- Get link
- X
- Other Apps
তামাদি আইন ১৯০৮।
তামাদি আইনের প্রকৃতি।
তামাদি আইন ধারা ১ - সংক্ষিপ্ত শিরোনাম পরিসীমা ও আরম্ভ।
তামাদি আইন দ্বিতীয় অধ্যায়-মামলা আপিল এবং দরখাস্তের তামাদি।
তামাদি আইন ধারা ৩ - তামাদির মেয়াদ অন্তে দায়েরকৃত মামলা ইত্যাদি খারিজ।
তামাদি আইন ধারা ৪ - আদালত বন্ধ থাকা অবস্থায় যখন তামাদির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
তামাদি আইন ধারা ৫ - কতিপয় ক্ষেত্রে মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ।
তামাদি আইন ধারা ৬ - বৈধ অপারগতা।
উদাহরণ - বৈধ অপারগতা।
তামাদি আইন ধারা ৭ - কতিপয় দরখাস্তকারির একজনের অপারগতা।
তামাদি আইন ধারা ৮ - বিশেষ ব্যতিক্রম।
তামাদি আইন ধারা ৯ - সময়ের অবিরাম চলন।
তামাদি আইন ধারা ১০ - প্রকাশ্য ট্রাস্টী ও তাদের এজেন্টবৃন্দের প্রতিকূলে মামলা।
তামাদি আইন ধারা ১১ - বৈদেশিক চুক্তির উপর মামলা।
তামাদি আইনের প্রকৃতি।
তামাদি আইন ধারা ১ - সংক্ষিপ্ত শিরোনাম পরিসীমা ও আরম্ভ।
তামাদি আইন দ্বিতীয় অধ্যায়-মামলা আপিল এবং দরখাস্তের তামাদি।
তামাদি আইন ধারা ৩ - তামাদির মেয়াদ অন্তে দায়েরকৃত মামলা ইত্যাদি খারিজ।
তামাদি আইন ধারা ৪ - আদালত বন্ধ থাকা অবস্থায় যখন তামাদির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
তামাদি আইন ধারা ৫ - কতিপয় ক্ষেত্রে মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ।
তামাদি আইন ধারা ৬ - বৈধ অপারগতা।
উদাহরণ - বৈধ অপারগতা।
তামাদি আইন ধারা ৭ - কতিপয় দরখাস্তকারির একজনের অপারগতা।
তামাদি আইন ধারা ৮ - বিশেষ ব্যতিক্রম।
তামাদি আইন ধারা ৯ - সময়ের অবিরাম চলন।
তামাদি আইন ধারা ১০ - প্রকাশ্য ট্রাস্টী ও তাদের এজেন্টবৃন্দের প্রতিকূলে মামলা।
তামাদি আইন ধারা ১১ - বৈদেশিক চুক্তির উপর মামলা।
The Limitation Act 1908
Chapter I
Preliminary
তামাদি আইন ১৯০৮
(১৯০৮ এর ৯ নং আইন)
প্রস্তাবনা
দেওয়ানি মামলার সময় সম্পর্কিত আইন একত্রিতকরণ এবং সংশোধন করার ও অপরাপর লক্ষ্যে প্রণীত আইন। যেহেতু দেওয়ানি মামলা, আপিল এবং আদালতে কতিপয় আবেদনের তামাদি সম্পর্কিত আইন সংহত এবং সংশোধন করা প্রয়োজন এবং সমীচীন; ও যেহেতু দখলের দ্বারা ব্যবহারে অধিকারের স্বত্ব এবং অপরাপর সম্পত্তি অর্জনে উদ্দেশ্যেও বিধি প্রণয়ন করা প্রয়োজন এবং সমীচীন। সেহেতু এতদ্বারা নিম্নে বর্ণিত আইন করা হলো।
আলোচনা ও বিশ্লেষণ - তামাদি আইন
