- Get link
- X
- Other Apps
Part 7 Of Appeal, Reference and Revision
সপ্তম ভাগ - আপিল, রেফারেন্স এবং রিভিশন বিষয়ে
Chapter 31 Of Appeals
একত্রিশতম অধ্যায় - আপিল বিষয়ে
ধারা ৪০৪ অনুরূপ বিধান না থাকলে আপিল চলবে না
এই বিধি বা বর্তমানে বলবৎ অপর কোন আইনের বিধানানুসারে না হলে অন্য কোনভাবে কোন ফৌজদারি আদালতের রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না।
আপিল সম্পর্কিত আলােচনা ও প্রয়োগ
আপিলঃ
আইনের সৃষ্টি বলেই যে অধিকারের বিষয় হিসাবে আপিল চলবে তা নয়। খাদ্য আইন, ১৯৫৬ এর ধারা ৮ এর বিধান আপিলের অধিকার দেয় না। এই ধারা মােতাবেক বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট ফৌজদারি কার্যবিধির অধীন কোন ম্যাজিস্ট্রেট নয় এবং তার আদেশ আপিলযােগ্য নয়।
ফৌজদারি আদালতের আপিল ক্ষমতা
ফৌজদারি কার্যবিধি (সংশােধন) আইন, ১৯৪৮-এর অধীন কাজ করে বিশেষ জজ খালাসের আদেশ প্রদান করলে ৩১শ অধ্যায় অনুসারে সরকার আপিল দায়ের করতে পারে এবং উক্ত আপিল যথার্থ । ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০৪ ধারার অর্থানুযায়ি বিশেষ জজের আদালত একটি ফৌজদারি আদালত।
আপিল দায়েরে বিলম্বঃ
যদি উপযুক্ত কারণ থাকে, তবে আপিল দায়েরে বিলম্ব ক্ষমা করা যায়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আপিল শুনিবার ক্ষমতা রাখেনঃ
দ্বিতীয় সংশােধনীতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০৭ ধারা মােতাবেক আপিল শুনানির ক্ষমতা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া হয়েছে, তবে তিনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর অধঃস্তন।
সহকারি দায়রা জজের বিরুদ্ধে আপিলঃ
যে সহকারি দায়রা জজকে অতিরিক্ত দায়রা জজ গণ্য করা হয় তিনি যদি পাঁচ বৎসর বা তার কম মেয়াদের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন, তবে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে আপিল চলে।
সহকারি দায়রা জজ আপিল শুনিতে পারেন নাঃ
অতিরিক্ত দায়রা জজ হিসাবে গণ্য সহকারি দায়রা জজ সকল উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত দায়রা জজ গণ্য হবেন না। অতএব এইরূপ সহকারি দায়রা জজ কোন আপিল রিভিসন, রেফারেন্স এবং রিভিউ শুনিতে পারেন না এবং দায়রা জজ তার কাছে হস্তান্তর করতে পারে না।
আপিল উঠানাে যেতে পারেঃ
দণ্ডিত ব্যক্তি আপিল উঠিয়ে নিতে পারেন এবং অনুরূপ আপিল না চালাইবার কারণে খারিজ করা যায়।
আপিল না করলেও খালাসের সুবিধা পাবেঃ
আপিল করেন নাই এমন আসামি ফজলুল হকের খালাসের আদেশ আমরা প্রদান না করলে ইহার অর্থ দাঁড়ায় আমরা একটি অবৈধ আদেশকে স্থায়ী করার অনুমতি প্রদান করতেছি। সেই প্রেক্ষিতে দণ্ডাজ্ঞা এবং শাস্তির সম্পূর্ণ আদেশ রদ হবে এবং গরহাজির আসামি ফজলুল হকও অত্র আদেশের সুবিধা পাবে।
আসামি কোর্টে যদি দোষ স্বীকার করে, তবে তা লিপিবদ্ধ করতে হবেঃ
আসামি যদি ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে দোষ স্বীকার করে, তবে ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা২৪৩ প্রযােজ্য এবং যদি দায়রা আদালতে দোষ স্বীকার করে, তবে উক্ত আইনের ধারা২৬৫ঙ প্রযােজ্য। উভয় ধারা হতে দেখা যায় যে, আসামি Guilty Plead করে আদালতে দোষ স্বীকার করলে সংশ্লিষ্ট আদালত আসামির ভাষায় উহা লিপিবদ্ধ করবেন। অতঃপর উক্ত দোষ স্বীকারের ভিত্তিতে উহা লিপিবদ্ধ করবেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। Guilty Plead করলে দণ্ডের আদেশ দেওয়া যায়। কিন্তু তার অপরাধের সমর্থনে যদি রেকর্ডে কোন কিছু না থাকে, তবে এইরূপ দণ্ডের আদেশ যথােপযুক্ত হবে না [5 BCR 265 AD]।
