- Get link
- X
- Other Apps
Section 21 22 23 24 objections to jurisdiction. Civil Procedure Code
ধারা 21 22 23 24 আদালতের এখতিয়ারে আপত্তি দেওয়ানী কার্যবিধি আইন
ধারা ২১। এখতিয়ারে আপত্তি
যে আদালতে প্রথম মামলা করা হয়, সে আদালতে প্রথম সম্ভাব্য সুযােগ এবং বিচার্য বিষয় সুস্থির করার প্রাক্কালে বা তৎপূর্বে আপত্তি উত্থাপন না করা হলে এবং ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্য ব্যর্থ না হলে কোন আপিল বা রিভিশন আদালত মামলা দায়েরের স্থান সম্পর্কে কোন আপত্তি মঞ্জুর করবেন না।
২১ ধারার বিশ্লেষণ
আদালতের আর্থিক এখতিয়ার সম্পর্কে শীঘ্রতম সন্ধিক্ষণে আপত্তি উত্থাপন না করলে তা পরিত্যক্ত হয়েছে বলে পরিগণিত করা যায়। মামলা করার পর চার বৎসর অতিবাহিত হয়েছে, বাদীর সাক্ষীদেরকে বিবাদীপক্ষ জেরা করেছে, বিবাদী পক্ষও সাক্ষ্য প্রদান করেছে। অতঃপর আদালতের সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করার এখতিয়ার নাই বলে বিবাদীর উত্থাপিত আপত্তি গ্রাহ্য হতে পারে না। বিবাদীর কার্য দ্বারা আপত্তি পরিহার করা হয়েছে বলে পরিগণিত হবে। [AIR 1997 (Raj) 19 Mali Vs. Kishen Lal] আদালতের এখতিয়ার বিষয়ক প্রশ্ন নিম্নাদালতে উত্থাপন করে থাকলেও এরূপ এখতিয়ারবিহীনতার কারণে ন্যায়বিচার পরাহত না হয়ে থাকলে আপিল আদালত উক্ত আপত্তি গ্রাহ্য করবেন না। [AIR 1992 (Gau) 91 Moimuna Vs. Lakkhon]
উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তসমূহ
প্রাথমিক অবস্থায় আপত্তি উপস্থাপিত করাতে অপারগ হলে তৎপরবর্তী স্তরে আপত্তি উপস্থাপন করতে অত্র প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না। [9 DLR 686] প্রাথমিক বিচারকারী আদালতে আপত্তি উত্থাপিত না হলে তৎপরবর্তীতে উচ্চ আদালতের রিভিশন এখতিয়ারে অনুরূপ আদালতের এখতিয়ারের বিষয়ে আপত্তি উথিত হয় না। [35 DLR (1983) 14]
ধারা ২২। একাধিক আদালতে যে মামলা করা যায় এরূপ মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা
দুই বা ততােধিক আদালতের যে কোন একটিতে যখন কোন মামলা করা চলে এবং মামলাটি তার ভিতর যে কোন একটি আদালতে দায়ের করা হয়, তখন যে কোন বিবাদী অপর পক্ষকে নােটিশ দিয়ে প্রথম সম্ভাব্য সুযােগ ও বিচার্য বিষয় নির্ধারণের সময় বা তার পূর্বে অপর একটি আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে এবং আদালত এরূপ আবেদনপত্র পাওয়ার পর অপর পক্ষের আপত্তি (যদি থাকে) শুনানী করে এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতগুলাের কোনটিতে মামলা অগ্রসর হবে তা স্থির করে দিবেন।
২২ ধারার বিশ্লেষণ
একাধিক আদালতে দায়েরযােগ্য মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা আলােচনা
একাধিক আদালতে দায়েরযােগ্য মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর ধারা-২২ এ বিধান রাখা হয়েছে। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে যে, দুই বা ততােধিক আদালতের যে কোন একটিতে যখন কোন মামলা দায়ের করা চলে এবং মামলাটি তার মধ্যে যে কোন একটি আদালতে দায়ের করা হয়, তখন যে কোন বিবাদী অপর পক্ষকে নােটিশ দিয়ে প্রথম সম্ভাব্য সুযােগ ও বিচার্য বিষয় নির্ধারণের সময় বা তার পূর্বে অপর একটি আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে এবং আদালত এরূপ আবেদনপত্র পাওয়ার পর অপর পক্ষের আপত্তি (যদি থাকে) শ্রবণ করে এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতসমূহের কোনটিতে মামলা অগ্রসর হবে তা স্থির করবে।
