- Get link
- X
- Other Apps
ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ [Complaint to Magistrate]।
নালিশকারীর জবানবন্দি।
নালিশী মামলা [C.R. Case] কাকে বলে?
কে নালিশ গ্রহণ করতে পারে?
[ধারা ২০০] অভিযোগকারী বা নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ বা পরীক্ষা করা [ Examination of Complainant]।
যে ক্ষেত্রে জবানবন্দি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।
[ধারা ২০২] প্রসেস ইস্যু স্থগিত করা (Postponement for issue of process)।
[ধারা- ২০৩] নালিশ খারিজ (Dismissal of Complaint)।
নালিশ খারিজ করতে ম্যাজিস্ট্রেট কি কি সকল বিষয় বিবেচনা করবে?
নালিশ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার।
[ধারা ২০৪| প্রসেস ইস্যু করা [Issue of Process)।
[ধারা ২০৪(৩)] প্রসেস ফি (সমন বা পরোয়ানা ফি) পরিশোধ না করার ফলাফল।
নালিশ খারিজ হলে প্রতিকার।
[ধারা ২০৫] অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি।
[ধারা ২০৫ঘ] একই অপরাধ বিষয়ে নালিশী মামলা ও পুলিশ তদন্ত চলতে থাকলে তখন যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
নালিশকারী বা অভিযুক্ত মারা গেলে তার ফলাফল।
নালিশকারীর জবানবন্দি।
নালিশী মামলা [C.R. Case] কাকে বলে?
কে নালিশ গ্রহণ করতে পারে?
[ধারা ২০০] অভিযোগকারী বা নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ বা পরীক্ষা করা [ Examination of Complainant]।
যে ক্ষেত্রে জবানবন্দি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।
[ধারা ২০২] প্রসেস ইস্যু স্থগিত করা (Postponement for issue of process)।
[ধারা- ২০৩] নালিশ খারিজ (Dismissal of Complaint)।
নালিশ খারিজ করতে ম্যাজিস্ট্রেট কি কি সকল বিষয় বিবেচনা করবে?
নালিশ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার।
[ধারা ২০৪| প্রসেস ইস্যু করা [Issue of Process)।
[ধারা ২০৪(৩)] প্রসেস ফি (সমন বা পরোয়ানা ফি) পরিশোধ না করার ফলাফল।
নালিশ খারিজ হলে প্রতিকার।
[ধারা ২০৫] অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি।
[ধারা ২০৫ঘ] একই অপরাধ বিষয়ে নালিশী মামলা ও পুলিশ তদন্ত চলতে থাকলে তখন যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
নালিশকারী বা অভিযুক্ত মারা গেলে তার ফলাফল।
ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ [Complaint to Magistrate] [ধারা ২০০-২০৩]
নালিশকারীর জবানবন্দি
ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ দায়ের করা হলে, ম্যাজিস্ট্রেট ২০০ ধারার অধীন নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করবে। ১৯০(১) (ক) ধারার অধীন অপরাধ আমলে নিতে পারে। ১৯২ ধারায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তার অধীনস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অনুসন্ধান বা বিচারের জন্য মামলা প্রেরণ করতে পারে।আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধ আমলে না নিয়ে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীভুক্ত করে তদন্তের জন্য এখতিয়ারভুক্ত থানায় প্রেরণ করতে পারে [১৫৬(৩) ধারা]।
