- Get link
- X
- Other Apps
Perpetual Injunctions চিরস্থায়ী স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কি কখন মঞ্জুর করা হয় সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ধারা ৫৪
Chapter Ten -Of Perpetual Injunctions
দশম অধ্যায় -চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সম্বন্ধীয় ব্যাপারে
ধারা ৫৪ চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুরের সময়
এই অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত বা এই অধ্যায়ে বর্ণিত অন্যান্য বিধানের আওতাধীন আবেদনকারীর স্বপক্ষে বিরাজমান বাধ্যবাধকতা, তা প্রকাশ্য হোক অথবা অনুমিত হোক, ভঙ্গ করাকে নিরোধের জন্য চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যেতে পারে। যেক্ষেত্রে তেমন বাধ্যবাধকতা চুক্তির ফলে উদ্ভূত হয়, সেক্ষেত্রে আদালত এই আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের বিধানসমূহ ও নিয়মাবলী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হবেন।
যেক্ষেত্রে প্রতিবাদী বাদীর সম্পত্তির অধিকারে বা সম্ভোগে অনধিকার হস্তক্ষেপ করে বা হস্তক্ষেপের হুমকি দেয়, সেক্ষেত্রে আদালত নিম্নে বর্ণিত ক্ষেত্রসমূহে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারেন-
ক) যেক্ষেত্রে প্রতিবাদীর জন্য সম্পত্তির জিম্মাদার;
খ) যেক্ষেত্রে অধিকার লংঘনের ফলে কৃত বাস্তব ক্ষতি বা সম্ভাব্য ক্ষতি নিরূপণের কোন মানদন্ড নেই;
গ) যেক্ষেত্রে অধিকার লংঘন এমন ধরণের যে, আর্থিক ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে তার পর্যাপ্ত প্রতিকার করা যাবে না;
ঘ) যেক্ষেত্রে এমন সম্ভাবনা থাকে যে, অধিকার লংঘনের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না;
ঙ) যেক্ষেত্রে বিচার বিভাগীয় কার্যধারার জটিলতা নেবারণের জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রয়ােজনীয়।
ব্যাখ্যা-অত্র ধারার লক্ষ্য অনুসারে ট্রেডমার্ক সম্পত্তি মর্মে গণ্য হবে।
উদাহরণ-চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
ক) ক, খ-কে নির্দিষ্ট জমি ভাড়া প্রদান করে এবং খ সেখান থেকে বালি বা নুড়িপাথর খনন বা উত্তােলন না করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। খ-কে চুক্তি লংঘনমূলক খনন কাজ থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য ক মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
খ) একজন জিম্মাদার জিম্মা ভঙ্গের হুমকি প্রদান করে। তার সহ-জিম্মাদার যদি থেকে থাকে, অবশ্যই এবং উপকার লাভকারী মালিক চুক্তিভঙ্গ নিরােধের লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
গ) একটি পাবলিক কোম্পানির পরিচালকবৃন্দ মূলধন থেকে বা কর্জ করা অর্থ থেকে লভ্যাংশ প্রদানে উদ্যোগী হয়। যে কোন অংশীদার তাদেরকে তা হতে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারেন।
ঘ) একটি অগ্নি এবং জীবন বীমা কোম্পানির পরিচালকবৃন্দ নৌ-বীমা করার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাদেরকে তা হতে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য যেকোন অংশীদারই মােকদ্দমা রুজু করতে পারেন।
ঙ) একজন কার্যনির্বাহী ক অসদাচরণ বা দেউলিয়া অবস্থার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিকে বিপদাপন্ন করে তুলেছে। আদালত তাকে তার আয় পাওয়া থেকে নিবৃত্ত রাখার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারেন।
