- Get link
- X
- Other Apps
Definitions of Decree, Order, Judgement & others
Section 2 of code of civil procedure 1908
ডিক্রী আদেশ রায় ইত্যাদি কাকে বলে। ধারা 2 - দেওয়ানী কার্যবিধি আইন ১৯০৮
ধারা ২। সংজ্ঞা -ডিক্রী আদেশ রায় ও অন্যান্য সংজ্ঞাসমূহ
এই আইনে বিষয়বস্তু বা প্রসংগের পরিপন্থি কিছু না থাকলে(১) “বিধি” বলতে বিধিমালা অন্তর্ভূক্ত করবে;
(২) “ডিক্রী” বলতে আদালত দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারিত প্রকাশিত এমন সিদ্ধান্ত বুঝায়, যা মামলার বিতর্কিত সকল বা যে-কোন বিষয় সম্পর্কে পক্ষগুলাের অধিকার চড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে, এবং এটি প্রাথমিক বা চূড়ান্ত হতে পারে । আরজি বাতিল এবং ১৪৪ ধারায় উল্লেখিত কোন প্রশ্ন নির্ধারণও ইহার অন্তর্ভূক্ত হবে, তবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলাে ইহার অন্তর্ভূক্ত হবে না
(ক) যে ন্যায়নির্ণয়কারী রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের মত আপিল করা যেতে পারে; অথবা
(খ) যে কোন নির্দেশ পালনের ব্যর্থতার জন্য কোন খারিজের আদেশ ।
ব্যাখ্যাঃ ডিক্রী তখনই প্রাথমিক হয়, যখন মামলা চূড়ান্ত নিস্পত্তির জন্য আরও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়ােজন থাকে; মামলা যখন চূড়ান্তরূপে নিস্পত্তি হয়, তখনই ডিক্রী চূড়ান্ত হয়ে থাকে। তবে ডিক্রী আংশিকভাবে প্রাথমিক এবং আংশিকভাবে চূড়ান্ত হতে পারে;
(৩) “ডিক্রীদার” বলতে সে লােককে বুঝায়, যার স্বপক্ষে ডিক্রী দেয়া হয়েছে, বা জারি করার উপযুক্ত কোন আদেশ দেয়া হয়েছে;
(৪) “জেলা” বলতে মৌলিক এখতিয়ারসম্পন্ন প্রধান দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় এলাকা বুঝায় (অতঃপর “জেলা আদালত” নামে অভিহিত); হাইকোর্ট বিভাগের সাধারণ মৌলিক দেওয়ানি এখতিয়ারের স্থানীয় এলাকাও এটির অন্তর্ভূক্ত।
(৫) “বিদেশি আদালত” বলতে এমন আদালত বুঝায়, যা বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত, বাংলাদেশে যার কোন কর্তৃত্ব নাই এবং যা সরকার স্থাপন করে নাই বা বহাল রাখেন নাই;
(৬) “বিদেশি রায়” বলতে বিদেশি আদালতের রায়কে বুঝাবে;
(৭) “সরকারি উকিল” বলতে এই আইনে সরকারি উকিলের জন্য সুস্পষ্টরূপে উল্লেখিত সমস্ত বা যে কোন কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে সরকার দ্বারা নিযুক্ত অফিসার বুঝায়; সরকারি উকিলের নির্দেশ মােতাবেক কার্যরত অপর কোন উকিলও এটির অন্তর্ভূক্ত।
(৮) “বিচারক বা জজ” বলতে দেওয়ানি আদালতের মূল কর্মকর্তাকে বুঝায়;
(৯) “রায়” বলতে ডিক্রী বা আদেশের ভিত্তি হিসাবে বিচারক যে বর্ণনা দেন, তা বুঝায়;
(১০) “দায়িক” বলতে সে লােককে বুঝায়, যার বিরুদ্ধে ডিক্রী দেয়া হয়েছে, বা জারি করার উপযুক্ত কোন আদেশ দেয়া হয়েছে;
