- Get link
- X
- Other Apps
এডভােকেটশীপ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা মৌখিক ভাইভা সহায়িকা দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা আদেশ ও বিধির উপর সংক্ষিপ্ত আলােচনা
এডভােকেটশীপ ও জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা
প্রিলিমিনারি/ মৌখিক/ ভাইভা সহায়িকা
দেওয়ানি কার্যবিধি ১৯০৮ এর ধারা আদেশ ও বিধির উপর সংক্ষিপ্ত আলােচনাঃ
ডিক্রি
মামলার চূড়ান্ত নির্দেশকে সাধারণত ডিক্রি বলে। ধারা ২(২) মতে, ডিক্রি বলতে আদালত দ্বারা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত সিদ্ধান্ত (Adjudicatin), যা মামলার বিতর্কিত বা তর্কিত সকল বা যে কোন বিষয় সম্পর্কে পক্ষসমূহের অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে। ডিক্রি দ্বারা মামলার পক্ষগণের অধিকার নির্দেশ করা হয়।
সোলে ডিক্রি (Compromise Decree)
আপােষ মীমাংসার মাধ্যমে যে ডিক্রি প্রদান করা হয় তাকে সােলে ডিক্রি বলে। সােলে ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল চলে না।
আদেশ
আদেশ বলতে কোন দেওয়ানি আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত, যা ডিক্রি নয় । মামলার প্রসিডিং চলাকালিন সময় আদালত যে সব সিদ্ধান্ত দেন, তা আদেশ । ছানি মামলা (Mis.case) এর সিদ্ধান্তকে আদেশ বলে। রায়ের পূর্বে সম্পত্তি আটকের সিদ্ধান্তও হচ্ছে একটি আদেশ।
রায়, ডিক্রি এবং আদেশ (Decree & Order)
১। ডিক্রি মামলার পক্ষসমূহর অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে। তবে আদেশ মামলার পক্ষসমূহর অধিকার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করতেও পারে আবার নাও করতে পারে ।
২। ডিক্রি এবং আদেশ উভয় দেওয়ানি আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত।
৩। প্রত্যেক ডিক্রির বিরদ্ধে আপিল করা যাবে, যদিনা আইনগত বিধি নিষেধ থাকে। ধারা ৯৬ (১)। তবে সাধারণত আদেশের বিরদ্ধে আপিল চলবে না, যদি না তা ধারা ১০৪ এবং ৪৩ আদেশ অনুসারে আপিলযােগ্য হয়।
৪। যে যুক্তির উপর নির্ভর করে ডিক্রি বা আদেশ প্রদান করা হয়, তাকে রায় (Judgment) বলে।
রায়
ধারা ২(৯) অনুসারে, যে যুক্তির উপর নির্ভর করে ডিক্রি বা আদেশ প্রদান করা হয়, তাকে রায় (Judgment) বলে। দেওয়ানি কার্যবিধির ৩৩ ধারা মতে, মামলা শুনানীর পর, আদালত রায় ঘােষণা এবং এরূপ রায়ের উপর ভিত্তি করে ডিক্রি প্রদান করবেন। অর্থাৎ আদালত প্রথমে রায় ঘােষণা করবেন এবং উক্ত রায়ের উপর ভিত্তি করে ডিক্রি প্রদান করবেন।
ডিক্রিদার (Decree Holder) ধারা ২(৩)
যে ব্যক্তির পক্ষে আদালত ডিক্রি প্রদান করেন বা জারি করার উপযুক্ত কোন আদেশ দেন, তাকে ডিক্রিদার বলে ।
দায়িক (Judgment debtor) ধারা ২ (১০)
যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত ডিক্রি প্রদান করেন বা জারি করার উপযুক্ত কোন আদেশ দেন, তাকে দায়িক (Judgment debtor) বলে।
অন্তর্বর্তীকালীন মুনাফা (Mense Profit)
