- Get link
- X
- Other Apps
রায়ে কি কি সকল বিষয় উল্লেখ করতে হবে?
বিকল্প রায় কি?
কিভাবে দায়রা আদালত কর্তৃক রায়ের কপি অগ্রবর্তী করা হয়?
মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন প্রসঙ্গে। হাইকোর্ট বিভাগে ডেথ রেফারেন্স।
৩৭৬ ধারায় ডেথ রেফারেন্স [Death Referance] শুনানী শেষে হাইকোর্ট বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দিতে পারে।
কিভাবে দণ্ড বা শাস্তি কার্যকর করা হয়?
গর্ভবর্তী স্ত্রীলোকের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতকরণ।
দণ্ড কার্যকর করার জন্য পরোয়ানা জারি।
জরিমানা আদায়ের জন্য পরোয়ানা জারি।
কে পরোয়ানা ইস্যু করতে পারেনা?
নাবালক অপরাধীকে সংশোধনাগারে আটকের বিধান।
দণ্ডবিধির অধীন দণ্ড হ্রাসের ক্ষমতা। দোবারা সাজার নীতি।
৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতির শর্তসমূহ।
কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতি প্রযোজ্য না?
বিকল্প রায় কি?
কিভাবে দায়রা আদালত কর্তৃক রায়ের কপি অগ্রবর্তী করা হয়?
মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন প্রসঙ্গে। হাইকোর্ট বিভাগে ডেথ রেফারেন্স।
৩৭৬ ধারায় ডেথ রেফারেন্স [Death Referance] শুনানী শেষে হাইকোর্ট বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দিতে পারে।
কিভাবে দণ্ড বা শাস্তি কার্যকর করা হয়?
গর্ভবর্তী স্ত্রীলোকের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতকরণ।
দণ্ড কার্যকর করার জন্য পরোয়ানা জারি।
জরিমানা আদায়ের জন্য পরোয়ানা জারি।
কে পরোয়ানা ইস্যু করতে পারেনা?
নাবালক অপরাধীকে সংশোধনাগারে আটকের বিধান।
দণ্ডবিধির অধীন দণ্ড হ্রাসের ক্ষমতা। দোবারা সাজার নীতি।
৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতির শর্তসমূহ।
কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতি প্রযোজ্য না?
রায় সম্পর্কে [Of the Judgment] [ধারা ৩৬৬ থেকে ৩৭৩]
বিচার সমাপ্ত হবার অব্যাহত পর অথবা নোটিশ দিয়ে নির্ধারিত দিনে প্রকাশ্য আদালতে বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়। ভিন্নরুপ বিধান না থাকলে প্রত্যেকটি রায় আদালতের প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক লিখিত হবে বা তার শ্রুত লিখন হতে আদালতের ভাষায় বা ইংরেজি ভাষায় লিখিত হবে।
রায়ে কি কি সকল বিষয় উল্লেখ করতে হবে?
রায়ে নিম্নলিখিত বিষয় থাকতে হবে;
১. বিচার্য বিষয়সমুহ
২. সিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্তের কারণ
৩. আসামী যে অপরাধে (যদি থাকে) দণ্ডবিধি বা অন্য আইনের যে ধারায় শাস্তি পেল। এবং
৪. শাস্তি [ধারা-৩৬৭]
বিকল্প রায় কি? Judgment in Alternative]:
ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৬৭ (৩) ধারায় বিকল্প রায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। দণ্ডবিধির অধীন দণ্ড হলে অপরাধটি উক্ত বিধির দুইটি ধারার মধ্যে কোন ধারার অন্তর্ভুক্ত সে সম্পর্ক কোন সন্দেহ থাকলে আদালত তা স্পষ্টরূপে প্রকাশ করবে এবং বিকল্প রায় প্রদান করবে।
কিভাবে দায়রা আদালত কর্তৃক রায়ের কপি অগ্রবর্তী করা হয়? [ধারা ৩৭৩]:
দায়রা আদালত কর্তৃক যে মামলার বিচার করা হয়েছে, সেই মামলার রায়ের ও দণ্ডাদেশের (যদি থাকে) কপি, দায়রা আদালত পাঠাবে-
১. চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে যেমন টা প্রযোজ্য হয় এবং
২. জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে
এখানে বলে রাখা ভালো যে, আদালত একবার রায়ে স্বাক্ষর করলে পরিবর্তন বা রিভিউ করতে পারবেনা কিন্তু করনিক ভুল সংশোধন করতে পারে [ধারা-৩৬৯]। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী কত সময়ের মধ্যে আপীল করতে পারে তা রায়ের সময় আসামীকে বলতে হবে। মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ৭ দিনের মধ্যে আপীল করতে পারে [ধারা ৩৭১(৩)]।
মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন প্রসঙ্গে [Confirmation of Death Sentence] [ধারা ৩৭৪ থেকে ৩৭৯]
দায়রা আদালত মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে এমন মামলার কার্যক্রম ৩৭৪ ধারা অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগে প্রেরণ করবে। ৩৭৫ ধারায় ডেথ রেফারেন্স শুনানীর সময় হাইকোর্ট বিভাগ অধিকতর অনুসন্ধান করতে বা অতিরিক্ত সাক্ষ্য নিতে নির্দেশ দিতে পারে। ডেথ রেফারেন্স শুনানী শেষে হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখতে পারে বা বাতিল করতে বা অন্য কোন শাস্তি দিতে পারে ৩৭৬ ধারায়।
[ধারা ৩৭৪] হাইকোর্ট বিভাগে ডেথ রেফারেন্স [Death Referance):
দায়রা আদালত মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিলে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী মামলার কার্যক্রম হাইকোর্ট বিভাগে দাখিল করতে হবে। মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হাইকোর্ট বিভাগে প্রেরণ করলে হাইকোর্ট বিভাগ কি কি করতে পারে তা ৩৭৫ এবং ৩৭৬ ধারায় আলোচনা করা হয়েছে।
অধিকতর অনুসন্ধান বা অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ:
৩৭৪ ধারার অধীনে এমন কার্যক্রম পেশ করার পর ৩৭৫ ধারার অধীন হাইকোর্ট বিভাগ অনুসন্ধান অথবা অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারে বা দায়রা জজকে অনুসন্ধান করতে বা সাক্ষ্য গ্রহণ করতে নির্দেশ দিতে পারে।
৩৭৬ ধারায় ডেথ রেফারেন্স [Death Referance] শুনানী শেষে হাইকোর্ট বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দিতে পারে:
৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগে মামলার কার্যক্রমটি দাখিল করা হলে, ৩৭৬ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত
ক. মৃত্যুদণ্ডের আদেশ অনুমোদন করতে পারে বা আইনে অনুমোদিত অন্যকোনো শাস্তি দিতে পারে বা
খ. মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বাতিল করতে পারে এবং দায়রা আদালত যে দণ্ডে আসামীকে দণ্ডিত করতে পারতো সেই দণ্ড দিতে পারে বা
গ. একই অভিযোগে বা সংশোধিত অভিযোগে নতুন বিচারের নির্দেশ দিতে পারে বা
ঘ. আসামীকে খালাস দিতে পারে।
তবে উক্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীলের মেয়াদ শেষ না হলে বা আপীল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত এমন আদেশ দিবে না।
