Skip to main content

HSC English First Paper English For Today - Unit 7 Lesson 1 Brojen Das

এডভোকেটশীপ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা মৌখিক ভাইভা MCQ সাক্ষ্য আইন The Evidence Act

এডভোকেটশীপ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা মৌখিক ভাইভা MCQ

সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ The Evidence Act 1872

এক নজরে সাক্ষ্য আইন

Sir Henry Sammer Maine (স্যার হেনরি সামার মেইন) ১৮৬৮ সালে সাক্ষ্য আইনের একটি বিল ড্রাফট করেন। কিন্তু ভারতের পরিবেশের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় তা গৃহিত হয়নি। পরবর্তীতে Sir James Stephen (স্যার জেমস স্টিফেন) ১৮৭১ সালে নতুন একটি সাক্ষ্য আইনের খসড়া তৈরি করেন। এটিই ১৮৭২ সালের ১ নম্বর আইন হিসেবে পাশ হয়। বর্তমানে ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনটি বাংলাদেশে প্রচলিত। ১৮৭২ সালের পূর্বে এই উপমহাদেশে কোন পূর্ণাঙ্গ সাক্ষ্য আইন ছিল না। সাক্ষ্য আইন দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় মামলাতে প্রযােজ্য। সাক্ষ্য আইন একটি পদ্ধতিগত আইন (Adjective or Procedural Law)।

সাক্ষ্য আইনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ

সর্ব প্রথম সাক্ষ্য আইনের খসড়া প্রস্তুত করেন -- স্যার হেনরি সামার মেইন

বর্তমান সাক্ষ্য আইনের খসড়া প্রস্তুত করেন -স্যার জেমস স্টেফেন

সাক্ষ্য আইনের মোট ধারা -১৬৭ টি

সাক্ষ্য আইনকে যে নামে ডাকা হবে -সাক্ষ্য আইন ১৮৭২

সাক্ষ্য আইনের প্রকৃতি -পদ্ধতিগত (Adjective / Procedural law)

সাক্ষ্য আইন কয়টি অংশে বিভক্ত - ৩টি

সাক্ষ্য আইনের মোট অধ্যায় -১২টি

সাক্ষ্য আইন কত নং আইন - ১ নং আইন

সাক্ষ্য আইন কার্যকর হয় - ১লা সেপ্টেম্বর ১৮৭২ সাল

সাক্ষ্য আইন সম্পর্কিত সাধারণ আলােচনা

সাক্ষ্য আইনের প্রয়ােগ:

সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ সমগ্র বাংলাদেশের সকল আদালতের সকল বিচারিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে প্রয়ােগ হবে। তবে সাক্ষ্য আইন প্রয়ােজ্য নয় নিম্ন বর্ণিত আইন বলে গঠিত আদালতের ক্ষেত্রে:

ক) সেনাবাহিনী আইন ১৯৫২

খ) নৌ-শৃঙ্খলা আইন ১৯৬১ এবং

গ) বিমান বাহিনী আইন ১৯৫৩

আদালত বা কোন অফিসারের নিকট উপস্থাপিত এফিডেভিট বা সালিসের কার্যক্রমের উপর সাক্ষ্য আইনের বিধান প্রযােজ্য নয়।

সাক্ষ্য আইনের মূলনীতি

১। সাক্ষ্য অবশ্যই বিচার্য বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে।

২। সাধারণত শুনা সাক্ষ্য গ্রহণযােগ্য নয়।

৩। সকল ক্ষেত্রেই উত্তম সাক্ষ্য (Best Evidence) দিতে হবে।

সাক্ষ্য (Evidence) কাকে বলে। ধারা-৩

Evidence শব্দটি ল্যাটিন শব্দ Evidence or Eviders থেকে উদ্ভুত, যার অর্থ হচ্ছে সুস্পষ্টভাবে কোন কিছু প্রদর্শন করা বা দৃষ্টি গােচর করা বা সুস্পষ্টভাবে আবিষ্কার করা।

সাক্ষ্য আইনের ৩ ধারায় ২ প্রকার সাক্ষ্যের উল্লেখ করা হয়েছে।

১। মৌখিক সাক্ষ্য (Oral Evidence)

২। দালিলিক সাক্ষ্য (Documentary Evidence)

মৌখিক সাক্ষ্যকে আবার ২ ভাগে ভাগ করা যায়

১। প্রাথমিক বা মৌলিক মৌখিক স্বাক্ষ্য (Original Primary Oral Evidence)

২। গৌন মৌখিক সাক্ষ্য (Secondary Oral Evidence)

দালিলিক সাক্ষ্যকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়

১। প্রাথমিক বা মৌলিক দালিলিক সাক্ষ্য

(Priamary or Original Documentary Evidence)

২। গৌণ দালিলিক সাক্ষ্য (Secondary Documentary Evidence)

মৌখিক সাক্ষ্য কাকে বলে। ধারা-৩

আদালত সাক্ষীকে বিচার্য বা তদন্ত বিষয়ে যে সকল বিবৃতি দেওয়ার জন্য অনুমতি দেন অথবা সাক্ষীর যে সব বিবৃতি আদালতের প্রয়ােজন হয়, এই সৰ বিবৃতিকে বলা হয় মৌখিক সাক্ষ্য। মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যক্ষ্য হবে।

প্রাথমিক মৌখিক সাক্ষ্য

সাক্ষী নিজে যে বিষয়টি দেখেছে বা শুনেছে বলে দাবী করবে, সেই বিষয়ের মৌখিক সাক্ষ্যকে প্রাথমিক বা মৌলিক মৌখিক সাক্ষ্য বলে। সাধারণত প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য প্রাথমিক মৌখিক সাক্ষ্যের অন্তর্ভুক্ত। এই ধরনের মৌখিক সাক্ষ্য গ্রহণযােগ্য।

মাধ্যমিক/গৌন মৌখিক সাক্ষ্য

সাক্ষী নিজে যে বিষয়টি দেখেনি বা শুনেনি সেই বিষয়ে মৌখিক সাক্ষ্য অথবা অন্যের নিকট শােনা ভিত্তিক সাক্ষ্যকে গৌন মৌখিক সাক্ষ্য বলে। এই ধরনের সাক্ষ্যকে জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্যও বলে, যা সাধারণত আদালতে গ্রহণযােগ্য নয়। তবে সাক্ষ্য আইনের ৩২ এবং ৩৩ ধারাধীনে অন্যের নিকট শােনা ভিত্তিক সাক্ষ্য গ্রহণযােগ্য হতে পারে।

দালিলিক সাক্ষ্য কাকে বলে। ধারা-৩

যে সব দলিল আদালতের প্রদর্শনের বা অনুসন্ধানের জন্য উপস্থাপন করা হয়, তাকে দালিলিক সাক্ষ্য বলে।

প্রাথমিক দালিলিক সাক্ষ্য কাকে বলে

মূল বা স্বয়ং দলিলিটি যখন আদালতের নিকট প্রদর্শনের জন্য উপস্থাপন করা হয়, তা প্রাথমিক দালিলিক সাক্ষ্য।

মাধ্যমিক বা গৌন দালিলিক সাক্ষ্য কাকে বলে

প্রাথমিক দলিলের নকলকে মাধ্যমিক বা গৌন দালিলিক সাক্ষ্য বলে। প্রাথমিক সাক্ষ্য হলাে সর্বত্তোম সাক্ষ্য। কিছু ব্যতিক্রম ক্ষেত্র ছাড়া সবক্ষেত্রে দলিল প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমান করতে হবে।

আদালত (Court) কাকে বলে। ধারা-৩

সকল জজ, ম্যাজিস্ট্রেট এবং সালিশ ব্যতিত যারা আইনগত ভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারেন, তাকে আদালত বলবে। তবে রেজিস্ট্রারী অফিসার, প্রাথমিক তদন্তকারি ম্যাজিস্ট্রেট যিনি মামলার বিচার করতে পারেন না বা ভূমি একুইজিশেন কাজে নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, কালেকটর, ডেপুটি কালেক্টর আদালত নয়। সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ অনুসারে আদালত বুঝাতে সাক্ষ্য গ্রহণে আইনত ক্ষমতা প্রাপ্ত

১। সকল জজ

২। ম্যাজিস্ট্রেট

৩। যে কোন ব্যক্তি

তবে সাক্ষ্য আইনুসারে Arbitrator (সালিশদার) কে আদালত বুঝাবে না।

বিষয় বা ঘটনা (Fact) কাকে বলে। ধারা-৩

১। ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য কোন বিষয় তার অবস্থা বা সম্পর্ক।

২। কোন মানসিক অবস্থা, যে বিষয়ে কোন ব্যক্তি সচেতন।

প্রাসংগিক ঘটনা (Relevancy of Fact) কাকে বলে। ধারা-৩

একটি ঘটনা অন্য একটি ঘটনার সাথে প্রাসঙ্গিক হবে, যদি ঘটনাটি অন্য ঘটনার সাথে যে কোন ভাবে যুক্ত বা সংশ্লিষ্ট হয়। অর্থাৎ যে বিষয়গুলাে সরাসরি বিচার্য নয় অথচ যাদের সাহায্যে বিচার্য বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছানাে বা উপনীত হওয়া সহজ হয়, সেগুলাে প্রাসঙ্গিক বিষয় বা ঘটনা। সাক্ষ্য আইনের ৫ থেকে ৫৫ ধারা পর্যন্ত প্রাসংগিক বিষয়ের বর্ণনা দেয়া হয়েছে।

বিচার্য বিষয় (Fact in Issue) কাকে বলে। ধারা-৩

যে বিষয়ের উপর মামলার দাবীকৃত বা অস্বীকৃত কোন অধিকার অস্বিত্ব বা অস্বিত্বহীনতা দায় বা অক্ষমতা নির্ভর করে তাই বিচার্য বিষয়। যখন কোন ঘটনা বা আইনের গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে এক পক্ষ দৃঢ় ভাবে ঘােষণা করে এবং অপর পক্ষ অস্বীকার করে তখনই বিচার্য বিষয়ের সৃষ্টি হয়। (আদেশ ১৪, বিধি-১, দেওয়ানি কার্যবিধি ১৯০৮)

দলিল (Document) কাকে বলে। ধারা-৩

কোন বস্তু বা পদার্থের (Substance) উপর অক্ষর ( Letters) বা সংখ্যার (Figures) বা চিহ্ন (Marks) ব্যবহার করে কোন তথ্য বর্ণনা করা বা সংরক্ষণ করা হলে তাই দলিল।