(১১) “বৈধ প্রতিনিধি” বলতে সে লােককে বুঝায়, যে লােক আইনগত মৃত লােকের সম্পত্তির প্রতিনিধিত্ব করেন; যে লােক মৃত লােকের সম্পত্তির পরিচালনা করেন এবং যে লােক প্রতিনিধি হিসাবে মামলা করেন বা প্রতিনিধি হিসাবে যার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, তার মৃত্যুর পর যে লােকের উপর সম্পত্তি বর্তায়, তিনিও ইহার আওতাধীন।
(১২) “অন্তবর্তীকালীন মুনাফা” বলতে বে-আইনি দখলকার লােক উক্তরূপে দখলকৃত সম্পত্তি হতে কার্যত যে মুনাফা লাভ করেছে, বা সাধারণ বুদ্ধিমত্তায় যে মুনাফা লাভ করতে পারিত, সুদসমেত উক্ত মুনাফাকে বুঝায়; কিন্তু বে-আইনি দখলকার লােক সম্পত্তির কোনরূপ উন্নতি সাধন করে থাকলে এবং সে উন্নতির ফলে কোন মুনাফা হয়ে থাকলে তা ইহার আওতাভুক্ত হবে না;
(১৩) “অস্থাবর সম্পত্তি উৎপন্ন ফসলকে অন্তর্ভুক্ত করে;
(১৪) “আদেশ” বলতে কোন দেওয়ানি আদালতের এমন কোন সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ বুঝায়, যা ডিক্রী নয়;
(১৫) “উকিল” বলতে এমন লােককে বুঝায়, যে লােক অপরের পক্ষে আদালতে উপস্থিত হওয়ার ও যুক্তিতর্ক পেশ করার অধিকারী;
(১৬) “নির্ধারিত বলতে নিয়ম মােতাবেক নির্ধারিত করাকে বুঝায়;
(১৭) “সরকারি কর্মকর্তা” বলতে নিম্নলিখিত যে-কোন বিবরণের লােককে বুঝায়
(ক) প্রত্যেক জজ বা বিচারক;
(খ) গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্রের বেসামরিক চাকরিরত প্রত্যেক সদস্য;
(গ) রাষ্ট্রীয় চাকরিতে নিয়ােজিত বাংলাদেশ এর সামরিক, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রত্যেক কমিশনপ্রাপ্ত বা গেজেটেড অফিসার;
(ঘ) আদালতের এমন কোন কর্মকর্তা, যার কর্তব্য হচ্ছে আইন বা ঘটনাসংক্রান্ত কোন বিষয়ে তদন্ত বা রিপাের্ট করা, বা কোন দলিল প্রণয়ন করা, সহিমােহর বা সংরক্ষণ করা বা কোন সম্পত্তির দায়িত্ব গ্রহণ বা হস্তান্তর করা বা কোন বিচারসম্বন্ধীয় পরােয়ানা জারি করা বা কোন শপথ গ্রহণ করানাে বা কিছু ব্যাখ্যা করা বা আদালতের শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং এই সমস্ত কর্তব্যের যে কোনটি সম্পাদনের জন্য আদালত দ্বারা বিশেষরূপে অনুমােদিত কোন লােক;
(ঙ) এমন প্রত্যেক লােক, যে লােক তার পদাধিকারবলে কোন লােককে আটক করতে বা রাখিতে পারেন;
(চ) এমন প্রত্যেক কর্মকর্তা, যার কর্তব্য হচ্ছে সরকারের পক্ষে কোন সম্পত্তি গ্রহণ, সংরক্ষণ বা ব্যয় করা, বা সরকারের পক্ষে কোন জরিপ, হিসাব বা চুক্তি করা, বা সরকারের অর্থনৈতিক স্বার্থ বিষয়ক যে কোন বিষয়ে কোন রাজস্ব পদ্ধতি নির্বাহ করা বা তদন্ত করা, বা প্রতিবেদন দাখিল করা বা সরকারের আর্থিক স্বার্থ বিষয়ক যে কোন দলিল প্রস্তুত, প্রমাণ করা, রক্ষণাবেক্ষণ করা, বা সরকারের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার্থে কোন আইনের লংঘনকে প্রতিরােধ করা; এবং
(ছ) কোন সরকারি কর্তব্য সম্পাদনের জন্য নিযুক্ত প্রজাতন্ত্রের সুবিধাভােগী বা বেতনভােগী প্রত্যেক কর্মচারী বা যাঁর কার্যের জন্য সরকার ফি বা কমিশন দ্বারা পুরস্কৃত করে থাকে।
