- Get link
- X
- Other Apps
Order 20 Judgement and Decree Civil Procedure Code
আদেশ ২০ রায় এবং ডিক্রী দেওয়ানী কার্যবিধি আইন
আদেশ ২০ বিধি ১ রায় কখন ঘােষিত হয়
পক্ষগণের বা তাদের আইনজীবীগণের উপর যথাযথ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করার পর প্রকাশ্য মােকদ্দমার শুনানী সমাপ্ত হবার পর আদালতে তৎক্ষণাৎ বা ভবিষ্যতে কোন দিন আদালতে রায় ঘােষণা করবে।
আদেশ ২০ বিধি ১ বিধির বিশ্লেষণ
দেওয়ানি মামলার ষষ্ঠ পর্যায়: রায় এবং ডিক্রী
ষষ্ঠ পর্যায় (Sixth Stage)
১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ২০ নং আদেশের ১নং বিধির বিধান মতে, মামলার শুনানী সমাপ্ত হওয়ার পর আদালত তৎক্ষণাৎ অথবা পরবর্তী কোন তারিখে প্রকাশ্যভাবে মামলার রায় প্রদান করবেন। একই আদেশের ৬নং বিধির (১) নং উপবিধিতে বলা হয়েছে যে, রায়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখিয়া ডিক্রীদান করতে হবে। (The Decree shall then be drawn up in accordance with the judgment).
এই উপবিধি মতে, ডিক্রীতে মামলার নম্বর, পক্ষগণের নাম ও পরিচয় এবং দাবির বিবরণ উল্লেখ করতে হবে। এই বিধির (২) নং উপবিধি মতে, মামলার খরচার পরিমাণ এবং তা কি অনুপাতে, কে বহন করবে কিংবা কোন সম্পত্তি হতে তা নির্বাহ করা হবে, ডিক্রীতে তা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। পরিশেষে দেওয়ানি কার্যবিধির ২০ নং আদেশের ৭নং বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডিক্রীতে সে তারিখই উল্লেখ করতে হবে, যে তারিখে রায় প্রদান করা হয়েছে। এবং বিচারক যখন এই মর্মে সন্তুষ্ট হবেন যে, রায় অনুসারে ডিক্রীপ্রণীত হয়েছে তখনই তিনি ডিক্রীতে স্বাক্ষর দান করবেন।
উপরে উল্লেখিত প্রথম পর্যায় হতে ষষ্ঠ পর্যায় পর্যন্ত ঐ সকল পর্যায়ের প্রতিটি উদ্দেশ্যই হল অভিন্ন এবং ন্যায় বিচারের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন করাই উহাদের কাম্য।
রায় ও ডিক্রীঃ ধারা ৩৪
মামলা শুনানীর পর আদালত রায় ঘােষণা করবে এবং এরুপ রায়ের ভিত্তিতে ডিক্রী প্রদান করবে।
সুদ (Interest) ধারা ৩৪
অর্থের মামলার ক্ষেত্রে মামলার তারিখ থেকে ডিক্রীর তারিখ পর্যন্ত যে সুদ হয়, তা প্রদানের জন্য আদালত ডিক্রীতে উল্লেখ করে দিতে পারেন। তবে আদালত ডিক্রীর মধ্যে সুদ সম্পর্কে উল্লেখ না করলে বা নিরব থাকলে আদালত সুদ অগ্রাহ্য করেছে বলে বিবেচিত হবে।
ডিক্রী প্রদানকারী আদালতের সংজ্ঞা। ধারা ৩৭