অত্র আইনটির নাম দেওয়া হয়েছে তামাদি আইন, ১৯০৮ ।আমাদের এই উপমহাদেশে ১৭৯৩ সনে সর্বপ্রথম তামাদি আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু তখন এটি পূর্ণাঙ্গ আইন হিসেবে স্বীকৃতি পায় নি, তখন এটি খন্ডকারে জারি করা হয়। কিন্তু ১৮৫৯ সালে এটি পূর্ণাঙ্গ আইনে পরিণত হয়। ১৮৭৭ সনে এটির সংশোধন আনা হয়। সর্বশেষে ১৯০৮ সনে আমাদের বর্তমান তামাদি আইনটি প্রণয়ন করা হয়।
তামাদি আইনের প্রকৃতি
১৯০৮ সালের তামাদি আইন অর্থে এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ ও পরিপূর্ণ বিধিবদ্ধ আইনকে বুঝানো হয়েছে, যে আইনের ক্ষমতাবলে কোন স্বত্বের বিরোধকে শান্ত করে ও সেই সাথে সব ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রমকে রোধ করতে সচেষ্ট হয়। দাবি যার সত্য স্বয়ং তিনিই উহা আদায় করার জন্য সচেষ্ট ভূমিকা পালন করবেন, তামাদি আইন তার সুস্পষ্ট বিধানবলে ইহাই ধরে নিতে পারে। একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে দাবি আদায়ের জন্য তৎপরতা প্রদর্শন না করলে দাবিটি নষ্ট হয়েছে বলে গণ্য হবে ইহাই এই আইনের সুস্পষ্ট বিধান । তামাদি আইন ১৯০৯ সালের পহেলা জানুয়ারী হতে সমগ্র দেশে বলবৎযোগ্য বলে গণ্য হতে থাকে।
তামাদি আইনের প্রথম দিকে ৩২টি ধারা এবং শেষের দিকে প্রথম তফছিলে ১৮৩টি অনুচ্ছেদ আছে। তামাদি আইনের ধারা ১-এ ভূমিকা ও আইনের প্রয়োগক্ষেত্রে বিষয়ক বিধান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে এবং এই আইনে ব্যবহৃত কতিপয় সংজ্ঞা ২ ধারায় প্রদত্ত হয়েছে। এই আইনে যে কোন প্রকারের মামলা, আপিল এবং দরখাস্ত দাখিলের সময়সীমার
বিষয়ে আইনরে সাধারণ নিয়মাবলী ব্যতিক্রম সহকারে বর্ণিত আছে। ৩ হতে ২৫ ধারা পর্যন্ত এবং একই আইনের ২৬ ও ২৭ ধারায় পদাধিকার অর্জনের সময়সীমা-সংক্রান্ত বিধানাবলীর উল্লেখ আছে। জবরদখলের মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তির মালিকের স্বত্ব লোপ এবং জবরদখকারির স্বত্ব অর্জনের সময়সীমা সম্বন্ধে সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে এই আইনের ২৮ ধারায় । তামাদি আইনের সকল বিধানসমূহ কঠোরভাবে মেনে চলতে বাধ্য থাকে আদালত। ন্যায়বিচারের খাতিরে হলেও তামাদি আইন দ্বারা অনুমোদনযোগ্য কোন সময়কালের ব্যাপারে কোন প্রকার অনুকম্পা প্রদর্শন করতে আদালত বাধ্য নয়। অর্থাৎ কেউ যদি তার নিজের অধিকার বিষয়ে উদাসীন থাকে এবং সে যদি তামাদি আইনের নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর প্রতিকারের জন্য আদালতের কাছে বিচার প্রার্থনা না করে, তবে সেক্ষেত্রে আদালত ঐ ব্যক্তিকে কোনরূপ সাহায্য করতে বাধ্য নয়। অর্থাৎ যেই স্বত্বের দাবি তামাদি হয়ে গিয়াছে, আদালত তা পুনরায় জীবিত করতে পারে না।
তামাদি আইন ধারা ১ সংক্ষিপ্ত শিরোনাম পরিসীমা ও আরম্ভ