আমলে নেওয়ার এখতিয়ার না থাকলে ২০১ ধারায় নালিশ ফেরত দিতে পারে। ২০২ ধারায় প্রসেস ইস্যু (সমন বা ওয়ারেন্ট) স্থগিত [postponement for issue of process) করে তদন্ত বা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিতে পারে। ২০২ ধারার অধীন তদন্তের পর চূড়ান্ত রিপোর্ট দিলে অভিযুক্তকে অব্যাহতি দিতে পারে [২০২(২খ) ধারা)। ২০৩ ধারায় নালিশ খারিজ করতে পারে। ২০৪ ধারায় প্রসেস ইস্যু (সমন বা ওয়ারেন্ট) করতে পারে [issue of process] ২০৫ ধারায় অভিযুক্তকে ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি দিতে পারে।নালিশী দরখাস্তের ভিত্তিতে অপরাধ আমলে নিতে ম্যাজিস্ট্রেট বাধ্য না। নালিশী দরখাস্ত প্রাপ্তির পর অপরাধ আমলে গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট প্রথমে ২০০ ধারায় নালিশকারীর শপথপূর্বক জবানবন্দি গ্রহণ করবে। অতপর তিনি উক্ত নালিশের ভিত্তিতে ১৯০(১) (ক) ধারায় অপরাধ আমলে নিতে পারে। অপরাধ আমলে গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট যদি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হয় বা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হয়, তাহলে তিনি মামলাটি বিচার বা অনুসন্ধানের জন্য তার অধীনস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ১৯২ ধারায় প্রেরণ করতে পারে। যদি অপরাধটি আমলযোগ্য হয়, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট শপথ গ্রহণ করার পর অপরাধটি আমলে না নিয়ে এখতিয়ারভুক্ত থানায় প্রাথমিক তথ্য বিবরণী হিসাবে গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিতে পারে এবং ১৫৬(৩) ধারার অধীন পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে। বা ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করে অভিযুক্তকে হাজিরা হওয়ার জন্য প্রসেস ইস্যু (সমন বা ওয়ারেন্ট) স্থগিত করে তদন্ত বা অনুসন্ধান করাতে পারে। উক্ত তদন্ত বা অনুসন্ধানের প্রতিবেদনে কোন অভিযোগ প্রাথমিকভাবে না পওয়া গেলে অভিযুক্তকে ২০২(২) ধারায় অব্যাহতি দিতে পারে এবং ২০৩ ধারায় নালিশ খারিজ করতে পারে। কিন্তু ২০২ ধারার অধীন দাখিলকৃত প্রতিবেদনে মামলায় অগ্রসর হওয়ার কারণ থাকলে ২০৪ ধারায় মামলায় প্রসেস ইস্যু করতে পারে। ম্যাজিস্ট্রেট কোন পদক্ষেপটি গ্রহণ করবে সেটা মামলার প্রেক্ষাপট অনুসারে তিনি তার নিজস্ব বিবেচনা ও আইন অনুসারে গ্রহণ করতে পারবে।
নালিশী মামলা [C.R. Case] কাকে বলে?
অপরাধ আমলে নেওয়ার এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ [Complaint] দায়েরের মাধ্যমে যে ফৌজদারী মামলা শুরু হয় তাকে নালিশী মামলা বলা হয় এবং এমন মামলা যেহেতু নালিশী রেজিস্টারে তালিকাভুক্ত করা হয়, তাই এটা সি.আর মামলা (Complaint Registered case) নামে পরিচিত।
কে নালিশ গ্রহণ করতে পারে?
১৯০(১)(ক) ধারা অনুসারে অপরাধ আমলে নেওয়ার এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয় এমন বিষয়াবলি সম্পর্কে নালিশ পেয়ে অপরাধ আমলে নিতে পারে [may take cognizance of any
offence upon receiving a complaint of facts which constitute such offence]
১৯০ (১) ধারায় উল্লেখিত অপরাধ আমলে নেওয়ার এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ দায়েরের মাধ্যমে একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করা যায়।
[ধারা ২০০] অভিযোগকারী বা নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ বা পরীক্ষা করা [ Examination of Complainant]:
ফৌজদারী মামলা দায়ের করার জন্য অপরাধ আমলে নেওয়ার এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ দায়ের করা হলে অপরাধ আমলে নিতে ম্যাজিস্ট্রেট কি পদ্ধতি অনুসরণ করবে সেটাই ২০০ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। নালিশ গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেটের প্রথম দায়িত্ব হলো নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করা। ২০০ ধারার বিধান অনুযায়ী অপরাধ আমলে গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট নালিশকারীর জবানবন্দি নিতে বাধ্য। ২০০ ধারায় বিধান করা হয়েছে, নালিশের ভিত্তিতে অপরাধ আমলে নিচ্ছে এমন ম্যাজিস্ট্রেট অবিলম্বে বা তাৎক্ষণিকভাবে
