- Get link
- X
- Other Apps
Order 40 Appointment of Receivers
আদেশ ৪০ তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ
আদেশ ৪০ বিধি ১ তত্ত্বাবধায়ক নিয়ােগ
১) যেক্ষেত্রে আদালতের কাছে ন্যায়সঙ্গত ও সুবিধাজনক বলে প্রতীয়মান হয়, সেক্ষেত্রে আদালতের আদেশের মাধ্যমে
ক) ডিক্রীর আগে বা পরে কোন সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক নিয়ােগ করতে পারে;
খ) সম্পত্তির দখল বা তত্ত্বাবধান হতে কোন লােককে অপসারণ করতে পারে;
গ) তা তত্ত্বাবধায়কের দখলে, তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থাপনায় রাখিতে পারে; এবং
ঘ) মামলা আনয়ন ও আত্মপক্ষ সমর্থন সম্পর্কে এবং সম্পত্তি আদায়করণ, ব্যবস্থাপনা, নিরাপদকরণ, সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের জন্য, খাজনা এবং মুনাফা সংগ্রহ, অনুরূপ খাজনা ও মুনাফার প্রয়ােগ ও হস্তান্তর এবং দলিল সম্পাদন সম্পর্কে মালিকের নিজের যেরূপ ক্ষমতা আছে সেরূপ বা আদালত যে সব ক্ষমতা যথাযথ মনে করে, তত্ত্বাবধায়ক বরাবর অনুরূপ সব ক্ষমতা প্রদান করতে পারে।
২) কোন লােককে সম্পত্তির দখল ও তত্ত্বাবধান হতে অপসারণের জন্য যাকে মামলার কোন একটি পক্ষের অনুরূপভাবে অপসারণের বর্তমান অধিকার না থাকে, এই বিধির কোন বিধানই আদালতকেও উক্ত লােককে অনুরূপ অপসারণের ক্ষমতা প্রদান করবে না।
আদেশ ৪০ বিধি ১ বিধির বিশ্লেষণ
রিসিভার কোন ব্যক্তি? রিসিভার কে?
রিসিভার হলেন এমন একজন ব্যক্তি, যিনি কোন মামলাধীন সম্পত্তির তত্ত্বাবধানার্থে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত একজন কর্মকর্তা। আদালত সঙ্গত ও সুবিধাজনক মনে করলে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৫১ ধারার বিধান সাপেক্ষে ডিক্রীদারের আবেদনক্রমে একজন রিসিভার নিয়ােগের জন্য আদেশ দান করতে পারেন। ডিক্রী জারি করার ব্যাপারে আদালত তার উপর অর্পিত এই বিশেষ ক্ষমতা প্রয়ােগ করে থাকেন। রিসিভার নিয়ােগের এই আদেশ আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা বা বিবেচনার উপর নির্ভরশীল।
কখন রিসিভার নিযুক্ত করা হয়?
যে ক্ষেত্রে কোন সম্পত্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বা সংরক্ষণ অথবা আদায়করণ বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন রিসিভার নিয়ােগের প্রয়ােজন, সেক্ষেত্রে আদালত সঙ্গত ও সুবিধাজনক মনে করলে উক্ত সম্পত্তি গ্রহণকারী হিসাবে একজন রিসিভার নিয়ােগ করবেন। মামলার বিষয়বস্তুকে যে কোন ক্ষতি হতে রক্ষা করার জন্য এবং পক্ষসমূহের অধিকার সংক্ষণের জন্য রিসিভার নিযুক্ত করা হয়। মামলার পরিস্থিতি বিবেচনার পর আদালত কর্তৃক অতি সতর্কতার সাথে আইনের মূল নীতির ভিত্তিতে রিসিভার নিয়ােগের এই বিশেষ ক্ষমতা প্রয়ােগ করবেন।
রিসিভার নিয়ােগের পদ্ধতি সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৪০ নং আদেশের ১নং বিধির (১) নং উপবিধিতে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এই বিধির (১) উপবিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সঙ্গত ও সুবিধাজনক মনে করলে আদালত একটি আদেশ জারি করে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা অবলম্বন করতে পারবেন।
