- Get link
- X
- Other Apps
Part Three -Of Preventive Relief
নিরোধক প্রতিকার সম্বন্ধীয় ব্যাপারে
Chapter Nine - of Injunctions Generally
নবম অধ্যায়- সাধারণ নিষেধাজ্ঞা সম্বন্ধীয় ব্যাপারে ঔ
ধারা ৫২ নিরােধক প্রতিকার মঞ্জুরের প্রক্রিয়া
আদালতের সুবিবেচনামূলক ক্ষমতাবলে অস্থায়ী বা চিরস্থায়ী নিষধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে নিরােধক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়।
আলােচনা ও প্রয়ােগ -নিরােধক প্রতিকার (প্রিভেন্টিভ রিলিফ -ইনজংশন)
নিরোধক প্রতিকার কি? (Preventive relief)
ইংল্যান্ডের কমন ল' ব্যবস্থায় কোন অন্যায় কাজ হতে বিরত থাকতে অথবা তার দ্বারা কৃত অন্যায় কাজকে অপসারণ করতে বলার কোন ক্ষমতা কমন ল’ আদালতের ছিল না। কোন কিছু রক্ষা করার জন্য কমন ল’ আদালত কোন আদেশ দিতে পারত না। তাছাড়া মামলা চলাকালীন সময় মামলার বিষয়বস্তুকে রক্ষা করার জন্য কোন আদেশও কমন ল’ আদালত দিতে পারত না। আর এজন্যই ইকুইটি আদালত নিরােধকমূলক প্রতিকার (preventive relief) মঞ্জুর করতে বাধ্য হত। কারণ নিরােধক প্রতিকার ছাড়া ন্যায়বিচার সম্ভব নয়। নিরােধক প্রতিকার হলাে এমন এক ধরণের প্রতিকার, যার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে কোন কিছু করা হতে বিরত থাকতে অথবা তার দ্বারা কৃত কোন অন্যায় কাজকে অপসারণ করতে বলা হয়। মামলা চলাকালীন সময় মামলার বিষয়বস্তুকে রক্ষার জন্য নিরোধক প্রতিকার প্রয়ােজন। নিরােধক প্রতিকারের উদ্দেশ্যে হলাে অন্যায় কাজকে প্রতিহত করা। নালিশা সম্পত্তি ধবংস, নষ্ট, ক্ষতি, অপচয়, হস্তান্তর, অপসারণ, আকৃতি ও প্রকৃতি পরিবর্তন ইত্যাদি নিবরণ করার জন্য নিরােধক প্রতিকারের প্রয়ােজন।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫২ ধারায় বলা হয়েছে, আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা (discretionary power) বলে অস্থায়ী বা চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যম নিরােধক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়। সুতরাং বলা যায়, নিয়েধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে নিরােধক প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়। সুতরাং বলা যায়, নিষেধাজ্ঞা তা স্থায়ী হােক বা অস্থায়ী হােক মঞ্জুরের মাধ্যমে নিরােধক প্রতিকার অর্জন করা যায় ।
নিষেধাজ্ঞা কাকে বলে? (What is injunction)?
নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে আদালতের একটি নির্দেশ যার দ্বারা কোন ব্যক্তিকে একটি অন্যায় কর্ম করা হতে বিরত থাকতে কিংবা তার কর্তৃক কৃত একটি অন্যায় কর্ম অপসারণ করতে বলা হয়। লর্ড হ্যালসবেরীরর মতে, নিষেধাজ্ঞা হলাে এমন একটি বিচার বিভাগীয় কার্যধারা যার দ্বারা কোন পক্ষকে নির্দিষ্ট কোন কর্ম করা কিংবা করা হতে বিরত থাকার নির্দেশ দান করা হয় ।
অতএব সহজ ভাষায় বলতে গেলে নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে আদালতের একটি নির্দেশ, যা কোন ব্যক্তির উপর দান করা হয় ও সে ব্যক্তিকে বর্তমান কোন অন্যায় কর্ম করা হতে বিরত রাখা হয় কিংবা তার দ্বারা কৃত কোন অন্যায় কার্যটি অপসারণ করা হয়। ইকুইটি হতে সৃষ্ট এ অন্যায় নিরােধক প্রতিকারটি বেশ বলবৎ হিসেবে প্রতীয়মান হওয়ায় বেশ জনপ্রিয়তার লাভ করে ও প্রায় সকল আদালতই তাদের ইচ্ছাধীন ক্ষমতায় নিষেধাজ্ঞা অনুমােদন করে থাকেন।
নিষেধাজ্ঞার বৈশিষ্ট্য:
নিষেধাজ্ঞার বৈশিষ্টসমূহ নিম্নরূপ
(১) নিষেধাজ্ঞা হলাে বিচারিক কার্যধারা (Judicial process)।
(২) এই নিষেধাজ্ঞা দ্বারা কোন পক্ষকে কোন নির্দিষ্ট কাজ করতে বাধ্য করে অথবা কোন নির্দিষ্ট কাজ করা হতে বিরত রাখে।
(৩) যে কাজ করা হতে নিষেধাজ্ঞা কোন পক্ষকে বিরত রাখে তা অবশ্যই অন্যায় কাজ হবে।
(৪) যে কাজ করা হতে নিষেধাজ্ঞা কাউকে বাধ্য করে তা সে, আইন অনুসারে করতে বাধ্য।
(৫) নিষেধাজ্ঞা যথাযথ এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের আদেশ, রায় ও ডিক্রী ।
(৬) নিষেধাজ্ঞা আদেশ আদালতের ন্যায় নীতি সুবিবেচনা উপর নির্ভরশীল।
৭) নিষেধাজ্ঞার আদেশ আদালতের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা (Discretionary power) এর উপর নির্ভরশীল।