(১৮) “বিধিমালা” বলতে প্রথম তফসিলে উল্লেখিত বা ১২২ বা ১২৫ ধারার আওতায় প্রণীত বিধি বা ফরমগুলাে বুঝায়;
(১৯) “কর্পোরেশনের শেয়ার” বলতে স্টক, ডিবেঞ্চার-স্টক, ঋণপত্র বা বন্ডও অন্তর্ভুক্ত হবে; এবং
| (২০) “স্বাক্ষরিত” বলতে রায় বা ডিক্রী ছাড়া অপরাপর সমস্ত ক্ষেত্রে সীলমােহরকৃত কোন কিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে।
দেওয়ানী কার্যবিধি আইন ১৯০৮ এর ২ ধারার বিশ্লেষণ
বিধি কাকে বলে
আলােচ্য আইনের নাম দেওয়ানি কার্যবিধি । এই বিধি দুইটি মৌলিক অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশে আছে ধারা, আর দ্বিতীয় অংশে আছে নিয়ম বা রুল। ধারাগুলির মধ্যে মূলনীতির বর্ণনা বিদ্যমান, আর নিয়মগুলির মধ্যে সে নীতিমালার বাস্তবায়নের পদ্ধতি বিধৃত। মুল ধারাগুলি শুধুমাত্র সংসদ কর্তৃক সংশােধনযােগ্য, আর নিয়মগুলাে সুপ্রীম কোর্টের সুপারিশের দ্বারা সরকার কর্তৃক সংশােধনযােগ্য।
ডিক্রী কাকে বলে
মামলার চূড়ান্ত নির্দেশকে সাধারণত ডিক্রী বলে। ধারা ২(২) মতে, ডিক্রী বলতে আদালত দ্বারা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত সিদ্ধান্ত (Adjudication), যা মামলার বিতর্কিত বা তর্কিত সকল বা যে কোন বিষয় সম্পর্কে পক্ষসমূহের অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে। ডিক্রী দ্বারা মামলার পক্ষগণের অধিকার নির্দেশ করা হয়। সুতরাং যে আদেশ দ্বারা মামলা পক্ষগণের অধিকার নির্দেশিত হয় না, সেই আদেশকে ডিক্রী বলা যায়। মামলা শুরু করতে হলে আদালতে আরজি দাখিল করতে হয়। আরজি দাখিল হওয়ার পর বিবাদী উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দাখিল করেন। এর পরে একে একে অনেক স্তর
অতিক্রান্ত হওয়ার পর মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়। এই সকল স্তর অতিক্রান্ত হওয়ার সময় আদালত যে সব আদেশ দেন, তা ডিক্রী নয়। যে আদেশের মাধ্যমে মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এবং পক্ষগণের অধিকার নির্ধারিত হয়, তাকে ডিক্রী বলে।
ডিক্রীর ক্ষেত্রে দুটি (২) বিষয় মনে রাখতে হবে-
ক) ডিক্রী আদালত কর্তৃক প্রকাশিত একটি আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত (Formal expression of an adjudication)
খ) ডিক্রী মামলার বিতর্কিত সকল বা যে কোন বিষয় সম্পর্কে পক্ষগুলাের অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে (To determine the Rights of the Parties Conclusively)।
ডিক্রীর উদাহরণ-
“ক” একটি জমি বিক্রয় চুক্তি করে “খ” এর সাথে। পরবর্তীতে “ক” উক্ত চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য “খ” এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বিচারকাজ শেষে আদালত সিদ্ধান্ত দেয় যে, “খ”, “ক” কে বিক্রয় চুক্তি অনুযায়ী জমিটি অর্পন করবে। আদালত কর্তৃক প্রদত্ত এরুপ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে ডিক্রী বলে।
