- Get link
- X
- Other Apps
part 5 information to the police and their powers to investigate
পুলিশকে দেওয়া সংবাদ এবং তদন্ত করতে তাদের ক্ষমতা
Chapter 14
চতুর্দশ অধ্যায়
ধারা ১৫৪ আমলযােগ্য মামলার ক্ষেত্রে সংবাদ/এজাহার
আমলযােগ্য অপরাধ সংঘটন সম্পর্কিত প্রত্যেক সংবাদ, যদি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের কাছে, মৌখিকভাবে দেওয়া হয়, তবে তা উক্ত অফিসার কর্তৃক বা তাঁর নির্দেশে লিখিত আকারে রূপান্তরিত হবে এবং সংবাদ দাতাকে উহা পড়িয়া শুনাইতে হবে, এবং লিখিতভাবে প্রদত্ত বা উক্তরূপে লিপিবদ্ধ প্রত্যেকটি সংবাদে সংবাদদাতা স্বাক্ষর করবেন, এবং উহার সারমর্ম উক্ত অফিসার কর্তৃক সরকারের নির্ধারিত ফরম মােতাবেক রক্ষিত একটি বহিতে নথিভুক্ত করতে হবে।
আলােচনা ও প্রয়ােগ
এজাহার বা প্রাথমিক তথ্য বিবরণী বা F. I. R কি (What is F.I.R?)
এজাহারের সংজ্ঞা সম্পর্কে ফৌজদারি কার্যবিধিতে উল্লেখ নেই। থানায় কোন অপরাধ সম্পর্কে প্রথম যে সংবাদ পাওয়া যায় তা এজাহার নামে পরিচিত। সময়ের দিক দিয়ে এ বিবরণটা প্রথম দেয়া হয় বলে প্রাথমিক তথ্য বিবরণী বলা হয়। (The First information report is the earliest information of an offence.) পুলিশ রেগুলেশনের নিয়ম-২৩৪ অনুসারে উক্ত তথ্য রেকর্ডকৃত এ প্রাথমিক তথ্য বিবরণীকেও এজাহার হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। অর্থাৎ থানায় কোন আমলযােগ্য অপরাধ সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে যে খবর দেয়া হয় তাই এজাহার বা প্রাথমিক তথ্য বিবরণী। এজাহারের ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট অপরাধটির ইনকোয়ারী শুরু হয়। এজাহার সম্পর্কে ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা-১৫৪ এ বিধান রাখা হয়েছে।
ধারা ১৫৫ অ-আমলযােগ্য ঘটনাগুলির সংবাদ
(১) যেক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের কাছে থানার চৌহদ্দীর মধ্যে ঘটা কোন একটি অআমলযােগ্য অপরাধের সংবাদ দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে উক্ত চৌহদ্দীর মধ্যে অআমলযােগ্য অপরাধ সংঘটনের সংবাদ যখন দেওয়া হয়, তখন তিনি সেই সংবাদের মর্মার্থ এই উদ্দেশ্যে সরকার যেইরূপ নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন সেইরূপ ফরমে তার কাছে রক্ষিত বইতে নথিভুক্ত করবেন বা করাবেন, এবং সংবাদদাতাকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দিবেন।
২) অ-আমলযােগ্য মােকদ্দমার তদন্ত
কোন পুলিশ অফিসার প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়া কোন অআমলযােগ্য ঘটনা তদন্ত করবেন না যে ম্যাজিস্ট্রেট ঐ ঘটনা বিচার করতে বা বিচারের জন্য সােপর্দ করতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ।
৩) এইরূপ আদেশ পুলিশ অফিসার পেলে তদন্ত সম্পর্কে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার আমলযােগ্য ঘটনায় যেইরূপ ক্ষমতাদি প্রয়ােগ করতে পারেন সেইরূপ একই ক্ষমতা (ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতারকরার ক্ষমতা বাদ দিয়া) প্রয়ােগ করতে পারেন।
ধারা ১৫৬ আমলযােগ্য মামলার তদন্ত
(১) থানার যেকোন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়াই, এমন যে কোন আমলযােগ্য ঘটনা তদন্ত করতে পারেন যা ঐ থানার চৌহদ্দীর মধ্যে স্থানীয় এলাকার উপর অধিক্ষেত্রে থাকা কোন আদালত পঞ্চদশ অধ্যায়ের বিধানাদির আওতায় অনুসন্ধান বা বিচার করতে পারতেন।
২) ঐরূপ কোন মামলায় পুলিশ অফিসারের এইরূপ কার্যক্রম সম্পর্কে কোন ধাপেই এই কারণে প্রশ্ন তােলা যাবে না যে, ঘটনাটি এইরূপ একটি ঘটনা যে তা তদন্ত করতে উক্ত অফিসার অত্র ধারার আওতায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন না।
৩) ১৯০ ধারার আওতায় ক্ষমতাসম্পন্ন যে কোন ম্যাজিস্ট্রেট উপরে যেইরূপ বলা হয়েছে সেইরূপ একটি তদন্ত করতে আদেশ দিতে পারেন।
ধারা ১৫৭ আমলযােগ্য অপরাধ বিষয়ে সন্দেহের ক্ষেত্রে পদ্ধতি
(১) যদি, সংবাদ পাইয়া বা অন্য কোনভাবে, থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ধারা-১৫৬ এর আওতায় যে অপরাধ তদন্ত করতে তিনি ক্ষমতাপ্রাপ্ত সেইরূপ একটি অপরাধ ঘটিয়াছে বলে সন্দেহ করার কারণ পান, তবে তিনি অবিলম্বে এইরূপ একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে উহা জানাইবেন, যিনি পুলিশ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উক্ত অপরাধ আমলে লইবার ক্ষমতাসম্পন্ন এবং ঘটনা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে তদন্ত এবং প্রয়ােজন হলে অপরাধীকে খুঁজিয়া বাহির করে গ্রেফতার করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগতভাবে নিজে ঘটনাস্থলে রওয়ানা হবেন, অথবা তার কোন অধঃস্তন অফিসারকে যিনি সরকার কর্তৃক এই সম্পর্কে সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত পদ অপেক্ষা নিম্নপদস্থ নয় এই উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে যাওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করবেন। তবে শর্ত থাকে যে,
যেক্ষেত্রে সরেজমিনে তদন্ত নিষ্প্রয়ােজন
ক) যখন এইরূপ কোন অপরাধ ঘটার বিষয়ে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নাম জানাইয়া সংবাদ দেওয়া হয় এবং ঘটনাটি যদি মারাত্মক চরিত্রের না হয়, তখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে নিজে রওনা হওয়া নিষ্প্রয়ােজন বা সে উদ্দেশ্যে একজন অধঃস্তন কর্মকর্তাকে তার নিয়ােগ করা নিষ্প্রয়ােজন।
যেক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার তদন্তের যথাযথ কারণ দেখেন না
খ) থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের কাছে যদি ইহা প্রতীয়মান হয় যে, তদন্তে লিপ্ত হওয়ার যথাযথ কোন কারণ নাই, তবে তিনি ঘটনাটি তদন্ত করবেন না।
২) উপ-ধারা (১) এর প্রতিবন্ধের (ক) ও (খ) উপাংশে বলা প্রত্যেক ক্ষেত্রে, থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ঐ উপ-ধারার আদেশ পুরােপুরি মান্য না করার কারণ তাঁর প্রতিবেদনে উল্লেখ করবেন, এবং উক্ত প্রতিবন্ধের (খ) উপাংশের ক্ষেত্রে, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার যেইরূপ নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন, সেইরূপ পদ্ধতিতে অবিলম্বে সংবাদদাতাকে, যদি কেউ থাকেন, জানাবেন যে, ঐ ঘটনাটি তিনি তদন্ত করবেন না বা করাবেন না।
