- Get link
- X
- Other Apps
Section 96 Appeals from Original Decrees - Civil Procedure Law
ধারা ৯৬ মূল ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল - দেওয়ানী কার্যবিধি আইন
ধারা ৯৬। মূল ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল
১) এই আইনের গর্ভে বা সময়কালীন বলবৎ অন্য কোন আইন দ্বারা অন্যভাবে ব্যক্তভাবে বিধান ব্যতিরেকে, মূল এখতিয়ার প্রয়ােগকারী আদালত প্রদত্ত প্রত্যেক ডিক্রী হতে উক্ত আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল শ্রবণের জন্য ক্ষমতা প্রাপ্ত আদালতে আপিল দায়ের করা যাবে।
২) একতরফা প্রদত্ত মূল ডিক্রী হতেও আপিল দায়ের করা চলবে ।
৩) পক্ষগণের সম্মতিতে আদালত দ্বারা প্রদত্ত ডিক্রী হতে কোন আপিল দায়ের করা চলবে না।
৯৬ ধারার বিশ্লেষণ - মূল ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল
আপিল (Appeal) বলতে কোন নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় কিংবা ডিক্রীর সম্পূর্ণ বা আংশিক ভুলের যথার্থতা পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে উচ্চ-আদালতের সংশ্লিষ্ট মামলাটি অপসারণ করাকে বুঝায়। আপিলের বলে একজন ক্ষুদ্ধ পক্ষ নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় বা ডিক্রীটি সম্পূর্ণভাবে কিংবা আংশিকভাবে ভুলের কারণে বাতিল করাইবার উদ্দেশ্যে উর্ধ্বতন আদালতে মামলাটি অপসারণ করে আইন দ্বারা অর্পিত উপশম লাভ করার অধিকারী হয়। আপিলের ভিত্তিতে প্রদত্ত যে কোন রায় বা ডিক্রী মূল মামলার রায় বা ডিক্রীর ন্যায় কার্যকরী হয়ে থাকে।
আপিলের সংজ্ঞায় কলিকাতা হাইকোর্ট
আপিলের সংজ্ঞায় কলিকাতা হাইকোর্ট তার নগেন্দ্র বনাম সুরেন্দ্র (36 C.W.N 803) মামলায় এই সিদ্ধান্তে উপণীত হন যে, নিম্ন-আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন মামলার রায়ের বিরুদ্ধে যে কোন ক্ষুব্ধ পক্ষ উক্ত মামলার রায় বাতিল, সংশােধন অথবা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য উর্দ্ধতন আদালতে মেমােরেন্ডামের আকারে যে দরখাস্ত দাখিল করা হয়, তাকেই বলা হয় আপিল।
কে আপিল করতে পারে
যে সকল ব্যক্তিগণ নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন আদালতে আপিল করতে পারেন তারা হলেন
(১) ডিক্রী জারির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এরূপ মামলার যে কোন পক্ষ অথবা তার দ্বারা নিয়ােগপ্রাপ্ত আইনগত প্রতিনিধিবৃন্দ।
(২) এরূপ স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট পক্ষের যে কোন হস্তান্তর-গ্রহীতা, যদি তার নাম মামলার নথিতে অন্তর্ভূক্ত হয়।
(৩) প্রতারণার অজুহাতে নীলাম রদের ডিক্রী জারির আদেশের বিরুদ্ধে কোন সম্পত্তির একজন নীলাম-খরিদ্দার। এরূপ ক্ষেত্রে, অন্য কোন ব্যক্তি আপিল করার অধিকারী নয়।
দেওয়ানি কার্যবিধির ৪১ নম্বর আদেশের ৪নং বিধি
পরিশেষে, দেওয়ানি কার্যবিধির ৪১ নম্বর আদেশের ৪নং বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোন মামলায় যদি একাধিক বাদী কিংবা একাধিক বিবাদী থাকে, এবং যে ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল করা হবে, তৎসম্পর্কে সকল দাবির বা সকল বিবাদীর আপত্তির একটি সাধারণ কারণ বিদ্যমান থাকে, তবে বাদীগণের অথবা বিবাদীগণের মধ্যে যে কোন একজন সমগ্র ডিক্রীটির বিরুদ্ধেই আপিল করতে পারবে । এইভাবে, উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ দেওয়ানি কার্যবিধির বিধান সাপেক্ষে, অধঃস্তন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উদ্ধতন আদালতে আপিল দায়ের করতে পারেন।
প্রথম আপিল ও দ্বিতীয় আপিলের মধ্যে পার্থক্য
প্রথম আপিল ও দ্বিতীয় আপিলের মধ্যে যে সকল পার্থক্য রয়েছে তা হল নিম্নরুপ-
