- Get link
- X
- Other Apps
Section 48 Limit of Time Execution of Decree Civil Procedure Code ধারা ৪৮ ডিক্রি জারির সময়সীমা। দেওয়ানী কার্যবিধি আইন
Section 48 Limit of Time for Execution of Decree - Civil Procedure Code 1908
ধারা 48। ডিক্রি জারির সময়সীমা। আদালতের ক্ষমতা। দেওয়ানী কার্যবিধি আইন
ধারা ৪৮। ডিক্রি জারির কতিপয় ক্ষেত্রে তামাদি
নিষেধাজ্ঞার ডিক্রী ছাড়া অন্য কোন ডিক্রী জারির ক্ষেত্রে আবেদন করা হয়ে থাকলে সে একই ডিক্রী জারির জন্য নিম্নলিখিত তারিখ হতে বার বৎসর পর প্রদত্ত কোন আবেদন
মােতাবেক একই ডিক্রী জারির জন্য আদেশ দেয়া যাবে না।
ক) যে ডিক্রী জারির আবেদন করা হয়েছে, উহার তারিখ, বা,
খ) কোন ডিক্রী বা পরবর্তীকালীন আদেশ এ কোন নির্ধারিত তারিখে বা কিস্তিতে টাকা পরিশােধ বা সম্পত্তি প্রদানের নির্দেশ দেয়া হলে উহা লংঘনের তারিখ ।
২) এই ধারার কোন বিধানই
ক) আবেদন এর তারিখের অব্যাবহিত পূর্ববর্তী বার বৎসরের ভিতর ডিক্রী জারি দেওয়ার ব্যাপারে সাব্যস্ত দেনাদার প্রবঞ্চনা বা শক্তি প্রয়ােগের দ্বারা ডিক্রী জারিতে বাধা সৃষ্টি করে থাকলে উক্ত বার বৎসর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও উপস্থাপিত আবেদন অনুযায়ী ডিক্রী জারির আদেশ দানে আদালতকে বিরত করবে না; বা
খ) ১৯০৮ সনের তামাদি আইনের প্রথম তফসিলের ১৮৩ অনুচ্ছেদে। কার্যকারীতাকে সীমাবদ্ধ বা অন্যভাবে প্রভাবিত করবে না।
৪৮ ধারার বিশ্লেষণ
এই ধারায় ডিক্রী জারি করার পর সময়সীমা বর্ণিত হয়েছে। সেই সময়সীমা বার বৎসর। একই ডিক্রী একাধিকবার জারি করা যায়, অর্থাৎ ডিক্রীদার ডিক্রী যত খুশি ততবার দরখাস্ত দিয়ে জারির আবেদন করতে পারে এবং আদালত সেই জারির আবেদন নিম্নবর্ণিত তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া গ্রহণ করতে অস্বীকার করার অধিকার রাখেন নাঃ
(ক) দরখাস্তটি দোবারা দোষে বারিত হলে আদালত উহা গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারেন;
(খ) দরখাস্তটি তামাদি আইনের ১৮২ অনুচ্ছেদে বারিত হলে আদালত উহা গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারেন;
(গ) এই ধারা বার বৎসর পর্যন্ত ডিক্রী জারির শেষ সীমা নির্ধারণ করেছে।
ডিক্রী জারির পরিণতি
ডিক্রী জারির দরখাস্ত আদালত গ্রহণ করতে পারেন এবং গ্রহণ করে ডিক্রীর নির্দেশ মােতাবেক ডিক্রীদারকে তার প্রাপ্য আদায় করে দিতে পারেন। আদালত ডিক্রী জারির দরখাস্ত খারিজ করে দিতে পারেন। তামাদিতে বারিত হলে বা দোবারা দোষে বারিত হলে আদালত এরূপ খারিজের আদেশ দেন। ডিক্রীদার জারির দরখাস্ত প্রত্যাহার করতে পারেন।
ডিক্রী জারির সময় গণনা
কোন সময় হতে ডিক্রী জারির মেয়াদ গণনা করতে হবে তা এই ধারায় স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত অন্য সকল ডিক্রীর ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযােজ্য হবে। ডিক্রীর তারিখ বলতে আপিলের সিদ্ধান্তের তারিখ বুঝায়।