ধারা ১৫৮ ধারা-১৫৭ এর আওতায় কিভাবে প্রতিবেদন পেশ করা হয়
(১) ধারা-১৫৭ এর আওতায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানাে প্রত্যেকটি প্রতিবেদন যদি সরকার সেইরূপ নির্দেশ দেন, পুলিশের এইরূপ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মাধ্যমে পেশ করতে হবে যেইরূপ সরকার, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দিয়া, এই উদ্দেশ্যে নিযুক্ত করেন।
২) সেই উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা যেইরূপ যথাযথ বিবেচনা করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সেইরূপ নির্দেশাদি নথিভুক্তকরার পর বিলম্ব না করে তা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠিয়ে দিবেন।
ধারা ১৫৯ তদন্ত বা প্রাথমিক অনুসন্ধান করতে ক্ষমতা
উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ঐ প্রতিবেদন পাওয়ার পর তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন, অথবা, তিনি যদি যথাযথ মনে করেন, বা বিধিতে বিধৃত পদ্ধতিতে ঘটনাটির প্রাথমিক অনুসন্ধান, বা অন্য কোন ভাবে তা নিষ্পত্তি করতে তৎক্ষণাৎ অগ্রসর হতে পারেন অথবা তার অধঃস্তন কোন ম্যাজিস্ট্রেটকে ঐ উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়ার জন্য নিযুক্ত করতে পারেন।
ধারা ১৬০ সাক্ষীগণের হাজিরা নিশ্চিত করতে পুলিশ অফিসারের ক্ষমতা
এই অধ্যায়ের আওতায় তদন্তকারি যে কোন পুলিশ অফিসার, লিখিতভাবে আদেশ দিয়া, তাঁর থানার বা সংলগ্ন যে কোন থানার চৌহদ্দির মধ্যে থাকা এমন যে কোন ব্যক্তিকে তাঁর কাছে হাজির হতে বলতে পারেন যে ব্যক্তি তদন্তাধীন ঘটনার তথ্য এবং পরিস্থিতির বিষয়ে পরিচিত বলে, প্রদত্ত সংবাদ মারফত বা অন্য কোনভাবে প্রতীয়মান হয়, এবং ঐ ব্যক্তি যেইরূপে চাওয়া হয়, সেইরূপে হাজির হবেন।
ধারা ১৬১ পুলিশ কর্তৃক সাক্ষীগণের পরীক্ষা
(১) এই অধ্যায়ের আওতায় তদন্তকারি যেকোন পুলিশ অফিসার বা সরকারের সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা এই সম্পর্কে নির্ধারিত পদ অপেক্ষা নিম্নপদস্থ নয় এইরূপ পুলিশ অফিসার, তদন্তাধীন ঘটনার তথ্য ও পরিস্থিতির সাথে পরিচিতি বলে অনুমান করা যে কোন ব্যক্তির মৌখিকভাবে পরীক্ষা নিতে পারেন।
২) যে সকল প্রশ্নের উত্তরগুলি সেইরূপ ব্যক্তিকে ফৌজদারি দোষারােপে বা দণ্ডে বা বাজেয়াপ্ত করে তােলার প্রয়াস পাইয়া থাকিত সেই সকল প্রশ্ন বাদ দিলে সেইরূপ ব্যক্তি তদন্তাধীন ঘটনা সংক্রান্ত উক্ত পুলিশ অফিসারের করা সকল প্রশ্নের সত্য উত্তর দিতে বাধ্য থাকবে।
৩) উক্ত পুলিশ অফিসার এই ধারার আওতায় সাক্ষ্য গ্রহণকালে তাঁর কাছে রাখা যে কোন বক্তব্য লিখিয়া নিতে পারেন, এবং তিনি যদি তাই করেন তবে যার বক্তব্য তিনি নথিভুক্ত করেন সেইরূপ প্রত্যেক ব্যক্তির বক্তব্যের একটি পৃথক ও সত্য নথি তৈরী করবেন।
ধারা ১৬২ পুলিশের কাছে দেওয়া বিবৃতি/জবানবন্দী স্বাক্ষর করতে হবে না, সাক্ষ্যে জবানবন্দীর ব্যবহার
(১) এই অধ্যায়ের আওতায় পরিচালিত তদন্তের সময় কোন ব্যক্তি পুলিশ অফিসারের কাছে বিবৃতি/জবানবন্দি প্রদান করলে তা লিখিয়া নিলে জবানবন্দী (বিবৃতি) দানকারি ব্যক্তির স্বাক্ষর করে রাখতে হবে না; বা ঐরূপ কোন জবানবন্দী বা তার কোন নথি, তা পুলিশ ডাইরীতেই থাকুক বা অন্য কোথাও থাকুক ঐরূপ জবানবন্দী বা নথির কোন অংশ (অতঃপর বিস্তৃত ক্ষেত্র বাদ দিয়ে), যে সময়ে সেই জবানবন্দী দেওয়া হয়েছিল সেই সময় তদন্তাধীন কোন অপরাধ সম্পর্কে কোন অনুসন্ধান বা বিচারে কোন প্রয়ােজনেই ব্যবহৃত হবে না।
তবে শর্ত এই যে, যে ব্যক্তির বিবৃতি উক্তরূপে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, তাকে উক্ত তদন্ত বা বিচারে বাদী পক্ষের সাক্ষী মর্মে ডাকা হবে। আসামির অনুরােধক্রমে আদালত উক্ত লিপি তলব করবেন এবং বিবৃতির কোন অংশ যদি সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়, তবে উহা যাতে সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ধারা-১৪৫ এ উল্লেখিত পদ্ধতি মােতাবেক উক্ত সাক্ষীর কথার বৈপরীত্য প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, তার জন্য উক্ত লিপির একটি নকল আসামিকে প্রদানের নির্দেশ দিবেন। যদি এইরূপ বিবৃতির কোন অংশ উক্তরূপে ব্যবহার করা হয়, তবে উহার কোন অংশ উক্ত সাক্ষীর জেরার পরবর্তী জবানবন্দীর সময়েও ব্যবহৃত হতে পারে, তবে এই ব্যবহার শুধু তার জেরায় বর্ণিত কোন বিষয়ের ব্যাখ্যার জন্যই করা যেতে পারে। তবে আরও শর্ত এই যে, আদালত যদি মনে করেন যে, উক্ত বিবৃতির কোন অংশ তদন্ত বা বিচারের বিষয় বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট নহে, এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে আসামির নিকট উহা প্রকাশ করা অত্যাবশ্যক নহে, এবং উহা জনস্বার্থের পরিপন্থী, তবে আদালত এইরূপ অভিমত (কিন্তু ইহার কারণ নহে) নথিবদ্ধ করবেন এবং আসামিকে প্রদত্ত বিবৃতির নকল থেকে উক্ত অংশ বাদ দিবেন।
২) অত্র ধারার কোন বিধান সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ধারা-৩২(১) এর অন্তর্ভূক্ত কোন বিবৃতির প্রতি প্রযােজ্য হবে না বা উক্ত আইনের ধারা-২৭ এর বিধানকে ব্যহত করবে মর্মে পরিগণিত করা যাবে না।
ধারা ১৬৩ কোন প্রলােভন দেখান যাবে না
১) পুলিশ অফিসার বা অন্য কর্তৃত্ব সম্পন্ন ব্যক্তি সাক্ষ্য আইন-১৮৭২ এর ধারা-২৪ এ উল্লেখিত কোন প্রকার প্রলােভন, হুমকি প্রতিশ্রুতি দিবেন না বা দেওয়াইবেন না।
২) অত্র অধ্যায়ের আওতায় তদন্ত সময় কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন বিবৃতি প্রদান দিতে চাহিলে পুলিশ অফিসার বা অন্য কেউ তাকে সতর্কতার মাধ্যমে বা অন্য কোনভাবে বারণ করবেন না।
ধারা ১৬৪ স্বীকারােক্তি এবং জবানবন্দীর নথিভুক্তিকরণ
১) যেকোন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম শ্রেণী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ অফিসার নন এমন, সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট অত্র অধ্যায় বা বর্তমানে চালু অন্য কোন আইনের আওতায় তদন্ত চলাকালীন, অথবা অনুসন্ধান বা বিচার আরম্ভ হওয়ার আগে, পরবর্তী যে কোন সময়ে তাঁর কাছে দেওয়া যে কোন স্বীকারােক্তি বা জবানবন্দী নথিভুক্ত করতে পারবেন।