১) এই আইনটি তামাদি আইন ১৯০৮ নামে অভিহিত হবে।
২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে কার্যকর হবে।
৩) অত্র ধারা ও ধারা ৩১ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং এই আইনের অপরাপর ধারা গুলি কোন ১৯০৯ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
ধারা ২ সংজ্ঞা
বিষয় বস্তু কিংবা প্রসঙ্গের পরিপন্থী না হলে এই আইনে নিম্নলিখিত শব্দ বা শব্দ সৃষ্টির দ্বারা নিম্নরূপ অর্থ বুঝাবে; যথা-
১) আবেদনকারী অর্থে যে ব্যক্তির কাছ থেকে বা যার দ্বারা আবেদনকারীর তার আবেদন করার অধিকার অর্জন করে সে ব্যক্তি কে বুঝায়।
২) বিনিময় পত্র অর্থে হুন্ডি ও চেক বুঝায়।
(৩) ‘মুচলেকা' অর্থে এমন কোন দলিল বুঝায় যার মাধ্যমে কোন লোক অন্য কোন ব্যক্তিকে অর্থ দেয়ার জন্য নিজেকে এই শর্তে বাধ্য করে যে, নির্দিষ্ট কোন কাজ সম্পাদিত হলে কিংবা না হলে ঐ বাধ্যবাধকতা বাতিল হয়ে যাবে।
(৪) 'বিবাদী' অর্থে যে ব্যক্তির কাছে থেকে কিংবা যার দ্বারা বিবাদী তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হবার দায়-দায়িত্ব অর্জন করে সে ব্যক্তিকে বুঝায় ।
(৫) ‘ব্যবহারস্বত্ব’ এটার ভেতর এমন একটি অধিকার আওতাভুক্ত থাকবে যা কোন চুক্তি থেকে সৃষ্ট নয় অথচ যার মাধ্যমে একজন লোক অন্য একজনের মালিকানাভুক্ত ভূমির কোন একটা অংশ থেকে বা অন্য একজনের ভূমিতে জন্মিয়েছে কিংবা সংলগ্ন আছে কিংবা অবস্থান করতেছে—এমন কোন কিছু অপসারণ করতে বা নিজ অর্জনের জন্য তা গ্রহণ কিংবা ব্যবহার করার জন্য আইনতঃ অধিকারি হচ্ছে।
(৬) ‘বিদেশ' অর্থে বাংলাদেশ ছাড়া অন্য যে কোন দেশকে বুঝাবে।
(৭) ‘সরল বিশ্বাস' অর্থে যথার্থ যত্ন কিংবা সাবধানতা ও মনোযোগের সহিত করা হয়নি-এমন কোন কিছুই সরল বিশ্বাসে করা হয়েছে বলে পরিগণিত হবে না।
(৮) ‘বাদী' অর্থে এমন যে কোন ব্যক্তিকেই বুঝাবে যার কাছে থেকে বা যার দ্বারা একজন বাদী মামলা রুজু করার অধিকার লাভ করে।
(৯) ‘অঙ্গীকারপত্র’ অর্থে এমন যে কোন একটা দলিলকে বুঝাবে যার মাধ্যমে তার প্রণেতা কিংবা প্রস্তুতকারক তাতে নির্ধারিত মেয়াদের ভেতর কিংবা চাহিবামাত্র কিংবা দেখিবামাত্র অন্য একজনকে একটা নির্দিষ্ট অংকের অর্থ প্রদানে নিজেকে বাধ্য রাখেন।
(১০) 'মোকদ্দমা' অর্থে আপিল কিংবা কোন দরখাস্তপত্র বুঝাবে না বা আপিল কিংবা দরখাস্তপত্র কোন মামলার আওতাভুক্ত বিষয় বলে পরিগণিত হবে না; ও
(১১) ‘অছি' শব্দের ভেতর কোন বেনামদার, রেহেনী দেনা-পাওনা পরিশোধের পর দখলে আছে এমন কোন রেহেন গ্রহীতা কিংবা দখলে থাকা স্বত্ববিহীন কোন দুষ্কৃতকারি আওতাভুক্ত থাকবে না।
Chapter II
Limitation of Suits Appeals and applications
