Skip to main content

Video Article Preposition Phrase Clause

Inherent Powers of Court আদালতের সহজাত ক্ষমতা ধারা ১৫১ দেওয়ানী কার্যবিধি আইন

 Inherent Powers of Court

আদালতের সহজাত ক্ষমতা বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা

ধারা ১৫১ আদালতের সহজাত ক্ষমতা বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা

ন্যায় বিচারের স্বার্থে বা আদালতের কার্যপ্রণালীর অপব্যবহার রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় আদেশ দানের ব্যাপারে, আদালতের যে সহজাত ক্ষমতা বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে, এই আইনের কোন বিধানই তা সীমাবদ্ধ বা অন্যভাবে খর্ব করবে বলে পরিগণিত হবে না।

১৫১ ধারার বিশ্লেষণ

অন্তর্নিহিত ক্ষমতার বা সহজাত ক্ষমতা বলতে কি বুঝায়?

দেওয়ানি আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলতে কোন দেওয়ানি আদালত কর্তৃক ন্যায়সঙ্গতভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে তার উপর অর্পিত বিশেষ এখতিয়ারসম্পন্ন ক্ষমতা প্রয়ােগ করার অধিকারকে বুঝায়। কেবলমাত্র ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার প্রয়ােজনে অথবা আদালতের অপব্যবহার বিশেষ অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বা সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগ করে থাকেন। কিন্তু যেক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গতভাবে সুবিচারের জন্য অথবা আদালতের কার্যধারার অপব্যবহার রােধ করার প্রয়ােজনীয়তা দেখা না দেয়, সেক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালত তার অন্তর্নিহিত বা সহজাত এখতিয়ার প্রয়ােগ করতে পারবে না। অর্থাৎ এইরপ ক্ষমতা প্রয়ােগ করার মূল উদ্দেশ্য হল, ন্যায়বিচারকে প্রতিষ্ঠিত করা। এইভাবে, আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বা সহজাত ক্ষমতা বলতে কোন ন্যায়বান দেওয়ানি আদালত কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত কোন ব্যক্তির স্বপক্ষে প্রতিকার প্রদানের উদ্দেশ্যে এবং ন্যায়বিচারকে নিশ্চিত করার প্রয়ােজনে কতিপয় বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গত এবং ন্যায়বিচারকে নিশ্চিত করার প্রয়ােজনে কতিপয় বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গত ও সুবিবেচনামূলক এমন এক ক্ষমতা প্রয়ােগ করাকে বুঝায়, যেসব ক্ষেত্রে দেশের পার্লামেন্ট কর্তৃক কোন সুস্পষ্ট বিধি প্রণয়ন করা হয় নাই। আইনের সুস্পষ্ট বিধানের অবর্তমানে আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তার উপর অর্পিত সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে বিচার্য কার্য চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা প্রয়ােগ করে থাকেন। প্রত্যেক দেওয়ানি আদালতেরই ন্যায়সঙ্গতভাবে বিচার করার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে। দেওয়ানি আদালতের এই বিশেষ ক্ষমতার প্রয়ােগ কেবলমাত্র ন্যায়বিচারের প্রয়ােজনে অথবা আদালতের পরােয়ানা অবমাননা প্রতিরােধ কিংবা আদালতের কার্যধারার অপব্যবহার বন্ধ করার উদ্দেশ্য হতে হবে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই আদালত এই বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে তাঁর অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে বিচার্য কার্য পরিচালনা করে থাকেন। দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে তা নিম্নরূপ: "বিধিতে এমন কিছু আছে বলে গণ্য করা যাবে না, যা ন্যায় বিচারের চূড়ান্ত স্বার্থে অথবা আদালতে পরােয়ানার অবমাননা প্রতিরােধে প্রয়ােজনীয় আদেশ প্রদানের ব্যাপারে আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতাকে সীমিত বা অন্য কোন ভাবে প্রভাবিত করতে পারে”। ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত করে তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে অথবা আদালতের পরােয়ানার অবমাননা প্রতিরােধ করার জন্য প্রয়ােজনীয় আদেশ প্রদানের ব্যাপারে আদালতে যে অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে, অত্র আইনের কোন বিধান দ্বারা উহা সীমাবদ্ধ বা কোনভাবে প্রভাবিত হবে না। অর্থাৎ ন্যায় বিচারের স্বার্থে দেওয়ানি আদালতেকে এই বিশেষ ক্ষমতা প্রয়ােগ করার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই হল, এই ধারার প্রধান উদ্দেশ্য। এই ধারা প্রতিষ্ঠিত নিয়ম হল এই যে, কোন দেওয়ানি প্রকৃতির মামলার পক্ষসমূহের মধ্যে বাস্তব এবং প্রকৃত ন্যায়বিচার করার জন্যই এই ধারার বিধান বলে আদালতের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে এবং ন্যায় বিচারের উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক আদালকেই অন্তনিহিত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। তবে আইনের দ্বারা সর্বক্ষেত্রেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবপর হয় না। যদি কোন ক্ষেত্রে আদালতের কার্যধারার সাধারণ বিধিবিধানগুলি অবিচারের কারণ হয়, এবং অন্য কোন প্রতিকারের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকে, তবে ন্যায়-বিচার নিশ্চিত করার জন্য উক্তরূপ বিধি-বিধানগুলি রদ করাই হবে আদালতের প্রধান করণীয় কর্তব্য। অর্থাৎ যেক্ষেত্রে আদালতের কার্যক্রম বিষয়ে কোন বিধি বা নির্দেশ নাই, সেক্ষেত্রে আদালত তার উপর অর্পিত সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে ক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে প্রতিকার প্রদানের জন্য দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান অনুসারে যথােপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিশেষ অধিকারী।