প্রমাণিত (Proved) কাকে বলে। ধারা-৩

একটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে তখনই বলা যায় যখন

ক) আদালত তর্কিত বিষয়টির অস্তিত্ব বিদ্যমান আছে বলে বিশ্বাস করেন অথবা

খ) তর্কিত বিষয়টির অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকাটা এতটাই সম্ভব বা বিশ্বাসযোগ্য যে একজন বিচক্ষণ ব্যক্তির ধারনা করা উচিৎ যে ঘটনার অস্তিত্ব বিদ্যমান আছে।

মিথ্যা প্রমানিত (Disproved) কাকে বলে। ধারা- ৩

একটি বিষয় বা ঘটনা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে তখনি বলা যায় যখন

ক) আদালত বিষয়টি বা ঘটনাটির অস্তিত্ব নেই বলে বিশ্বাস করেন অথবা

খ) বিষয়টির অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকা এতটাই অসম্ভব যে, একজন বিচক্ষণ ব্যক্তির ধারনা করা উচিৎ যে ঘটনার কোন অস্তিত্ব নেই।

অপ্রমাণিত (Not Proved) কাকে বলে। ধারা-৩

যখন কোন ঘটনা প্রমাণিত নয় অথবা মিথ্যা প্রমাণিত নয়, তখন ঐ ঘটনাকে অপ্রমানিত বলে।

অনুমান (Presumption) কাকে বলে। ধারা-৪

অনুমান শব্দটির সংজ্ঞা সাক্ষ্য আইনে দেওয়া নাই। তবে অনুমান করা মানে বিনা প্রমাণে কোন ঘটনাকে সাময়িকভাবে ধরে নেওয়া অথবা মেনে নেওয়া। অনুমান ৩ প্রকার:

১। প্রমাণিত বলে ধরে নিতে পারে (May Presume)

যেখানে May Presume বিধান থাকবে, সেক্ষেত্রে আদালত ইচ্ছা করলে দুটি কাজের যে কোন একটি করতে পারে।

ক। আদালত একটি বিষয় বা ঘটনাকে প্রমাণিত বলে ধরে নিতে পারেন যতক্ষণ না পর্যন্ত উক্ত ঘটনাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয় অথবা

খ। আদালত ঘটনাটি প্রমানিত অনুমান না করে প্রমানের জন্য আহবান করতে পারেন। সাধারণত তথ্যগত বিষয়ে‌ আদালতের জন্য ধরে নেওয়া বিধানটি প্রযােজ্য। ইহা খন্ডণ যােগ্য।

২। অবশ্যই প্রমাণিত বলে ধরে নিবে (Shall Presume)

যেখানে Shall Presume এর বিধান থাকবে সেখানে একটি বিষয় বা ঘটনাকে অবশ্যই প্রমাণিত হিসেবে অনুমান করে নিবেন। যতক্ষণ না এটি মিথ্যা প্রমান হয়। এই ক্ষেত্রে আদালতের কাছে একটি মাত্র সুযোগ থাকে। সাধারণত আইনগত ভাবে যে সকল বিষয় ধরে নিতে হয়, সেই সকল ক্ষেত্রে অবশ্যই ধরে নেওয়া বিধানটি প্রযােজ্য, তবে ইহা খন্ডনযোগ্য।

৩। চূড়ান্ত প্রমান (Conclusive Proof)

যেক্ষেত্রে Conclusive Proof এর বিধানটি থাকে, সেক্ষেত্রে আদালত কোন বিষয় বা ঘটনাকে চূড়ান্ত প্রমান হিসেবে গণ্য করবে। এই ক্ষেত্রে ঘটনাটি মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য সাক্ষ্য দানের অনুমতি দিবেন না। অর্থাৎ যখন একটি বিষয়কে অপর একটি বিষয়ের চূড়ান্ত প্রমান বলে ঘােষণা করা হয়, তখন আদালত প্রথামাক্ত বিষয় প্রমাণিত হলেই অপর বিষয়টিও প্রমাণিত বলে গণ্য করবেন এবং তা মিথ্যা প্রমান করার জন্য সাক্ষ্য প্রদানের অনুমতি দিবেন না। চূড়ান্ত প্রমান অখন্ডনযােগ্য।

ঘটনার প্রাসঙ্গিকতা কাকে বলে। ধারা ৫-৫৫

সাক্ষ্য আইনের সাধারণ বিধান হচ্ছে বিচার্য বিষয়গুলি সম্পর্কে সাক্ষ্য উপস্থিত করতে হবে এবং বিচার্য বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু কিছু বিষয় অর্থাৎ ঘটনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কিত সাক্ষী উপস্থিত করার অধিকার মামলার পক্ষদের দেওয়া হয়েছে।

১। বিচার্য বিষয় এবং বিচার্য বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত প্রসাংগিক বিষয়: ধারা ৬-১৬

২। বিবৃতি:

ক) স্বীকৃতি: ধারা- ২৪, ২৩ এবং ৩১

খ) অপরাধ স্বীকারোক্তি: ধারা ২৪-৩০

গ) জনশ্রুতি মুলক সাক্ষ্য: ধারা ৩২-৩৩

ঘ) বিশেষ অবস্থায় দেওয়া বিবৃতি: ধারা ৩৪-৩৮

৩। অন্য মামলার রায়: ধারা ৪০-৪৪

৪। তৃতীয় ব্যক্তির অভিমত: ধারা ৪৫-৫১

৫। পক্ষগনের চরিত্র: ধারা ৫২-৫৫

ধারা: ৫ যে বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়া যায়

২টি বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়া যায়

১। বিচার্য বিষয়ে।

২। প্রাসঙ্গিক বিষয়ে।

দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসারে যে ঘটনা প্রমান করার জন্য যে ব্যক্তি অধিকারী নয়, সে ঘটনা প্রমানের জন্য উক্ত ব্যক্তি সাক্ষ্য দিতে পারবে না।

ধারা: ৬ যে সব ঘটনা একই কাজের অংশ সেগুলাে প্রাসঙ্গিক ঘটনা।

ধারা: ৭ যে সব ঘটনা বিচার্য ঘটনার উপলক্ষ্য, কারন, ফলাফল বর্ণনা করা সেগুলাে প্রাসঙ্গিক।

ধারা: ৮ বিচার্য ঘটনা সংঘটনের উদ্দেশ্য অভিপ্রায় প্রস্তুতি এবং পূর্ববর্তী বা পরবর্তী আচরণ প্রাসঙ্গিক। এই ধারা অনুসারে Motive, Preparation, Conduct প্রাসঙ্গিক।

ধারা: ৯ প্রাসঙ্গিক ঘটনার ব্যাখ্যা বা উপস্থাপন করার জন্য যে সকল ঘটনা অবশ্যক সেগুলাে প্রাসঙ্গিক।

ধারা: ১০ দুই বা ততােধিক ব্যক্তি মিলে কোন অপরাধ সংঘটিত করার জন্য যে কথা বা কাজ করবে তা প্রাসঙ্গিক হবে। এই ধারা Common Design (অভিন্ন মতলব বা অভিন্ন অভিপ্রায়) এর বিধান রয়েছে।

ধারা: ১১ যে সকল ঘটনা অন্য কোন ভাবে প্রাসঙ্গিক নয়, সেগুলাে প্রাসঙ্গিক হতে পারে নিয়ে বর্ণিত ২টি ক্ষেত্রে:

১। যদি ঘটনাগুলাে বিচার্য ঘটনার বা প্রাসঙ্গিক ঘটনার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ হয়।

২। যদি সেই সমস্ত ঘটনা নিজে অথবা অন্য কোন বিষয়ের সাথে যুক্ত হয়ে কোন বিচার্য বিষয় বা প্রাসঙ্গিক বিষয়ের অস্বিত্ব বা অস্বিত্বহীনতা যথেষ্ট পরিমানে সম্ভব বা অসম্ভব করে তােলে।

ধারা: ১২ যে সকল ঘটনা দেওয়ানি আদালত কে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে সহায়তা করে সেগুলাে প্রাসঙ্গিক।

ধারা: ১৪ যে সব ঘটনা বা দেহের অবস্থা, জ্ঞান, সরল বিশ্বাস, অবহেলা,উগ্রতা, অনুভূতি প্রকাশ করে তা প্রাসঙ্গিক।

স্বীকৃতি (Admission) কাকে বলে। ধারা ১৭-২৪ এবং ৩১

১৮ ধারায় পাঁচ শ্রেণীর লােকের স্বীকৃতি গ্রহণীয় করা হয়েছে। যেমন-

১। মামলার পক্ষ।

২। প্রতিনিধি।

৩। প্রতিনিধিত্বমূলক মামলার ক্ষেত্রে মামলাকারি ব্যক্তি, একজিকিউটর, প্রশাসক।

৪। মামলার বিষয় বস্তুতে যার স্বার্থ আছে।

৫। যার নিকট থেকে স্বত্ব অর্জন করা হয় উক্ত ব্যক্তির স্বত্ব।

স্বীকার বা স্বীকৃতি বা স্বীকারােক্তি (Admission) কাকে বলে। ধারা-১৭

স্বীকারােক্তি হলাে মৌখিক বা লিখিত বক্তব্য যা বিচার্য বিষয় বা প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে কোন ধারণার সূত্রপাত করে।

প্রকারভেদ: স্বীকার বা স্বীকৃতি বা স্বীকারােক্তি ২ প্রকার

১। মৌখিক স্বীকৃতি

২। লিখিত স্বীকৃতি

দলিলের বিষয় সম্পর্কে মৌখিক স্বীকৃতি। ধারা-২২

দলিলের বিষয় সম্পর্কে মৌখিক স্বীকৃতি প্রাসঙ্গিক হতে পারে যদি

ক) যে স্বীকৃতি প্রদান করে ঐ ব্যক্তি উক্ত দলিলের গৌন বা মাধ্যমিক সাক্ষ্য উপস্থিত করতে পারে অথবা

খ) যতক্ষণ পর্যন্ত দলিলের বিষয়ে যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

দেওয়ানি মােকদ্দমায় স্বীকৃতি কাকে বলে। ধারা-২৩

দেওয়ানি মােকদ্দমায় স্বীকৃতি প্রাসঙ্গিক হবে না যদি-

১। স্বীকৃতি এরুপ শর্তধীন করা হয় যে, উক্ত স্বীকৃতি সম্পর্কে কোন সাক্ষ্য উপস্থাপন করা যাবে না অথবা

২। আদালত অনুমান করতে পারে যে, পক্ষদের মধ্যে চুক্তি হয়েছে, সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য।

