- Get link
- X
- Other Apps
সাক্ষ্য আইন তৃতীয় খন্ড - সাক্ষী উপস্থাপন ও উহার ফল।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০২ প্রমাণের দায়িত্ব যার উপর আরােপিত থাকে।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৩ কোন নির্দিষ্ট ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৪ সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে ঘটনা প্রমাণ করতে হবে তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৫ আসামির মামলা যে ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়ে তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৬ যে ঘটনা বিশেষভাবে কারাে গোচরে থাকে তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৭ ত্রিশ বৎসরের মধ্যে যে ব্যক্তি জীবিত বলে জ্ঞাত আছে তার মৃত্যু প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৮ যে ব্যক্তি সম্পর্কে সাত বৎসর যাবত কোন খবর পাওয়া যায় নি সে জীবিত আছে, তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৯ অংশীদারগণের মধ্যে, জমিদার ও প্রজার মধ্যে, মালিক ও প্রতিনিধির মধ্যে সম্পর্ক প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১০ মালিকানা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১১ যে লেনদেনের ক্ষেত্রে এক পক্ষের সক্রিয় আস্থার সম্পর্ক বিদ্যমান, সে ক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসের প্রমাণ।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১২ বিবাহ স্থির থাকা কালে সন্তানের জন্মই তার বৈধতার চূড়ান্ত প্রমাণ।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১৪ আদালত কতিপয় ঘটনার অস্তিত্ব অনুমান করতে পারবেন।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০২ প্রমাণের দায়িত্ব যার উপর আরােপিত থাকে।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৩ কোন নির্দিষ্ট ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৪ সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে ঘটনা প্রমাণ করতে হবে তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৫ আসামির মামলা যে ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়ে তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৬ যে ঘটনা বিশেষভাবে কারাে গোচরে থাকে তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৭ ত্রিশ বৎসরের মধ্যে যে ব্যক্তি জীবিত বলে জ্ঞাত আছে তার মৃত্যু প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৮ যে ব্যক্তি সম্পর্কে সাত বৎসর যাবত কোন খবর পাওয়া যায় নি সে জীবিত আছে, তা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৯ অংশীদারগণের মধ্যে, জমিদার ও প্রজার মধ্যে, মালিক ও প্রতিনিধির মধ্যে সম্পর্ক প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১০ মালিকানা প্রমাণের দায়িত্ব।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১১ যে লেনদেনের ক্ষেত্রে এক পক্ষের সক্রিয় আস্থার সম্পর্ক বিদ্যমান, সে ক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসের প্রমাণ।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১২ বিবাহ স্থির থাকা কালে সন্তানের জন্মই তার বৈধতার চূড়ান্ত প্রমাণ।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১৪ আদালত কতিপয় ঘটনার অস্তিত্ব অনুমান করতে পারবেন।
Part III -Production and Effect of Evidence
