- Get link
- X
- Other Apps
Chapter 3 - Of Punishment
তৃতীয় অধ্যায় - দন্ড বিষয়ক
ধারা ৫২ শাস্তি
শাস্তির আভিধানিক অর্থ হলাে কৃত অপরাধের জন্য অপরাধিকে কষ্ট দেওয়া। ব্যাপক অর্থে সমাজকে বিকাশ, সংরক্ষণ ও শৃঙ্খলার দিকে নির্বাহকল্পে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের মূল উৎপাটনের জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক কর্তৃত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের দ্বারা গৃহীত নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থাকে শান্তি নামে অভিহিত করা যায়। রাষ্ট্রীয় শান্তি-শৃঙ্খলা ও সর্বসাধারণের কল্যাণের লক্ষ্যে সকল প্রকার অন্যায়, অবিচার ও নির্দয় কার্যের প্রতিরােধকল্পে অপরাধিকে প্রমাণিত অপরাধের জন্য শাস্তি গ্রহণ করতে হবে। প্রখ্যাত আইনবিদ গ্রোসিয়াস শাস্তির ৫টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন-
ক) ইহা অতৃপ্তিকর;
খ) কর্তৃপক্ষের অনুমােদিত কাজের ফল বা পরিণতি
গ) উক্ত অনুমােদিত কার্যের মাত্রা অনুসারে শান্তি প্রদেয় হয়; ঘ) বেআইনি বা অন্যায় কাজের পরিমাণ মােতাবেক শাস্তি প্রদান;
ঙ) অপরাধিকে তার কৃত অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদান করা।
শাস্তির উদ্দেশ্যঃ
শাস্তি দানের মৌলিক উদ্দেশ্য হলাে অপরাধিকে শাস্তির দান কর্তৃক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা। শাস্তি দানের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলাে কৃত অপরাধের জন্য প্রায়শ্চিত্ত ভােগ করা। প্রকৃতপক্ষে শাস্তি বিধানের লক্ষ্যে অপরাধের জন্য যেসব দণ্ড দেওয়া হয়, তাহলাে-
ক) প্রতিশােধমূলক শাস্তিঃ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ মর্মে প্রতিশােধমূলক শান্তিকে প্রাচীনযুগের লােকেরা মনে করত। এ শাস্তির বৈশিষ্ট্য হলাে দাঁতের বদলে দাঁত, রক্তের পরিবর্তে রক্ত এই নীতি। অনেক দার্শনিক ও আইনবিদ এ নীতিকে সমর্থন করেছেন।
খ) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিঃ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদ্দেশ্য হলাে একজনকে শাস্তি দিয়ে অন্যজনকে শিক্ষা দেওয়া। একজন অপরাধ করলে যে অন্যান্য ব্যক্তিরা অনুরূপ অপরাধ সংঘটন না করে সেজন্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
গ) নিবারণমূলক শাস্তিঃ অপরাধিকে নিরােধমূলক দণ্ড প্রদান কর্তৃক ভীতি প্রদর্শনপূর্বক এমনভাবে অপরাধমূলক কার্য করা হতে বিরত রাখার ব্যবস্থা রাখিতে হবে যেন সে অনুরূপ অপরাধমূলক কার্য আবার না করতে পারে।- অধ্যাপক স্যামন্ড।
ঘ) সংশােধনমূলক শাস্তিঃ সংশােধনমূলক শাস্তির উদ্দেশ্য হলাে, অপরাধির অপরাধমূলক প্রকৃতি বিদূরিত করে তার চরিত্র সংশােধন করা।
ঙ) প্রায়শ্চিত্তমূলক শাস্তিঃ অন্যায় কর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া সর্বোত্তম শাস্তি।
ধারা ৫৩ শাস্তিগুলাে
এই বিধির বিধানগুলাে মােতাবেক অপরাধিগণ যে যে দণ্ডে শাস্তিযােগ্য হবে তা হচ্ছেঃ
প্রথমতঃ মৃত্যু দণ্ড;