ডিক্রীজারি বিচারকারী আদালতই করবে। অনুরুপ ডিক্রীর বিপক্ষে আপিল হলেও এই আপিল আদালতের ডিক্রীও মূল আদালতকেই জারি করতে হবে। অর্থাৎ উচ্চতর আদালতে কোনরুপ আপিল করা হলে, সেক্ষেত্রেও মূল আদালতই ডিক্রী জারি করবে। আপিল আদালতের ডিক্রীকে প্রাথমিক আদালতের ডিক্রী হিসাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
রায় (Judgment) কখন ঘােষিত হয়। বিধি-১, আদেশ-২০
১। মােকদ্দমার শুনানী সমাপ্ত হবার পর আদালত সাথে সাথে (at once) অথবা পরবর্তী কোন তারিখে, যা ৭ দিনের বেশি হবে না, প্রকাশ্যভাবে মামলার রায় প্রদান করবেন। রায় প্রকাশ্য আদালতে ঘােষিত হবে ।
২। রায় বিচারক দ্বারা তারিখসহ স্বাক্ষরযুক্ত হবে। [বিধি-৩, আদেশ-২০] ।
স্মল কজ ও অন্যান্য আদালতের রায়। বিধি-৪, আদেশ-২০
১। স্মল কজ (Small Cause) আদালতের রায়ে, রায় নির্ধারনের বিষয় এবং তার উপর সিদ্ধান্ত থাকবে।
২। অন্যান্য আদালতের রায়ে মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ, রায় নির্ধারনের বিষয় এবং তার উপর সিদ্ধান্ত এবং অনরুপ সিদ্ধান্তের কারন উল্লেখ থাকবে।
ডিক্রী প্রস্তুত। বিধি-৫ক, আদেশ-২০
রায় ঘােষণার তারিখ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রী প্রণয়ন বা প্রস্তুত করতে হবে।
স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ডিক্রী। বিধি-৯, আদেশ-২০
স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ডিক্রী দিলে সেক্ষেত্রে উক্ত স্থাবর সম্পত্তি সনাক্ত করার জন্য যথেষ্ট বর্ণনা থাকতে হবে এবং সম্পত্তির চৌহদ্দি বা সেটেলমেন্ট রেকর্ডের নম্বর বা জরিপের সংখ্যা ডিক্রীতে উল্লেখ থাকবে।
অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ডিক্রী। বিধি-১০, আদেশ-২০
অস্থাবর সম্পত্তি অর্পনের (Delivery) ডিক্রীতে বিকল্প প্রতিকার হিসেবে টাকার পরিমান উল্লেখ থাকবে।
রায়, ডিক্রী বা আদশেগুলাের সংশােধন। ধারা-১৫২
রায়, ডিক্রী বা আদেশ সংশােধন যে কোন সময় আদালত নিজস্ব উদ্যেগে (Own motion) বা কোন পক্ষের আবেদনে করতে পারে নিম্ন বর্ণিত কারনে
১। কেরানীর ভুল (Clarical Mistakes)
২। গানিতিকভুল (Arithmetical Mistakes)
৩। আকস্মিক ভুল (Accidental Slip) বা বিচ্যুতির (Omission) কারনে রায়, ডিক্রী বা আদেশে ভুল হলে।
আদেশ ২০ বিধি ২ পূর্ববর্তী বিচারক দ্বারা লিখিত রায় ঘােষণার ক্ষমতা
কোন বিচারক তার পূর্ববর্তী বিচারক দ্বারা লিখিত কিন্তু ঘােষিত হয় নাই, এরূপ রায় ঘােষণা করতে পারে।
আদেশ ২০ বিধি ৩ রায় স্বাক্ষরযুক্ত হতে হবে
রায় ঘােষণা করার সময় বিচারক দ্বারা তা তারিখসমেত স্বাক্ষরযুক্ত হতে হবে এবং একবার স্বাক্ষরিত হলে ১৫২ ধারা অনুযায়ী বা পুনরীক্ষণ ছাড়া তা পরবর্তী কোন সময়ে সংশােধিত বা সংযােজিত হতে পারবে না ।