ক) ডিক্রীর পূর্বে বা পরে কোন সম্পত্তির জন্য রিসিভার নিয়ােগ;
খ) সম্পত্তির দখল বা জিম্মাদারী হতে কোন ব্যক্তিকে অপসারণ।
গ) উক্ত সম্পত্তি রিসিভারের দখল, জিম্মাদারী বা ব্যবস্থাপনা অৰ্পণ;
ঘ) রিসিভারকে সম্পত্তি প্রসঙ্গে মামলা দায়ের করা ও মামলার জবাব দেওয়া, সম্পত্তিটি হস্তগত করা, ব্যবস্থাপনা করা, উহার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করা, খাজনা ও মুনাফা আদায় করা এবং উক্ত খাজনা ও মুনাফা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ যথাবিহিত ব্যয় ও বিলি বন্টন করার ব্যাপারে সম্পত্তির মালিকের অনুরূপ ক্ষমতা অথবা আদালত যেরূপ উপযুক্ত মনে করেন, তদ্রুপ ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন।
এইভাবে আদালত দেওয়ানি কার্যবিধির ৪০ নং আদেশের ১(১) নং বিধির বিধান বলে ডিক্রী প্রাপক (Decree-holder) এবং রায় দায়িক (Judgment debtor) এর স্বার্থে রিসিভার নিয়ােগ করতে পারেন।
রিসিভারের রক্ষণাবেক্ষণ হতে কি কি কারণে সম্পত্তি মুক্ত করা যায়?
রিসিভারের রক্ষণবেক্ষণ হতে যে সকল কারণে সম্পত্তি মুক্ত করা যায়, এতদসংশ্লিষ্ট বিধি বিধান সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৪০নং আদেশের ১ (২) বিধি এবং একই আদেশের ৪নং বিধিতে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দান করা হয়েছে। রিসিভারের রক্ষণাবেক্ষণ হতে সম্পত্তি মুক্ত করার বিধান সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১ (২) নং বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তিকে সম্পত্তির দখল এবং জিম্মাদারী হতে অপসারণের ব্যাপারে মামলার কোন একটি পক্ষের অধিকার না থাকলে আদালতও অত্র বিধিবলে অনুরূপ ব্যক্তিকে অপসারণের ক্ষমতা লাভ করবেন না। দেওয়ানি কার্যবিধির ৪০নং আদেশের ৪নং বিধিতে বলা হয়েছে যে, রিসিভার যদি-
ক) সম্পত্তি বাবদ প্রাপ্ত আয়ের যথাযথ হিসাব দানের জন্য আদালত কর্তৃক নির্ধারিত জামানত (যদি থাকে) দাখিল;
খ) আদালত কর্তৃক নির্ধারিত ফর্মে এবং নির্দিষ্ট সময়ে হিসাব দাখিল;
গ) আদালতের নির্দেশ মােতাবেক তার নিকট হতে পাওনা টাকা পরিশােধ; এবং
ঘ) স্বেচ্ছাকৃত ত্রুটি অথবা গুরুতর অবহেলার দরুণ সম্পত্তির কোন ক্ষতি সাধিত হলে তজ্জন্য রিসিভারকেই দায়ী হতে হবে।
উল্লেখিত কারণে আদালত রিসিভারের সম্পত্তি ক্রোক করার নির্দেশ দিতে পারবেন; উক্ত সম্পত্তি বিক্রয় করতে পারবেন এবং বিক্রয় লদ্ধ অর্থ দ্বারা উক্ত পাওনা পরিশােধ বা ক্ষতিপূরণের পর অবশিষ্ট টাকা (যদি থাকে) রিসিভারেকে প্রদান করবেন। এইভাবে, উপরে উল্লেখিত কারণে রিসিভারের রক্ষাণাবেক্ষণ হতে জিম্মাকৃত মুক্ত করা যেতে পারে।
কখন এবং কিভাবে রিসিভারের নিযুক্তি বাতিল করা যায়
১) যেক্ষেত্রে কোন মামলায় রায় না দেওয়া পর্যন্ত রিসিভার নিযুক্ত করা হয়, সেক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক রায় ঘােষণার সঙ্গে সঙ্গেই রিসিভারের নিযুক্তি বাতিল হয়ে যায় ।
২) রিসিভারের দায়িত্বের অবসান ঘটা মাত্রই তার নিযুক্তিকালের পরিসমাপ্তি ঘটে।