ধারা ৪০৫ ক্রোককৃত সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের আবেদন অগ্রাহ্য হলে তার বিরুদ্ধে আপিল
কোন আদালত সম্পত্তি বা সম্পত্তির বিক্রয়লব্ধ অর্থ প্রদানের জন্য কোন ব্যক্তির ধারা ৮৯-এর অধীন রুজুকৃত আবেদনপত্র অগ্রাহ্য করলে তিনি সেই আদালতে আপিল করতে পারেন, যে আদালতে পূর্ববর্তী আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে সাধারণত আপিল করা চলে।
ধারা ৪০৬ শান্তিরক্ষা কিংবা সদাচরণের মুচলেকার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল
কোন ম্যাজিস্ট্রেট যে ব্যক্তিকে ১১৮ ধারার অধীন শান্তি রক্ষার বা সদাচরণের জন্য জামানত দেওয়ার আদেশ দিলে সেই ব্যক্তি উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে আপিল দায়ের করতে পারবে। [১ম শর্তাংশটি ফৌজদারি কার্যবিধি (সংশােধন) ২০০৯ (২০০৯ সনের ৩২নং আইনবলে বাতিলকৃত ।]
তবে শর্ত থাকে যে, যে সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধারা ১২৩ এর উপ-ধারা (২) বা (৩) এর বিধানানুসারে দায়রা জজের নিকট পেশ করে মােকদ্দমা করা হয়েছে, উহাদের ক্ষেত্রে এই ধারার কোন বিধান প্রযােজ্য হবে না।
ধারা ৪০৬ক জামানত গ্রহণ করতে অগ্রাহ্য করা বা জামানত নাকচ করার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল
১২২ ধারার অধীন জামানত গ্রহণ করতে অস্বীকার বা জামানত নাকচ করে প্রদত্ত আদেশে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন
ক) দায়রা আদালতে, যদি চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ প্রদান করেন;
খ) চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট, যদি চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া কোন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত আদেশ প্রদান করেন, অথবা
গ) জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট, যদি অপর যেকোন ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী বা জুডিসিয়াল যাই হউক, উক্ত আদেশ প্রদান করেন।
ধারা ৪০৭ দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল
দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর কোনাে ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারে দন্ডিত কোন ব্যক্তি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আপিল করতে পারবেন, যিনি নিজে উক্ত আপিলের শুনানি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারেন বা কোনাে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট আপিলটি মীমাংসার জন্য প্রেরণ করতে পারেন, এবং ঐভাবে প্রেরিত আপিল প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।
ধারা ৪০৮ যুগ্ম দায়রা জজ বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল
যখন কোন ব্যক্তি কোন যুগ্ম দায়রা জজ, মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট বা কোন প্রথম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারে দণ্ডিত হয়, সেই ব্যক্তি দায়রা জজের নিকট আপিল করতে পারবে। তবে শর্ত এই যে-
ক) যখন কোন মামলায় যুগ্ম দায়রা জজ পাঁচ বৎসরের বেশি সময়ের কারাদন্ডের আদেশ দেন, তখন সংশ্লিষ্ট বিচারে দণ্ডিত সকল বা যে দণ্ডিত ব্যক্তিকে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করতে হবে।