ডিক্রী জারির ক্ষেত্রে প্রতারণা ও বলপ্রয়ােগ করা হলে করণীয়
দেনাদার যদি প্রতারণা বা শক্তি প্রয়ােগের দ্বারা ডিক্রীদারকে ডিক্রী জারি দিতে বিরত রাখে তা হলে ডিক্রীদারের উপর এই বার বৎসরের মেয়াদ কার্যকর থাকবে না।
রােয়েদাদ দেওয়ানি আদালতের ডিক্রী বলে গণ্য হবে
ধারা ৮৭ বা সমিতি আইনের ৮৮ ধারার অধীনে গৃহিত কোন রােয়েদাদ দেওয়ানি আদলতের ডিক্রী বলে গণ্য হবে এবং সেই হিসেবে জারিও করা যাবে। তামাদি আইনের ১৮২ অনুচ্ছেদ মিলিয়ে পড়তে হবে। অর্থাৎ ডিক্রীটি উহার প্রদানের তারিখ হতে ১২ বছরের ভিতর জারি করা যেতে পারে। তবে শর্ত এই যে, ডিক্রী প্রদান করার পর তিন বছর পর পর উহা জারির জন্য দরখাস্ত করা হয়েছে এবং ডিক্রীটি এখনও জীবন্ত বা জারিযােগ্য।
ডিক্রীজারির দরখাস্ত যথাসম্ভব কম সময়ের মেয়াদের মধ্যে রুজু করতে হবে
তামাদি আইনের ১৮২ অনুচ্ছেদের সন্তুষ্টি মতে নির্ধারিত যথাসম্ভব কম সময়ের মেয়াদের মধ্যে এবং তদবস্থায় দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ৪৮ এর বিধান মতে নির্ধারিত বেশি মেয়াদ সময়ের মধ্যে রুজু করতে হবে। যদি জারি দরখাস্ত উক্ত দুইটি আইনের বিধান দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় তবে তা টিকবে না।
ডিক্রীজারির তামাদি বা সময়সীমা। ধারা-৪৮
১। নিষেধাজ্ঞার ডিক্রী ছাড়া অন্যান্য ডিক্রী জারির আবেদন করতে হয়-সর্বোচ্চ ১২ বছর
২। সাব্যস্থ দেনাদার বা দায়িক (Judgment Debtor) যদি প্রতারণা বা প্রবঞ্চনা বা শক্তি প্রয়ােগ করে ডিক্রীজারিতে বাধা দেয় তাহলে ১২ বছরের পরও ডিক্রীজারির আবেদন করা যাবে।
৩। জারির দরখাস্ত ডিক্রীর ২ বছর পর দায়ের করা হলে দায়িকের উপর নােটিশ জারি করতে হবে। [বিধি-২২, আদেশ- ২১]
৪। দেওয়ানি আদালতের যে ডিক্রীজারি বা আদেশ কার্যকর সম্পর্কে তামাদি আইনের ১৮৩ অনুচ্ছেদে বা দেওয়ানি কার্যবিধির ৪৮ ধারায় কোন বিধান নাই তা জারি বা কার্যকর করার জন্য দরখাস্ত ৩ বছরের মধ্যে করতে হবে। তবে যেখানে ডিক্রী বা আদেশের কপি রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ডিক্রী জারির আবেদনটি ৬ বছরের মধ্যে দাখিল করতে হবে। (অনুচ্ছেদ ১৮২, তামাদি আইন ১৯০৮]
৫। তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১৮৩ অনুচ্ছেদ মতে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক সাধারণ আদি দেওয়ানি এখতিয়ার প্রয়ােগের সময় যে রায়, ডিক্রী বা আদেশ বা সুপ্রীম কোর্টের কোন আদেশ কার্যকর করার জন্য ১২ বছরের মধ্যে দরখাস্ত দায়ের করতে হবে।
ধারা ৪৯। হস্তান্তর গ্রহীতা:
মূল ডিক্রীদারের বিরুদ্ধে সাব্যস্ত দেনাদার যে সমস্ত বিচার অধিকার (যদি কোন) করতে পারিতেন, সে সাপেক্ষে ডিক্রীর প্রত্যেক হস্তান্তর গ্রহীতা সে সমস্ত বিচার অধিকার প্রয়ােগ করতে পারবে।
৪৯ ধারার বিশ্লেষণ
