Skip to main content

HSC English First Paper English For Today - Unit 7 Lesson 1 Brojen Das

এডভোকেটশীপ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা দন্ডবিধি

Penal Code 1860

এডভোকেটশীপ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি

 MCQ মৌখিক ভাইভা প্রশ্ন উত্তর - দণ্ডবিধি, ১৮৬০

এক নজরে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ 

১৮৩৪ সালে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম আইন কমিশন (Law commission) গঠিত হয়। থমাস ব্যবিংটন ম্যাকলে (Lord Macawlay) ছিলেন প্রথম ল কমিশনের চেয়ারম্যান। প্রথম আইন কমিশনকে দণ্ডবিধি আইনের খসড়া (Draft) প্রণয়ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ল' কমিশনের তৈরিকৃত খসড়াটি ১৮৬০ সালের এই ৬ই অক্টোবর আইনে পরিণত হয় এবং ১৮৬২ সালের ১লা জানুয়ারি Indian Penal Code নামে আইনটি কার্যকর হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান এই দুই রাষ্ট্র বিভক্ত হওয়ার পরও দণ্ডবিধি আইনটি কার্যকর থাকে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের সৃষ্টির পর ১৯৭২ সালের ২২শে মে জারিকৃত প্রেসিডেন্টের ৪৮নং জরুরি আদেশ বলে পাকিস্তান আমলে চালু দণ্ডবিধি বহাল রাখা হয়। দণ্ডবিধি মূলত একটি মূল আইন (Substantive Law) যা বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সংজ্ঞা ও শাস্তির পরিমাণ নিয়ে আলােচনা করে। 

পেনাল কোড বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ 

প্রথম আইন কমিশন গঠিত হয়-১৮৩৪ সালে প্রথম আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন-- -লর্ড ম্যাকুলি
 দণ্ডবিধি কত নং আইন-১৮৬০ সালের ৪৫নং আইন দণ্ডবিধি একটি-মৌলিক আইন/মূল আইন
মােট ধারা----৫১১টি
সর্বশেষ সংশােধন - ২০০৪ সালে
দণ্ডবিধি কার্যকর হয়-১৮৬২ সালের ১লা জানুয়ারি

দণ্ডবিধি প্রণীত হয়---১৮৬০ সালের ৬ অক্টোবর

দণ্ডবিধি সম্পর্কিত সাধারণ আলােচনা

অপরাধ বা Crime কাকে বলে

সাধারণত অপরাধ বলতে এমন ক্ষতিকর কার্যসংঘটন বুঝায়, যা শুধুমাত্র ব্যক্তি বিশেষের জন্যই ক্ষতিকর নয় - একই সাথে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্যও তা হুকমিস্বরুপ। দণ্ডবিধির ৪০ ধারা অনুসারে শাস্তিযােগ্য কোন কাজ বা বিষয়কে অপরাধ বলে। 

অপরাধের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসমূহ

 দুষ্টমন (Mens rea/Guilty Mind): দুষ্টমন বলতে বুঝাবে দোষযুক্ত মন। অপরাধীর কোন অপরাধ করার সময় তার মনের মধ্যে অপরাধ প্রবনতা বা দোষযুক্ত মন থাকবে। Guilty Mind নির্দেশ করে Mens Rea কে।

Actus Rea কি

শুধু দোষযুক্ত মন থাকলেই হবে না, দোষযুক্ত মন অনুসারে অপরাধটি সংঘটিত হবে।


অভিপ্রায় (Intention) এবং অভিসন্ধি (Motive ) কাকে বলে

কিছু অভুক্ত ব্যক্তির খাওয়ানাের জন্য যদি কেউ একটি দোকান থেকে রুটি চুরি করে, সেক্ষেত্রে অভুক্ত ব্যক্তিদের খাওয়ানাে হচ্ছে তার অভিসন্ধি বা Motive কিন্তু খাবার চুরি করা হচ্ছে অভিপ্রায় বা Intention।

সাধারণ ব্যাখ্যা General Interpretation Panel Code

জজ (Judge) কাকে বলে- ধারা-১৯

১। যিনি দেওয়ানি বা ফৌজদারি কার্যবিধি বলে আইনগত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত বা

২। আপিল না করলে যার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে, এরুপ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ দ্বারা বহাল হলে চূড়ান্ত হবে, এমন সিদ্ধান্ত প্রদান করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিই হচ্ছেন জজ।

সরকারি কর্মচারি (Public Servant) কাকে বলে

দণ্ডবিধির ২১ ধারায় সরকারি কর্মচারীর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে-

১। বাংলাদেশের সামরিক, নৌ বা বিমান বাহিনী প্রত্যেক কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
২। প্রত্যেক জজ
৩। বিচারলয়ের যেসব কর্মকর্তা আইন বা তথ্য বিষয়ে তদন্ত করে বা প্রতিবেদন প্রদান করে বা দলির প্রণয়ন ও সংরক্ষণ করে বা সম্পত্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করে।
৪। কোন বিচারালয় অথবা সরকারি কর্মচারীকে সহায়তা দানকারী প্রত্যেক জুরী, এ্যাসেসর বা পঞ্চায়েতের সদস্য।
৫। সরকারি কর্তৃপক্ষ বা বিচারলয় কোন সমস্যা বা ঘটনা যে সালিশদার বা অন্যকোন ব্যক্তির নিকট পাঠায়, উক্ত ব্যক্তিও সরকারি কর্মচারি ।
৬। যার পদাধিকার বলে কাউকে আটক করার বা রাখার ক্ষমতা আছে।
৭। এরুপ সরকারি কর্মকর্তা যার দায়িত্ব অপরাধ দমন করা, অপরাধসমূহ নির্ধারণ করা এবং অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্যাদি প্রদান ও বিচারের ব্যবস্থা করা।
৮। যিনি সরকারের পক্ষে যেকোন জরিপ কাজ বা চুক্তি সম্পাদন বা রাজস্ব প্রক্রিয়া কার্যকর বা কোন সম্পত্তি গ্রহণ ও সংরক্ষণ করেন।
৯। এমন কর্মচারি যার উপর গ্রাম বা শহর বা জেলার সম্পত্তি গ্রহণ করা, জরিপ করা, সংরক্ষণ করার দলিল প্রণয়ন করার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
১০। যিনি ভােটার তালিকা, প্রস্তুত, প্রকাশ, সংরক্ষণ বা সংশােধন বা নির্বাচন করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
১১। প্রত্যেক ব্যক্তি যিনি নিযুক্ত আছেন:
ক) সরকারি চাকুরিতে
খ) কর্পোরেশন আইন বলে স্থাপিত সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ বা ফার্ম বা কোম্পানি যার মূলধনে বা শেয়ারে সরকারের অধিকার আছে।

অস্থাবর সম্পত্তি Movable Property কাকে বলে - ধারা ২২

ভূমি ও ভূমির সাথে আবদ্ধ নয় এমন যেকোন বর্ণনার বস্তুগত সম্পত্তি কে অস্থাবর সম্পত্তি বলে। অর্থাৎ ভূমির সাথে সংযুক্ত কোন বস্তু অস্থাবর সম্পত্তি নয় ।

অবৈধ অর্জন (Wrongful Gain) কাকে বলে - ধারা ২৩

আইনগতভাবে অধিকারী নয়, এমন সম্পত্তি বেআইনিভাবে অর্জন করাকে অবৈধ অর্জন বলে।

অবৈধ ক্ষতি Wrongful loss কাকে বলে

অবৈধ ক্ষতি হচ্ছে বেআইনীভাবে এরুপ সম্পত্তির ক্ষতি করা, যার উপর ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির আইনগত অধিকার ছিল।

অবৈধভাবে অর্জন করা (Gainning wrongfully) কাকে বলে

যে ব্যক্তি কোন সম্পত্তি অবৈধভাবে নিজের তত্ত্বাবধানে রাখে এবং তা অবৈধভাবে অর্জন করে তাকে বলা হবে অবৈধভাবে অর্জন কারি।

অবৈধভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া (Losing wrongfully) কাকে বলে

যে ব্যক্তিকে অবৈধভাবে কোন সম্পত্তি থেকে বেদখলে রাখা হয় ও অবৈধভাবে সম্পত্তিচ্যুত করা হয়, তাকে বলা হয় অবৈধভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি।

অসাধুভাবে Dishonestly কাকে বলে - ধারা ২৪

অন্যায়ভাবে এক ব্যক্তিকে অবৈধ অর্জন এবং অপর ব্যক্তিকে ক্ষতিগ্রস্থ করার উদ্দেশ্যে যে কাজ করা হয়, সেই কাজ অসাধুভাবে করা হয়েছে বলে গণ্য হয়।

প্রতারণামূলকভাবে (Fraudulently) কাকে বলে - ধারা-২৫

প্রতারণা করার উদ্দেশ্য বা অভিপ্রায় নিয়ে কেউ কোন কাজ করলে বলা হয়, তিনি প্রতারণামূলকভাবে উক্ত কাজ করেছেন। প্রতারণার সংজ্ঞা দেওয়া আছে চুক্তি আইনের ১৭ ধারায়।