২) সাক্ষ্য নথিবদ্ধের লক্ষ্যে অতঃপর যেই সকল পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে উহার মধ্যে যেই পদ্ধতিকে তিনি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক মর্মে মনে করেন, সেই পদ্ধতিতে তিনি বিবৃতি নথিবদ্ধ করবেন। অত্র স্বীকারােক্তি ধারা-৩৬৪ এ নথিবদ্ধ ও স্বাক্ষরিত হবে; এবং অতপর যেই ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা সম্পর্কে তদন্ত বা বিচার করবেন, এইরূপ নথিবদ্ধ বিবৃতি বা স্বীকারােক্তি তার নিকট করতে হবে।
৩) স্বীকারােক্তি নথিবদ্ধের আগে পূর্বে ম্যাজিস্ট্রেট স্বীকারােক্তিকারিকে বুঝাইয়া দিবেন যে, তিনি স্বীকারােক্তি করতে বাধ্য নয় এবং তিনি উহা করলে তার বিরুদ্ধে উহা সাক্ষ্য পারে; এবং স্বীকারােক্তিকারিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইহা স্বেচ্ছামূলকভাবে করা হতে বলে যুক্তিসংগতভাবে বিশ্বাস না করা পর্যন্ত কোন ম্যাজিস্ট্রেট কোন স্বীকরােক্তি নথিবদ্ধ করবেন না; এবং তিনি কোন স্বীকারােক্তি নথিবদ্ধ করলে উক্ত লিপির নিম্নদেশে নিন্মােক্ত মর্মে একটি স্মারক মন্তব্য নথিবদ্ধ করবেনঃ
‘আমি (....নাম...) কে বুঝাইয়া দিয়াছি যে, তিনি স্বীকারােক্তি দিতে বাধ্য নয় এবং তবুও, যদি তিনি উহা করেন, তবে স্বীকারােক্তি যা সে দিতে পারে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে এবং আমি বিশ্বাস করি যে, এই স্বীকারােক্তি স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়েছিল। এই স্বীকারােক্তিনামা আমার উপস্থিতি ও শুনানীতে নেওয়া হয়েছে, এবং স্বীকারােক্তি দানকারিকে তা পড়িয়া শুনানাে হয়েছে এবং সে তা সঠিক মর্মে স্বীকার করেছে, এবং তার প্রদানকৃত জবানবন্দীর এটি সম্পূর্ণ ও সত্য বিবরণ।
(স্বাক্ষর) ক, খ,
ম্যাজিস্ট্রেট
ব্যাখ্যা - দোষ স্বীকারােক্তি বা বিবৃতি গ্রহণ বা নথিবদ্ধ যে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে হবে, তার সংশ্লিষ্ট মােকদ্দমার এখতিয়ার থাকা নিষ্প্রয়ােজন।
ধারা ১৬৫ পুলিশ অফিসার কর্তৃক তল্লাশি
১) যখনই থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার বা পুলিশ অফিসারের এইরূপ বিশ্বাস করার যথাযথ কারণ থাকে যে, যে অপরাধ তদন্ত করতে তিনি ক্ষমতাপ্রাপ্ত সেইরূপ কোন অপরাধের তদন্তের কারণে প্রয়ােজনীয় কোন জিনিস তা তিনি যে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা যে থানার সাথে যুক্ত আছেন সেই থানার চৌহদ্দির মধ্যে কোন স্থানে পাওয়া যেতে পারে; এবং সেইরূপ জিনিস তাঁর মতে অযথা দেরী করা ছাড়া অন্য কোনভাবে সংগ্রহ করতে পারা যাবে না, তখন সেই পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর বিশ্বাসের কারণ নথিভুক্ত করার পর এবং, যতদূর সম্ভব যে জিনিসের জন্য তল্লাশি করতে হবে তা তাতে উল্লেখ করে, ঐ থানার চৌহদ্দীর মধ্যে যেকোন স্থানে উক্ত জিনিসের জন্য, তল্লাশি করতে পারেন, অথবা তল্লাশি করাতে পারেন। তবে শর্ত এই যে, যেইসব বস্তু ব্যাংকারস্ বুকস এভিডেন্স এ্যাক্ট ১৮৯১ (১৮৯১ সালের ১৮ নম্বর আইন) এর সংজ্ঞা মােতাবেক ব্যাংক বা ব্যাংকারের হেফাজতে আছে এমন কোন জিনিস এবং কোন ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টের সাথে যুক্ত কোন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে এইরুপ নিম্নোক্ত ক্ষেত্র ব্যতিত তল্লাশি করবেন না বা করাবেন না-
ক) সেশন জজের লিখিত পূর্বানুমতি নিয়া দণ্ডবিধি (১৮৬০ সনের ৪৫নং আইন) এর ধারা-৪০৩, ৪০৬, ৪০৮ এবং ৪০৯ এবং ধারা-৪২১ থেকে ধারা-৪২৪ (উভয়েই অন্তর্ভুক্ত) এবং ধারা-৪৬৫ থেকে ধারা-৪৭৭ (উভয়ই অন্তর্ভুক্ত) মােতাবেক কোন অপরাধের তদন্ত করার জন্য; এবং
খ) অন্যান্য ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগ এর লিখিত পূর্বানুমতি নিয়া।
২) পুলিশ অফিসার উপ-ধারা (১) এর আওতায় অগ্রসর হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা, যদি বাস্তবসম্মত হয়, তল্লাশিটি নিজে পরিচালনা করবেন।
৩) তিনি নিজে তল্লাশি পরিচালনা করতে অসমর্থ হলে এবং তল্লাশিটি করতে উপযুক্ত অন্য কোন ব্যক্তি সে সময় উপস্থিত না থাকিলে তিনি উহার কারণ নথিবদ্ধ করার পর, তার অধঃস্তন কোন অফিসারকে তল্লাশি করতে আদেশ করতে পারেন, এবং তিনি, যে স্থানটি তল্লাশি করতে হবে তা, এবং, যতদূর সম্ভব, যে জিনিসের তল্লাশি করতে হবে, তা উল্লেখ করে, উক্ত অধঃস্তন অফিসারকে একটি লিখিত আদেশ অর্পণ করবেন; এবং তখন উক্ত অধঃস্তন অফিসার এইরূপ জিনিসের জন্য ঐ স্থানে তল্লাশি করতে পারেন।
৪) তল্লাশি ওয়ারেন্ট সম্পর্কে এই বিধির বিধানাদি এবং ধারা-১০২ ও ধারা-১০৩ এ উল্লেখিত তল্লাশি সম্পর্কিত সাধারণ বিধানসমূহ, এই ধারার আওতায় তল্লাশি ক্ষেত্রে, যতদূর হতে পারে, প্রযােজ্য হবে।
৫) উপরিউক্ত (১) উপ-ধারা বা (৩) উপ-ধারার আওতায় প্রণীত দলিলের কোন নকল অবিলম্বে উক্ত অপরাধ আমলে নেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠাতে হবে এবং তল্লাশিকৃত স্থানের মালিক বা দখলকার আবেদন করলে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট তাকে উহার উপর নকল প্রদান করবেন। তবে শর্ত এই যে, যদি ম্যাজিস্ট্রেট কোন বিশেষ কারণবশতঃ বিনামূল্যে উহা সরবরাহ না করে, তাহলে তাকে উহার জন্য মূল্য দিতে হবে।
ধারা ১৬৬ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কখন অন্য কাউকে তল্লাশি পরােয়ানা জারি করতে অনুরােধ করতে পারেন
১) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা সাব ইন্সপেক্টর পদের নিম্ন পদস্থ নহে এইরূপ তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তা অন্য থানার, তা একই জেলায় হােক বা ভিন্ন জেলায় হােক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে যে কোন স্থানে এইরূপ যে কোন ক্ষেত্রে তল্লাশি করতে বলতে পারেন যেইরূপ ক্ষেত্রে পূর্বোক্ত পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর নিজ থানার চৌহদ্দীর মধ্যে তল্লাশি করতে পারতেন।
২) উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা এইরূপ অনুরােধ পেলে, ধারা-১৬৫ এর বিধানাদি মােতাবেক অগ্রসর হবেন, এবং কোন জিনিস পাওয়া গেলে তা যার অনুরােধে ঐ তল্লাশি করা হয়েছিল সেই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দিবেন।