ডিক্রীর হস্তান্তরগ্রহীতা দেনাদারের সকল অধিকার বজায় রাখতে বাধ্য। ইহাই এই ধারার বিষয়বস্তু। ডিক্রীর হস্তান্তরগ্রহীতা যেই অবস্থায় ডিক্রী লাভ করে, হস্তান্তরের পর হতে সেই অবস্থা স্থির থাকে। এই ধারার মূলনীতি সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ধারা ১৩২ এর মতই। ধারা ৪৯ মুলতঃ হস্তান্তরসূত্রে প্রাপক ডিক্রীদারের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য এবং ইহা সম্পত্তি হস্তান্তরগ্রহীতা পর্যন্ত প্রসারিত ডিক্রী ন্যায়পরতার অধীন কিনা এই প্রশ্ন জারিকারক আদালতই বিবেচনা করবেন।
পাল্টা দাবি বা পাল্টা ডিক্রী কাকে বলে
পাল্টা দাবি বা পাল্টা ডিক্রী হস্তান্তরসূত্রে প্রাপ্ত ডিক্রীদারদের বিরুদ্ধে মিটমাট করাই হচ্ছে, ন্যায়পরতা। কিন্তু যে ডিক্রী মিটমাট চাওয়া হয়, তা অবশ্য ডিক্রী জারিকারক আদালতে প্রার্থনা করতে হবে।
ধারা ৫০। বৈধ প্রতিনিধি Legal Representatives ক্ষেত্রে ডিক্রীজারি
১) ডিক্রী সম্পূর্ণরূপে পরিশােধ হওয়ার পূর্বে সাব্যস্ত দেনাদারের মৃত্যু হলে ডিক্রীদার মৃত লােকের বৈধ প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ডিক্রীজারির জন্য ডিক্রীদানকারী আদালতে আবেদন করতে পারবে।
২) যখন এরূপ বৈধ প্রতিনিধির উপর ডিক্রীজারি হয় তখন মৃত লােকের সম্পত্তির যে অংশ তিনি প্রাপ্ত হয়েছে এবং যা যথা নিয়মে বিলিবন্টন করে তদানুপাতে ঐ বৈধ প্রতিনিধি দায়ী থাকবেন; এবং উক্তরূপ দায় নির্ধারণের উদ্দেশ্যে ডিক্রীজারিকারী আদালত স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে বা ডিক্রীদারের আবেদনক্রমে উক্ত বৈধ প্রতিনিধিকে আদালত উপযুক্ত মনে করে উক্তরূপ হিসাব দাখিলে বাধ্য করতে পারে।
৫০ ধারার বিশ্লেষণ
এই ধারায় বলা হয়েছে, ডিক্রীর দেনা শােধ হওয়ার পূর্বে দেনাদারের মৃত্যু হলে তার ওয়ারিশ বা প্রতিনিধি ঐ দেনার দায়ে দায়ী থাকবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ডিক্রী জারি চলবে। তবে ওয়ারিশ বা প্রতিনিধির দায়িত্ব সেই পরিমাণ হবে যেই পরিমাণ সম্পত্তি তার মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে হবে। সাব্যস্ত দেনাদারের মৃত্যু যদি নিলাম বিক্রির পূর্বে সাব্যস্ত দেনাদারের মৃত্যু হলে মৃতের উত্তরাধিকারীদের নথিতে অন্তর্ভুক্ত না করে নিলাম বিক্রি সম্পাদিত হলে উক্ত বিক্রয় বাতিল বলে পরিগণিত হবে।
ডিক্রী জারির ক্ষেত্রে বৈধ প্রতিনিধি সম্পর্কিত উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত
Md. Solaiman Vs. Ismail
এই ধারায় ডিক্রীর পর দাইকের মৃত্যু হলে তার বৈধ প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ডিক্রীদারকে তার ডিক্রী জারির ক্ষমতা প্রদান করে। মৃত্যু হলে ডিক্রী যদি বৈধ হয় তবে ডিক্রীর পূর্বে মৃত্যুর নিয়ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কোন লােক মৃত দাইকের বৈধ ওয়ারিশ কিনা এবং পৃথক দাবিদার কিনা তা আদালত নির্ধারণ করতে পারে। কোন প্রতারণা না থাকলে মৃত দাইকের ওয়ারিশগণ ডিক্রী দ্বারা বাধ্য থাকবে।