দোষ স্বীকারােক্তি (Confession) কাকে বলে। ধারা-২৪-৩০

দোষ স্বীকারােক্তি

সাক্ষ্য আইন দোষ স্বীকারােক্তির কোন সংজ্ঞা প্রদান করেনি। অভিযুক্ত হওয়ার পর যখন আসামি নিজের দোষ স্বীকার করে বক্তব্য দেয়, তখন সেই বক্তব্য বা বিবৃতিকে দোষ স্বীকারােক্তি বা Confession বলে। মানুষ যখন তার আপন স্বার্থের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় বিবৃতি দেয়, ধরে নেওয়া যায় যে, তখন সে সত্য কথা বলেছে। স্বেচ্ছায় কথাটি অতি মূল্যবান। আসামি যে বিবৃতি দিয়েছে তা স্বেচ্ছাপ্রণােদিত হলে তা গ্রহণযােগ্য। কিন্তু স্বেচ্ছায় না হলে অগ্রহণযােগ্য হবে।

দোষ স্বীকারােক্তির প্রকারভেদ

দোষ স্বীকারােক্তি দুই (২) প্রকার :

১। বিচারিক দোষ স্বীকারােক্তি (Judicial Confession)

ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করে যে বিবৃতি দেওয়া হয়, তাকে বিচারিক দোষ স্বীকারােক্তি বলে। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ সালের ১৬৪ এবং ৩৬৪ ধারানুসরণ করে ম্যাজিস্ট্রেট আসামির দোষ স্বীকারমূলক বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।

২। বিচার বহির্ভূত দোষ স্বীকারােক্তি (Extra Judicial Confession)

ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালত ব্যতিত অন্য কারাের কাছে দোষ স্বীকার করে যে বিবৃতি দেয়া হয়, তাকে বিচার বহিঃর্ভূত দোষ স্বীকারােক্তি বলে ।

প্রত্যাহারকৃত দোষ স্বীকারােক্তি কাকে বলে

প্রথমে দোষ স্বীকার করে, পরর্তীতে বিচারের সময় স্বীকারােক্তি প্রত্যাহার করতে পারে। প্রত্যাহারকৃত স্বীকারােক্তি সব সময় সন্দেহের সাথে গণ্য হয়। সুতরাং দোষ স্বীকারােক্তি প্রত্যহার করা হলে কোন নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযােগ্য এবং সমর্থনকারী সাক্ষ্য পাওয়া না গেলে তা গ্রহণযােগ্য হবে না।

Inculpatory Confession কাকে বলে

যখন অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেকে জড়িয়ে দোষ স্বীকার করেন, তখন তাকে Inculpatory Confession বলে ।

Exculpatory Confession কাকে বলে

যখন অভিযুক্ত ব্যক্তি অন্যকে জড়িয়ে দোষ স্বীকার করেন, তখন তাকে Exculpatory Confession বলে ।

Confession কখন প্রাসঙ্গিক এবং কখন অপ্রাসঙ্গিক হয়

ভয় ভীতির মাধ্যমে দোষ স্বীকার। ধারা-২৪

প্রলােভন, ভীতি প্রদর্শণ বা প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে আসামির নিকট থেকে দোষ স্বীকারােক্তি মূলক বক্তব্য অপ্রাসঙ্গিক হবে। তবে দোষ স্বীকারােক্তি যদি প্রলােভন, ভীতি ও প্রতিশ্রুতি সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করার পর নেওয়া হয় তাহলে প্রাসঙ্গিক হবে। (ধারা-২৮)।

পুলিশের কাছে দোষ স্বীকারােক্তি। ধারা-২৫

অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি পুলিশ অফিসারের কাছে দোষ স্বীকার করে বক্তব্য দিলে তা অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রমাণ করা যাবে না। অর্থাৎ অপ্রাসঙ্গিক হবে।

আসামি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে পুলিশের নিকট প্রদত্ত দোষ স্বীকারােক্তি আসামির বিরুদ্ধে প্রমাণ করা যাবে না। (ধারা-২৬) তবে আসামি পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে তার নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের অনুসারে কোন আলামত উদঘাটন করলে তা প্রাসঙ্গিক হবে। (ধারা-২৭)

দোষ স্বীকারােক্তি কখন আসামির বিরুদ্ধে প্রমাণ করা যাবে। ধারা-২৬

পুলিশ অফিসারের হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে ম্যাজিস্ট্রেটের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে এবং কোন ভয়ভীতি প্রলোভন ছাড়া যখন আসামি দোষ স্বীকার করে বক্তব্য দেয় তখন উক্ত দোষ স্বীকারােক্তি আসামির বিরুদ্ধে প্রমাণ করা যাবে। ধারা-২৯

দোষ স্বীকারােক্তি যদি অন্যভাবে প্রাসঙ্গিক হয়, তাহলে শুধুমাত্র গােপনীয়তার প্রতিশ্রুতি বা প্রতারনা করে তা আদায় করা হয়েছে বলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না।

দোষ স্বীকারােক্তি অন্য অপরাধির বিরুদ্ধে প্রমাণ করা যায়। ধারা-৩০

দোষ স্বীকারােক্তি শুধুমাত্র অপরাধীর নিজের বিরুদ্ধে নয়, একই অপরাধে যৌথভাবে বিচারাধীন ব্যক্তির বিরুদ্ধেও প্রমাণ করা যায়।

যে সব ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসেবে তলব করা যায় না তাদের বিবৃতি। ধারা ৩২ এবং ধারা ৩৩

সাধারণত মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যক্ষ হবে। অর্থাৎ সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিবে। মাধ্যমিক মৌখিক সাক্ষ্য বা শ্ৰতিমূলক সাক্ষ্য আদালতরে নিকট গ্রহণযােগ্য নয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে সব ব্যক্তিকে সাক্ষীরূপে ডাকা যায় না, তাদের লিখিত বা মৌখিক বিবৃতি প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযােগ্য।

ধারা-৩২

যে সব ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষভাবে সাক্ষী দেওয়ার আহ্বান করা না গেলেও তাদের সাক্ষ্য প্রাসঙ্গিক হয় যদি উক্ত ব্যক্তি

১। মৃত হয়।

২। নিখোঁজ থাকে

৩। সাক্ষ্য প্রদানে অযােগ্য হয়ে পড়ে

৪। যে ব্যক্তিকে হাজির করার সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ

উপরে বর্ণিত ৪ ধরনের ব্যক্তিদের লিখিত বা মৌখিক বিবৃতি নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়:

১। মৃত ব্যক্তির মৃত্যুকালীন ঘােষণা (Dying Declaration)

কোন ব্যক্তির মৃত্যুর কারন সম্পর্কে বা যে ঘটনার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে সেই সম্পর্কে বিবৃতি দিলে তা সাক্ষ্য হিসেবে প্রাসঙ্গিক হবে।

২। যদি কোন বিবৃতিদানকারী তার স্বাভাবিক কাজ কর্মের নিয়মানুসারে কোন বিবৃতি দিয়ে থাকে অথবা তা স্বাভাবিক কাজ কর্মের নিয়মানুসারে কোন খাতা অথবা দলিলে লিপিবদ্ধ করে থাকে তবে তা প্রাসঙ্গিক হবে।

৩। কোন বিবৃতি যদি বিবৃতিদানকারীর আর্থিক বা মালিকানাগত স্বার্থের পরিপন্থি হয় বা বিবৃতি যদি এমন হয় যে, তা সত্য হলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি বা ক্ষতিপূরনের মামলা হতে পারে তবে তা প্রাসঙ্গিক হবে।

৪। যখন বিবৃতিটা জনগনের অধিকার প্রথা বা সাধারণ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মতামত সম্পর্কে হয়।

৫। বৈবাহিক বা দত্তক সম্পর্কের অস্বিত্বর বিষয়ে হয়।

৬। যখন বিবৃতিটা পারিবারিক বিষয়ে কোন দলিল বা উইলে করা হয় ।

৭। যখন কোন দলিল উইল বা লিপিভুক্ত হয় যা ধারা ১৩ (৩) এ বর্ণিত কোন কাজের সাথে জড়িত।

৮। যদি সে বিবৃতি কিছু ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত হয়ে থাকে এবং বিচার্য বিষয়ের সাথে প্রাসঙ্গিক কোন ধারণা ব্যক্ত করে থাকে।

মৃত্যুকালিন ঘােষণা প্রদানকারি মৃত্যুবরণ না করলে

কোন আহত ব্যক্তি তার জখমের কারন সম্পর্কে বক্তব্য দিলে তা মৃত্যুকালিন ঘােষণা হতে পারে যদি উক্ত ব্যক্তি পরবর্তীতে মারা যায়। কিন্তু যদি সে (যে ব্যক্তিকে জখম করা হয়েছে) বেঁচে থাকে তখন তার বক্তব্য ৩২ ধারার অধীন মৃত্যুকালীন ঘােষণা বলে গণ্য হবে না।

কখন প্রদত্ত সাক্ষ্য পরবর্তীতে মামলায় প্রমানের জন্য প্রাসঙ্গিক হতে পারে। ধারা ৩৩ 

কোন মামলায় কেউ আইন অনুসারে সাক্ষ্য দেওয়ার পর যদি তার

ক) মৃত্যু হয় বা

খ) সন্ধান পাওয়া না যায় বা

গ) যে পরে সাক্ষ্য দিতে অসমর্থ হয়ে পড়ে বা

ঘ) প্রতিপক্ষ তাকে আটকিয়ে রাখে

ঙ) যুক্তিসংগত কারনে তাকে আদালতে উপস্থিত করা সময় এবং ব্যায় সাপেক্ষ।

তাহলে এই ধরনের সাক্ষীর পূর্বে দেওয়া প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য পরবর্তী পর্যায়ে প্রমানের জন্য প্রাসঙ্গিক হবে। যদি নিম্নে বর্ণিত ৩টি শর্ত পূরণ করে-

১। পরবর্তী মামলা একই পক্ষদ্বয়ের মধ্যে অথবা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের মধ্যে হতে হবে।

২। পূর্বে সাক্ষ্য দেয়া সাক্ষীকে প্রতিপক্ষ জেরা করার সুযােগ পাইতে হবে এবং

৩। উভয় মামলার বিচার্য বিষয় প্রধানত একই ধরনের হতে হবে।

ধারা-৩৪ ব্যবসায়িক কারনে হিসেবের খাতায় লিপিবদ্ধ বিষয় প্রাসঙ্গিক।

ধারা-৩৫ সরকারি কর্মচারী কর্তব্য সম্পাদনকালীন সময়ে সরকারি দলিলে অন্তর্ভূক্ত বিষয় প্রাসঙ্গিক হবে।

ধারা-৩৬ মানচিত্র, চার্ট ও নকশায় প্রকাশিত বিবৃতি যা জনসাধারনের জন্য সরকার কর্তৃক প্রনীত হয়, তা প্রাসঙ্গিক।