সাক্ষ্য আইন তৃতীয় খন্ড - সাক্ষী উপস্থাপন ও উহার ফল
Chapter VII -Of the Burden of Proof
সাক্ষ্য আইন সপ্তম অধ্যায়-প্রমাণের দায়িত্ব
ধারা ১০১ প্রমাণের দায়িত্ব
কোন ব্যক্তি আদালতে কোন ঘটনার অস্তিত্ব দাবি করে যদি সে ঘটনার অস্তিতের উপর নির্ভরশীল কোন আইনগত অধিকার বা দায় সম্পর্কে আদালতের রায় কামনা করে, তবে সে ঘটনার অস্তিত্ব প্রমাণ অবশ্যই তাকে প্রমাণ করতে হবে। কোন ব্যক্তি যখন কোন ঘটনার অস্থিত্ব প্রমাণ করতে বাধ্য থাকে, তখন বলা হয় যে, ঘটনাটি প্রমাণ করার দয়িত্ব সে ব্যক্তির উপর ন্যাস্ত।
উদাহরণ- প্রমাণের দায়িত্ব
(ক) ক বলে যে, খ একটি অপরাধ করেছে, সে অপরাধের জন্য খ দন্ডিত হবে, এ মর্মে ক আদালতের রায় কামনা করে। খ যে সে অপরাধ করেছে, ক-এর তা অবশই প্রমাণ করতে হবে।
(খ) ক এ মর্মে আদালতের রায় কামনা করে যে, খ-এর দখলভুত কোন একটি জমি ক পাওয়ার অধিকারী। এটা সমর্থনে কতকগুলি ঘটনার অস্তিত্ত্ব দাবি করে এবং খ সে সমস্ত ঘটনার অস্তিত্ব অস্বীকার করে। ঐ সমস্ত ঘটনার অস্ত্বিত্ব অবশ্যই ক-এর প্রমাণ করতে হবে।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০২ প্রমাণের দায়িত্ব যার উপর আরােপিত থাকে
কোন মামলায় বা কার্যক্রমে কোন পক্ষ হতে কোন সাক্ষ্য দেয়া না হলে যে পক্ষ মামলায় হারবে, মামলার বিষয়বস্তু প্রমাণ করার দায়িত্ব সে পক্ষের উপর ন্যস্ত আছে।
উদাহরন -প্রমাণের দায়িত্ব যার উপর আরােপিত থাকে
(ক) ক একটি জমির জন্য খ-এর বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা দায়ের করে । জমিটি খ-এর দখলে আছে। ক দাবি করে যে, খ-এর পিতা গ উইল করে ঐ জমি ক-কে দিয়ে গিয়েছে। এ মামলায় কোন পক্ষ কোন সাক্ষ্য না দিলে খ জমির দখল বাজায় রাখার অধিকারী হবে। সুতরাং এক্ষেত্রে প্রমাণের দায়িত্ব ক-এর উপর ন্যস্ত আছে।
(খ) একটি খত মূলে পাওনা টাকা দাবি করে খ-এর বিরুদ্ধে ক একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করে। খ সংশ্লিষ্ট খত সম্পাদন স্বীকার করে বলে যে, প্রতারণার দরুন উক্ত খত সম্পাদিত হয়েছে। ক তার অস্বীকার করে। কোন পক্ষ যদি কোন সাক্ষ্য না দেয়, তবে ক সম্পর্কে কোন অভিযােগ থাকবে না এবং প্রতারণা প্রমাণ হবে না। ফলে ক মামলায় জিতবে। সুতরাং এক্ষেত্রে প্রমাণের দায়িত্ব খ-এর উপর ন্যাস্ত।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৩ কোন নির্দিষ্ট ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব
যে ব্যক্তি কোন ঘটনার অস্তিত্ব আদালতকে বিশ্বাস করাতে চায়, সে ঘটনার অস্তিত্ব প্রমাণ করার দায়িত্ব সে ব্যক্তির উপর ন্যস্ত। অবশ্য কোন আইন মোতাবেক উক্ত ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব কোন ব্যক্তি বিশেষের উপ ন্যস্ত হয়ে থাকলে তাই কার্যকরী হবে।
উদাহরণ -কোন নির্দিষ্ট ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব
ক চুরির দায়ে খ-কে ফৌজদারিতে সোপর্দ করে। ক আদালতকে বিশ্বাস করাতে চায় যে, খ চুরির কথা গ-এর কাছে স্বীকার করেছে। স্বীকৃতির বিষয় অবশ্যই ক-এর প্রমাণ করতে হবে।
খ আদালতকে বিশ্বাস করাতে চায় যে, সংশ্লিষ্ট সময়ে সে অন্যত্র ছিল। এটা অবশ্যই তার প্রমাণ করতে হবে।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৪ সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে ঘটনা প্রমাণ করতে হবে তা প্রমাণের দায়িত্ব