চ) খ-এর জিম্মাদার ক জিম্মা সম্পত্তির একটি ক্ষুদ্র অংশের অযৌক্তিক বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খ বিক্রয় থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে, যদিও আর্থিক ক্ষতিপূরণ তার পর্যাপ্ত প্রতিকার বিধান করে।
ছ) ক, খ ও তার সন্তানগণের নামে একটি সম্পত্তি নামজারী করে। ক তারপর উক্ত সম্পত্তি গ-এর কাছে বিক্রয় করতে চুক্তিবদ্ধ হয়। বিক্রয় থেকে বিরত থাকার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য খ বা তার যে কোন সন্তান মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
জ) উকিল হিসেবে ক-এর নিয়ােজিত থাকার সময় তার মক্কেল খ-এর কিছু সংখ্যক দলিল তার হস্তগত হয়। ক উক্ত দলিলসমূহ সাধারণ্যে প্রকাশ বা তার বিষয়বস্তু একজন আগন্তুকের নিকট ফাঁসের হুমকি দেয়। ক-কে তেমন কোন কাজ করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য ‘খ’ মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ঝ) ক, খ-এর মেডিকেল এডভাইজার।ক টাকা দাবি করল যা ‘খ’ প্রদানে অস্বীকৃতি প্রকাশ করল। ক তারপর রােগী হিসেবে খ যে সমস্ত তথ্য তার নিকট প্রকাশ করেছে তা সাধারণ্যে প্রকাশের হুমকি দেয়। ইহা ক-এর কর্তব্যের বিপরীত এবং ককে তেমন কোন কাজ করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য খ মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ঞ) দুইটি সংলগ্ন বাড়ির মালিক ক খ-এর নিকট বাড়ি ভাড়া প্রদান করে এবং পরবর্তী সময়ে গ-এর নিকট অপর বাড়িটি ভাড়া প্রদান করে। অতঃপর ক’ ও ‘গ’ ‘গ’-কে ভাড়া প্রদান করা বাড়ির পরিবর্তন আরম্ভ করল, যা খ-কে ভাড়া প্রদান করা বাড়ির স্বাচ্ছন্দ্যমূলক উপভােগকে বিঘ্নিত করবে। তাদেরকে তেমন কাজ করা থেকে নিবৃত্ত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য খ মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ট) ক নির্দিষ্ট চাষযােগ্য জমি চাষাবাদের লক্ষ্যে, কিন্তু চাষাবাদের ধরণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট চুক্তি ব্যতীতই খ-এর কাছে ইজারা পত্তন দিল। জেলার প্রথাগত চাষাবাদের রীতির বিপরীতভাবে খ জমিতে এমন বীজ বপনের হুমকি প্রদান করল, যা জমির জন্য ক্ষতিকারক এবং যা নির্মূল করার জন্য বহু বৎসর সময় প্রয়ােজন হবে। ক মালিক হিসেবে জমি চাষের ইঙ্গিতবােধক চুক্তি লংঘনপূর্বক জমিতে বীজ বপন থেকে খ-কে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ঠ) ক, খ ও গ অংশীদার এবং অংশীদারিত্বের মেয়াদ অংশীদারগণের ইচ্ছাধীনে সীমাবদ্ধ। অংশীদারী সম্পত্তি ধ্বংসের লক্ষ্যে ক একটি কাজের হুমকি দেয়। খ ও গ অংশীদারিত্ব ভাঙ্গার আবেদন না করেও ক-কে উক্ত কাজ থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে ।
ড) একজন হিন্দু বিধবা ক তার মৃত স্বামীর সম্পত্তি দখল করেছে। সে সম্পত্তির বিনাশমূলক এমন কাজ করল যা করার কোন ন্যায়সঙ্গত কারণ নেই। সম্পত্তির ভাবী উত্তরাধিকারী তেমন কাজ থেকে তাকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ঢ) ক, খ ও গ একটি হিন্দু একান্নবর্তী পরিবারের সদস্য। ক পরিবারের সম্পত্তির উপর বর্ধমান বৃক্ষের গুড়ি কেটে ফেলল, এবং পারিবারিক বাড়ির অংশবিশেষ ধ্বংস। এবং কতক পারিবারিক তৈজসপত্র বিক্রয়ের হুমকি দেয় । খ ও গ তাকে তেমন কাজ থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে ।
