- Get link
- X
- Other Apps
মামলার পক্ষগণের মৃত্যু, বিবাহ ও অস্বচ্ছলতার ফলাফল কি? সোলে বা আপস ডিক্রি বা সম্মতিসূচক ডিক্রি Compromise of Suit
মামলার পক্ষগণের মৃত্যু, বিবাহ ও অস্বচ্ছলতার ফলাফল কি?
পক্ষভুক্ত করার আবেদনের তামাদির মেয়াদ কতদিন?
পক্ষভুক্ত করার আবেদন না করার ফলাফল কি?
মোকদ্দমা বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার কি?
কত দিনের মধ্যে আদেশটি রদের জন্য আবেদন করা যাবে? এ সংক্রান্ত আপিলের বিধান কি?
মোকদ্দমার পক্ষ দেউলিয়া হয়ে গেলে তার ফলাফল কি?
কখন মোকদ্দমা প্রত্যাহার বা দাবীর কোন অংশ প্রত্যাহার করা যায়?
সোলে বা মোকদ্দমা-আপস কাকে বলে?
সোলে বা আপস ডিক্রির শর্তসমূহ কি কি?
সোলে বা আপস ডিক্রি বা সম্মতিসূচক ডিক্রির বিরুদ্ধে প্রতিকার কি?
পক্ষভুক্ত করার আবেদনের তামাদির মেয়াদ কতদিন?
পক্ষভুক্ত করার আবেদন না করার ফলাফল কি?
মোকদ্দমা বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার কি?
কত দিনের মধ্যে আদেশটি রদের জন্য আবেদন করা যাবে? এ সংক্রান্ত আপিলের বিধান কি?
মোকদ্দমার পক্ষ দেউলিয়া হয়ে গেলে তার ফলাফল কি?
কখন মোকদ্দমা প্রত্যাহার বা দাবীর কোন অংশ প্রত্যাহার করা যায়?
সোলে বা মোকদ্দমা-আপস কাকে বলে?
সোলে বা আপস ডিক্রির শর্তসমূহ কি কি?
সোলে বা আপস ডিক্রি বা সম্মতিসূচক ডিক্রির বিরুদ্ধে প্রতিকার কি?
মামলার পক্ষগণের মৃত্যু, বিবাহ ও অস্বচ্ছলতার ফলাফল কি?
দেওয়ানি কার্যবিধির আদেশ-২২ অনুযায়ী কোন মোকদ্দমা বা আপীল চলমান থাকলে উক্ত সময় নিম্নলিখিত ঘটনাগুলো ঘটলে সেই ক্ষেত্রে মোকদ্দমা বা আপীলের কি হবে বা পক্ষগণ কি করবে সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১. কোন পক্ষের মৃত্যু [আদেশ-২২ বিধি ১ থেকে ৬]
২. কোন পক্ষের বিবাহ [আদেশ-২২ বিধি ৭ ]
৩. কোন পক্ষের দেউলিয়াত্ব [আদেশ-২২ বিধি ৮ ]
৪. স্বার্থ হস্তান্তর [আদেশ-২২ বিধি ১০]
মোকদ্দমার পক্ষ (বাদী বা বিবাদীর) মৃত্যুর ফলাফল:
আদেশ-২২ বিধি-১ থেকে ৬ অনুযায়ী মোকদ্দমার কোন পক্ষ মারা গেলে নিম্নলিখিত ফলাফল হতে পারে এবং নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নিতে হতে পারে। একমাত্র বাদী বা বিবাদী মারা গেলে এবং যদি মোকদ্দমা করার অধিকার টিকে থাকে তাহলে বাদী বা বিবাদীর উত্তরাধিকার বা আইনত প্রতিনিধিকে পক্ষভুক্ত করার আবেদন করতে হবে। কিন্তু মোকদ্দমা করার অধিকার টিকে না থাকলে মোকদ্দমাটি বাতিল হতে পারে। যেখানে অনেক বাদী বা বিবাদীর মধ্যে একজন মারা যায় এবং জীবিত বাদী বা বিবাদীদের পক্ষে মোকদ্দমা করার অধিকার বিদ্যমান থাকে, সেই ক্ষেত্রে আদালত মোকদ্দমায় অগ্রসর হতে পারে কিন্তু জীবিত বাদী বা বিবাদীদের পক্ষে মোকদ্দমা করার অধিকার বিদ্যমান না থাকলে, সেই ক্ষেত্রে পক্ষভুক্ত করার আবেদন না করলে মোকদ্দমাটি বাতিল হবে।
পক্ষভুক্ত করার আবেদনের তামাদির মেয়াদ কতদিন?
