- Get link
- X
- Other Apps
Chapter 19
উনিশতম অধ্যায়
Of the Charge
অভিযোগ বিষয়ে
Form of Charges
অভিযোগের ধরণ বা ফরম
ধারা ২২১ অভিযােগে অপরাধের বিবরণ থাকতে হবে
১) এই বিধির অধীন গঠিত অভিযােগে প্রত্যেক আসামি যে অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছে, উহার বিবরণ থাকবে।
২) অভিযােগের নির্দিষ্ট নামই যথেষ্ট বিবরণ
যে আইনের দ্বারা অপরাধটি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে উহার কোন নির্দিষ্ট নাম থাকলে অভিযােগে শুধুমাত্র সেই নামেই উহার বিবৃতি দেওয়া যাবে।
৩) অপরাধের নির্দিষ্ট নাম না থাকলে কিভাবে উল্লেখ করতে হবে
যে আইনের দ্বারা অপরাধটি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে উহার কোন নির্দিষ্ট নাম না থাকলে উহার সংজ্ঞা এমনভাবে উল্লেখ করতে হবে যাতে আসামি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযােগ সম্পর্কে সুস্পষ্টরূপে বুঝিতে পারে।
৪) যে আইন এবং আইনের ধারার অধীন অপরাধ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযােগে তার উল্লেখ করতে হবে।
৫) অভিযােগে কি বুঝানাে হয়েছে
কোন ক্ষেত্রে অভিযােগ প্রণয়ন করা হলে তা এই মর্মে বিবৃতি দেওয়ার সামিল হয় যে, উক্ত বিশেষ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অপরাধটি সৃষ্টির জন্য আইনত যে সমস্ত শর্ত রহিয়াছে, তা পূরণ করা হয়েছে।
৬) অভিযােগের ভাষা
অভিযােগ ইংরেজীতে কিংবা আদালতের ভাষায় লিখিতে হবে।
৭) পূর্ববর্তী দণ্ডের বিষয় যখন উল্লেখ করতে হবে
আসামি পূর্বে কোন অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হওয়ার কারণে পরবর্তী অপরাধের ক্ষেত্রে বর্ধিত দণ্ড বা ভিন্ন প্রকৃতির সঙ্গে দণ্ডনীয় হলে, এবং পরবর্তী অপরাধের দণ্ড বৃদ্ধি বা প্রকৃতি পরিবর্তনের জন্য পূর্ববর্তী দত্ত প্রমাণ করার প্রয়ােজন হলে, অভিযােগে পূর্ববর্তী দণ্ডের ঘটনা, তারিখ ও স্থান উল্লেখ করতে হবে। যদি উক্তরূপ উল্লেখ না করা হয়ে থাকে, তবে আদালত দণ্ড দানের পূর্বে যে কোন সময়ে উহা যােগ করতে পারেন।
উদাহরণসমূহ
অ) ক-এর বিরুদ্ধে খ-কে হত্যা করার অভিযােগ করা হয়েছে। ইহা এই মর্মে বিবৃতির সামিল যে, ক-এর কার্য দণ্ডবিধির ধারা ২৯৯ ও ৩০০-এ প্রদত্ত হত্যার সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত এবং উহা উক্ত বিধির কোন সাধারণ ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত নহে; এবং তা উক্ত ৩০০ ধারার পাঁচটি ব্যতিক্রমের কোনটির অন্তর্ভুক্ত নহে; এবং তা ১নং ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত হলে, এক বা অপর তিনটি শর্তের যে-কোন একটি উহার প্রতি প্রযােজ্য।
আ) গুলি বর্ষণের অস্ত্র দ্বারা ক-কে ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুতররূপে আঘাত করার জন্য ক এর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৬ ধারার অধীন অভিযােগ গঠন করা হয়। ইহা এই মর্মে বিবৃতি দেওয়ার সামিল যে, দণ্ডবিধির ৩৩৫ ধারায় ঘটনাটির জন্য কোন বিধান নাই, এবং সাধারণ ব্যতিক্রমগুলি উহার প্রতি প্রযােজ্য নয় ।
ই) ক-এর বিরুদ্ধে খুন, প্রতারণা, চুরি, বলপূর্বক অপহরণ, বিবাহিত নারী ধর্ষণ, অপরাধজনক ভীতি প্রদর্শন কিংবা মিথ্যা সম্পদ চিহ্ন ব্যবহারের অভিযােগ করা হয়েছে। দণ্ডবিধিতে এই সমস্ত অপরাধের যে সংজ্ঞা আছে, অভিযােগে তা উল্লেখ না করে বলা যেতে পারে যে, ক- খুন, প্রতারণা, চুরি, বলপূর্বক অপহরণ, বিবাহিতা নারী ধর্ষণ, অপরাধজনক ভীতি প্রদর্শন করেছে বা মিথ্যা চিহ্ন ব্যবহার করেছে। তবে যে ধারায় অপরাধটি দণ্ডনীয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অভিযােগে উক্ত ধারা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
ঈ) কোন সরকারি কর্মচারীর আইনসঙ্গত কর্তৃত্বকে বিক্রয়ের জন্য ঘােষিত সম্পত্তি বিক্রয়ের ইচ্ছাকৃত বাধাদানের জন্য ক-এর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৮৪ ধারার অধীন অভিযােগ প্রণয়ন করা হয়েছে অভিযােগটিতে এই কথাগুলি লিখিতে হবে।
আলােচনা ও প্রয়ােগ
চার্জ বা অভিযোগ কাকে বলে? What is charge?