বে-আইনীভাবে দখলকৃত সম্পত্তি থেকে দখলদার ব্যক্তি স্বাভাবিক নিয়মে যে মুনাফা (Profit) গ্রহণ করেছে অথবা সাধারণ বুদ্ধিমত্তায় যে মুনাফা লাভ করতে পারত, সুদসহ উক্ত মুনাফা কে অন্তবর্তীকালিন মুনাফা বা Mesne Profit বলে। অন্তবর্তীকালি মুনাফা বলতে এ ধরনের মুনাফাকে বুঝায় যা বাদীর প্রাপ্য ছিল কিন্তু বিবাদী তা বাদীকে প্রদান করে নাই। অন্তবর্তীকালিন মুনাফায় অর্জনযােগ্য সব ধরনের সুদকেও অন্তর্ভুক্ত করে।
মীনস্ প্রফিট নয়
বেআইনীভাবে দখলকার ব্যক্তি যদি দখলকৃত সম্পত্তির উন্নয়ন করে কোন মুনাফা অর্জন করে, তাহলে তা Mesne profit হিসেবে বিবেচিত হবে না।
বৈধ প্রতিনিধি
যে ব্যক্তি আইনগতভাবে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির প্রতিনিধিত্ব করেন, যে ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির পরিচালনা করেন এবং যে ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির প্রতিনিধি হিসেবে মামলা করেন বা যার বিরদ্ধে মামলা করা যায়, তাকে বৈধ প্রতিনিধি বলে।
বিধিমালা (Rules)
বিধি বলতে প্রথম তফসিলে উলেখিত বা ১২২ ধারার আওতায় প্রণীত বিধি বা ফরমগুলােকে বুঝাবে। General Clauses Act 1897 এর ৩(৪৭) ধারা মতে বিধিমালা কোন আইন দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রণীত কোন বিধিকে বুঝাবে এবং কোন আইনের অধীন বিধি হিসেবে প্রণীত কোন প্রবিধিও এর অন্তর্ভুক্ত হবে।
অস্থাবর সম্পত্তি (Movable Property)
দেওয়ানি কার্যবিধির ১৯০৮ সালের ২(১৩) ধারা মতে অস্থাবর সম্পত্তি বাড়ন্ত ফসলকে অন্তর্ভুক্ত করে। কর্তনযােগ্য ও অপসারণ যােগ্য বাড়ন্ত ফসল এই ধারার অধীনে অস্থাবর সম্পত্তির অন্তর্ভূক্ত। দন্ডবিধির ২২ ধারা অনুসারে অস্থাবর অর্থে ভূমি ও ভূমির সাথে যুক্ত বা ভূমির সাথে স্থায়ীভাবে আবদ্ধ (Parmanently Fastened) বস্তু ছাড়া যে কোন বর্ণনার বস্তুগত সম্পত্তি (Corporeal Property) বুঝাবে। কিন্তু General Cluses Act 1897 এর ধারা ৩(৩৪) এবং Registration Act 19(8 এর ধারা ২(৯) মতে অস্থাবর সম্পত্তি বলতে স্থাবর সম্পত্তি ব্যতীত যে কোন বর্ণনার সম্পত্তিকে বুঝায়।
দেওয়ানি আদালতসমূহ ও প্রকারভেদ
Civil Courts Act 1887 সালের ৩ ধারায় ৫ প্রকার দেওয়ানি আদালতের কথা বলা হয়েছেঃ
১। জেলা জজের আদালত।
২। অতিরিক্ত জেলা জজের আদালত।
৩। যুগা জেলা জজ আদালত।
৪। সিনিয়র সহকারী জজের আদালত।
৫। সহকারী জজের আদালত।
স্বল্প এখতিয়ার আদালত - ধারা ৭
১৮৭৭ সনের স্বল্প এখতিয়ার আদালত আইন অনুসারে গঠিত, অথবা, উক্ত আইন অনুসারে স্বল্প এখতিয়ার আদালতের এখতিয়ার প্রয়ােগকারী অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিধানসমূহ প্রযােজ্য হবে না, যথা
(ক) অত্র আইনের যে সমস্ত অংশ নিম্নলিখিত বিষয় সম্পর্কিত:
১. ক্ষুদ্র বিষয়ক বিচার আদালতে বিচার এখতিয়ার বহির্ভূত মামলা;
২, এইরপ মামলার ডিক্রি জারি;
৩. স্থাবর সম্পত্তির ডিক্রি জারি; এবং
(খ) নিম্নলিখিত ধারাগুলাে, যথা ৯ ধারা, ৯১ এবং ৯২ ধারা, ৯৪ এবং ৯৫ ধারা যতদূর সম্ভৰ ইহারা নিম্নোক্ত বিষয়ে ক্ষমতা প্রদান করে বা বিষয়ক হয়:
