- Get link
- X
- Other Apps
Section 88 Interpleader Suit Civil Procedure Code ধারা ৮৮ ইন্টারপ্লিডার মামলা দেওয়ানী কার্যবিধি আইন।
Section 88 Interpleader Suit Civil Procedure Code
ধারা ৮৮ একাধিক দাবিদার মামলা বা ইন্টারপ্লিডার মামলা দেওয়ানী কার্যবিধি আইন।
ধারা ৮৮। ইন্টারপ্লিডার মামলা কখন রুজু করা যেতে পারে
যেক্ষেত্রে দুই বা ততােধিক লােক, দায়বদ্ধতা বা মামলার খরচ ছাড়া অন্য কোন স্বার্থ দাবি করে না এবং ন্যায্য দাবিদারের নিকট পরিশােধ বা অর্পণ করতে প্রস্তুত থাকে এরূপ লােকের নিকট হতে একই ঋণ, টাকার অংক বা স্থাবর বা অস্থাবর অন্য সম্পত্তি পরস্পর পরিপন্থী দাবিদার হয়, সেক্ষেত্রে ঐরূপ অন্য লােক কোন লােকের নিকট উহা পরিশােধ অর্পণ করতে হবে সে বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত লাভের এবং তার নিজের জন্য ক্ষতিপূরণ লাভের উদ্দেশ্যে সমস্ত দাবিদারদের বিরুদ্ধে ইন্টারপ্লিডার মামলা করতে পারে। তবে শর্ত থাকে যে, সমস্ত পক্ষের অধিকার যা দ্বারা নির্ধারিত হতে পারে, এমন মামলা যেসকল ক্ষেত্রে বিচারাধীন আছে, তদক্ষেত্রে উক্তরূপ ইন্টারপ্লিডার মামলা করা যাবে না।
৮৮ ধারার বিশ্লেষণ
ইন্টারপ্লীডার মামলা বলতে কি বুঝ? কে এই ধরণের মামলা রুজু করতে পারে?
ইন্টারপ্লীডার মামলার ক্ষেত্রে যে সকল শর্ত থাকতে হবে তা দেওয়ানি কার্যবিধির ৩৫নং আদেশে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই আদেশের (১) নং বিধির বিধান অনুযায়ী ইন্টারপ্লীডার বিষয়ক সকল প্রকার মামলার আরজিতে অন্যান্য প্রয়ােজনীয় বিষয় বিবৃতি করা ছাড়াও নিম্নলিখিহত বিষয়গুলি উল্লেখ করতে হবে-
(ক) মামলাটির বিষয়বস্তুতে বাদীর দাবির খরচার অজুহাতে ব্যতীত অপর কোন স্বার্থ নিহিত নাই।
(খ) বিবাদীগণ পৃথকভাবে তাদের দাবি উত্থাপন করেছে; এবং এরূপ মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রে যে সকল শর্ত থাকা বিশেষভাবে প্রয়ােজন তা হল নিম্নরূপ। যথা-
(১) দুই বা ততােধিক দাবিদার থাকতে হবে। তাদের দাবিগুলি অবশ্যই পরস্পর বিরােধী বলে গণ্য হতে হবে।
(২) এরূপ দাবি অবশ্যই একই পাওনা টাকা অথবা স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত হতে হবে ।
(৩) যার নিকট এরূপ দাবি করা হয়, তার খরচার দাবি ব্যতীত অন্য কোন প্রকার স্বার্থ থাকলেই চলবে না।
(8) বাদী এবং বিবাদীগণের মধ্যে কোন প্রকার ষড়যন্ত্র হয় নাই বলে গণ্য হতে হবে।
(৫) বিবাদীগণ পৃথক পৃথকভাবে তাদের দাবি উত্থাপন করেছে বলে গণ্য করতে হবে।
(৬) যার নিকট ঋণ, পাওনা টাকা অথবা স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি দাবি করা হবে, তাকে অবশ্যই আদালতের সিদ্ধান্ত মােতাবেক তা অর্পণ করার ইচ্ছা থাকতে হবে।
দেওয়ানি কার্যবিধির ৩৫নং আদেশের ৩নং বিধি মােতাবেক, যেক্ষেত্রে ইন্টারপ্লীডার মামলার অন্যতম বিবাদী মামলার বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে, সেক্ষেত্রে ইন্টারপ্লীডার মামলার বিচারকারী আদালত অপর মামলার বিচারকারী আদালতকে বিষয়টি অবগত করলে উক্ত অপর মামলার বিচার কারী আদালত উহার বিচার স্থগিত রাখিবেন। স্থগিত মামলায় তার যে খরচ হয়েছে, ইন্টারপ্লিডার মামলায় তৎসম্পর্কে উপযুক্ত বিধান দেওয়া হবে, তাকে উক্ত খরচ ইন্টারপ্লিডার মামলার খরচার সাথে যােগ করা হবে।
অত্র আদেশের (৪) নং বিধি মােতাবেক, মামলার প্রথম শুনানির সময় আদালত ঘােষণা করতে পারেন যে, দাবিকৃত বিষয়বস্তুর ব্যাপার বিবাদীদের নিকট দাবি সকল দায়-দায়িত্বমুক্ত, তার খরচ মঞ্জুর এবং মামলা হতে বাদীকে খারিজ করে দিতে পারে, অথবা যদি আদালত ন্যায়-বিচার বা সুবিধার জন্যে প্রয়ােজন মনে করেন, তবে মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত সকলকেই পক্ষ হিসাবে শামিল করে রাখিবেন।