নকল বা জাল করা(Counterfeit) কাকে বলে - ধারা ২৮

কোন ব্যক্তি প্রতারণার উদ্দেশ্যে বা প্রতারণা করা হতে পারে জেনে একটি বস্তুর সাদৃশ অপর কোন বস্তু তৈরি করলে বলা হবে ঐ ব্যক্তি নকল করে। নকল অবিকল হওয়া বাধ্যকর নয়।

দলিল(Document) কাকে বলে - ধারা ২৯

কোন বস্তুর উপর কোন অক্ষর, সংখ্যা বা চিহ্নের সাহায্যে বর্ণিত কোন বিষয়কে দলিল বলে যা প্রস্তুত করা হয় সাক্ষ্য বা প্রমাণে ব্যবহার করার জন্য। উদাহরণ: চুক্তিপত্র, চেক, আমমােক্তারনামা, ম্যাপ বা পরিকল্পনার নথিপত্র যা সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহার করা হবে তা দলিল।

মূল্যবান জামানত (Valuable Security) কাকে বলে - ধারা ৩০

মূল্যবান জামানত হচ্ছে এমন দলিল যা দ্বারা কারাের অধিকার প্রতিষ্ঠা বা বিলুপ্ত হয়। উদাহরণ: Bill of Exchange (হুন্ডি) একটি মূল্যবান জামানত।

অপরাধ (Offence) কাকে বলে - ধারা ৪০

শাস্তিযােগ্য যেকোন কাজই অপরাধ ।

ক্ষতি (Injury) কাকে বলে - ধারা ৪৪

ক্ষতি বলতে বুঝায় যেকোন ব্যক্তির দেহ, মন, সুনাম বা সম্পত্তির প্রতি অবৈধভাবে কৃত যেকোন অনিষ্টকর কাজ।

জীবন (Life) কাকে বলে - ধারা-৪৫

জীবন বলতে মানুষের জীবন বুঝাবে।

প্রাণী কাকে বলে - ধারা ৪৭

প্রাণী বলতে মানুষ ব্যতিরেকে যে কোন জীবন সৃষ্টি বুঝাবে।

জাহাজ (Ship) কাকে বলে - ধারা ৪৮

জাহাজ অর্থ জলপথে মানুষ বা সম্পত্তি পরিবহনের জন্য প্রস্তুত যে কোন যান।


বৎসর, মাস ( Year, Month) কাকে বলে - ধারা ৪৯

বৎসর শব্দ বা মাস শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে উক্ত বৎসর বা মাসের ইংরেজী পঞ্জিকা অনুযায়ী হিসাবে করা হয় বলে ধরে নিতে হবে।

সদ বিশ্বাস (Good faiths) কাকে বলে - ধারা ৫২

যথাযথ সর্তকতা ও মনােযােগ দিয়ে কোন কাজ করলে সদ বিশ্বাসে করা হয়েছে বলে গণ্য হবে।

যৌথ দায় (Joint Liability) কাকে বলে - ধারা ৩৪, ৩৫ ৩৭ ও ৩৮

সাধারণ অভিপ্রায় (Common Intention) কাকে বলে - ধারা ৩৪

একের অধিক ব্যক্তি একই অভিপ্রায় নিয়ে অপরাধ করলে তাদের অপরাধ সংঘটিত করার সাধারণ অভিপ্রায় ছিল বলে ধরা হবে। সাধারণ অভিপ্রায় সম্পাদনে একের অধিক ব্যক্তি কোন অপরাধ সংঘটিত করে, সেক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেকে ঐ অপরাধের জন্য যৌথভাবে দায়ি হবে। 

৩৪ ধারা প্রয়ােগের শর্তসমূহ:
১। অপরাধটি অবশ্যই সংঘটিত হতে হবে।
২। একাধিক ব্যক্তি মিলে অপরাধটি সংঘটিত করতে হবে এবং তাদের মধ্যে একই অভিপ্রায় থাকতে হবে।
৩। অপরাধ সংঘটনে আসামিদের মধ্যে একটি পূর্ব পরিকল্পনা থাকতে হবে।

অপরাধমূলক জ্ঞান বা অভিপ্রায় নিয়ে অপরাধ। ধারা - ৩৫

যখন একের অধিক কোন ব্যক্তি কোন কাজ অপরাধজনক জ্ঞান বা অভিপ্রায় নিয়ে সম্পাদন করে তখন তারা যৌথভাবে দায়ী হবে। ৩৫ ধারায় অপরাধজনক জ্ঞান ও অভিপ্রায়কে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যখন কতিপয় ব্যক্তি এমন কাজে যােগদান করে, যা ঐ কাজ সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান থাকার কারনে অপরাধ বলে বিবেচিত হয়, তখন ৩৫ ধারা প্রযােজ্য হয়।

একাধিক কাজের মধ্যে একটি সম্পাদন করে অপরাধে সহযােগিতা করা। ধারা ৩৭

যেক্ষেত্রে কতিপয় কাজের দ্বারা অপরাধ সংঘটিত হয়, তখন উক্ত কতিপয় কাজের যেকোন একটি সম্পাদন করে উক্ত অপরাধটি সংঘটনে সহযােগিতা করে তখন অন্য অপরাধীদের সাথে সেই ব্যক্তিও সমানভাবে দায়ী হবেন।

অপরাধমূলক কাজে জড়িত ব্যক্তি বিভিন্ন অপরাধে দোষী হতে পারে। ধারা ৩৮

যেক্ষেত্রে একের অধিক ব্যক্তি কোন অপরাধমূলক কাজ সংঘটনে নিয়ােজিত বা জড়িত হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তারা উক্ত কাজের মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধের দোষী সাব্যস্ত হতে পারে। এই ধারাটি ৩৪ ধারার বতিক্রম।

যৌথভাবে দায়ি হবার ৪টি কারন

১। অভিন্ন/সাধারণ অভিপ্রায় নিয়ে অপরাধ সংঘটিত করলে। ধারা ৩৪
২। অপরাধমূলক জ্ঞান বা অভিপ্রায় নিয়ে অপরাধ সংঘটিত করলে। ধারা ৩৫
৩। একাধিক কাজের মধ্যে যেকোন একটি কাজ সম্পাদনে সহযােগিতা করে অপরাধ সংঘটিত করলে। ধারা ৩৭
৪। অপরাধমূলক কাজে জড়িত ব্যক্তিগণ। ধারা ৩৮

শাস্তিসমূহ (Punishments) ধারা ৫৩-৭৫

দণ্ডকে সাধারণ ভাষায় শান্তি বলে। শাস্তি হচ্ছে ক্লেশ বা কষ্ট। শাস্তি শারিরিক বা আর্থিক হতে পারে। যখন কোন নাগরিক বা দেশের বসবাসকারি অন্য কোন দেশের নাগরিক দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেন, তখন রাষ্ট্র তাকে শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেন। অর্থাৎ রাষ্ট্র যে আইন প্রণয়ন করেন তা ভঙ্গ করা অপরাধ। আর অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হয়।

শাস্তিসমূহর প্রকারভেদ। ধারা ৫৩

শাস্তিমূলত ২ ধরনের। 
(১) শারিরিক,
(২) আর্থিক

দণ্ডবিধিতে ৫ প্রকারের শাস্তির কথা উল্লেখ আছে।

১। মৃত্যুদণ্ড
২। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
৩। কারাদণ্ড
৪। সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত
৫। অর্থদণ্ড

সরকার এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক দণ্ডাদেশ হ্রাস

১। সরকার অপরাধীর সম্মতি ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড হ্রাস করে যেকোন দন্ডির রূপান্তর করতে পারে। ধারা ৫৪
২। সরকার অপরাধীর সম্মতি ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কমিয়ে অনধিক বিশ বছর মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন। ধারা ৫৫
৩। ৫৪ এবং ৫৫ ধারার কোন কিছুই রাষ্ট্রপতির ক্ষমা, শাস্তি লাঘৰ, শাস্তি মওকুফের ক্ষমতাকে নষ্ট করবে না। ধারা ৫৫ক

পেনাল কোডে বর্ণিত সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ কারাদণ্ডের মেয়াদ

১। পেনাল কোডে বর্ণিত অপরাধগুলির মধ্যে সর্বনিম্ন সাজা ৫১০ ধারানুসারে প্রকাশ্যে মাতাল ব্যক্তির অশােভন আচরণের জন্য, অনূর্ধ্ব ২৪ ঘন্টা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।
২। পেনাল কোডে বর্ণিত অপরাধগুলির মধ্যে ৫৫ ধারা মতে, সর্বোচ্চ কারাদণ্ডের মেয়াদ ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।

অর্থদণ্ড (Fine)। ধারা ৬৩ থেকে ৭০ ধারা

অর্থদণ্ড কাকে বলে

শাস্তি সাধারণত শারিরিক এবং আর্থিক হয়। আর্থিক দণ্ডকে অর্থদণ্ড বা জরিমানা বলা হয়।