দ্বিতীয় অধ্যায়-মামলা আপিল এবং দরখাস্তের তামাদি
তামাদি আইন ধারা ৩ তামাদির মেয়াদ অন্তে দায়েরকৃত মামলা ইত্যাদি খারিজ
এই আইনের ধারা ৪ থেকে ২৫ এর উভয় ধারাসহ প্রথম তফসিলে এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত তামাদি সময় পার হবার পর মামলা, আপিল কিংবা আবেদন দায়ের, দায়ের কিংবা পেশ করা হলে, যদি বিবাদী পক্ষ তামাদির প্রশ্ন উত্থাপন নাও করে, তবুও ঐ মামলা, আপিল কিংবা আবেদন খারিজ বলে পরিগণিত হবে।
ব্যাখ্যা: সাধারণত উপযুক্ত কর্মচারির কাছে আরজি উপস্থিত করলে, নিঃস্ব হলে নিঃস্বভাবে মোকদ্দমা করার অনুমতির জন্য আবেদন করলে ও আদালত, যেখানে কোম্পানী গুটাইয়া ফেলছে, সেখানে কোম্পানির বিরুদ্ধে দাবির বেলায় দাবিদার সরকারি অবসায়কের কাছে দাবি প্রেরণ করলে মোকদ্দমা রুজু করা হয়।
তামাদি আইন ধারা ৪ আদালত বন্ধ থাকা অবস্থায় যখন তামাদির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়
যে ক্ষেত্রে কোন আদালত বন্ধ থাকা অবস্থায় কোনো মামলার আপিল আবেদনের জন্য তামাদির নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে আদালত যেদিন খুলবে সেদিন উক্ত মামলা, আপিল বা আবেদন দাখিল করা যাবে।
তামাদি আইন ধারা ৫ কতিপয় ক্ষেত্রে মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ
কোন আপিল বা রায় পুনর্বিচার বা পুনরীক্ষণের আবেদন কিংবা আপিল করার অনুমতি প্রার্থনার আবেদন কিংবা অপর কোন আবেদন যার উপর এই ধারা বর্তমানে বলবৎ অপর কোন আইনের দ্বারা কিংবা অধীনে প্রয়োগযোগ্য করা হয়, তার নির্দিষ্ট তামাদির সময় উত্তীর্ণ হওয়ার পর গৃহীত হতে পারে যদি আপিলকারি কিংবা দরখাস্তকারি এই মর্মে আদালতকে সন্তুষ্টি করেন যে, নির্ধারিত মেয়াদের ভেতর আপিল কিংবা আবেদনটি পেশ না করার যথেষ্ট কারণ ছিল ।
ব্যাখ্যা: যদি আপিলকারি হাইকোর্ট বিভাগের কোন আদেশ, প্রথা কিংবা রায় দ্বারা তামাদির সময় হিসাব কিংবা ধার্য করতে বিভ্রান্ত হয়ে থাকে, তবে তা বর্তমান ধারা অনুযায়ি যথেষ্ট কারণ মর্মে গণ্য হবে।
তামাদি আইন ধারা ৬ বৈধ অপারগতা
(১) যেক্ষেত্রে মামলা কিংবা কার্যধারা দায়ের করার বা ডিক্রি জারীর জন্য আবেদন দাখিলের অধিকারি ব্যক্তি, যে সময় থেকে তামাদির সময় হিসাব করতে হবে, সে সময় নাবালক উন্মাদ কিংবা জড়বুদ্ধি থাকে, সেক্ষেত্রে ঐ লোক তার উপরোক্ত অপারগতার অবসান হবার পর, অপারগতা না থাকলে, প্রথম তফসিলের তৃতীয় স্তম্ভে কিংবা ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৪৮ ধারায় উল্লেখিত যে মেয়াদের ভেতর সে তা করতে পারিত সে মেয়াদের ভেতর মামলা কিংবা কার্যধারা দায়ের বা আবেদন পেশ করতে পারবে।