ফৌজদারি বিচার কার্যক্রমে চার্জ বা অভিযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর যা অনুসন্ধান (enquiry) এবং বিচার (trial) কে পৃথক করে। ফৌজদারি কার্যবিধি এর ধারা-৪(১)(গ) অনুযায়ী, চার্জ বলতে একাধিক দফা সম্বলিত চার্জের যে কোন দফার অন্তর্ভূক্ত হবে। ফৌজদারি কার্যবিধিতে চার্জের কোন সংজ্ঞা দেয়া হয়নি। এখানে চার্জ বলতে ইনকোয়ারির পরে চার্জ গঠনকে বুঝায় [AIR 1927 Bom. 96]। চার্জ বিষয়ে নিম্নে বর্ণিত দুটি অভিমত সবিশেষ প্রনিধানযােগ্য, যথাঃ
In short charge is the precise formulation of the specific accusation made against a person who is entitled to know its nature at the earlier stage. [AIR (1935) 81] অর্থাৎ সংক্ষেপে চার্জ হচ্ছে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযােগের সংক্ষিপ্ত বিবরণ যার প্রকৃতি সম্পর্কে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রাথমিক স্তরেই জানার অধিকারি। অভিযুক্ত ব্যক্তি যে অপরাধ সংঘটিত করেছে চার্জে তা বিবৃত থাকবে এবং আইনে যদি সেই অপরাধের নির্দিষ্ট নামকরণ থাকে তবে চার্জে তা উল্লেখ থাকতে হবে। নাম না থাকলে অপরাধের বিবরণ থাকতে হবে যেনাে অভিযুক্ত ব্যক্তি তা বুঝতে সক্ষম হয়।
ধারা ২২২ সময়, স্থান ও ব্যক্তি সম্পর্কে বিবরণ
১) অভিযােগে অভিযােগকৃত অপরাধের সময় ও স্থান এবং যার বিরুদ্ধে অপরাধ করা হয়েছে সেই ব্যক্তি (যদি থাকে), বা যে বস্তু সম্পর্কে অপরাধ করা হয়েছে সেই বস্তু (যদি থাকে) সম্বন্ধে এইরূপ তথ্য থাকবে, যার ফলে আসামি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযােগের বিষয় সম্পর্কে যুক্তিসঙ্গতভাবে ও পর্যাপ্তরূপে ওয়াকিবহাল হতে পারে ।
২) আসামি যখন অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ বা অসাধুভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযােগে অভিযুক্ত হয়, তখন সুস্পষ্ট দফা বা সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ না করে যে পরিমাণ টাকা সম্পর্কে অপরাধ করা হয়েছে, মােটামুটিভাবে তা এবং যে তারিখগুলির মধ্যে অপরাধ করা হয়েছে, তা উল্লেখ করলেই যথেষ্ট হবে, এবং এইরূপ গঠিত অভিযােগ ২৩৪ ধারার অর্থানুসারে একটিমাত্র অপরাধের অভিযােগ বলে বিবেচিত হবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত প্রথম ও শেষ তারিখের মধ্যবর্তী সময় এক বৎসর অতিবাহিত করবে না।
ধারা ২২৩ অপরাধ সংঘটনের পদ্ধতি যখন অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে
যখন ঘটনার প্রকৃতি এইরূপ যে, ধারা ২২১ ও ২২২ -এ ধারায় উল্লিখিত তথ্যাবলী দ্বারা আসামিকে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযােগ সম্পর্কে পর্যাপ্তরূপে জ্ঞাত করা যায় না, তখন যে কায়দায় অভিযােগকৃত অপরাধটি করা হয়েছিল, অভিযােগে সেই সম্পর্কে এইরূপ তথ্য দিতে হবে যেন তা জ্ঞাতকরার উদ্দেশ্যে পর্যাপ্তরূপে সাধিত হতে পারে।
