- Get link
- X
- Other Apps
Section 10 Civil Procedure Code
রেস-সাবজুডিস
Res Subjudice
Stay of Suit
ধারা ১০ দেওয়ানী কার্যবিধি আইন
ধারা ১০। মামলা স্থগিতকরণ Stay of Suit
প্রার্থীত প্রতিকার অনুমােদন দিবার এখতিয়ার সম্পন্ন বাংলাদেশের একইরূপ বা অপর কোন আদালতে বা সরকার দ্বারা স্থাপিত বা পরিচালিত ও একই এখতিয়ারে অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ এর সীমানার বাহিরের কোন আদালতে বা সুপ্রিমকোর্টে একই পক্ষগুলোর ভিতর বা স্থলাভিষিক্ত তাদের বা তাদের যে কোন লােকের একই সত্ত্বাধিকারে মামলা বিচারাধীন থাকলে, (পরবর্তী) মামলার বিচার্য বিষয় সরাসরি ও প্রকৃতপক্ষে পূর্ববর্তী দায়েরকৃত মামলার বিচার্য বিষয় হলে আদালত উক্তরূপ মামলার বিচার কার্য নিস্পন্ন করবে না।
ধারা ১০। মামলা স্থগিতকরণ Stay of Suit ব্যাখ্যা
পূর্ববর্তী মামলা যদি কোন বিদেশি আদালতে দায়ের করা হয়ে থাকে, তবে মামলার কারণ একই হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের কোন আদালতে পরবতী মামলার বিচারে বাধা সৃষ্টি হবে না।
ধারা ১০। মামলা স্থগিতকরণ Stay of Suit বিশ্লেষণ
রেস-সাবজুডিস Res Subjudice
দেওয়ানি আইনে, রেস’সাবজুডিস' বলতে বিচারাধীন কোন বিষয়ে অথবা রায় দান মূলতবী করার বিষয়ের ক্ষেত্রে আনীত কোন মামলায় স্থগিতকরণ করার বিধানকে বুঝায়। রেস-সাবজুডিস বিষয়ক আইনটি দেওয়ানি কার্যবিধির ১০নং ধারায় বিশদভাবে বর্ণিত আছে। এই ধারার বিধান অনুযায়ী কোন আদালত এমন কোন মামলার বিচার চালিয়ে যাবেন না, যার বিচার্য বিষয়বস্তু প্রত্যক্ষভাবে ও মূলতঃ পূর্বে দায়েরকৃত অপর একটি মামলার বিচার্য বিষয়ের সাদৃশ্যস্বরূপ এবং তা উভয় ক্ষেত্রে একই পক্ষসমূহের মধ্যে অথবা এমন পক্ষসমূহের মধ্যে দায়ের করা হয়েছে, যাদের সূত্রে বা যাদের মধ্যে একজনের সূত্রে পরবর্তী মামলার পক্ষসমূহ বা পক্ষসমূহের মধ্যে একজন স্বত্ত্ব দাবি করেন, এবং পূর্ববর্তী মামলাটি বাংলাদেশে বা ইহার বাহিরে সরকার কর্তৃক প্রতিষ্টিত এমন একটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
রেস-সাবজুডিস ব্যাখ্যা Res Subjudice Explanation
পূর্ববর্তী মামলা যদি কোন বিদেশি আদালতে দায়ের করা হয়ে থাকে, তা হলে মামলার কারণ এক হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের কোন আদালতে পরবর্তী মামলার বিচারে বাধা সৃষ্টি হবে না। অতএব, এই ধারানুযায়ী রেস-সবাজুডিস বিষয়ক আইনের মুখ্য উদ্দেশ্য হল এই যে, একই এখতিয়ারভুক্ত দুইটি আদালতকে একই বিষয়বস্তুর জন্য উপস্থাপিত মামলা দুইটি সমান্তরালভাবে যুগপৎ বিচার করা হতে বিরত রাখা। উভয় ক্ষেত্রে এক পক্ষসমূহের মধ্যে একই বিষয়বস্তুর ব্যাপারে পরস্পর বিরােধী ডিক্রী পাস হওয়ার মত অবস্থা পরিহার করাই হল এই ধারাটির প্রধান বিশেষত্ব।