অতএব, আদালত যেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবেন যে, মামলার প্রয়ােজন পূরণে দেওয়ানি মামলা পরিচালনা বিধির বিধানালী যথেষ্ট নয়, কেবলমাত্র সেক্ষেত্রেই আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন।

কখন সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা ক্ষমতা প্রয়ােগ করা যায় না

যে সকল ক্ষেত্রে আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন না, তা হলে নিম্নরূপ; যথা:

(১) ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রয়ােজনে অথবা আদালতের পরােয়ানার অবমাননা প্রতিরােধ বা আদালতের কার্যধারার অপব্যবহার রােধ করার উদ্দেশ্যেই আদালত কেবলমাত্র তার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন, অন্যথায় নয়।

(২) ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় উল্লেখ করা হয় নাই, এমন কোন অতিরিক্ত নির্দেশ প্রয়ােগ করার এখতিয়ার আদালতের নাই।

দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করলে, ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, অত্র আইনের কোন বিধি যেসব ক্ষেত্রে বিচার কার্য পরিচালনায় প্রযােজ্য হয়ে থাকে, কেবলমাত্র সেসব ক্ষেত্রেই আদালতকে অত্র আইনের বিধি মােতাবেক ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে হবে।

(১) আদালত বিধি বহির্ভূত কোন ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন না। অর্থাৎ বিধির বিপরীতে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করার এখতিয়ার আদালতে নাই।

(২) যেসব ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির আইনে পদ্ধতিগত বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট বিধান নাই, কেবল সেসব ক্ষেত্রে আদালত ন্যায়বিচারের প্রয়ােজনে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।

(৩) আদালত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন না, যা দেওয়ানি কার্যবিধির আইনে বর্ণিত বিধিগুলির পরিপন্থী। অত্র আইনের বিধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এরূপ ব্যবস্থাই আদালতকে গ্রহণ করতে হবে।

(৪) দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় আদালতকে তার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে কোন অবস্থাতেই স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রয়ােগ করার অধিকার দেওয়া হয় নাই।

(৫) আদালত কোন অবস্থাতেই আইনের প্রতিষ্ঠিত কোন বিধানকে অগ্রাহ্য করতে পারেন না। সমতা, সুবিবেচনা এবং ন্যায়পরতার উপর ভিত্তি করেই আদালত অবশ্যই আইনকে অনুসরণ করবেন। ন্যায়পরতা আইনের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত মতবাদ হল এই যে, ইকুইটি সর্বদাই আইনকে অনুসরণ করে। অতএব, আদালতকে একই সঙ্গে আইন এবং ন্যায়পরায়ণতার নীতি যথাযথভাবে রক্ষা করে বিচার কার্য পরিচালনা করতে হয়।

