- Get link
- X
- Other Apps
Rules Section 121 to 128 Civil Procedure Code
বিধিগুলাে ধারা ১২১ থেকে ১২৮ দেওয়ানী কার্যবিধি আইন
ধারা ১২১। প্রথম তফসিলের বিধিগুলাের প্রভাব
প্রথম তফসিলের উল্লেখিত বিধিমালা এই খন্ডের বিধানগুলাে অনুসারে রদ বা পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত এই প্রধান অংশ রূপে বিধিবদ্ধ হওয়ার মতই প্রভাবযুক্ত হবে ।
১২১ ধারার বিশ্লেষণ
দেওয়ানি কার্যবিধিতে সর্বসাকুল্যে ধারা ১৫৮টি ও এই বিধির প্রথম তফসিলে ৫১টি আদেশ আছে। ধারাগুলিতে যা বলা হয়েছে, আদেশে তা বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে। আদেশগুলি ধারার মতই শক্তিশালী। তবে আদেশগুলি পরিবর্তনীয়।
ধারা ১২২। বিধিমালা প্রণয়নে সুপ্রীম কোর্টের ক্ষমতা
সুপ্রীমকোর্ট পূর্বকালীন প্রকাশনার পর সময় সময় সুপ্রীমকোর্টেও প্রত্যেক বিভাগের কার্যপদ্ধতি এবং তার তত্ত্বাবধান সাপেক্ষে দেওয়ানি আদালত গুলাের কার্যপদ্ধতি নিয়ন্ত্রণপূর্বক বিধিমালা তৈরি করতে পারেন, এবং এরূপ প্রণীত বিধিমালা দ্বারা প্রথম তফসিলের সমস্ত বা যে কোন বিধিমালা রদ, পরিবর্তন বা সংযােজন করতে পারেন।
১২২ ধারার বিশ্লেষণ
দেওয়ানি কার্যবিধির অন্তর্ভুক্ত ৫১টি আদেশ বাতিল, সংশােধন বা সংযােজন করার ক্ষমতা সুপ্রীম কোর্টকে দেয়া হয়েছে। তবে এই বিধির ধারাসমূহে যা বলা হয়েছে তার পরিপন্থী কিছু আদেশমালায় থাকতে পারবে না। কেবল তাই নয়, অন্য আইনের পরিপন্থী কোন বিধান এই আদেশমালায় করা যাবে না।
উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তসমূহ
[AIR 1969 (Del) 142 Reddy Vs. Bewa]
পূর্বে প্রচার করার পর সময় সময় সুপ্রীমকোর্টকে দেওয়ানি আদালতগুলাের কার্যপদ্ধতি নিয়ন্ত্রক নিয়মাবলি প্রণয়ন করতে পারে এবং এ নিয়মাবলি দ্বারা প্রথম তফসিলের যে কোন নিয়ম রদ, পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারে।
ধারা ১২৩। বিধি কমিটি গঠন
১) ১২২ ধারায় বর্ণিত উদ্দেশ্যে বিধি কমিটি নামে একটি কমিটি গঠিত হবে।
২) এরূপ কমিটি নিম্নোক্ত লােক সমন্বয়ে গঠিত হবে, যথা
ক) সুপ্রীম কোর্টের তিন জন বিচারক, যাঁদের ভিতর একজন অন্তত জেলা জজ হিসাবে তিন বৎসর চাকরি করেছেন;
খ) ঐ আদালতে আইন ব্যবসা করছে এরূপ দুইজন উকিল; এবং
গ) হাইকোর্ট বিভাগের অধীনস্থ দেওয়ানি আদালতের একজন বিচারক।
৩) এরূপ কমিটির সদস্যগণ প্রধান বিচারপতি দ্বারা নিযুক্ত হবেন এবং তিনি তাঁদের একজনকে প্রেসিডেন্ট মনােনীত করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, প্রধান বিচারপতি যদি নিজকে উক্ত কমিটি সভ্য হিসাবে নির্বাচন করেন, তবে অপরাপর নিয়ােগকৃত বিচারকের সংখ্যা হবে দুই এবং প্রধান বিচারপতি কমিটির প্রেসিডেন্ট থাকবেন।
