- Get link
- X
- Other Apps
First schedule - Civil Procedure Code
Order 1 Rule 1-13 Parties to Suits
বাদী বিবাদী
বিধি ১ কারা মামলার বাদী হিসেবে সামিল হতে পারে
একই কর্ম বা বিষয় লেনদেন বা একই শ্রেণির কার্যক্রমের বা লেনদেনসমূহের যার কারণে যারা একসাথে, আলাদাভাবে বা একাদিক্রমে কোন প্রতিকার দাবি করতে পারে, এবং যেক্ষেত্রে উক্ত লােকেরা আলাদাভাবে মামলা করলে আইন বা তথ্য বিষয়ক একটি সাধারণ প্রশ্নের সৃষ্টি হতে পারে, অনুরূপ সকলকে একই মামলায় বাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত করা যায়।
বিধি ১ বিশ্লেষণ
কোন কোন ব্যক্তি একটি মামলার বাদী পক্ষ হতে পারে
দেওয়ানি আদালতের যে কোন মামলায় একাধিক পক্ষ থাকে। যে পক্ষ কর্তৃক মামলা দায়ের করা হয় সাধারণভাবে তাকে বাদী বলা হয়। কোন কোন ব্যক্তি একটি মামলায় বাদীপক্ষ পক্ষ হতে পারে সে সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর আদেশ-১ এর বিধি-১ এ বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, একই কার্য বা বিষয় আদান-প্রদান অথবা একই শ্রেণির কার্যাবলির বা আদান-প্রদানসমূহের যার দরুন যারা একত্রে পৃথকভাবে বা একাদিক্রমে কোন প্রতিকার দাবি করতে পারে, এবং যেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিরা পৃথকভাবে মামলা দায়ের করলে আইন বা তথ্য সংক্রান্ত একটি সাধারণ প্রশ্নের উদ্ভব হতে পারে, অনুরূপ সকলকে একই মামলায় বাদী পক্ষভূক্ত করা যায়। অর্থাৎ মামলার বিষয়বস্তুতে যে সকল ব্যক্তির স্বার্থ জড়িত থাকে, তারা সকলে একসাথে অথবা পৃথক ভাবে বাদী হয়ে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করতে পারে।
দেওয়ানি কার্যবিধির আদেশ-১ এর বিধি-১ অনুযায়ী যেসব ব্যক্তির মামলার স্বার্থ জড়িত আছে তারা প্রত্যেকে এককভাবে বা একসঙ্গে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। সকল বিষয়ে সকল বিবাদীর স্বার্থ জড়িত নাও থাকতে পারে। উদাহরণঃ করিম এবং রহিম দুই সহােদর ভাই। পিতার মৃত্যুর পর ইসলামি নিয়ম মােতাবেক স্বাভাবিকভাবে তারা দুইজনই সক্রিয় অংশীদার। কিন্তু ঐ জমিতে কিছু প্রভাবশালী লােক অন্যায়ভাবে ভূয়া দলিল মারফত দখল করেছে। এই অবস্থায় করিম এবং রহিম তাদের ন্যায্য পাওনার জন্য আদালতের সম্মুখীন হতে হলে তাদেরকে বাদী হিসাবে এককভাবে বা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে মামলা দায়ের করতে হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে যদি একত্রে দুজনই মামলা দায়ের করে তাহলে করিম এবং রহিম বাদী। আর যদি ভিন্ন ভিন্নভাবে মামলা দায়ের করে তারা ভিন্ন ভিন্ন মামলার বাদী হিসাবে থাকতে হবে।