এই আদেশের ৫নং বিধি মােতাবেক, এজেন্ট তার প্রিন্সিপ্যালের বিরুদ্ধে বা কোন প্রজা তার ভূ-স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে উক্ত প্রিন্সিপ্যাল বা ভূ-স্বামীকে তাদের স্বত্বাধীনে দাবিদার কোন ব্যক্তি ছাড়া অপর কাহারও ইন্টারপ্লিডার মামলায় লিপ্ত হতে বাধ্য করতে পারবেন না। যেমন- ‘ক’ তার এজেন্টরূপে ‘খ’-এর নিকট এক বাক্স মণিমুক্তা জমা রাখে। ‘গ’ দাবি করে যে, ‘ক’ তার নিকট হতে অন্যায়ভাবে মণিমুক্তাগুলি নিয়েছে। এরূপ ক্ষেত্রে ‘খ’ অতঃপর ‘ক’ ও ‘গ’-এর বিরুদ্ধে ইন্টারপ্লিডার মামলা দায়ের করতে পারবেন না।
Meaning of Interpleader Suit ইন্টারপ্লীডের মামলা কি?
ইন্টারপ্লীডের মামলা বলতে একাধিক দাবিদারগণের বিরুদ্ধে রুজুকৃত এমন এক বিশেষ ধরণের মামলাকে বুঝায়, যে মামলার বিবাদ কেবলমাত্র বিবাদী-দাবিদারগণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে এবং সে বিবাদকৃত বিষয়টির উপর প্রকৃতপক্ষে বাদী তার খরচার দাবি ব্যতীত কোনরূপ আগ্রহ প্রকাশ করে না। ইন্টারপ্লীডার মামলায় বাদী তার বিবাদীগণের পরস্পরের বিরুদ্ধে সওয়াল জবাবের ব্যাপারে কোনরূপ আগ্রহ প্রদর্শন করে না। অতএব, ইন্টারপ্লীডার মামলা হচ্ছে এমন ধরনের মামলা, যাতে বাদীর কোন আগ্রহ নাই, এবং বিবাদীগণ তাদের দাবি সম্পর্কে পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে সওয়াল জওয়াব করে এবং তাদের মধ্যে যে নিজেকে সত্যিকার দাবিদার বলে প্রমাণ করতে সক্ষম হবে, বাদী তাকেই দাবিকৃত বস্তুটি অর্পণ বা প্রদান করতে সক্ষম হবে, বাদী তাকেই দাবিকৃত বস্তুটি অৰ্পণ বা প্রদান করতে প্রস্তুত রয়েছে।
১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৮৮ ধারায় ইন্টারপ্লীডার মামলার সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। ইন্টারপ্লীডার মামলার সংজ্ঞায় দেওয়ানি কার্যবিধির ৮৮ ধারায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দুই কিংবা ততােধিক ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তির নিকট একই পাওনা টাকা অথবা কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি দাবি করে এবং যার নিকট দাবি করা হয়,
উক্ত সম্পত্তির উপর তার খরচার দাবি ব্যতীত অন্য কোন দাবি-দাওয়া না থাকে এবং যদি তিনি প্রকৃত মালিকের নিকট উক্ত সম্পত্তি বা অর্থ অর্পণ করতে প্রস্তুত থাকেন, তবে সে সম্পত্তি বা অর্থ কাহার নিকট অর্পণ করতে হবে, সে বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এবং নিজের ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য উক্তরূপ দাবিদারগণের সকলের বিরুদ্ধে ইন্টারপ্লীডের মামলা দায়ের করতে পারবে। তবে, উক্ত দাবিদারগণের অধিকার যদ্বারা নির্ধারিত হতে পারে, এমন কোন মামলা যদি বিচারাধীন থাকিয়া থাকে, সেক্ষেত্রে অনুরূপ ইন্টারপ্লীডের মামলা দায়ের করা চলবে না।
এইভাবে, এই ধারা বিধান সাপেক্ষে, প্রত্যেক ইন্টারপ্লীডের মামলায় বাদী প্রকৃত দাবিদারের নিকট তার ঋণ পরিশােধ করে সকল প্রকার দায়-দায়িত্ব হতে মুক্তিলাভ করার জন্য মামলা দায়ের করে এবং তার বিবাদী-দাবিদারগণের পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে সাওয়াল-জবাবের ব্যাপারে অনাগ্রহী হয় ।