এখানে বলে রাখা ভালো যে, ৩৭৬ ধারায় হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহালের আদেশ দিলে বা অন্যকোনো আদেশ দিলে, কোন প্রকার বিলম্ব ছাড়া উক্ত আদেশের কপি দায়রা জজের নিকট প্রেরণ করতে হবে [ধারা ৩৭৯]। অতঃপর দায়রা জজ ওয়ারেন্ট ইস্যু করে বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে ৩৮১ ধারায় উক্ত আদেশ কার্যকর করবে। মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কোন মহিলা গর্ভবর্তী হলে হাইকোর্ট বিভাগ ৩৮২ ধারায় তার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করতে পারে এবং যাবজ্জীবন কারাবাসে কমাতে পারে।
কিভাবে দণ্ড বা শাস্তি কার্যকর করা হয়?[Of Execution][ধারা ৩৮১ থেকে ৪০০]
৩৭৬ ধারায় হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহালের আদেশ দিলে বা অন্য কোনো আদেশ দিলে দায়রা জজ ওয়ারেন্ট ইস্যু করে বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে ৩৮১ ধারায় উক্ত আদেশ কার্যকর করবে।
গর্ভবর্তী স্ত্রীলোকের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতকরণ [ধারা-৩৮২]:
৩৮২ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ গর্ভবতী স্ত্রীলোকের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতকরণের আদেশ দিতে পারে বা উপযুক্ত মনে করলে শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে পারে।
দণ্ড কার্যকর করার জন্য পরোয়ানা জারি [ধারা ৩৮৩ থেকে ৩৮৫]:
মৃত্যুদণ্ডাদেশ ব্যতীত অন্য কোনো কারাদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে হবে পরোয়ানা জারির মাধ্যমে। দণ্ডদানকারী আদালত এমন পরোয়ানা জারি করবে [ধারা ৩৮৩]৷
কারাবাসের শাস্তি কার্যকর করার প্রত্যেকটি ওয়ারেন্ট বা পরোয়ানা কয়েদী যে জেলে আটক আছে বা আটক থাকবে সেই জেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নিকট নির্দেশিত হতে হবে [ধারা ৩৮৪]। যখন কয়েদীকে জেলে আটক রাখতে হবে, তখন পরোয়ানাটি জেলার [Jailor] কে যথাযথভাবে জানাতে হবে [ধারা-৩৮৫]।
[ধারা ৩৮৬] জরিমানা আদায়ের জন্য পরোয়ানা জারি [ Warrant For Levy of Fine ] :
যখন কোন অপরাধীকে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে, অর্থদণ্ড প্রদানকারী আদালত নিম্নলিখিত ২টি উপায়ে অর্থদণ্ড আদায় করতে পারে:
১. অপরাধীর অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয় করে জরিমানা আদায়ের জন্য আদালত পরোয়ানা জারি করতে পারে ।
২. অনাদায়ী অপরাধীর অস্থাবর এবং স্থাবর বা উভয় সম্পত্তি দেওয়ানী কার্যপদ্ধতি অনুসারে পরোয়ানা কার্যকর করে পাওনা আদায়ে জেলা কালেক্টরকে ক্ষমতা দিয়ে অর্থদণ্ড আদায় করতে পারে।
তবে যদি দণ্ডাদেশে নির্দেশ থাকে যে, জরিমানা পরিশোধ করা না হলে অপরাধী কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং আসামী যদি আরোপিত অর্থদণ্ড না দিয়ে কারা ভোগ করে, তবে আদালত উক্তরুপ পরোয়ানা জারি করতে পারবে না। যখন কোন আসামীকে কেবল মাত্র জরিমানা করা হয়, এবং জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়, সেই ক্ষেত্রে আদালত উক্ত জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য ৩০ দিন সময় দিতে পারে বা ২ এবং ৩ কিস্তিতে এবং উক্ত ক্ষেত্রে প্রথম কিস্তি আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এবং অন্যান্য কিস্তিগুলো ৩০ দিনের বেশি বিরতিতে পরিশোধ করা যাবেনা [ধারা-৩৮৮]।
তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে, অর্থদণ্ড আদায়ের পরোয়ানা কার্যকর করতে অপরাধীকে গ্রেফতার এবং আটক করা যাবে না।
[ধারা-৩৮৯) কে পরোয়ানা ইস্যু করতে পারেনা?