Procedure in Execution of Decree ডিক্রীজারি কার্যকর করার পদ্ধতি
ধারা ৫১। ডিক্রীজারি কার্যকর করার ব্যাপারে আদালতের ক্ষমতা:
নির্ধারিত হতে পারে এরূপ শর্ত এবং নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে আদালত ডিক্রীদারের আবেদনক্রমে
ক) বিশেষরূপে ডিক্রীভুক্ত কোন সম্পত্তি অর্পণের দ্বারা;
খ) কোন সম্পত্তি ক্রোক ও বিক্রয় দ্বারা বা ক্রোকবিহীন বিক্রয়ের দ্বারা;
গ) দেনাদারকে গ্রেফতার ও কারাগারে আটকের দ্বারা;
ঘ) রিসিভার নিয়ােগ দ্বারা; বা
ঙ) প্রদত্ত প্রতিকারের প্রকৃতির প্রয়ােজন মােতাবেক অন্য কোন পন্থায় ডিক্রী জারির আদেশ প্রদান করতে পারে ।
তবে শর্ত থাকে যে, যদি ডিক্রীটি অর্থ পরিশােধের জন্য হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে দেনাদারকে কারাগারে সােপর্দ করা হবে না কেন কারণ দর্শাইবার জন্য সুযােগ প্রদানের পর আদালত (নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলাে) সন্তুষ্ট হয়ে কারণগুলাে লিখিতভাবে উল্লেখ না করা পর্যন্ত কারাগারে সােপৰ্দের আদেশ দ্বারা জারির আদেশ প্রদান করবে না।
ক) দেনাদার ডিক্রী জারিতে বাধা প্রদান বা উহা বিলম্বিত করার উদ্দেশ্যে-
১. আত্মগােপন বা আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় সীমারেখা ত্যাগ করতে পারে,
২. ডিক্রী প্রদত্ত হয়েছে এরূপ মামলা হওয়ার পর তার সম্পত্তির কোন অংশ তার দ্বারা অসদুপায়ে স্থানান্তরিত, লুকায়িত বা অপসারণ করা হয়েছে, বা তার সম্পত্তি নিয়ে যে কোন অবিশ্বস্ততার কাজ করেছে; বা
খ) ডিক্রীর তারিখ হতে ডিক্রীর টাকা বা উহার সম্পূর্ণ অংশ পরিশােধের সংগতি দেনদারের আছে বা ছিল দেনাদার তা পরিশােধ করতে অস্বীকৃতি বা অবহেলা করে বা করেছেন, বা
গ) ডিক্রীটি যে পরিমাণ অর্থের জন্য ছিল, সে পরিমাণের জন্য দেনাদার আস্থাভাজন ব্যক্তির ভূমিকায় হিসাবের জন্য দায়ী ছিল ।
ব্যাখ্যাঃ (খ) দফার উদ্দেশ্যে দেনাদারের সংগতি নির্ধারণকল্পে, বর্তমানে প্রচলিত কোন আইন বা রীতির আওতায় ডিক্রী জারির দরুন ও ক্রোক হতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত কোন সম্পত্তি হিসাবের বাহিরে থাকবে।
৫১ ধারার বিশ্লেষণ
কি কি পদ্ধতিতে ডিক্রীদারকে ডিক্রী জারির দ্বারা প্রতিকার প্রদান করা যায়, তা এই ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। কিভাবে ডিক্রীদার তার পাওনা আদায় করবে, তা নির্বাচনের ভার ডিক্রীদারের উপর। ডিক্রীদার যেভাবে ডিক্রীর অর্থ আদায় করতে চায়, আদালত সেভাবেই তাকে করতে দিবেন এবং আদালত তার উপর কোন সীমা বা শর্ত আরােপ করবেন না। আলােচ্য ধারায় ডিক্রী জারিকারক আদালতের ডিক্রী জারির বিভিন্ন পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। অত্র