কখন আদালতে সহজাত ক্ষমতা বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করা যায়

নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপর আদালত তার উপর অর্পিত অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন। যেমন:

(ক) আদালত তার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে আপিলসহ অন্যান্য মামলাগুলি বিচারের জন্য একত্রীকরণ করতে পারেন।

(খ) সুবিধার অজুহাতে পাল্টা মামলাসমূহের নির্ধারণ আদালতের সহজাত বা অন্তনিহিত ক্ষমতারই অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

(গ) দরিদ্র বা হিসাবের কোন মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থণ করার জন্য অনুমতি প্রদান।

(ঘ) কোন নিম্নআদালতের বিচারাধীন আপিলের কার্যধারা স্থগিত রাখা।

(ঙ) রেস-জুডিকেটা আইনের মূলনীতির প্রয়ােগকরণ, যেক্ষেত্রে এই ক্ষমতা দেওয়ানি কার্যবিধির ১১ ধারার আওতায় পড়ে না।

(চ) ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালতের নিজের আদেশ প্রদান স্থগিত রাখা অথবা স্বীয় হুকুম কার্যকরীকরণ স্থগিত রাখা।

(ছ) দেওয়ানি কার্যবিধি ১৫২ ধারা অনুযায়ী আওতাভুক্ত করা হয় নাই, এমন কোন রায়, ডিক্রী কিংবা আদেশের ক্ষেত্রে যে কোন কেরানীগত ভুল কিংবা আকস্মিক বিচ্যুতি আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে সংশােধন করতে পারেন। হুকুম চাঁদ বনাম কমলানন্দ (33 Cal, 927) মামলায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, যদি কেহ সম্পত্তি ভুল ডিক্রীর দ্বারা কার্যকরীকরণ করা হয়, তবে সেক্ষেত্রে আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে সম্পত্তিটি পুনরুদ্ধার বা Restitution করার জন্য আদেশ প্রদান করতে পারেন।

পরিশেষে আদালত তার সহজাত ৰা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে একতরফা ডিক্রী রদ করণের ব্যাপারেও বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।

আইনের প্রতিষ্ঠিত বিধান হল এই যে, কোন বিবাদীর অনুপস্থিতিতে মামলা একতরফা ডিক্রী হল, সেক্ষেত্রে বিবাদী দেওয়ানি কার্যবিধির ৯নং আদেশের ১৩নং বিধির বিধান অনুযায়ী একতরফা ডিক্রী রদ করতঃ বিবাদী যদি এই আবেদন শুনানীর দিন পুনরায় হাজির না হয় এবং এই অনুপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে যদি তার দরখাস্ত অগ্রাহ্য হয়ে যায়, তবে সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাদী আদালতের এই আদেশ রদ করার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারেন না কিন্তু ন্যায়বিচার প্রয়োজনে এই ধরণের আবেদন করার বিধান থাকা অপরিহার্য। এমতাবস্থায়, বিবাদী তার পূর্বের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার আদেশ রদ করার জন্য দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান অনুযায়ী যথাযথভাবে বিবেচনা করার জন্য দরখাস্ত দিতে পারেন। দেওয়ানি কার্যবিধির ৯নং আদেশের ১৮নং বিধি অন্যায়ী, বিবাদীর দরখাস্ত যেভাবে শুনানী ও নিষ্পত্তি হয়, পরবর্তী পর্যায়ে অত্র কার্যবিধির ১৫১ ধারায় বর্ণিত দরখাস্তটিও সেভাবেই শুনানী ও নিষ্পত্তি হবে। এইভাবে দেওয়ানি কার্যবিধির ১নং আদেশের (৯) নং বিধির বিধান অনুযায়ী কোন দরখাস্ত বাদীর অনুপস্থিতিতে খারিজ হয়ে গেলে, বাদী এই আদেশ রদ করার জন্য দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান অনুযায়ী দরখাস্ত করতে পারবে এবং আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা (Inherent Power of the Court) বলে এই প্রকার দরখাস্ত বিবেচনা করে যথাবিহিত আদেশ প্রদান করতে পারবেন।