নিম্নের দুইটি সিদ্ধান্ত ডিক্রী বলে বিবেচিত হবে
ক) আরজি প্রত্যাখান বা খারিজ বা নাকচের (Rejection of Plaint) আদেশ।
আদালত নিম্নেবর্ণিত ৪টি কারনে আরজি নাকচ করবেন [আদেশ ৭ এর বিধি ১১]
১। আরজিতে মামলার কারন উল্লেখ না থাকলে।
২। আরজিতে দাবিকৃত প্রতিকারের মূল্য কম উল্লেখ করা হলে এবং আদালতের নির্দেশ দেয়ার পরও বাদী যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সঠিক মূল্য লিখতে ব্যর্থ হলে।
৩। প্রয়ােজন অপেক্ষা কম মূল্যের স্ট্যাম্পযুক্ত কাগজে আরজি লিখলে এবং আদালত নির্দেশ প্রদানের পরও বাদী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়ােজনীয় স্টাম্প পেপার সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে।
৪। মামলাটি যদি আইন অনুসারে নিষিদ্ধ বা বারিত হয় (Barred by any law)।
আদালত উপরিউক্ত চারটি (৪টি) কারনে আরজি নাকচের আদেশ প্রদান করলে, উক্ত আদেশকে ডিক্রী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
খ) ১৪৪ ধারার অধীনে Restitution (প্রত্যর্পণ) বিষয়ে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন সিদ্ধান্ত-
প্রত্যার্পণ শব্দটির অর্থ হচ্ছে কোন সুবিধা প্রকৃত মালিককে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া। যদি কোন ডিক্রী বা আদেশ পরিবর্তন বা রদ করা হয় এবং পূর্বের ভুল ডিক্রী বা আদেশের দ্বারা (যার পক্ষে ডিক্রী বা আদেশ পরিবর্তন বা রদ করা হয়) ঐ পক্ষ কোন সুবিধা পাবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, তিনি তা ফিরে পাবার জন্য প্রত্যার্পনের দরখাস্ত করতে পারেন। যদি আদালত প্রত্যর্পণের আদেশ প্রদান করেন, তাহলে উক্ত আদেশ দেওয়ানি কার্যবিধির ২(২) ধারা অনুসারে ডিক্রী হিসেবে বিবেচিত হবে।
নিম্নের দুইটি সিদ্ধান্ত ডিক্রী বলে বিবেচিত হবে না-
ক) এমন বিচারিক সিদ্ধান্ত (Adjudication) যার বিরুদ্ধে আদেশ হিসেবে আপিল করা যায়। সুতরাং আপিলযােগ্য আদেশ (Appealable order) ডিক্রী নয় । আপিলযােগ্য আদশের তালিকা দেওয়া আছে আদেশ ৪৩ এ।
খ) আদালতের নির্দেশ পালনের ব্যর্থতার জন্য কোন মামলা খারিজের আদেশ ডিক্রী নয়। [Any order of dismissal for default is not a decree] [আদেশ ৯, বিধি ২,৩,৮; আদেশ ৪১, বিধি ১১(২), ১৭,১৮]
ডিক্রীর প্রকারভেদ-
১। প্রাথমিক ডিক্রী (Preliminary Decree)
ডিক্রী তখনই প্রাথমিক হয়, যখন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আরও ব্যবস্থা গ্রহনের প্রয়ােজন থাকে। [আদেশ ২০, বিধি ১২-১৮, আদেশ ৩৪, বিধি ২-৮]
২। চূড়ান্ত ডিক্রী (Final Decree)
মামলা যখন চূড়ান্তরূপে নিষ্পত্তি হয়, তখন তাকে চূড়ান্ত ডিক্রী বলে। [আদেশ ২০, বিধি ১০-১১)