যে জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট দণ্ড দিয়েছেন তিনি বা তার স্থলাভিষিক্ত জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত দণ্ড কার্যকর করার জন্য পরোয়ানা জারি করতে পারে।
(ধারা ৩৯৯) নাবালক অপরাধীকে সংশোধনাগারে আটকের বিধান:
ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৯৯ ধারার অধীন যখন কোনো ব্যক্তি যার বয়স ১৫ বৎসরের কম তাকে কোনো ফৌজদারী আদালত কোনো অপরাধের জন্য কারাদণ্ড প্রদান করে, সেই আদালত উক্ত ব্যক্তিকে ফৌজদারী জেলে আটক রাখার পরিবর্তে সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোনো সংশোধনাগারে আটক রাখার আদেশ দিতে পারে।
দণ্ড স্থগিত, মওকুফ এবং হ্রাস Suspensions, Remissions and Commutations of Sentence [ধারা ৪০১ থেকে ৪০২]:
বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে-কোন দন্ডের মার্জনা, বিলম্ব ও বিরাম মঞ্জুর করার এবং যে-কোন দন্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সেটা ব্যতীত ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ এবং ৪০২ ধারায় সরকারকেও একই ধরনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ ধারায় সরকার কোন দণ্ডিত আসামীর দণ্ড কার্যকর স্থগিত [Suspend] করতে পারে বা শাস্তির সম্পূর্ণ বা যে কোন অংশ মওকুফ [Remit] করতে পারে। অন্যদিকে সরকার ৪০২ ধারায় দণ্ড হ্রাস বা পরিবর্তন [Commutation) করে অন্য কোন দণ্ড দিতে পারে। ৪০২ ধারায় সরকার মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাবাস ও সশ্রম কারাবাসকে বিনাশ্রম কারাবাসে হ্রাস করতে পারে। ৪০১ ও ৪০২ ধারায় সরকারকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সেই একই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে [ধারা ৪০২ক]।
দণ্ডবিধির অধীন দণ্ড হ্রাসের ক্ষমতা [ধারা ৫৪ ও ৫৫]:
অন্যদিকে দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় সরকার মৃত্যুদণ্ড হ্রাস করে দণ্ডবিধিতে উল্লেখিত যেকোন কারাদণ্ড প্রদান করতে পারে ও দণ্ডবিধির ৫৫ ধারায় সরকার যাবজ্জীবন কারাবাসকে কমিয়ে অনধিক ২০ বৎসর কারাদণ্ড দিতে পারে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৪০১ এবং ৪০২ ধারা ও দণ্ডবিধির ৫৪ ও ৫৫ ধারার মধ্যে তুলনা:
দণ্ডবিধির ৫৪ ও ৫৫ ধারায় সরকারকে দণ্ড কার্যকর স্থগিত বা মওকুফের কোন ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। কিন্তু ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ ধারায় সরকারকে দণ্ড কার্যকর স্থগিত বা দণ্ড মওকুফের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যেমন: কোন অভিযুক্ত দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে সরকারের কাছে আবেদন করলে, সরকার ৪০১ ধারায় তার শাস্তি মওকুফ করতে পারে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরকার অনেক দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ড মওকুফ করে। আবার, সরকার কোন দণ্ডিত আসামীর দণ্ড স্থগিত করে আসামীকে ৪০১ ধারায় মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু দণ্ডবিধির ৫৪ ও ৫৫ ধারায় সরকার কোন আসামীকে মুক্তি দিতে পারেনা।
দণ্ড হ্রাসের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ৫৪ ও ৫৫ ধারায় সরকারকে প্রদত্ত ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। কারণ ৫৪ ধারায় শুধুমাত্র মৃত্যুদণ্ড হ্রাস করতে পারে এবং ৫৫ ধারায় শুধুমাত্র যাবজ্জীবন কারাবাস হ্রাস করতে পারে। অন্যদিকে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০২ ধারায় দণ্ড হ্রাসের ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতা অসীম। কারণ ৪০২ ধারায় সরকার মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাবাস ও সশ্রম কারাবাসকে বিনাশ্রম কারাবাসে হ্রাস করতে পারে। যেমন: সরকার মৃত্যুদণ্ড হ্রাস করে ১০ বৎসর করতে পারে বা ৭ বৎসরের দত্ত হ্রাস করে ৩ বৎসর করতে পারে। কিন্তু দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় শুধুমাত্র মৃত্যুদণ্ড হ্রাস করে যে কোন কারাদণ্ড দিতে পারে বা ৫৫ ধারায় যাবজ্জীবন কারাবাস কমিয়ে অনধিক ২০ বৎসর করতে পারে। দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ড বা ৫৫ ধারায় যাবজ্জীবন কারাবাস ব্যতিত সরকার অন্যকোন দণ্ড হ্রাস করতে পারেনা।