কি কি শর্তে বিভিন্ন মামলা একত্রে বিচার করা যেতে পারে

১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান বলে আদালত ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার প্রয়ােজনে তার নিকট দায়েরকৃত কতিপয় মামলা একত্রে বিচার করতে পারবেন এবং একটি মাত্র রায়ের দ্বারা এই মামলাগুলি একত্রিকরণ করে নিস্পত্তি করতে পারবেন। তবে, রায় একটি হলেও ভিন্ন ভিন্ন মামলার ডিক্রী ভিন্ন হতে হবে।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, কতিপয় মামলা এর নিয়ম বা বিধি দেওয়ানি কার্যবিধির আইনে স্থান লাভ করে নাই। বিভিন্ন মামলা একত্রে বিচার করার পদ্ধতি সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কতিপয় বিশেষ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যক্তির পক্ষে কিংবা বিরুদ্ধে অত্র আইনের ১নং আদেশের (২) নং বিধিতে এবং এবং এই আইনের ২ নং আদেশের (৬) নং বিধির বিধান সাপেক্ষে একটি মামলা দায়ের করা হলে, সেক্ষেত্রে আদালত ন্যায় বিচারের প্রয়ােজনে পৃথক বিচার অনুষ্ঠানের আদেশ প্রদান করতে পারেন ।

উপরে উল্লেখিত নীতিমালার ভিত্তিতেই আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বলে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার প্রয়ােজনে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান অনুযায়ী কতিপয় পৃথক মামলাগুলিও একত্রে বিচার করতে পারবেন । এইভাবে, উপরে উল্লেখিত বিধান সাপেক্ষে, কতিপয় পৃথক মামলা একত্রীকরণ করে আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করে দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান অনুসারে বিচারকার্য চালিয়ে যেতে পারেন। পরিশেষে দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় প্রদত্ত আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগের ক্ষেত্রে আদালতের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়েছে। অতএব, ন্যায়বিচার করার জন্য বা আদালতের ক্ষমতার অপব্যবহার রােধ করার জন্য আদালত তার সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতার বলে যে কোন আদেশ দিতে পারবেন, যেহেতু আইন সর্বকালের যাবতীয় পরিবর্তনশীল অবস্থা মােকাবিলা করার পূর্ণ বিধান প্রবর্তন করতে পারে না। সুবিবেচনামূলকভাবে দেওয়ানি আদালত ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান সাপেক্ষে, অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করার বিশেষ অধিকারী। এইভাবে উপরে উল্লেখিত পরিস্থিতির বিধান সাপেক্ষে, আদালত দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান অনুযায়ী তাঁর সহজাত বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন।

আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়ােগ সম্পর্কিত ব্যাখ্যা

নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে আদালত দেওয়ানী কার্যবিধির ১৫১ ধারার বিধান অনুসারে ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগ করার বিশেষ অধিকারী; যেমন:

(১) সুপ্রীম কোর্টের আপিলসহ অন্যান্য মামলা একত্রে করার অধিকার আদালতের রয়েছে। ইহা ছাড়াও

(২) নির্বাচিত মামলায় নিষ্পত্তি স্থগিত রাখা এবং মামলার শুনানী মূলতবী রাখা।

(৩) সুবিধার অজুহাতে পাল্টা মামলা নিবারণ করা।

(৪) একজন নিঃস্ব ব্যক্তির জন্য মামলার করার অনুমতি দান করা।

(৫) দেওয়ানি কার্যবিধির ১১৪ ধারার বিধান ছাড়াও পুনরুদ্ধার অনুমােদন করা।

(৬) একটি সঠিক মামলায় কোন পক্ষকে যুক্ত করা অথবা পক্ষসমূহের স্থান পরিবর্তনকরন।

(৭) কোন মৃত ব্যক্তির আপিল দায়ের করা হলে, সেক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির বৈধ প্রতিনিধিকে মামলায় যুক্ত করার জন্য আপিলকারীকে অনুমতি প্রদান।