কোন ব্যক্তি যাতে অন্য কোনো ঘটনার সাক্ষ্য দিতে পারে, তার জন্য যে ঘটনা প্রমাণ করা আবশ্যক, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দিতে ইচ্ছুক তারাই উপর উপরোক্ত ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব ন্যাস্ত।
উদাহরণ- সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে ঘটনা প্রমাণ করতে হবে তা প্রমাণের দায়িত্ব
(ক) খ-এর মৃত্যকালীন ঘোষণা ক প্রমাণ করতে ইচ্ছুক। এক্ষেত্রে খ-এর মৃত্যু অবশ্যই ক-এর প্রমাণ করতে হবে।
(খ) ক একটি হারিয়ে যাওয়া দলিলের বিষয়বস্তু দ্বিতীয় শ্রেণীর সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণ করতে ইচ্ছুক। দলিলটি যে হারিয়ে গেছে তা অবশ্যই ক-এর প্রমাণ করতে হবে।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৫ আসামির মামলা যে ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়ে তা প্রমাণের দায়িত্ব
কোন ব্যক্তি কোন অপরাধে অভিযুক্ত হলে, মামলাটি যাতে দন্ডিবিধিতে বর্ণিত সাধারণ ব্যতিক্রম সমূহের মধ্যে পড়তে পারে, অথবা দন্ডবিধিতে বর্ণিত কোন বিশেষ ব্যতিক্রম বা তার অন্য কোন অংশে বর্ণিত কোন শর্তের মধ্যে পড়তে পারে, বা উক্ত অপরাধ সম্পর্কিত অন্য কোন আইনে বর্ণিত কোন শর্তের মধ্যে পড়তে পারে এরূপ কোন পরিস্থতির অস্তিত্ব প্রমাণ করার দায়িত্ব অভিযুক্ত ব্যক্তির উপর ন্যস্ত থাকে, এবং এরূপ ক্ষেত্রে আদালত অবশ্যই অনুরূপ পরিস্থিতি অনুপস্থিত বলে অনুমান করবেন।
উদাহরণ - আসামির মামলা যে ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়ে তা প্রমাণের দায়িত্ব
(ক) হত্যার দায়ের অভিযুক্ত ক অভিযোগ করে যে, মানসিক অসুস্থতার দরুণ সে তার কৃত কার্যের প্রকৃতি জ্ঞাত ছিল না। এটা প্রমাণের দায়িত্ব ক-এর উপর ন্যস্ত।
(খ) হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ক অভিযোগ করে যে, গুরুতর ও আকস্মিক উস্কানির দরুন সে আত্ম-নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল। এটা প্রমাণের দায়িত্ব ক-এর উপর ন্যস্ত।
(গ) বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩২৫ দারায় বর্ণিত হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি উক্ত বিধির ৩৩৫ ধারায় বর্ণিত অবস্থা ভিন্ন অপরাপর ক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় কাউকেও গুরুতর রূপে জখম করলে আইনে নির্দিষ্ট দন্ডে দন্ডিত হবে। ক দন্ডবিধির ৩২৫ ধারা মোতাবেক গুরতর জখম করার দায়ে অভিযুক্ত হল। মামলটি যে ৩৩৫ ধারায বর্ণিত পরিস্থিতির আওতায় পড়ে, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব ক-এর উপর ন্যস্ত।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৬ যে ঘটনা বিশেষভাবে কারাে গোচরে থাকে তা প্রমাণের দায়িত্ব
কোন ঘটনা যখন বিশেষ কোন ব্যক্তির অবগতির মধ্যে থাকে, তখন সে ঘটনা প্রমাণ করার দায়িত্ব সে ব্যক্তির উপরই ন্যস্ত থাকে।
উদাহরণ -যে ঘটনা বিশেষভাবে কারাে গোচরে থাকে তা প্রমাণের দায়িত্ব
(ক) কোন ব্যক্তি যখন এমন ইচ্ছা প্রণােদিত হয়ে একটি কার্য করে, যে ইচ্ছা উক্ত কার্যের প্রকৃতি ও পরিস্থিতি হতে অনুমিত ইচ্ছা অপক্ষো ভিন্ন, তখন ইচ্ছা প্রমাণের দায়িত্ব সে ব্যক্তির উপর ন্যস্ত থাকে।
(খ) বিনা টিকেটে রেলগাড়ীতে ভ্রমণের দায়ে ক অভিযুক্ত হল। তার কাছে টিকেট ছিল এটা প্রমাণের দায়িত্ব তার উপরই ন্যস্ত।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৭ ত্রিশ বৎসরের মধ্যে যে ব্যক্তি জীবিত বলে জ্ঞাত আছে তার মৃত্যু প্রমাণের দায়িত্ব
যখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ব্যক্তি জীবিত বা মৃত, এবং এটা প্রতীয়মান যে, বিগত ৩০ বৎসরের মধ্যে সে ব্যক্তি জীবিত ছিল, তখন যে ব্যক্তি তাকে মৃত বলে দাবি করে, উক্ত ব্যক্তি যে মৃত তা প্রমাণের দায়িত্ব সে ব্যক্তির উপর ন্যস্ত।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৮ যে ব্যক্তি সম্পর্কে সাত বৎসর যাবত কোন খবর পাওয়া যায় নি সে জীবিত আছে, তা প্রমাণের দায়িত্ব
যখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ব্যক্তি জীবিত বা মৃত, এবং প্রমাণিত হয়েছে যে, সে ব্যক্তি জীবিত থাকলে স্বাভাবিকভাবে যারা তার সংবাদ পেত, তারা সাত বৎসর যাবত তার কোন সংবাদ পায় নেই, তখন সেই ব্যক্তি জীবিত বলে যে দাবি করে, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব তার উপর ন্যস্ত হয়।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৯ অংশীদারগণের মধ্যে, জমিদার ও প্রজার মধ্যে, মালিক ও প্রতিনিধির মধ্যে সম্পর্ক প্রমাণের দায়িত্ব
যখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ব্যক্তিগণ পরস্পর অংশীদার কিনা, অথবা জমিদার ও প্রজা কিনা, অথবা মালিক ও প্রতিনিধি কিনা, এবং প্রতীয়মান হয়েছে যে তারা অনুরূপভাবে কাজ করে আসছে, তখন যে ব্যক্তি দাবি করে যে, উপরোক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনুরূপ সম্পর্ক নেই, অথবা সে সম্পর্কে অবসান হয়েছে, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব সে ব্যক্তির উপর ন্যস্ত হয়।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১০ মালিকানা প্রমাণের দায়িত্ব
যখন প্রশ্ন হচ্ছে, যে ব্যক্তির দখলে কিছু আছে বলে প্রতীয়মান, সে ব্যক্তি তার মালিক কিনা, তখন যে ব্যক্তি দাবি করে যে, দখলকারী ব্যক্তি সে জিনিসের মালিক নয়, সে ব্যক্তির উপরই তা প্রমাণের দায়িত্ব ন্যস্ত হয়।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১১ যে লেনদেনের ক্ষেত্রে এক পক্ষের সক্রিয় আস্থার সম্পর্ক বিদ্যমান, সে ক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসের প্রমাণ
যেক্ষেত্রে দুই পক্ষের মধ্যে এক পক্ষের সাথে অন্য পক্ষের সক্রিয় আস্থার সম্পর্ক বিদ্যমান, সেক্ষেত্রে উক্ত দুই পক্ষের মধ্যে লেনদেননে ব্যাপারে সরল বিশ্বাস সম্পর্কে যদি প্রশ্ন ওঠে, তবে যে পক্ষ সক্রিয় আস্থার দ্বারা সম্পর্কিত সে পক্ষের উপর সরল বিশ্বাস প্রমাণের দায়িত্ব ন্যস্ত হয়।
উদাহরণ - যে লেনদেনের ক্ষেত্রে এক পক্ষের সক্রিয় আস্থার সম্পর্ক বিদ্যমান, সে ক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসের প্রমাণ
(ক) মক্কেল কর্তৃক এডভােকেটের কাছে কিছু বিক্রয়ের ব্যাপারে মক্কেল একটি মামলা দায়ের করে। উক্ত বিক্রযের ক্ষেত্রে সরল বিশ্বাস সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। লেনদেনটিতে সরল বিশ্বাস প্রমাণের দায়িত্ব এডভােকেটের উপর ন্যস্ত।
(খ) সদ্য বয়:প্রাপ্ত পুত্র কর্তৃক পিতার কাছে কিছু বিক্রয়ের ব্যাপারে পুত্র একটি মামলা দায়ের করে। উক্ত বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সরল বিশ্বাস সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। লেনদেনটিতে সরল বিশ্বাস প্রমাণ করার দায়ত্বি পিতার উপর ন্যস্ত।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১২ বিবাহ স্থির থাকা কালে সন্তানের জন্মই তার বৈধতার চূড়ান্ত প্রমাণ