বিধি ২ ভিন্ন উপায়ে বিচার সম্পন্নের আদেশ প্রদানে আদালতের ক্ষমতা
যেক্ষেত্রে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, বাদীদের কোন প্রকার সংযুক্তি মামলার বিচারকে বাধাগ্রস্ত বা বিলম্বিত করতে পারে, সেক্ষেত্রে আদালত বাদীদের পছন্দের উপর ছেড়ে দিতে পারে বা ভিন্ন বিচার সম্পন্নের আদেশ অবস্থা বিবেচনায় যথাযথ অপর কোন আদেশ প্রদান করতে পারেন।
বিধি ৩। কাদের মামলার বিবাদী হিসেবে সামিল করা যেতে পারে
যাদের বিরুদ্ধে একই কার্য না লেনদেন বা একই ধরনের কার্যক্রমের বা লেনদেনের ভিতর হতে বা এগুলি সম্পর্কে একত্রে, আলাদা উপায়ে বা বিকল্প উপায়ে কোন প্রতিকার লাভ করার অধিকার বিদ্যমান থাকে বলে নালিশ তােলা হয়, যেক্ষেত্রে আলাদা মামলা করলে আইন বা তথ্য সংক্রান্ত একটি সাধারণ প্রশ্ন সৃষ্টি হবার আংশকা থাকে, সেক্ষেত্রে তাদেরকে একই মামলার বিবাদী হিসেবে যুক্ত করা যাবে।
৩ বিধির বিশ্লেষণ
কোন কোন ব্যক্তি একটি মামলার বিবাদী পক্ষ হতে পারে
কোন কোন ব্যক্তি একটি মামলায় বিবাদীপক্ষ পক্ষ হতে পারে সে সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর আদেশ-১ এর বিধি-৩ এ বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, “যাদের বিরুদ্ধে একই কার্য বা লেনদেন বা সমপ্রকার কার্যাবলির বা লেনদেনের মধ্য হতে বা এইগুলি সম্পর্কে একসাথে, আলাদা উপায়ে অথবা বিকল্প উপায়ে কোন প্রতিকার লাভ করার অধিকার বিদ্যমান থাকে বলে অভিযােগ আনয়ন করা হয়, যেক্ষেত্রে আলাদা মামলা দাখিল করলে আইন বা তথ্য সম্পর্কীয় একটি সাধারণ প্রশ্ন উদ্ভব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেক্ষেত্রে তাদেরকে একই মামলার বিবাদী হিসাবে যুক্ত করা যাবে।”
বিধি ৪ আদালত এক বা একাধিক যুক্ত পক্ষের পক্ষে বা বিপক্ষে রায় প্রদান করতে পারবে।
কোন সংশােধনী ছাড়া নিম্নরুপ রায় প্রদান করা যাবে
ক) প্রতিকার পাবার অধিকারী বলে দৃষ্টমান হয় এমন ধরনের এক বা একাধিক বাদীগণের জন্য, সে বা তারা অধিকারী হতে পারে এরূপ ঐ প্রতিকারের জন্য;
খ) যে বা যারা এই ধরনের এক বা একাধিক বিবাদীর ভিতর দায়ী হয়, তাদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ দায়িত্বের অনুপাতে রায় প্রদান করা যাবে।
বিধি ৫ দাবীকৃত সব প্রতিকারে বিবাদীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট হবার দরকার নাই
বিবাদীবৃন্দের বিরুদ্ধে মামলায় যেসব প্রতিকার করা হয় তার মধ্যে সবগুলোই প্রত্যেক বিবাদী স্বার্থ সম্পর্কিত হবার দরকার নাই।