(৮) নিষেধাজ্ঞা মানুষের অধিকার রক্ষা রক্ষা করে এবং মামলা চলাকালীন মামলার বিষয়বস্তু রক্ষা করে।
(৯) নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীকে আদালত শাস্তির বিধান করে।
(১০) নিষেধাজ্ঞা ইকুইটি আদালতের এক অন্যান্য সৃষ্টি।
ধারা ৫৩ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে তেমন নিরােধ যা যে নিষেধাজ্ঞা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বা আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকে, তাই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মােকদ্দমার যেকোন পর্যায়েই তা মঞ্জুর করা যায় এবং তা দেওয়ানি কার্যবিধি কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়।
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কেবল শুনানির পর মােকদ্দমার গুণাগুণের ভিত্তিতে প্রদত্ত ডিক্রি দ্বারাই মঞ্জুর করা যায়। তার মাধ্যমে প্রতিবাদীকে চিরস্থায়ীভাবে এমন একটি অধিকার প্রয়ােগ হতে বা এমন একটি কাজ করা হতে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয় যা বাদীর অধিকারের বিপরীত হতে পারে।
আলােচনা ও প্রয়ােগ - অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এবং চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (Temporary Injunction):
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সীমিত সয়ের জন্য দেওয়া হয়। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলাে মামলার বিষয়বস্তুকে রক্ষা করা। মামলা চলাকালীন সময়ে বিপক্ষ যাতে মামলার বিষয়স্তু ধবংস, নষ্ট, ক্ষতি, অপচয়, হস্তান্তর, অপসারণ, আকৃতি প্রকৃতি পরিবর্তন করতে না পারে সেজন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫৩ ধারা অনুসারে,অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা হল এমন এক ধরণের নিষেধাজ্ঞা যা একটি নির্দিষ্ট সময় বা আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকে। মামলা চলাকালীন সময়ে যে কোন অবস্থায় এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়। এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিধান দেওয়ানি কার্যবিধি আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই নিষেধাজ্ঞা উদ্দেশ্যে হলাে মামলার বিষয়বস্তু রক্ষা করে পক্ষগণের স্বার্থকে রক্ষা করে।
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার উদাহরণ
নয়ন ও করিমের মধ্যে গাওঘরা মৌজার ১০০০ দাগের ১০ বিগা জমি নিয়ে মামলা চলছে। এই জমিতে পাঁচটি কাঁটাল গাছ আছে। করিম এই কাঁঠাল গাছগুলি কেটে নেওয়ার হুমকি দিল । এই ক্ষেত্রে নয়ন কাঁঠাল গাছগুলি যাতে করিম কেটে নিতে না পারে তার জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন।
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা বা না করার জন্য আদালত যে সকল নীতি অনুসরণ করে
সাময়িক কালের জন্য কিংবা একটি নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত ও আদালতের তৎপরবর্তী নির্দেশ না প্রদান করা পর্যন্ত যে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকে তাকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বলে। মােকদ্দমার যে কোন অবস্থায় এটি অনুমােদন করা যায় ও দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের আদেশ নং ৩৯ এ বিধি নং ১ দ্বারা এটি নিয়ন্ত্রিত হয়।
নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অনুমােদন করা যায়
১) মােকদ্দমার বিষয়বস্তু প্রতিপক্ষের দ্বারা নষ্ট, ধ্বংস কিংবা হস্তান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে বা কোন ডিক্রী জারির দরুন অবৈধভাবে বিক্রি করার চেষ্টা করা হলে, অথবা,
২) বিবাদী তার পাওনাদারকে প্রতারিত করার লক্ষ্যে তার সম্পত্তি অপসারিত কিংবা হস্তান্তরিত করার ইচ্ছা প্রকাশ কিংবা প্রচেষ্টা চালালে।
উদাহরণ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
ক এর আম বাগানের সন্নিকটে খ ইটের ভাটা করলাে। ইট পুড়ানাে শুরু হলে এর ধোঁয়ায় এবং আগুনের তাপে ক এর সকল আম গাছের মুকুল বিনষ্ট হয়ে যাবে এরূপ সম্ভাবনা দেখা দিলে ক, খ এর বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার জন্য মােকদ্দমা করতে পারে।