মামলা কখন স্থানান্তর করতে হবে
ধারা ২২ এর ভাষা আদেশাত্মক। মােকদ্দমা স্থানান্তরের আবেদন প্রথম সুযােগে এবং তর্কভুক্ত প্রশ্ন নির্ধারণের পূর্বে করতে হবে। মামলা স্থানান্তরের জন্য আদালতের পক্ষপাতিত্ব ও পক্ষদ্বয়ের সুবিধার ভারসাম্য একটি সঙ্গত কারণ হতে পারে। তবে কেবল বিবাদীর সুবিধা-অসুবিধাই এখানে একমাত্র বিচার্য বিষয় নয়। যখন বাদী-বিবাদী সুবিধা অসুবিধার ভারসাম্য বিবেচনাপূর্বক স্থানান্তরের সপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি সন্নিবেশিত হয় শুধুমাত্র তখনই মােকদ্দমার স্থানান্তরের আদেশ দেয়া যেতে পারে। সাধারণভাবে স্থানান্তরের আবেদন দরখাস্ত দ্বারা করা যাবে এবং একটি শপথনামা দ্বারা ওই স্থানান্তরের কারণ সমূহ তুলে ধরতে হবে। একাধিক মোকদ্দমা স্থানান্তরের জন্য একাধিক দরখাস্ত করতে হবে।
ধারা ২৩। মামলা স্থানান্তর দরখাস্ত বা আবেদন কোন আদালতে করা যায়
১) যখন এখতিয়ারসম্পন্ন একাধিক আদালত একই আপিল আদালতের অধীন হয়, তখন উক্ত আপিল-আদালতে ২২ ধারানুযায়ী আবেদন পেশ করা যায় ।
২) যখন অনুরূপ আদালতগুলাে বিভিন্ন আপিল আদালতের আওতাধীনে হয় তখন হাইকোর্ট ডিভিশনে আবেদন পেশ করতে হয় ।
৩) বাতিল।
২৩ ধারার বিশ্লেষণ
যখন এখতিয়ারসম্পন্ন একাধিক আদালত একই আপিল আদালতের আওতায় হয়, তখন সেই আপিল আদালতে ২২ ধারা মােতাবেক দরখাস্ত দাখিল করতে হবে। এরূপ আদালতগুলি একাধিক আপিল আদালতের আওতায় হলে, দরখাস্ত হাইকোর্ট বিভাগে দাখিল করতে হবে। এই কার্যবিধির ধারা ১৬ মােতাবেক কতিপয় মােকদ্দমা বাদী ইচ্ছামমাতাবেক একাধিক আদালতে যেকোন একটিতে দাখিল করতে পারে। এই অবস্থায় বিবাদী উপযুক্ত কারণ প্রদর্শন করে অন্য এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে স্থানান্তরের জন্য বর্ণিত উপায় দরখাস্ত করতে পারবে।
দেওয়ানি মামলার আপিল আদালত দুটি
১। জেলা জজ আদালত;
২। হাইকোর্ট বিভাগ;
একই জেলার অধীন এক আদালত থেকে অন্য আদালতে মামলা স্থানান্তর করতে হলে জেলা জজের নিকট আবেদন করতে হবে। কারন জেলার দেওয়ানি আদালত গুলাে জেলা জজের আপিল এখতিয়ারধীন। অপরদিকে এক জেলার দেওয়ানি আদালত থেকে অন্য জেলার দেওয়ানি আদালতে মামলা স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে হবে হাইকোর্ট বিভাগের নিকট । উদাহরণ: "ক”, “খ” এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মাগুরার যুগ্ম জেলা জজ ১ নং আদালতে। বিবাদী “খ” মামলাটি মাগুরার যুগ্ম জেলা জজ ২ নং আদালতে স্থানান্তর করতে চায়। যেহেতু দুইটি আদালতই একই আপিল আদালত অর্থাৎ মাগুরার জেলা জজের অধীন, সুতরাং বিবাদীকে ২২ ধারা অনুসারে মাগুরার জেলা জজের নিকট আবেদন করতে হবে।
(খ) “ক”, “খ” এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মাগুরার যুগ্ম জেলা জজের আদালতে উক্ত মামলাটি ঝিনাইদহ জেলার যুগ্ম জেলা জজের আদালতে বিবাদী “খ” স্থানান্তর করতে চায়। যেহেতু দুটি আদালত ভিন্ন ভিন্ন আপিল আদালতের আওতাধীন সুতরাং বিবাদীকে মামলা স্থানান্তরের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের নিকট দরখাস্ত করতে হবে।
ধারা ২৪। মামলা স্থানান্তর ও প্রত্যাহারের সাধারণ ক্ষমতা