উদাহরণসমূহ
অ) ক-এর বিরুদ্ধে কোন বিশেষ সময়ে ও কোন বিশেষ স্থান থেকে কোন একটি বস্তু চুরি করার অভিযােগ করা হয়েছে। কিভাবে চুক্তি করা হয়েছিল অভিযােগে তা উল্লেখ করার প্রয়ােজন নাই।
আ) ক-এর বিরুদ্ধে কোন বিশেষ সময়ে ও স্থানে খ-কে প্রতারণার অভিযােগ করা হয়েছে। ক কিভাবে খ-কে প্রতারণা করেছে, অভিযােগে অবশ্যই তা উল্লেখ করতে হবে।
ই) ক-এর বিরুদ্ধে কোন বিশেষ সময়ে ও স্থানে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করার অভিযােগ করা হয়েছে। ক-এর সাক্ষ্যের যে অংশ মিথ্যা বলে অভিযােগ করা হয়েছে, অভিযােগে উহা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
ঈ) ক-এর বিরুদ্ধে কোন বিশেষ সময়ে ও স্থানে খ নামক জনৈক সরকারি কর্মচারীকে তার সরকারি কার্যে বাধা প্রদানের অভিযোেগ করা হয়েছে। ক কিভাবে খ-কে তার কার্যে বাধা দান করেছিল, অভিযােগে উহা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
উ) ক-এর বিরুদ্ধে, কোন বিশেষ সময়ে ও স্থানে খ-কে হত্যার অভিযােগ করা হয়েছে। ক কিরূপে খ-কে হত্যা করেছিল, অভিযােগে উহার বিবরণ দেওয়ার প্রয়ােজন নাই।
ঊ) ক-এর বিরুদ্ধে, খ-কে শাস্তির হাত হতে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে আইনের নির্দেশ লঙ্ঘনের অভিযােগ করা হয়েছে। অভিযােগে অভিযােগকৃত নির্দেশ লঙ্ঘন এবং যে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে উহা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
ধারা ২২৪ যে আইনের অধীন অপরাধ দণ্ডনীয়, অভিযােগের শব্দের অর্থ সেই আইন মতে করতে হবে
কোন অপরাধের বিবরণ দিবার জন্য অভিযােগে ব্যবহৃত শব্দসমূহ যে আইনে অপরাধ দণ্ডনীয় সেই আইনে শব্দগুলি যেই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, সেই অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধরিতে হবে।
ধারা ২২৫ ভুল-ভ্রান্তির ফল
অভিযােগে অপরাধের বর্ণনা বা অপর কোন তথ্য পরিবেশনের সময় কোন ভুল হলে বা কোন কিছু বাদ পড়িলে তা যদি আসামির বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও ন্যায়বিচার ব্যাহত না করে, তা হলে তা, মামলার কোন পর্যায়ে গুরুতর বলে গণ্য করা যাবে না।
উদাহরণসমূহ
অ) ক-কে দণ্ডবিধির ধারা ২৪২-এ অভিযোেগ করা হয়েছে যে, সে জালমুদ্রা দখলে রেখেছে এবং যখন সে তা দখলে আনিয়াছে, তখন তা জাল বলে জানিত কিন্তু “প্রতারণা” শব্দটি বাদ পড়িয়াছে। এইরূপ বাদ পড়াতে বস্তুত বিভ্রান্ত হয়েছে বলে যদি প্রতিয়মান না হয়, তা হলে অনুরূপ ভুলকে গুরুতর গণ্য করা হবে না;