ণ) চট্টগ্রামে কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট বাড়ির মালিক ক দেউলিয়া হয়ে পড়ল । খ সেগুলাে তার সরকারী স্বত্বনিয়ােগীর কাছ থেকে ক্রয় এবং দখল-ভােগ প্রতিষ্ঠা করল ।ক বাড়িতে ক্রমাগত অনধিকার প্রবেশ এবং বাড়ির ক্ষতিসাধন করতে লাগল এবং যার ফলে খ বাধ্য হয়ে উল্লেখযােগ্য অর্থের বিনিমেয় তার দখল সংরক্ষণের জন্য কর্মচারী নিযুক্ত করল। আরও অনধিকার প্রবেশ থেকে ক-কে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য খ মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ত) একটি গ্রামের অধিবাসীগণ ক-এর জমির উপর দিয়ে যাতায়াতের অধিকার দাবি করে। তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে রুজুকৃত মােকদ্দমায় ক এই ঘােষণামূলক ডিক্রি লাভ করে যে, জমি তেমন কোন অধিকারের অধীন নয়। ইহার পর গ্রামের অবশিষ্টদের প্রত্যেকেই ক-এর জমি দিয়ে তাদের যাতায়াতের অধিকারে বাধা প্রদান করেছে মর্মে অভিযােগ আনয়ন করে মােকদ্দমা রুজু করল । ক তাদেরকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে ।
থ) ক একটি সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধীয় মােকদ্দমায় পাওনাদার খ যাতে কোন পক্ষ নয়, গ-এর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য ডিক্রি পেল। খ গ-এর সম্পত্তি বিরুদ্ধে তার ঋণের জন্য মােকদ্দমা রুজু করল। ক খ-কে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে ।
দ) ক ও খ পরস্পর সংলগ্ন জমি এবং গর্ভস্থ খনির দখলের অধিকারী। ক তার খনিতে খ-এর খনির সীমার নিচ পর্যন্ত খনন করেছে এবং কতিপয় খুঁটি অপসারণ করার হুমকি দেয়, যা খ-এর খনিকে ধারণ করে আছে। তেমন কাজ করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য খ মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ধ) ক একটি বাড়ির এত নিকট সম্পূর্ণ অপ্রয়ােজনীয়ভাবে ঘন্টা বাজায় বা শােরগােল করে যে, তা বাড়ির অধিবাসী, খ-এর দৈহিক আরাম-আয়েশে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। ক-কে শােরগােল থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য খ মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ন) ক ধূয়ার মাধ্যমে বাতাসকে এত দূষিত করে যে তা পার্শ্ববর্তী বাড়িতে ব্যবসারত খ ও গ-এর দৈহিক আরাম-আয়েশে উল্লেখযােগ্যভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। বাতাস দূষিত করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য খ ও গ মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
প) ক, খ-এর পেটেন্টে অবৈধ হস্তক্ষেপ করেছে। আদালত পেটেন্ট বৈধ এবং তাতে অনধিকার হস্তক্ষেপ করা হয়েছে মর্মে নিশ্চিত হলে খ অনধিকার হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রাখার জন্য নিষেধাজ্ঞা পাবার অধিকারী হবে।
ফ) ক, খ-এর গ্রন্থকার স্বত্ব অপহরণ করে। খ এই অপরহরণ রােধের জন্য নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে যদি না যে পুস্তকের গ্রন্থকার স্বত্ব দাবি করা হয়েছে, তা অশ্লীল ও মানহানিকর হয়।
ব) ক অনুচিতভাবে খ-এর ট্রেড মার্ক ব্যবহার করেছে। খ ব্যবহারকারীকে তা থেকে নিবৃত্ত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে, যদি খ কর্তৃক উক্ত ট্রেডমার্ক ব্যবহার যথাযথ হয়।