১. নালিশকারীকে বা
২. উপস্থিত সাক্ষীগণের (যদি থাকে) মধ্যে যে কয়জনকে উপযুক্ত মনে করে তাদের শপথপূর্বক জবানবন্দি গ্রহণ করবে। এবং জবানবন্দির সারমর্ম লিখিত আকারে লিপিবদ্ধ করবে এবং নালিশকারী বা যে সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে সে এবং ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক উক্ত জবানবন্দির সারমর্মে স্বাক্ষর করবে।
যে ক্ষেত্রে জবানবন্দি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই:
ক. যেক্ষেত্রে লিখিত আকারে নালিশ করা হয়, সেই ক্ষেত্রে ১৯২ ধারার অধীন মামলা স্থানান্তর করার পূর্বে নালিশকারী বা উপস্থিত সাক্ষীর (যদি থাকে) জবানবন্দি গ্রহণ বা পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই [ধারা ২০০(ক)];
খ. যে কোন মামলায় যেক্ষেত্রে আদালত লিখিত আকারে নালিশ দায়ের করে বা
গ. সরকারী কর্মকর্তা তার অফিসিয়াল দায়িত্ব পালনে লিখিত আকারে নালিশী দরখাস্ত দায়ের করে সেই ক্ষেত্রেও নালিশকারীর বা উপস্থিত সাক্ষীর (যদি থাকে) জবানবন্দি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।
ঘ. যখন ১৯২ ধারার অধীন একটি মামলা হস্তান্তর [transfer] করা হয়েছে এবং যে ম্যাজিস্ট্রেট হস্তান্তর করছে তিনি ইতোমধ্যেই নালিশকারী ও উপস্থিত সাক্ষীর (যদি থাকে) জবানবন্দি গ্রহণ করলে, যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট মামলাটি প্রেরণ করা হলো তিনি পুনঃজবানবন্দি নিতে বাধ্য থাকবে না [ধারা ২০০ (গ)]।
আমলযোগ্য অপরাধ বিষয়ে নালিশী দরখাস্ত প্রাপ্তির পর ম্যাজিস্ট্রেট ২০০ ধারার অধীন আমলে গ্রহণ না করে নালিশী দরখাস্তটি পুলিশের নিকট পাঠাতে পারে এবং পুলিশকে উক্ত নালিশী দরখাস্তটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী হিসাবে গ্রহণ করে ১৫৬(৩) ধারা অনুসারে তদন্ত শুরুর জন্য নির্দেশ দিতে পারে। এই ক্ষেত্রে উক্ত মামলাটি আর নালিশী মামলা থাকে না। এই ক্ষেত্রে নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ প্রয়োজনীয় না ।
নালিশ প্রাপ্তির পর ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ২টি উপায় থাকে।
১. ২০০ ধারায় শপথপূর্বক নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ১৯০(১)(ক) ধারায় অপরাধ আমলে নিতে পারে বা যদি তিনি চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হন বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হন তাহলে তিনি যে মামলা আমলে নিয়েছেন, উক্ত মামলা তিনি তার অধীনস্থ কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অনুসন্ধান বা বিচারের জন্য ১৯২ ধারায় ট্রান্সফার করতে পারেন।এই ১৯২ ধারার অধীন মামলা ট্রান্সফার করার পূর্বে নালিশকারীকে বা উপস্থিত সাক্ষীকে (যদি থাকে) জবানবন্দি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই। যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট মামলা ট্রান্সফার করা হয় মূলত তিনিই জবানবন্দি গ্রহণ করবে। কিন্তু চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১৯২ ধারায় মামলা ট্রান্সফার করার পূর্বে নালিশকারী বা উপস্থিত সাক্ষীর (যদি থাকে) জবানবন্দি গ্রহণ করলে যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট মামলাটি অনসন্ধান বা বিচারের জন্য ১৯২ ধারায় ট্রান্সফার করা হলো তিনি পুনরায় জবানবন্দি গ্রহণ করতে বাধ্য না।