মামলা স্থগিত করণের ক্ষেত্রে শর্তাবলি
দেওয়ানি কার্যবিধির ১০নং ধারাটি প্রয়ােগের ক্ষেত্রে যে সকল শর্তসমূহের অস্তিত্ব থাকতে হবে তা হল নিম্নরূপ যথা-
(১) পূর্ববর্তী মামলা পক্ষসমূহ ও পরবর্তী মামলার পক্ষসমূহ অবশ্যই এক হতে হবে।
(২) যে আদালতের পূর্ববর্তী মামলা মূলতবী রয়েছে, তার পরবর্তী মামলায় সার্বিক অব্যাহতি অনুমােদনের এখতিয়ার থাকতে হবে ।
(৩) পূর্বে দায়েরকৃত মামলা অবশ্যই সে আদালতে মূলতবী থাকতে হবে, যেন পরবর্তী মামলা রুজু করা হয়েছে। যেমন, বাংলাদেশের অপর কোন আদালতে, অথবা বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত কোন আদালতে যা বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হচ্ছে অথবা সুপ্রীম কোর্টে।
(৪) পক্ষসমূহের অবশ্যই একই স্বত্বগমের অধীন উভয় আদালতে মামলা করতে হবে।
(৫) পূর্ববর্তী মামলার বিষয়বস্তু ও পরবর্তী মামলার বিষয়বস্তু অবশ্যই সরাসরি ও বস্তুনিষ্ঠাভাবে এক হতে হবে।
(৬) প্রথম মামলাটি যে আদালতে দায়ের করা হয়েছে, উক্ত আদালতটির পরবর্তী মামলায় উক্ত বিষয় প্রতিকার দানের ক্ষমতা থাকতে হবে।
রেস সাবজুডিসের উদ্দেশ্য-
এই ধারার উল্লেখিত বিধানাবলি সাপেক্ষে একই বিষয়ের উপর দুইটি মােকদ্দমা উত্থাপিত হলে সময়ের দিক থেকে অগ্রবর্তী মােকদ্দমাটি চলতে থাকবে ও অনুবর্তী মােকদ্দমাটি স্থগিত হয়ে যাবে। তবে দ্বিতীয় মােকদ্দমাটির জন্য মােকদ্দমার পক্ষ বা প্রতিনিধিদেরকে একই সাধারণ স্বত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য দাবি করতে হবে। এই ধারার উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, একই অভিন্ন বিষয়ে একই সময়ে দুইটি আদালতকে একই বিষয় বিচার করা থেকে বিরত রাখা।
রেস সাবজুডিস বিচার স্থগিতকরণ
এই ধারা কোন মােকদ্দমা রুজু করতে নিষেধ করে নাই। বরং রুজুকৃত মােকদ্দমার বিচারকার্য অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে। কাজেই আদালত কেবল দ্বিতীয় মােকদ্দমাটি স্থগিত করতে বাধ্য এবং এরূপ স্থগিত বিষয়টি আদালতের গােচরীভূত হবার পর যেকোন সময়েই করা যায়।
রেস সাবজুডিস অভিন্ন বিচার্য বিষয়