৩) যেক্ষেত্রে এইরূপ বিশ্বাসকরার কারণ থাকে যে, (১) উপ-ধারা মােতাবেক অন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তল্লাশি করতে অনুরােধ করার ফলে উদ্ভূত বিলম্বে অপরাধ সংঘটনের সাক্ষ্য-প্রমাণ গােপন বা বিনষ্ট করা হতে পারে, সেক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অত্র অধ্যায়ের আওতায় তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে ধারা-১৬৫ মােতাবেক অন্য থানার চৌহদ্দীর মধ্যে যে কোন স্থানে তল্লাশি করা, বা তল্লাশি করানাে তার নিজের থানার অর্ন্তভুক্ত কোন স্থানের ন্যায় গণ্য মর্মে তল্লাশি করা আইনানুগ হবে।
৪) উপ-ধারা (৩) এর আওতায় তল্লাশি পরিচালনাকারি যে কোন পুলিশ কর্মকর্তা অবিলম্বে সেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তল্লাশিটির বিষয়ে নােটিশ দিবেন যে থানার চৌহদ্দীর মধ্যে ঐ স্থানটি অবস্থিত, এবং সেই নােটিশের সাথে ধারা-১০৩ এর আওতায় তৈরী তালিকার (যদি কিছু থাকে) একটি নকলও পাঠাবেন, এবং অপরাধটি বিচারার্থ গ্রহণ করতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের ধারা-১৬৫(১) ও (৩) উপ-ধারায় বর্ণিত নথিগুলির নকলগুলি পাঠাবেন।
৫) যদি তল্লাশিকৃত স্থানের মালিক বা দখলকার আবেদন করে, তাহলে তাকে উপধারা (৪) এর আওতায় ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর প্রেরিত দলিলের নকল দিতে হবে। তবে শর্ত এই যে, যদি ম্যাজিস্ট্রেট কোন বিশেষ কারণবশতঃ বিনামূল্যে উহা সরবরাহ না করেন, তাহলে তাকে উহার জন্য মূল্য দিতে হবে।
ধারা ১৬৭ চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করা না গেলে তখনকার পদ্ধতি
১) যখনই কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হেফাজতে আটক রাখা হয় এবং প্রতীয়মান হয় যে, ৬১ ধারায় নির্ধারিত চব্বিশ ঘন্টা সময়ের মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করা যাবে না এবং এইরূপ বিশ্বাসকরার কারণ রহিয়াছে যে, অভিযােগ বা সংবাদ দৃঢ়ভিত্তিক, তা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার বা তদন্তকারি পুলিশ অফিসার, তিনি যদি সাব-ইন্সপেক্টর পদের নিম্ন পদস্থ না হন, অবিলম্বে অতঃপর নির্ধারিত ডায়রীতে লিখিত ঘটনা সম্পর্কিত তথ্যের নকলসহ আসামিকে নিকটতম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করবেন।
২) এই ধারা অনুসারে আসামিকে যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করা হবে, তার সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারকরার অধিক্ষেত্রে থাকুক বা না থাকুক, তিনি তার বিবেচনামত আসামিকে উক্তরূপ হেফাজতে আটক রাখার জন্য বিভিন্ন সময়ে কর্তৃত্ব প্রদান করবেন, তবে এইরূপ আটকের মেয়াদ সর্বমােট পনের দিনের অধিক হবে না। মামলাটি বিচার করার অথবা বিচারার্থে পাঠাইবার অধিক্ষেত্র যদি তার না থাকে এবং তিনি আরও আটক রাখা অপ্রয়ােজনীয় বলে মনে করেন, তা হলে তিনি আসামিকে এইরূপ অধিক্ষেত্র সম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণের আদেশ দিতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তৃতীয় শ্রেণীর কোন ম্যাজিস্ট্রেট এবং সরকার কর্তৃক এই বিষয়ে বিশেষভাবে ক্ষমতাবান নহেন, এইরূপ কোন দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে পুলিশের হেফাজতে আটক রাখার কর্তৃত্ব দিবেন না।
৩) এই ধারা অনুসারে আসামিকে পুলিশের হেফাজতে আটক রাখার কর্তৃত্বদানকারি ম্যাজিস্ট্রেট তার এইরূপ আদেশের কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।
৪) চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ব্যতিত অন্য কোন ম্যাজিস্ট্রেট এইরূপ আদেশ দিলে, তিনি আদেশ দিবার কারণ সহ আদেশের একটি নকল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট প্রেরণ করবেন, তিনি যার অব্যবহিত অধঃস্তন।
৪ক) যদি কোনাে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইরূপ আদেশ প্রদান করেন, তবে তিনি আদেশ দিবার কারণসহ আদেশের একটি নকল মেট্রোপলিটন দায়রা জজ বা দায়রা জজ এর নিকট প্রেরণ করবেন, তিনি যাহার অব্যবহিত অধঃস্তন।
৫) অপরাধ সংগঠন সংক্রান্ত খবর প্রাপ্তির তারিখ অথবা এরূপ অনুসন্ধানের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হতে একশত বিশ দিনের মধ্যে যদি তদন্ত শেষ না হয় তাহলে
ক) অনুসন্ধানের সংশ্লিষ্ট অপরাধ যদি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা দশ বছরের উর্ধ্ব মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় না হয় তাহলে অপরাধটি যে ম্যাজিস্ট্রেট আমল গ্রাহ্য করতে পারেন তিনি তার বিবেচনা মতে আসামিকে জামিনে মুক্তি দিতে পারেন; এবং
খ) অনুসন্ধানের সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধ যদি মৃত্যুদণ্ডে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে, দশ বছরের উর্ধ্ব মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হয় তাহলে দায়রা আদালত তার বিবেচনা মতে আসামিকে জামিনে মুক্তি দিতে পারেন। তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে আসামিকে অভিযুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন মােতাবেক মুক্তি না দেয়া হয় তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়রা আদালত, যেক্ষেত্রে যেরূপ প্রযােজ্য হয় অনুরূপ সিদ্ধান্তের কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।
আরও শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে আসামিকে অভিযুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন মােতাবেক যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমােদন গ্রহণ করা দরকার, সেক্ষেত্রে উক্তরূপ অনুমােদন গ্রহণ করতে যে সময় লাগবে তা অত্র উপধারায় উল্লেখিত সময় হতে বাদ দেয়া হবে।
ব্যাখ্যাঃ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য প্রয়ােজনীয় দলিলপত্রসহ মামলাটি যেদিন তার কাছে পেশ করা হবে, অনুমােদন গ্রহণের সময় সেদিন হতে গণনা শুরু হবে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমােদন আদেশ পাবার তারিখ উহা সমাপ্ত বলে গণ্য হবে।
আলােচনা ও প্রয়োেগ
জি, আর, মামলা কাকে বলে?