মৃত বাদী, বিবাদী, আপীলকারী বা প্রতিবাদীর আইনগত প্রতিনিধিকে পক্ষভুক্ত করে মোকদ্দমায় অগ্রসর হওয়ার তামাদির মেয়াদ ৯০ দিন। অর্থাৎ মোকদ্দমার কোন পক্ষের মৃত্যু হলে আইন অনুযায়ী যদি পক্ষভুক্ত করার আবেদন করা প্রয়োজন হয় তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে পক্ষভুক্তির আবেদন করতে হবে। তামাদি আইনের ১৭৬ এবং ১৭৭ অনুচ্ছেদে এই মেয়াদ উল্লেখ করা হয়েছে।
পক্ষভুক্ত করার আবেদন না করার ফলাফল কি?
নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে পক্ষভুক্ত করার আবেদন না করলে আদালত মোকদ্দমাটি বাতিল করতে পারে। বাদী পক্ষ আবেদন না করলে বাদীর মামলা এবং বিবাদী পক্ষ আবেদন না করলে বিবাদীর মামলা বাতিল হবে।
মোকদ্দমা বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার কি?
মোকদ্দমার কোন পক্ষের মৃত্যুর কারণে এবং ৯০ দিনের মধ্যে পক্ষভুক্ত করার আবেদন না করায়, আদালত মোকদ্দমাটি বাতিলের আদেশ দিলে-
১. মোকদ্দমা বাতিলের আদেশ রদের জন্য ৯ বিধির অধীন এবং সরাসরি রদের জন্য ৯ক বিধির অধীন আবেদন করা যাবে। কিন্তু
২. একই কারণে নতুন করে মোকদ্দমা দায়ের করা যাবেনা |[বিধি ৯ (১)]।
কত দিনের মধ্যে আদেশটি রদের জন্য আবেদন করা যাবে?
মোকদ্দমা বাতিলের আদেশ হতে ৬০ দিনের মধ্যে আদেশটি রদের জন্য বা সরাসরি রদের জন্য আবেদন করা যাবে। তামাদি আইন, ১৯০৮, অনুচ্ছেদ ১৭১। ৯ক বিধির অধীন সরাসরি বাতিল এর আবেদনের ক্ষেত্রে আদালত আবেদনকারীকে অনধিক ৩০০০ টাকা খরচ প্রদান করার আদেশ দিতে পারে। আদেশ ২২ বিধি ৯ক।
এ সংক্রান্ত আপিলের বিধান কি?
২২ আদেশের ৯ বিধির অধীনে মোকদ্দমা বাতিলের আদেশ রদের জন্য আবেদন করা হলে এবং আদালত উক্ত আবেদন প্রত্যাখ্যান করলে তার বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে কিন্তু মোকদ্দমা বাতিলের আদেশ রদের আবেদন মঞ্জুর করলে তার বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না।
মোকদ্দমার পক্ষ দেউলিয়া হয়ে গেলে তার ফলাফল কি?