১) মামলার বিবাদমান যে কোন পক্ষের আবেদনক্রমে, সমস্ত পক্ষকে নােটিশ প্রদান করে ও তাদের কাহারও বক্তব্য শােনার ইচ্ছা থাকলে তা শুনানী করে বা কোন নােটিশ প্রদান না করে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে হাইকোর্ট বিভাগ বা জেলা আদালত যে কোন সময়
ক) উহার নিকট বিচার বা নিস্পত্তির জন্য বিচারাধীন কোন মামলা, আপিল বা কোন কার্যব্যবস্থা উহার অধীনস্থ এবং উহা বিচার বা নিস্পত্তি করার এখতিয়ারসম্পন্ন কোন আদালতে স্থানান্তরিত করতে পারেন, কিংবা
খ) উহার অধীনস্থ কোন আদালতে কোন মামলা, আপিল বা অপরাপর কার্যব্যবস্থা প্রত্যাহার করতে পারেন, এবং
১. উহার বিচার নিস্পত্তি করতে পারেন; বা
২. উহার বিচার বা নিস্পত্তি করার উপযুক্ত কোন আদালতে বিচার বা নিস্পত্তির জন্য স্থানান্তর করতে পারেন; বা
৩. যে আদালত হতে ইহা প্রত্যাহার করা হয়েছিল, সে আদালতে বিচার বা নিস্পত্তির জন্য প্রেরণ করতে পারে।
২) কোন মামলা (১) উপধারা মােতাবেক স্থানান্তরিত বা প্রত্যাহৃত হয়ে থাকলে এবং পরে যে আদালতে ইহার বিচার হয়, সে আদালত স্থানান্তরের বিষয়ে বিশেষ নির্দেশমূলে পূর্ণ বিচার করতে পারেন, বা যে পর্যায় হতে উহা স্থানান্তর বা প্রত্যাহার করা হয়েছিল, সে পর্যায় হতে বিচার শুরু করতে পারেন।
৩) এই ধারার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত ও সহকারী জজ আদালতকে জেলা আদালতের অধীন বলে পরিগণিত করতে হবে।
৪) এই ধারা অনুসারে ক্ষুদ্র বিষয়ক বিচার আদালত হতে স্থানান্তরিত বা প্রত্যাহৃত কোন মামলা বিচারকারী আদালত, উক্তরূপ মামলার উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্র বিচার বিষয়ক বিচার আদালত বলে পরিগণিত হবে।
ধারা ২৪ক। মামলা ইত্যাদি স্থানান্তরের পর পক্ষগুলাের হাজিরা
দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ২২ ধারার আওতায় মামলা স্থানান্তরিত হলে বা পক্ষদের আবেদনে ২৪(১) ধারার আওতায় মামলা, আপিল ইত্যাদি স্থানান্তর বা প্রত্যাহার আদেশদানকারী আদালত নিজেই বিচার করতে ইচ্ছা করলে পক্ষদের উহার সম্মুখে হাজির হবার জন্য দিন নির্ধারণ করবে বা যে আদালতে মামলা স্থানান্তর হয়েছে সে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করে দিবে ।
২) আবেদন ছাড়া মামলা, আপিল ইত্যাদি স্থানান্তর হলে পূর্ব নির্ধারিত দিনে স্থানান্তর আদেশ প্রদানকারী আদালতে উপস্থিত হবে। উক্ত আদালত তখন পক্ষগুলাের স্থানান্তর বিষয়ে জ্ঞাত করাবে এবং পক্ষগুলােকে নির্ধারিত ধার্যকৃত তারিখে বা সুবিধা মােতাবেক নিকটতম তারিখে মামলা স্থানান্তরিত আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিবে।
২৪ক ধারার বিশ্লেষণ
ধারা ২২ ও ২৪ এর মােকদ্দমা স্থানান্তরের বিধান দেওয়া হয়েছে। মােকদ্দমা স্থানান্তর হবার পর ত্বরিৎ নিষ্পত্তির ব্যাপারে যাতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয় সেজন্য পক্ষগণকে জানানাের বিধান এই ধারায় দেওয়া হয়েছে। কোন পক্ষে দরখাস্তমূলক স্থানান্তরের আদেশ দেয়া হয়ে থাকলে স্থানান্তরের আদেশের সময় পক্ষবৃন্দকে পরবর্তী তারিখ জানিয়ে দিতে হবে। সেই সকল স্থানান্তরের আদেশ পক্ষগণের দরখাস্তমূলে হয় নাই, সেই সকল মােকদ্দমার পক্ষগণ স্থানান্তরের আদেশের আগে যে আদালতে মােকদ্দমা বিচারাধীন ছিল সেই আদালতে উপস্থিত হবেন ও সেই আদালত থেকে পরবর্তী কার্যক্রমের নির্দেশ গ্রহণ করবেন।