যেক্ষেত্রে কোন মামলায় সুষ্ঠুভাবে সময়কাল ঘােষণা না করেই একজন রিসিভার নিযুক্ত করা হয়, সেক্ষেত্রে উক্ত রিসিভারকে যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে তার দায়িত্ব হতে অব্যাহতি প্রদান করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে তার পদে বহাল থাকবে। অর্থাৎ, রিসিভার হিসাবে দায়িত্ব শেষ হওয়া মাত্রই তার নিযুক্তি বাতিল হয়ে যাবে।
৩) মামলার পক্ষসমূহের মধ্যে উক্ত মামলাটির ব্যাপারে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর রিসিভারের কাজের পরিসমাপ্তি ঘটার কারণে তার নিযুক্তি বাতিল হয়ে যায় ।
এই প্রসঙ্গে উদাহরণস্বরূপ হীরালাল পটনী বনাম লােনকরণ সেথিয়া মামলার উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তসমূহটির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।
আদেশ ৪০ বিধি ২ রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়কের পারিশ্রমিক
আদালত একটি সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়কের কার্যের জন্য পারিশ্রমিক ধার্য করতে পারবে।
আদেশ ৪০ বিধি ৩ রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়কের কর্তব্য
অনুরূপে নিযুক্ত প্রত্যেক রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক
ক) সম্পত্তি সম্পর্কে সে যা পাবে তার যথাযথ দায়ী থাকার জন্য আদালত দ্বারা যথাযথ বিবেচনায় জামানত (যদি কোন) প্রদান করবে;
খ) আদালত দ্বারা নির্দেশিত মেয়াদে এবং ফরমে তার হিসাবাদি পেশ করবে;
গ) আদালতের নির্দেশ মত তার কাছে হতে প্রাপ্য টাকা পরিশােধ করবে; এবং
ঘ) তার ইচ্ছামত বরখেলাপ বা গুরুতর অবহেলার দরুণ সম্পত্তির ক্ষতিসাধিত হলে তজ্জন্য দায়ী থাকবে।
আদেশ ৪০ বিধি ৪ রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়কের কর্তব্য বলবৎকরণ
যেক্ষেত্রে রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক
ক) আদালতের নির্দেশিত সময়ে এবং ফরমে তার হিসাবাদি পেশ করতে ব্যর্থ হয়, কিংবা
খ) তার কাছে হতে প্রাপ্য টাকা আদালতের নির্দেশ মতে পরিশােধ করতে ব্যর্থ হয়, কিংবা
গ) তার ইচ্ছামত বরখেলাপ বা গুরুতর অবহেলার কারণে সম্পত্তির ক্ষতিসাধিত হয়, সেক্ষেত্রে আদালত তার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিতে পারে এবং অনুরূপ সম্পত্তি বিক্রয় করতে পারে এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ দ্বারা তার কাছে হতে প্রাপ্য টাকা পরিশােধ করতে বা তার দ্বারা সাধিত অনিষ্টের খেসারত প্রদানে ব্যবহার করতে পারে এবং অবশিষ্ট টাকা (যদি কোন) তত্ত্বাবধায়কের কাছে প্রদান করবে।
আদেশ ৪০ বিধি ৫ কালেক্টর কখন রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হতে পারে?
যেক্ষেত্রে সম্পত্তি সরকারকে রাজস্ব প্রদানকারী ভূমি বা যে ভূমির রাজস্ব হস্তান্তরিত বা মুক্ত হয়েছে এবং আদালত যদি বিবেচনা করে যে, কালেক্টর দ্বারা ব্যবস্থাপনা চালিত হলে সংশ্লিষ্ট সকলের স্বার্থরক্ষা হবে, সেক্ষেত্রে আদালত কালেক্টরের সম্মতিক্রমে তাকে অনুরূপ সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিযুক্ত করতে পারে।