দেওয়ানী কার্যবিধির ২২ নং আদেশের ৮ নং বিধিতে বলা হয়েছে বাদীর দেউলিয়াত্ব মামলাটি বাতিল হবে না এবং এই ক্ষেত্রে বাদীর স্বত্বনিয়োগী বা রিসিভার মামলাটি চালিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এই নিয়মটি প্রতিদ্বন্দ্বিপক্ষের (বিবাদীর) দেউলিয়াত্বের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না। অর্থাৎ বিবাদী যদি দেউলিয়া হয়ে যায়, তাহলে মামলা এ্যাবেট বা বাতিল হবে এবং এই ক্ষেত্রে আদালত মোকদ্দমাটি স্থগিত করতে পারে এবং এই ক্ষেত্রে বিবাদীর প্রতিনিধি পক্ষভুক্ত হয়ে মোকদ্দমা অগ্রসর হতে পারে। যেমন 'ক' 'খ' এর বিরুদ্ধে ৪০০০০০ টাকার মামলা দায়ের করেছে। 'খ' কে আদালত দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। সুতরাং 'খ' এর বিরুদ্ধে আর মামলা চলতে পারে না। কিন্তু এই মামলায় 'খ' যদি মারা যায়, তাহলে আদালত এই মৃত ব্যক্তির আইনগত প্রতিনিধিদের কে বিবাদী হিসেবে যুক্ত করে মামলায় অগ্রসর হতে পারবে। [আদেশ ২২ বিধি ৮ এবং ১০]
মোকদ্দমা প্রত্যাহার ও সমন্বয়:
কখন মোকদ্দমা প্রত্যাহার বা দাবীর কোন অংশ প্রত্যাহার করা যায়?
আদেশ ২৩, বিধি ১ অনুযায়ী-
১. মামলা দায়ের হওয়ার পর যে কোন সময় বাদী মামলা প্রত্যাহার করতে পারে বা মোকদ্দমায় দাবীর অংশ পরিত্যাগ করতে পারে। [উপবিধি-২]। অথবা
২. রীতিসিদ্ধ কোন ত্রুটির কারণে মামলাটি ব্যর্থ হওয়ার কারণ আছে বা মামলার বিষয়বস্তুর জন্য বাদীকে নতুন করে মামলা করার অনুমতি প্রদানের যথেষ্ট অজুহাত আছে বলে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হলে আদালত উক্ত মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কে নতুন করে মামলা করার অনুমতিসহ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করতে পারে।[উপবিধি-২]।
উপবিধি-১ এবং উপবিধি-২ এর মধ্যে পার্থক্য হলো এই যে, উপবিধি-১ অনুযায়ী বাদী মোকদ্দমার যে কোন সময় আদালতের অনুমতি ছাড়া এবং কোন কারণ ছাড়া তার মোকদ্দমা প্রত্যাহার করতে পারে বা মোকদ্দমার কোন দাবীর অংশ ত্যাগ করতে পারে। উপবিধি ২ এর অধীন বাদী আদালতের অনুমতি নিয়ে মোকদ্দমা প্রত্যাহার করা প্রয়োজন যদি বাদী উক্ত একই কারণে নতুন করে মোকদ্দমা দায়ের করতে চায়। যদি বাদী নতুন করে মোকদ্দমা দায়ের করার অনুমতি না নিয়ে উপবিধি ২ এর অধীন মোকদ্দমা প্রত্যাহার করে তাহলে সে-
১. একই কারণে নতুন করে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারবে না এবং
২. খরচ প্রদানের জন্য দায়ী হবে।
তাছাড়া কোন মামলায় একাধিক বাদী থাকলে, আদালত অন্যান্য বাদীদের অনুমতি ছাড়া কোন একজন বাদীকে মোকদ্দমা প্রত্যাহার করার অনুমতি দিবে না [আদেশ ২৩ বিধি ১(৪)]।
সোলে বা মোকদ্দমা-আপস:
সোলে বা মোকদ্দমা-আপস কাকে বলে?