খ) যখন কোন ব্যক্তি কোন মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট বা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক দণ্ডবিধির ১২৪ ধারায় বর্ণিত অপরাধের বিচারে দন্ডিত হয়, তখন তাকে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করতে হবে।
ধারা ৪০৯ দায়রা আদালতে আপিল যেভাবে শুনানি হয়
দায়রা আদালত কিংবা দায়রা জজের নিকট পেশকৃত আপিল দায়রা জজ অথবা অতিরিক্ত দায়রা জজ শ্রবণ করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অতিরিক্ত দায়রা জজ শুধুমাত্র সেই সকল আপিলই শ্রবণ করবেন, যেইগুলি সম্পর্কে সরকার সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্দেশ দেন দায়রা জজ সেইগুলি তার নিকট অর্পণ করে থাকেন।
ধারা ৪১০ দায়রা আদালতের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল
দায়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজের বিচারে দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করতে পারবে।
ধাৱা ৪১২ আসামি দােষ স্বীকার করে নিলে কতিপয় ক্ষেত্রে আপিল চলবে না
ইতোপূর্বে এ আইনে যাই বিবৃত থাকুক না কেন, আসামি দোষ স্বীকার করলে এবং উক্ত স্বীকারােক্তির ভিত্তিতে দায়রা আদালত বা যে কোন মেট্রোপলিটন বা কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট তাকে দণ্ডদান করলে দন্ডের পরিমাণ বা আইনগত যৌক্তিকতা ব্যতীত উক্ত দণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো আপিল চলবে না।
ধারা ৪১৩ তুচ্ছ মামলার আপিল নাই
ইতােপূর্বে এই আইনে যাই বিধৃত থাকুক না কেন, দায়রা আদালত অনধিক শুধুমাত্র একমাস কারাদণ্ড দিলে বা দায়রা আদালত বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণীর অপর কোন ম্যাজিস্ট্রেট অনধিক পঞ্চাশ টাকা জরিমানা করলে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি কোন আপিল করতে পারবে না।
ব্যাখ্যাঃ উক্ত আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট মূল শাস্তি স্বরূপ কারাদণ্ড না দিয়া জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডের আদেশ দিলে এইরূপ কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে কোন আপিল চলবে না।
ধারা ৪১৪ সংক্ষিপ্ত বিচারের কতিপয় দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল নাই
ইতােপূর্বে আইনের যা কিছুই বিধৃত থাকুক না কেন, সংক্ষিপ্তভাবে বিচারকৃত কোন মােকদ্দমায় ২৬০ ধারার অধীন কার্য করতে ক্ষমতাবান কোন ম্যাজিস্ট্রেট অনধিক শুধুমাত্র দুই শত টাকা জরিমানা করলে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি কোন আপিল করতে পারবে না।
ধারা ৪১৫ - ৪১৩ ও ৪১৪ ধারার শর্ত
৪১৩ বা ৪১৪ ধারায় বর্ণিত কোন দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করা যেতে পারে, যদি উক্ত দণ্ডাদেশে বর্ণিত দণ্ডের সঙ্গে অপর কোন দণ্ড সংযুক্ত করা হয়; তবে যে দণ্ডাদেশ অন্য কোনভাবে আপিলযােগ্য নহে সেই দণ্ডাদেশ শুধুমাত্র দণ্ডিত ব্যক্তিকে শান্তি রক্ষার জন্য জামানত দিবার আদেশ দেওয়া হয়েছে বলেই আপিলযােগ্য হবে না।
ব্যাখ্যা।-অত্র ধারার অর্থানুসারে জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ড দুই বা ততােধিক শাস্তির সংযুক্তি নয়।
ধারা ৪১৫ক কতিপয় ক্ষেত্রে আপিলের বিশেষ অধিকার