দেওয়ানি কার্যবিধির ৯৬ নং ধারায় প্রথম আপিল এবং ১০০ ধারার ১ নং উপধারায় এবং ১০০ ধারার ২ নং উপধারায় তার ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে।
(১) প্রথম আপিলের ব্যাখ্যায় দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ৯৬ (১) ধারায় বলা হয়েছে অত্র আইনের কোন অংশে অথবা বর্তমানে প্রচলিত অন্য কোন আইনে স্পষ্টতঃ অন্যরূপ বিধান থাকলে মূল এখতিয়ার সম্পন্ন কোন আদালতের ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল শ্রবণের ক্ষমতাসম্পন্ন আদালতে আপিলটি দায়ের করা চলবে। অপরদিকে দ্বিতীয় আপিলের ব্যাখ্যায় দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১০০ (১) ধারায় বলা হয়েছে যে, অত্র আইনের কোন অংশে অথবা বর্তমানে প্রচলিত অন্য কোন আইনে স্পষ্টতঃ অন্যরূপ বিধান না থাকলে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অধঃস্তন কোন আদালতে আপিলের ডিক্রীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা চলবে।
(২) কোন একতরফা মূল ডিক্রীর বিরুদ্ধে দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ৯৬নং ধারার (১) উপধারার বিধান মতে প্রথম আপীর দায়ের করার যেতে পারে। পক্ষান্তরে, আপিল আদালত কর্তৃক একতরফাভাবে কোন ডিক্রীর বিরুদ্ধে দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১০০নং ধারার ২নং উপধারা অনুসারে দ্বিতীয় আপিল করা যেতে পারে।
(৩) প্রথম আপিলের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট ছাড়াও, যে কোন উচ্চতর আদালত আইন ও তথ্য উভয় প্রশ্নেরই নিষ্পত্তি করতে পারেন। কিন্তু কোন দ্বিতীয় আপিলের যদি যথেষ্ট প্রমাণ লিপিবদ্ধ থাকিয়া থাকে, সেক্ষেত্রে আইনের প্রশ্ন ছাড়াও শুধুমাত্র তথ্য বিষয়ক প্রশ্নের উপরই হাইকোর্ট মামলাটি নিষ্পত্তি করতে পারেন।
(৪) প্রথম আপিলের ক্ষেত্রে, একজন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি তখনই আপিল দায়ের করতে পারেন, যখন কোন নিম্ন আদালত হতে মামলাটির ডিক্রী প্রদান করা হয় কিংবা আপিলযােগ্য হুকুম দান করা হয়। পক্ষান্তরে, দ্বিতীয় আপিলের পার্থক্যের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে, যেখানে নিম্ন আদালতের দ্বারা নিষ্পত্তি আইন এমন রীতির বিপরীত, যার আইনের মর্যাদা রয়েছে, অথবা আইনের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন কিংবা এমন কোন রীতির উপর প্রতিষ্ঠিত যাতে আইনের মর্যাদা রয়েছে, যেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নিষ্পত্তিতে ব্যর্থ হয় অথবা কার্যধারায় উল্লেখযােগ্য ভুল ত্রুটি করে, সেক্ষেত্রে হাইকোর্টে দ্বিতীয় আপিল পেশ করা যেতে পারে।
(৫) প্রথম আপিলের হেতুবাদ অপেক্ষা দ্বিতীয় আপিলের হেতুবাদ সংকীর্ণ। কারণ, দ্বিতীয় আপিল কতিপয় বিশেষ প্রশ্ন ব্যতীত আইন ঘটিত প্রশ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
ধারা ৯৭। প্রাথমিক ডিক্রী হতে আপিল দায়ের না করলে চূড়ান্ত ডিক্রী হতে আপিল
যখন কোন পক্ষ এই আইন বলবৎ হবার পর প্রদত্ত কোন প্রাথমিক ডিক্রীর ফলে সংক্ষুব্ধ হয়েও উক্ত ডিক্রী হতে আপিল দায়ের না করে, তখন চূড়ান্ত ডিক্রী হতে দায়ের হতে পারে এরূপ কোন আপিলে উহার সঠিকতা সম্পর্কে বিবাদ হতে সে নিবৃত্ত থাকবে।
৯৭ ধারার বিশ্লেষণ
কোন কোন মােকদ্দমায় প্রথমে প্রাথমিক ডিক্রী হয় এবং সবশেষে চূড়ান্ত ডিক্রীর দ্বারা মােকদ্দমা নিষ্পত্তি করা হয়। হিসাবের মােকদ্দমায় এবং বাটোয়ারার মােকদ্দমায় এই দুই রকম ডিক্রী হয়ে থাকে। এখানে একটি কথা পরিষ্কার করে বলা আবশ্যক - মােকদ্দমার রায় হওয়ার পর তদনুসারে ডিক্রী লিপিবদ্ধ করা হয়। ডিক্রী লিপিবদ্ধ হওয়ার পরেই কেবল ঐ ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল করা যায়, তার পূর্বে নয়।
উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত
Debishashi Vs. Sorder Gobinda Rau