দ্বিতীয়তঃ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড;
তৃতীয়তঃ বাতিলকৃত;
চতুর্থতঃ কারাদণ্ড; যা দুই প্রকারের হতে পারে, যথাঃ
১. সশ্রম অর্থাৎ কঠোর শ্রম সহকারে;
২. বিনাশ্রম;
পঞ্চমতঃ সম্পত্তির বাজেয়াপ্তি
ষষ্ঠতঃ অর্থদণ্ড
ব্যাখ্যা: যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে কারাবাস সশ্রম হবে।
ধারা ৫৩ক কারাবাস উল্লেখের ব্যাখ্যা
(১) উপধারার (২) এর শর্তাবলি সাপেক্ষে সাময়িকভাবে প্রচলিত অপর যে কোন আইনে যেখানে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর-এর উল্লেখ রয়েছে, সেখানে তা যাবজ্জীবন কারাবাস হিসেবে ধরতে হবে।
(২) বর্তমানে প্রচলিত যে কোন আইনে কোন মেয়াদের বা স্বল্পকালিন মেয়াদের জন্য যে কোন ভাবে হােক না কেন, দ্বীপান্তরের উল্লেখ থাকলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
(৩) বর্তমানে প্রচলিত অপর যে কোন আইনে যেখানে দ্বীপান্তর উল্লেখ রয়েছেঃ
(ক) সেখানে তা যদি যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর বুঝায়, তা হলে তাকে যাবজ্জীবন কারাবাস
(খ) সেখানে তা যদি স্বল্পতর মেয়াদের দ্বীপান্তর বুঝায়, তা হলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
ধারা ৫৪ মৃত্যুদণ্ড হ্রাসকরণ
যে সমস্ত ক্ষেত্রে মৃত্যুর শাস্তির আদেশ দিতে হয়, তার প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকার অপরাধির সম্মতি ছাড়াই এই বিধিতে বিহিত অপর যেকোন দণ্ডে রূপান্তরিত করতে পারবেন।
ধারা ৫৫ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হ্রাসকরণ
যাবজ্জীবন কারাদৎ প্রদান করা যেতে পারে এমন প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকার অপরাধকাৱির সন্মতি ছাড়াই ঐ শাস্তিকে যে কোন বর্ণনার অনুর্ধে ২০ বৎসর মেয়াদি সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারবেন।
ধারা ৫৫ক রাষ্ট্রপতির বিশেষ কর্তৃত্ত্ব সংরক্ষণ
৫৪ ধারা বা ৫৫ ধারার কোন কিছুই রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন, শাস্তি লাঘব, শাস্তি বিলম্বন বা শাস্তি মওকুফকরণের কর্তৃত্ত্ব খর্ব করবে না।
ধারা ৫৭ শাস্তির মেয়াদগুলাের ভগ্নাশগুলাে
দণ্ডের মেয়াদগুলাের ভগ্নাংশগুলাে হিসাব করার ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাবাসকে ত্রিশ বছর মেয়াদি কারাবাসের সমতুল্য বলে গণণা করা হবে।
ধারা ৬০ কারাবাসের কিছু কিছু ক্ষেত্রে শান্তি সম্পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে সশ্রম বা বিনাশ্রম হতে পারবে
যে মামলায় কোন অপরাধকারি যে কোন বর্ণনার কারাবাসের উপযুক্ত হয়, এমন প্রতিটি মামলায় এরকম অপরাধকারিকে শাস্তিদাতা আদালতের ঐ শান্তির আদেশ এই বলে আদেশ প্রদান করার ক্ষমতা থাকবে যে এরূপ কারাবাস সম্পূর্ণ হিসেবে সশ্রম হবে বা এরূপ কারাবাস সম্পূর্ণ হিসেবে বিনাশ্রম হবে বা এরূপ কারাবাসের যে কোন অংশ সশ্রম হবে ও অবশিষ্ট অংশ বিনাশ্রম হবে।
ধারা ৬৩ অর্থ দণ্ডের পরিমাণ