অত্র অধ্যায়ে যাই বিধৃত থাকুক না কেন, যখন একই বিচারে একাধিক ব্যক্তি দণ্ডিত হয় এবং তাদের মধ্যে যে কোন একজনের বিরুদ্ধে আপিলযােগ্য রায় বা আদেশ প্রদান করা হয়, তখন এইরূপ বিচারে দণ্ডিত ব্যক্তিদের সকলের বা যে কোন একজনের আপিল দায়ের করার অধিকার থাকবে।
ধারা ৪১৭ খালাসের ক্ষেত্রে আপিল
১) উপ-ধারা (৪) এ নিহিত বিধান সাপেক্ষে সরকার যে কোন ক্ষেত্রে আপিল দায়ের করার নিমিত্তে সরকারি কৌসুলীকে নির্দেশ দিতে পারেন-
ক) কোন আদালত কর্তৃক মূল মামলায় কিংবা আপিলে প্রদত্ত খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে;
খ) ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক মূল বা আপিলে খালাসের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে।
২) ৪১৮ ধারায় যাই থাকুক না কেন, উক্তরূপ খালাসের আদেশ যদি ফরিয়াদী কর্তৃক আনীত মামলায় প্রদত্ত হয়ে থাকে এবং আদেশে আইনের ভূল ব্যাখ্যার কারণে ন্যায় বিচারের ব্যর্থতা থাকে, তা হলে উক্ত ফরিয়ানী উক্ত খালাসের আদেশ বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে এইরূপ যে কোন হেতুবাদে আপিল দায়ের করতে পারবে-
ক) দায়রা আদালত কর্তৃক প্রদত্ত মূল খালাস এর আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে;
খ) যে কোন ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত প্রকৃত মূল খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে।
৩) খালাসের আদেশ হওয়ার তারিখ হতে ষাট দিন অতিবাহিত হইবার পর ফবিয়াদী খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে কোন আপিল দায়ের করলে হাইকোর্টে তা গ্রাহ্য হবে না।
৪) কোন ক্ষেত্রে খালাসের বিরুদ্ধে আপিল গৃহীত না হলে সেই ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন অপিল করা চলবে না।
ধারা ৪১৭ক অপর্যাপ্ত দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল
১) কোন আদালতের বিচারে দণ্ডাদেশের ক্ষেত্রে দণ্ডাদেশের অপর্যাপ্ততার হেতুতে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করার জন্য সরকার সরকারি কৌসুলীকে নির্দেশ দিতে পারবেন।
২) কোন আদালতের বিচারে প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ফরিয়াদী দণ্ডের অপর্যাপ্ততার কারণে আপিল দায়ের করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, দণ্ডাদেশ হওয়ার তারিখ হতে ষাট দিন অতিক্রম হইবার পর এই উপ-ধারার অধীন কোন আপিল আদালত কর্তৃক কোন আপিল গৃহীত হবে না ।
৩) দণ্ডের অপর্যাপ্ততার হেতুতে কোন আপিল দায়ের করা হলে আপিল আদালত দন্ড পরিবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার জন্য আসামিকে যুক্তিসঙ্গত সুযােগ দান না করে দণ্ড বৃদ্ধি করবেন না এবং কারণ দর্শাইবার সময় আসামি তার খালাস প্রাপ্তি বা দণ্ড হ্রাসের জন্য প্রার্থনা করতে পারেন।
ধারা ৪১৮ কি কি বিষয়ে আপিল গ্রহণযােগ্য
ঘটনার প্রশ্নে এবং আইনের প্রশ্নে আপিল হতে পারে।
ব্যাখ্যা।-অত্র ধারার উদ্দেশ্যে কোন দণ্ডের কথিত কঠোরতা আইনের বিষয় বলে বিবেচিত হবে।
ধারা ৪১৯ আপিলের আবেদনপত্র
প্রত্যেকটি আপিল লিখিত আবেদনপত্রের আকারে করতে হবে এবং আপিলকারি বা তার আইনজীবী কর্তৃক দায়ের হতে হবে এবং এইরূপ প্রত্যেকটি আবেদনপত্রের সাথে যে আদালতে দায়ের করা হতেছে সেই আদালত ভিন্নরূপ নির্দেশ না দিলে যেই রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হতেছে উহার একটি নকল দিতে হবে।
ধারা ৪২০ আপিলকারি কারাগারে থাকলে যে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে
আপিলকারি কারাগারে থাকলে সে রায় প্রভৃতির নকল সমেত তার আপিলের আবেদনপত্র কারাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট পেশ করতে পারবে এবং অতঃপর উক্ত কর্মকর্তা উক্ত আবেদনপত্র ও নকল যথাযথ আপিল আদালতের নিকট প্রেরণ করবেন।
ধারা ৪২১ আপিল সরাসরি খারিজ
১) ধারা ৪১৯ বা ৪২০ এর অধীন আবেদনপত্র ও নকল পাইবার পর আপিল আদালত উহা বিবেচনা করবেন, এবং যদি ইহা বিবেচনা করেন যে, হস্তক্ষেপের মত পর্যাপ্ত কারণ নাই, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে আপিল খরিজ করতে পারবেন। তবে ধারা ৪১৯-এর অধীন রুজুকৃত আপিলের ক্ষেত্রে আপিলকারি বা তার আইনজীবীকে বক্তব্য পেশের যুক্তিসঙ্গত সুযােগ না দিয়া আপিল খারিজ করা যাবে না ।
২) অত্র ধারার অধীন আপিল খারিজ করার পূর্বে আদালত মামলার নথিপত্র তলব করতে পারবেন, কিন্তু আদালত এইরূপ তলব করতে বাধ্য থাকবেন না ।
ধারা ৪২২ আপিলের নােটিশ
আপিল আদালত যদি সরাসরি আপিল খারিজ না করেন তা হলে যে সময় ও যে স্থানে উক্ত আপিল শ্রবণ করা হবে, সেই সময় ও স্থান সম্পর্কে আপিলকারি বা তার আইনজীবীকে এবং এতদবিষয়ে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কর্মকর্তাকে নােটিশ দিবেন এবং উক্ত কর্মকর্তা আবেদন করলে তাকে আপিলের কারণসমূহের একটি নকল দিবেন; এবং ৪১৭ ধারা অনুসারে আপিলের ক্ষেত্রে আপিল আদালত আসামিকে অনুরূপ নােটিশ দিবেন।
ধারা ৪২৩ আপিল নিষ্পত্তির ব্যাপারে আপিল আদালতের ক্ষমতা
১) মামলার নথিপত্র পূর্ব হতেই আদালতে না থাকলে আপিল আদালত তা তলব করবেন। অতঃপর নথিপত্র পাঠ করে এবং আপিলকারি বা তার কৌসুলী হাজির হলে তার বক্তব্য এবং পাবলিক প্রসিকিউটর হাজির হলে তার বক্তব্য শ্রবণ করে এবং ধারা ৪১৭-এর অধীন আপিলের ক্ষেত্রে আসামি হাজির হলে তার বক্তব্য শ্রবণ করে আদালত যদি মত পােষন করেন যে, হস্তক্ষেপ করার মত পর্যাপ্ত কারণ নাই, তা হলে আপিল খারিজ করতে পারবেন,
ক) খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে উক্ত আদেশ পরিবর্তন করতে পারবেন এবং নির্দেশ দিতে পারবেন যে, আরাে তদন্ত করতে হবে বা আসামির পুনর্বিচার হবে বা তাকে বিচারের জন্য পাঠাইতে হবে, যেখানে যেরূপ প্রযােজ্য, বা তাকে দোষী সাব্যস্ত করে আইনানুসারে তাকে দণ্ড দিতে পারবেন।
খ) দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে, (১) সিদ্ধান্ত ও দণ্ডাদেশ রদ করতে পারবেন এবং আসামিকে খালাস দিতে বা রেহাই দিতে পারবেন বা তাকে এইরূপ আপিল আদালতের অধঃস্তন উপযুক্ত এখতিয়ারবান কোন আদালত কর্তৃক পুর্নবিচারের বা বিচারের জন্য সােপর্দ করার আদেশ দিতে পরিবেন, বা, (২) দণ্ড বহাল রাখিয়া, সিদ্ধান্ত রদপূর্বক বা না করে দণ্ডাদেশে হ্রাস করতে পারবেন, বা, (৩) দণ্ড এইরূপ হ্রাস করে বা না করে এবং সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বা না করে দণ্ডের প্রকৃতি পরিবর্তন করতে পারবেন, তবে ধারা ১০৬ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে দণ্ড বৃদ্ধি করতে পারবেন না;
খখ) দণ্ড বৃদ্ধির জন্য আপিল করা হলে, (১) সিদ্ধান্ত ও দণ্ড রদ করতে এবং আসামিকে খালাস বা রেহাই দিতে বা যথাযােগ্য আদালতে তার পুর্নবিচারের আদেশ দিতে পারবেন, বা, (২) সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দণ্ডাদেশ বহাল রাখিয়া, বা, (৩) সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বা না করে দণ্ডের প্রকৃতি বা পরিমাণ, বা দণ্ডের প্রকৃতি ও পরিমাণ এইরূপ পরিবর্তন করতে পারবেন যাতে দণ্ডহাস কিংবা বৃদ্ধি হয়;