নির্জন কারাবাস (Solitary Confinement) কাকে বলে। ধারা ৭৩, ৭৪

নির্জন কারাবাস। ধারা ৭৩

১। নির্জন কারাবাস বলতে বুঝায় আসামিকে নির্জন আটক করে রাখা।
২। সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা যায় এমন অপরাধের ক্ষেত্রে আদালত ৭৩ ধারা বলে প্রদত্ত কারাদণ্ডের মেয়াদের যেকোন অংশ যা ৩ মাসের বেশি হবে না এমনভাবে নির্জন কারাবাসে রাখার আদেশ দিতে পারেন।
৩। আসামিকে নির্জন কারাবাস প্রদানের নিয়ম:
ক) সশ্রম কারাদণ্ড অনধিক ৬ মাস হলে নির্জন কারাবাস ১ মাসের বেশি হবে না।
খ) সশ্রম কারাদণ্ড ৬ মাসের বেশি হলে নির্জন কারাবাস ২ মাসের বেশি হবে না।
গ) সশ্রম কারাদণ্ড ১ বছরের বেশি হলে নির্জন কারাবাস ৩ মাসের বেশি হবে না।

নির্জন কারাবাস কার্যকর করার নিয়ম। ধারা ৭৪

১। নির্জন কারাবাস একটানা ১৪ দিনের বেশী হবে না।
২। নির্জন কারাবাসের পূর্বে ও পরে বিরতি থাকবে ঠিক যে কয়দিনের জন্য নির্জন কারাবাস দেওয়া হবে।
৩। কারাদণ্ডের মেয়াদ ৩ মাসের বেশি হলে নির্জন কারাবাস কোন মাসে ৭ দিনের বেশি হবে না।
নির্ধারিত শাস্তি অপেক্ষা গুরুত্বর শাস্তির বিধান। ধারা-৭৫

কোন ব্যক্তি দণ্ডবিধির ১২তম ও ১৭তম অধ্যায়ের যে সব অপরাধের জন্য দণ্ডের বিধান রয়েছে, ঐ অপরাধে ৩ বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয় এবং ঐ শাস্তি বহাল থাকাবস্থায় বা মুক্তি পাবার পর পূনরায় অনুরুপ অপরাধ করলে তার কারাদও বর্ধিত হতে পারে যাবজ্জীবন বা যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ড যার মেয়াদ ১০ বছরের বেশি হবে না। ১২তম পরিচ্ছেদে মুদ্রা এবং সরকারি স্ট্যাম্প সম্পর্কিত অপরাধের শাস্তির বিধান বর্ণিত হয়েছে, যেমন মুদ্রা বা স্ট্যাম্প জাল করা, নকল করার যন্ত্রপাতি রাখা ইত্যাদি। ১৭তম পরিচ্ছেদে সম্পত্তির বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তির বিধান বর্ণিত হয়েছে, যেমন চুরি করা, দস্যুতা, ডাকাতি, আত্মসাৎ, প্রতারণা, সম্পত্তি নষ্ট, অনধিকার প্রবেশ ইত্যাদি। এই পরিচ্ছেদের অন্তর্ভুক্ত যেকোন অপরাধ দ্বিতীয়বার সংঘটিত করলে এবং উক্ত অপরাধের কারাদণ্ডের মেয়াদ ৩ বছর বা তার বেশি হয়, তাহলে অপরাধ যাবজ্জীবন বা যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ড যার মেয়াদ ১০ বছরের বেশি হবে না।

কম শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়:

(১) প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে সাধারণত কম দণ্ড দেওয়া হয়।
(২) উত্তেজনাবশে অপরাধ করলে শাস্তি কম দেয়া যায়।
(৩) মানহানিকর মামলায় ক্ষমা চাইলে শাস্তির মাত্রা কম হতে পারে।
(৪) অনেকদিন আসামি হাজির থাকলে দণ্ড কম হতে পারে।
(৫) কম বয়সের অপরাধীকে কম শাস্তি দেয়া হয়।
(৬) অতি বৃদ্ধের দণ্ড কম হয়।

বেশি শাস্তির ক্ষেত্রে:

(১) ঘর পােড়ানাে;
(২) মুদ্রা জাল;
(৩) নারী ধর্ষণ;
(৪) অস্বাভাবিক যৌনাপরাধ;
(৫) ঘুষখােরী;
(৬) হত্যা;
(৭) রাষ্ট্রদ্রোহিতা;
(৮) ডাকাতি।


শাস্তির সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ। ধারা ৭৬-১০৬

সাধারণ ব্যতিক্রমে ৩১টি ধারা আছে। উল্লেখিত ৩১টি ধারাতে বলা হয়েছে। নিম্নেবর্ণিত ৭টি ক্ষেত্রে কিছু কাজকে অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় না। যেমন:
১। অপরাধের অভিপ্রায় অনুপস্থিত [ধাৱা ৮১-৮৬ এবং ৯২-৯৪]
২। দূর্ঘটনাবশত কোন কাজ, যা আইগতভাবে, যত্নসহকারে এবং সরল বিশ্বাসে করা হয় । [ধারা-৮০]
৩। তথ্য সম্পর্কে ভ্রম (ধারা-৭৬ - ৭৯)
৪। অনুমতি (Consent) নিয়ে কাজ [ধারা ৮৭ -৯০]
৫। কাজের তুচ্ছতা (ধারা-৯৫)
৬। প্রতিরক্ষামূলক কাজ (ধারা ৯৬-১০৬)
৭। বিচার সংক্রান্ত কাজ (ধারা ৭৭ ও ৭৮)

নিম্নলিখিত ১৮টি কাজে অপরাধমূলক দায় বর্তায় না অর্থাৎ অপরাধ হবে না। যেমন :

১। আইনবলে বাধ্য ৰা ভুল ধারণবশত নিজেকে আইনবলে বাধ্য বলে বিশ্বাসকারি ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত কাজ (ধারা-৭৬)
২। বিচার সম্পর্কিত কাজ পরিচালনাকালে বিচারকের কাজ (ধারা-৭৭)
৩। আদালতের রায় বা আদেশ অনুসারে সম্পাদিত কাজ
৪। আইন সমর্থিত বা সরলবিশ্বাসে নিজেকে আইন সমর্থিত বলে কোন কাজ (ধারা-৭৯)
৫। আইনানুগ কার্য সম্পাদনকালে দূর্ঘটনা। [ধারা-৮০]
৬। অপরাধমূলক অভিপ্রায় ছাড়া, ক্ষতি নিবারনের জন্য সম্পাদিত কাজ [ধারা-৮১]
৭। ৯ বছরের কম বয়সি শিশুর কাজ [ধারা ৮২]
৮। ৯ বছরের বেশি কিন্তু ১২ বছরের কম বয়সি বােধ শক্তিহীন শিশুর কাজ [ধারা৮৩]
৯। অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির কাজ [ধারা-৮৪]
১০। অনিচ্ছাকৃত প্রমত্ততার দরুন বিচারশক্তি রহিত ব্যক্তির কার্য (ধারা-৮৫)।
১১। মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত ঘটানাের জন্য অভিপ্রেত নয় এবং অনুরুপ সম্ভাবনাপূর্ণ নয় জেনে সম্মতিসহকারে সম্পন্ন করা কর্ম। (ধারা-৮৭)
১২। মৃত্যু ঘটানাের জন্য অভিপ্রেত নয় এমন কাজ ব্যক্তিবিশেষের উপকারার্থে সদবিশ্বাসে সম্মতিসহকারে সম্পাদন। [ধারা-৮৮)
১৩। অভিভাবক দ্বারা বা তার সম্মতিক্রমে শিশু বা অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির মঙ্গলার্থে সদবিশ্বাসে সম্পাদিত কার্য। (ধারা-৮৯)
১৪। সম্মতি ছাড়াই কোন ব্যক্তির উপকারার্থে সদৃবিশ্বাসে সম্পন্ন কাজ। (ধারা-৯২)
১৫। সদবিশ্বাসে কৃত যােগাযােগ । [ধারা-৯৩]
১৬। যে কার্য করার জন্য ভীতি প্রদর্শন করে কোন ব্যক্তিকে বাধ্য করা হয়। [ধারা - ৯৪]
১৭। সামান্য ক্ষতিকারক কার্য । [ধারা-৯৫]
১৮। প্রতিরক্ষামূলক কাজ। (ধারা- ৯৬-১০৬)

ধারা ৮৯

অভিভাবক বা তার সম্মতি নিয়ে শিশু বা অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির মঙ্গলের জন্য সরলবিশ্বাসে যে কাজ করা হয় তা অপরাধ নয়।

ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা (Private Defence)

প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকার আছে তার নিজের ও অপরের শরীর ও সম্পদ রক্ষা করার। কোন ব্যক্তি যখন অপর কোন ব্যক্তির শরীর বা সম্পত্তির উপর আক্রমণ করে, তখন আক্রান্ত ব্যক্তি আক্রমনকারির বিরুদ্ধে অগ্রসর হতে পারে। আইন তাকে নির্দেশ দেয় আক্রমন প্রতিরােধ করার জন্য পাল্টা-আক্রমন করার জন্য। দণ্ডবিধির ধারা-৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার বিধান বর্ণিত আছে।

