- Get link
- X
- Other Apps
ধারা ৫৫ ডিক্রী জারির জন্য গ্রেফতার ও আটক। দেওয়ানী কার্যবিধি আইন।
Section 55 Arrest and Detention Civil Procedure Code
ধারা ৫৫। ডিক্রী জারির জন্য গ্রেফতার ও আটক
(১) যে কোন সময় যেকোন দিনে ডিক্রী জারির জন্য সাব্যস্ত দেনাদারকে গ্রেফতার করা যাবে, ও যথাসম্ভব শীঘ্র তাকে আদালতে উপস্থিত করা যাবে, এবং আটক আদেশদানকারী আদালত যে জেলায় অবস্থিত সে জেলার দেওয়ানি কয়েদে তাকে আটক রাখা যেতে পারে, বা যেক্ষেত্রে এরূপ দেওয়ানি কয়েদ উপযুক্ত স্থান সংকুলান করতে পারে না, সেক্ষেত্রে উক্তরূপ জেলার আদালত দ্বারা আটকাদেশ প্রাপ্ত বা লােকের আটকের জন্য সরকার অন্য যে স্থান নির্ধারণ করতে পারে সে জায়গায় তাকে আটক রাখা যেতে পারে ? তবে প্রথমতঃ শর্ত থাকে যে, এই ধারার আওতায় কাউকেও গ্রেফতার করার উদ্দেশ্যে কোন বাসগৃহে সুর্যাস্তের পর এবং সুর্যোদয়ের পূর্বে প্রবেশ করা যাবে না।
দ্বিতীয়ত ও শর্ত থাকে যে, সাব্যস্ত দেনাদারের দখলকৃত বাসগৃহ না হলে ও অস্বীকৃতি না জানাইলে বা উক্ত বাসগৃহে প্রবেশ করতে যে কোন বাধা না দিলে সে কক্ষের বহি:দ্বার ভাঙ্গা যাবে না, কিন্তু যদি গ্রেফতারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত অফিসার যে কোন বাসগৃহের যথারীতি প্রবেশ করে থাকেন তবে সাব্যস্ত দেনাদারের সন্ধান পাওয়া যাবে তার এরূপ বিশ্বাসের সংগত কারণ থাকলে তিনি যে কোন কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ঢুকতে পারবে।
তৃতীয়ত ও শর্ত থাকে যে, যদি কক্ষটি এমন মহিলার দখলে থাকে যে, যে লােক সাব্যস্ত দেনাদার নয় ও যে লােক দেশাচার মােতাবেক জন সমক্ষে বাহির হন না, তবে গ্রেফতারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত অফিসার সে কক্ষ ত্যাগ করার জন্য মুক্ত বলে নােটিশ প্রদান করবে ও মহিলাকে কক্ষ পরিত্যাগ করার জন্য যুক্তি যুক্ত সময় ও সুযােগ প্রদানের পর তিনি গ্রেফতারকার্যের জন্য কক্ষে প্রবেশ করতে পারেন।
চতুর্থতঃ শর্ত থাকে যে, যখন যে ডিক্রী জারিতে সাব্যস্ত দেনাদার গ্রেফতার হয়, সে ডিক্রীর টাকা পরিশােধের ডিক্রী হয়ে থাকে এবং সাব্যস্ত দেনাদার ডিক্রীর টাকা ও গ্রেফতারের খরচ গ্রেফতারকারী অফিসারকে প্রদান করে তখন উক্ত অফিসার তাকে তখনই মুক্তি দিবে।
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তির দ্বারা ঘােষণা করতে পারে যে, এই উদ্দেশ্যে [সরকার] দ্বারা নির্ধারিত হতে পারে এমনরূপ পদ্ধতি ভিন্ন ডিক্রী জারিতে কোন লােক বা কোন শ্রেণির ব্যক্তিগণকে গ্রেফতার করলে জনসাধারণের বিপদ বা অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে বিধায় উহারা গ্রেফতারের জন্য দায়ী হবে না।
(৩) যেখানে টাকা পরিশােধের ডিক্রী জারির জন্য সাব্যস্ত দেনাদারকে গ্রেফতার করা হয় ও আদালতে হাজির করা হয়, সেখানে আদালত তাকে জানাবে যে, সে দেউলিয়া ঘােষণার জন্য আবেদন করতে পারে, এবং আবেদনের ব্যাপারে যদি কোন অসাধু উপায় অবলম্বন না করে এবং যদি সে বর্তমানে প্রচলিত দেউলিয়া আইনের বিধানগুলাে মেনে চলে, তাহলে সে লােকের মুক্তি হতে পারে।