গ) অন্য কোন আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে উক্ত আদেশ পরিবর্তন করে কিংবা বিপরীত আদেশ দান করতে পারবেন;
ঘ) ন্যায়সংগত কিংবা যথাযথ কোন সংশােধন করতে পারবেন বা কোন সংগত বা প্রাসঙ্গিক আদেশ দিতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, দণ্ড বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার জন্য আসামিকে সুযােগ দান না করে দণ্ড বাড়ানাে যাবে না। আরও শর্ত থাকে যে, যে দণ্ড কিংবা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে সেই দণ্ড বা আদেশ দানকারি আদালত একই অপরাধের জন্য আসামিকে যে দণ্ড প্রদান করতে পারিতেন, আপিল আদালত তার চাইতে অধিক দণ্ড দান করবেন না।
ধারা ৪২৪ অধঃস্তন আপিল আদালতের রায়
মূল অধিক্ষেত্রসম্পন্ন ফৌজদারি আদালতের রায় সম্পর্কে ষড়বিংশ অধ্যায়ে যে নিয়মাবলি বিধৃত আছে, তা যতদূর সম্ভব হাইকোর্ট বিভাগ ব্যতিত অন্য আপিল আদালতের রায়ের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য হবে। তবে শর্ত থাকে যে, আপিল আদালত ভিন্নরূপ নির্দেশ না দিলে রায় শুনিবার জন্য আসামিকে হাজির করা হবে না কিংবা তাকে হাজির হতে বলা হবে না।
ধারা ৪২৫ আপিল হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ নিম্ন আদালতে প্রত্যায়িত করে পাঠাইতে হবে
১) এই অধ্যায়ের অধীন হাইকোর্ট বিভাগ আপিলে কোন মামলার নিষ্পত্তি করলে হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত রায় বা আদেশ যে আদালত কর্তৃক আপিলযােগ্য সিদ্ধান্ত, দণ্ড বা আদেশ লিপিবদ্ধ বা প্রদত্ত হয়েছিল সেই আদালতে প্রত্যায়িত করে পাঠাইবেন। তবে শর্ত থাকে যে উক্ত সিদ্ধান্ত, দণ্ড বা আদেশ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ব্যতিত অন্য কোন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ বা প্রদত্ত হলে, প্রত্যয়নটি ক্ষেত্রমতে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রেরিত হবে।
(২) যে আদালতের নিকট হাইকোর্ট বিভাগ স্বীয় রায় বা আদেশ প্রেরণ করেন, সেই আদালত অতঃপর হাইকোর্ট বিভাগের রায় বা আদেশের সাথে সঙ্গতি রেখে আদেশ
দিবেন এবং প্রয়ােজন হলে তদানুসারে সেই নথিপত্র সংশােধন করেন।
ধারা ৪২৬ আপিল পেন্ডিং থাকলে দণ্ড স্থগিত
১) দণ্ডিত ব্যক্তির আপিল সাপেক্ষে আদালত লিখিতভাবে কারণ লিপিবদ্ধ করে আদেশ প্রদান করতে পারবেন যে, আপিলকৃত দণ্ড বা আদেশ কার্যকরিকরণ স্থগিত থাকবে এবং আসামি আটক থাকলে আরও নির্দেশ দিতে পারবেন, যে তাকে জামিনে বা তার নিজের দেয়া বন্ডে মুক্তি দিতে হবে।
২) আপিলকারিকে জামিনে মুক্তিদান
অত্র ধারায় আপিল আদালতকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা হাইকোর্ট বিভাগের অধঃস্তন কোন দণ্ডিত ব্যক্তির আপিলের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগও প্রয়ােগ করতে পারবেন।
২ক) কোন ব্যক্তি আদালত কর্তৃক অনূর্ধ্ব এক বৎসর মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং উক্ত দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করা চলিলে দণ্ডিত ব্যক্তি আপিল করার ইচ্ছা করতেছে বলে যদি আদালতের সন্তুষ্টি বিধান করতে পারে, তা হলে আদালত আদেশ দিতে পারবেন যে, আপিল দায়ের ও উপ-ধারা (১)-এর অধীন আপিল আদালতের সংগ্রহের জন্য আদালতের মতানুযায়ি যেই সময় পর্যাপ্ত, সেই সময়ের জন্য সে জামিনে মুক্ত থাকবে এবং যতদিন সে জামিনে মুক্ত থাকবে ততদিন পর্যন্ত কারাদণ্ড স্থগিত রহিয়াছে বলে বিবেচিত হবে।
