- Get link
- X
- Other Apps
দণ্ডবিধি কি ধরনের আইন?
দন্ডবিধির খসড়া প্রণয়নের ইতিহাস।
ফৌজদারী অপরাধের উপাদান কি কি?
অপরাধী মন [Mens Rea] এবং দোষাবহ কার্য বা অপরাধজনক কার্য [Actus Rea] অর্থ কি?
দণ্ডবিধির আঞ্চলিক প্রয়োগ।
দণ্ডবিধির রাষ্ট্রের ভিতরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়?
দণ্ডবিধির রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়?
রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরের অপরাধের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ব্যাপ্তি ।
দন্ডবিধির খসড়া প্রণয়নের ইতিহাস।
ফৌজদারী অপরাধের উপাদান কি কি?
অপরাধী মন [Mens Rea] এবং দোষাবহ কার্য বা অপরাধজনক কার্য [Actus Rea] অর্থ কি?
দণ্ডবিধির আঞ্চলিক প্রয়োগ।
দণ্ডবিধির রাষ্ট্রের ভিতরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়?
দণ্ডবিধির রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়?
রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরের অপরাধের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ব্যাপ্তি ।
দণ্ডবিধি কি ধরনের আইন? (What kind of law is Penal Code?)
দণ্ডবিধি (Penal Code) অপরাধ সংক্রান্ত একটি মৌলিক বা তত্ত্বগত আইন [Substantive Law)। এই আইনে বিভিন্ন সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন উপাদান এবং শাস্তির পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়েছে কিন্তু সেগুলোর বিচারের পদ্ধতি দেওয়া হয়নি। সপ্তবিধির অধীন অপরাধসমূহ কিভাবে বিচার করা হবে তা দণ্ড সম্পর্কিত পদ্ধতিগত আইন, ফৌজদারী কার্যবিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দন্ডবিধির খসড়া প্রণয়নের ইতিহাস:
ভারতীয় উপমহাদেশে সর্বপ্রথম আইন কমিশন গঠন করা হয় ১৮৩৪ সালে। প্রথম আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন থমাস ব্যাবিংটন ম্যাকুলে (Lord Macaulay)। প্রথম আইন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন G.W. Anderson, F. Millet, এবং J.M. Macleod। ১৮৩৭ সালে এই কমিশন দন্তবিধি প্রণয়নের জন্য খসড়া জমা দেয় এবং ৬ অক্টোবর ১৮৬০ সালে বিলটি পাস হয় এবং ১লা জানুয়ারী ১৮৬২ সালে আইনটি কার্যকর হয়।
ফৌজদারী অপরাধের উপাদান কি কি? [What are the elements of criminal offences?]
ফৌজদারী অপরাধে অভিযুক্ত করার প্রাথমিক শর্তসমূহ কি কি?
কোন ব্যক্তিকে ফৌজদারী অপরাধে অভিযুক্ত করতে প্রধানত ২টি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হয়।
১. অপরাধী মন [Mens Rea] এবং
২. দোষাবহ কার্য বা অপরাধজনক কার্য [Actus Rea]
অপরাধী মন [Mens Rea] এবং দোষাবহ কার্য বা অপরাধজনক কার্য [Actus Rea] অর্থ কি?
Mens Rea হলো ল্যাটিন শব্দ যার ইংরেজি অর্থ হলো Guilty Mind (অপরাধী মন)। অন্যদিকে Actus Reu অর্থ হলো দোষাবহ কার্য বা অপরাধজনক কার্য। Actus Rea এবং Mens Rea ল্যাটিন ম্যাক্সিম Actus non facit reum nisi mens sit rea নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত যার অর্থ হলো অভিপ্রায় এবং কর্ম উভয়ের সংযোগে অপরাধের সৃষ্টি হয় বা কোন কাজের অভিপ্রায় অপরাধমূলক না হলে তার জন্য কোন ব্যক্তিকে অপরাধী সাব্যস্ত করা যাবেনা। কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত না অপরাধজনক মন নিয়ে কোন কার্য সম্পাদন করা হয় তা কোন অপরাধ সৃষ্টি করেনা। সুতরাং কোন ব্যক্তিকে ফৌজদারী অপরাধে অভিযুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রথমে দেখতে হবে
১. উক্ত ব্যক্তি অপরাধজনক কার্যটি [Actus Rea] সম্পাদন করেছে কিনা বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কিনা এবং
২. উক্ত অপরাধজনক কার্যটি অপরাধজনক মন [Mens Rea] নিয়ে সম্পাদন করেছে কিনা।
উদাহরণ: B কে হত্যা করার অভিপ্রায় বা Mens Rea A এর ছিল। শুধুমাত্র এই অভিপ্রায় থাকার কারণে A কোন অপরাধ করেনি যতক্ষণ পর্যন্ত না সে উক্ত অভিপ্রায় অনুযায়ী কোন কার্য করে। যেমন A, B এর দিকে গুলি ছোড়ে। যদি গুলির কারণে B মারা যায় তাহলে A দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দণ্ডিত হবে কিন্তু যদি A, B কে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলেও হত্যার উদ্যোগের [attempt to murder] জন্য A, ৩০৭ ধারায় দণ্ডিত হবে।
দণ্ডবিধির আঞ্চলিক প্রয়োগ [Territorial Application of Penal Code]
দণ্ডবিধির ২ থেকে ৪ ধারায় দণ্ডবিধির আঞ্চলিক এখতিয়ার বা প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি যে শুধুমাত্র বাংলাদেশে সংঘটিত কোন অপরাধের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হবে তা নয় বরং বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত কোন অপরাধের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধি প্রযোজ্য হতে পারে। দণ্ডবিধি বাংলাদেশী নাগরিক এবং একই সাথে বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। রাষ্ট্রের ভিতরে এবং বাইরে [within and beyond Bangladesh] দণ্ডবিধির এই প্রয়োগকে ২টি ভাগে ভাগ করা যায় ।