(৪) যখন সাব্যস্ত দেনাদার তাকে দেউলিয়া ঘােষণার জন্য আবেদনের ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং আদালতের সন্তোষসহকারে সে এমনরূপ জামানত পেশ করে, সে এক মাসের ভিতর অনুরূপ আবেদন পেশ করবে, ও আবেদনের উপর বা যে ডিক্রী জারির জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে ঐরূপ ডিক্রী জারির উপর কোন কার্যধারায় যখন আহবান করা হবে, তখন সে উপস্থিত হবে, তখন আদালত তাকে গ্রেফতার হতে মুক্তিদান করতে পারে, এবং যদি সে যথাসময়ে উপরিউক্ত আবেদন করতে ও উপস্থিত হতে ব্যর্থ হয় তবে আদালত ডিক্রী জারির দ্বারা তার জামানত আদায়ের জন্য নির্দেশ দিতে পারে বা তাকে দেওয়ানি কয়েদে সােপর্দ করার নির্দেশ দান করতে পারবেন।
৫৫ ধারার বিশ্লেষণ
এই ধারায় দেনাদারকে গ্রেফতার ও আটকের বিধান বর্ণিত হয়েছে। এই ধারার বিরুদ্ধে নানাবিধ বাধা-নিষেধ রয়েছে এবং তাদের আটক থেকে মুক্তির জন্য অনেক সুবিধাজনক শর্তাদি আছে। এই সকল কারণেই এই ধারার ব্যবহার একেবারেই নেই বললেই চলে । অত্র ধারার বিধানসমূহ আদেশব্যঞ্জক। নির্ধারিত এক মাসের মেয়াদ কর্তৃক বৃদ্ধি করা যাবে না। আদালত জামিনদার ও রায়ের দেনাদার উভয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন না।
অর্থ ডিক্রী
একটি অর্থ ডিক্রী আবশ্যকীয়ভাবে দেনাদারকে আটক করে কার্যকরী করা যায় না। যেমন, নাবালক, মহিলা বা বৈধ প্রতিনিধি।
গ্রেপ্তার বা আটক ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল
সাব্যস্ত দেনাদারের বিরুদ্ধে, অথবা এই ধারার অধীনে জামিনদারের বিরুদ্ধে কোন আদেশের বিরুদ্ধে ডিক্রীর মতই আপিল করা যাবে।
ধারা ৫৬। অর্থের ডিক্রীজারিতে মহিলাকে গ্রেফতার বা আটককরণে বাধা-নিষেধ।
এই খন্ডে অন্য কোন বিধান থাকা সত্ত্বেও আদালত টাকা পরিশােধের জন্য অর্থের ডিক্রীজারিতে জন্য কোন মহিলাকে দেওয়ানি কারাগারে গ্রেফতার বা আটক রাখার আদেশ প্রদান করবে না।
৫৬ ধারার বিশ্লেষণ
এই ধারায় মহিলাকে গ্রেফতার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ধারা ৫৭। খোরপােষ ভাতা
সরকার পদমর্যাদা, গােত্র এবং জাতীয়তার ক্রমানুসারে দায়িকের খােরপােষের জন্য প্রদানযােগ্য মাসিক ভাতার হার নির্দিষ্ট করতে পারবে।
৫৭ ধারার বিশ্লেষণ
এই ধারার সাথে আদেশ ২১ এর নিয়ম ৩৯ মিলিয়ে পড়তে হয়।
ধারা ৫৮। Detention and Release আটক ও মুক্তি
১) ডিক্রী জারির জন্য দেওয়ানি আটক প্রত্যেককে নিন্মলিখিতভাবে আটক রাখা হবে
ক) পঞ্চাশ টাকা পরিশোধের ডিক্রির ক্ষেত্রে ৬ মাস সময়ের নিমিত্তে এবং
খ) অপরাপর ক্ষেত্রে ছয় সপ্তাহের নিমিত্তে।
তবে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে এই ছয় মাস বা ছয় সপ্তাহ অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বে আটক লােককে মুক্তি দেয়া যাবে, যদি
১. তার আটকের পরোয়ানায় বর্ণিত টাকা দেওয়ানী কয়েদির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট পরিশােধ করা হয়, অথবা
২. তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত ডিক্রীর টাকা অন্য কোন রূপে মিটানো হয় অথবা
৩. যে লোকের আবেদনক্রমে তাকে আটক করা হয়েছে এ লোক অনুরোধ করলে, অথবা
৪. যে লােকের আবেদনক্রমে তাকে বন্দি রাখা হয়েছে জীবনধারন ভাতা প্রদান করতে তার ব্যর্থতায়।
তবে শর্ত থাকে যে, আদালতে আদেশ ছাড়া তাকে (২) বা (৩) দফার আওতাধীন উক্তরূপ আটক থেকে মুক্ত করা যাবে না ।