প্রাথমিক ডিক্রীতে যে বিষয় নিস্পত্তি হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আপিল করা হয় নাই, উক্ত বিষয় চূড়ান্ত ডিক্রীকালীন উত্থাপন বা আপত্তি করা যাবে না।
ধারা ৯৮। দুই বা ততােধিক বিচারক দ্বারা শ্রুত আপিলের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত
১) যেক্ষেত্রে দুই বা ততােধিক বিচারক সমন্বিত বেঞ্চ দ্বারা আপিল শুনানীর ক্ষেত্রে উক্ত বিচারকগণের বা তাদের ভিতর অধিকাংশের (যদি কোন) মতানুসারে আপিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
২) যেক্ষেত্রে আপিলকৃত ডিক্রীর পরিবর্তন বা রদ করে অনুরূপ মত প্রদানের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকে, সে ক্ষেত্রে উক্ত ডিক্রী বহাল রাখা হবে। তবে শর্ত থাকে যে, যেখানে কোন আদালতে দুইজনের অধিক বিচারক আছে সে আদালতে দুইজন বিচারক সমন্বয়ে বেঞ্চ গঠিত হয় এবং এই দুইজন বিচারকের ভিতর কোন একটি আইনের প্রশ্নে পার্থক্য দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে তারা যে আইনের ক্ষেত্রে মত পার্থক্য পােষণ করেন, সে আইনের প্রশ্ন বিবৃত করতে পারে এবং তখন আপিলে কেবল উক্ত প্রশ্নে অন্য এক বা একাধিক বিচারক শুনানী করবে এবং অনুরূপ বিষয়টি প্রথমবারের আপিল শ্রবণকারী বিচারকগণসহ অধিকাংশের (যদি কোন) মতানুযায়ী অনুরূপ প্রশ্নের সিদ্ধান্ত হবে।
৩) এই ধারার কোন বিধানই হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা পত্রের লেটার্স পেটেন্টের বিধানসমূহে পরিবর্তন বা অন্যভাবে প্রভাবিত করে বলে পরিগণিত হবে না।
৯৮ ধারার বিশ্লেষণ
সুপ্রীম কোর্টে অনেক দেওয়ানি মােকদ্দমার আপিল একজন বিচার না শুনে দুই বা ততােধিক বিচারক শ্রবণ করেন। সুপ্রীম কোর্টের বিচারাসনকে বেঞ্চ বলে। একজন বিচারক নিয়েও বেঞ্চ গঠিত হতে পারে। আবার দুই বা তার বেশি বিচারক নিয়েও বেঞ্চ গঠিত হতে পারে। যেখানে বিচারক দুই বা তার বেশি সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতানুসারে রায় দেয়া হয়। দুইজন বিচারকের মধ্যে আইনের প্রশ্নে মতপার্থক্য দেখা দিলে উহা শুনানির জন্য সুপ্রীম কোর্টের অন্য একজন বা একাধিক বিচারকের নিকট প্রেরিত হয়। যেই ডিক্রী এবং রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়, সেই ডিক্রী এবং রায়কে প্রাথমিকভাবে সঠিক ধরা হয়। আপিল শ্রবণকারি সেই বিচারকগণ অবশ্যই সেই ডিক্রী এবং রায় বাতিল করতে পারেন।
ধারা ৯৯। গুণাগুণ এখতিয়ার খর্ব না করলে ভ্রান্তি বা অনিয়মের জন্য ডিক্রী পরিবর্তন বা সংশােধন করা যায় না
মামলার কোন পক্ষের অপসংযােগ বা মামলার কোন কার্যধারার ভ্রান্তি, ত্রুটি বা অনিয়মতার জন্য কোন মামলার গুণগত বৈশিষ্ট্যকে বা আদালতের এখতিয়ারকে ক্ষুন্ন না করলে কোন ডিক্রী পরিবর্তন বা বহুলাংশে রদ করা যাবে না বা মামলাটি পুনঃ বিচারের জন্য প্রেরণ করা যাবে না।
৯৯ ধারার বিশ্লেষণ
আপিলের সময় কি আরজি সংশােধন করা যায়
১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৯৯ ধারার বিধান সাপেক্ষে, আপিলের সময়েও আরজি সংশােধন করা যেতে পারে।আপিলের সময় আরজি সংশােধন সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধির ৯৯ ধারায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মামলার পক্ষ বা বিষয়বস্তু সংক্রান্ত কোন ভুলের দরুণ অথবা কার্যক্রমের কোন অনিয়ম বা ভুল ভ্রান্তির, এখতিয়ার দরূন মামলার কোন ক্ষতি বা আদালতের এখতিয়ার ব্যাপার না হয়ে থাকলে আপিলের সময় কোন ডিক্রী বাতিল বা বহুলাংশে রদবদল করা চলবে না অথবা মামলাটি পুনর্বিচারের জন্য প্রেরণ করা চলবে না। নাবালকের বিরুদ্ধে প্রদত্ত মামলায় ডিক্রী এ কারণে বাতিল হবে না যে, তার পক্ষে অভিভাবক নিয়ােগের পদ্ধতিতে ক্রটি ছিল। নাবালক তৎকারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নাই।