(২) যেক্ষেত্রে অনুরূপ কোন ব্যক্তি, যে সময় থেকে তামাদির সময় হিসাব করতে হবে, সে সময় উপরে উল্লেখিত যে কোন দুইটি অপারগতার অবসান হবার আগেই যে আরেকটি অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে সে লোক তার উভয় অপারগতার অবসান হবার পর, অপারগতা না থাকলে, উপরে উল্লেখিত যে মেয়াদের ভেতর সে তা করতে পারিত সে মেয়াদের ভেতর মামলারুজু বা আবেদন পেশ করতে পারবে।
(৩) যেক্ষেত্রে অনুরূপ কোন ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত তার অপারগতা অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে তার আইনানুগ প্রতিনিধি উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর, অপারগতা না থাকলে উপরে উল্লেখিত যে মেয়াদের ভেতর তা করা যাইত সে মেয়াদের ভেতর মামলারুজু বা আবেদন পেশ করতে পারবে।
(৪) যেক্ষেত্রে উপরোক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর তারিখে তার আইনানুগ প্রতিনিধি অনুরূপ কোন অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে (১) এবং (২) উপধারায় বিধৃত বিধানগুলো প্রয়োগযোগ্য হবে।
উদাহরণ - বৈধ অপারগতা
ক নাবালক থাকার সময় একটি নৌকার ভাড়া আদায়ের জন্য মামলা করার অধিকার প্রাপ্ত হয়। এর চার বৎসর পর সে সাবালক হয়। সাবালক হওয়ার তারিখ থেকে তিন বৎসরের ভেতর যে কোন সময় সে ঐ মামলারুজু করতে পারবে।
(খ) খ নাবালক থাকার সময় একটি মামলা করার অধিকার প্রাপ্ত হয়। এই অধিকার অর্জনের পর কিন্তু নাবালক থাকাকালেই সে উন্মাদ হয়ে পড়ে। তার নাবালকত্ব এবং উন্মাদ অবস্থা অবসানের তারিখ থেকে তার তামাদি সময় হিসাব শুরু হবে।
(গ) গ নাবালক থাকার সময় একটি মামলা করার অধিকার প্রাপ্ত হয়। সাবালক হবার পূর্বে গ মারা যায় ও তার নাবালক ছেলে খ তার উত্তরাধিকারি হয়। গ এর সাবালক হবার তারিখ তার তামাদির সময় হিসাব শুরু হবে।
তামাদি আইন ধারা ৭ কতিপয় দরখাস্তকারির একজনের অপারগতা
যেক্ষেত্রে কিছু কিছু লোক মামলা কিংবা কার্যধারা করার কিংবা ডিক্রি জারীর জন্য আবেদন পেশ করার অধিকারি ও তাদের একজন উপরোক্ত প্রকারের অপারগ ও তাহার সম্মতি ছাড়াই দায়মুক্ত করা চলে, সেক্ষেত্রে তাদের সকলের প্রতিকূলেই তামাদির সময় অতিবাহিত হতে থাকবে। কিন্তু যেক্ষেত্রে অনুরূপভাবে দায়মুক্ত করা চলে না, সেক্ষেত্রে তাদের ভেতর একজন অন্যান্যদের সম্মতি ছাড়াই দায়মুক্ত করার যোগ্যতা লাভ না করা পর্যন্ত কিংবা উপরোক্ত অপারগতার অবসান না হওয়া পর্যন্ত তাদের কাহারও প্রতিকূল তামাদির সময় অতিবাহিত হবে না।
উদাহরণ- কতিপয় দরখাস্তকারির একজনের অপারগতা