(৮) ন্যায়-বিচারের স্বার্থে আদালতের নিজের আদেশ প্রদান স্থগিত রাখা অথবা তার কার্যকরণ মূলতবী রাখা।

(৯) আদালত এরূপ ডিক্রী বা আদেশও সংশােধন করতে পারেন, যা দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫২ ধারা অনুযায়ী আওতাভুক্ত করা হয় নাই।

(১০) আদালত নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে অপর কোন আদালতের মামলার কার্যধারা হতে বিরত রাখার নির্দেশ প্রদান করতে পারেন।

(১১) যে সকল মামলা দেওয়ানি কার্যবিধির ১০ ধারার আওতায় আসে না, আদালত তাঁর সহজাত ক্ষমতা বলে সে মামলাগুলিও স্থগিতকরণ করে রাখিতে পারেন।

(১২) কোন ডিক্রীর উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যের বিপরীত রীতিতে কার্যরত ডিক্রীর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন।

(১৩) যে সকল মামলা দেওয়ানি কার্যবিধির ১১নং ধারার পর্যায়ে পড়ে না, সে সকল মামলার ক্ষেত্রে আদালত রেস-জুডিকাটার মূল নীতি প্রয়ােগ করতে পারেন।

(১৪) ইহা ছাড়াও আদালত তার সহজাত ক্ষমতার অধিকার বলে যে কোন অবৈধ আদেশকে বাতিল কিংবা প্রত্যাহার করারও বিশেষ অধিকারী।

অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বা সহজাত ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা (Limitation of Inherent Power)

যে সকল ক্ষেত্রে আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগের অধিকারী নয়, তা ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হল।

(১) যে কার্যটি দেওয়ানি কার্যবিধির আইন দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সে কার্যে আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারে না।

(২) এখতিয়ার বহির্ভুত কোন বিচার্য বিষয়ের ক্ষেত্রে আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারে না। যেমন, আপিলযােগ্য আদেশের বিরুদ্ধে আদালত এরূপ ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে অপারগ।

(৩) আদালত তার পুনর্বিবেচনামূলক ক্ষমতা কিংবা দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারায় বর্ণিত সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগ করার অধিকার ব্যতীত কোন রায় এমন কোন প্রকার সংযােজন বা পরিবর্তন করতে পারবেন না যে রায় কোন বিচারক কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবার পর তা ঘােষিত হয়েছে।

(৪) দেওয়ানি কার্যবিধির অন্যত্র কোন স্থানে মামলার আবেদনকারীর জন্য প্রতিকারের কোন পথ খােলা থাকে, কিন্তু তার অবহেলার দরুন যদি সে যথাযথ প্রতিকার লাভ করতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে কেবল ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার অজুহাতে আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন না।

(৫) আইনের সাধারণ মূল নীতির সাদৃশ্যপূর্ণ না হলে আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে না।

(৬) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা কিংবা আদালতের কার্যধারার অপব্যবহার রােধ করা প্রয়ােজন না হলে সেক্ষেত্রে আদালতের সহজাত ক্ষমতা প্রয়ােগ করার কোন প্রশ্ন উঠে না।

(৭) আদালত তার সহজাত ক্ষমতার অধিকার বলে দেওয়ানি কার্যবিধির ৯নং আদেশের ১৩নং রুলের অধীন কোন একতরফা ডিক্রীকে রদ করতে পারে না।

পরিশেষে, ইহাই বলা যেতে পারে যে, আদালতের সহজাত ক্ষমতা যেহেতু সুবিবেচনামূলক সেহেতু ইহা কেবল ন্যায় বিচারের স্বার্থেই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। পূর্ববর্তী বিচারক আদেশ প্রদান করলেও স্থলাভিষিক্ত বিচারকের নিকট এই ধারার আওতায় আবেদন করা যায়। আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতাবলে সরকারি রিসিভারের ভুল ভ্রান্তি সংশােধন করতে পারে। Ex debtio justice নীতিতে অনুধাবন বশতঃ ভুল হলে আদালত স্বয়ং তা সংশােধন করতে পারে। প্রাথমিক ডিক্রীতে গতানুগতিক ভুল উকিল কমিশনারের সকল কাজ বাতিল করতে পারে না।