এই ধারার শর্তাবলি প্রয়ােগ করতে হলে দুটি মােকদ্দমাতেই মােকদ্দমার মূল বিষয় একই রকম হতে হবে। দুইটি মােকদ্দমাতেই বিষয়বস্তুর সরাসরি যােগসূত্রতা ও সমন্বয় থাকতে হবে। অর্থাৎ দুটি মােকদ্দমারই বিষয়বস্তু প্রত্যক্ষভাবে ও মূলতঃ এই রকম হবে। কোন রীট আবেদনে উল্লিখিত প্রশ্নের সাথে কোন মােকদ্দমার ইস্যুর সাথে প্রত্যক্ষভাবে মিল না থাকলে ও মােকদ্দমাটির রীটের উপর কোনরূপ ভিত্তি না থাকলে, একই সাথে রীট ও মােকদ্দমা চলতে পারে। মামলার বিতর্কিত বিষয়বস্তু ও মামলার বিষয় সর্বদিক হতেই যে একই রকম হবে এমন কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই। ইহারা মৌলিকভাবে এক হলেই চলবে।
রেস সাবজুডিসে পূর্ব মােকদ্দমার উপস্থিতি
পূর্বে একটি মােকদ্দমা আদালতে বিচারাধীন থাকলেই শুধু এই ধারা কার্যকর হবে। ডিক্রী প্রদান করার আগ পর্যন্ত একটি মােকদ্দমা বিচারাধীন রয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। প্রথম মােকদ্দমাটি বিচারাধীন ইহা প্রমাণের দায়িত্ব দ্বিতীয় মােকদ্দমা বিবাদীর।
আপিল এর ক্ষেত্রে রেস সাবজুডিস প্রযোজ্য কিনা
১০ ধারার শর্তাসমূহ আপিলের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। কিন্তু আপিলের অনুমতি চেয়ে কোন আবেদন করলে সেখানে উহা প্রযােজ্য হবে না।
বিদেশি আদালতে মােকদ্দমা বিচারাধীন অবস্থা
বিদেশি আদালতে কোন মােকদ্দমা বিচারাধীন থাকলেও উহা একই বিষয়ের উপর দেশী আদালতকে দ্বিতীয় মােকদ্দমা গ্রহণ করতে বারণ করবে না। তবে হাইকোর্ট মােকদ্দমার কোন পক্ষকে একই কারণের জন্য ঐ মােকদ্দমা বিদেশি কোন আদালতে রুজু করতে নিষেধ করতে পারেন যদি পরবর্তী মােকদ্দমাটি ন্যায়পরতা বিরােধী বলে মনে হয়। কিন্তু অধঃস্তন কোন আদালতের এরূপ কোন ক্ষমতা নেই।
রেস সাবজুডিসে একই পক্ষদ্বয়
ধারা ১০ এর প্রযােজ্যতার জন্য দুটি মােকদ্দমার পক্ষকেই একটি সাধারণ স্বত্বের জন্য দাবি করতে হবে এবং উভয়ক্ষেত্রেই একই পক্ষদ্বয় বা পক্ষদ্বয়ের দ্বারা দাবিদারকে হাজির থাকতে হবে। অপরাপর সকল শর্ত বর্তমান থাকলেও যদি মােকদ্দমার পক্ষদ্বয় উভয় মােকদ্দমার ক্ষেত্রে একই না হয় (পক্ষদ্বয়ের বৈধ দাবিদার থাকলেও চলবে) তা হলে দুইটি মােকদ্দমাই স্বাধীনভাবে চলতে থাকবে।
রেস সাবজুডিসে আইন ও তথ্যের অভিন্ন বিষয়বস্তু
আইনগত ও তথ্যগত বিষয়বস্তু দুইটি মােকদ্দমার ভিতর একই রকম হলেও উহার জন্য একক বিচার অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। যেমনঃ স্বামী নড়াইল মুন্সেফ আদালতে দাম্পত্য পুনরুদ্ধারের মােকদ্দমা করেছে, অন্যদিকে স্ত্রী যশাের সাব-জজ আদালতে এই বলে আরেকটি মােকদ্দমা করেছে যে তাদের ভিতর কোন দাম্পত্য সম্পর্কই ছিল না। যেহেতু এইখানে দুটি মােকদ্দমাতেই আইন ও তথ্যের একটি অভিন্ন সম্পর্ক রয়েছে। অতএব দুটি মােকদ্দমাই এখানে একইভাবে হতে পারে। মােকদ্দমার পরবর্তী কার্যধারা স্থগিতকরণের