আদেশ ২০ বিধি ৪ স্মল কজ আদালতের রায়
১) স্মল কজ আদালতের রায়ে নির্ধারণের বিষয়গুলাে এবং তার উপর সিদ্ধান্ত অপেক্ষা বেশি দরকার হবে না।
২) অন্যান্য আদালত সমূহের রায়
অপরাপর আদালতের রায়ে মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ, ধার্যযােগ্য বিষয়গুলাে, ঐ সব বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত এবং অনুরূপ সিদ্ধান্তের কারণগুলাে থাকবে।
আদেশ ২০ বিধি ৫ প্রতিটি বিচার্য বিষয়ের উপর আদালতকে তার সিদ্ধান্ত বিবৃত করতে হয়
যে সব মামলায় বিচার্য বিষয় প্রণীত হয়েছে, সেসকল মামলায় এক বা একের বেশি বিচার্য বিষয়ের উপর পর্যবেক্ষণী রায়ের জন্য যথেষ্ট না হলে আদালত প্রত্যেক বিচার্য বিষয়ের উপর কারণসমেত তার পর্যবেক্ষণী বা রায় বিবৃত করবে।
আদেশ ২০ বিধি ৫ক ডিক্রী প্রণয়নের তারিখ
রায় ঘােষণার তারিখ হতে সাত দিনের ভিতর ডিক্রী প্রণয়ন করতে হবে।
আদেশ ২০ বিধি ৬ ডিক্রীর বিষয়গুলাে
১) রায়ের সাথে ডিক্রীর সাদৃশ্য থাকবে। এটাতে মামলার নম্বর, পক্ষগণের নাম ও বিবরণ এবং দাবির বিবরণ অন্তর্ভূক্ত থাকবে এবং মঞ্জুরীকৃত প্রতিকার বা মামলার অন্যান্য সিদ্ধান্তের পরিস্কার উল্লেখ থাকবে।
২) মামলাতে কি পরিমাণ ব্যয় হয়েছে এবং কার দ্বারা এবং কোন সম্পত্তি থেকে এবং উক্ত ব্যয়ের কি অনুপাতে দিতে হয় তাও ডিক্রীতে বিবৃত থাকবে।
৩) আদালত নির্দেশ প্রদান করতে পারে যে, একপক্ষ দ্বারা অপরপক্ষে দেয় খরচাদির পূর্ববর্তী পক্ষ হতে পরবর্তী অপর পক্ষের স্বীকৃত পাওনা কোন অংকের পারস্পরিক দায় পরিশােধিত হবে।
আদেশ ২০ বিধি ৭ ডিক্রীর তারিখ
যে তারিখে রায় ঘােষণা করা হয়েছে, সে তারিখ উল্লেখ থাকবে এবং বিচারক যদি স্বয়ং পরিতুষ্ট হন যে, রায় অনুযায়ী ডিক্রী প্রণয়ন করা হয়েছে তবে তিনি ডিক্রী স্বাক্ষর করবে।
আদেশ ২০ বিধি ৮ ডিক্রী স্বাক্ষরের আগে বিচারক অফিস ত্যাগ করলে পদ্ধতি
যেক্ষেত্রে রায় ঘােষণা করার পর কিন্তু ডিক্রী স্বাক্ষর না করে কোন বিচারক অফিস পরিত্যাগ করেছেন, সেক্ষেত্রে উক্তরূপ রায় অনুযায়ী তৈরিকৃত ডিক্রী তার পরবর্তী বিচারক স্বাক্ষর করতে পারেন, বা যদি উক্ত আদালত যদি অস্তিত্ববিহীন হয়, সেক্ষেত্রে সে আদালত যে আদালতের অধঃস্তন ছিল সে আদালতের বিচারক দ্বারা তা স্বাক্ষরিত হতে পারে।
আদেশ ২০ বিধি ৯ স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ডিক্রী
যেক্ষেত্রে মামলার বিষয়বস্তু স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত হয় সেক্ষেত্রে তা সনাক্ত করার জন্য যথেষ্ট এরূপ বর্ণনা থাকবে এবং যেক্ষেত্রে উক্ত সম্পত্তি চৌহদ্দি দ্বারা বা সেটেলমেন্ট রেকর্ডের নাম্বার বা জরিপের সংখ্যা দ্বারা সনাক্ত হতে পারে সেক্ষেত্রে ডিক্রীতে উক্তরূপ চৌহদ্দির সংখ্যা সঠিকভাবে বর্ননা থাকবে।