এছাড়াও ডিক্রী আংশিকভাবে প্রাথমিক ও আংশিকভাবে চূড়ান্ত হতে পারে। [আদেশ ২০ বিধি ১৮]। ডিক্রী আংশিক প্রাথমিক এবং আংশিক চূড়ান্ত হতে পারে, যেমন- মীনস্ প্রফিট সহ স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধারের মামলায় আদালত-
(ক) স্থাবর সম্পত্তি দখলের ডিক্রী প্রদান করে থাকে, এবং
(খ) একই সাথে মীনস্ প্রফিট সম্পর্কে অনুসন্ধান করার নির্দেশও দিয়ে থাকে।
প্রথমােক্ত ডিক্রীটি চূড়ান্ত ডিক্রী হলেও দ্বিতীয় ডিক্রীটি শুধুমাত্র প্রাথমিক ডিক্রী,কারন, কেবলমাত্র অনুসন্ধান করার এবং প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ ধার্য হওয়ার পরে মীনস্ প্রফিটের জন্য চূড়ায় ডিক্রী দেওয়া যাবে। এরুপ ক্ষেত্রে ডিক্রী একটা হলেও উহার অংশ দুটো একটা আংশিক প্রাথমিক এবং অন্যটি আংশিক চূড়ান্ত।
ডিক্রীদার কাকে বলে
ডিক্রীদার বলতে যার অনুকূলে ডিক্রী প্রদান করা হয় তাকে বুঝায়। ডিক্রীদারের এই সংজ্ঞা ১৮৮২ সনের সনের দেওয়ানি কার্যবিধিতে ডিক্রীর হস্তান্তরীতাকে বাদ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ১৪৬ ধারার অধীনে ডিক্রীর হস্তান্তর গ্রহীতাকে সর্বক্ষেত্রে ডিক্রীদারের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
জিলা আদালত কাকে বলে
জিলা আদালত বলতে আদিম এখতিয়ার-সম্পন্ন প্রধান দেওয়ানি আদালতকে বুঝায়।
বিদেশি আদালত কাকে বলে
রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্ববিষয়ে একচ্ছত্র স্বাধীনতা কাম্য নয়। যেমন বিচার কার্যের ক্ষেত্রে বিদেশি আদালতের সিদ্ধান্ত সদৃশ ক্ষেত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। কোন রাষ্ট্র উপনিবেশ হিসেবে থেকেও উহার আদালত বিদেশি আদালত হিসেবে গণ্য হতে পারে যদি কিনা ঐ আদালতের স্বাধীন দেওয়ানি, ফৌজদারি ও রাজস্ব এখতিয়ার থাকে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এই সাম্রাজ্যের দুইটি প্রদেশ পরস্পরের নিকট বিদেশি আদালত হতে পারে।
বিদেশি রায় কাকে বলে
বিদেশি আদালতের রায়ের সংজ্ঞা দেওয়ানি কার্যবিধির দ্বারা পরিচালিত নয়। এখানে রায় শব্দটি ইংলিশ আইনে যেভাবে সংজ্ঞায়িত হয়েছে সেভাবে বুঝতে হবে, এই আইনের ২(৯) ধারার অধীন নয়।
সরকারি উকিল কাকে বলে
সরকারি উকিলের নির্দেশে কোন উকিল সরকারি উকিলের প্রতিনিধিত্ব করলেও তিনি এই ধারার অধীন সরকারি উকিল বলেই গণ্য হবেন। সরকারি উকিল ছাড়া অন্য কোন উকিল সরকার বা কোন সরকারি অফিসারের পক্ষে কাজ করলে তিনি ৩নং আদেশে নির্দেশিত কোন প্রকার অনুমতিপত্র দাখিল ব্যতীত, যদি তিনি সরকারি উকিল দ্বারা প্রতিনিধি প্রাপ্ত হয়ে থাকেন, এরূপ করতে পারবেন। তবে শর্ত হলাে যে এই বিষয়টি পূর্বেই সরকারি উকিলকে আদালতে জানিয়ে দিতে হবে।
বিচারক বা জজ কাকে বলে
আদালত বলতে বিচার কার্য পরিচালনার জন্য নির্ধারিত স্থানকে বুঝায় আর বিচারক বা জজ হচ্ছেন ঐ আদালতের মূল কর্মকর্তা।
রায় (Judgment) কাকে বলে, ধারা ২(৯)