আমলযোগ্য অপরাধ বিষয়ে নালিশী দরখাস্ত ম্যাজিস্ট্রেট ২০০ ধারার অধীন একবার আমলে গ্রহণ করলে তিনি নালিশী দরখাস্তটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী হিসাবে গ্রহণের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিতে পারেনা এবং উহার ভিত্তিতে ১৫৬(৩) ধারায় তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেনা। আমলে গ্রহণ করার পর ম্যাজিস্ট্রেট ২০২ ধারার অধীন প্রসেস ইস্যু স্থগিত [postponement for issue of Process] করে অনুসন্ধান বা তদন্ত করাতে পারে। অতপর ২০৩ বা ২০৪ ধারা অনুসরণ করবে। ২০২ ধারার অধীন তদন্ত বা অনুসন্ধান প্রতিবেদন আসার পর মামলায় অগ্রসর হওয়ার কারণ না থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট ২০৩ ধারার অধীন নালিশ খারিজ (dismissed complaint) করতে পারে। কিন্তু মামলায় অগ্রসর হওয়ার কারণ থাকলে ২০৪ ধারার অধীন প্রসেস ইস্যু [issue of process] করতে পারে তথা সমন বা ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে পারে।
[ধারা ২০২] প্রসেস ইস্যু স্থগিত করা (Postponement for issue of process)
অপরাধের নালিশ প্রাপ্তির পর ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তকে হাজির হতে বাধ্য করার জন্য ইস্যু অব প্রসেস (সমন বা ওয়ারেন্ট) স্থগিত করতে পারে ২০২ (১) ধারায়। নালিশী দরখাস্ত প্রাপ্তির পর ম্যাজিস্ট্রেট অপরাধ আমলে গ্রহণ না করে যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে নালিশ করা হয়েছে তাকে হাজির হতে বাধ্য করার জন্য ২০২(১) ধারায় সমন বা ওয়ারেন্ট জারি স্থগিত করতে পারে এবং অভিযোগের সত্যতা নির্ধারণের জন্য তদন্ত বা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিতে পারে। মামলায় অগ্রসর হওয়ার কারণ থাকলে অভিযুক্তকে হাজির হতে বাধ্য করতে ইস্যু অব প্রসেস(ওয়ারেন্ট বা সমন) ২০৪(১) ধারায় জারি করতে পারে।
ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২০২ ধারায় বিধান করা হয়েছে, যে অপরাধ আমলে নেওয়ার এখতিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া হয়েছে সেই অপরাধের নালিশ প্রাপ্তির পর বা যে নালিশটি তার নিকট ১৯২ ধারায় হস্তান্তর করা হয়েছে তা প্রাপ্তির পর, যদি তিনি উপযুক্ত মনে করেন, লিখিত আকারে কারণ লিপিবদ্ধ করে-
ক. যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে নালিশ করা হয়েছে, তাকে হাজির হতে বাধ্য করার ইস্যু অব প্রসেস (সমন বা ওয়ারেন্ট) ২০২ (১) ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট স্থগিত করতে পারে। এবং
খ. নালিশের সত্যতা বা মিথ্যা নির্ধারণ করার উদ্দেশ্যে
i. মামলাটি নিজে অনুসন্ধান করতে পারে বা,
ii. যদি তিনি তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট না হন, তাহলে উনার অধীনস্থ যে কোন ম্যাজিস্ট্রেটকে বা পুলিশকে বা অন্যকোন ব্যক্তিকে যেমনটি তিনি উপযুক্ত মনে করে উক্ত মামলা অনুসন্ধান বা তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারেন।
২০২ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত তদন্তের আদেশ অনুসারে তদন্ত সম্পন্ন করে, যখন পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে, ম্যাজিস্ট্রেট ২০২(২খ) ধারায় এমন রিপোর্ট গ্রহণ করে অভিযুক্তকে অব্যাহতি দিতে পারেন এবং ২০২ ধারায় তদন্ত বা অনুসন্ধানের ফলাফল বিবেচনা করে যদি ম্যাজিস্ট্রেট মনে করে মামলায় অগ্রসর হওয়ার কোনো কারণ নেই, তাহলে ২০৩ ধারায় অভিযোগ খারিজ করতে পারে। এবং অগ্রসার হওয়ার কারণ থাকলে ২০৪ ধারায় সমন বা ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে পারবে।
[ধারা- ২০৩] নালিশ খারিজ (Dismissal of Complaint)
যে ম্যাজিস্ট্রেট নালিশ খারিজ করতে পারে:
২০৩ যারায় একজন ম্যাজিস্ট্রেট নালিশ খারিজ করে দিতে পারে। যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ দায়ের করা হয়েছিল বা যার নিকট নালিশটি বদলি করা হয়েছিল, শুধুমাত্র সেই ম্যাজিস্ট্রেট ২০৩ ধারায় নালিশ খারিজ করতে পারে।
নালিশ খারিজ করতে ম্যাজিস্ট্রেট কি কি সকল বিষয় বিবেচনা করবে?