ধারা ৯৬

ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষায় কৃত কোন বিষয়ই অপরাধ নয়। অর্থাৎ কোন কিছুই অপরাধ নয় যদি তা আত্মরক্ষার জন্য করা হয়।

ধারা ৯৭

ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার ক্ষমতা প্রয়ােগ করা যায় ২টি ক্ষেত্রে

১। নিজের বা অন্য কারাের দেহ রক্ষা করার জন্য।
২। নিজের বা অন্যকারাের স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য।

ধারা ৯৮

কোন মানুষের উপর বা তার সম্পত্তির উপর যখন আঘাত আসবে তখন তিনি প্রতিরােধের জন্য অগ্রসর হবেন। এমনকি আঘাতকারি উন্মাদ, অপ্রকৃতিস্থ, নেশাগ্রস্থ, তরুন, অপরিণত বিবেকবান হলেও তার বিরুদ্ধে প্রতিরােধ করা যাবে।

ধারা ৯৯ ব্যতিক্রম

যখন আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়ােগ করা যাবে না:
১। সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব বা কর্তব্য পালন কালে কৃত কোন কাজের বিরুদ্ধে এমনকি সূক্ষ্য বিচারে আইন সম্মত না হলেও।
২। সরকারি কর্মকর্তার নির্দেশে অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক কৃত কোন কাজের বিরুদ্ধে।
৩। যে সব ক্ষেত্রে সরকারি কর্তৃপক্ষের আশ্রয় লাভের সময় থাকে। 

নিম্নেবর্ণিত ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার খর্ব করবে না :

১। যখন সরকারি কর্মকর্তা বা তার নির্দেশে অন্য কোন কর্মকর্তার কাজের ফলে যুক্তিসঙ্গতভাবে মৃত্যু বা গুরুতর আঘাতের আশংকা সৃষ্টি করে।
২। যদি না কোন ব্যক্তি জানে বা বিশ্বাস করার কারন থাকে যে, অনুরুপ ব্যক্তি সরকারি কর্মকর্তা নয়।
৩। যদি না কোন ব্যক্তি জানে বা বিশ্বাস করার কারন থাকে যে, অনুরুপ ব্যক্তি কোন সরকারি কর্মকর্তার নির্দেশে কাজ করছে বা চাওয়া মাত্রই উক্ত ব্যক্তি যদি লিখিত কর্তৃত্ব পেশ করতে ব্যর্থ হয়।

যে ক্ষেত্রে দেহ রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটানাে যায়। ধারা ১০০

৬টি ক্ষেত্রে দেহরক্ষার জন্য মৃত্যু ঘটানাে যায় :
১। এমন আক্রমণ যার ফলাফল একমাত্র মৃত্যু
২। এমন আক্রমণ যার ফলাফল হবে মারাত্মক আঘাত (Grievous Hurt)
৩। ধর্ষনের অভিপ্রায় আক্রমণ করা
৪। অস্বাভাবিক কামনা চরিতার্থ করনের ইচ্ছায় আক্রমণ (Unnatural Lust)
৫। Kidnapping ৰা Abduction এর জন্য চেষ্টা করলে।
৬। অবৈধভাবে আটক করার ইচ্ছায় আক্রমণ করলে

ধারা ১০২ - দেহের ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার প্রয়ােগের আরম্ভকাল ও স্থিতিকাল

১। দেহের উপর আক্রমণের বা হুমকির কারনে দেহের প্রতি বিপদের আশংকা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার সৃষ্টি হবে।
২। যতক্ষণ পর্যন্ত অনুরুপ বিপদের আশংকা বা আতংক কেটে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত আত্মরক্ষার অধিকার বিদ্যমান থাকবে।

যেক্ষেত্রে সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটানাে যায় - ধারা ১০৩

৪টি ক্ষেত্রে সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটানাে যায় -
১। দস্যুতা।
২। রাত্রিবেলায় ঘর ভেঙ্গে ঘরে অনুপ্রবেশ
৩। বাসগৃহে বা সম্পত্তি সংরক্ষণের স্থানে যেমন ইমারত, তাবু ৰা যানবাহনে অগ্নিসংযােগ
৪। চুরি, অনিষ্ট বা অনধিকার গৃহে প্রবেশের ফলে যদি মারাত্মক আঘাত বা মৃত্যুর আশংকা তৈরি হয়।

সম্পত্তির জন্য আত্মরক্ষার প্রয়ােগের আরম্ভকাল ও স্থিতিকাল - ধারা ১০৫

১। যখনই বুঝা যাবে সম্পত্তি অনিষ্ট বা দখলচ্যুত হওয়ার যুক্তিসঙ্গত আশংকা শুরু হয়েছে ঠিক তখনই শুরু হবে।
২। যতক্ষণ পর্যন্ত সম্পত্তির পুনরুদ্ধার বা সরকারি কর্তৃপক্ষের সাহায্য পাওয়া যাবে, দস্যুতার ক্ষেত্রে মৃত্যু বা গুরুতর আঘাতের আশংকা যতক্ষণ বিদ্যমান থাকবে বা অবৈধ অবরােধ বা অনধিকার গৃহে প্রবেশ বা অনিষ্টকাজ বা সিধিল চুরি যতক্ষণ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার অধিকার বিদ্যমান থাকবে।

অপরাধের সহায়তা (Abetment) - ধারা ১০৭-১২০

Abetment শব্দটির অর্থ হচ্ছে সহায়তা, উসকানি, প্ররােচনা বা সাহায্য করা। ধারা ১০৭ থেকে ১২০ পর্যন্ত অপরাধের সহায়তা সম্পর্কিত বিধান বর্ণিত আছে। যিনি অপরাধ অনুষ্ঠানে সহায়তা করেন, তাকে Abettor (দুস্কর্মের সহায়তাকারি) বলে ।

ধারা ১০৭

একটি অপরাধের সহায়তা ৩ ভাবে করা যেতে পারে
১। প্ররােচনার মাধ্যমে,
২। ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়ে,
৩। ইচ্ছাকৃতভাবে সাহায্য করে কার্য বা কার্যবিরতি দ্বারা।

প্ররােচনার শাস্তি - ধারা ১০৯

দণ্ডবিধির ধারা ১০৯, অনুসারে প্ররােচনার জন্য শাস্তি ২টি ভাবে নির্ণয় করা যায় :
১। যেক্ষেত্রে অপরাধে সহায়তা করার জন্য শাস্তি নির্ধারিত, সেক্ষেত্রে উক্ত অপরাধ সহায়তাকারি উক্ত শাস্তিতে দণ্ডিত হবেন।
২। যেক্ষেত্রে কোন অপরাধে সহায়তা করার জন্য শাস্তি নির্ধারিত থাকে না, সেক্ষেত্রে উক্ত অপরাধে সহায়তাকারি মূল অপরাধের জন্য নির্ধারিত শান্তিতে দণ্ডিত হবেন।

অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র (Criminal Conspiracy)

কোন অবৈধ কাজ বা কোন বৈধ কাজ অবৈধ উপায়ে করতে বা করানাের জন্য দুই বা ততােধিক ব্যক্তির এরুপ সম্মতি হচ্ছে অপরাধজনক চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র । অর্থাৎ অবৈধ কাজ করার জন্য দুই বা ততােধিক ব্যক্তি সম্মত হলে ঐ সম্মতিকে অপরাধজনক ষড়যন্ত্র বলে গণ্য করা যায়।

১২০ক ধারার উপাদানসমূহ -

১। দুই বা ততােধিক ব্যক্তি থাকতে হবে।
২। অপরাধটি সংঘটিত করার জন্য একটি সম্মতি (এগ্রিমেন্ট) থাকতে হবে ।
৩। উক্ত এগ্রিমেন্ট করা হবে
ক) কোন অবৈধ কাজ করার জন্য বা
খ) কোন বৈধ কাজ অবৈধভাবে করার জন্য
৪। ষড়যন্ত্র অনুসারে কাজ করা

দণ্ডবিধির ৩৪ ধারা এবং ১২০ক ধারা।

সাধারণ অভিপ্রায় এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র

দণ্ডবিধির ১২০ক ধারার অধীনে অপরাধ সৃষ্টিতে শুধুমাত্র দুই বা ততােধিক ব্যক্তির সম্মেলন এবং সাধারণ অভিপ্রায় থাকলেই যথেষ্ট। এইক্ষেত্রে এটা প্রমাণ করা আবশ্যক নয় যে উক্ত কাজটি প্রকৃতপক্ষে সংঘটিত হয়েছে। যেক্ষেত্রে ষড়যন্ত্র অনুসারে মূল অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে আসামিকে ষড়যন্ত্রের অপরাধের সাথে মূল অপরাধটির জন্য অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু ৩৪ ধারায় সাধারন অভিপ্রায় নিয়ে দুই বা ততােধিক ব্যক্তি কোন বেআইনি কাজ করেছে কিনা তা বিবেচ্য বিষয়। অর্থাৎ এইক্ষেত্রে অপরাধ অনুষ্ঠান বিবেচ্য বিষয়।