বিধির ২০ আদেশের ৩০ নিয়মের আওতায় জারিকারক আদালত দেনাদারের ব্যক্তি ও সম্পত্তি উভয়টির বিরুদ্ধে যুগপৎ জারি প্রক্রিয়া আরম্ভ করতে পারেন। দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ৫১(গ) দফার আওতায় সাধারণভাবে ডিক্রী জারির ব্যাপারে যেক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা আছে, কেবল সেক্ষেত্রে আদালত রিসিভার নিয়ােগ করতে পারেন। এরূপ নিয়ােগ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির বেলায়ও হতে পারে। স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তির উপকারার্থে রিসিভার নিয়ােগ করা হয়। অপরাপর ডিক্রীদারকে তাদের ডিক্রী জারিতে একই সম্পত্তির উপর নিয়ােগের জন্য পুনরায় আবেদন করার দরকার নেই।
ডিক্রী জারির কার্য ধারা
দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ৫১ ধারা অনুযায়ী, ডিক্রী প্রাপকের আবেদনক্রমে আদালত নিম্নলিখিত উপায়ে ডিক্রী জারি করতে পারেন।
(ক) নির্দিষ্টভাবে ডিক্রীকৃত সম্পত্তি অর্পণের মাধ্যমে;
(খ) সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রয়ের মাধ্যমে অথবা বিনা ক্রোকে সম্পত্তি নিলাম বিক্রয়ের মাধ্যমে ।
(গ) রায় দায়িককে গ্রেফতার বা কারাগারে আটকের মাধ্যমে;
(ঘ) মামলাধীন সম্পত্তির তত্ত্ববধায়ক আদালত কর্তৃক নিযুক্ত কর্মচারীর মাধ্যমে; অথবা
(ঙ) অনুমােদিত প্রতিকারের প্রয়ােজন অনুসারে অন্য যে কোন পদ্ধতিতে অর্থ পরিশােধের ডিক্রীর ক্ষেত্রে রায় দায়িকে কেন কারাগারে সােপর্দ করা হবে না এরূপ কারণ দর্শাইবার সুযােগ না দিয়ে কারাগারে আটকের মাধ্যমে ডিক্রী জারির আদেশ দেওয়া যাবে না।
একজন তত্ত্বাবধায়ক বা রিসিভার নিয়ােগ করতে হলে কি কি পন্থা অবলম্বন করতে হয়
ন্যায়সঙ্গত ডিক্রী জারিকরণের ভিত্তিতে আদালত রিসিভার নিয়ােগের জন্য অগ্রসর হন। ডিক্রীদারের আবেদনক্রমে আদালত ডিক্রী জারির বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৫১ ধারার বিধান সাপেক্ষে, একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে রিসিভার হিসাবে নিয়ােগের জন্য আদেশ প্রদান করেন। রিসিভার নিয়ােগ হল ডিক্রী জারিরই একটি বিশেষ পন্থা। রিসিভার নিয়ােগের পদ্ধতি সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৪০নং আদেশের ১(১) নং বিধিতে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই আদেশের ১(১) নং বিধিতে বলা হয়েছে যে, আদালত সঙ্গত ও সুবিধাজনক মনে করলে একজন রিসিভার নিযুক্ত করতে পারেন। আদালত প্রয়ােজন মনে করলে মামলার যে কোন পর্যায়ে, তা ডিক্রীর পূর্বেই হােক কিংবা পরেই হােক, যে কোন সম্পত্তির জন্য একজন রিসিভার নিয়ােগ করতে পারেন। রিসিভার নিয়ােগের উদ্দেশ্যে আদালত একটি আদেশ প্রদানের মাধ্যমে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা অবলম্বন করতে পারবেন। যেমন-