আদেশ ২০ বিধি ১০ অস্থাবর সম্পত্তি অর্পণের জন্য ডিক্রী
যেক্ষেত্রে মামলা অস্থাবর সম্পত্তির জন্য এবং ডিক্রী উক্ত সম্পত্তি অর্পণের জন্য হয়, সেক্ষেত্রে সমর্পণ যদি সম্ভব না হতে পারে তবে বিকল্প হিসেবে দেয় টাকার পরিমাণও ডিক্রীতে বর্ণনা করতে হবে।
আদেশ ২০ বিধি ১১ ডিক্রীতে কিস্তিওয়ারী পরিশােধের নির্দেশ দিতে পারে
১) যেক্ষেত্রে এবং যদি ডিক্রীর টাকা পরিশােধের জন্য দেয়া হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ডিক্রী প্রদানের সময় যথেষ্ট কারণে আদালত আদেশ প্রদান করতে পারে যে, যে চুক্তির অধীনে টাকা পাওনা হয়েছে, সে চুক্তিতে কোন বিধান থাকা সত্ত্বেও ডিক্রীর টাকা পরিশােধ স্থগিত থাকবে বা সুদসমেত বা বিনাসুদে কিস্তিতে পরিশােধ করা হবে ।
২) ডিক্রীর পরে কিস্তিতে পরিশােধের আদেশ
অনুরূপ কোন ডিক্রী দেয়ার পর আদালত রায়ের দেনাদারের আবেদনক্রমে এবং ডিক্রীদারের সম্মতিতে ডিক্রী প্রাপ্ত টাকা পরিশােধ স্থগিত করার আদেশ প্রদান করতে পারে বা সুদ পরিশােধ করার ক্ষেত্রে যেরূপ যুক্তিসঙ্গত গণ্য হয়, সেরূপ শর্তের বিধান সাপেক্ষে রায়ের দেনাদারের সম্পত্তি ক্রোক বা তার কাছে হতে জামানত গ্রহণ বা ভিন্ন কিছু সম্পর্কে কিস্তিতে টাকা পরিশােধ করার আদেশ দান করবে।
আদেশ ২০ বিধি ১২ দখল এবং ওয়াশীলাতের জন্য ডিক্রী
১) সেক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধার এর জন্য এবং খাজনা বা ওয়াশীলাতের জন্য মামলা হয়, সেক্ষেত্রে আদালত-
ক) সম্পত্তি দখলের জন্য;
খ) মামলা রুজু করার পূর্ব পর্যন্ত সময়ে সম্পত্তির উপর উপজাত হয়েছে এরূপ খাজনা বা ওয়াশীলাতের জন্য বা অনুরূপ খাজনা বা ওয়াশীলাতের ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেয়ার জন্য;
গ) মামলা রুজু করার তারিখ হতে নিম্নবর্ণিত সময় পর্যন্ত যে খাজনা বা ওয়াশীলাত পাওনা হয়েছে, সে সম্পর্কে তদন্তের জন্য-
১. ডিক্রীদারকে দখল অর্পণ,
২. আদালতের দ্বারা ডিক্রীদার বরাবরে নােটিশ প্রদান করে রায়ের দেনাদার দ্বারা দখল পরিত্যাগ করা, বা
৩. ডিক্রীর তারিখ হতে তিন বৎসর অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত উহাদের ভিতর যে ঘটনাটিই প্রথম ঘটে, মামলা রুজু হতে সে ঘটনা পর্যন্ত খাজনা বা ওয়াশীলাত সম্পর্কিত তদন্তের নির্দেশ প্রদান করে আদালতে ডিক্রী প্রদান করতে পারে।
২) যেক্ষেত্রে দফা (খ) বা (গ) দফার অধীনে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করা হয়, সেক্ষেত্রে খাজনা বা ওয়াশীলাত সম্পর্কিত চূড়ান্ত ডিক্রী, উক্তরূপ তদন্তের ফলাফল অনুযায়ী প্রদান করা হবে।