ডিক্রী বা আদেশের ভিত্তিকেই অর্থাৎ যে ভিত্তির উপর নির্ভর করে ডিক্রী বা আদেশ প্রদান করা হয় তাকেই রায় বলে। ধারা ২(৯) অনুসারে, যে যুক্তির উপর নির্ভর করে ডিক্রী বা আদেশ প্রদান করা হয়, তাকে রায় (Judgment) বলে। দেওয়ানি কার্যবিধির ৩৩ ধারা মতে, মামলা শুনানীর পর, আদালত রায় ঘােষণা এবং এরুপ রায়ের উপর ভিত্তি করে ডিক্রী প্রদান করবেন। অর্থাৎ আদালত প্রথমে রায় ঘােষণা করবেন এবং উক্ত রায়ের উপর ভিত্তি করে ডিক্রী প্রদান করবেন। মামলার শুনানী সমাপ্ত হবার পর আদালত তৎক্ষণাৎ (at (once) রায় প্ৰদান করবে অথবা পরবর্তী কোন তারিখে, যা ৭ দিনের বেশি হবে না, মামলার রায় প্রদান করবে। বিধি-১, আদেশ-২০)।
সাব্যস্ত দেনাদার কাকে বলে
মৃত সাব্যস্ত দেনাদারের বৈধ প্রতিনিধিকে সাব্যস্ত দেনাদার বলা যায় না। মামলার পক্ষ অথচ যার বিরুদ্ধে ডিক্রী প্রদান করা হয় নাই এমন ব্যক্তিকে সাব্যস্ত দেনাদার বলা যায় না। যদিও তাকে মামলার বিচার করা হয়েছিল।
বৈধ প্রতিনিধি কাকে বলে
বৈধ প্রতিনিধি শব্দটি কেবলমাত্র এই বিধির জন্য সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, আইনের কোন মৌলিক নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। একজন বেনামীদার কোন কোন প্রকৃত মালিকের আছি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এবং তার পুত্র যদি তাতে কিছু স্বার্থ বর্তমান থাকে তা হলে ঐ অছিয়তনমা দাবি করতে পারে ও এরূপ ক্ষেত্রে পুত্রকে বেনামীদারের বৈধ প্রতিনিধি বলা যায়।
অন্তবর্তীকালীন মুনাফা কাকে বলে
বে-আইনিভাবে দখলকৃত সম্পত্তি থেকে দখলদার ব্যক্তি স্বাভাবিক নিয়মে যে মুনাফা (profit) গ্রহণ করেছে অথবা সাধারণ বুদ্ধিমত্তায় যে মুনাফা লাভ করতে পারত, সুদসহ উক্ত মুনাফা কে অন্তর্বর্তীকালীন মুনাফা বা Mesne Profit বলে। অন্তর্বর্তীকালীন মুনাফা বলতে ঐ ধরনের মুনাফাকে বুঝায় যা বাদীর প্রাপ্য ছিল কিন্তু বিবাদী তা বাদীকে প্রদান করে নাই। বাদীকে অন্তবর্তীকালীন মুনাফার ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রমান করতে হবে বিবাদী সম্পত্তিতে বেআইনিভাবে বা অন্যায়ভাবে দখলে রেখেছিল। অন্তর্বর্তীকালীন মুনাফায়
অর্জনযােগ্য সব ধরনের সুদকেও অন্তর্ভুক্ত করে। তবে এই সুদ আদায়ের কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। ধারা ৩৪ এর অধীনে আদালত তার ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোন হারে ঐ সুদ প্রদানের নির্দেশ প্রদান করতে পারেন।
অন্তবর্তীকালীন মুনাফার উদাহরণ
রহিম বেআইনিভাবে করিমের জমি ১০ বছর ধরে দখল করে রেখেছে। উক্ত জমিতে কিছু আম গাছ গড়ে ওঠে এবং রহিম আমের মৌসুমে ৫০,০০০ টাকার আম বিক্রয় করে। উক্ত ৫০,০০০ টাকা এবং সুদসহ তার মুনাফাকে Mesne Profit বলা হবে।
কোনটি মীনস প্রফিট নয়