জি. আর. মামলা G.R. Case শব্দগুলাের পূর্ণাঙ্গ রূপ হল General Diary Register Case; অনুরূপ মামলায় সচরাচর বাদীপক্ষ হয় সরকার এবং তৎবাবত সাক্ষীগণের খরচা বা ভাতা সরকারই বহন করে থাকেন, এজাহারকারি নয়। এক্ষেত্রে বাদী যখন কোনও ঘটনাকে কেন্দ্র করে এজাহার বা প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (FIR) দায়েরের মাধ্যমে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বরাবরে মামলা রুজু করে তখন এসকল মামলাকে জি. আর. মামলা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বাদীর দায়েরকৃত অনুরূপ এজাহার ডায়েরীভুক্ত হবার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই থানার সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ সেমতে সংশ্লিষ্ট এজাহারটি স্থানীয় আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট বরাবরে প্রেরণ করে থাকেন এবং উহার তদন্ত কাজ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজে কিংবা অন্যকোন পুলিশ কর্মকর্তার দ্বারা সম্পন্ন করে থাকেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারার বিধানানুযায়ী ৬০ দিনের ভেতরে তদন্ত রিপোের্ট দাখিল করাই হল এরূপ মামলার তদন্তকারি পুলিশ অফিসারের দায়িত্ব এবং অনুরূপ তদন্ত রিপাের্টকেই অভিযােগপত্র বা চূড়ান্ত রিপাের্ট বলা হয়ে থাকে। এতে লক্ষণীয় বিষয় হল অপরাধটি প্রাথমিকভাবেই প্রমাণিত হয়ে গেলে পরবর্তীতে অভিযােগপত্র আর প্রমাণিত না হলেও চূড়ান্ত রিপাের্ট তদন্তকারি অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের অনুকূলে প্রেরণ করতে পারেন।
ধারা ১৬৮ অধঃস্তন পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্তের প্রতিবেদন
যখন কোন অধঃস্তন পুলিশ কর্মকর্তা অত্র অধ্যায়ের আওতায় কোন তদন্ত করেছেন, তখন তিনি উক্ত তদন্তের ফলাফলের প্রতিবেদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দিবেন।
ধারা ১৬৯ যখন সাক্ষ্য প্রমাণ অপ্রতুল তখন অভিযুক্ত ব্যক্তির মুক্তি
অত্র অধ্যায়ের আওতায় তদন্ত করতে গিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তার কাছে যদি এরূপ মনে হয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানাের যথার্থতা সমর্থন করার মত যথেষ্ট পরিমাণ সাক্ষ্য বা সন্দেহের যুক্তিসংগত হেতু নাই, তা হলে উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তি হেফাজতে থাকিলে কর্মকর্তার নির্দেশ মােতাবেক জামিনদারসহ বা জামিনদার ব্যতিত একটি মুচলেকা সম্পাদনের পর তাকে মুক্তি দিবেন । এবং মুচলেকা অনুসারে কখনও প্রয়ােজন হলে তখন সে পুলিশ প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে অপরাধটি আমলে নেওয়ার কোন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর উপস্থিত হতে হবে।
ধারা ১৭০ যখন সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যাপ্ত হয়, তখন ঘটনাদি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাতে হবে
১) অত্র অধ্যায়ের আওতায় তদন্ত করতে গিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট যদি এরুপ মনে হয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানাের যথার্থতা সমর্থন করার মতাে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাক্ষ্য প্রমাণ বা যুক্তিগ্রাহ্য ভিত্তি আছে, তা হলে থানার উক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিম্মায় থাকা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সেই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাবেন যে ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ প্রতিবেদনের উপর অপরাধটি বিচারার্থ গ্রহণ করতে, এবং ঐ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিচার করতে বা তাকে বিচারে সােপর্দ করতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত, অথবা, যদি অপরাধটি জামিনযােগ্য হয় এবং ঐ অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিন দিতে সমর্থ হয়, তবে নির্দিষ্ট দিনে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাঁর হাজিরার জন্য এবং যতক্ষণ না অন্যরূপ নির্দেশ দেওয়া হয় প্রত্যহ উক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তার হাজিরার জন্য তার থেকে জামিন নিবেন।
২) যখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অত্র ধারার আওতায় কোন একজন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠান বা উক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তার হাজিরার জন্য জামিন নেন, তখন তিনি উক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যে কোন অস্ত্রশস্ত্র বা অন্যান্য দ্রব্যাদি যা তাঁর কাছে দাখিল করা প্রয়ােজন হতে পারে তা পাঠাবেন, এবং নালিশকারিকে (যদি কেউ থাকে), এবং যে সকল ব্যক্তিগণ যারা ঐ ঘটনার তথ্যাদি ও পরিস্থিতির সাথে পরিচিত বলে থানার উক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মনে হয় তাদের মধ্যে যতজনকে প্রয়ােজন বলে তিনি চিন্তা করতে পারেন তাদের, যেরূপ নির্দেশ দেওয়া হয় সেইরূপ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির হতে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দোষারােপের বিষয়ে অভিযােগ চালাতে বা সাক্ষ্য দিতে (যেইক্ষেত্রে যেইরূপ হতে পারে) বণ্ড সম্পাদন করতে আদেশ করবেন।
৩) মুচলেকায় চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, [বা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট] আদালত উল্লেখ করা হয়ে থাকলে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি অনুসন্ধান বা বিচারের জন্য যে আদালতে প্রেরণ করিবেন, সেই আদালতও এইরূপ আদালতের অন্তর্ভুক্ত হবে, যদি উক্ত ফরিয়াদি বা ব্যক্তিগণকে এরূপ প্রেরণের যুক্তিসঙ্গত নােটিশ দেওয়া হয়ে থাকে।
৪) বাতিলকৃত।
৫) যে পুলিশ অফিসারের উপস্থিতিতে বও সম্পাদিত হয়েছে সেই কর্মচারী বগুটির একটি কপি যে ব্যক্তিগণ কর্তৃক তা সম্পাদিত হয়েছে তাদের একজনকে দিবেন, এবং তারপর তার প্রতিবেদন সমেত ঐ বণ্ডটির আসলটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাবেন।
ধারা ১৭১ নালিশকারি ও সাক্ষীদের পুলিশ কর্মকর্তার সাথে যেতে বলা যাবে না-