ভ) একজন ব্যবসায়ী ক খ-কে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এবং খ-এর প্রাধিকার ব্যতীতই তার অংশীদার হিসেবে প্রচার করে। ক-কে তেমন কাজ থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে খ নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে।
ম) একজন নামকরা ব্যক্তি ক পারিবারিক বিষয়ে খ-এর নিকট একটা চিঠি লিখে। ক ও খ-এর মৃত্যুর পর খ-এর উত্তরদায় গ্রাহক গ খ-এর চিঠি প্রকাশপূর্বক কিছু অর্থ প্রাপ্তির উদ্যোগ গ্রহণ করে। ক-এর কার্যনির্বাহী ঘ-এর উক্ত চিঠিতে স্বত্ব রয়েছে এবং সে গ-কে তা প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
য) ক একটি কারখানা পরিচালনা করে এবং খ সহকারী। তার ব্যবসা চলাকালীন সময়ে ক খ-কে একটি মূল্যবান গুপ্ত পদ্ধতি জেনে ফেলে । খ পরবর্তী সময়ে ক-এর কাছ থেকে টাকা দাবি করে এবং এই হুমকি প্রদান করে যে, যদি তার দাবি প্রত্যাখান করা হয়, তা হলে সে উক্ত পদ্ধতি প্রতিদ্বন্দ্বী উৎপাদনকারীর কাছে তা ফাঁস করেদিবে। খ-কে পদ্ধতি ফাঁস করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য ক মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
ধারা ৫৫ বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা বা আদেশমূলক নিষেধাজ্ঞা বা ম্যান্ডেটরি ইনজংশন
যে ক্ষেত্রে একটি বাধ্যবাধকতার ভঙ্গ করার রোধের লক্ষ্যে এবং এমন নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে বাধ্য করা আবশ্যক হয় এবং আদালতে তা কার্যকরীযোগ্য হয়, সে ক্ষেত্রে আদালত তার ইচ্ছাধীন ক্ষমতা অনুসারে যে চুক্তি ভঙ্গের অভিযােগ করা হয়েছে তা রােধ করা এবং সে সঙ্গে প্রয়ােজনীয় কাজ সম্পাদনে বাধ্য করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারেন ।
উদাহরণ - বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা বা আদেশমূলক নিষেধাজ্ঞা বা ম্যান্ডেটরি ইনজংশন
ক) ‘ক’ একটি নূতন দালানের দ্বারা আলাে গমনাগমন ও ব্যবহারের পথে এমন প্রতিবন্ধকতা স্থাপন করে যার উপর খ কেবল দালান তৈরীর কাজ থেকে বিরত রাখার জন্যই নয়, বরং খ, আলাের পথে যতখানি নির্মান বাধা স্থাপন করেছে, তা ভেঙ্গে ফেলার জন্য নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে।
খ) ক’ একটি বাড়ি তৈরী করল, যার ছাদের প্রান্তভাগ ‘খ’-এর জমির উপর পড়েছে। খ তার জমির উপর ছাদের যতখানি প্রান্তভাগ পড়েছে তা ভেঙ্গে দেয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারির লক্ষ্যে মােকদ্দমা রুজু করতে পারে।
গ) ধারা-৫৪ এর উদাহরণ প্রসঙ্গে (ঝ) ক্ষেত্রে যে মােকদ্দমার বর্ণিত হয়েছে, সেখানেও আদালত আরও আদেশ প্রদান করতে পারেন যে, রােগী হিসেবে খ তার উপদেষ্টা ক-এর কাছে যত পত্রালাপ করেছে, তা নিশ্চিহ্ন করা হােক।
ঘ) ধারা-৫৪ এর উদাহরণ প্রসঙ্গে (ঘ) ক্ষেত্রে যে মােকদ্দমার বর্ণিত হয়েছে। সেক্ষেত্রেও আদালত ক-এর চিঠি ধ্বংস করে ফেলার আদেশ দিতে পারেন।
ঙ) ক খ সম্পর্কে এমন বিবৃতি প্রকাশের হুমকি প্রদান করে যে, তা দন্ডবিধি (১৮৬০ সনের ৪৫নং আইন) এর অধ্যায়-১১ এর আওতাধীন শাস্তিযােগ্য। আদালত তা প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারেন, এমনকি যদিও ইহা দেখানাে যেতে পারে যে, তা খ-এর সম্পত্তির জন্য ক্ষতিকারক নয়।
চ) ‘ক’ ‘খ’ এর মেডিকেল এডভাইজার হিসেবে তার কাছে প্রেরিত খ-এর লিখিত চিঠিপত্র প্রকাশের হুমকি দেয়, যার মাধ্যমে ইহা দেখানাে যেতে পারে যে, খ নৈতিকতাবিহীন জীবনযাপন করেছে। তাকে তা প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে খ নিষেধাজ্ঞা লাভ করতে পারে।