ধারা-৩৭ কোন আইন বা প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভূক্ত সর্ব সাধারণের জানার জন্য প্রদত্ত বিবৃতি প্রাসঙ্গিক।

ধারা-৩৮ আইন গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত কোন আইন সম্পর্কিত বিবৃতি প্রাসঙ্গিক।

ধারা-৩৯ দীর্ঘতর বিবৃতি বা কথােপকথন বা বিচ্ছিন্ন দলিলের অংশ, দলিল গ্রন্থ পথ বা কাগজ গুচ্ছের অংশের ক্ষেত্রে যে অংশটুকু উপস্থাপন করলে বা প্রমানের জন্য প্রাসঙ্গিক হবে।

আদালতের রায় যখন প্রাসঙ্গিক

কোন একটি মােকদ্দমায় অন্য মােকদ্দমার রায়, আদেশ বা ডিক্রি সাক্ষ্যরূপে ব্যবহার করলে সাক্ষ্য আইনের ৪০-৪৪ ধারায় যে কোন একটিতে প্রাসঙ্গিক হতে হবে।

ধারা-৪০ দ্বিতীয় বা মােকদ্দমার বিচার নিষিদ্ধ করার জন্য পূর্ববতী রায় প্রাসঙ্গিক-

পূর্ববর্তী মােকদ্দমার রায়, ডিক্রি বা আদেশ পরবর্তী মামলা দায়ের বা বিচারে বাধা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

সাক্ষ্য আইনের ৪০ ধারায় দুটি নীতির প্রতিফলন ঘটেছে।

১। Res Judicata (S. 11 of CPC)

২।  Double Jeopardy (S. 403 of CPC)

৩। সংবিধানের ৩৫(২) অনুচ্ছেদে

৪। জেনারেল ক্লজেজ এ্যাক্টের ২৬ ধারায়

ধারা-৪১ প্রবেট, এখতিয়ার ইত্যাদির ক্ষেত্রে কোন রায়ের প্রাসঙ্গিকতা-

প্রবেট (উইল সংক্রান্ত দলিল), ম্যাট্রিমােনিয়াল (বিবাহ সংক্রান্ত) এডমিরালট (নৌবিভাগ সংক্রান্ত) বা দেউলিয়াত্ব বিষয়ে উপযুক্ত আদালতের সিদ্ধান্ত আদেশ বা ডিক্রিকে প্রাসঙ্গিক করা হয়েছে। কোন কোন বিষয়ে আদালতের এরুপ সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত প্রমাণ বলে বিবেচনা করা হয়েছে। ৪১ ধারায় বর্ণিত তালিকা বহির্ভূত রায়, আদেশ বা ডিক্রি যা সর্ব সাধারনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং আদালতের তদন্তের বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয় তবে সেই সমস্ত রায় আদেশ বা ডিক্রি প্রাসঙ্গিক হবে কিন্তু চূড়ান্ত প্রমানরূপে গণ্য হবে না। [ধারা-৪২]

ধারা-৪৪ রায় দেওয়ার জন্য প্রবঞ্চনা বা ষড়যন্ত্র অথবা আদালতের অযােগ্যতা প্রমাণ করা যেতে পারে-

কোন আদালত রায়, আদেশ বা ডিক্রি দেবার এখতিয়ার সম্পন্ন ছিল না অথবা প্রতারণা বা ষড়যন্ত্র করে তা হাসিল করা হয়েছে, মর্মে প্রমান করা যেতে পারে।

তৃতীয় ব্যক্তির অভিমত যখন প্রাসঙ্গিক

মামলার পক্ষ নয় কিন্তু তৃতীয় কোন পক্ষের অভিমত সাক্ষ্য আইনের ৪৫ থেকে ৫১ ধারা অনুসারে প্রাসঙ্গিক হতে পারে।

বিশারদের অভিমত (Opinions of Experts)। ধারা-৪৫

নিম্নে বর্ণিত ক্ষেত্রে যে সকল ব্যক্তিদের বিশেষ পারদর্শিতা আছে তাদের অভিমত প্রাসঙ্গিক হতে পারে ৫টি ক্ষেত্রে:

১। বিদেশী আইন বিষয়ে।

২। বিজ্ঞান; বা

৩। চারু কলা বিষয়ে

৪। হস্তলিপি বা

৫। আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকরণ বিষয়ে

ধারা-৪৬ বিশেষজ্ঞের অভিমতের সাথে সংশ্লিষ্ট ঘটনা-

বিশারদের অভিমতের সাথে সংশ্লিষ্ট ঘটনা যা উক্ত অভিমত সমর্থণ করে অথবা উক্ত অভিমতের সাথে অসামঞ্জস্য পূর্ণ তাও প্রাসঙ্গিক।

ধারা-৪৭ হস্তান্তর সম্পর্কে অভিমত যখন প্রাসঙ্গিক-

হস্তলিপি প্রমানের ক্ষেত্রে উক্ত হস্তলিপির সাথে পরিচিত ব্যক্তির অভিমত প্রাসঙ্গিক। একজন ব্যক্তি অপর একজনের হাতের লেখার সাথে পরিচিত তখনই বলা যাবে যখন-

১। এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে লিখতে দেখেছে।

২। যখন সেই ব্যক্তির নিকট লিখিত পত্রের উত্তর পাওয়া গিয়েছে এবং উত্তর পত্র প্রাপক কর্তৃক লিখিত হয়েছে বলে প্রমান আছে।

৩। যখন ব্যবসার স্বাভাবিক নিয়মানুসারে সেই ব্যক্তির দ্বারা লিখিত বলে প্রতীয়মান কাগজপত্র সর্বদা তার নিকট আসিতেছে।

ধারা-৪৮ অধিকার, প্রথার অস্তিত্ব সম্পর্কে অভিমত যখন প্রাসঙ্গিক-

কোন সাধারণ অধিকার বা প্রথার অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা লােকের অভিমত প্রাসঙ্গিক। সাধারণ প্রথা বা অধিকার বলতে যথেষ্ট সংখ্যক ব্যক্তির একটি শ্রেনীর মধ্যে সাধারণভাবে প্রচলিত প্রথা বা অধিকার বুঝায়।

ধারা-৪৯ প্রচলিত রীতি-নীতি ইত্যাদি সম্পর্কে অভিমত যখন প্রাসঙ্গিক-

যখন আদালতকে কোন জনগােষ্ঠি বা পরিবারের রীতি নীতি, কোন ধর্মীয় বা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের শাসনতন্ত্র ও ব্যবস্থাপনা, অথবা কোন বিশেষ জেলায় বিশেষ শ্রেনীর মধ্যে ব্যবহৃত শব্দের অর্থ বিষয়ে কোন অভিমত গ্রহণ করতে হয়, তখন ঐ সকল বিষয়ে জানা ব্যক্তিদের অভিমত প্রাসঙ্গিক।

ধারা -‌ ৫০ আত্মীয়তা সম্পর্কে অভিমত যখন প্রাসঙ্গিক-

কোন ব্যক্তির সাথে অন্য কোন ব্যক্তির সম্পর্ক অর্থাৎ আত্মীয়তার সম্পর্কের ব্যাপারে তৃতীয় কোন ব্যক্তির অভিমত প্রাসঙ্গিক।

ধারা - ৫১ মতামতের কারন যখন প্রাসঙ্গিক-

কোন জীবিত ব্যক্তির অভিমত প্রাসঙ্গিক হলে, তার অভিমত যে সকল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত সেগুলিও প্রাসঙ্গিক।

পক্ষদের চরিত্র যখন প্রাসঙ্গিক। ধারা ৫২ - ৫৫

দেওয়ানি মামলায় চরিত্র। ধারা ৫২ ও ধারা ৫৩

চরিত্র যদি বিচার্য বিষয় না হয়, তাহলে পক্ষদের চরিত্রের বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান দেওয়ানি মামলায় অপ্রাসঙ্গিক। মনে রাখুন খুব খারাপ একজন ব্যক্তিরও একটি দেওয়ানি মামলার যথেষ্ট যুক্তিপূর্ণ এবং ন্যায় সঙ্গত কারন থাকতে পারে। দেওয়ানি মামলার বিচার্য বিষয় পক্ষসমূহ নয় বরং‌ পক্ষদের মধ্যকার বিরােধের বিচার করা।

ফৌজদারি মামলায় চরিত্র। ধারা ৫৩ ও ধারা ৫৪

ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আসামি ভালাে চরিত্রের অধিকারী, এটা প্রাসঙ্গিক। অর্থাৎ ফৌজদারি মামলায় আসামি ভালাে চরিত্রের ব্যক্তি এই বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়া যেতে পারে। তবে ফৌজদারি মামলায় আসামি চরিত্রহীন বা খারাপ চরিত্রের ব্যক্তি এই মর্মে সাক্ষ্য দেওয়া হলে তা অপ্রাসঙ্গিক। [ধারা ৫৪] কিন্তু আসামি পক্ষ আসামির চরিত্র ভালাে এই মর্মে সাক্ষ্য দিলে, প্রতিপক্ষ আসামির চরিত্র খারাপ এই মর্মে সাক্ষ্য দিলে তা প্রাসঙ্গিক হবে। (ধারা-৫৪]

৫৪ ধারা যেক্ষেত্রে প্রযােজ্য নয়-

১। যে মামলায় কোন ব্যক্তির খারাপ চরিত্রই বিচার্য বিষয়।

২। পূর্ববর্তী দন্ডাদেশ খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসাবে প্রাসঙ্গিক।

ধারা-৫৫

দেওয়ানি মােকদ্দমার ক্ষতিপূরণ নির্ধারনে ব্যক্তির চরিত্র প্রাসঙ্গিক ঘটনা।

যে সকল ঘটনা প্রমান করার প্রয়ােজন নেই। ধারা ৫৬-৫৮

১। যে সব বিষয়ে আদালত বিচারক হিসেবে দৃষ্টিগােচার নিবেন (Facts Judicially Noticed): ধারা ৫৬ এবং ৫৭

২। স্বীকৃত ঘটনা (Admitted Facts): ধারা ৫৬

৩। আইনুসারে অনুমানযােগ্য বিষয় সমূহ (Legal Presumption): যেমন- ধারা ৮৬, ৮৯।

যে সব বিষয়ে আদালত বিচারক হিসেবে দৃষ্টিগােচার নিবেন। ধারা- ৫৬

আদালত যে সব বিষয় বিচারক হিসাবে দৃষ্টি গােচরে নেবেন তা প্রমাণ করার প্রয়ােজন নেই।