ক) ২০০ ধারার অধীন নালিশকারীর শপথপূর্বক বক্তব্য (যদি থাকে) এবং
খ) ২০২ ধারার অধীন তদন্ত বা অনুসন্ধানের ফলাফল (যদি থাকে) বিবেচনা করবে।
নালিশকারীর শপথপূর্বক বক্তব্য (যদি থাকে) এবং ২০২ ধারার অধীন তদন্ত বা অনুসন্ধানের ফলাফল (যদি থাকে) বিবেচনা করার পর ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করে যে, মামলা পরিচালনা বা অগ্রসর হওয়ার কোন কারণ নেই, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট নালিশ খারিজ করতে পারে। ২০৩ ধারায় নালিশ খারিজ বলতে অভিযুক্ত ব্যক্তির অব্যাহতি বা খালাস বোঝায় না।
নালিশ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার:
২০৩ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট নালিশ খারিজের আদেশ দিলে তার বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করা যায়। যেক্ষেত্রে ২০৩ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগ খারিজ করে, সেই ক্ষেত্রে দায়রা জজ বা হাইকোর্ট বিভাগ ৪৩৬ এবং ৪৩৯ ধারায় অধিকতর অনুসন্ধানের [further inquiryl নির্দেশ দিতে পারে। ২০৩ বা ২০৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট নালিশ খারিজ করলেও একই বিষয়ে নতুন অভিযোগ দায়ের করা যাবে। এই ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০৩ ধারার দোবারা সাজার [double jeoparty] নীতি প্রযোজ্য হবে না।
[ধারা ২০৪| প্রসেস ইস্যু করা [Issue of Process)
অপরাধ আমলে গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেটের মতে
i.মামলায় অগ্রসর হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে এবং
ii.এমন একটি মামলা বলে মনে হয়, যেক্ষেত্রে দ্বিতীয় তফসিলের চতুর্থ কলাম অনুসারে প্রথমে সমন ইস্যু করতে হবে, সেই ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হাজিরার জন্য সমন ইস্যু করবে। কিন্তু যদি এমন একটি মামলা বলে মনে হয়, যেক্ষেত্রে চতুর্থ কলাম অনুসারে প্রথমে ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে হয়, সেই ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট-
i.ওয়ারেন্ট ইস্যু করবে বা
ii.যদি তিনি উপযুক্ত মনে করে, হাজির হওয়ার জন্য সমন ইস্যু করতে পারে অর্থাৎ সমন কেস হলে প্রথমে সমন দিবে কিন্তু ওয়ারেন্ট কেস হলে ওয়ারেন্ট দিবে। কিন্তু ওয়ারেন্ট কেসে প্রয়োজন মনে করলে সমন দিতে পারে।
[ধারা ২০৪(৩)] প্রসেস ফি (সমন বা পরোয়ানা ফি) পরিশোধ না করার ফলাফল:
২০৪ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, প্রসেস ফি অর্থাৎ সমন বা পরোয়ানার জন্য কোন ফি পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট সমন বা পরোয়ানা প্রদান করবেনা এবং যদি এইরুপ ফি যুক্তসঙ্গত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করা হয়, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগটি খারিজ [dismissed the complaint) করে দিতে পারে।
প্রসিকিউশন পক্ষের সাক্ষীর তালিকা জমা না দেওয়া পর্যন্ত কোন সমন বা ওয়ারেন্ট ইস্যু করবে না [২০৪(১ক)]। ফৌজদারী কার্যবিধির ২০৪(৩) ধারায় নালিশ খারিজ অভিযুক্ত ব্যক্তির অব্যাহতি বা খালাস বলে গণ্য হয় না।
নালিশ খারিজ হলে প্রতিকার
২০৪ (৩) ধারায় নালিশ খারিজ হলে হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা জজ ৪৩৬ ধারায় উক্ত নালিশ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানের নির্দেশ দিতে পারে। যেহেতু ফৌজদারী কার্যবিধির ২০৪(৩) ধারায় নালিশ খারিজ অভিযুক্ত ব্যক্তির অব্যাহতি বা খালাস বলে গণ্য হয়না, সেহেতু একই ঘটনার ভিত্তিতে নতুন করে নালিশ দায়ের করা যাবে।
[ধারা ২০৫] অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি:
ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তকে ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি দিতে পারে ফৌজদারী কার্যবিধির ২০৫ ধারায়। ২০৫ ধারায় বিধান আছে, যখন একজন ম্যাজিস্ট্রেট সমন ইস্যু করে, তিনি কারণ মনে করলে-