ছ) ধারা-৫৪ এর উদাহরণ প্রসঙ্গে (ফ) এবং (ব) ক্ষেত্রে এবং এই ধারার উদাহরণ প্রসঙ্গে (ঙ) ও (চ) ক্ষেত্রেও আদালত যথাক্রমে বর্ণিত গ্রন্থস্বত্ব অপহরণ দ্বারা প্রস্তুত গ্রন্থ এবং ট্রেডমার্ক বিরতি এবং চিঠিপত্র প্রত্যর্পণ বা ধ্বংস করে দেয়ার আদেশ প্রদান করতে পারেন।
ধারা ৫৬ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখানের সময়
নিষেধাজ্ঞা নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে মঞ্জুর করা যেতে পারে না-
ক) যে মােকদ্দমায় নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হচ্ছে, সে মােকদ্দমা রুজুর প্রেক্ষিতে একটি বিচার বিভাগীয় কার্যধারা স্থগিত রাখার লক্ষ্যে, যদি না কার্যধারার পৌনঃপুনিকতা রােধের জন্য তেমন নিবৃত্তি আবশ্যক হয়;
খ) যে আদালতে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হচ্ছে সে আদালতের অধীনস্থ নয় এমন আদালতের কার্যধারা স্থগিত রাখার জন্য;
গ) কোন ব্যক্তিকে আইন প্রণয়ন বিষয়ক কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন করা থেকে বিরত রাখার জন্য;
ঘ) সরকারের কোন বিভাগের সরকারী কর্তব্যের বা বিদেশী সরকারের কোন সার্বভৌম কাজে হস্তক্ষেপের জন্য;
ঙ) কোন ফৌজদারি বিষয়ে কার্যধারা স্থগিত রাখার জন্য;
চ) যে চুক্তির কার্যসম্পাদন সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকরী করা যায় না, তেমন চুক্তিভঙ্গ নিরােধের লক্ষ্যে;
ছ) উৎপাতের অজুহাতে এমন কোন কাজ নিরােধকের জন্য যা যুক্তিসঙ্গতভাবে সুস্পষ্ট হয় যে, তা উৎখাতের পর্যায়ে পড়বে;
জ) এমন একটি ক্রমাগত লংঘন নিরােধের জন্য যাতে বাদী মৌন সম্মতি প্রদান করেছে;
ঝ) যেক্ষেত্রে জিম্মা ভঙ্গের মােকদ্দমা ছাড়া সমপরিমাণ ফলােৎপাদক প্রতিকার নিশ্চিতভাবেই অন্য কোন সাধারণ কার্যধারার মাধ্যমে পাওয়া যায়;
ঞ) যেক্ষেত্রে দরখাস্তকারী বা তার প্রতিনিধির আচরণ এমন হয় যে, তা তাকে আদালতের সাহায্য থেকে বঞ্চিত করে;
ট) যেক্ষেত্রে মােকদ্দমার সারবস্তুতে দরখাস্তকারীর কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই ।
উদাহরণ - নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখানের সময়
ক) ক তার ব্যবসায়ের অংশীদার খ-কে অংশীদারিত্ব দেনা ও লাভ গ্রহণ থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে একটা নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করল । পরে ইহা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, ক অনুচিতভাবে প্রতিষ্ঠানের বহিসমূহ দখল করে রেখেছে এবং তা দেখতে দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে। আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে অস্বীকার করবেন ।
খ) ক ক্রুসিবল প্রস্তুত ও বিক্রয় করে। সে সেগুলােকে পেটেন্ট প্লাম্বাগাে কুসিবল নামে বাজারে চালু করল, যদিও কার্যতঃ তা কখনও পেটেন্ট করা হয় নি। খ নাম অপহরণ করল। ক এই অপহরণ রােধের জন্য নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে না।
গ) ‘ক’ ‘মেক্সিক্যান বাম’ নামে একটি জিনিস বিক্রয় করত এবং এই মর্মে বলে বেড়াত যে, ইহা দুষ্প্রাপ্য নির্যাস মিশ্রিতপূর্বক তৈরী ও ইহার সার্বভৌম ঔষধ-গুণ বিদ্যমান। খ একই ধরণের বিক্রয় আরম্ভ করল উহারও এমন নাম ও বিবরণ প্রদান করল যে জনগণ এই বিশ্বাসেই তা কিনতে লাগল যে তারা ক-এর মেক্সিক্যান বাম কিনতেছে। সে জিনিস বিক্রয় থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞার জন্য ক খ-এর বিরুদ্ধে মােকদ্দমা রুজু করল । খ দেখাইল যে, ক-এর মেক্সিকান বাম সুগন্ধিমিশ্রিত শূকরের গলিত চর্বি ব্যতীত কিছুই নয়। ক যে বিবরণ প্রদান করেছিল তা সৎ নয়, তাই সে নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে না।