রাষ্ট্রদ্রোহিতা (Sedition) - ধারা ১২৪ক

কোন ব্যক্তি
ক) মৌখিক বা লিখিত শব্দগুলাের মাধ্যমে বা
খ) চিহ্নের মাধ্যমে বা
গ) দৃশ্যমান প্রতীকের মাধ্যমে বা অন্যকোন ভাবে সরকারের প্রতি ঘৃনা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করলে বা করার প্রচেষ্টাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে।
যেক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি -
১। কিছু বলেন, বা
২। কিছু লেখেন, বা
৩। কিছু সংকেত দেখান, বা
৪। অন্যভাবে কিছু প্রকাশ করেন,
এবং যেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি তার উল্লেখিত কাজের মাধ্যমে আইনবলে প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি -
১। ঘৃনার সৃষ্টি করেন বা ঘৃণা সৃষ্টির চেষ্টা করেন, অথবা
২। অবজ্ঞার সৃষ্টি করেন বা অবজ্ঞা সৃষ্টির চেষ্টা করেন, অথবা
৩। বিদ্বেষ সৃষ্টি করেন বা বিদ্বেষ সৃষ্টির চেষ্টা করেন,
তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন বা স্বল্প মেয়াদের কারাদণ্ড, যার সাথে অর্থদণ্ড যােগ হতে পারে বা ৩ বছর কারাদণ্ড, যার সাথে অর্থদণ্ড যােগ করা যাবে অথবা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

বেআইনী সমাবেশ (Unlawful Assembly)

ধারা ১৪১ বেআইনী সমাবেশ -
পাঁচ বা ততােধিক ব্যক্তির সমাবেশকে “বেআইনী সমাবেশ” বলে বিবেচিত হবে যদি তা নিম্নে বর্ণিত ৫টি সাধারণ উদ্দেশ্যে হয় -
১। সরকার বা আইন পরিষদ বা সরকারি কর্মচারীকে তার আইনানুগ ক্ষমতা প্রয়ােগের সম্পর্কে ভয় দেখানাে, বা
২। কোন আইন বা আইনগত ব্যবস্থা বাস্তবায়নে বাধা প্রদান করা, বা
৩। কোন অনিষ্ট বা অপরাধজনক অনধিকার প্রবেশ বা অপরকোন অপরাধ সংঘটন করা, বা
৪। অপরাধজনক বলপ্রয়ােগ করে কোন সম্পতির কর্তৃত্ব অর্জন করা বা কোন ব্যক্তিকে রাস্তা বা পানি ব্যবহার বা দখল থেকে বঞ্চিত করা,  বা
৫। অপরাধজনক বলপ্রয়ােগ করে কোন ব্যক্তি কে আইনত করতে বাধ্য নয় এমন কাজ করতে বাধ্য করা অথবা আইনত করতে বাধ্য, তা করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা।

সাধারণ উদ্দেশ্য ও সাধারণ অভিপ্রায় এর মধ্যে পার্থক্য -

১। সাধারণ উদ্দেশ্য বলতে বুঝাবে ১৪১ ধারায় উল্লেখিত ৫ ধরনের উদ্দেশ্যের যেকোন একটি। তবে ৩৪ ধারায় সাধারণ অভিপ্রায় বলতে বুঝাবে যেকোন অপরাধ সংঘটনের দুই বা ততােধিক ব্যক্তির অভিপ্রায়।
২। সাধারণ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা শাস্তিযােগ্য অপরাধ।
তবে ৩৪ ধারার সাধারণ অভিপ্রায় থাকাটা অপরাধ নয়। কিন্তু অপরাধীদের যৌথ দায় নির্ধারণের একটি নীতি।
৩। বেআইনী সমাবেশের প্রতিটি সদস্য অপরাধী হবে বেআইনী সমাবেশ সংঘটনের জন্য - (ধারা-১৪৯)। তবে ৩৪ ধারার অধীনেও অপরাধীরা যৌথভাবে এবং সমানভাবে দায়ি হবে।
৪। ৩৪ ধারায় যে ২টি বিষয় আবশ্যক তা হল সাধারণ অভিপ্রায় এবং অপরাধে অংশগ্রহণ। কিন্তু ১৪৯ ধারার আবশ্যকীয় উপাদান হল, সাধারণ উদ্দেশ্য এবং বেআইনি সমাবেশে অংশ গ্রহণ।

দাঙ্গা (Riot) কাকে বলে - ধারা ১৪৬

বেআইনী সমাবেশের মাধ্যমে বা বেআইনী সমাবেশের যেকোন সদস্য সাধারণ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বল প্রয়ােগ বা আক্রমণ শুরু করলে তখনই দাঙ্গার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ এরুপ সমাবেশের প্রতিটি সদস্য দাঙ্গার অপরাধে অপরাধী হবে। ১৪১ ধারায় বর্ণিত কোন অপকর্মের উদ্দেশ্যে ৫ বা ততােধিক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে তারা বা তাদের কেউ সাধারণ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার জন্য যখন শক্তি প্রয়ােগ করে বা উগ্র হয়ে উঠে, তখন দাঙ্গা অনুষ্ঠিত হয়।

মিথ্যা সাক্ষ্যদান (False Evidence)

মিথ্যা সাক্ষ্যদান কাকে বলে। ধারা ১৯১

যে ব্যক্তি সত্য বলার জন্য শপথ নিয়ে বা আইনগতভাবে বাধ্য হয়ে এমন কোন বিবৃতি দেয়, যা মিথ্যা এবং সে মিথ্যা বলে জানে বা বিশ্বাস করে বা সত্য হিসেবে বিশ্বাস করে না, এরুপ বিবৃতিকে মিথ্যা সাক্ষ্যদান বলা হয়।
মিথ্যা সাক্ষ্য ২ ভাবে দেওয়া যায় -
১। মৌখিকভাবে বা
২। লিখিতভাবে।

মিথ্যা সাক্ষ্য সৃষ্টি করা (Fabricating False Evidence) কাকে বলে। ধারা ১৯২

কোন বই বা রেকর্ডে মিথ্যা বিবরণী লিপিবদ্ধ করে বা মিথ্যা বিবরণী সম্বলিত কোন নথিপত্র প্রণয়ন করে মিথ্যা সাক্ষ্য সৃষ্টি করা যায় ।

মৃত্যুদণ্ডযােগ্য অপরাধের বিচারে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া বা উদ্ভাবন করা - ধারা ১৯৪

যে ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় বা মিথ্যা সাক্ষ্য সৃষ্টি করে, সেই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা অনুর্ধ্ব ১০ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড এবং জরিমানা দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং যদি উক্ত মিথ্যা সাক্ষ্য দানে বা সৃষ্টির ফলে কোন নির্দোষ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড হয় ও ফাঁসি দেওয়া হয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে বা যাবজ্জীবন বা সশ্রম অনধিক ১০ বৎসর কারাদণ্ড এবং জরিমানা দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

অপরাধকে গােপন করার জন্য অপরাধের সাক্ষ্য অদৃশ্য করা বা নষ্ট করা বা মিথ্যা তথ্য প্রদান করা - ধারা-২০১

মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধের ক্ষেত্রে - যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ড যার মেয়াদ ৭ বছর এবং জরিমানা দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধের ক্ষেত্রে। যে কোন বর্ণনার কারাদণ্ড যার মেয়াদ ৩ বছর এবং জরিমানা দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।  ১০ বছরের কম মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধটিৰ জন্য নির্ধারিত কারাদণ্ডের সর্বোচ্চ মেয়াদের এক চতুর্থাংশ হতে পারে ।

অপরাধিকে আশ্রয়দান। ধারা ২১২

অপরাধটি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডনীয় হলে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধিকে যে ব্যক্তি আশ্রয়দান বা লুকিয়ে রাখে সে যেকোন বর্ণনার ৫ বৎসর এবং জরিমানা দণ্ডে দণ্ডিত হবে। অপরাধটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হলে যে ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধিকে আশ্রয় প্রদান করে, সে ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ড যার মেয়াদ ৩ বৎসর এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।


অপরাধটির দণ্ড ১ বছর থেকে ১০ বছরে কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হলে এরুপ অপরাধকারিকে আশ্রয় প্রদান করলে উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত কারাদণ্ডের সর্বোচ্চ মেয়াদ এক চতুর্থাংশ পর্যন্ত হতে পারে বা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অপরাধকারি স্বামী বা স্ত্রী কর্তৃক আশ্রয়দান বা গােপনকরনের ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযােজ্য নয়।