কোন ব্যক্তির মাতার সাথে এক ব্যক্তির আইনত সিদ্ধ বিবাহ কায়েম থাকাকালে, অথবা বিবাহ বিচ্ছেদের পর দুইশত আশি দিনের মধ্যে তার মাতা অবিবাহিতা থাকাকালে যদি তার জন্ম হয়ে থাকে, এবং যদি না প্রতীয়মান হয় যে, ঐ ব্যক্তি যখন মাতৃগর্ভে এসে থাকতে পারে, অনরূপ কোন সময়ে বিবাহিত পক্ষদ্ধয়ের পরসম্পরের মধ্যে মিলণের পথ উন্মুক্ত ছিল না, তবে জন্মের ঘটনা দ্বারা অবশ্যই চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হবে যে, সে তার মাতার সাথে বিবাহিত উক্ত ব্যক্তির বৈধ সন্তান।
সাক্ষ্য আইন ধারা ১১৪ আদালত কতিপয় ঘটনার অস্তিত্ব অনুমান করতে পারবেন
স্বাভাবিক ঘটনাবলীর সাধারণ গতিধারা, মানবিক আচরণ এবং সরকারি ও বেসরকারি কার্যাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিশেষ মামলার ঘটনা বিবেচনা করে যা ঘটে থাকা সম্ভব বলে আদালত মনে করেন, সে ঘটনার অস্তিত্ব আদালত অনুমান করে নিতে পারবেন।
উদাহরণ - আদালত কতিপয় ঘটনার অস্তিত্ব অনুমান করতে পারবেন
আদালত অনুমান করতে পারেন যে,
(ক) চুরির অব্যবহিত পরই চোরাই মাল যে ব্যক্তির দখলে থাকে, সে যদি তার দখলের কারণ দর্শাতে না পারে, তবে সে ব্যক্তি চোর অথবা চোরাই মাল বলে জানা সত্ত্বেও সে তা গ্রহণ করেছে;
(খ) সাহযোগীর বিবৃতি যদি প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সহ সমর্থিত না হয়, তবে তা বিশ্বাসের অযোগ্য;
(গ) স্বীকৃত বা পৃষ্ঠাঙ্কিত বরাত চিঠি উপযুক্ত প্রতিদানের বিনিময়ে স্বীকৃত বা পৃষ্ঠাঙ্কিত হয়েছে;
(ঘ) যে জিনিস বা জিনিসে যে অবস্থা সাধারণত যে সময়ের পর আর বিদ্যমান থাকে না, তদপেক্ষা কম সময়ের মধ্যে সে জিনিস বা জিনিসের সে অবস্থা বিদ্যমান বলে দেখান হয়ে থাকলে, তা বিদ্যমান আছে;
(ঙ) বিচার বিষয়ক ও সরকারি কার্যবলী নিয়মিভাবে সম্পন্ন হয়েছে;
(চ) নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কার্যের সাধারণ রীতি-নীতি অনুসরণ করা হয়েছে;
(ছ) যে সাক্ষ্য উপস্থপন করতে পারা যেতে, কিন্তু উপস্থাপন করা হয় নাই, তা হাজির হলে যে ব্যক্তি হাজির হতে দেয় না, তার বিপক্ষে যেত;
(জ) কোন ব্যক্তি আইনত যে প্রশ্নে উত্তর দিতে বাধ্য নয়, সে প্রশ্নের উত্তর দিতে সে অস্বীকার করলে, তার উত্তর সে ব্যক্তির প্রতিকূলে যেত;
(ঝ) যে দলিল দ্বারা একজনের কাছে আরেকজনের দায় সৃষ্টি হয়, সে দলিল যদি যার দায় সৃষ্টি হয় তার হাতে থাকে, তবে দায়ের অবসান ঘটেছে;
কিন্তু সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উপরে বর্ণিত সুত্রসমূহ প্রযোজ্য হবে কিনা, তার বিচার করার সময় নিম্নলিখিত ধরনের ঘটনাগুলিও অবশ্যই বিবেচনা করবেন, যথা-
উদাহরণ (ক) এর ক্ষেত্রে-
চিহ্নিত একটি টাকা চুরি হবার অব্যবহিত পর জনৈক দোকানদারের বাক্সে ঐ টাকা পাওয়া গেল । দোকানদার ঐ নির্দিষ্ট টাকা প্রাপ্তির সঠিক হেতু প্রদর্শন করতে পারলনা। কিন্তু তার ব্যবসা প্রসঙ্গে সর্বদাই সে টাকা পাচ্ছে।
উদাহরণ (খ)-এর ক্ষেত্রে-
ক সর্বোচ্চ চরিত্রের অধিকারী একজন লোক। বিশেষ এটি যন্ত্রের ব্যবস্থাপনায় অবহেলার দ্বারা এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটানোর দায়ে তার বিচার হচ্ছে। খ-ও অনুরূপ চরিত্রবান লোক এবং সেও উক্ত ব্যবস্থাপনায় অংশ গ্রহণ করেছিল। সে ঘটনার সঠিক বর্ণনা দিল এবং তার নিজের ও ক-এর সাধারণ অসাবধানতার কথা স্বীকার করল।
উদাহরন (খ)-এর ক্ষেত্রে-
কতিপয় ব্যক্তির দ্বারা একটি অপরাধ সংঘটিত হল। ক,খ ও গ এ তিনজন অপরাধীকে ঘটনাস্থলেই গ্রেফতার করে তাদেরকে পরস্পর হতে বিছিন্ন অবস্থায় আটক রাখা হল। তাদের প্রত্যেকেই খ-কে জড়িত করে ঘটনার বিবরন দান করল। বিবৃতিগুলিতে পরস্পরের বক্তব্যের এরূপ সমর্থন পাওয়া গেল, যাতে কোনরূপ পূর্ব-পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অসম্ভব প্রতীয়মান হয়।