১. রাষ্ট্রের ভিতরে প্রয়োগ (Intraterritorial Application)
2. রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে প্রয়োগ
(Extraterritorial Application)
দণ্ডবিধির রাষ্ট্রের ভিতরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়? [What is Intraterritorial Application]:
বাংলাদেশের ভিতরে সংঘটিত অপরাধসমূহের শাস্তি (ধারা ২):
দণ্ডবিধির ২ ধারায় দণ্ডবিধির Intraterritorial Application বা রাষ্ট্রের ভিতরে প্রয়োগ এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ২ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ভিতরে দণ্ডবিধিতে উল্লেখিত যেকোন অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার বাংলাদেশের ফৌজদারী আদালতের আছে। ২ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশের ভিতরে যেকোন ব্যক্তি সে বাংলাদেশী হোক বা বিদেশী হোক বা অন্য যে কোন দেশের নাগরিক হোক না কেন, সে যদি দণ্ডবিধিতে উল্লেখিত কোন অপরাধ করে, তাহলে তার ক্ষেত্রে দণ্ডবিধি প্রযোজ্য হবে এবং তার বিচার ও শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার বাংলাদেশের ফৌজদারী আদালতের থাকবে।
দণ্ডবিধির রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়? [What is Extraterritorial Application?]:
দণ্ডবিধির ৩ এবং ৪ ধারায় দণ্ডবিধির Extraterritorial Application বা রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে প্রয়োগ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বাইরে অনুষ্ঠিত কিন্তু আইনবলে বাংলাদেশের ভিতরে বিচারযোগ্য অপরাধসমূহের শাস্তি সম্পর্কে দন্ডবিধির ধারা ৩ উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার বাংলাদেশের ফৌজদারী আদালতের থাকবে যদি উক্ত অপরাধটি বাংলাদেশের দণ্ডবিধিতে শাস্তিযোগ্য হয় এবং বিচারটি এমনভাবে করা হবে যেন সে অপরাধটি বাংলাদেশের ভিতরে করেছে [ধারা ৩]। যে কার্যটি বাংলাদেশে অপরাধ, সেই কার্যটি যখন বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত করা হয় তখনও সেটা অপরাধ বলে গণ্য হবে। মনে করেন বাংলাদেশী কোন নাগরিক যে বাংলাদেশের বাইরে এমন কোন দেশে অপরাধ করলো যেটা উক্ত দেশের আইন অনুযায়ী কোন অপরাধ না। সেই ক্ষেত্রে উক্ত বাংলাদেশীর বিচার এবং শাস্তি বাংলাদেশে করা যাবে যদি উক্ত অপরাধটি বাংলাদেশী আইন অনুযায়ী অপরাধ হয়।
রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরের অপরাধের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ব্যাপ্তি [Extension of Code to Extraterritorial offences]:
দণ্ডবিধির ৪ ধারা এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ১৮৮ ধারা একসাথে মিলিয়ে পড়তে হবে। ৪ ধারা ২টি ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়।
১. বাংলাদেশের বাইরে যেকোন স্থানে বাংলাদেশী নাগরিক কর্তৃক সংঘটিত কোন অপরাধের বিচার
২. বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোন জাহাজ বা বিমানে যেকোন ব্যক্তি সে বাংলাদেশী হোক বা বিদেশী হোক উপকৃত ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত কোন অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার বাংলাদেশের ফৌজদারী আদালতের থাকবে যখন উক্ত অপরাধীকে বাংলাদেশে পাওয়া যাবে।
উদাহরণ: ক একজন বিদেশী নাগরিক। সে বাংলাদেশের একটি নিবন্ধিত জাহাজ যেটা আমেরিকার জলসীমানায় অবস্থিত, সেটাতে অপর একজন বিদেশীকে হত্যা করে। এই ক্ষেত্রে ক এর বিচার বাংলাদেশে করা যাবে। ৩ ও ৪ উভয় ধারা বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু ৩ ধারা প্রযোজ্য হবে যেক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের বাইরে এমন কোন স্থানে অপরাধ করেছে যেখানে উক্ত কার্যটি অপরাধ না কিন্তু বাংলাদেশের আইনে অপরাধ। ৪ (১) ধারা শুধুমাত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য যেখানে ৪(২) ধারা বাংলাদেশী এবং বিদেশী উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।
টপিকস
দণ্ডবিধি কি ধরনের আইন? দন্ডবিধির খসড়া প্রণয়নের ইতিহাস। ফৌজদারী অপরাধের উপাদান কি কি? অপরাধী মন [Mens Rea] এবং দোষাবহ কার্য বা অপরাধজনক কার্য [Actus Rea] অর্থ কি? দণ্ডবিধির আঞ্চলিক প্রয়োগ। দণ্ডবিধির রাষ্ট্রের ভিতরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়? দণ্ডবিধির রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে প্রয়োগ বলতে কি বুঝায়? রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরের অপরাধের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ব্যাপ্তি ।
ইউটিউব ভিডিও - দন্ডবিধির খসড়া প্রণয়নের ইতিহাস- ফৌজদারী অপরাধের উপাদান কি কি? দন্ডবিধির পরিধি