মানবদেহ বিষয়ক অপরাধসমূহ। ধারা ২৯৯-৩৭৭

নরহত্যা(Homicide) কাকে বলে

 মানুষ কর্তৃক অপর মানুষের প্রাণহানিকে নরহত্যা বলে ।

আইনানুগ নরহত্যা কাকে বলে

সামাজিক শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য গুরুতর অপরাধে অপরাধি ব্যক্তিকে আইনগতভাবে বিচারের মাধ্যমে হত্যা করা হয়, এরুপ নরহত্যাকে আইনানুগ নরহত্যা বলে।

অপরাধমূলক/শাস্তিযােগ্য/দণ্ডনীয়/নিন্দনীয় নরহত্যা (Culpable Homicide)। ধারা - ২৯৯

১. মৃত্যু ঘটানাের উদ্দেশ্যে কৃত কোন কাজ দ্বারা কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটালে বা
২. যে দৈহিক জখম মৃত্যু ঘটাতে পারে তেমন দৈহিক জখম ঘটানাের উদ্দেশ্যে কৃত কোন কাজ দ্বারা মৃত্যু ঘটলে বা
৩. যে কাজের ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে তা জানা সত্ত্বেও সে কাজের দ্বারা কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটানাে হলে তাকে অপরাধমূলক নরহত্যা বলে।

২৯৯ ধারায় ৩টি ব্যাখ্যা আছে।

১। যে লােক অসুস্থতা, ব্যাধি বা দৈহিক বৈকল্যে ভুগছে এরুপ কোন লােককে দৈহিক জখম করে মৃত্যু ত্বরান্বিত করলে, তার মৃত্যু ঘটানাের অপরাধ বলে পরিগণিত হবে।
২। যখন দৈহিক জখমের কারনে মৃত্যু ঘটে, তখন যে লােক এরুপ দৈহিক জখম করে, সে লােক মৃত্যু ঘটিয়েছে বলে পরিগণিত হবে, যদিও যথোচিত প্রতিকারের ও নিপুন চিকিৎসার আশ্রয় নিলে মৃত্যু নিবারণ করা যেত।
৩। মাতৃগর্ভস্থ কোন শিশুর মৃত্যু ঘটান নরহত্যা বলে পরিগণিত হবে না। কিন্তু যদি কোন শিশুর (দেহের) কোন অংশ নিষ্ক্রান্ত করার পর জীবিত শিশুটির মৃত্যু ঘটানাে হয়, তা হলে তা শাস্তিযােগ্য নরহত্যা বলে পরিগণিত হবে, যদিও শিশুটি শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ না করে থাকে বা সম্পূর্ণহিসেবে জন্মগ্রহণ না করে থাকে।

অপরাধমূলক নরহত্যার প্রকারভেদ

অপরাধমূলক নরহত্যা ২ ধরনের হতে পারে
১। খুনের পর্যায়ে পড়ে, এমন অপরাধমূলক নরহত্যা।
২। খুনের পর্যায়ে পড়ে না, এমন অপরাধমূলক নরহত্যা।
অপরাধমূলক নরহত্যা যখন খুনের পর্যায় পড়ে না
দণ্ডবিধির ৩০০ ধারায় ৫টি ব্যতিক্রমের উল্লেখ আছে। সেক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে খুন করা হলেও তা খুন হিসাবে গণ্য না হয়ে অপরাধজনক নরহত্যা হবে।
১। অপরাধমূলক প্রাণহানি খুনের পর্যায়ে পড়বে না, যদি মারাত্মক ও আকস্মিক প্ররােচনার (Grave & Sudden Provocation) ফলে অপরাধি আত্মসংযম শক্তি (Self control) হারিয়ে ফেলে এবং এরুপ অবস্থায় প্ররােচনাদানকারীর মৃত্যু ঘটায় অথবা ভুলক্রমে বা দুর্ঘটনাক্রমে অনুরুপ অবস্থায় কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায়।
তবে এই ব্যতিক্রমের আওতায় পড়তে হলে নিম্নের শর্তগুলােপূরণ করতে হবে।
ক) প্ররােচনাটি কোন লােককে হত্যা করার বা তার ক্ষতি সাধন করার অজুহাত স্বরুপ হিসেবে অপরাধকারি দ্বারা স্বয়ং প্রার্থীত বা প্ররােচিত হতে পারবে না।
খ) প্ররােচনাটি আইনানুগ ভাবে কৃত কোন কাজের মাধ্যমে কিংবা কোন সরকারি কর্মচারি আইসম্মত কাজের দ্বারা হতে পারবে না।
গ) উত্তেজনা বা প্ররােচনাটি ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা অধিকারের আইনানুগ প্রয়ােগের সম্পর্কে কৃত কোন কার্য মাধ্যমে দেয়া হয় নি।
২। যদি অপরাধী সদবিশ্বাসে তার আত্মরক্ষার বা সম্পত্তি রক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়ােগের সময় যদি তিনি অনিচ্ছকৃতভাবে যেটুকু ক্ষতিসাধন করার দরকার, তার থেকে বেশি ক্ষতিসাধন করে এবং তার ফলে মৃত্যু হলে তা দণ্ডনীয় নরহত্যা হবে।
৩। যদি কোন সরকারি কর্মচারি সরল বিশ্বাসে তার সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে গিয়ে আইনানুগ ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে ফেলে এবং এরুপ কাজ করে কারাে মৃত্যু ঘটায় যে কাজটি তার কর্তব্য পালনের ব্যাপারে আইনানুগ ও প্রয়ােজন বলে সে বিশ্বাস করে এবং যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে তার প্রতি অপরাধীর কোন শত্রতা না থাকলে, এরুপ অপরাধজনক নরহত্যা খুনের পর্যায় পড়বে না।
৪। যদি অপরাধটি কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া আকস্মিক দ্বন্দে রাগান্বিত হয়ে এবং অপরাধী কোন অন্যায় সুযােগ গ্রহণ না করে কাজটি করে থাকে, তাহলে  অপরাধজনক
নরহত্যা হবে।
৫। ১৮ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করে কিংবা মৃত্যু ঝুঁকি গ্রহণ করে তাহলে এরুপ অপরাধজনক নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবে না।

খুনের শাস্তি। ধারা ৩০২

যে ব্যক্তি খুন করে সে ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থ দণ্ডেও দণ্ডনীয় হবে।

খুন বলে গণ্য নয় এরুপ অপরাধ জনক নরহত্যার শাস্তি। ধারা ৩০৪

যদি কোন ব্যক্তি খুন বলে গণ্য নয় এরুপ অপরাধ জনক নরহত্যা অনুষ্ঠান করে, সে ব্যক্তি যে কার্যের সাহায্যে মৃত্যু সংঘটিত হয়, তা মৃত্যু ঘটানাের অভিপ্রায়ে বা মৃত্যু ঘটানাের সম্ভাবনা রয়েছে এমন গুরুতর আঘাত প্রদানের অভিপ্রায়ে সম্পাদিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা বা সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে, যার মেয়াদ দশ বৎসর পর্যন্ত হতে পারে, দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থ দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে অথবা যদি কার্যটি এরুপ অবগতি সহকারে সম্পাদিত হয় যে, উহার ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে, অথচ মৃত্যু ঘটানাের বা ঘটাতে পারে এরুপ আঘাত দানের অভিপ্রায়ে ব্যতিরেকে সম্পাদিত হয়, তাহলে সে ব্যক্তি সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

ঠগ (Thug) কাকে বলে। ধারা ৩১০

কোন ব্যক্তি যদি খুনের সাথে বা খুন করে দস্যুতা সংঘটিত বা শিশু অপহরনের উদ্দেশ্যে অভ্যাসগতভাবে অপর এক বা একাধিক ব্যক্তির সাথে মেলামেশা করে, তাহলে সে ব্যক্তি ঠগ। 

ঠগ (Thug) এর শাস্তি। ৩১১

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

আঘাত সম্পর্কিত অপরাধসমূহ (Offences Relating to Hurt)

আঘাত (Hurt) কাকে বলে। ধারা ৩১৯

কোন ব্যক্তি যদি অন্য কোন ব্যক্তির দৈহিক যন্ত্রনা, ব্যাধি বা বৈকল্য ঘটায়, তাহলে সেই ব্যক্তি আঘাত দান করেছে বলে বিবেচিত হবে।

গুরুতর আঘাত (Grievous hurt ) কাকে বলে। ধারা ৩২০

দণ্ডবিধির ৩২০ ধারাতে নিম্নেবর্ণিত ৮ ধরনের গুরুতর বা মারাত্মক আঘাতের কথা উল্লেখ আছে।
১। পুরুষত্বহানি ঘটানাে
২। স্থায়ীভাবে যেকোন চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করা
৩। স্থায়ীভাবে যেকোন কানের শ্ৰুতি শক্তি নষ্ট করা
৪। যেকোন অঙ্গ বা গ্রন্থির অনিষ্টসাধন করা
৫। যেকোন অঙ্গ বা গ্রন্থির শক্তি ধ্বংস করা বা স্থায়ী ক্ষতিসাধন করা
৬। মাথা ৰা মুখমন্ডলের স্থায়ীভাবে বিকৃতি করা
৭। কোন অস্থি/হাড় বা দাঁত ভাঙ্গা বা গ্রন্থিচ্যুত করা
৮। যে আঘাত জীবন বিপন্ন করে বা আঘাত প্রাপ্ত ব্যক্তিকে ২০ দিন পর্যন্ত প্রচন্ড দৈহিক যন্ত্রনা দেয় বা তাকে সাধারণ কাজ করতে অপারগ করে।