১) নালিশকারি বা সাক্ষীকে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে যাওয়ার পথে পুলিশ কর্মকর্তার সাথে যেতে বাধ্য করা যাবে না। নালিশকারি ও সাক্ষীদের উপর বাধা নিষেধ আরােপ করা যাবে না অথবা অনাবশ্যক বাধা বা অসুবিধায় ফেলা যাবে না, বা তার নিজস্ব মুচলেকা ব্যতিত তার হাজিরার জন্য কোন জামানত দিতে বলা যাবে না।
যেক্ষেত্রে নালিশকারি বা সাক্ষীকারি অবাধ্য সেক্ষেত্রে তাদেরকে আটক করে চালান দেওয়া যেতে পারে- তবে শর্ত এই যে, যদি ধারা-১৭০ মােতাবেক হাজির হতে বা বণ্ড সম্পাদন করতে অস্বীকার করে, তা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে গ্রহণ করে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করতে পারেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট তাকে মুচলেকা সম্পাদন না করা বা মামলা শুনানী সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত হেফাজতে আটক রাখতে পারেন।
২) উপ-ধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন মামলার শুনানীকালে নালিশকারি বা সাক্ষী যেন আদালতে উপস্থিত থাকে তার সুনিশ্চিত বন্দোবস্তের দায়িত্ব পুলিশ কর্মকর্তার উপর অর্পিত হবে।
ধারা ১৭২ তদন্তে অগ্রগতি বিষয়ে দিনলিপি (ডাইরী)
১) অত্র অধ্যায়ের আওতায় তদন্তকারি প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তা, কখন সংবাদটি তার কাছে পৌছেছিল, কখন তিনি তাঁর তদন্ত আরম্ভ করেছিলেন এবং শেষ করেছিলেন, যে স্থান বা স্থানগুলি তিনি পরিদর্শন করেছিলেন তা, এবং তার তদন্তের মাধ্যমে নির্ধারণ করা পরিস্থিতির একটি বিবৃতি দিয়া প্রতিদিন তার তদন্তের অগ্রগতি একটি ডাইরী/দিনলিপি লিখিবেন।
২) যে কোন ফৌজদারি আদালত উক্ত আদালতের অনুসন্ধান বা বিচারে থাকা ঘটনার তথা মামলার পুলিশ ডাইরীটি চেয়ে পাঠাতে পারে, এবং ঐ ডাইরী ঘটনাটির/মামলাটির সাক্ষ্য হিসাবে নয়, কিন্তু উক্ত অনুসন্ধান বা বিচারে সহায়তা পেতে ব্যবহার করতে পারেন । অভিযুক্ত ব্যক্তি বা তার প্রতিনিধির কেউই ঐ ডাইরী চাওয়ার অধিকারি নয়, অথবা সে বা তারা শুধুমাত্র এই কারণে তা দেখিবার অধিকারি নয় যে তা আদালত কর্তৃক উল্লেখিত হয়েছে; কিন্তু যে পুলিশ কর্মকর্তা ঐ ডাইরী লিখিয়াছিলেন তিনি যদি তার স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ঐ ডাইরী ব্যবহার করেন, অথবা উক্ত আদালত যদি ঐ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রতিবাদ করার প্রয়ােজনের কারণে ঐ ডাইরী ব্যবহার করেন, তবে সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ধারা-১৬১ বা ১৪৫ এর বিধানাদি, যেইখানে যেইরূপ হতে পারে প্রযোজ্য হবে।
ধারা ১৭৩ পুলিশ কর্মকর্তার প্রতিবেদন
১) অত্র অধ্যায়ের আওতায় পরিচালিত প্রত্যেকটি তদন্ত অযথা বিলম্ব না করে শেষ করতে হবে এবং উহা শেষ হওয়ার সাথে সাথে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-
ক) পুলিশ প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে অপরাধটি আমলে নেওয়ার জন্য ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে পক্ষসমূহের নাম, সংবাদের প্রকৃতি, যারা ঘটনার পরিস্থিতি অবহিত মর্মে প্রতীয়মান তাদের নাম উল্লেখ করে এবং আসামিকে (গ্রেফতার করা হয়ে থাকিলে) হেফাজতে প্রেরণ করা হয়েছে কিনা অথবা তার নিজ মুচলেকায় ছাড়িয়া দেওয়া হয়েছে কিনা, এবং এইরূপ হয়ে থাকিলে, জামিনদারসহ বা জামিনদার ব্যতিত তা উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন, এবং
খ) যে ব্যক্তি অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে প্রথমে সংবাদ দিয়াছিলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত উপায়ে তাকে গৃহিত ব্যবস্থা অবহিত করবেন।
২) যেক্ষেত্রে ধারা-১৫৮ এর আওতায় একজন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিয়ােগ দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত ক্ষেত্র সমূহে উক্ত কর্মকর্তা মারফত প্রতিবেদন পেশ করতে হবে, এবং তিনি, ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশাদি পাওয়া পর্যন্ত, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আরও তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবেন।
৩) যেক্ষেত্রে অত্র ধারার আওতায় পাঠানাে প্রতিবেদন থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি তার মুচলেকায় মুক্ত হয়েছে, সেক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট ঐরূপ মুচলেকার খারিজের জন্য বা অন্য বিষয়ের জন্য এইরূপ আদেশ দিবেন যেইরূপ তিনি উপযুক্ত মনে করেন।
৩ক) যখন অত্র ধারার আওতায় পাঠানাে প্রতিবেদন থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি তার মুচলেকায় মুক্ত হয়েছে, তখন ম্যাজিস্ট্রেট ঐরূপ মুচলেকার খারিজের জন্য বা অন্য বিষয়ের জন্য এইরূপ আদেশ দেবেন যেইরূপ তিনি উপযুক্ত মনে করেন-
ক) তদন্ত চলাকালীন সময় যেইসব দলিল পেশ করা হয়েছিল তদ্ব্যতীত বাদী পক্ষ যেইসব দলিলের উপর নির্ভর করতে ইচ্ছুক।
খ) যে সকল ব্যক্তিদের বাদী তার সাক্ষী হিসাবে পরীক্ষা করতে মনস্থ করেন তাদের সকলের ধারা-১৬১ এর উপ-ধারা (৩) এর আওতায় নথিভুক্ত করা সকল জবানবন্দী।
৩খ) উপ-ধারা (১) এর আওতায় ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর প্রতিবেদন পাঠাইবার পর অত্র ধারার কোন বিধান আরাে তদন্তের অন্তরায় হবে না এবং এইরূপ আরাে তদন্তের পর কোন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মৌখিক বা দলিল পত্র দ্বারা সমর্থিত আরাে সাক্ষ্য সংগ্রহ করে থাকবে, তিনি উহা নির্ধারিত ফরমে ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠাবেন এবং যতদূর সম্ভব উপ-ধারা (১) হতে উপ-ধারা (৩) এইরূপ প্রতিবেদনের প্রযােজ্য হবে, যেইভাবে উপধারা (১) এর আওতায় প্রেরিত প্রতিবেদন প্রযােজ্য হয়।
৪) যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি আবেদন করে, তবে তদন্ত বা বিচার শুরুর আগে তাকে অত্র ধারার আওতায় প্রেরিত প্রতিবেদনের অনুলিপি সরবরাহ করতে হবে। তবে শর্ত এই যে, ম্যাজিস্ট্রেট, যদি কোন বিশেষ কারণে বিনামূল্যে সরবরাহ করা উপযুক্ত মনে না করে, তবে উহার জন্য তার খরচ প্রদান করতে হবে।
আলােচনা ও প্রয়ােগ
পুলিশ অফিসারের তদন্ত রিপাের্ট (Report of police officer)
পুলিশ রিপাের্ট কাকে বলে?