বিধি ৬ একই চুক্তি অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তি বৃদ্ধকে পক্ষ হিসেবে সামিলকরণ
বাদী তার ইচ্ছা অনুযায়ী কোন একটি চুক্তির উপর আলাদাভাবে বা যুক্ত এবং আলাদা ভাবে দায়ী বিনিময় পত্র হুন্ডি এবং প্রত্যায়নপত্রের পক্ষবৃন্দ বা কোন লোককে একই মামলায় পক্ষ হিসাবে শামিল করতে পারে।
বিধি ৭ কার বিরুদ্ধে প্রতিকার দাবি করতে হবে সে সম্পর্কে যখন বাদীর সন্দেহ থাকে
প্রতিকার পাবার অধিকার কার বিরুদ্ধে সে বিষয়ে বাদীর সন্দেহযুক্ত হলে সে দুই বা ততোধিক বিবাদীর ভিতরে কোন বিবাদী দায়ী এবং কী পরিমান দায়ী, সে প্রশ্নটিই সব পক্ষের ভিতর ধার্য করার জন্য নিযুক্ত করতে পারবে।
উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত
Jagonnath versus Prag Narayan
যে ক্ষেত্রে কোন কোন লোককে বিবাদী করা উচিত হবে তৎমর্মে বাদীর সন্দেহ থাকে সেক্ষেত্রে সব লোককে বিবাদী করা উচিত।
ধারা ৮ এক লােক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাপারে অন্যান্য সবার পক্ষে মামলা করতে বা জবাব প্রদান করতে পারে
১) যেসব ক্ষেত্রে কোন একটি মামলায় একই ধরণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক লােক বিদ্যমান থাকে, সেসব ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতিসাপেক্ষে অনুরূপ লােকদের এক বা একাধিক লােক মামলা করার অধিকার রাখে বা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে, বা উক্ত মামলায় অনুরূপ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অনুকুলে বা সুবিধার্থে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারে। কিন্তু এই ধরনের ক্ষেত্রে আদালত বাদীর নিজস্ব খরচে ব্যক্তিগত জারির দ্বারা বা যেক্ষেত্রে বহু লােকের জন্য বা অপর কোন কারণে ঐ জারি যুক্তিসম্মতভাবে সহজসাধ্য নয় সেক্ষেত্রে আদালত প্রত্যেক ক্ষেত্রে যেরূপ নির্দেশ দেয়, ঐরূপ সর্বসাধারণের জন্য নােটিশ দ্বারা অনুরূপ সব ব্যক্তিবর্গকে মামলা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি দিবে।
২) যে কোন লােক যাদের অনুকুলে ৰা সুবিধার্থে কোন মামলা করা হয়েছে বা আত্মপক্ষ সমর্থন করা হয়েছে, উপ-বিধি (১) এর অধীনে এরূপ মামলায় পক্ষ হবার উদ্দেশে আদালতে দরখাস্ত পেশ করতে পারবে।
৮ বিধির বিশ্লেষণ
প্রতিনিধিত্বমূলক মামলা (Representative suit) বিধি-৮, আদেশ-১
এক ব্যক্তি জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে অন্যান্য সবার পক্ষে মামলা করতে বা জবাব প্রদান করতে পারে। এরুপ মামলার জন্য আদালতের অনুমতি নেয়া প্রয়ােজন এবং যাদের পক্ষে মামলা করা হবে তাদের সবার একই স্বার্থ বা সাধারণ স্বার্থ থাকতে হবে।