ধারা-৫৭ যে সব ঘটনা আদালতকে অবশ্যই বিচারক হিসাবে গােচরে নিতে হবে-

নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলাে আদালত অবশ্যই বিচারক হিসেবে দৃষ্টি গােচার নিবেন অর্থাৎ নিম্নে বর্ণিত ১১টি বিষয় প্রমান করার প্রয়ােজন নেই:

১। বাংলাদেশের আইনসমূহ

২। সশস্ত্র বাহিনী সমূহের জন্য প্রনীত যুদ্ধ বিধিসমূহ

৩। আইন সভার কার্য পদ্ধতি

৪। বাংলাদেশি আদালত, নৌ ও সামুদ্রিক এখয়াির সম্পন্ন আদালত এবং নােটারী পাবলিকের সীল মােহর।

৫। কোন ব্যক্তির সরকারি পদে যােগদানের বিষয়ে সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হলে সেই যােগদানকারী ব্যক্তির নাম, পদ, কর্তব্য, স্বাক্ষর এবং যােগদানের সময়

৬। সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোন ট্রাষ্টের অস্বিত্ব, উপাধি ও জাতীয় পতাকা।

৭। সময়ের বিভাগসমূহ পৃথিবীর ভৌগলিক বিভাগসমূহ এবং সরকারি গেজেটে প্রকাশিত সর্ব সাধারনের উৎসব ছুটি সমূহ।

৮। বাংলাদেশের ভুখন্ড সমূহ।

৯। বাংলাদেশের সাথে অপর কোন রাষ্ট্র বা জনগােষ্ঠির বিরােধ আরম্ভ হওয়া চলতে থাকা ও অবসান হওয়া।

১০। আদালতরে সদস্যবৃন্দ ও অফিসার গণ, সকল এ্যাডভােকেট।

১১। স্থল, জল ও সমুদ্রেপথের নিয়মাবলী ।

স্বীকৃতি ঘটনা প্রমাণের দরকার নেই। ধারা-৫৮

মােকদ্দমায় কোন বিষয় পক্ষগণ বা তাদের প্রতিনিধিগণ মামলা শুনানীর সময় যদি স্বীকার করে নিতে সম্মত হন অথবা শুনানীর পূর্বেই যদি উক্ত বিষয়ে লিখিত ভাবে স্বীকার করতে রাজি হয় অথবা আরজি জবাবে কোন বিষয় পক্ষগণের স্বীকৃত বলে গণ্য হলে, তবে সেই বিষয় আর প্রমান করার দরকার নেই। এক কথায় স্বীকৃত ঘটনা প্রমাণ করার প্রয়ােজন নেই।

মৌখিক সাক্ষ্য কাকে বলে

সাধারণ নিয়ম হচ্ছে আদালতে সর্বদা উৎকৃষ্ট সাক্ষ্য প্রদান করতে হবে। দলিলের বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে দলিলই তার উৎকৃষ্ট সাক্ষ্য। তাই সেই বিষয়বস্তু দলিল দিয়ে প্রমাণ করতে হয় ।

সাক্ষ্য ২ প্রকার; যথা-

ক) মৌখিক সাক্ষ্য

খ) দালিলিক সাক্ষ্য

যেখানে দালিলিক সাক্ষ্য আছে, সেখানে দলিল উৎকৃষ্ট প্রমাণ, অন্যত্র মৌখিক সাক্ষ্যই লিখিত দলিলের বক্তব্য মৌখিক সাক্ষ্যের মাধ্যামে প্রমাণ করা যায় না, তবুও সাক্ষ্য আইনের ৬৩ এবং ৩২ ধারায় লিখিত দলিলের বিকল্প প্রমাণের ব্যবস্থা রয়েছে।

মৌখিক সাক্ষ্যের মাধ্যমে ঘটনা প্রমান। ধারা-৫৯

দলিলের বিষয়বস্তু ছাড়া অন্যান্য সকল ঘটনা মৌখিক সাক্ষ্যের মাধ্যমে প্রমান করা যেতে পারে।

মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যক্ষ্য হবে। ধারা-৬০

মৌখিক সাক্ষ্য সকল ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রত্যক্ষ হতে হবে। যেমন- যা সাক্ষী নিজে দেখেছে, নিজে শুনেছে, নিজে অনুভব করেছে, সেই বিষয়ে সাক্ষ্য দিলে তা প্রত্যক্ষ মৌখিক সাক্ষ্য হবে।

দালিলিক সাক্ষ্য কাকে বলে। ধারা ৬১-৬৩

দলিলের বিষয়বস্তুর প্রমান। ধারা ৬১

কোন দলিলের বিষয়বস্তু ২ ভাবে প্রমান করা যায়

১। প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা অথবা

২। মাধ্যমিক সাক্ষ্য দ্বারা

প্রাথমিক সাক্ষ্য কাকে বলে। ধারা ৬২

সংশ্লিষ্ট আসল দলিলটি আদালতের পরিদর্শন বা অনুসন্ধানের জন্য দাখিল করা হলে তা প্রাথমিক সাক্ষ্য হবে। যদি কোন দলিল কয়েকটি খন্ডে সম্পাদিত হয়, তখন প্রত্যেকটি খন্ডই ঐ দলিলের প্রাথমিক সাক্ষ্য হবে।

মাধ্যমিক সাক্ষ্য কাকে বলে। ধারা-৬৩

দলিলের মাধ্যমিক সাক্ষ্যসমূহ;

১। সাক্ষ্য আইনের ৭৬ ধারা বর্ণিত নিয়মে প্রদত্ত সহিমােহরকৃত (জাবেদা) নকল।

২। মূল দলিল থেকে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংগৃহিত নকল এবং এইরুপ নকলের সাথে মিলিয়ে অন্যান্য নকল।

৩। মূল দলিল থেকে প্রস্তুত করা অথবা মূল দলিলের সাথে মিলিয়ে নেওয়া নকল। অর্থাৎ সার্টিফাইড নকল কপি ।

৪। কোন দলিলের প্রতিলিপি।

৫। দলিল দেখেছে এমন ব্যক্তি দলিলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে মৌখিক বিবৃতি বা সাক্ষ্য।

যেক্ষেত্রে দলিল সম্পর্কে মাধ্যমিক সাক্ষ্য প্রদান করা যেতে পারে। ধারা-৬৫

১। দলিলটি যার বিরুদ্ধে প্রমান করতে চাওয়া হচ্ছে, আসল দলিলটি তার দখলে আছে; অথবা আসল দলিলটি আদালতের সমনের বা এখতিয়ারের বাইরে আছে; অথবা আসল দলিলটি এমন ব্যক্তির দখলে আছে, যা সে পেশ করতে বাধ্য। কিন্তু ৬৬ ধারায় নােটিশ দেওয়ার পরও সে ব্যক্তি দলিল পেশ করেনি।

২। দলিলটি যার বিরুদ্ধে প্রমান করা হবে, সে ব্যক্তি বা তার প্রতিনিধি আসল দলিলের অস্তিত্ব লিখিতভাবে স্বীকার করলে।

৩। আসল দলিল হারায় গেলে অথবা যৌক্তিক কারনে আসল দলিল হাজির করতে পারলে।

৪। আসল দলিলটি যদি স্থানান্তর যােগ্য না হয় ।

৫। আসল দলিলটি সরকারি দলিল হলে।

৬। যেক্ষেত্রে আইন আসল দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহারের বিধান আছে।

৭। আসল দলিলে বহুসংখ্যক দলিলের বিবরণ থাকলে যা আদালতের পরীক্ষা করে দেখার জন্য সুবিধাজনক নয়।

 দলিল প্রমাণের জন্য নোটিশ প্রদান । ধারা - ৬৬

দলিল প্রমাণের জন্য মাধ্যমিক সাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করতে হলে ৬৬ ধারায় নােটিশ প্রদান বাধ্যতামূলক। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এরুপ নােটিশ প্রদানের প্রয়ােজন নাই।

সরকারি এবং বেসরকারি দলিল কাকে বলে। ধারা ৭৪, ৭৫, এবং ৭৬

দলিলের প্রকারভেদ। দলিল ২ প্রকার

১। সরকারি দলিল (Public Document)

২। ব্যক্তিগত বা বেসরকারি দলিল (Private Document)

সরকারি দলিল কাকে বলে। ধারা- ৭৪

নিম্নে লিখিত দলিলগুলাে সরকারি দলিল:

১। কোন সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের কার্যাবলীর লিখিত বিবরণ ও নথিপত্র। যেমন সংসদের আইন।

২। সরকারি সংস্থা এবং ট্রাইব্যুনাল সমূহর কার্যবলীর লিখিত বিবারণ ও নথিপত্র।

৩। বাংলাদেশের বা কমন ওয়েলথের কোন অংশের বা বিদেশের আইন বিভাগীয় বিচার বিভাগীয় বা শাসন বিভাগীয় কোন কর্মচারীর কার্যবলীর লিখিত বিবরণ ও নথিপত্র ।

৪। বাংলাদেশ সরকারের হেফাজতে রক্ষিত ব্যক্তিগত দলিলের নথিপত্র । যেমন রেজিষ্ট্রি দলিলের বিবরণ।

বেসরকারি দলিল কাকে বলে। ধারা ৭৫

সরকারি দলিল ব্যতিত সকল দলিলই বেসরকারি বা ব্যক্তিগত দলিল ।

দলিল সম্পর্কে অনুমান (Presumption)

সাক্ষ্য আইনের ৭৯ থেকে ৯০ ধারা পর্যন্ত কিছু দলিল সম্পর্কে অনুমানের (Presumption) বিধান বর্ণিত আছে।

ধারা-৭৯ জাবেদা নকলের শুদ্ধতা সম্পর্কে অনুমান

আদালত সহি মােহরকৃত নকলকে মূল দলিলের নকল হিসেবে Shall Presume করে নিবেন।

ধারা-৮০ লিপিবদ্ধ সাক্ষ্য হিসেবে দাখিলকৃত দলিল সম্পর্কে অনুমান

লিপিবদ্ধ সাক্ষ্য হিসেবে আদালতের নিকট পেশকৃত দলিল সম্পর্কে আদালত Shall Presume করবেন।

ধারা-৮২ ইংল্যান্ডে যে সব দলিল সীল ও স্বাক্ষরের প্রমাণ ছাড়া গ্রাহ্য হয় সেগুলি সম্পর্কে অনুমান

ইংল্যান্ডে যেসব দলিল সীল ও স্বাক্ষর প্রমান ছাড়াই গ্রহণ করা হয়, সেগুলাে সম্পর্কে আদালত Shall Presume করবে।