দেওয়ানী কার্যবিধির ২৩ আদেশের ৩ বিধিতে সোলে বা মোকদ্দমা-আপস [Compromise of suit] বা আপস ডিক্রি [compromise decree] এর বিধান রয়েছে । এই বিধির অধীন আদালতকে পক্ষগণের মধ্যকার কোন আইনসম্মত চুক্তি বা আপস মীমাংসার মাধ্যমে কোন মোকদ্দমা সম্পূর্ণ বা আংশিক সম্বনয় করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এবং আদালত উক্ত চুক্তি বা আপস অনুযায়ী ডিক্রি প্রদান করতে পারে।
সোলে বা আপস ডিক্রির শর্তসমূহ কি কি?
১. পক্ষগণের মধ্যে আইনসম্মত চুক্তি বা আপস বা সন্তোষসাধন থাকতে হবে;
২. উক্ত চুক্তি বা আপস বা সন্তোষসাধন দ্বারা মোকদ্দমা যুক্তিসংগতভাবে সামগ্রিক বা আংশিকভাবে মিটমাট হয়েছে বা মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিবাদী সামগ্রিক বা আংশিকভাবে বাদীর সন্তুষ্টিসাধন করেছে;
৩. আদালত এমন চুক্তি, আপস বা সন্তুষ্টিসাধন লিপিবদ্ধ করবে এবং তদনুসারে একটি ডিক্রিদান করবে যা সোলে বা আপস ডিক্রি নামে পরিচিত।
সোলে বা আপস ডিক্রি বা সম্মতিসূচক ডিক্রির বিরুদ্ধে প্রতিকার কি?
দেওয়ানী কার্যবিধির ৯৬ (৩) ধারা অনুযায়ী সোলে বা আপস ডিক্রি বা সম্মতিসূচক ডিক্রির বিরুদ্ধে কোন আপীল করা যায় না। সুতরাং এই ডিক্রির বিরুদ্ধে বিভিশন করা যাবে। কিন্তু বিধি ২৩ (৩) এর অধীন আদালত পক্ষগণের মধ্যে আইনসম্মত চুক্তি বা আপস বা সন্তোষসাধন লিপিবদ্ধ করলে বা লিপিবদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কোন আদেশ প্রদান করলে, উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে। আদেশ ৪৩, বিধি ১ (ড)]।
আদেশ ২৩ (৩) বিধির অধীন সোলে বা আপস ডিক্রি বা সম্মতিসূচক ডিক্তির বিরুদ্ধে আপীল করা যায় না কিন্তু রিভিশন করা যায়। কিন্তু ৮৯ক ধারার অধীন মধ্যস্থতার মাধ্যমে পক্ষগণের মধ্যে মীমাংসা অনুযায়ী আদালত যে ডিক্রি বা আদেশ প্রদান করে, উক্ত ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপীল বা রিভিশন কোনটি করা যায় না।
টপিকস
মামলার পক্ষগণের মৃত্যু, বিবাহ ও অস্বচ্ছলতার ফলাফল কি? পক্ষভুক্ত করার আবেদনের তামাদির মেয়াদ কতদিন? পক্ষভুক্ত করার আবেদন না করার ফলাফল কি? মোকদ্দমা বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার কি? কত দিনের মধ্যে আদেশটি রদের জন্য আবেদন করা যাবে? এ সংক্রান্ত আপিলের বিধান কি? মোকদ্দমার পক্ষ দেউলিয়া হয়ে গেলে তার ফলাফল কি? কখন মোকদ্দমা প্রত্যাহার বা দাবীর কোন অংশ প্রত্যাহার করা যায়? সোলে বা মোকদ্দমা-আপস কাকে বলে? সোলে বা আপস ডিক্রির শর্তসমূহ কি কি? সোলে বা আপস ডিক্রি বা সম্মতিসূচক ডিক্রির বিরুদ্ধে প্রতিকার কি?