বিধি ৯ ভ্রান্তভাবে মামলায় পক্ষ করা এবং কাউকেও পক্ষ হতে বাদ দেয়া
কাউকেও ভ্রান্তভাবে মামলার পক্ষ করা হয়ে থাকলে বা পক্ষ হতে বাদ দেয়া হয়ে থাকলে তজ্জন্য মামলার কোন ক্ষতি হবে না; এবং আদালত এর সামনে আনিত প্রতিটি মামলায় বিরােধীয় বিষয়টি পক্ষবৃন্দের অধিকার ও স্বার্থগুলাের সঙ্গে যতটুকু সম্পর্কিত ততটুকু বিবেচনা করতে পারবেন।
বিধি ১০ ভুল বাদীর নামে মামলা
১) যেসব ক্ষেত্রে বাদী হিসেবে ভুল লােকের নামে মামলা
করা হয়েছে বা যেসব ক্ষেত্রে সঠিক বাদীর নামে এটা রুজু করা হয়েছে কিনা সন্দেহ হয়, সেসব ক্ষেত্রে মাননীয় আদালত মামলার যে কোন পর্যায়ে যদি এইমর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, মামলাটি পবিত্র উদ্দেশ্যে ভুলক্রমে দায়েরকৃত হয়েছে এবং উক্ত মামলা করতে প্রকৃত বিরােধীয় বিষয় ধার্য করার জন্য এটা দরকারি তবে আদালত ন্যায্য মনে করলে এরূপ শর্তের উপর অপর কোন লােককে বাদী হিসেবে স্থলাভিষিক্ত বা সংযােজিত করতে আদেশ প্রদান করতে পারে।
আদালত পক্ষগুলােকে কর্তন বা সংযােগ করতে পারবে
২ আদালত মামলার যেকোন পর্যায়ে যে কোন পক্ষের দরখাস্ত অনুযায়ী বা বিনা আবেদনে এবং আদালতের কাছে সংগত বলে প্রতীয়মান শর্তে অন্যায়ভাবে যুক্তপক্ষের নাম বাদী বা বিবাদীর যে হিসেবেই হােক, বাদ দিতে এবং যে ব্যক্তির নাম বাদী বা বিবাদী যে হিসেবেই হােক, সংযােগ করা উচিত, মামলা কেন্দ্রিক প্রশ্নসমূহের কার্যকর ও সুষ্ঠু ও সম্পূর্ণভাবে বিচার ও সমাধানের উদ্দেশ্যে যার উপস্থিতির দরকার আদালতের সামনে হতে পারে, তাকে যুক্ত করার আদেশ প্রদান করতে পারবে।
৩) এমন কোন লােককে বাদীপক্ষের সামিল করা যাবে না, যার অনুকূলে মামলা পরিচালনার জন্য কোন অভিভাবক নাই বা কোন লােককে তার সম্পত্তি ব্যতিরেকে কোন অপারগ বাদীর অভিভাবক করা যাবে না।
বিবাদী সংযােজিত হলে আরজি সংশােধন করতে হয়
৪) যেক্ষেত্রে মামলায় কোন নতুন বিবাদীকে যুক্ত করা হয়, সেক্ষেত্রে আদালত অপর কোনরূপ নির্দেশ প্রদান না করলে, আরজি দরকার অনুযায়ী সংশােধন করতে হবে এবং সংশােধিত সমন ও আরজির নকল নতুন বিবাদীর উপর জারি করতে হবে এবং আদালত যদি যথাযথ মনে করে তাহলে মূল বিবাদীর উপরও জারি করতে হবে।
৫) তামাদি আইন, ১৯০৮ (১৯০৮ সনের ৯নং আইন) এর ২২ ধারার বিধান মােতাবেক, যে লােককে নুতন বিবাদীরূপে যুক্ত করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে সমন প্রাপ্তির তারিখ হতে আইনগত কর্মক্রম আরম্ভ হয়েছে বলে গণ্য করতে হবে।
১০ বিধির বিশ্লেষণ
মামলার প্রয়ােজনীয় পক্ষ (Necessary Parties) কাকে বলে