যেক্ষেত্রে জরিমানা দণ্ডের পরিমাণ উল্লেখ করা হয় না সেক্ষেত্রে অপরাধকারি দ্বারা প্রদেয় জরিমানাদণ্ডেও পরিমাণের কোন সীমা থাকবে না, তবে এটা অত্যধিক হতে পারবে না।
ধারা ৬৪ জরিমানা অনাদায়ের দরুণ কারাদণ্ড দান
অর্থদণ্ডসহ কারাবাসে শাস্তিযােগ্য অপরাধে প্রতিটি মামলায় যে মামলায় কারাবাস সহকারে বা ছাড়া অপরাধকারির জরিমানা বিধান করা হয়, এবং কারাবাস বা জরিমানা বা শুধু জরিমানা দণ্ডে অপরাধের প্রতিটি মােকদ্দমায়, যে মামলায় অপরাধকারির জরিমানা বিধান করা হয়, অনুরূপ অপরাধকারির শাস্তি প্রদানকারি আদালতের দণ্ডের আদেশ বলে এই বলে নির্দেশ দান করার ক্ষমতা থাকবে যে, জরিমানা অনাদায়ে অপরাধকারি কোন কোন নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কারাদণ্ড ভােগ করবে, যে কারাবাস, তাকে দণ্ডিত করা হয়ে থাকতে পারে ও হ্রাসকরণের আওতায় সে শাস্তিযােগ্য হতে পারে এরূপ অপর যে কোন কারাবাসের অতিরিক্ত হবে।
ধারা ৬৫ যেক্ষেত্রে কারাবাস ও জরিমানা বিধেয় সেক্ষেত্রে জরিমানা অনাদায়ে কারাবাসের পরিমাণ
অর্থদণ্ড অনাদায়ের কারণে আদালত অপরাধিকে যে মেয়াদের জন্য কারাবাস ভােগের আদেশ দেন সে মেয়াদ, ঐ অপরাধ কারাদণ্ড ও তৎসহ জরিমানা দণ্ডে শাস্তিযােগ্য হলে, অপরাধের জন্য নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ কারাদণ্ড মেয়াদের এক-চতুর্থাংশের বেশি হবে না।
ধারা ৬৬ জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডের বর্ণনা
আদালত জরিমানা অনাদায়ের জন্য যে কারাদণ্ড প্রদান করেন তা, ঐ অপরাধের জন্য অপরাধকারির যে বর্ণনার শাস্তি বিধান করা যেত তার যে কোন বর্ণনায় হতে পারবে।
ধারা ৬৭ কেবলমাত্র জরিমানা দণ্ডে শাস্তিযােগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ড
অপরাধটি কেবলমাত্র জরিমানা দণ্ডে শাস্তিযােগ্য হলে, আদালত জরিমানা অনাদায়ের জন্য যে কারাদণ্ডারােপ করবেন তা হবে বিনাশ্রম ও জরিমানা অনাদায়ে আদালত যে মেয়াদের জন্য অপরাধিকে কারাদণ্ড ভােগের নির্দেশ প্রদান করবেন তা নিম্নেবর্ণিত হার অতিক্রম করবে না, অর্থাৎ দুই মাসের অনুর্ধ্ব যে কোন মেয়াদের ক্ষেত্রে অর্থ দণ্ডের পরিমাণ পঞ্চাশ টাকা অতিক্রম করবে না ও চার মাসের অনুর্ধ্ব যে কোন মেয়াদের ক্ষেত্রে অর্থ দণ্ডের পরিমাণ একশত টাকা অতিক্রম করবে না, ও অপর যে কোন মামলায় অনুর্ধ্ব ছয়মাস কাল।
ধারা ৬৮ জরিমানা আদায় করলে কারাদণ্ডের সমাপ্তি হবে
অর্থদণ্ড অনাদায়ে যে কারাদণ্ড আরােপ করা হয়, এটা ঐ জরিমানা পরিশােধ করা বা আইনের প্রক্রিয়াধীনে আদায় করার সঙ্গে সাথে সমাপ্ত হয়ে যাবে।
ধারা ৬৯ জরিমানাদণ্ডেও আনুপাতিক অংশ আদায় করা হলে কারাদণ্ডের পরিসমাপ্তি হবে
যদি অর্থ অনাদায়ের কারণে নির্দিষ্ট কারাদণ্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পূর্বে জরিমানাদণ্ডেও এমন একটি অনুপাত পরিশােধ বা আইনবলে আদায় করা হয় যে, অর্থ অনাদায়ের কারণে ভােগকৃত কারাদণ্ডের মেয়াদ অপরিশােধিত জরিমানাদণ্ডেও অংশের অনুপাতে কম নয়, তা হলে কারাদণ্ডের পরিসমাপ্তি হয়ে যাবে ।
উদাহরণ