বেআইনিভাবে দখলকার ব্যক্তি যদি দখলকৃত সম্পত্তির উন্নয়ন করে কোন মুনাফা অর্জন করে, তাহলে তা Mesne profit হিসেবে বিবেচিত হবে না। অকৃষি প্রজাস্বত্ব আইনের ৬৪ ধারা মতে উন্নয়ন (Improvement) বলতে এমন কার্য কে বুঝাবে, যা জমির মূল্য বৃদ্ধি করে এবং জমি ব্যবহার উপযােগী করে তোলে।
অস্থাবর সম্পত্তি কাকে বলে
দেওয়ানি কার্যবিধির ১৯০৮ সালের ২(১৩) ধারা মতে অস্থাবর সম্পত্তি বাড়ন্ত ফসলকে অন্তর্ভুক্ত করে। কর্তনযােগ্য ও অপসারণ যােগ্য বাড়ন্ত ফসল এই ধারার অধীনেঅস্থাবর সম্পত্তির অন্তর্ভূক্ত। দন্ডবিধির ২২ ধারা অনুসারে অস্থাবর অর্থে ভূমি ও ভূমির সাথে যুক্ত বা ভূমির সাথে স্থায়ীভাবে আবদ্ধ (Parmanently Fastened) বস্তু ছাড়া যে কোন বর্ণনার বস্তুগত সম্পত্তি (Corporeal Property) বুঝাবে। কিন্তু General Cluses Act 1897 এর ধারা ৩(৩৪) এবং Registration Act 1908 এর ধারা ২(৯) মতে অস্থাবর সম্পত্তি বলতে স্থাবর সম্পত্তি ব্যতীত যে কোন বর্ণনার সম্পত্তিকে বুঝায়।
আদেশ কাকে বলে
আদেশ বলতে কোন দেওয়ানি আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত, যা ডিক্রী নয়। মামলা চলাকালীন সময় আদালত যে সব সিদ্ধান্ত দেন, তা আদেশ । ছানি মামলা (Mis.case) এর সিদ্ধান্তকে আদেশ বলে। রায়ের পূর্বে সম্পত্তি আটকের সিদ্ধান্তও হচ্ছে একটি আদেশ।
আদেশের উদাহরণ
একটি নির্দিষ্ট তারিখে একটি মামলার শুনানীর দিন নির্ধারন করা হল। কিন্তু উক্ত তারিখে বাদী হাজির না হওয়ার কারনে আদালত মামলাটি খারিজ করার আদেশ প্রদান করেন। আদালতের এই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে একটি আদেশ।
রায়, ডিক্রী এবং আদেশ (Decree & Order) এর মধ্যে পার্থক্য
১। ডিক্রী মামলার পক্ষসমূহের অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে। তবে আদেশ মামলার পক্ষসমূহর অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করতেও পারে আবার নাও করতে পারে।
২। ডিক্রী এবং আদেশ উভয় দেওয়ানি আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত।
৩! প্রত্যেক ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে, যদিনা আইনগত বিধি নিষেধ থাকে। ধারা ৯৬ (১)। তবে সাধারণত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল চলবে না, যদি না তা ধারা ১০৪ এবং ৪৩ আদেশ অনুসারে আপিলযােগ্য হয়।
৪। যে যুক্তির উপর নির্ভর করে ডিক্রী বা আদেশ প্রদান করা হয়, তাকে রায় (Judgment) বলে।
সরকারি কর্মকর্তা কাকে বলে
দেওয়ানি কার্যবিধির সরকারি কর্মকর্তা ধারণাটি দণ্ডবিধির পাবলিক সার্ভেন্ট সমার্থক। তবে একজন ব্যক্তি হয়েও সরকারি কর্মকর্তা নাও হতে পারে; যেমন পৌর কমিশনার বা প্রকৌশলী। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে তার নির্ধারিত কাজের বাইরে অন্য কোন কাজের প্রতিনিধিত্ব দেওয়া হলেও সরকারি কর্মকর্তার মর্যাদা নষ্ট হয় না। তবে তিনি অবসর প্রাপ্ত বা অন্য কোন কারণে তার যোগ্যতা হারালে তিনি আর সরকারি কর্মকর্তা থাকবেন না।