ধারা-৮৩ সরকারি কর্তৃত্বধীনে প্রণীত নকশা বা পকিল্পনা সম্পর্কে অনুমান

সরকারি কর্তৃত্বধীনে প্রণীত নকশা বা পরিকল্পনা সম্পর্কে আদালত Shall Presume করবে।

ধারা-৮৪ আইন ও আদালতের সিদ্ধান্তের রিপাের্ট সংকলন সম্পর্কে অনুমান

আইন ও আদালতের সিদ্ধান্তের রিপাের্ট সম্পর্কে আদালত Shall Presume করবে।

ধারা-৮৫ আম-মােক্তারনামা সম্পর্কে অনুমান

আমমােক্তার নামা (Power of attorney) সম্পর্কে আদালত Shall Presume করবে।

ধারা-৮৬ বিদেশি বিচার বিষয়ক নথিপত্রের জাবেদা নকল সম্পর্কে অনুমান

বিদেশি বিচার বিষয়ক নথিপত্রের জাবেদা নকল (Certified Copy) সম্পর্কে আদালত Shall presume করবে।

ধারা-৮৭ পুস্তক, মানচিত্র ও চার্ট সম্পর্কে অনুমান

সাধারণ ও জনস্বার্থে তৈরি পুস্তক, মানচিত্র ও চার্ট সম্পর্কে আদালত May Presume করবে।

ধারা-৮৮ তারবার্তা সম্পর্কে অনুমান

তারবার্তা (Telegraphic Messages) সম্পর্কে আদালত May Presume করবে।

ধারা-৮৯ দাখিল করা হয়নি এরুপ দলিলের যথাযথ সম্পাদন ইত্যাদি সম্পর্কে অনুমান

যে দলিল আদালত উপস্থিত করতে তলব করে এবং নােটিশ প্রদান করার পরও পেশ না করলে, উক্ত দলিল সম্পর্কে আদালত Shall presume করবে।

৩০ বছরের পুরাতন দলিল। May presume, ধারা-৯০

দলিল যদি ৩০ বছরের পুরাতন হয় এবং উক্ত দলিল সঠিক ব্যক্তির হেফাজতে থাকে, তাহলে উক্ত দলিলের সম্পাদন ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে আদালত সঠিক বলে অনুমান করবেন।

প্রমানের দায়িত্ব কাকে বলে। (Burder of Proof)

যখন কোন ব্যক্তি কোন ঘটনার অস্বিত্বের দাবী করে আদালতের রায় কামনা করলে, উক্ত ঘটনা তাকেই প্রমান করতে হবে।

প্রমাণের দায়িত্ব যার উপর থাকবে। ধারা-১০২

কোন দেওয়ানি মােকদ্দমায় কোন পক্ষ থেকে যদি সাক্ষ্য দেওয়া না হয়, তবে যে পক্ষ মােকদ্দমায় হারবে তার উপরই প্রমানের দায়িত্ব থাকবে।

কোন নির্দিষ্ট ঘটনা প্রমাণের দায়িত্ব। ধারা-১০৩

নির্দিষ্ট কোন ঘটনার অস্বিত্ব যে দাবি করবে তাকেই প্রমান করতে হবে।

সাক্ষ্য গ্রহণযােগ্য করার জন্য যে ঘটনা প্রমাণ করতে হবে তা প্রমাণের দায়িত্ব। ধারা-১০৪

একটি ঘটনা প্রমান করতে হবে যদি একটি সাক্ষ্যকে আদালতের নিকট গ্রহনযােগ্য করতে হয়, এই ক্ষেত্রে যে সাক্ষ্য গ্রহণযােগ্য করাতে চাই, তাকেই উক্ত ঘটনা প্রমান করতে হবে।

মামলা যে ব্যতিক্রমে পড়ে তা প্রমাণের দায়িত্ব। ধারা-১০৫

আসামির মামলা দন্ডবিধির সাধারণ ব্যতিক্রম সমূহের মধ্যে পড়লে অভিযুক্ত আসামিকেই তা প্রমান করতে হবে।

বিশেষভাবে যে ঘটনা কারাের জ্ঞানে থাকে। ধারা-১০৬

যে ঘটনা বিশেষভাবে কারও জানা থাকলে তা প্রমানের দায়িত্ব উক্ত ঘটনা জানা ব্যক্তির উপর।

৩০ বছর যাবৎ জীবিত ব্যক্তিকে মৃত প্রমাণের দায়িত্ব। ধারা- ১০৭

যে ব্যক্তি ৩০ বছর ধরে জীবিত বলে জানা আছে, তাকে যে মৃত বলে দাবি করবে, প্রমানের ভার তার উপর পড়বে।

৭ বছর ধরে নিখোঁজ ব্যক্তিকে, জীবিত প্রমাণের দায়িত্ব। ধারা-১০৮

যে ব্যক্তি ৭ বছর ধরে নিখোঁজ আছে, সে জীবিত আছে বলে যে দাবি করবে তার উপরই প্রমানের ভার পড়বে।

অংশীদারগণের মধ্যে, জমিদার ও প্রজা, মালিক ও প্রতিনিধিত্বের সম্পর্ক প্রমাণের দায়িত্ব। ধারা-১০৯

অংশীদারগনের (Partners), জমিদার-প্রজা (Landlord-Tenant), মালিকপ্রতিনিধির (Principal-Agent) মধ্যে যে দাবি করবে সম্পর্কের অবসান হয়েছে প্রমানের দায়িত্ব তার উপরই পড়বে।

মালিকানা প্রমাণের দায়িত্ব। ধারা-১১০

যে মালিকানা দাবী করবে তাকেই তা প্রমান করতে হবে।

সরল বিশ্বাস প্রমাণ ধারা-১১১

Good Faith Transactions এর ক্ষেত্রে যার উপর Active Confidence থাকবে তাকেই সরল বিশ্বাস প্রমান করতে হবে।

বিবাহ থাকা কালীন সন্তানের জন্মের বৈধতা (Birth During Marriage)

সাক্ষ্য আইনের সন্তানের জম্নের বৈধতার অনুমান সম্পর্কে ১১২ ধারায় আলােচনা করা হয়েছে।

নিম্নে বর্ণিত শর্তসমুহ পূরণ করলে চূড়ান্তভাবে (Conclusively) সন্তানকে বৈধ বলে অনুমান করা হবে:

১। সন্তানটির জন্ম পিতা মাতার বৈধ বিবাহিত সময়কালে হবে, অথবা

২। বিবাহ বিচ্ছেদের ২৮০ দিনের মধ্যে সন্তানটি জন্ম গ্রহণ করে এবং উক্ত সময়ে মাতা আবিবাহিত ছিল।

প্রমানের ভার।

কেউ যদি উক্ত সন্তানের বৈধতা বিষয়ে প্রশ্নতুলে, তবে তাকে প্রমান করতে হবে যে, সন্তানের সম্ভাব্য জন্ম কালের কোন সময়ে তার মাতার সাথে তর্কিত পিতার মিলনের পথ উন্মুক্ত ছিল না।

স্বীকৃতির বাধা বা প্রতিবন্ধ (Estoppel) কাকে বলে

স্বীকৃতির বাধা বা স্বকার্যজনিত বাধা (Estoppel)। ধারা-১১৫

যে ব্যক্তির ঘােষণার মাধ্যমে অথবা কাজ করার বা কাজ করা থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে, ইচ্ছাধীন ভাবে যখন অন্য কোন ব্যক্তিকে যা সত্য নয়, এমন কোন কিছুকে সত্য বলে বিশ্বাস করায় এবং সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতে কাজ করতে দেয়, তাহলে পরবর্তীতে যদি উক্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কোন মামলা হলে সে মামলাতে বা বিচার কার্যক্রমে, উক্ত বিষয়ের সত্যতা অস্বীকার করতে পারবেন না প্রথম ব্যক্তি।

প্রজার এবং দখলকারীর অনুমতিক্রমে ব্যবহারকারীর স্বীকৃতির বাধা। ধারা-১১৬

১। স্থাবর সম্পত্তির কোন ভাড়াটিয়া বা তার মাধ্যমে দাবীকারী কোন ব্যক্তিকে প্রজাস্বত্ব বিদ্যমান থাকা অবস্থায় ঐ স্থাবর সম্পত্তিতে ভাড়াদাতার প্রজাস্বত্ব শুরুর সময়ের‌ স্বত্ব অস্বীকার করার অনুমতি দেয়া হবে না ।

২। কোন ব্যক্তি বা লাইসেন্সী (ব্যবহারকারী) কোন স্থাবর সম্পত্তির দখলকারের অনুমতি নিয়ে উক্ত সম্পত্তিতে প্রবেশ করে থাকলে, তাকে একথা বলতে দেওয়া যাবে না যে উক্ত অনুমতি প্রদানের সময় দখলকারের উক্ত সম্পত্তিতে কোন অধিকার ছিল না।

Bill of Exchange -এর ক্ষেত্রে Estoppel। ধারা-১১৭

১। Bill Exchange দাতার Bill of Exchange প্রণয়ন বা দস্তখত করার ক্ষমতা ছিল না, এই কথা Bill of Exchange গ্রহীতাকে বলতে দেয়া হবে না।

২। জামানত দান কালে জামানতকারীর জামানত প্রদান করার অধিকার বা ক্ষমতা ছিল না, এই কথা জামানত গ্রহীতাকে বলতে দেয়া হবে না।

৩। অনুমতি পত্র দান কালে অনুমতি পত্র দাতার অনুমতি পত্র দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না, এই কথা অনুমতি পত্র গ্রহীতাকে বলতে দেয়া হবে না ।

সাক্ষী সমূহের যোগ্যতা। কে সাক্ষী হওয়ার যোগ্য। (Witnesses)। ধারাঃ ১১৮-১২১ এবং ১৩৩

কে সাক্ষ্য দিতে পারে (Who May Testify)। ধারা- ১১৮

সকল ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদানের জন্য যােগ্যতা সম্পন্ন যদি না অল্প বয়স, অতি বাধ্য, দৈহিক বা মানসিক অসুস্থতার বা অনুরুপ অন্য কোন কারনে তাদের প্রতি করা প্রশ্ন বুঝতে বা প্রশ্ন বুঝে যুক্তি সংগত উত্তর দিতে অক্ষম হয়।

বােবা সাক্ষী কাকে বলে (Dumb Witnesses)। ধারা-১১৯

যে সাক্ষী কথা বলতে পারে না, সে যদি তার বক্তব্য লিখে বা ইশরার মাধ্যমে বুঝাতে পারে, তাহলে সাক্ষী হিসাবে যােগ্য হবে। তবে তার সাক্ষ্যকে মৌখিক সাক্ষ্য বলবে।

ধারা-১২০ সাক্ষী হিসেবে স্বামী বা স্ত্রী

১। দেওয়ানি মামলাতে

সকল দেওয়ানি মােকদ্দমায়, মােকদ্দমার পক্ষসমূহ এবং যে কোন পক্ষের স্বামী বা স্ত্রী অবশ্যই যােগ্যতাসম্পন্ন সাক্ষী হবে।