i.অভিযুক্তকে ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি দিতে পারে এবং
ii.তার উকিলের মাধ্যমে হাজির হতে অনুমতি দিতে পারে;
[ধারা ২০৫ঘ] একই অপরাধ বিষয়ে নালিশী মামলা ও পুলিশ তদন্ত চলতে থাকলে তখন যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়:
নালিশের ভিত্তিতে দায়েরকৃত মামলায়, ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অনুসন্ধান বা বিচারকালীন সময়ে, যদি এটা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবগত করা হয় যে, ম্যাজিস্ট্রেট যে অপরাধের বিচার বা অনুসন্ধান শুরু করেছে, উক্ত অপরাধ বিষয়ে পুলিশ কর্তৃক তদন্ত চলমান আছে, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট-
ক) তার অনুসন্ধান বা বিচার কার্যক্রম স্থগিত করবে; এবং
খ) তদন্ত পরিচালনাকারী পুলিশ কর্মকর্তার নিকট হতে রিপোর্ট তলব করবে।
২০৫ঘ ধারাটি শুধুমাত্র নালিশের মাধ্যমে দায়েরকৃত মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। একই অপরাধ সম্পর্কে নালিশী মোকদ্দমা ও পুলিশী তদন্ত চলতে থাকলে, ম্যাজিস্ট্রেট তার অনুসন্ধান বা বিচার স্থগিত করবে [ধারা ২০৫ঘ (১)]। যখন একই অপরাধের জন্য অভিযোগের ভিত্তিতে সি.আর কেস এবং পুলিশ রিপোর্টের ভিত্তিতে অন্য একটি মামলা চলমান থাকে, সেই ক্ষেত্রে একই আদালত কর্তৃক উভয় মামলা একত্রে অনুসন্ধান এবং বিচার করা যাবে যেন উভয় মোকদ্দমা পুলিশ রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে দায়ের করা হয়েছে বলে গণ্য হবে (ধারা ২০৫ঘ (২)]। একমাত্র দায়রা জজ কর্তৃক বিচার্য মামলা ম্যাজিস্ট্রেট ২০৫গ ধারায় দায়রা আদালতে প্রেরণ করতে পারে এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট বিচারের জন্য পাঠাতে পারে।
নালিশকারী বা অভিযুক্ত মারা গেলে তার ফলাফল
১। অভিযুক্ত মারা গেলে:
ফৌজদারী মামলার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো কোন অপরাধে দোষী প্রমাণিত আসামীকে শাস্তি প্রদান করা। সুতরাং মৃত আসামীর বিরুদ্ধে আদালত ফৌজদারী মামলা চালাতে পারেনা এবং তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারেনা। সুতরাং অভিযুক্ত ব্যক্তির মৃত্যুতে ফৌজদারী মামলা বা মামলার কার্যক্রম বাতিল হবে। কিন্তু একই মামলায় অন্যকোন অভিযুক্ত জীবিত থাকলে মামলাটি চলমান থাকবে।
২। নালিশকারী মারা গেলে:
নালিশকারী মারা গেলেও ফৌজদারী মামলা বাতিল হয়না এবং নতুন কোন নালিশী দরখাস্ত দায়ের করার প্রয়োজন নেই। কারণ ফৌজদারী কার্যবিধিতে নালিশকারী মারা গেলে ফৌজদারী মামলা বাতিলের কোন বিধান নেই।
টপিকস
ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ [Complaint to Magistrate]। নালিশকারীর জবানবন্দি। নালিশী মামলা [C.R. Case] কাকে বলে? কে নালিশ গ্রহণ করতে পারে? [ধারা ২০০] অভিযোগকারী বা নালিশকারীর জবানবন্দি গ্রহণ বা পরীক্ষা করা [ Examination of Complainant]। যে ক্ষেত্রে জবানবন্দি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই। [ধারা ২০২] প্রসেস ইস্যু স্থগিত করা (Postponement for issue of process)। [ধারা- ২০৩] নালিশ খারিজ (Dismissal of Complaint)। নালিশ খারিজ করতে ম্যাজিস্ট্রেট কি কি সকল বিষয় বিবেচনা করবে? নালিশ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিকার। [ধারা ২০৪| প্রসেস ইস্যু করা [Issue of Process)। [ধারা ২০৪(৩)] প্রসেস ফি (সমন বা পরোয়ানা ফি) পরিশোধ না করার ফলাফল। নালিশ খারিজ হলে প্রতিকার। [ধারা ২০৫] অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি। [ধারা ২০৫ঘ] একই অপরাধ বিষয়ে নালিশী মামলা ও পুলিশ তদন্ত চলতে থাকলে তখন যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। নালিশকারী বা অভিযুক্ত মারা গেলে তার ফলাফল।