৪) অনুরূপ কমিটির প্রত্যেক সদস্য প্রধান বিচারপতি দ্বারা এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারণকৃত মেয়াদকালীন সময়ের জন্য দপ্তরে উপবিষ্ট থাকবে এবং যখন কোন সদস্য অবসর গ্রহণ করেন, পদত্যাগ করেন, মৃত্যুবরণ করেন, বা কমিটির সদস্য হিসাবে কর্ম করতে অপারগ হন তখন উক্ত প্রধান বিচারপতি তার পরিবর্তে অন্য একজন সদস্যকে নিয়োগদান করতে পারে।
৫) অনুরূপ কমিটির একজন সচিব থাকবেন, যিনি প্রধান বিচারপতি দ্বারা নিয়ােগকৃত হবেন এবং সরকার দ্বারা এতদুদ্দেশ্যে পারিশ্রমিক গ্রহণ করবেন।
১২৩ ধারার বিশ্লেষণ
এই ধারায় নিয়ম কমিটি বা বিধি কমিটি গঠনের বিধান প্রদত্ত হয়েছে। নিয়ম কমিটিতে সুপ্রীম কোর্টের তিনজন বিচারক, দুইজন অ্যাডভােকেট এবং অধঃস্তন আদালত হতে একজন বিচারক থাকবেন।
ধারা ১২৪। কমিটি সুপ্রীম কোর্টে প্রতিবেদন পেশ করবে
বিধি কমিটি প্রথম তফসিলের বিধিকে বাতিল, পরিবর্তন বা পরিবর্ধন বা নূতন কোন বিধি প্রণয়ন করার প্রস্তাবের উপর সুপ্রীম কোর্টে প্রতিবেদন পেশ করবে এবং ১২২ ধারার আওতায় কোন বিধি প্রণয়ন করার পূর্বে সুপ্রীম কোর্ট ঐ প্রতিবেদন বিবেচনা করে দেখবে।
১২৪ ধারার বিশ্লেষণ
নিয়ম কমিটি বা বিধি কমিটি নূতন নিয়ম প্রণয়ন বা পুরাতন নিয়ম পরিবর্তন প্রভৃতি বিষয়ে সুপ্রীম কোর্টের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবেন এবং সুপ্রীম কোর্ট সেই প্রতিবেদন বিবেচনার ভিতর গ্রহণ করবেন।
ধারা ১২৬। বিধিগুলো অনুমোদন সাপেক্ষ
পূর্বোক্ত বিধান অনুসারে যে সমস্ত বিধি প্রণীত হবে, উহা প্রেসিডেন্টের পূর্বকালীন অনুমােদন সাপেক্ষ হবে।
১২৬ ধারার বিশ্লেষণ
সুপ্রীম কোর্ট যেই রুল বা নিয়ম প্রণয়ন করবেন তা পূর্বে রাষ্ট্রপতি দ্বারা অনুমােদিত হতে হবে।
ধারা ১২৭। বিধিগুলাের প্রকাশনা
অনুরূপভাবে প্রণীত এবং অনুমােদিত বিধি সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হবে, এবং প্রকাশের তারিখ হতে বা নির্ধারিত হতে পারে এরূপ অপর কোন তারিখ হতে উহা তফসিলে উল্লেখিত ছিল গণ্যে একইরূপে বলবৎ ও কার্যকর করা হবে।
১২৭ ধারার বিশ্লেষণ
সুপ্রীম কোর্ট রুল বা নিয়ম প্রণয়ন করিবেন এবং রাষ্ট্রপতি তা অনুমােদন করবেন এবং সর্বশেষ তা গেজেটে প্রকাশিত হবে। গেজেট প্রকাশিত হবার পর রুল বা নিয়ম কার্যকর হবে।
ধারা ১২৮। যে সকল বিষয়ে বিধি প্রণীত হতে পারে
১) অনুরূপ বিধিগুলাে এই আইনের অন্তর্গত প্রধান অংশের বিধানগুলাের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না, কিন্তু এই আইনের বিধান সাপেক্ষে দেওয়ানি আদালতগুলাের কর্মপদ্ধতি সংক্রান্ত কোন বিষয়ের বিধান প্রদান করতে পারবে।
২) বিশেষত, এবং (১) উপ-ধারার অর্পিত ক্ষমতার সাধারণ বৈশিষ্ট্য ব্যাহত না করে নিম্নলিখিত বিষয়াবলির সমস্ত বা যে কোন বিষয়ে উক্তরূপ বিধি প্রণয়ন করবে, যথা:
ক) সাধারণ বা কোন নির্দিষ্ট এলাকায় ডাকযােগে বা অন্য কোন উপায়ে সমন, নােটিশ বা অন্য কোন পরােয়ানা জারি করা এবং অনরূপ জারির প্রমাণাদি;