আ) ক কর্তৃক খ-কে প্রতারণার অভিযােগ করা হয়েছে এবং সে কিভাবে খ-কে প্রতারণা করেছে, তা বলা হয় নাই, বা ভুলরূপে বলা হয়েছে। ক মামলায় তার সমর্থনে সাক্ষ্য প্রদান করে এবং লেনদেনে তার বিবৃতি দেয়। আদালত ধরে নিতে পারে যে অভিযােগে প্রতারণার প্রকৃতি বাদ পড়া গুরুত্বপূর্ণ নহে;
ই) ক-খ কে প্রতারণা অভিযােগ করা হয়েছে; কিন্তু অভিযােগে প্রতারণার পদ্ধতি উল্লেখ করা হয় নাই। ক ও খ-এর মধ্যে পর্যাপ্ত লেনদেন হয়েছে, কিন্তু ক জানতে পারিল না যে কোন লেনদেন সম্পর্কে তাকে অভিযােগ করা হয়েছে এবং সে আত্মপক্ষ সমর্থনে নির্দিষ্ট কিছু বলিল না। আদালত তা থেকে মনে করে নিতে পারে যে, অভিযােগে প্রতারণার পদ্ধতি উল্লেখ না করা গুরুত্বপূর্ণ ভুল হয়েছে।
ঈ) ক-কে ১৮৮২ সালের ২১শে জানুয়ারি খােদা বখস নামক এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোেগ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নিহত ব্যক্তির নাম হায়দার বখস এবংহত্যা করার তারিখ ১৮৮২ সালের ২০শে জানুয়ারি। ক-কে শুধুমাত্র একটি হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক তদন্তকালীন সময়ে সে শুনেছে যে তদন্তটি শুধুমাত্র হায়দার বখসের হত্যা সম্পর্কিত। আদালত ইহা হতে মনে করে নিতে পারে যে, ক বিভ্রান্ত হয় নাই এবং অভিযােগের ভুল গুরুত্বপূর্ণ নয়।
উ) ক-কে ১৮৮২ সালের ২০শে জানুয়ারি হায়দার বখসকে এবং ১৮৮২ সালের ২১শে জানুয়ারি খােদা বখসকে হত্যার অভিযােগ করা হয়েছে। (হায়দার বখসকে হত্যার জন্য খােদা বখস তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেছে।) হায়দার বখস হত্যার অভিযােগে অভিযুক্ত হয়ে খােদা বখসকে হত্যার জন্য তাহার বিচার হলাে। প্রকৃতপক্ষে যে সমস্ত সাক্ষী হাজির ছিল, তারা হায়দার বখস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী। আদালত ইহা হতে মনে করে নিতে পারে যে, ক বিভ্রান্ত হয়েছে এবং ভুলটি গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে।
ধারা ২২৭ আদালত অভিযোেগ পরিবর্তন করতে পারেন
১) রায় ঘােষণার পূর্বে যে-কোন পর্যায়ে আদালত অভিযােগ পরিবর্তন বা নতুন অভিযােগ করতে পারেন।
২) এইরূপ প্রত্যেকটি পরিবর্তন বা সংযােজন আসামিকে পড়িয়া শুনাইতে ও বুঝাইতে হবে ।
ধারা ২২৮ পরিবর্তনে অব্যবহিত পরই যখন বিচার চলতে পারে
ধারা ২২৭ এর অধীন প্রণীত বা পরিবর্তিত বা সংযােজিত অভিযােগ যদি এইরূপ হয় যে, আদালতের অভিমতে অবিলম্বে বিচার শুরু করার ফলে আসামির আত্মপক্ষ সমর্থন বা সরকার পক্ষের মামলা পরিচালনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নাই, তা হলে আদালত ইচ্ছা করলে অভিযােগ প্রণয়ন, পরিবর্তন বা সংযােজনের পর নতুন বা পরিবর্তিত অভিযােগকে মূল অভিযােগ হিসাবে গণ্য করে বিচার আরম্ভ করতে পারেন।
ধারা ২২৯ যখন নতুন বিচার নির্দেশিত হবে কিংবা বিচার স্থগিত হবে