যে পক্ষের উপস্থিতি মামলা গঠনের জন্য প্রয়ােজনীয় এবং যার উপস্থিতি ছাড়া কোন ডিক্রী দেওয়া যায় না, তাকে প্রয়ােজনীয় পক্ষ বলে।
মামলার যথাপােযুক্ত পক্ষ (Proper Parties) কাকে বলে
যে পক্ষর উপস্থিতি ছাড়া আদালত কার্যকরী আদেশ দিতে পারে, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ এবং চূড়ান্ত রায় দিতে পারে না, তাকে যথাপােযুক্ত পক্ষ বলে। উদাহরণ: ‘ক’ জমির মালিক, জমির দখল পূনরুদ্ধার করার জন্য ভাড়াটিয়া ‘খ’ এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এক্ষেত্রে ক এবং খ হচ্ছে প্রয়ােজনীয় পক্ষ। তবে ভাড়াটিয়া 'খ' যদি সাব টিনান্ট হিসাবে ‘গ’ কে বাড়ী ভাড়া দেয়, তাহলে সাব টেনান্ট গ হবে যথাপােযুক্ত পক্ষ (Proper party)।
পক্ষসমূহের অ-সংযুক্ত এবং অপসংযােগ (Non Joinder and Mis Joinder of Parties) কাকে বলে বিধি-৯, আদেশ-১
মামলার প্রয়ােজনীয় বা যথাযুক্ত পক্ষকে অন্তর্ভূক্ত না করলে তাকে পক্ষ সমূহের অসংযুক্তি বা পক্ষসমূহের অভাব (Non-Joinder) বলে। অপরদিকে প্রয়ােজনীয় বা যথাযুক্ত পক্ষ ছাড়া অন্যকোন ব্যক্তি যার প্রয়ােজন নাই, তাকে পক্ষভুক্ত করলে, সেটাকে পক্ষসমূহের অপসংযােগ বলে (Mis -Joinder)।
অপসংযােগ বা অ-সংযুক্ত সম্পর্কে আপত্তি (Objection as to Non-Joinder or Mis Joinder)ঃ বিধি-১৩, আদেশ-১
ভুল উপায়ে কাউকে মামলার পক্ষ করা হলে বা পক্ষ থেকে কর্তন বাতিল করা হলে, আপত্তি করতে হবে সম্ভাব্য প্রথম সুযােগে এবং যে ক্ষেত্রে বিচার্য বিষয় ধার্য করা হবে, সেক্ষেত্রে তা নির্ধারিত হবার সময় বা পূর্বে আপত্তি উত্থাপন করতে হবে।
পক্ষদোষের কারণে কোন মামলা ব্যাহত বা ব্যর্থ হতে পারে
কোন পক্ষদোষের কারণে দেওয়ানি বিষয়ক কোন মামলা ব্যাহত বা ব্যর্থ হতে পারে কিনা তা দেওয়ানি কার্যবিধির ১নং আদেশের ৯ ও ১০ নং বিধিগুলিতে বিশদভাবে সন্নিবেশিত হয়েছে। এই আদেশের ৯নং বিধি মতে কাউকেও ভ্রান্তভাবে মামলার পক্ষ করা হয়ে থাকলে, অথবা পক্ষ হতে বাদ দেওযা হয়ে থাকলে তজ্জন্য মামলার ক্ষতি হবে না। অনুরূপ প্রত্যেক ক্ষেত্রে পক্ষগণের অধিকার ও স্বার্থ যতটা জড়িত তদানুসারে বিরােধভুক্ত প্রশ্নটি বিবেচনা করবেন। এই আদেশের (১০) ১ নং বিধিতে, যেক্ষেত্রে ভুল ব্যক্তিকে বাদী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে অথবা সঠিক ব্যক্তিকে বাদী করে মামলা করা হয়েছে কিনা সে বিষয় যেক্ষেত্রে সন্দেহ রয়েছে, যে ক্ষেত্রে মামলায় যে কোন পর্যায়ে আদালত যদি মনে করেন যে, মামলা দায়ের করতে যথার্থ ভুল করা হয়েছে এবং মামলার নিষ্পতি জন্য বাদী পরিবর্তন বা নতুন বাদী সংযােজন করা দরকার তবে উপযুক্ত