দোবারা সাজার নীতি [Principle of Double Jeopardy]
৪০৩ ধারা অনুযায়ী একবার খালাস বা দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে একই অপরাধের জন্য পুনরায় বিচার করা যাবেনা:
এ সম্পর্কে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০৩ ধারার অধীন নিম্নলিখিত নীতিসমূহ আলোচনা করা হয়েছে।
i. দোবারা সাজা [Double Jeopardy), বা
ii. পূর্বে খালাসপ্রাপ্ত [Autre fois acquit] বা পূর্বে দণ্ডপ্রাপ্ত [Autre fois convict] বা
iii. একই বিষয়ে কাউকে দুইবার বিচারের সম্মুখীন করা যায় না [nemo debet bis vexari] নীতি।
মূলত উপরে উল্লেখিত নীতিসমূহ একই। ৪০৩ ধারায় বলা হয়েছে, একবার দন্ডিত বা খালাসপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে একই অপরাধের জন্য পুনরায় বা দ্বিতীয়বার বিচার করা যাবে না [person once convicted or acquitted not to be tried for same offence twice] ৪০৩ ধারা [nemo debet bis Vexari] নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত যার অর্থ হলো কোন ব্যক্তিকে দ্বিতীয় বারের জন্য বিচারাধীন করা যাবে না যার জন্য তাকে একবার চার্জে আনা হয়েছিল।
৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতির শর্তসমূহঃ
৪০৩ ধারায় উল্লেখিত নীতি প্রযোজ্য করতে হলে তিনটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে-
১. অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে অপরাধের চার্জ করা হয়েছে তাকে সেই অপরাধের জন্য বিচার করতে হবে।
২. উক্ত বিচার অবশ্যই এখতিয়ারসম্পন্ন কোন আদালত কর্তৃক হতে হবে
৩. বিচারে অবশ্যই খালাসের [Acquittal] বা দণ্ডের [Conviction] আদেশ থাকতে হবে।
কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতি প্রযোজ্য না:
৪০৩ ধারার দোবারা সাজা বা double Jeopardy নীতি প্রযোজ্য হবে না-
১. অভিযোগ খারিজ করে যদি কোন ব্যক্তিকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বা
২. ২৪৯ ধারার অধীন মামলার প্রক্রিয়া বন্ধ করে যদি কোন ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয় বা
৩. কোনো কারণে আসামীকে অব্যাহতি দেওয়া হলে ৪০৩ ধারার দোবারা সাজা বা double Jeopardy নীতি প্রযোজ্য হবে না।
যেহেতু উপরে উল্লেখি অব্যাহতি বা মুক্তি ৪০৩ ধারার অধীন খালাস বলে গণ্য হবে না, তাই উক্ত ক্ষেত্রে ৪০৩ ধারার দোবারা সাজা বা double Jeopardy নীতি প্রযোজ্য হবে না। তাই অব্যাহতি বা মুক্তির আদেশের বিরুদ্ধে ৪০৩ ধারা প্রযোজ্য না। অর্থাৎ কোন ব্যক্তিকে অভিযোগ হতে অব্যাহতি বা মুক্তি দেওয়া হলে তাকে পুনরায় বিচারের সম্মুখীন করা যাবে এবং এই ক্ষেত্রে ৪০৩ ধারার double Jeopardy নীতি বাধা হবে না।
টপিকস
রায়ে কি কি সকল বিষয় উল্লেখ করতে হবে? বিকল্প রায় কি? কিভাবে দায়রা আদালত কর্তৃক রায়ের কপি অগ্রবর্তী করা হয়? মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন প্রসঙ্গে। হাইকোর্ট বিভাগে ডেথ রেফারেন্স। ৩৭৬ ধারায় ডেথ রেফারেন্স [Death Referance] শুনানী শেষে হাইকোর্ট বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দিতে পারে। কিভাবে দণ্ড বা শাস্তি কার্যকর করা হয়? গর্ভবর্তী স্ত্রীলোকের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতকরণ। দণ্ড কার্যকর করার জন্য পরোয়ানা জারি। জরিমানা আদায়ের জন্য পরোয়ানা জারি। কে পরোয়ানা ইস্যু করতে পারেনা? নাবালক অপরাধীকে সংশোধনাগারে আটকের বিধান। দণ্ডবিধির অধীন দণ্ড হ্রাসের ক্ষমতা। দোবারা সাজার নীতি। ৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতির শর্তসমূহ। কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০৩ ধারার দোবারা সাজার নীতি প্রযোজ্য না?