২। ফৌজদারি মামলায়

ফৌজদারি মামলায় কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সেই ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী অবশ্যই যােগ্য সাক্ষী হবে। অর্থাৎ ফৌজদারি মামলার আসামির স্বামী বা স্ত্রী তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দিতে পারবে। তবে তারা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য নয়।

সাক্ষী হিসাবে জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটগণ। ধারা-১২১

১। কোন জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট যে আদালতের অধীন সে আদালতের বিশেষ আদেশ ছাড়া জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আদালতে তাদের নিজস্ব আচরণ সম্পর্কে অথবা যে বিষয় গুলাে তাদের গােচরে এসেছে এমন কোন ঘটনার বিষয়ে কোন প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে বাধ্য নয়।

২। তবে জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটগণ তাদের কর্তব্য পালনকালীন সময়ে তাদের উপস্থিতিতে কোন ঘটনা ঘটলে উক্ত বিষয়ে উর্ধ্বতন আদালতের অনুমতি ছাড়াই সাক্ষ্য গ্রহণ করা যেতে পারে।

বিবাহ বলবৎ থাকাকালীন সময়ে পত্রালাপ। ধারা-১১২

সাধারণত বিবাহ বলবৎ থাকাকালীন সময়ে স্বামী এবং স্ত্রীর পত্রালাপের বিষয়বস্তু‌ প্রকাশ করতে বাধ্য করা যাবে না। তবে বিবাহিত ব্যক্তিদ্বয়ের মধ্যে কোন দেওয়ানি মামলা অথবা তাদের একজনের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ সংগঠনের দায়ে অন্যজন ফৌজদারিতে সােপার্দ হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে প্রত্রের বিষয় প্রকাশ করা যাবে।

রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে সাক্ষ্য। ধারা ১২৩

রাষ্ট্রের সম্পর্কিত অপ্রকাশিত সরকারি দলিলপত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে কাউকে সাক্ষ্য প্রদান করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান কর্মকর্তার অনুমতি লাগবে।

সরকারি বার্তার আদান প্রদান ধারা- ১২৪

প্রকাশ করলে গণস্বার্থ বিঘ্নত হতে পারে এমন কোন গােপনীয় ভাবে প্রাপ্ত সরকারি খবর প্রকাশ করার জন্য কোন সরকারি কর্মচারীকে বাধ্য করা যাবে না।

অপরাধ সংঘটনের সংবাদ। ধারা-১২৫

ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ অফিসার কে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সংবাদ কিভাবে পেয়েছে তা বলতে বাধ্য করা যাবে না। একই ভাবে রাজস্ব অফিসারকে রাজস্ব সংক্রান্ত অপরাধের সংবাদ কোথা থেকে পেয়েছে তা বলতে বাধ্য করা যাবে না।

ধারা-১২৬ পেশা সম্পর্কিত পত্রালাপ

এ্যাডভােকেট, ব্যারিষ্টার, এটর্নী এবং মক্কেলের মধ্যে তথ্যের আদান প্রদান এ্যাডভােকেট মক্কেলের প্রকাশ্য অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করতে বাধ্য নয়। তবে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলি প্রকাশ করতে কোন বাধা নেই:

১। বে-আইনী উদ্দেশ্য সাধনে যে সংবাদ আদান প্রদান হয়েছে।

২। কোন অপরাধ বা প্রতারনার তথ্য।

ধারা ১২৯ আইন উপদেষ্টার সাথে গােপন পত্ৰলাপ

কোন ব্যক্তি ও তার পেশাদার আইন উপদেষ্টার মধ্যে কোন গােপন পত্রালাপ হয়ে থাকলে, সে ব্যক্তি যদি কোন মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ না করে, তবে সে গােপন পত্রালাপের বিষয় আদালতে প্রকাশ করতে তাকে বাধ্য করা যাবে না। যদি সে সাক্ষ্য দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে, তবে তার দেয়া সাক্ষ্যের ব্যাখ্যা জন্য উক্ত গােপন পত্রালাপের বিষয় আদালতরে জানা দরকার হলেই কেবল তাকে তা প্রকাশ করতে বাধ্য করা যাবে, অন্যথায় নয়।

ধারা ১৩০ মামলার পক্ষ নয় এরুপ সাক্ষির স্বত্বের দলিল দাখিল

মামলার পক্ষ নয়, এরুপ কোন সাক্ষিকে তার সম্পত্তির স্বত্ব সংক্রান্ত কোন দলিল অথবা যে দলিলবলে কোন সম্পত্তি সে বন্ধকদার হিসাবে দখল করে সে দলিল, অথবা যে দলিল উপস্থাপন করলে তার কোন অপরাধ ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে এরুপ কোন দলিল আদালতে উপস্থাপন করতে বাধ্য করা যাবে না, যদি না, যে ব্যক্তি উক্ত দলিল উপস্থাপন করাতে চায় তার বা যার মাধ্যমে সে অধিকার দাবি করছে তার সাথে সাক্ষি কোন লিখিত চুক্তিতে উক্ত দলিল উপস্থাপন করতে সম্মত হয়ে থাকে।

ধারা ১৩১ যে দলিল অপর কোন ব্যক্তির দখলে থাকলে সে তা দাখিল করতে অস্বীকার করতে পারত তা দাখিল

কোন ব্যক্তির দখলে যদি এমন কোন দলিল থাকে, যা অপর কারাে দখলে থাকলে তা উপস্থাপন করতে অস্বীকার করার অধিকার সে ব্যক্তির থাকত, তবে শেষােক্ত ব্যক্তি সে দলিল উপস্থাপনের সম্মতি না দিলে প্রথমােক্ত ব্যক্তিকে তা উপস্থাপন করতে বাধ্য করা যাবে না।

ধারা ১৩২ কোন প্রশ্নের উত্তর সাক্ষি কোন অপরাধের সাথে জড়িত করবে এ অজুহাতে উত্তর দান হতে স্বাক্ষীকে অব্যাহতি দেয়া যায় না

কোন দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় বা কার্যক্রমে বিচার্য বিষয়ের প্রাসঙ্গিক কোন বিষযে সাক্ষিকে প্রশ্ন করা হলে সে, প্রশ্নের উত্তর সাক্ষিকে অপরাধমূলক কার্যে জড়িত করবে অথবা প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে জড়িত করার সম্ভাবনা থাকবে, অথবা তার ফলে সাক্ষি শাস্তি পাবার যােগ্য হবে বা প্রত্যক্ষ কিংবা পরােক্ষভাবে শাস্তি পাবার যােগ্য হবার সম্ভাবনা থাকবে, এ অজুহাতে উক্ত সাক্ষিকে অনুরুপ প্রশ্নের উত্তরাদান হতে অবশ্যই অব্যাহতি দেয়া যাবে না।

দুষ্কর্মের সহযােগী (Accomplice) কাকে বলে। ধারা ১৩৩ ও ১১৪

দুষ্কর্মের সহযােগী আসামির সাক্ষ্যর ভিত্তিতে আসামিকে দন্ড প্রদান করা যেতে পারে। এখানে তার সাক্ষ্য সমর্থিত না হলেও শাস্তি বে-আইনী হবে না। তবে ১১৪ ধারার খ নং উদাহরণ অনুসারে দুষ্কর্মের সহযােগী বিশ্বাসের অযােগ্য। সুতরাং দুষ্কর্মের সহযােগী আসামির সাক্ষ্য সমর্থিত হতে হবে। ১৩৩ ও ১১৪ ধারা দুটি একসাথে পড়তে হবে।

সাক্ষীর সংখ্যা - একটি মামলায় সর্বনিম্ন কত জন সাক্ষী এবং সর্বোচ্চ কত জন সাক্ষীর প্রয়োজন হয়। (Number or witlesses)। ধারা-১৩৪

কোন মােকদ্দমায় কোন ঘটনা প্রমানের জন্য নির্দিষ্ট কোন সংখ্যক সাক্ষীর প্রয়ােজন। হবে না।

কিভাবে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়

সাক্ষ্য আইনে সাক্ষীদেরকে ৩ ভাবে পরীক্ষা করা যায়। যথা:

১। জবানবন্দি (Examination in Chief)

২। জেরা (Cross Examination)

৩। পুন:জবানবন্দি (Re-examination)

ধারা ১৩৬ - জজ সাক্ষ্যের গ্রহণযােগ্যতা নির্ধারণ করবেন।

ধারা-১৩৭ জবানবন্দি (Examination in Chief), জেরা (Cross Examination), পুন:জবানবন্দি (Re-examination)

জবানবন্দি Examination in Chief কাকে বলে

যে পক্ষ সাক্ষীকে উপস্থিত করে, সেই পক্ষ যখন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে, তখন তাকে সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ বলে ।

জেরা Cross Examination) কাকে বলে

জবানবন্দির পর প্রতিপক্ষ যখন সেই সাক্ষী কে প্রশ্ন করে তখন তাকে জেরা বলে ।

পুন: জবানবন্দি Re-examination কাকে বলে

জেরার পর যে পক্ষ সাক্ষী হাজির করেছে, সেই পক্ষ পুনরায় সাক্ষীকে প্রশ্ন করলে তাকে পুন: জবানবন্দি বলে ।

সাক্ষ্য গ্রহনের ধাপসমূহ বা ক্রমসমূহ (Order of examination)। ধারা-১৩৮

১। প্রথমে সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করতে হবে, তারপর জেরা করতে হবে এবং প্রয়ােজন হলে পুন: জবানবন্দি করতে হবে।

২। জবানবন্দি এবং জেরা মােকদ্দমার প্রাসংগিক বিষয়ে করতে হয়।

৩। সাক্ষীকে জেরা করা হয় সাক্ষীর গ্রহণযােগ্যতা নষ্ট এবং সত্য উদঘাটনের জন্য।

৪। পুন: জবানবন্দি নেওয়া হয় সাক্ষী জেরাতে যে বক্তব্য দিয়েছে তার ব্যাখ্যা বা স্পষ্ট করার জন্য।

৫। আদালতের অনুমতি নিয়ে পুন: জবানবন্দির সময় নতুন বিষয়ে সাক্ষীকে জিজ্ঞাসা করা যায় এবং নতুন কোন বিষয়ে পুন: জবানবন্দি নিলে বিরুদ্ধে পক্ষ পুনরায় জেরা করাতে পারে।