শর্তে আদালত সেরূপ আদেশ দান করতে পাবেন । এই আদেশের ১০ (২) নং বিধি মোতাবেক মামলার যে কোন পর্যায়ে কোন পক্ষের আবেদনক্রমে যা বিনা আবেদনে আদালত সঙ্গত মনে করলে অথবা যে কোন ব্যক্তিকে মামলার বাদী ও বিবাদী পক্ষে সামিল করা হয়েছে, তার নাম কেটে দেওয়ার এবং প্রকৃতপক্ষে যে ব্যক্তিকে বাদী বা বিবাদী পক্ষে সামিল করা প্রয়োজন তার নাম অথবা মামলাটি সুষ্ঠ বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য আদালতে যে ব্যক্তির হাজির হওয়া প্রয়োজন, তার নাম সংযােজনের আদেশ দান করতে পারেন।
এই আদেশের (৩) নং বিধি মােতাবেক, এমন কোন ব্যক্তিকে বাদীর পক্ষে শামিল করা যাবে না, যার পক্ষে মামলা পরিচালনা জন্য কোন অভিভাবক নাই অথবা কোন ব্যক্তিকে তার সম্পত্তি ব্যতিরেকে কোন অপারগ বাদীর অভিভাবক করা যাবে না। এই আদেশের (৪) নং বিধি মােতাবেক, যেক্ষেত্রে মামলায় কোন নতুন বিবাদীর নাম সংযােজন করা হয় সেক্ষেত্রে আদালত বিপরীত কোন আদেশ প্রদান না করলে আরজি প্রয়ােজন মােতাবেক সংশোধন করতে হবে এবং সংশােধিক আরজি ও সমনের নতুন বিবাদীর উপর জারি করতে হবে। এবং আদালত সঙ্গত মনে করলে মূল বিবাদীর উপর জারি করতে হবে।
এই আদেশের ১০(৫) বিধি অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রযােজ্য তামাদি আইনের ২২ ধারার বিধান সাপেক্ষে যে ব্যক্তিকে নতুন বিবাদীপে সংযােজন করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে কার্যক্রম সমন প্রাপ্তির তারিখ হতে শুরু হয়েছে বলে বিবেচনা করা চলবে।
পক্ষ অপসংযােগ এবং পক্ষাভাব এর প্রতিকার
কোন মামলাই সাধারণতঃ পক্ষের অপসংযােগ এবং পক্ষভাবে অচল হবে না। মােট কথা কোন মামলার অপসংযােগ ঘটলে তা মামলার মারাত্মক সর্বনাশ ডেকে আনবে না বরং সেটা সংশােধনযােগ্য। এইসব ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের আদেশ-১ এর বিধি-১০(২) অনুযায়ী বাদী ও বিবাদীর নাম আরজি জৰাৰ হতে মুছে ফেলা যেতে পারে। পক্ষের অপসংযােগ এবং পক্ষাভাৰ এর মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, পক্ষের অপসংযােগ মামলায় পক্ষভূক্ত পক্ষের মধ্যে যাদের মামলার বাদী শ্রেণিভূক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ হয়তাে বিবাদী শ্রেণিভূক্ত হত বা যাদের বিবাদী শ্রেণিভূক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ হয়তাে বাদী শ্রেণিভূক্ত হওয়া উচিত ছিল এমন। পক্ষান্তরে পক্ষাভাৰ হচ্ছে মামলা যাদের উপস্থিতিতে শুনানী হওয়া একান্ত আবশ্যক তারা মামলায় পক্ষভূক্ত নাই এবং তাদের অনুপস্থিতিতে মামলায় সঠিকভাবে ডিক্রী প্রস্তুত করা যায় না