ক) ডিক্রীর পূর্বে বা পরে কোন সম্পত্তির জন্য রিসিভার নিয়ােগ;
খ) সম্পত্তির দখল অথবা জিম্মাদারী হতে কোন ব্যক্তিকে অপসারণ;
গ) উক্ত সম্পত্তি রিসিভারের দখল, জিম্মাদারীর ব্যবস্থাপনায় অর্পণ; এবং
ঘ) রিসিভারকে উক্ত সম্পত্তিতে ব্যবস্থাপনা এবং মামলা পরিচালনায় যাবতীয় ক্ষমতা দান করতে পারেন।
এইভাবে, এই আদেশের ১(১) নং বিধির বিধান অনুযায়ী, রিসিভারকে বিরােধকৃত সম্পত্তি প্রসঙ্গে মামলা দায়ের করা এবং মামলায় জবাব দেওয়া, সম্পত্তিটি হস্তগত করা, উহার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করা, খাজনা ও মুনাফা আদায় করা এবং উক্ত খাজনা ও মুনাফা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ যথাবিহীত ব্যয় ও বিলিবন্টন করার ব্যাপারে সম্পত্তির মালিকের অনুরূপ ক্ষমতা অথবা আদালত যেরূপ মনে করেন, তদ্রুপ ক্ষমতা অর্পণ করবেন। তবে দখলের ব্যাপারে আদালত কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করবেন না।
একই আদেশের ১(২) নং বিধিতে বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তিকে সম্পত্তির দখল এবং জিম্মাদারী হতে অপসারণের ব্যাপারে মামলা কোন একটি পক্ষের অধিকার না থাকলে আদালত অত্র বিধিবলে অনুরূপ ব্যক্তিকে অপসারণের ক্ষমতা লাভ করবেন না।
রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক এর কার্যাবলী
একজন রিসিভারকে যেসব কার্যাবলি সম্পন্ন করতে হবে, সে সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৪০নং আদেশের ৩নং বিধিতে সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করা। রিসিভারের কার্যাবলি সম্পর্কে এই আদেশের ৩নং নং বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আদালত কর্তৃক নিযুক্ত রিসিভারকে অবশ্যই নিম্নরূপ কার্যাবলি সম্পন্ন করতে হবে; যেমন -
১) সম্পত্তি বাবদ প্রাপ্ত আয়ের যথাযথ হিসাব দানের জন্য আদালত কর্তৃক নির্ধারিত জামানত (যদি থাকে) দাখিল করতে হবে।
২) আদালত কর্তৃক নির্ধারিত ফর্মে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই যাবতীয় হিসাব-নিকাশ দাখিল করতে হবেজ
৩) আদালতের নির্দেশ মােতাবেক তার নিকট হতে পাওনা টাকা পরিশােধ করতে হবে।
৪) রিসিভারের স্বেচ্ছাকৃত ত্রুটি অথবা গুরুতর অবহেলার দরুণ সম্পত্তির কোন ক্ষতি সাধিত হলে, তজ্জন্য রিসিভারকেই সকল দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে ।
এইভাবে, প্রত্যেক রিসিভারকে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত হওয়া মাত্র উপরে উল্লেখিত কার্যাবলি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ক উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তসমূহ।
Kreshnamokhlal Vs. Vhogban