খ) ক্রোকাবদ্ধ থাকাকালে পশু, সম্পত্তি এবং অন্যবিধ অস্থাবর সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ এবং জিম্মা, অনুরূপ রক্ষণাবেক্ষণ এবং তত্ত্বাবধানের জন্য প্রদেয় ফিস, অনুরূপ পশু এবং সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়, এবং উক্ত বিক্রয়লব্ধ আয়;
গ) পাল্টা দাবির মামলার কার্যপদ্ধতির এবং এখতিয়ারের উদ্দেশ্যে অনুরূপ মামলার মূল্যায়ন;
ঘ) ঋণ ক্রোক এবং বিক্রয়ের অতিরিক্ত বা প্রতিকল্প হিসাবে পাওনাদার আদেশ দাতার নিকট কর্জযুক্ত হলে তার খাতকের উপর কর্জ পরিশােধ করার জন্য নিষেধ করে আদেশ প্রদান ও চার্জিং আদেশের কার্যপদ্ধতি;
ঙ) মামলার পক্ষ নির্বিশেষে কোন লােকের বিরুদ্ধে বিবাদী প্রদত্ত বস্তুর অধিকার বা খেসারত দাবি করলে উহার কার্যপদ্ধতি;
চ) সংক্ষিপ্ত কার্যপদ্ধতি
১, মামলায় যেক্ষেত্রে বিবাদী দ্বারা সূদ সহ বা সূদ ছাড়া টাকায় প্রদেয় দেনা বা পরিশােধিত টাকা উদ্ধারের প্রার্থনা করেন-
প্রকাশ বা অব্যক্ত চুক্তির ভিত্তিতে; বা
কোন বিধিবদ্ধ আইনের বলে উক্ত অংকের টাকা যদি কোন নির্দিষ্ট অংকের পাওনা বা জরিমানা ব্যতিরেকে অপর কোন প্রকৃতির পাওনা হয়ে থাকে বা দেনা বা পরিশােধিত চাহিদার জামিন হিসাবে যেক্ষেত্রে কেবলমাত্র আসল টাকা সংক্রান্ত দাবি উদ্ভূত হয় বা কোন ট্রাষ্টির উপরে বা
২. জমিদার প্রজার কাছ হতে বা প্রজার স্বত্বে স্বত্ববান অপর কারাে কাছ হতে বাকি খাজনা বা অন্তবর্তীকালীন মুনাফার দাবিসমেত বা ছাড়া স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য মামলা, যদি উক্ত প্ৰজার স্বত্বেও সীমিত কাল উত্তীর্ণ হয়ে থাকে বা খাজনার দায়ে যদি সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণযােগ্য হয়ে থাকে;
ছ) সমন সৃষ্টির দ্বারা কার্যপদ্ধতি;
জ) বিভিন্ন মামলা, আপিল বা অপরাপর কার্যপদ্ধতি একত্রীকরণ
ঝ) আদালতের কােন নিবন্ধন বহি, প্রধান করণিক বা মাস্টার বা আদালতের বিচারিক, আধা বিচারিক, এবং অ-বিচারিক কর্তব্য সম্পাদন কারী কোন কর্মচারীর উপর অর্পণ এবং
ঞ) দেওয়ানি আদালতে লেনদেনের বিষয়ে প্রয়ােজনীয় বা বাঞ্চনীয় হতে পারে এরূপ সমস্ত ফরম, রেজিষ্টারগুলাে, বইগুলাে, কিছু লেখা খাতাপত্র এবং হিসাবপত্র।
১২৮ ধারার বিশ্লেষণ
এই ধারায় কি কি বিষয়ে সুপ্রীম কোর্ট নিয়ম প্রণয়ন করতে পারবেন উহার বিস্তৃত বর্ণনা দেয়া আছে। সুপ্রীম কোর্টের এবং অধস্তন আদালতসমূহের কার্যবিধি প্রণয়ন করার দায়িত্ব সুপ্রীম কোর্টের উপর দেয়া হয়েছে। এই কঠিন দায়িত্ব পালন করার জন্য সুপ্রীম কোর্টে একটি নিয়ম কমিটি আছে। সেই কমিটি সুপ্রীম কোর্টের কাছে কার্যবিধির আদেশ ও নিয়মের পরিবর্তণ প্রভৃতির জন্য সুপারিশ করেন। অতঃপর সুপ্রীম কোর্ট ঐ প্রতিবেদন বিবেচনা করে নিয়ম প্রণয়ন করেন। অবশেষে রাষ্ট্রপতি অনুমােদন করলে উহা গেজেটে প্রকাশিত হয়।