ইত্যাদি। এইক্ষেত্রে প্রতিকার হচ্ছে, দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর আদেশ-১ এর বিধি-৯ মােতাবেক মামলা চলাকালীন বাদী বা বিবাদীর আবেদন মােতাবেক আদালত অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে মামলা বিচার করে থাকেন। মামলায় কোন অপসংযােগের কারণ থাকলে দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর আদেশ-৬ এর বিধি-১৭ মেতাবেক অরজি-জবাব সংশােধন করতঃ আদালত মামলা বিচার করে থাকেন। আদালত Sui moto অপসংযােগ এবং পক্ষাভাবের পরিস্থিতি অপসারণ Remove করতে পারেন। তা ছাড়া দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের আদেশ-১ এর বিধি-১০ অনুযায়ীও দরখাস্ত আনিয়া অপসংযােগ এবং পক্ষাভাব দুর করা যেতে পারে এবং বিধি ১০(২) অনুযায়ী আদালতে বিবাদীপক্ষকে Strike Out করে অন্যান্য আবশ্যকীয় বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা বিচার করতে পারেন।
বিধি ১১ মামলা পরিচালনা
আদালত যাকে সঠিক বলে মনে করবে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব তাকে প্রদান করবে।
বিধি ১২ একাধিক বাদী-বিবাদীর ভিতর সবার পক্ষে একজনের উপস্থিতি
১) কোন মামলায় বেশি সংখ্যক বাদী বিদ্যমান থাকলে তার মধ্যে যেকোনো এক লোককে বা একাধিক লোককে সকলে তাদের পক্ষে আদালতে হাজির হয়ে মামলাকেন্দ্রিক অভিযােগাদির উত্তর দিতে বা কর্ম করতে তথা তদারক করার ক্ষমতা প্রদান করতে পারবে। অনুপভাবে কোন মামলার বেশি সংখ্যক বিবাদী বিদ্যমান থাকলে, তারমধ্যে যেকোন একজনকে বা একাধিক জনকে অপর সকলে তাদের পক্ষে আদালতে হাজির হয়ে মামলাকেন্দ্রিক অভিযােগাদির উত্তর দিতে বা কর্ম করতে তথা তদারক করার ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবে।
২) ক্ষমতা প্রদানকারী পক্ষের স্বাক্ষরে ক্ষমতা অর্পণ লিখিতভাবে করতে হবে এবং তা আদালতে পেশ করতে হবে।
বিধি ১৩ ভুল উপায়ে কাউকেও মামলার পক্ষ সামিল করা হলে বা কাউকেও পক্ষ হতে কর্তন করা হলে তৎসম্পর্কে আপত্তি
মামলায় কাউকে ভুলক্রমে পক্ষ করা হয়ে থাকলে বা পক্ষ হতে কাউকে কর্তন করা বিষয়ক আপত্তি সর্বাগ্রে প্রাপ্ত সুযােগে করতে হবে। যেক্ষেত্রে বিচার্য বিষয় ধার্য করা হবে, সেক্ষেত্রে তা নির্ধারিত হবার পূর্বেই বা ধার্যকালে উক্তরূপ আপত্তি উত্থাপন করতে হবে, অবশ্য আপত্তির কারণ যদি পরে সৃষ্টি হয়, তবে আপত্তিও পরে উত্থাপন করা যাবে এবং অনুরূপ কোন আপত্তি যথাসময়ে উত্থাপিত না করা হলে তা পরিত্যক্ত হয়েছে বলে গণ্য হবে।
১৩ বিধির বিশ্লেষণ
মােকদ্দমার পক্ষসমূহের অপ-সংযােগ বলতে কি বুঝায়? মামলায় অপ-সংযােগের ফলাফল কি?