অযথা বিলম্ব না করে তদন্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ১৭৩ ধারার অধীনে ম্যাজিস্ট্রেটকে যে প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন তাই পুলিশ রিপাের্ট।
পুলিশ রির্পোটের প্রকারভেদ:
প্রধানত ২ প্রকার।
১। চূড়ান্ত প্রতিবেদন (Final Report)
২। চার্জ শীট (Charge Sheet)
চূড়ান্ত প্রতিবেদন Final Report কাকে বলে?
এজাহারে বা প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বর্ণিত ঘটনা তদন্তের পর সঠিক বলে মনে না হলে বা অপরাধ সংঘটিত হলেও তার পর্যাপ্ত পরিমান সাক্ষ্য প্রমান না থাকলে তদন্তকারিপুলিশ অফিসার আসামিকে অব্যহতি দেয়ার জন্য যে রিপাের্ট পেশ কারণ তাকে চূড়ান্ত রিপাের্ট বা ফাইনাল রিপাের্ট।
চূড়ান্ত প্রতিবেদন Final Report ফাইনাল রিপাের্টের প্রকারভেদ:
চূড়ান্ত রিপাের্ট ৫ প্রকার। যথা:
১। চূড়ান্ত রিপাের্ট সত্য (Final Report True)
২। চূড়ান্ত রিপাের্ট মিথ্যা (Final Report False)
৩। চূড়ান্ত রিপোের্ট তথ্যগতভুল (Final Report as Mistake of Fact)
৪। চূড়ান্ত রিপাের্ট আইনগত ভুল (Final Report as Mistake of Law)
৫। চূড়ান্ত রিপাের্ট আমালা অযােগ্য (Final Report as Non-Cognigable)
চার্জশীট কাকে বলে? What is Charge Sheet? ধারা ১৭৩
থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার মামলা তদন্ত শেষে যখন জানতে পারেন মামলার উল্লেখিত অপরাধটি সত্য, তাহলে তিনি অভিযুক্ত আসামিদের বিচারের জন্য এবং অভিযুক্ত নয় এমন আসামিদের অব্যাহতির জন্য বিবরণ দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট যে রিপাের্ট পেশ করেন তাকে চার্জশিট বলে। অর্থাৎ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরূদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হলে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
ধারা ১৭৪ পুলিশকে আত্মহত্যা ইত্যাদির অনুসন্ধান করতে হবে এবং তার প্রতিবেদন দিতে হবে
১) যেক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা এই উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন পুলিশ কর্মকর্তা যদি এরূপ সংবাদ পান যে, কোন ব্যক্তি-
ক) আত্মহত্যা করেছে, বা
খ) অন্য কোন ব্যক্তি বা পশু কর্তৃক বা যন্ত্রপাতি দ্বারা বা কোন দূর্ঘটনার ফলে নিহত হয়েছে, বা
গ) এইরূপ পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে যে তা থেকে এইরূপ একটি যুক্তিযুক্ত সন্দেহের উদ্ভব হচ্ছে যে অন্য কোন ব্যক্তি কোন অপরাধ করেছে, সেক্ষেত্রে তিনি সুরতহাল (inquest) করতে ক্ষমতাপ্রদত্ত নিকটতম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে অবিলম্বে ঐ সংবাদ দিবেন, এবং যদিনা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন নিয়মে, অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর কোন সাধারণ বা বিশেষ আদেশে অন্য কোনভাবে নির্দেশিত হয় তিনি সেই স্থানে রওনা হবেন যেখানে উক্ত মৃত ব্যক্তির দেহ আছে, এবং সেখানে, নিকটবর্তী দুই বা ততােধিক সভ্রান্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতে, একটি তদন্ত করবেন, এবং উক্ত মৃত ব্যক্তির দেহে যেইরূপ আঘাত, অস্থিভঙ্গ, থেতলানো এবং অন্যান্য ক্ষতচিহ্ন দেখিতে পাওয়া যেতে পারে তা বর্ণনা করে, এবং কিভাবে, বা কোন অস্ত্র বা যন্ত্রপাতির দ্বারা (যদি কিছু থাকে) ঐরূপ আঘাত/ক্ষত চিহ্নাদি দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে তা উল্লেখ করে, মৃত্যুর আপাত প্রতীয়মান কারণের একটি প্রতিবেদন তৈরী করবেন।
তবে শর্ত এই যে, সরকার ভিন্ন কোন নির্দেশ না দিলে যদি শক্রর তৎপরতার কারণে কাহারও মৃত্যু হয়ে থাকে, তা হলে অত্র উপ-ধারার আওতায় কোন তদন্ত করা বা প্রতিবেদন প্রণয়ন করা বা সুরতহাল করার ক্ষমতাবান কোন ম্যাজিস্ট্রেটকে সংবাদ প্রদান করার দরকার হবে না।
২) উক্তরূপ প্রতিবেদনটিতে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য ব্যক্তিগণ, বা সেখানে যারা মিলিত হন তারা স্বাক্ষর করবেন, এবং তা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে অবিলম্বে পাঠিয়ে দিতে হবে।
৩) যেক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ সম্বন্ধে সন্দেহ থাকে বা অন্য যে কোন কারণে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা সেইরূপ করতে যথাযথ বিবেচনা করেন, সেক্ষেত্রে সরকার এই উদ্দেশ্যে যেইরূপ নিয়ম নির্ধারণ করতে পারেন সেইরূপ নিয়মাদি সাপেক্ষ, মৃত ব্যক্তির দেহটি, পরীক্ষা করাইবার জন্য, নিকটতম সিভিল সার্জন বা সরকার কর্তৃক এই উদ্দেশ্যে নিযুক্ত অন্য কোন যােগ্যতা সম্পন্ন ডাক্তারের নিকট পাঠাবেন—যদি আবহাওয়া ও দূরত্বটি এমন হয় যে, তা ঐ মৃতদেহটি যেইরুপ পঁচিয়া গলিয়া গেলে উক্ত পরীক্ষাটি করানাে অর্থহীন হইত রাস্তায় সেইরূপ পঁচিয়া যাওয়া ছাড়াই উক্তরূপে পাঠানাে যায় ।
৪) প্রশাসনিক আদেশ, ১৯৪৯ এর তফসিল বলে বাতিলকৃত।
(৫) নিম্নলিখিত ম্যাজিস্ট্রেটগণ ময়না তদন্ত পরিচালনা করতে ক্ষমতাবান কোন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা, সরকার, বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক এতদুদ্দেশে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
আলােচনা ও প্রয়ােগ
সুরতহাল রিপাের্ট কাকে বলে? What is Inquest Report?