ডিক্রীদার আবেদন করলে নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে বিশেষ ডিক্রীতে সম্পত্তি প্রদান, সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রয়, ক্রোক ছাড়া বিক্রয়, গ্রেফতার ও কারাগারে আটক, রিসিভার নিয়ােগ বা প্রার্থিত প্রতিকার মঞ্জুর হলে এর ধরণ মােতাবেক প্রয়ােজনে যে কোন পদ্ধতি দ্বারা আদালত ডিক্রী জারির জন্য আদেশ দিতে পারে।
K. N. Gongappa Vs. A. M. Shovramoni
দাইককে কেন গ্রেফতার করা হবে না তদমর্মে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দিতে হয় না, তবে কেন জেলে প্রেরণ করা হবে না তদমর্মে কারণ দর্শাতে বলতে হবে।
Maruti Vs. Pol India
ডিক্রীদারের পাওনা পরিশােধ করার মত যথেষ্ট সঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও দায়িক, ইচ্ছাকৃতভাবে ডিক্রীর কাল ব্যর্থ করার মানসে পরিশােধ করছে না, এরূপ প্রতীয়মান হওয়া আবশ্যক।
ধারা ৫২। বৈধ প্রতিনিধির উপর ডিক্রীর কার্যকারিতা
(১) যেক্ষেত্রে কোন মৃত লােকের বৈধ প্রতিনিধি হিসাবে কোন পক্ষের উপর ডিক্রী দেয়া হয়, এবং ডিক্রীটি মৃত লােকের সম্পত্তি হতে টাকা পরিশোধের জন্য হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে উহা উক্তরূপ কোন সম্পত্তির এবং বিক্রির দ্বারা জারি হতে পারে।
(২) যেক্ষেত্রে অনুরূপ কোন সম্পত্তি সাব্যস্ত দেনাদারের দখলে না থাকে ও সে তার দখলে এসেছে বলে প্রমাণিত মৃতলােক উক্তরূপ সম্পত্তির যথার্থ ব্যবহার করেছে বলে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে অসমর্থ হয় সেক্ষেত্রে উক্ত ডিক্রী ব্যক্তিগতভাবে সাব্যস্ত দেনাদারের উপর প্রদত্ত হয়েছিল মর্মে একই পদ্ধতিতে সে যে পরিমাণ সম্পত্তি সম্পর্কে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে সামর্থবান হয়েছে সে পরিমাণ সম্পত্তির সম্পর্কে তার উপর ডিক্রী জারি হতে পারে।
ধারা ৫৩। পৈত্রিক সম্পত্তির দায়
৫০ ও ৫২ ধারার উদ্দেশ্যে মৃত পূর্বপুরুষের কোন সম্পত্তি যখন পুত্র বা অপরাপর উত্তরাধিকারীদের হস্তস্থিত হয় ও হিন্দু আইন মােতাবেক মৃত লােকের কোন দেনা পরিশােধের দায়িত্ব যদি সে সম্পত্তির উপর বর্তিয়া থাকে ও উক্ত দেনা বাবদ যদি ডিক্রী প্রদত্ত হয়ে থাকে, তবে উক্ত সম্পত্তি মৃত লােকের বৈধ প্রতিনিধি হিসাবে পুত্র বা অপরাপর উত্তরাধিকারীদের হস্তস্থিত সম্পত্তি বলে পরিগণিত হবে।
ধারা ৫৪। সম্পত্তি বাটোয়ারা বা অংশ বিভাজন
যেক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব প্রদানের জন্য ধার্যকৃত অবিভক্ত সম্পত্তি বাটোয়ারার জন্য বা অনুরূপ কোন সম্পত্তির কোন অংশের পৃথক দখলের জন্য ডিক্রী হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে বাঁটোয়ারা বিষয়ক বলবৎ (যদি কোন) আইন মােতাবেক কালেক্টর দ্বারা বা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তক প্রেরীত কালেক্টরের অধীনস্থ গেজেটেড পদের কর্মচারী দ্বারা, বা অনুরূপ সম্পত্তি বাটোয়ারা অংশের ভিন্ন দখল মােতাবেক সম্পত্তি বন্টন বা অংশের বিভাগ হবে।