দেওয়ানি কার্যবিধির ১নং আদেশের ৯, ১০ ও ১৩ নং বিধিগুলেতে মামলার পক্ষসমূহের অপ-সংযােগের বিধি বিধান সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। এই আদেশের ৯নং বিধি মােতাবেক কাউকেও ভ্রান্তভাবে মামলার পক্ষ করা হয়ে থাকলে অথবা পক্ষ হতে বাদ দেওয়া হয়ে থাকলে তজ্জন্য মামলার ক্ষতি হবে না, অনুরূপ প্রত্যেক ক্ষেত্রে পক্ষগণের অধিকার ও স্বার্থ যতটা জড়িত তদনুসারে বিরােধভুক্ত প্রশ্নটি বিবেচনা করবেন। বাদীর আবেদন সম্পর্কে অপর পক্ষকে নােটিশ না দিয়ে অত্র বিধি অনুসারে আদেশ দেওয়া যাবে না। এই আদেশের ১০নং বিধি মােতাবেক যেক্ষেত্রে একাধিক বাদী রয়েছে, সেক্ষেত্রে যদি একজন বা একাধিক বাদী হাজির হয় এবং অন্য কেউ হাজির না হয় । বাদীদের মধ্যে যে বা যারা হাজির হয়েছে, তাদের অনুরােধক্রমে আদালতে সকল বাদী হাজির হলে যেভাবে বিচার হত, সেভাবে বিচার অনুষ্ঠানের অনুমতি দান করতে পারেন। এই আদেশের ১৩নং বিধি মােতাবেক কোন মামলায় বিবাদীর বিরুদ্ধে একতরফা ডিক্রী দেওয়া হয়ে থাকলে উহা রদ করার জন্য বিবাদীর ডিক্রী দানকারী আদালতে আবেদন করতে পারবে। তবে ডিক্রী যদি এরূপ ধরণের হয় যে, উহা কেবল আবেদনকারী বিবাদীর উপর হতে রদ করা সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে অন্যান্য সকল বা যে কোন বিবাদীর উপর হতে উহা রদ করা যাবে।
Effect of mis-joinder of parties:
যেক্ষেত্রে কোন মামলায় পক্ষসমূহের অপ-সংযােজন সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপন করা হয় এবং আদালত উহা ন্যায্য বলে গন্য করেন, সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মামলা খারিজ হয় না।
Non-Joinder of Parties:
কোন একটি মামলায় উহার কোন প্রয়ােজনীয় পক্ষকে পক্ষভূক্ত না করলে তাকে পক্ষাভাব ৰা নন-জয়েন্ডার অব পার্টিজ (Non-Joinder of Parties) বলা হয়।
মামলার অপসংযােগের উপর আলােচনা
অপ-সংযােজন পক্ষের ব্যপারে হতে পারে আবার নালিশের কারণের ব্যাপারেও হতে পারে। পক্ষের ব্যাপারে কিভাবে অপসংযােজন হয় তা অবগত হতে হলে প্রথমেই দেখা দরকার কে একটি মামলায় বাদী পক্ষ হতে পারে। একই কাজ বা আদান প্রদানের কারণে যারা একসাথে প্রতিকার দাবি করতে পারে, তারা একই মামলায় বাদী হতে পারে। একটি কাজের দ্বারা যদি চারজন মানুষের স্বার্থ নিহিত থাকে, তবে সে চারজন ব্যক্তি একসাথে বাদী হয়ে মামলা করতে পারে। একাধিক ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্নভাবে বা পর্যায়ক্রমে যদি মামলা করে (সমস্ত মামলায় একই তথ্য ও আইনগত প্রশ্ন উত্থাপিত হলে) তা হলে তারা সবাই একসাথে করতে পারে।
কোন কোন ব্যক্তিকে একটি বিবাদী শ্রেণিভূক্ত করা যায়-এই সম্পর্কে এবার বলা যাক। একই কাজের দরুন যাদের বিরুদ্ধে একসাথে, ভিন্নভাবে বা পর্যায়ক্রমে কোন প্রতিকার দাবি করা যায় এবং সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যদি ভিন্নভাবে মামলা রুজু করা হয়, তা হলে আইন ও তথ্যসংক্রান্ত একই প্রশ্নের উত্তর হয়, সেক্ষেত্রে সবাইকে একই মামলায় বিবাদী শ্রেণীভূক্ত করা যায়।
এইবার দেখা যাক, নালিশের কারণ বিষয়ে কিভাবে অপসংযােগ হতে পারে। ভিন্ন ভিন্ন নালিশের কারণ থাকলে ভিন্ন ভিন্ন মামলা করতে হয়। সাধারনত ভিন্ন ভিন্ন নালিশের কারণ থাকলে উহাদের একই মামলায় একত্র করে প্রতিকার চাওয়া যায় না, চাহিলে নালিশের কারণের অপ সংযোগ দোষ হয়। নালিশের কারণে অপ সংযোগের সাথে পক্ষের সংযোগ ঘটিতে পারে।