ধারা ৫৭ নেতিবাচক চুক্তি পালনের নিষেধাজ্ঞা
ধারা-৫৬ এর উপধারা-(চ) এর বিধান সত্ত্বেও যেক্ষেত্রে একটি চুক্তি সুস্পষ্টভাবে বা ইঙ্গিতবােধকভাবে কতিপয় নির্দিষ্ট কাজ করা এবং কতিপয় নির্দিষ্ট কাজ না করার সম্মতির সমন্বয়, সেক্ষেত্রে হাঁ-সূচক চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনে বাধ্য করতে আদালত অসমর্থ হলেও সে পরিস্থিতিতে আদালতকে না-সূচক কাজ সম্পাদন সম্বন্ধে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা থেকে নিবারণ করবে না।শর্ত থাকে যে, বাদী তার যতটুকু অবশ্যপালনীয়, চুক্তির ততটুকু পালনে ব্যর্থ হয় নি।
উদাহরণ - নেতিবাচক চুক্তি পালনের নিষেধাজ্ঞা
ক) ক ব্যবসা স্থান ব্যতীত একটি নির্দিষ্ট ব্যবসার গুডউইল খ-এর কাছে ১,০০০ টাকায় বিক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হল এবং আরও সম্মতি প্রকাশ করল যে, সে চট্টগ্রামে ব্যবসা চালাবে না। খ ক-কে ১০০০ টাকা প্রদান করল, কিন্তু ক চট্টগ্রামে তার ব্যবসা চালিয়ে যেতে লাগল । আদালত ক-কে তার খরিদ্দারদের খ-এর কাছে পাঠাতে বাধ্য করতে পারে না, কিন্তু ক-কে চট্টগ্রামে ব্যবসা চালানাে থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে খ নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে।
খ) ক একটি নির্দিষ্ট ব্যবসার গুডউইল খ-এর কাছে বিক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হল । ক তার পর খ-এর দোকানের কাছেই একই রকমের ব্যবসা আরম্ভ করল এবং পুরাতন খরিদ্দারদের পাবার চেষ্টা চালাতে লাগল। ইহা তার অনুমিত চুক্তির বিপরীত এবং এই অবস্থায় ক-কে পুরাতন খরিদ্দারদের পাবার চেষ্টা থেকে বিরত রাখা এবং এমন কোন কাজ, যার ফলে খ-এর কাছ থেকে গুড-উইল প্রত্যাহৃত হয়, তা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে খ একটি নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে।
গ) ক, খ-এর সাথে ১২ মাসের জন্য খ-এর থিয়েটারে গান গাওয়া এবং অন্য কোন জনসমাগম স্থানে গান না গাইবার জন্য চুক্তিবদ্ধ হল। খ গান গাওয়া-সংক্রান্ত চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যকরীকরণ পেতে পারে না, কিন্তু কোন জনসমাগম স্থানে গান গাওয়া থেকে ক-কে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা পাবার অধিকারী।
ঘ) খ, খ-এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হল যে, সে বিশ্বস্ততার সাথে কেরানী হিসেবে ১২ মাসের জন্য তার কাজ করবে। ক এই চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনের ডিক্রি পাবার অধিকারী নয়। কিন্তু সে খ-কে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানে কেরানী হিসেবে চাকুরী করা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা পাবার অধিকারী।
ঙ) ক, খ-এর সাথে এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হল যে, খ কর্তৃক একটি নির্দিষ্ট দিনে ১,০০০ টাকা প্রদানের বিনিমেয় নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে সে একটি নির্দিষ্ট ব্যবসা শুরু করবে না। খ অর্থ প্রদানে অক্ষম হয়। ক-কে নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে ব্যবসা চালানাে থেকে বিরত রাখা যাবে না।