ইন্টারপ্লীড মামলার উদাহরণস্বরূপ বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, রফিক নামে কোন এক ব্যক্তি সিলেট হতে ঢাকা গামী কোচে নগদ অর্থ এবং কিছু মুল্যবান কাগজপত্র ভর্তি একটি ব্রিফকেস পায়। ব্রিফকেসটি প্রকৃত মালিকের নিকট ফেরৎ দেওয়ার উদ্দেশ্যে রফিক অতঃপর একটি দৈনিক সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। দৈনিক পত্রিকায় টাকা ভর্তি ব্রিফকেস প্রাপ্তির বিজ্ঞপ্তি দেখিয়া তিনজন দাবিদার উপস্থিত হয়। কিন্তু উক্ত ৩ ব্যক্তির সাথে কথা-বার্তায় কে প্রকৃতপক্ষে ব্রিফকেসটির মালিক তা সাব্যস্ত করা রফিকের পক্ষে সম্ভব হয় না। এমতাবস্থায়, রফিক ব্রিফকেস টি আদালতে জমা দিয়ে দাবিদার তিন জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপ্লীডের মামলা দায়ের করে। এই মামলায় রফিক শুধুমাত্র মামলার খরচ এবং পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেওয়ার বাবদ খরচ দাবি করতে পারবে। আদালত অতঃপর উক্ত তিনজন দাবিদারের পক্ষে যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ করে যাকে সত্য বলে মনে করবেন এবং সত্যিকার দাবিদারকে খরচ বাবদ রফিকের প্রাপ্য দিয়ে ব্রিফকেসটি আদালত হতে ডিক্রী বলে গ্রহণ করার জন্য আদেশ প্রদান করবেন।
ইন্টারপ্লীডের মামলা দায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধি ১৫নং আদেশে বলা হয়েছে যে, ইন্টারপ্লীডের মামলার আরজিতে অন্যান্য প্রয়ােজনীয় বিষয় বর্ণনা করা ছাড়াও নিম্নলিখিত বিষয়গুলি উল্লেখ করতে হবে। যেমন-
(ক) মামলাটির বিষয়বস্তুতে বাদীর খরচার দাবি ব্যতীত অপর কোন স্বার্থ নিহিত নাই।
(খ) বিবাদীগণ পৃথক পৃথক ভাবে তাদের দাবি উল্লেখ করেছে; এবং
(গ) বাদী তার বিবাদীদের সাথে কোনরূপ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় নাই।
নিম্নলিখিত শর্তগুলির বিধান সাপেক্ষে, ইন্টারপ্লীডের মামলা রুজু করা যেতে পারে;
(১) বিবাদীগণ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে যা দাবি করে, তা অব্যশই কোন ঋণ, অথবা কিছু অর্থ কিংবা সম্পত্তি সম্পর্কিত হতে হবে।
(২) মামলার খরচ ব্যতীত দাবিকৃত বিষয়টির উপর বাদীর অন্য কোনরূপ স্বার্থ থাকবে না।
৩) বিবাদীর পক্ষে কাহারও সাথে বাদীর কোনরূপ ষড়যন্ত্র থাকলে চলবে না।
(৪) বাদীকে অবশ্যই বিবাদকৃত ঋণ, নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ অথবা সম্পত্তি প্রকৃত দাবিদারের নিকট ফেরৎ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
(৫) প্রত্যেক ইন্টারপ্লীডিং মামলায় অবশ্য দুই কিংবা ততােধিক বিবাদী থাকতে হবে। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলি প্রত্যেক ইন্টারপ্লীডিং মামলার আরজিতে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
কে ইন্টারপ্লীডের মামলা রুজু করতে পারে? Who can institute Interpleader Suit?
একজন বাদী হিসাবে কেবলমাত্র সে ব্যক্তিই ইন্টারপ্লীডের মামলা রুজু করতে পারে যে ব্যক্তির কোন বিবাদকৃত ঋণ, অর্থ অথবা স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির উপর মামলার খরচার দাবি ব্যতীত অন্য কোন স্বার্থ নাই। এই ধরনের মামলা রুজু করতে হলে বাদীকে এই মর্মে কারণ প্রদর্শন করতে হবে যে, একাধিক দাবিদার-বিবাদীগণের মধ্যে যার দাবি আইনতঃ ন্যায্য এবং আদালতের দৃষ্টিতে গ্রহণযােগ্য বলে বিবেচিত হবে, বাদী কেবল তার নিকটই দাবিকৃত ঋণ, অথবা সম্পত্তিটি অর্পণ করতে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু আদালতের নিকট যদি এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, বাদী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কিংবা গােপন চুক্তির দ্বারা বিবাদীদের সাথে ঐক্যমতে উপনীত হওয়ার পরই বাদী এই মামলাটি রুজু করেছে, সেক্ষেত্রে ইন্টারপ্লীডের মামলা ব্যর্থ হবে।