দলিল পেশ করার জন্য ডাকা ব্যক্তির জেরা ধারা-১৩৯

দলিল পেশ করার জন্য কোন ব্যক্তিকে সমন দিলে ঐ ব্যক্তিকে সাক্ষি হিসেবে গন্য করা যাবে না এবং সাক্ষী হিসাবে তলব না করা পর্যন্ত জেরা করা যাবে না।

চরিত্র সম্পর্কে সাক্ষ্য ধারা-১৪০

চরিত্র সম্পর্কে সাক্ষীকে জেরা করা ও তার পুন:জবানবন্দি গ্রহণ করা যায়।

ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন কাকে বলে। (Leading Question) ধারা-১৪১

যে প্রশ্নর ভিতর উত্তরের ইঙ্গিত থাকে, তাকে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বলে।

কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন Leading Question করা যায় না। ১৪২ ধারা

বিরুদ্ধ পক্ষ আপত্তী উত্তাপন করলে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যাবে না।

১। সাক্ষীর জবানবন্দির সময়

২। পুন:জবানবন্দির ক্ষেত্রে

তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়।

কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন Leading Question করা যায়। ১৪২ এবং ১৪৩ ধারা

১। মামলার ভূমিকা মূলক বিষয়ে জবানবন্দি বা পুন:জবানবন্দিতে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়।

২। স্বীকৃত বিষয়ে জবানবন্দি বা পুন:জবানবন্দিতে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায় ।

৩। যে বিষয়টি যথেষ্টভাবে প্রমাণিত, সেই বিষয়ে জবানবন্দি বা পুন:জবানবন্দিতে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়।

৪। জেরার সময় ইঙ্গিবাহী প্রশ্ন করা যায়। ধারা-১৪৩।

পূর্ববর্তী লিখিত বিবৃতি সম্পর্কে জেরা। ধারা-১৪৫

পুর্ববর্তী লিখিত বিবৃতি সম্পর্কে জেরা করা যাবে।

জেরায় আইন সংগত প্রশ্ন। ধারা-১৪৬

সাক্ষীকে জেরা করার সময় এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা যায় যাতে করে

১। তার সত্যবাদিতা পরীক্ষা করা যায়।

২। সে কে তার পরিচয় এবং মর্যাদা উদঘাটন করা যায় ।

৩। চরিত্রে আঘাত করে সাক্ষীর বিশ্বাসযােগ্যতা নষ্ট করা যায় ।

সাক্ষী প্রশ্ন উত্তর দিতে বাধ্য কি বাধ্য নয় কে নির্ধারণ করবে ধারা-১৪৮

১। সাক্ষীকে কোন সময় প্রশ্ন করতে হবে এবং সাক্ষী কোন সময় উত্তর দিতে বাধ্য তা আদালত নির্ধারণ করবে।

২। প্রশ্ন করার পর সাক্ষী উত্তর প্রদানে অস্বীকার করলে আদালত অনুমান করবে যে, সাক্ষী উত্তর দিলে তার বিরুদ্ধে যাবে।

যুক্তিসংগত কারন ছাড়া প্রশ্ন ধারা-১৪৯

যুক্তিসংগত কারন ছাড়া কোন প্রকার প্রশ্ন করা যাবে না।

ধারা-১৫০ যুক্তিসঙ্গত কারন ব্যতীত প্রশ্ন করা হলে সেক্ষেত্রে আদালতের কার্য পদ্ধতি

যে ক্ষেত্রে যৌক্তিক কারন ছাড়া সাক্ষীকে প্রশ্ন করা হয়, সেক্ষেত্রে আদালত উক্ত এডভােকেট সম্পর্কে পেশাগতভাবে হাইকোর্ট বিভাগ বা অন্য কোন নিয়ন্ত্রণাধীন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দিতে পারেন।

ধারা-১৫১ আদালতের করনীয় - অশালীন এবং কেলেংকারীজনক প্রশ্ন

বিচার্য বিষয়ের সাথে কিছুটা সম্পর্ক যুক্ত হলেও আদালত অশালীন এবং কেলেংকারীজনক প্রশ্ন জিজ্ঞেসা নিষিদ্ধ করতে পারেন। তবে প্রশ্নটি যদি বিচার্য বিষয় সম্পর্কিত হয় অথবা বিচার্য বিষয় জানার জন্য আবশ্যক হয়, তবে আদালত এরুপ প্রশ্ন করতে নিষেধ করবেন না।

ধারা-১৫২ অপমান বা উত্যক্ত করার উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন

আদালত অপমান বা বিরক্ত করার উদ্দেশ্য জিজ্ঞেস করা প্রশ্ন নিষিদ্ধ করতে পারেন।

বৈরী সাক্ষী - কখন নিজের সাক্ষীকে জেরা করা যায়। (Hostile witness) ধারা-১৫৪

যে পক্ষ সাক্ষী হাজির করে, সেই পক্ষ আদালতের অনুমতি নিয়ে নীজের সাক্ষীকে বিরুদ্ধ পক্ষর মত জেরা করতে পারেন। মনে রাখুন সাক্ষী আহ্বানকারী তার নিজের সাক্ষীকে বৈরী ঘােষণা করে বা না করে যেভাবেই হােক জেরা করতে চাইলে, অবশ্যই আদালতের সম্মতি নিতে হবে।

বৈরিসাক্ষী কাকে বলে। (Hostile Witness)

যখন নিজ পক্ষের সাক্ষী ইচ্ছাকৃতভাবে বিরুদ্ধ পক্ষের বক্তব্যের সমর্থনে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে শুরু করে, তখন তাকে Hostile Witness বলে বা বৈরী সাক্ষী বলে বা বৈরিসাক্ষী বলে।

কখন সাক্ষীর বিশ্বাস যােগ্যতা সম্পর্কে অভিযােগ করা যায়। ধারা-১৫৫

নিম্নে বর্ণিত উপায়ে সাক্ষীর বিশ্বাস যােগ্যতা সম্পর্কে অভিযােগ করা যেতে পারে-

১। সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে সাক্ষী বিশ্বাসের অযােগ্য প্রমান করা যেতে পারে।

২। সাক্ষী ঘুষ নিয়েছে বা ঘুষ নিতে রাজি হয়েছে বা অন্য কোনরুপ দূর্ণীতিমূলক প্রস্তাবে রাজি হয়েছে তা প্রমান করে।

৩। সাক্ষীর পূর্ববর্তী বিবৃতির সাথে সাক্ষ্যর সামঞ্জস্যতা নেই, এ কথা প্রমান করে।

৪। কোন ব্যক্তি যদি ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানীর প্রচেষ্টার দায়ে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়। সেক্ষেত্রে দেখানাে যেতে পারে যে, অভিযােগকারীনি বা সেই নারী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা।

যে ক্ষেত্রে অন্যায় ভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ বা অগ্রহনীয় করা হয় সেক্ষেত্রে নতুন বিচার হবে না। ধারা ১৬৭

যেই সব সাক্ষ্যর উপর ভিত্তি করে নিম্ন আদালত রায় প্রদান করেছেন, সে সব সাক্ষ্যে কিছু অগ্ৰহনীয় ছিল, আবার কিছু অন্যায়ভাবে গ্রহন করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে আপিল আদালত যদি প্রত্যক্ষ করতে পারেন যে, উল্লেখিত অনিয়মের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিঘ্নিত হয়নি, তাহলে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখা উচিৎ, অর্থাৎ শুধুমাত্র অন্যায়রুপে কোন সাক্ষ্য গ্রাহ্য বা অগ্রাহ্য করার অজুহাতেই কোন মামলার পুনঃবিচার বা সিদ্ধান্তের পরিবর্তন দাবী করা যাবে না।

Popular posts from this blog

Write a paragraph on Pahela Baishakh পহেলা বৈশাখ

Write a paragraph on Pahela Baishakh (পহেলা বৈশাখ) Pahela Baishakh Pahela Baishakh is the part of our culture. It is the first day in Bangla calendar. This day is celebrated throughout the country. The main programme of this day is held in Ramna Botamul. Different socio-cultural organizations celebrate this day with due solemnity. People of all sorts of ages and lives attend this function. Colourful processions are brought out. Watery rice and hilsha fish are served during this function. Women and children put on traditional dresses. The whole country wears a festive look. Different cultural programmes are arranged where singers sing traditional bangla songs. Discussion meetings are held. Radio and television put on special programmes. Newspapers and dailies publish supplementary. Fairs are held here and there on this occasion. Shopkeepers and traders arrange ‘halk hata’ and sweet-meats are distributed. In villages, people go to others’ houses and exchange greetings. Thus Pahela Baisha...

Write a paragraph on environment pollution পরিবেশ দূষণ

Write a paragraph on environment pollution (পরিবেশ দূষণ) Environment Pollution Environment pollution means the pollution of air, water, sound, odour, soil and other elements of it. We need safe and clean environment. Pollution of it has tremendous bad effects. Any sort of pollution may bring the doom of life. At present, our environment is being polluted at an alarming rate, Air, the most important element of environment is polluted by smoke from railway engines and power-houses, or the burning of coal and oil or the making of bricks. Water, another vital element is being polluted by the use of chemicals and insecticides or oil seeping from damaged super tankers or by industrial discharge. Sound pollution is caused by the use of microphones and loud speakers. All these pollutions may wipe out our existence from the earth. The destruction of forest also causes environment imbalance that makes the wild animals wipe out. So, it is our moral duty to prevent environment pollution. We must ...

Ecotourism -Read the passage and answer the questions Unit 9 Lesson 3c English For Today

Read the passage and answer the questions Ecotourism is a booming business that many tour operators cite as being helpful to nature.(পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প একটি দ্রুত সমৃদ্ধিময় ব্যবসা যা পর্যটন পরিচালনাকারীবৃন্দ প্রকৃতির জন্য সহায়ক বলে আখ্যায়িত করেন) Every year, millions of people descend on protected and pristine natural areas to observe rare species. (প্রতি বছর, লক্ষ লক্ষ মানুষ দুর্লভ প্রজাতির প্রাণীগুলোকে দেখতে সংরক্ষিত এবং বিশুদ্ধতা বিরাজমান আছে এমন প্রাকৃতিক অঞ্চল ভ্রমণ করে থাকে।) However, a new report casts doubt on the value of this form of tourism.(যাহোক, একটি নতুন ধরণের পর্যটনের উপকারিতাকে সন্দেহের নজরে দেখছে।) In fact, it suggests that ecotourism is more damaging than helpful to nature. (বাস্তবে, এটি পরামর্শ দিচ্ছে যে পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প প্রকৃতির জন্য সহায়কের চেয়ে অধিকতর ক্ষতিকর।) Details are in a report published in the journal Trends in Ecology and Evolution’. (‘ট্রেন্ডস ইন ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন’ সাময়িক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত বলা হয়...