ধারা ১৫২। রায়, ডিক্রী বা আদেশগুলাের সংশােধন

রায়, ডিক্রী বা আদেশে করণিক বা গাণিতিক ভুল বা কোন আকস্মিক ভ্রান্তি ৰা বিচ্যুতির কারণে তথায় কোন ভুল থাকলে যে কোন সময় আদালত নিজস্ব উদ্যোগে বা কোন পক্ষের আবেদনে তা শুদ্ধ করতে পারেন।

১৫২ ধারার বিশ্লেষণ

কোন কোন ক্ষেত্রে আদালত রায়, ডিক্রী ও আদেশে কেরাণীর ভুল বা গাণিতিক ভুল শুদ্ধ করতে ও বিচার কার্যক্রমের অন্যান্য ত্রুটি সংশােধন করতে পারেন-

যে যে ক্ষেত্রে আদালত রায়, ডিক্রী ও আদেশে কেরাণীর ভুল বা গাণিতিক ভুল শুদ্ধ করতে ও বিচার কার্যক্রমের অন্যান্য ত্রুটি সংশােধন করতে পারেন-তা সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর ধারা-১৫২ এবং ধারা-১৫৩ এ বিধান রাখা হয়েছে। ধারা-১৫২ এ বলা হয়েছে যে, রায়, ডিক্রী বা আদেশে করণিক বা গাণিতিক ভুল অথবা কোন আকস্মিক ভ্রান্তি বা বিচ্যুতির কারণে তথায় কোন ভুল থাকলে যে কোন সময় আদালত নিজস্ব উদ্যোগে কিংবা কোন পক্ষের আবেদনে তা শুদ্ধ করতে পারবেন। আবার একই আইনের ধারা-১৫৩ এ বলা হয়েছে, আদালত যে কোন সময় এবং খরচ সম্পর্কে যেইরূপ শর্ত উপযুক্ত মনে করে কিংবা অন্য কোনভাবে কোন মামলার কার্যধারার ত্রুটি সংশােধন করতে পারেন। এবং সকল প্রয়োজনীয় সংশোধন এরূপ কার্যধারার উপর নির্ভরশীল অথবা অনুরূপ কার্যধারায় উত্থাপিত কোন প্রকৃত প্রশ্ন বা বিচার্য বিষয় নির্ধারণের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

ধারা ১৫৩। সংশোধন করার সাধারণ ক্ষমতা

আদালত যে কোন সময় এবং খরচ সম্পর্কে যেইরূপ শর্ত উপযুক্ত মনে করে বা অন্য কোনভাবে কোন মামলার কার্যধারার ত্রুটি সংশােধন করতে পারেন, এবং সমস্ত প্রয়ােজনীয় সংশােধন এরূপ কার্যধারার উপর নির্ভরশীল বা অনুরূপ কার্যধারায় উত্থাপিত কোন প্রকৃত প্রশ্ন বা বিচার্য বিষয় নির্ধারণের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

১৫৩ ধারার বিশ্লেষণ

৬ আদেশের ১৭ নিয়মে আরজি এবং জবাব সংশােধনের বিধান দিয়েছে। আর এই ধারা রায়, ডিক্রী এবং আদেশ সংশােধনের বিধান দিয়েছে।

ধারা ১৫৪। আপিলের বর্তমান অধিকার রক্ষণ

অত্র আইনের কোন বিধানই ইহা বলবৎ হওয়ার সময় কোন পক্ষের আপিলের অধিকার জন্মিয়া থাকলে, এরূপ আপিলের কোন কিছুই তা খর্ব করবে না।

ধারা ১৫৫। কতিপয় আইনের সংশােধন

চতুর্থ তফসিলে বর্ণিত আইনগুলাে এতদ্‌দ্বারা তার চতুর্থ তফসিলে নির্দিষ্ট আকারে সংশােধিত হল।