২) এই ধারার আওতাধীন আটক হতে মুক্ত দায়িককে তার মুক্তির কারণে তার দেনা হতে মুক্ত করা যাবে না, কিন্তু সে ডিক্রী জারি করে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা যাবে না, যে ডিক্রী জারির ফলে তিনি দেওয়ানি কয়েদে আটক ছিল।
৫৮ ধারার বিশ্লেষণ
কি পরিমাণ টাকার জন্য কতকাল মেয়াদে আটক রাখা হবে তাই এই ধারার বিষয়বস্তু। এই ধারার অধীনে আদালত সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যে আটকাদেশ রয়েছে তা ছয় মাস বা ছয় সপ্তাহের চেয়ে কমাতে পারেন না। খােরপোেষ না দিবার ফলে মুক্তকৃত কোন দেনাদারকে ঐ একই ডিক্রী জারি করার জন্য আটক করা যেতে পারে।
ধারা ৫৯। অসুস্থতার দরুন মুক্তি।
১। কোন সাব্যস্ত দেনাদারকে গ্রেপ্তার করার জন্য পরোয়ানা জারির পর সে কোন সময় তার গুরুতর অসুস্থতার কারণে আদালত তা নাকচ করতে পারে।
২। সাব্যস্ত দেনাদার গ্রেপ্তার হলে যদি আদালতের অভিমতে দেওয়ানী কয়েদে আটক থাকতে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা অনুপোযোগী হয়, তাহলে আদালত তাকে মুক্ত করে দিতে পারে।
৩) সাব্যস্ত দেনাদারকে দেওয়ানি কয়েদে প্রেরণ করা হলে-
ক) কোন সংক্রামক বা ক্ষতিকারক রােগের দরুণ সরকার কর্তৃক, অথবা
খ) কোন গুরুতর রােগে ভুগিবার কারণে সােপর্দকারী আদালত বা উহা যে আদালতের অধঃস্তন ঐ আদালত দ্বারা উক্ত স্থান হতে সে মুক্ত হতে পারে।
৪) উক্ত ধারার আওতাধীনে মুক্তিপ্রাপ্ত সাব্যস্ত দেনাদারকে পুনরায় গ্রেফতার করা যেতে পারে, কিন্তু দেওয়ানি কয়েদে তার আটকের মেয়াদ গড়ে ৫৮নং ধারায় নির্দিষ্ট মেয়াদের বেশি হবে না।
৫৯ ধারার বিশ্লেষণ
অসুস্থতার কারণে দেনাদারকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে দেয়া ও গ্রেফতার হলে তাকে মুক্তি দিবার বিধান এই ধারায় র্ণিত হয়েছে।
গ্রেফতার ও আটকের মাধ্যমে ডিক্রীজারি। ধারা- ৫৫-৫৬
১। যে কোন সময় যে কোন দিনে ডিক্রী জারির জন্য সাব্যস্ত দেনাদারকে (Judgment Debtor) গ্রেফতার করে আদালতে উপস্থিত করা যাবে এবং আটক আদেশদানকারি আদালত যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার দেওয়ানি কারাগারে তাকে আটক রাখা যেতে পারে।
২। কাউকে গ্রেফতার করার উদ্দেশ্য কোন বাসগৃহে সূর্যাস্তের পর এবং সূর্যোদয়ের পূর্বে প্রবেশ করা যাবে না।
৩। আদালত টাকা পরিশােধের জন্য ডিক্রী জারির জন্য কোন মাহিলাকে গ্রেফতার বা আটক রাখার আদেশ প্রদান করবেন না। [ধারা-৫৬]
আটক ও মুক্তি। ধারাঃ ৫৮-৫৯ এবং ৫৫
১। ৫০ টাকার উর্ধ্বে টাকা পরিশােধের ডিক্রীর ক্ষেত্রে সাব্যস্ত দেনাদারকে ৬ মাস পর্যন্ত দেওয়ানি আদালতে আটক রাখা যাবে। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে অর্থাৎ ৫০ টাকার কম হলে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দেওয়ানি আদালতে আটক রাখা যাবে।
২। সাব্যস্ত দেনাদার অসুস্থতার জন্য গ্রেফতার বা দেওয়ানি আদালত থেকে মুক্তি পেতে পারেন। ধারা-৫৯
৩। গ্রেফতারের পর ডিক্রীর টাকা এবং গ্রেফতারের খরচ পরিশোধ করলে মুক্তি পেতে পারেন ধারা ৫৫ (১)
৪। আটক বা গ্রেফতার হওয়া সাব্যস্ত দেনাদার এক মাসের মধ্যে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করলে এবং দেউলিয়া আইনের বিধান মেনে চললে মুক্তি দিতে পারেন। ধারা ৫৫ (৩) ও (৪)