২খ) হাইকোর্ট বিভাগ যখন পরিতুষ্ট হন যে, কোন দণ্ডিত ব্যক্তিকে যে দণ্ড হাইকোর্ট বিভাগ প্রদান করেছেন বা বহাল রাখিয়াছেন সেই দণ্ডের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিলের জন্য বিশেষ অনুমতি প্রদত্ত হয়েছে, তখন হাইকোর্ট বিভাগ উপযুক্ত মনে করলে আদেশ দিতে পারবেন যে, আপিল সাপেক্ষে আপিলকৃত দণ্ড কিংবা আদেশ স্থগিত থাকবে এবং দণ্ডিত ব্যক্তি আটক থাকলে তাকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে।
৩) আপিলকারি যখন শেষ পর্যন্ত কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়, তখন যে সময়ের জন্য সে মুক্ত ছিল, দণ্ডের মেয়াদ হিসাবের সময় উহা বাদ দিতে হবে।
ধারা ৪২৭ খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে আসামিকে গ্রেফতার
যখন ধারা ৪১৭ বা ধারা ৪১৭ক-এর অধীন আপিল রুজু করা হয়, তখন হাইকোর্ট বিভাগ বা অপর কোন আপিল আদালত ওয়ারেন্ট জারিপূর্বক নির্দেশ দিতে পারবেন যে, আসামিকে গ্রেফতার করে হাইকোর্ট বা কোন অধঃস্তন আদালতে হাজির করা হউক এবং যে আদালতে তাকে হাজির করা হয় সেই আদালত আপিলের নিস্পত্তি সাপেক্ষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করতে পারবেন কিংবা তাকে জামিনে দিতে পারবেন।
ধারা ৪২৮ আপিল আদালত অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে বা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারেন
১) এই অধ্যায়ের অধীন কোন আপিল বিবেচনার সময় আপিল আদালত যদি অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ আবশ্যক বলে মনে করেন, তা হলে তার কারণ লিপিবদ্ধ করবেন এবং নিজে সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারবেন, বা কোন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক উহা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবেন, বা আপিল আদালত যখন হাইকোর্ট বিভাগ হয়, তখন কোন দায়রা আদালত বা কোন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক উহা গ্রহণ করার নির্দেশ দিতে পারবেন।
২) দায়রা আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক যখন অতিরিক্ত সাক্ষ্য গৃহিত হয়, ইহা বা তিনি অনুরূপ সাক্ষ্য সত্যায়নপূর্বক তা আপিল আদালতে প্রেরণ করবেন, এবং উক্ত আদালত অতঃপর বিচার শুরু করবেন।
৩) আপিল আদালত ভিন্নরূপ আদেশ প্রদান না করলে অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আসামি বা তার কৌসুলী উপস্থিত থাকবেন।
৪) এই ধারার অধীন সাক্ষ্য গ্রহণ ইনকোয়ারির অনুরূপভাবে পঞ্চবিংশ অধ্যায়ের বিধান অধীন করতে হবে।
ধারা ৪২৯ আপিল আদালতের বিচারকগণ রায়ের ব্যাপারে সমসংখ্যা বিভক্ত হলে, তখনকার পদ্ধতি
আপিল আদালতের বিচারকগণ যখন তাদের অভিমতে সমানভাবে বিভক্ত হন, তখন তাদের অভিমতসমেত মােকদ্দমাটি একই আদালতের অপর একজন বিচারকের নিকট পেশ করতে হবে এবং তিনি যেরূপ উপযুক্ত মনে করেন, সেইরূপ শুনানির (যদি থাকে) তার অভিমত প্রদান করবেন এবং রায় বা সিদ্ধান্ত তার অভিমত অনুসারে প্রদত্ত হবে।
ধারা ৪৩০ আপিলে আদেশে চূড়ান্ত অবস্থা
৪১৭ ধারা, ৪১৭ক ধারা এবং দ্বাবিংশ অধ্যায়ে যে সকল বিষয়ে বিধান আছে সেই সকল ক্ষেত্র ব্যতিত আপিল আদালত কর্তৃক আপিলে প্রদত্ত রায় ও আদেশ চূড়ান্ত হবে।
ধারা ৪৩১ আপিল পণ্ড হওয়া
৪১৭ ধারা বা ৪১৭ক ধারার অধীন প্রত্যেকটি আপিল আসামির মৃত্যু হলে চূড়ান্তভাবে পণ্ড হয়ে যাবে এবং অত্র অধ্যায়ের অধীন অপরাপর প্রত্যেকটি আপিল (জরিমানার বিরুদ্ধে আপিল ব্যতিত) আপিলকারির মৃত্যু হলে চূড়ান্তরূপে পণ্ড হয়ে যাবে।