Popular posts from this blog

সাক্ষ্য আইন (সংশোধন), ২০২২ Evidence Act (Amendment) 2022

সাক্ষ্য আইন (সংশোধন), ২০২২ ডিজিটাল রেকর্ড বা ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড কি? ডিজিটাল রেকর্ড বা ইলেক্ট্রনিক রেকর্ডের প্রমাণ: ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদ কি? প্রত্যয়নকারী কর্তৃপক্ষ কি? ধারা ৪৫: বিশেষজ্ঞদের মতামত ধারা ৪৫ক: শারীরিক বা ফরেনসিক প্রমাণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত ধারা ৪৭ক: ডিজিটাল স্বাক্ষর সম্পর্কে মতামত যেখানে প্রাসঙ্গিক। ধারা-৬৫ক: ডিজিটাল রেকর্ড সম্পর্কিত প্রমাণের জন্য বিশেষ বিধান ধারা-৬৫খ: ডিজিটাল রেকর্ডের গ্রহণযোগ্যতা ধারা-৬৭ক: ডিজিটাল স্বাক্ষরের প্রমাণ ধারা-৭৩ক: শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য হিসাবে অনুমান ধারা-৭৩খ:- অন্যদের সাথে শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য তুলনা, স্বীকৃত বা প্রমাণিত ধারা-৮১ক। ডিজিটাল আকারে গেজেট হিসাবে অনুমান ধারা-৮৫ক: ডিজিটাল আকারে চুক্তির অনুমান। ধারা-৮৫খ: ডিজিটাল রেকর্ড এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরের অনুমান ধারা ৮৭গ: ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদ সম্পর্কে অনুমান ধারা-৮৮ক: ডিজিটাল কমিউনিকেশন সম্পর্কে অনুমান ধারা-৮৯ক: শারীরিক বা ফরেনসিক সাক্ষ্য হিসাবে অনুমান। ধারা-৯০ক: পাঁচ বছরের পুরনো ডিজিটাল রেকর্ডের অনুমান। ধারা-১৪৬: জেরায় আইনসঙ্গত প্রশ্ন। সাক্ষ্য আইন (সংশোধন), ২০

Write a paragraph on Pahela Baishakh পহেলা বৈশাখ

Write a paragraph on Pahela Baishakh (পহেলা বৈশাখ) Pahela Baishakh Pahela Baishakh is the part of our culture. It is the first day in Bangla calendar. This day is celebrated throughout the country. The main programme of this day is held in Ramna Botamul. Different socio-cultural organizations celebrate this day with due solemnity. People of all sorts of ages and lives attend this function. Colourful processions are brought out. Watery rice and hilsha fish are served during this function. Women and children put on traditional dresses. The whole country wears a festive look. Different cultural programmes are arranged where singers sing traditional bangla songs. Discussion meetings are held. Radio and television put on special programmes. Newspapers and dailies publish supplementary. Fairs are held here and there on this occasion. Shopkeepers and traders arrange ‘halk hata’ and sweet-meats are distributed. In villages, people go to others’ houses and exchange greetings. Thus Pahela Baisha

Most Important Preposition List of Appropriate Prepositions A to Z

The Most Important Prepositions List of Appropriate Prepositions A to Z Appropriate Prepositions starting with the letter "A" The Most Important Appropriate Prepositions starting with A Abide by (মেনে চলা): I shall abide by the rules of this country. Abound in / Abound with ( প্রচুর) : Tigers abound in the African forests. This jungle abounds with (Or, in) tigers. Absent from (a place) (অনুপস্থিত থাকা): He was absent from the parents meeting called by the principal. Absorbed in (মগ্ন): He is absorbed in writing his biography. Abstain from (বিরত থাকা): I shall abstain from doing any wrong with others. Abide with (সঙ্গে থাকা): He abides with his parents in the USA. Abide in (বাস করা): I abide in Narayangonj. Abound with (পূর্ণ থাকা): The Padma abounds with hilsa, a very tasty fish. Abhorance of (ঘৃণা): A sinner has no abhorance of sin. Abhorent to (ঘৃণা): Smoking is abhorent to me. Access to (প্রবেশাধিকার): I have free access to the manager of this company. Accompanied by a