(ক) ক একটি ফার্মের কাছে দেনাগ্রস্ত হয়। খ, গ ও ঘ সে ফার্মের অংশীদার। খ উন্মাদ ও গ নাবালক। খ ও গ-এর সম্মতি ছাড়াই ঘ দেনাদার ক কে দায়মুক্ত করতে পারবে। এইক্ষেত্রে খ, গ ও ঘ সকলের প্রতিকুলেই তামাদির সময় উত্তীর্ণ হবে।
(খ) ক একটি ফার্মের কাছে দেনাগ্রস্ত হয়। চ, ছ ও জ সে ফার্মের অংশীদার। চ এবং ছ উন্মাদ ও নাবালক। চ কিংবা ছ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বা জ সাবালক না হওয়া পর্যন্ত কাহারও প্রতিকূলে তামাদির সময় অতিবাহিত হবে না।
তামাদি আইন ধারা ৮ বিশেষ ব্যতিক্রম
৬ কিংবা ৭ ধারার কোন কিছুই অগ্রক্রয়ের অধিকার বলবতের মামলায় প্রয়োগযোগ্য নয়। যে মেয়াদের ভেতর মামলা অবশ্যই দায়ের কিংবা আবেদন পেশ করতে হবে, ঐ ব্যক্তির অপারগতার অবসানে কিংবা মৃত্যুর পর তা ঐ ধারা দ্বয়ের কোন কিছুই তিন বৎসরের অধিক বর্ধিত করেছে বলে পরিগণিত হবে না।
উদাহারণ- বিশেষ ব্যতিক্রম
(ক) ক নাবালক থাকার সময় মিরাস আদায়ের জন্য মামলা করার অধিকার অর্জন করে। এর ১১ বৎসর পর সে সাবালক হয়। সাধারণ আইন মোতাবেক ক মামলা রুজু করার জন্য মাত্র অবশিষ্ট এক বৎসর সময় পায়। কিন্তু ৬ ধারা এবং এই ধারা মোতাবেক সে আরও দুই বৎসর অতিরিক্ত সময় পাইবে। অর্থাৎ সাবালক হবার পর তিন বৎসরের ভেতর সে মামলা রুজু করতে পারবে।
(খ) ক উন্মাদ থাকার সময় বংশগত একটি পদ অর্জনের জন্য মামলা করার অধিকার প্রাপ্ত হয়। এটার ৬ বৎসর পর ক সুস্থ হয়। সাধারণ আইন অনুযায়ি ক সুস্থ হবার পর ৬ বৎসরের ভেতর মামলারুজু করতে পারে। ৬ ধারা এই ধারার সহিত মিলাইয়া পড়িতে হবে ও তদানুযায়ি ক-এর মামলা রুজু করার সময় আর বর্ধিত হবে না।
(গ) ক নামক একজন জড়বুদ্ধিসম্পন্ন জমিদার প্রজার কাছে থেকে জমির দখল পুনরুদ্ধারের জন্য মামলা করার অধিকার অর্জন করে। এটার তিন বৎসর পর ক মারা যায় ও মৃত্যুর দিন পর্যন্ত সে জড়বুদ্ধি সম্পন্ন থাকে। সাধারণ আইন অনুযায়ি ক-এর স্বত্বাধিকারি তার মৃত্যুর তারিখ থেকে নয় বৎসরের ভেতর মামলারুজু করতে পারে। ৬ ধারার সহিত এই ধারা মিলাইয়া পড়িতে হবে ও তদানুযায়ি ঐ সময় আর বর্ধিত হবে না; কিন্তু স্বত্বাধিকারি এই অধিকার অর্জনের সময় যদি তার কোন অপারগতা থাকিয়া থাকে, তবে সেক্ষেত্রে এটার ব্যতিক্রম হবে।
তামাদি আইন ধারা ৯ সময়ের অবিরাম চলন
একবার তামাদির সময় অতিবাহিত হওয়া শুরু হলে পরবর্তী কোন অপারগতা কিংবা অক্ষমতার দ্বারা তা বন্ধ হবে না। তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে পাওনাদারের সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেনাদারের উপর অর্পিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে যতদিন তার উপর ঐ দায়িত্ব ন্যস্ত থাকবে ততদিন ঐ দেনার টাকা আদায়ের মামলার সময় অতিবাহিত হওয়া স্থগিত থাকবে।