আরেকটি উপায় হলো যদি আদালত এরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হন যে, ধারা ১০ এর অধীনে কোন মােকদ্দমার পরবর্তী বা ভবিষ্যত কার্যক্রম স্থগিত রাখতে পারছেন না তা হলে ধারা ১৫১ এর অধীন ন্যায়বিচারের স্বার্থে ঐরূপ কার্যক্রম স্থগিত রাখা যাবে।
সময়ের দিক থেকে অনুবর্তী মােকদ্দমা কি স্থগিত করা যায়
সাধারণভাবে সময়ের দিক থেকে অনুবতী মােকদ্দমাটি ধারা ১০ অনুযায়ী স্থগিত করা যায়। কিন্তু আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে কখনাে অগ্রবর্তী মােকদ্দমাটিও স্থগিত রাখা যেতে পারে। যেমন বাদি দখল উদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ধারা ৯ এর বিধান মােতাবেক বিবাদীর বিরুদ্ধে প্রথমে মােকদ্দমা করল। বিবাদী পরে বাদীর বিরুদ্ধে ধারা ৪২ এর অধীনে স্বত্বের মােকদ্দমা করল। এরূপ ক্ষেত্রে আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে উপযুক্ত মনে করলে বাদির মােকদ্দমাটি স্থগিত করে রাখতে পারেন।
কখন মামলা স্থগিতাদেশ প্রদান করতে হবে
একমাত্র তর্কের বিষয় নির্ধারিত হবার পরই পরবর্তী মােকদ্দমাটি স্থগিত করা যায়। কেননা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে দুইটি মােকদ্দমাতেই তর্কের বিষয় একই কিনা তা আগে নির্ণয় করা প্রয়ােজন। এরূপ স্তরের আগে কোন স্থগিতাদেশ প্রদান করা হলে তা বাতিলযােগ্য।
দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের দুইটি মােকদ্দমা
স্বামী দ্বারা মুন্সেফ আদালতে দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের মােকদ্দমা ও স্ত্রী দ্বারা সাব-জজ আদালতে তাদের পরস্পরের মধ্যে কোন বৈবাহিক সম্পর্ক নাই এই মর্মে আনিত মােকদ্দমা করলে উভয় মােকদ্দমার ঘটনা ও আইনগত দিক এক হওয়ায় এক সঙ্গে বিচার করতে হবে।
দুইটি মোকদ্দমা যুগপৎভাবে শুনানি ও নিষ্পত্তির আদেশ
স্বাভাবিকভাবে এরূপ আদেশ প্রদান করা উচিত নয়। বিচার্য বিষয় এই অভিব্যক্তিটির অর্থ হচ্ছে, পক্ষদের মধ্যে বাদ-প্রতিবাদের সম্পূর্ণ বিষয়টি ইহা নির্দেশ করে। মােকদ্দমা দুটি সকল বিচার্য বিষয় অনুরূপ হওয়া উচিত। এই ধারাটি আদালত সে সকল ক্ষেত্রে প্রয়ােগ করতে পারবে না, যে সকল ক্ষেত্রে কিছু বিষয় সাধারণ থাকলেও কিছু বিষয় ভিন্ন প্রকৃতির। বিশেষ আইনের বিশেষ কার্যক্রমের পূর্বে অথবা পরে সাধারণ আইনের ধারা মতে আরম্ভ করা কোন কার্যক্রম চলতে থাকলেও বিশেষ কার্যক্রম স্বাধীনভাবে চলবে। অভিন্ন বিষয় ও অভিন্ন পক্ষের ভিতর মােকদ্দমা চলতে থাকলেও দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১০-কে ইহা আকর্ষণ করবে না।