ক একশত টাকা জরিমানা ও অর্থ অনাদায়ের কারণে চার মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়। এ ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের এক মাস উত্তীর্ণ হবার পূর্বে জরিমানদণ্ডেও পঁচাত্তর টাকা পরিশােধ বা আদায় করা হলে প্রথম মাস উত্তীর্ণ হবার সঙ্গে সঙ্গে ক কে মুক্ত করে দেওয়া হবে। পঁচাত্তর টাকা প্রথম মাস হবার সময়ে বা ক কারাবাসে থাকাকালে পরবর্তী কোন সময়ে পরিশােধ বা আদায় করা হলে, ক কে অবিলম্বে মুক্ত করে দেওয়া হবে। জরিমানদণ্ডেও পঞ্চাশ টাকা কারাদণ্ডের দুই মাস পূর্ণ হবার পূর্বে পরিশােধ বা আদায় করা হলে দুই মাস পরিপূর্ণ হবার সঙ্গে সঙ্গে ক কে মুক্তি দেওয়া হবে। পঞ্চাশ টাকা ঐ দুই মাস পূর্ণ হবার কালে বা কারাবাসে থাকাকালে পরবর্তী কোন সময়ে পরিশােধ বা ধার্য করা হলে ক কে অনতিবিলম্বে মুক্তি প্রদান করা হবে ।
ধারা ৭০ ছয় বছরের ভিতর বা কারাবাসকালে আদায়যােগ্য জরিমানা মৃত্যুর কারণে সম্পত্তি দায় মুক্ত হবে না
অর্থদণ্ড বা তার যেকোন অংশ, যা অপরিশােধিত থেকে গেলে তা দণ্ডের আদেশ প্রদানের পরবর্তী ছয় বছরের ভিতর যে কোন সময় ও দণ্ডাজ্ঞা অনুসারে অপরাধকারি ছয় বছরের বেশি কালের জন্য কারাদণ্ডে শাস্তিযােগ্য হলে ঐ মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পূর্বে যে কোন সময় আদায় করা যেতে পারে ও অপরাধকারির মৃত্যুর কারণে তার মৃত্যুর পর, তার যে সম্পত্তি তার ঋণগুলাের জন্য আইনত দায়গ্রস্ত হত তা হতে দায়িত্ব মুক্ত হবে না।
ধারা ৭১ কিছু কিছু অপরাধের সমবায়ে গঠিত অপরাধের শাস্তির সীমা
যে ক্ষেত্রে অপরাধ হিসেবে পরিগণিত এমন কিছু এরূপ অংশগুলাের সমবায়ে গঠিত হয়, যে অংশগুলাের যে কোনটি একটি অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয়, সে ক্ষেত্রে অপরাধকারিকে এরূপ অপরাধগুলাের একাধিকের শাস্তি প্রদান করা যাবে না, যদি না এরূপ স্পষ্ট বিধান বিদ্যমান থাকে। যেক্ষেত্রে কোন কিছু আপাতত প্রচলিত যে আইনবলে অপরাধগুলাের সংজ্ঞা বা শাস্তি প্রদান করা হয়, সে আইনের দুই বা ততােধিক আলাদা সংজ্ঞাদান অপরাধ হয়, বা যেক্ষেত্রে কিছু কার্য যার এক বা একাধিক স্বকীয়ভাবে একরূপ অপরাধ করে, কিন্তু মিলিতভাবে ভিন্ন অপরাধ করে, সেক্ষেত্রে অপরাধকারিকে যে আদালত তার বিচার করেন সে আদালত এরূপ অপরাধগুলাের যে কোনটির জন্য তার যে শাস্তি বিধান করতে পারেন তা হতে কঠোরতর শাস্তি প্রদান করা যাবে না।
উদাহরণগুলাে
(ক) ক, খ কে পঞ্চাশটি লাঠির ঘা দেয়। এই ক্ষেত্রে ক সম্পূর্ণ প্রহারের সাহায্যে ও যে আঘাতগুলাে সমগ্র প্রহার করে তাদের প্রত্যেকটির সাহায্যে ও ইচ্ছাকৃতভাবে খ কে আঘাত করার অপরাধ করে থাকতে পারে। যদি ক প্রতি আঘাতের জন্য শাস্তিযােগ্য হত, তা হলে তাকে প্রতিটি আঘাতের জন্য এক বছর হিসেবে পঞ্চশ বছর মেয়াদি কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা যেত। কিন্তু সে সমগ্র প্রহারের জন্য শুধু একটি দণ্ডে শাস্তিযােগ্য হবে।