আদেশ ২০ বিধি ১৩ প্রশাসনিক মামলায় ডিক্রী
১) যেক্ষেত্রে সম্পত্তির হিসাব এবং আদালতের ডিক্রী অনুযায়ী এর যথাবিহিত পরিচালনার জন্য মামলা হয়, সেক্ষেত্রে চূড়ান্ত ডিক্রী প্রদানের আগে আদালত উক্তরূ পহিসাব গ্রহণ এবং তদন্ত করার জন্য এবং আদালত তার বিবেচনামত এরূপ অপর নির্দেশাবলি দিয়ে একটি প্রাথমিক ডিক্রী প্রদান করবে।
২) আদালত দ্বারা কোন মৃত লােকের সম্পত্তি প্রশাসনের ক্ষেত্রে যদি উক্ত সম্পত্তি তার সকল দেনা ও দায় পরিশােধের জন্য অপর্যাপ্ত বলে প্রমাণিত হয়, তবে যে আদালতের স্থানীয় সীমায় বিচারকৃত বা ঘােষিত অসচ্ছল লােকদের সম্পত্তি সম্পর্কিত প্রশাসনিক মামলা বিচারাধীন আছে, সে আদালতে পােক্ত পাওনাদার ও অনিশ্চিত পাওনাদারদের সম্পত্তি সম্পর্কে পারস্পরিক অধিকারের বিষয়ে এবং প্রমাণযােগ্য দেন ও দায় এবং যথাক্রমে বার্ষিক বৃত্তির মূল্যমান এবং ভবিষ্যৎ ও সম্ভাব্য দায় সম্পর্কে বর্তমান প্রচলিত একই বিধিগুলাে পালিত হবে, এবং এরূপ ক্ষেত্রে সে সম্পত্তি যে সব লােক পাওনা হবার যােগ্য তারা প্রাথমিক ডিক্রীর অধীনে পড়িতে পারে এবং এই আইনের অনুবলে তারা পরস্পর তাতে অধিকারী হতে পারে এরূপ দাবি দাওয়া পেশ করতে পারে।
আদেশ ২০ বিধি ১৪ অগ্রক্রয়ের মামলার ডিক্রী
১) যেক্ষেত্রে আদালতে সম্পত্তির কোন বিশেষ বিক্রয় সম্পর্কে কোন অগ্রক্রয়ের দাবির ডিক্রী দিয়ে থাকেন এবং ক্রয়ের অর্থ আদালতে জমা না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ডিক্রীতে
ক) যে দিনে বা তৎপূর্বে খরিদের টাকা জমা দিতে হবে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে, এবং
খ) নির্দেশ প্রদান করা হবে যে, (ক) দফায় বর্ণিত দিনে বা তৎপূর্বে বাদীর বিরুদ্ধে ডিক্রী অনুযায়ী খরচার টাকা (যদি কোন) সহ উক্ত খরিদের টাকা আদালতে জমা প্রদান করার পর উক্তরূপ টাকা জমা প্রদান করার তারিখ হতে যে বাদীর স্বত্ব সৃষ্টি হয়েছে বলে পরিদৃষ্ট হবে, সে বাদী বরাবরে বিবাদী উক্ত সম্পত্তির দখল অর্পণ করবে, অন্যথায় যদি ক্রয়ের টাকা ও খরচা (যদি কোন) সেরূপ প্রদান করা না হয় তবে মামলার খরচা সহ খারিজ হওয়া মর্মে নির্দেশ থাকবে।
২) যেক্ষেত্রে আদালত অগ্রক্রয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দাবির উপর বিচার করেছেন, সেক্ষেত্রে ডিক্রীতে নির্দেশ থাকবে যে,
ক) যদি এবং যতদূর সম্ভব ডিক্রীর অধিকারগুলি পর্যায়ভুক্ত হয় তবে (১) উপবিধির বিধানগুলাে পালনকারী প্রতিটি অগ্রক্রয়াধিকারীর অধিকার, যে আনুপাতিক অংশ সম্পর্কে কোন অগ্রক্রয়াধিকারী সে উপরিউক্ত বিধান পালন করতে অপারগ হন, ব্যর্থ না হলে উক্ত আনুপাতিক অংশ সম্পর্কে যা কর্মকরী হত, তা সহ সম্পত্তির আনুপাতিক অংশ সম্পর্কে কর্মকরণকৃত হবে, এবং