অবৈধ বাধা এবং অবৈধ আটক (Wrongful Restrain & wrongful Confinment)

অবৈধ বাধা (Wrongful Restrain) কাকে বলে। ধারা ৩৩৯

কোন ব্যক্তিকে তার যে দিকে যাবার অধিকার আছে, সেদিকে যেতে বাধা দেওয়াকে অবৈধ বাধা বলে। কিন্তু কোন বেসরকারি স্থল বা জলপথে বাধা প্রদানের ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযােজ্য নয়।

অবৈধ বাধার শাস্তি। ধারা ৩৪১

অনধিক ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

অবৈধ আটক (Wrongful Confinement) কাকে বলে। ধারা ৩৪০

কোন ব্যক্তিকে একটি নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধ এলাকার বাইরে যেতে বাধা দেওয়াকে অবৈধ আটক বলে।

অবৈধ আটকের শাস্তি: ধারা ৩৪২

অনধিক ১ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১০০০ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

অপরাধজনক বলপ্রয়ােগ ও আক্রমণ (Criminal Force & Assult)

বলপ্রয়ােগ (Force) কাকে বলে। ধারা ৩৪৯

কোন ব্যক্তির বা বস্তুর গতি সঞ্চার করলে, বা তার গতি পরিবর্তন করলে বা গতি স্তব্ধ করলে, ধরা হবে বলপ্রয়ােগ হয়েছে।

অপরাধজনক বলপ্রয়ােগ (Criminal Force) কাকে বলে। ধারা ৩৫০

কোন অপরাধ সংঘটন করার উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তি বা বস্তুর গতি সঞ্চার, পরিবর্তন বা স্তব্ধ করলে তাকে অপরাধজনক বল প্রয়ােগ বলে।

আক্রমণ (Assult) কাকে বলে। ধারা ৩৫১

কোন ব্যক্তি এমনভাবে অঙ্গভঙ্গী বা প্রস্তুতি নেয়, যা দেখে অন্য কোন ব্যক্তির মনে ভয় অনুভূত হতে পারে, এরুপ ক্ষেত্রে বলা হবে উক্ত ব্যক্তি আক্রমণ করেছে।

Kidnapping & Abduction

লােক অপহরণ ( Kidnapping) কাকে বলে। ধারা ৩৫৯
দণ্ডবিধির ৩৫৯ ধারাতে Kidnapping কে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১। বাংলাদেশ থেকে লোক অপহরণ/মনুষ্যহরণ/পাচার (Kidnapping from Bangladesh)
২। আইনানুগ অভিভাবকত্ব থেকে লোক অপহরণ (Kidnapping from Lawful Guardianship)

বাংলাদেশ থেকে লােক অপহরণ কাকে বলে। ধারা - ৩৬০

কোন ব্যক্তির সম্মতি ৰা তার পক্ষে ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া তাকে বাংলাদেশের সীমানার বাইরে নিয়ে যাওয়াকে বাংলাদেশ থেকে লোক অপহরণ বলা হবে।

আইনানুগ অভিভাবকত্ব থেকে লোক অপহরণ কাকে বলে। ধারা - ৩৬১

১। ১৪ বছরের কম বয়সী নাবালক পুরুষ বা
২। ১৬ বছরের কম বয়সী নাবালিকা মেয়ে বা
৩। অপ্রকৃতস্থ লােক কে তাদের আইনানুগ অভিভাবকের সম্মতি না নিয়ে বা প্রলুব্ধ করে তাদেরকে নিয়ে যাওয়াকে বলা হবে আইনানুগ অভিভাবকত্ব থেকে লোক অপহরণ ।

লােক অপহরণের শাস্তি।

বাংলাদেশ থেকে ৰা আইনানুগ অভিভাবক থেকে লােক অপহরণ করলে শাস্তি হলো অনধিক ৭ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। [ধারা ৩৬৩]

অপহরণ (Abduction) কাকে বলে। ধারা ৩৬২

কোন লোক প্রতারণামূলকভাবে বা বলপ্রয়ােগ করে অন্য কোন ব্যক্তিকে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করার জন্য বাধ্য করলে, বলা হবে ঐ লােক ঐ ব্যক্তি অপহরণ করেছে।

ধর্ষণ (Rape) কাকে বলে। ধারা ৩৭৫-৩৭৬

ধর্ষণ - ধারা ৩৭৫

নিম্নেবর্ণিত ৫টি উপাদানের যেকোন অবস্থায় নারীর সাথে যৌনসহবাস করলে তা নারী ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে।
১। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে
২। তার সম্মতি ছাড়া
৩। মৃত্যু ৰা আঘাতের ভয় দেখিয়ে সম্মতি আদায় করা হলে।
৪। তার সম্মতিতে যখন উক্ত নারী মনে করে পুরুষ লােকটি তার স্বামী, তবে পুরুষলােকটি জানে সে উক্ত মহিলার স্বামী নয়।
৫। তার বয়স যদি ১৪ বছরের কম হয় সেক্ষেত্রে সম্মতি নিয়ে বা সম্মতি ছাড়া।

চুরি (Theft) কাকে বলে। ধারা ৩৭৮

কোন ব্যক্তি যদি কারাে দখল থেকে অস্থাবর সম্পত্তি তার সম্মতি ছাড়া অসাধুভাবে গ্রহণ করার অভিপ্রায়ে উক্ত সম্পত্তি স্থানান্তর করে, তাহলে ঐ ব্যক্তি চুরি করেছে বলে গণ্য হবে।

বলপূর্বক গ্রহণ [Extortion] কাকে বলে। ধারা ৩৮৩

ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে তার থেকে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি গ্রহণ করাকে বলপূর্বক গ্রহণ বলে।

বলপূর্বক গ্রহণের শাস্তি। ধারা ৩৮৪

অনধিক ৩ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

দস্যুতা (Robbery) কাকে বলে। ধারা ৩৯০ ও ৩৯২

দস্যুতা - ধারা ৩৯০

প্রত্যেক দস্যুতায় হয় চুরি না হয় বলপূর্বক গ্রহণ রয়েছে।

চুরি যখন দস্যুতায় পরিণত হয়।

যদি কোন ব্যক্তি চুরি করতে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায় বা আঘাত করে বা অবৈধভাবে আটক রাখে বা তাৎক্ষণিক মৃত্যু বা তাৎক্ষণিক আঘাত বা তাৎক্ষণিক আটক রাখার ভয় দেখায়, তাহলে ঐ চুরি দস্যুতার সামিল হবে।

বলপূর্বক গ্রহণ যখন দস্যুতায় পরিণত হয়।

বলপূর্বক গ্রহণকালে অপরাধী কোন ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক মৃত্যু বা তাৎক্ষণিক আঘাত বা তাৎক্ষণিক অবৈধ আটকের ভয় দেখিয়ে কোন সম্পত্তির তাৎক্ষণিক হস্তান্তর করতে বাধ্য করলে ঐ বলপূর্বক গ্রহণ দস্যুতার সামিল হবে।

দস্যুতার শাস্তি - ধারা ৩৯২

১। অনধিক ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
২। রাজপথে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়ে দস্যুতা সংগঠিত হলে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

দস্যুতা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ - ধারা ৩৯৩

যে ব্যক্তি দস্যুতা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ করে, সে ব্যক্তি সশ্রম কারাদণ্ডে, যার মেয়াদ সাত বৎসর পর্যন্ত হতে পারে, দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থ দণ্ডেও দণ্ডনীয় হবে।

ডাকাতি (Dacoity) কাকে বলে। ধারা ৩৯১, ৩৯৫, ৩৯৬ ৩৯৯ ও ৪০০

ডাকাতির সংজ্ঞা বা ডাকাতি কাকে বলে । ধারা ৩৯১

পাঁচ বা ততােধিক ব্যক্তি মিলে কোন দস্যুতা সংঘটিত করলে বা করার চেষ্টা করলে বলা হবে তারা ডাকাতি করেছে।

ডাকাতির শাস্তি। ধারা ৩৯৫

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎ বা তছরুপ করা (Dishonestly  / Criminal Misappropriation of Property) কাকে বলে। ধারা ৪০৩

কোন ব্যক্তি যদি অসাধুভাবে কোন অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাত করে বা তার নিজস্ব ব্যবহারে পরিণত করে তাহলে সেই ব্যক্তি অনধিক ২ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে বা জরিমানা দণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

অনধিকার গৃহ প্রবেশের শাস্তি। ধারা ৪৪৮

অনধিক ১ বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০০০ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