(খ) কিন্তু ক, খ কে আঘাত করার সময় যদি ঘ বাধাদান করে ও ইচ্ছাকৃতভাবে ঘ কে আঘাত করে, তা হলে এক্ষেত্রে যেহেতু ঘ কে দেওয়া আঘাত ক দ্বারা খ কে ইচ্ছাকৃত আঘাত করার অংশ নয়, সেহেতু ক ইচ্ছাকৃতভাবে খ কে আঘাত করার কারণে একটি দণ্ডে ও ঘ কে আঘাত করার কারণে আরেকটি দণ্ডে শাস্তিযােগ্য হবে।
ধারা ৭২ কিছু কিছু অপরাধের একটির জন্য অপরাধি লােকের দণ্ড কি এই সম্পর্কে, রায়ে এর সন্দেহ প্রকাশকরণ
যে সমস্ত মামলায় এরূপ সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয় যে, কোন লােক রায়ে উল্লেখিত কিছু কিছু অপরাধের কোনটির জন্য অপরাধি তা সন্দেহপূর্ণ, সে সমস্ত মােকদ্দমার সব অপরাধের জন্য একই ধরণের দণ্ডের ব্যবস্থা না থাকার ক্ষেত্রে অপরাধকারিকে যে অপরাধের জন্য সর্বনিম্ন শাস্তির ব্যবস্থা আছে সে অপরাধের শাস্তি প্রদান করা হবে।
ধারা ৭৩ নির্জন কারাবাস
কোন লােককে যদি এমন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত করা হয় যে, অপরাধের কারণে আদালত এই বিধি বলে তাকে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন তা হলেআদালত তার দণ্ডাজ্ঞার মাধ্যমে আদেশ করতে পারবেন যে, অপরাধিকে তার বিরুদ্ধে দেয় কারাদণ্ডের মেয়াদের কোন অংশ বিশেষের বা কয়েকটি অংশের জন্য যা সর্বসাকুল্যে তিন মাসের বেশী হতে পারবে না- নির্জন কারাবাসে আবদ্ধ রাখা হবে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছুকালের জন্যে অপরাধিকে নির্জন কারাবাসে আবদ্ধ রাখা হবে তা নিম্নে উল্লেখিত করা হল, যেমন-
কারাদণ্ডের মেয়াদ ছয় মাসের বেশি না হলে অনধিক এক মাস পর্যন্ত;
করাদণ্ডের মেয়াদ ছয় মাসের বেশি কিন্তু এক বছরের বেশি না হলে অনধিক দুই মাস পর্যন্ত;
কারাদণ্ডের মেয়াদ এক বছরের বেশি হলে অনধিক তিন মাস পর্যন্ত ।
ধারা ৭৪ নির্জন কারাবাসের সীমা
নির্জন কারাবাস দণ্ডাজ্ঞা কার্যকরি করার ক্ষেত্রে এরূপ কারাবাস এককালিন চৌদ্দ দিনের বেশি হতে পারবে না, নির্জন কারাবাসের মেয়াদগুলাের ভিতর এরূপ মেয়াদগুলাে নির্জন কারাবাস অপেক্ষা অন্যূন কালের বিরতিগুলাে থাকবে ও দেয় কারাদণ্ড তিন মাসের বেশী হলে নির্জন কারাবাস দেয় সর্বমােট কারাদণ্ডের যে কোন এক মাসে সাত দিনের বেশী হতে পারবে না, নির্জন কারাবাসের মেয়াদগুলাের ভিতর এরূপ মেয়াদগুলাে নির্জন কারাবাস অপেক্ষা অন্যূন কালের বিরতিগুলাে থাকবে।
ধারা ৭৫ পূর্বতন দণ্ডের পরে দ্বাদশ অধ্যায়ের বা সপ্তদশ অধ্যায়ের আওতায় কিছু কিছু অপরাধের জন্য বর্ধিত দণ্ড
যদি কোন ব্যক্তি-
(ক) বাংলাদেশের কোন আদালতের দ্বারা, তিন বছর বা তার বেশি মেয়াদের যে কোন বর্ণনার কারাবাসসহকারে এই বিধির দ্বাদশ অধ্যায় বা সপ্তদশ অধ্যায়ের আওতায় শাস্তিযােগ্য কোন অপরাধে দণ্ডিত হয়ে,
(খ) বাতিল।
উক্ত অধ্যায়গুলাের যে কোনটির আওতায় সে একই মেয়াদের জন্য এরূপ কারাদণ্ডে শাস্তিযােগ্য যে কোন অপরাধের জন্য অপরাধি হবে, সে লােক পরবর্তী প্রতিটি এরূপ অপরাধের কারণে যাবজ্জীবন কারাবাস দণ্ডাধীন বা যে কোন বর্ণনার সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডের যার মেয়াদ দশ বছর অবধি হতে পারে সেরূপ হবে।