যদি নতুন, পরিবর্তিত বা সংযােজিত অভিযােগ এইরূপ হয় যে, আদালতের মতে অবিলম্বে বিচার শুরু করার ফলে আসামি বা সরকার পক্ষের ক্ষতি হতে পারে, তা হলে আদালত নতুন বিচারের নির্দেশ দিতে পারবেন অথবা প্রয়ােজনীয় সময়েরর জন্য বিচার মুলতবী রেখে নির্দেশ দিতে পারবেন।
ধারা ২৩০ পরিবর্তিত অভিযােগ অনুসারে অপরাধের বিচারের জন্য পূর্বে অনুমতি প্রয়ােজন হলে মামলা স্থগিত
নতুন, পরিবর্তিত বা সংযােজিত অভিযােগে বর্ণিত অপরাধ যদি এইরূপ হয় যে, মােকদ্দমা চালাইবার জন্য পূর্বানুমতি গ্রহণ করা প্রয়ােজন, তা হলে উক্ত অনুমতি গৃহিত না হওয়া অবধি মামলা চালানাে যাবে না; তবে নতুন বা পরিবর্তিত অভিযােগের ভিত্তি যে ঘটনার উপর প্রতিষ্ঠিত, সেই ঘটনার ভিত্তিতে মামলা চালাইবার পূর্বানুমতি গ্রহণের প্রয়ােজন নাই।
ধারা ২৩১ অভিযােগ পরিবর্তন হলে সাক্ষী পুনরাহ্বান
বিচার শুরু হওয়ার পর আদালত কর্তৃক যখন অভিযােগ পরিবর্তিত বা নতুন সংযােজিত হয়, তখন সরকার পক্ষ ও আসামি পক্ষকে যে সকল সাক্ষীর জবানবন্দি ইতােপূর্বে গ্রহণ করা হয়েছে, এইরূপ পরিবর্তন ও সংযােজনের ভিত্তিতে তাহাদিগকে কাহারও জবানবন্দি গ্রহণ করে অনুমতি দিতে হবে এবং আদালত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করলে অতিরিক্ত কোন সাক্ষী তলবেরও অনুমতি দিবেন।
ধারা ২৩২ গুরুতর ভুলের ফল
১) রিভিশন ক্ষমতা বা সপ্তবিংশ অধ্যায়ে প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়ােগকালে আপিল আদালত বা হাইকোর্ট বিভাগ যদি মনে করেন যে, অভিযােগ গঠিত হওয়ায় কিংবা উহাতে ভুল থাকায় কোন অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তি তার আত্মপক্ষ সমর্থনের ব্যাপারে বিভ্রান্ত হয়েছে, তা হলে উক্ত আদালত যেইরূপ উপযুক্ত মনে করেন, সেইরূপভাবে অভিযােগ গঠন করে নতুন বিচারের নির্দেশ দিবেন।
২) আদালত যদি মনে করেন যে, মােকদ্দমার ঘটনাবলী এইরূপ যে, প্রমাণিত তথ্যাবলীর ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে কোন বৈধ অভিযােগ প্রণয়ন করা যাবে না, তা হলে দণ্ডাদেশ রদ করে দিবেন।
উদাহরণ
দণ্ডবিধির ১৯৬ ধারার অপরাধের দায়ে ক-কে এমন একটি অভিযােগের ভিত্তিতে দণ্ডিত করা হলাে, যাতে উল্লেখ করা হয় নাই যে, যে সাক্ষ্য সে অসৎ ভাবে সত্য বা প্রকৃত বলে ব্যবহার করেছে বা ব্যবহারের চেষ্টা করেছে, তাকে সে মিথ্যা বা বানােয়াট বলে জানিত। আদালত যদি মনে করেন যে, ক-এর অনুরূপ জ্ঞান থাকা সম্ভব ছিল এবং অভিযােগে তার অনুরূপ জ্ঞান সম্পর্কিত বিবৃতি থাকায় সে তার আত্মপক্ষ সমর্থনে বিভ্রান্ত হয়েছে, তা হলে সংশােধিত অভিযােগের ভিত্তিতে নতুন বিচারের নির্দেশ দিবেন; কিন্তু কার্যক্রম হতে যদি প্রতীয়মান হয় যে, ক-এর অনুরূপ জ্ঞান থাকা সম্ভব ছিল না, তা হলে আদালতে দণ্ডাদেশ রদ করে দিবেন।