কোন ব্যক্তি আকস্মিভাবে মৃত্যু বরণ করলে বা আত্মহত্যা করলে বা খুন হলে কিংবা দুর্ঘটনায় মারা গেলে পুলিশ উল্লেখ করে যে রিপাের্ট তৈরি করেন তাকে সুরতহাল রিপাের্ট বলে। পুলিশ আকস্মিকভাবে মৃত্যু বরনের বা আত্মহত্যা বা খুন বা দুর্ঘটনায় মারা গেলে সুরতহাল রিপাের্ট তৈরি করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত নিকটতম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবিলম্বে ঐ সংবাদ প্রদান করবেন। তদন্তকারি পুলিশ দুই বা ততােধিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে মৃত দেহটি তদন্ত করার জন্য ১৭৫ ধারায় তাদের বরাবর সমন ইস্যু করতে পারেন। মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য মৃত ব্যক্তির দেহটি তদন্ত অফিসার নিকটতম সিভিল সার্জন বা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত ডাক্তারের কাছে পঠাবেন।
সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা
কোন মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে যেমন আত্মহত্যা খুন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু, মৃত্যু ইত্যাদি হতে মৃত লাশের তৎকালীণ অবস্থা সম্পর্কে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে কোন পুলিশ অফিসার বা ম্যাজিস্ট্রেট যে প্রতিবেদন সাক্ষীদের সম্মুখে তৈরী করেন তাই সুরতহাল প্রতিবেদন। অর্থাৎ মৃত লাশের সার্বিক অবস্থা উল্লেখ করে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। এত সাক্ষীদের নাম ঠিকানা ও দস্তখত অবশ্যই থাকবে। এবং ইহা তিন (৩) করি করতে হবে। [ ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৭৪, পি.আর.বি ২৯৯ ]
সুরতহাল রিপাের্ট বা প্রতিবেদন প্রস্তুত করার পূর্বে লাশের সনাক্ত করনের ব্যবস্থা করতে হয়। সনাক্তকারি পাওয়া না গেলে অর্থাৎ ঐ সময়ে উপস্থিত কোন সাক্ষী লাশ সনাক্ত করতে না পারলে অসনাক্তকৃত লাশ হিসেবেও সুরতহাল রিপাের্ট তৈরী করা হয়। উক্ত রিপাের্ট সরজমিনে করতে হয়। লাশ উলট পালট করে সকল অঙ্গ-প্রতঙ্গ দেখে এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করে সনাক্তযােগ্য কোন চিহ্ন বা বৈশিষ্ট্য থাকলে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হয়। সমস্ত শরীরের বর্ণনা ও আনুমানিক বয়স উল্লেখ পূর্বক তৎকালীন প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কেও আলােকপাত করতে হয়।
যে সকল সাক্ষীর উপস্থিতিতে এবং সনাক্তমতে সুরতহাল রিপাের্ট তৈরী করা হয় তাদের স্বাক্ষর বা টিপসহি প্রতিবেদনের মার্জিনে গ্রহণ করতে হয়। পুলিশ ছাড়াও ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ম্যাজিস্ট্রেট সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে পারেন।
ধারা ১৭৫ ব্যক্তিদের সমন করার ক্ষমতা
১) ১৭৪ ধারার আওতায় অগ্রসর হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা, লিখিত আদেশ দিয়া, উক্ত তদন্তের প্রয়ােজনের কারণে উপরােক্ত দুই বা ততােধিক ব্যক্তিদের, এবং ঘটনাটির তথ্যাদির সাথে পরিচিত বলে প্রতীয়মান অন্য যে কোন ব্যক্তিকে সমন করতে পারেন এবং উক্তরূপভাবে সমন করা প্রত্যেক ব্যক্তি হাজির হতে এবং যে প্রশ্নগুলির উত্তরগুলি তাকে ফৌজদারি দোষারােপে বা দণ্ডে বা বাজেয়াপ্তে দায়যােগ্য করে তােলার প্রয়াস পাইয়া থাকিত সেই প্রশ্নগুলি বাদ দিয়ে অন্য সকল প্রশ্নের সত্য উত্তর দিতে বাধ্য থাকবে।
২) ১৭০ ধারা যাতে প্রযােজ্য হয় এমন কোন আমলযােগ্য অপরাধ প্রকাশ না করে, তবে পুলিশ কর্মকর্তা উক্ত ব্যক্তিদের ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির হতে আদেশ করবেন না।
ধারা ১৭৬ মৃত্যুর কারণ সম্বন্ধে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অনুসন্ধান
১) যখন কোন ব্যক্তি পুলিশের জিম্মায়/হেফাজতে থাকাকালে মারা যায় বা ঘটনাটি যখন ধারা-১৭৪ উপধারা (১) এর (ক), (খ) ও (গ) উপাংশে বর্ণিত চরিত্রের হয়, তখন সুরতহাল/মৃত্যু সমীক্ষা করতে ক্ষমতাবান নিকটতম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, এবং ধারা-১৭৪(১) এ উল্লেখ করা অন্য যেকোন ক্ষেত্রে, উক্তরূপ ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে কোন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ কর্মচারী কর্তৃক করা তদন্তের পরিবর্তে, বা তার অতিরিক্ত, মৃত্যুটির কারণ সম্বন্ধে অনুসন্ধান করতে পারেন; এবং তিনি যদি তাই করেন, তবে ঐ অনুসন্ধান পরিচালনা করতে তার উক্তরূপ সকল ক্ষমতাই থাকবে যেইরূপ ক্ষমতা কোন একটি অপরাধ অনুসন্ধান করতে তাঁর থাকিয়া থাকিত। উক্তরূপ তদন্ত পরিচালনার সময় ম্যাজিস্ট্রেট পরিস্থিতি অনুসারে অতঃপর উল্লেখিত পদ্ধতিসমূহের যে কোন একটি অনুসারে গৃহিত সাক্ষ্য প্রমাণ নথিবদ্ধ করবে।
২) কবর থেকে লাশ তুলিবার ক্ষমতা
যেক্ষেত্রে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ইতিমধ্যে সমাহিত করা হয়েছে এমন কোন ব্যক্তির মৃতদেহ পরীক্ষা করা, মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করার উদ্দেশ্যে, যথাযথ বিবেচনা করেন, সেক্ষেত্রে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মৃতদেহটি কবর হতে তুলতে এবং পরীক্ষা করাতে পারেন।