সঙ্গোপনে অনধিকার গৃহে প্রবেশ (Lurking House Trespass) কাকে বলে। ধারা ৪৪৩

অনধিকার গৃহে প্রবেশ যদি এমন গােপনে হয় যে, যার গৃহে প্রবেশ করেছে তার নিকট বিষয়টি গােপন থাকে, তাহলে বলা হবে সঙ্গোপনে অনধিকার গৃহ প্রবেশ।

সঙ্গোপনে অনধিকার গৃহে প্রবেশের শাস্তি। ধারা ৪৫৩

অনধিক ২ বছর বিনাশ্রম সশ্রম বা কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

রাত্রিকালে সঙ্গোপনে অনধিকার গৃহ প্রবেশ (Lurking House Trespass By Night) কাকে বলে। ধারা ৪৪৪ঃ

সূর্যাস্তের পর ও সূর্যোদয়ের পূর্বে সঙ্গোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ করাকে রাত্রিকালে সঙ্গোপনে অনধিকার গৃহপ্রবেশ বলে।

রাত্রিকালে সঙ্গোপনে অনধিকার গৃহে প্রবেশের শাস্তি। ধারা ৪৫৬

অনধিক ৩ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

সিঁদ কেটে বা দরজা-জানালা ভেঙ্গে গৃহে প্রবেশ (House Breaking) কাকে বলে। ধারা ৪৪৫

দণ্ডবিধির ৪৪৫ ধারায় উল্লেখিত ৬ প্রকারের যেকোন এক প্রকারে কোন গৃহে প্রবেশ করাকে সিঁদ কেটে বা দরজা জানালা ভেঙ্গে প্রবেশ বলে। যেমনঃ বন্ধ দরজা খুলে, দেয়াল টপকিয়ে, নতুন করে পথ তৈরি করে, তালা খুলে, আক্রমণ বা বলপ্রয়ােগের ভয় দেখিয়ে, প্রবেশ বা প্রস্থানের জন্য নয় এমন পথ দিয়ে প্রবেশ করলে বলা হবে ঘর ভেঙ্গে প্রবেশ।

সিঁদ কেটে গৃহে প্রবেশের শাস্তি। ধারা ৪৫৩

অনধিক ২ বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

রাত্রিকালে সিঁদ কেটে বা দরজা জানালা ভেঙ্গে গৃহে প্রবেশ কাকে বলে। (House Breaking By Night)। ধারা ৪৪৬

সূর্যাস্তের পরে ও সূর্যোদয়ের আগে সিঁদ কেটে বা দরজা জানালা ভেঙ্গে গৃহে প্রবেশ করাকে বলা হয় রাত্রিকালে সিঁদ কেটে বা দরজা জানালা ভেঙ্গে গৃহে প্রবেশ ।

রাত্রিকালে সিঁদ কেটে গৃহে প্রবেশের শাস্তি। ৪৫৬ ধারা

অনধিক ৩ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

জালিয়াতি (Forgery) কাকে বলে। ধারা ৪৬৩

১। জনগণ বা কোন ব্যক্তির ক্ষতি বা অনিষ্ট করার জন্য বা
২। কোন দাবি বা অধিকারের সমর্থনের জন্য বা
৩। কোন সম্পত্তি ত্যাগ করতে প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য চুক্তি সম্পন্ন করতে বাধ্য করার জন্য বা
৪। প্রতারণা বা প্রতারণা হতে পারে, এরুপ ক্ষেত্রে কোন মিথ্যা নথিপত্র বা দলিলের অংশ বিশেষ প্রণয়ন করাকে জালিয়াতি বলে।

জালিয়াতের শাস্তি। ধারা ৪৬৫

অনধিক ২ বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

ব্যভিচার (Adultary) কাকে বলে। ৪৯৭ ধারা

কোন ব্যক্তি অপর কারাের স্ত্রীর সাথে তার স্বামীর সম্মতি ছাড়া যৌনসহবাস করলে তা ব্যভিচার বলে গণ্য হবে।

ব্যভিচারের শাস্তি। ৪৯৭ ধারা

অনধিক ৫ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাবাস অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। এইক্ষেত্রে স্ত্রী অপরাধের সহায়তাকারি হিসাবে শাস্তিযােগ্য হবে না।

মানহানি (Defamation) কাকে বলে

মানিহানি - ধারা ৪৯৯

১। ৪৯৯ ধারাতে মানহানি সম্পর্কিত ৪টি ব্যাখ্যা এবং ১০টি ব্যতিক্রম আছে।
২। মৃত লােকের নিন্দা করা মানহানির সামিল হতে পারে
৩। কোম্পানী বা সমিতির বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ করা মানহানি হতে পারে।

মানহানির শাস্তি। ধারা ৫০০

অনধিক ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন (Criminal Intimidation) কাকে বলে।

অপরাধজনক ভয় দেখানাে। ধারা ৫০৩

কোন ব্যক্তির দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের জন্য ভয় দেখিয়ে কোন কাজ করতে বাধ্য বা কাজ করা থেকে বিরত রাখাকে অপরাধজনক ভয় দেখানাে বলে ।

অপরাধমূলক ভয় দেখানোর শাস্তি। ধারা ৫০৬

অনধিক ২ বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাবাস জরিমানা দণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ সমূহ সংঘটনের উদ্যোগের শাস্তি। ধারা- ৫১১

যদি কোন ব্যক্তি এই বিধিবলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোন অপরাধ সংঘটন করার বা করার উদ্যোগ করে এবং অনুরুপ উদ্যোগে উক্ত অপরাধ সংঘটনের অভিমুখে কোন কার্য করে, সে ব্যক্তি অনুরুপ উদ্যোগের শাস্তির ব্যাপারে এই বিধিতে কোন স্পষ্ট বিধান না থাকার ক্ষেত্রে, উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত যেকোন মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে, যার মেয়াদ উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দীর্ঘতম মেয়াদের বা কারাদণ্ডের অর্ধেক মেয়াদ পর্যন্ত হতে পারে বা অনুরুপ অপরাধের জন্য নির্ধারিত জরিমানা দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।


Popular posts from this blog

Write a paragraph on Pahela Baishakh পহেলা বৈশাখ

Write a paragraph on Pahela Baishakh (পহেলা বৈশাখ) Pahela Baishakh Pahela Baishakh is the part of our culture. It is the first day in Bangla calendar. This day is celebrated throughout the country. The main programme of this day is held in Ramna Botamul. Different socio-cultural organizations celebrate this day with due solemnity. People of all sorts of ages and lives attend this function. Colourful processions are brought out. Watery rice and hilsha fish are served during this function. Women and children put on traditional dresses. The whole country wears a festive look. Different cultural programmes are arranged where singers sing traditional bangla songs. Discussion meetings are held. Radio and television put on special programmes. Newspapers and dailies publish supplementary. Fairs are held here and there on this occasion. Shopkeepers and traders arrange ‘halk hata’ and sweet-meats are distributed. In villages, people go to others’ houses and exchange greetings. Thus Pahela Baisha...

Write a paragraph on environment pollution পরিবেশ দূষণ

Write a paragraph on environment pollution (পরিবেশ দূষণ) Environment Pollution Environment pollution means the pollution of air, water, sound, odour, soil and other elements of it. We need safe and clean environment. Pollution of it has tremendous bad effects. Any sort of pollution may bring the doom of life. At present, our environment is being polluted at an alarming rate, Air, the most important element of environment is polluted by smoke from railway engines and power-houses, or the burning of coal and oil or the making of bricks. Water, another vital element is being polluted by the use of chemicals and insecticides or oil seeping from damaged super tankers or by industrial discharge. Sound pollution is caused by the use of microphones and loud speakers. All these pollutions may wipe out our existence from the earth. The destruction of forest also causes environment imbalance that makes the wild animals wipe out. So, it is our moral duty to prevent environment pollution. We must ...

Ecotourism -Read the passage and answer the questions Unit 9 Lesson 3c English For Today

Read the passage and answer the questions Ecotourism is a booming business that many tour operators cite as being helpful to nature.(পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প একটি দ্রুত সমৃদ্ধিময় ব্যবসা যা পর্যটন পরিচালনাকারীবৃন্দ প্রকৃতির জন্য সহায়ক বলে আখ্যায়িত করেন) Every year, millions of people descend on protected and pristine natural areas to observe rare species. (প্রতি বছর, লক্ষ লক্ষ মানুষ দুর্লভ প্রজাতির প্রাণীগুলোকে দেখতে সংরক্ষিত এবং বিশুদ্ধতা বিরাজমান আছে এমন প্রাকৃতিক অঞ্চল ভ্রমণ করে থাকে।) However, a new report casts doubt on the value of this form of tourism.(যাহোক, একটি নতুন ধরণের পর্যটনের উপকারিতাকে সন্দেহের নজরে দেখছে।) In fact, it suggests that ecotourism is more damaging than helpful to nature. (বাস্তবে, এটি পরামর্শ দিচ্ছে যে পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প প্রকৃতির জন্য সহায়কের চেয়ে অধিকতর ক্ষতিকর।) Details are in a report published in the journal Trends in Ecology and Evolution’. (‘ট্রেন্ডস ইন ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন’ সাময়িক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত বলা হয়...