তামাদি আইন ধারা ১০ প্রকাশ্য ট্রাস্টী ও তাদের এজেন্টবৃন্দের প্রতিকূলে মামলা
এই আইনে ইতিপূর্বে যা বর্ণিত থাকুক না কেন কোন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে যে লোকের উপর সম্পত্তি অছি অর্পিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে কিংবা তার আইনগত এজেন্টের বিরুদ্ধে কিংবা স্বত্বার্পিত লোকের বিরুদ্ধে (মূল্যভিত্তিক দ্রব্যের বিনিময়ে স্বত্বার্পিত না হয়ে থাকলে) তারা কিংবা তাদের হাতের উক্তরূপ সম্পত্তির কিংবা তার আয়ের কিংবা ঐ সম্পত্তির হিসাবের কিংবা এর আয়ের হিসাবের লক্ষ্যে কোন মামলা করতে হলে তারা কখনোও মেয়াদকালের কারণে বারিত হবে না।
এই ধারার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মুসলিম, বৌদ্ধ কিংবা হিন্দু ধর্মীয় কিংবা দাতব্য লক্ষ্যে উৎসর্গীকৃত কোন সম্পত্তি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে ট্রাস্টে ন্যস্ত সম্পত্তি বলে পরিগণিত হবে এবং উক্তরূপ সম্পত্তির ব্যবস্থাপক তার অছি বলে আমলে আসবে।
তামাদি আইন ধারা ১১ বৈদেশিক চুক্তির উপর মামলা
(১) বিদেশে সম্পাদিত চুক্তির উপর বাংলাদেশে যেসব মামলা রুজু করা হয়, সেগুলি এই আইনে বিধৃত তামাদির বিধিসমূহের অধীন।
(২) বিদেশে সম্পাদিত চুক্তির উপর বাংলাদেশে দায়েরকৃত মামলার ক্ষেত্রে বিদেশী কোন আইনে তামাদি বিষয়ক বিধি জবাব স্বরূপ গ্রাহ্য হবে না। তবে যদি সে বিধি অনুযায়ি চুক্তিটির পরিসমাপ্তি ঘটিয়া থাকে ও যদি ঐ বিধি মোতাবেক নির্ধারিত সময়কালে ঐ পক্ষগণ সে দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করে থাকে, সেক্ষেত্রে এটার ব্যতিক্রম হবে।
টপিকস
তামাদি আইন ১৯০৮। তামাদি আইনের প্রকৃতি। তামাদি আইন ধারা ১ - সংক্ষিপ্ত শিরোনাম পরিসীমা ও আরম্ভ। তামাদি আইন দ্বিতীয় অধ্যায়-মামলা আপিল এবং দরখাস্তের তামাদি। তামাদি আইন ধারা ৩ - তামাদির মেয়াদ অন্তে দায়েরকৃত মামলা ইত্যাদি খারিজ। তামাদি আইন ধারা ৪ - আদালত বন্ধ থাকা অবস্থায় যখন তামাদির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তামাদি আইন ধারা ৫ - কতিপয় ক্ষেত্রে মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ। তামাদি আইন ধারা ৬ - বৈধ অপারগতা। উদাহরণ - বৈধ অপারগতা। তামাদি আইন ধারা ৭ - কতিপয় দরখাস্তকারির একজনের অপারগতা। তামাদি আইন ধারা ৮ - বিশেষ ব্যতিক্রম। তামাদি আইন ধারা ৯ - সময়ের অবিরাম চলন। তামাদি আইন ধারা ১০ - প্রকাশ্য ট্রাস্টী ও তাদের এজেন্টবৃন্দের প্রতিকূলে মামলা। তামাদি আইন ধারা ১১ - বৈদেশিক চুক্তির উপর মামলা।