খ) যদি এবং যতদূর সম্ভব প্রদত্ত ডিক্রীর অধিকারগুলি ভিন্ন পর্যায়ভুক্ত হয়, তবে উচ্চতর অগ্রক্রয়াধিকারী উপরিউক্তগুলাে পালনে ব্যর্থ না হওয়া অবধি নিম্নতর অগ্রক্রয়াধিকারী দাবি অ-কার্যকরী হবে।
আদেশ ২০ বিধি ১৫ অশীদারীত্ব ভঙ্গের মামলায় ডিক্রী
যেক্ষেত্রে মামলা অংশীদারীত্ব ভঙ্গের জন্য বা কোন অংশীদারীত্বের হিসাব গ্রহণের জন্য হয়, সেক্ষেত্রে চূড়ান্ত ডিক্রীদানের আগে আদালত পক্ষসমূহের আনুপাতিক অংশ ঘােষণা করে, যে দিনে অংশীদারীত্ব ভঙ্গ হবে, বা ভঙ্গ হয়েছে বলে গণ্য হবে, তা ধার্য করে এবং আদালত যথােপযুক্ত মনে করে অনুরূপ হিসাব গ্রহণ করতে বা অন্যান্য কর্মগ্রহণ করতে নির্দেশ প্রদান করে একটি প্রাথমিক ডিক্রী প্রদান করতে পারে।
আদেশ ২০ বিধি ১৬ প্রধান এবং প্রতিনিধির ভিতর হিসেবের জন্য মামলায় ডিক্রী
প্রধান এবং প্রতিনিধির ভিতর আর্থিক লেনদেন এর হিসেবের জন্য মামলায় এবং ইতোপূর্বে বর্ণিত হয় নাই, এই রকম অপর কোন মামলায় কোন পক্ষের দেনা বা পাওনার অংশ নির্দিষ্ট করতে যেক্ষেত্রে এটা দরকারি হয় যে, হিসাব গ্রহণ করা সমীচিন, সেক্ষেত্রে আদালত চূড়ান্ত ডিক্রী প্রদানের আগে আদালত যথেষ্ট মনে করে এই রকম হিসাবপত্র গ্রহণ করতে নির্দেশ প্রদানপূর্বক একটি প্রাথমিক ডিক্রী প্রদান করবে।
প্রধান এবং প্রতিনিধির ভিতর হিসেবের জন্য মামলায় ডিক্রী বিষয়ক উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তসমূহ
এই নিয়ম কেবল প্রধান এবং এর এজেন্টের ভিতর হিসেবের জন্য মামলায় সীমাবদ্ধ নয়। এটা অন্যান্য সব হিসেবের মামলায়ও প্রযােজ্য। হিসেবের উপর তদন্তের নির্দেশ দেয়ার আগে হিসেবের জন্য দায়ী এবং হিসেবের আবশ্যকতা সম্পর্কে আদালতকে সন্তুষ্ট হতে হবে। হিসেবের জন্য দায়ী ঘটনাবলির অস্তিত্ব থাকা প্রয়ােজন। গ্রহণের জন্য প্রাথমিক ডিক্রীতে আদেশমূলক অংশে বিস্তারিত উল্লেখের দরকার নাই। হিসাব প্রাথমিক ডিক্রীতে প্রদান বাধ্যতামূলক নয়। দরকার না হলে তা প্রদান করা উচিত নয়। বিচার্য বিষয় সাধারণ হলে এবং সাক্ষ্য হতে টাকার অংক ধার্য করা সম্ভব হলে তৎক্ষণাৎ চূড়ান্ত ডিক্রী প্রদান করা যেতে পারে। বিবাদীর মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশদের পক্ষ না করে চূড়ান্ত ডিক্রী হলে তা রহিত হবে। প্রাথমিক ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল চলে। [AIR 1967 (SC) 1236]
আদেশ ২০ বিধি ১৭ হিসাব সম্পর্কে বিশেষ নির্দেশ
