক্ষ্যটি হবে শোনা সাক্ষ্য। যেহেতু A এর খুনের বিচারের সময় A কে সাক্ষী হিসাবে হাজির করা সম্ভব না, সেহেতু ৩২ ধারা অনুসারে A-এর মৃত্যুকালীন ঘোষণা যেটা B শুনেছে সেটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে যদিও B এর সাক্ষ্যটি হবে শোনা সাক্ষ্য।
টপিকস
কিভাবে মৌখিক সাক্ষ্য দ্বারা ঘটনা প্রমাণ করতে হয়? প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য কি? দালিলিক সাক্ষ্য কি? কিভাবে দলিলের বিবরণ প্রমাণ করা যেতে পারে? প্রাথমিক সাক্ষ্য কি? মাধ্যমিক সাক্ষ্য কি? কোন কোন ক্ষেত্রে দলিল সম্পর্কে মাধ্যমিক সাক্ষ্য দেওয়া যেতে পারে? কখন ডিজিটাল রেকর্ড গ্রহণযোগ্য হতে পারে? সর্বোত্তম সাক্ষ্য কি? শোনা সাক্ষ্য কি? কোন কোন ক্ষেত্রে শোনা সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
ইউটিউব ভিডিও - মৌখিক সাক্ষ্য Oral Evidence দালিলিক সাক্ষ্য Documentary Evidence