উদাহরণ (গ) এর ক্ষেত্রে-
একটি বরাত চিঠির প্রণেতা ক একজন ব্যবসায়ী। বরাত চিঠিখানার স্বীকৃতিদাতা খ একজন অজ্ঞ যুবক এবং সে সম্পূর্ণরূপে ক-এর প্রভাবাধীন।
উদাহরণ (ঘ) এর ক্ষেত্রে-
প্রমাণিত হল যে, একটি নদী পাঁচ বৎসর পূর্বে একটি নির্দিষ্ট গতিপথে প্রবাহিত ছিল। কিন্ত এটাও জানা যায় যে, উক্ত সময়ের পর বন্যা হয়েছে, যার ফলে নদীটির গতিপথে পরিবর্তন হয়ে থাকতে পারে।
উদাহরণ (ঙ) এর ক্ষেত্রে-
বিচার বিষয়ক যে কার্যটি নিয়মিত ভাবে সম্পন্ন হওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে, তা ব্যতিক্রমজনিত পরিস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে।
উদাহরন (চ) এর ক্ষেত্রে-
প্রশ্ন হল, একটি চিঠি পাওয়া গিয়েছে। কিন্ত গােলযােগের দরুন স্বাভাবিক ডাক চলাচল ব্যাহত হয়েছিল।
উদাহরণ (ছ) এর ক্ষেত্রে-
সামান্য গুরত্ব সম্পন্ন একটি চুক্তির ব্যাপারে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা দায়ের হয়েছে। ঐ চুক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট একটি দলিল উপস্থাপন করতে সে ব্যক্তি অস্বীকার করেন। কিন্তু দলিলটি উপস্থাপন করলে তদদ্বারা তার পারিবারিক মনােভাব ও খ্যাতি ক্ষুন্ন হতে পারত।
উদাহরণ (জ) এর ক্ষেত্রে-
এক ব্যক্তি যে প্রশ্নের উত্তর দিতে আইনত বাধ্য নয়, সে প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করল। যে বিষয় প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, তা ব্যতীত অপর ব্যাপারে এ প্রশ্নের উত্তর দ্বারা তার ক্ষতি হতে পারত।
উদাহরণ (ঝ)-এর ক্ষেত্রে-
একটি মুচলেকা দ্বারা যার দায় সৃষ্টি হয়েছে মুচলেকাটি তার দখলে আছে, কিন্তু মামলার পরিস্থিতি এরূপ যে, সে তা চুরি করে থাকতে পারে।
টপিকস
সাক্ষ্য আইন তৃতীয় খন্ড - সাক্ষী উপস্থাপন ও উহার ফল। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০২ প্রমাণের দায়িত্ব যার উপর আরােপিত থাকে। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৩ কোন নির্দিষ্ট ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৪ সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে ঘটনা প্রমাণ করতে হবে তা প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৫ আসামির মামলা যে ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়ে তা প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৬ যে ঘটনা বিশেষভাবে কারাে গোচরে থাকে তা প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৭ ত্রিশ বৎসরের মধ্যে যে ব্যক্তি জীবিত বলে জ্ঞাত আছে তার মৃত্যু প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৮ যে ব্যক্তি সম্পর্কে সাত বৎসর যাবত কোন খবর পাওয়া যায় নি সে জীবিত আছে, তা প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১০৯ অংশীদারগণের মধ্যে, জমিদার ও প্রজার মধ্যে, মালিক ও প্রতিনিধির মধ্যে সম্পর্ক প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১১০ মালিকানা প্রমাণের দায়িত্ব। সাক্ষ্য আইন ধারা ১১১ যে লেনদেনের ক্ষেত্রে এক পক্ষের সক্রিয় আস্থার সম্পর্ক বিদ্যমান, সে ক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসের প্রমাণ। সাক্ষ্য আইন ধারা ১১২ বিবাহ স্থির থাকা কালে সন্তানের জন্মই তার বৈধতার চূড়ান্ত প্রমাণ। সাক্ষ্য আইন ধারা ১১৪ আদালত কতিপয় ঘটনার অস্তিত্ব অনুমান করতে পারবেন।