আদালত হিসাব গ্রহণে নির্দেশক ডিক্রীর দ্বারা বা পরবর্তী কোন আদেশের দ্বারা যে কায়দায় হিসাব গৃহীত বা সমর্থিত হয় সে কায়দা সম্পর্কে বিশেষ কোন আদেশ প্রদান করতে পারে এবং বিশেষ করে নির্দেশ দিতে পারে যে, হিসাব গ্রহণের সময় যে সব খাতা পত্রে বিতর্কিত হিসাব রাখা হয়েছে, সে হিসাব বহি, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলাে যেরূপে উপদিষ্ট হতে পারে সেরূপে আপত্তি প্রদানের স্বাধীনতা সহ তাতে নিহিত হিসেবের যথার্থতা সম্পর্কে প্রাথমিক প্রমাণরূপে হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
আদেশ ২০ বিধি ১৮ সম্পত্তি বন্টন বা তাতে অংশের ভিন্ন দখলের মামলায় ডিক্রী
যেক্ষেত্রে আদালত কোন সম্পত্তি বন্টনের জন্য বা তাতে ভিন্ন দখলের জন্য ডিক্রী দান করে সেক্ষেত্রে
১) যদি এবং যতদূর সম্ভব উক্ত ডিক্রী সরকারি রাজস্ব আদায়ে নির্ধারিত কোন ভূসম্পত্তি সম্পর্কিত হয় তবে ডিক্রীতে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কতিপয় পক্ষের অধিকার ঘােষিত থাকবে, কিন্তু তাতে নির্দেশ থাকবে যে, অনুরূপ ঘােষণা এবং ৫৪ ধারার বিধান অনুযায়ী কালেক্টার বা কর্মকর্তা দ্বারা অনুরূপ বন্টন বা পৃথকীকরণ করা হবে;
২) যদি এবং যতদূর সম্ভব উক্ত ডিক্রী অপর কোন স্থাবর সম্পত্তি বা অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে প্রদত্ত হয়, ততদূর যদি অতিরিক্ত তদন্ত ব্যতিরেকে বাটোয়ারা বা পৃথকীকরণ সুবিধাজনক ভাবে করা না যায়, সেক্ষেত্রে আদালত একটি প্রাথমিক ডিক্রীর দ্বারা উক্ত সম্পত্তিতে কতিপয় পক্ষের অধিকার ঘােষণা করতে এবং অনুরূপ আরও দরকারি নির্দেশ দিতে পারে।
আদেশ ২০ বিধি ১৯ পারস্পরিক দায় শােধ অনুমােদিত হলে ডিক্রী
১) যেক্ষেত্রে বিবাদীকে বাদীর বিরুদ্ধে পারস্পরিক দায় শােধের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে বাদীর কাছে এবং বিবাদীর কাছে কি পরিমাণের পাওনা আছে, তা ডিক্রীতে বিস্তৃত করতে হবে এবং যে পক্ষের পাওনা আছে বলে প্রতীয়মান হয়, সে পক্ষের টাকা আদায়ের জন্য ডিক্রী হতে হবে।
২) পারস্পরিক দায় শােধ সম্বন্ধীয় ডিক্রী হতে আপিল
পারস্পরিক দায় শােধ দাবি করা হয় মামলায় দেয়া এই রকম কোন ডিক্রী, যদি কোনরূপ দায় শােধ দাবি না করা হত সেক্ষেত্রে সে ডিক্রী আপিল সম্পর্কে যে বিধানের অধীনে হত উক্তরূপ একই বিধানের অধীনে হবে।
৩) ৮ আদেশের ৬ বিধি বা অপরকোন রূপে পারস্পরিক দায় গৃহীত হােক বা না হােক উক্ত বিধির বিধান প্রয়ােগযােগ্য হবে।
আদেশ ২০ বিধি ২০ রায় ও ডিক্রীর প্রত্যায়িত নকল প্রদান করতে হবে
আদালতে পক্ষগণের আবদেনক্রমে এবং তাদের খরচায় রায় এবং ডিক্রীর প্রত্যায়িত নকল সরবরাহ করা হবে।