১. স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ,
২. নিষেধাজ্ঞা,
৩. স্থাবর সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্তি, কিংবা
৪. ৯৪ ধারার (ঙ) দফায় বর্ণিত অন্তবর্তীকালীন আদেশ গুলাে এবং ৯৬ হতে ১১২ ধারা পর্যন্ত ও ১১৫ ধারা ।
স্বল্প এখতিয়ার আদালতের ক্ষেত্রে সাধারণত দেওয়ানি কার্যবিধি প্রযােজ্য হয়, তবে যেই সমস্ত ধারা বা নিয়ম ঐ আদালতে প্রযােজ্য হয় না তা এই ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।
আদালতের এখতিয়ার
আদালতের এখতিয়ার বলতে আদালতের উপর অর্পিত এমন এক ক্ষমতা প্রয়ােগ করাকে বুঝায়, যার ভিত্তিতে আদালতে বিচারের জন্য মামলার শুনানী গ্রহন, নিষ্পত্তিকরণ, ডিক্রি জারীর মাধ্যমে রায় প্রদান ও বাস্তবায়িত করতে পারে। দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ারকে নিম্ন বর্ণিত ভাবে বিভক্ত করা যায়ঃ
১। বিষয়গত এখতিয়ার,
২। আদি এখতিয়ার,
৩। আর্থিক এখতিয়ার,
৪। আঞ্চলিক এখতিয়ার,
৫। আপিল এখতিয়ার।
দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা (Nature of Civil Suits) বা বিষয়গত এখতিয়ার। ধারাঃ ৯
দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ৯ ধারা অনুসারে আদালত প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষ বিধি নিষেধ ব্যতীত সকল প্রকার দেওয়ানি প্রকৃতির মামলার বিচার করবেন। যখন কোন মামলায় একজন নাগরিকের সম্পত্তির অথবা পদের অধিকার (Right to Property or Right to office) সংক্রান্ত প্রশ্নের মীমাংসা মামলার প্রধান বিচার্য বিষয় হয়, তখনই তা দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা হয় এবং দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত হয়। যখন কোন মামলা সম্পত্তি বা পদের অধিকার সম্পর্কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এবং উক্ত অধিকার যদি ধর্মীয় আচার বা আনুষ্ঠানিক বিষয়ক প্রশ্নের মীমাংসার উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করলেও তা দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা। সুতরাং মামলার বিষয়বস্তু দেওয়ানি প্রকৃতির না হলে দেওয়ানি আদালতে উক্ত মামলার বিচার করা যাবে না।
মামলা স্থগিতকরণ (Stay of suit)/Res Subjudice) ধারা- ১০।
যখন পূর্বে দায়েরকৃত বিচারধীন মামলার পক্ষসমূহ ও বিচার্য বিষয় এবং পরবর্তীতে দায়েরকৃত মামলার পক্ষসমূহ ও বিচার্য বিষয় একই হয়, তখন পরবর্তীতে দায়ের কৃত মামলাটির বিচারকার্য আদালত স্থগিত বা মূলতবি (Stay of suit/ Res Subjudice) করে দিবেন।
দোবরা দোষ/ (Res Judicata) ধারা- ১১
যে মামলাটি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত কর্তৃক একবার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে, পরবর্তীতে যদি পুনরায় একই বিচার্য বিষয় নিয়ে এবং একই পক্ষসমূহ মামলা দায়ের করে, তাহলে আদালত মামলাটি বিচার করবে না, এটাই হচ্ছে রেস জুডিকাটা। সুতরাং, একবার চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তিকৃত কোন মামলা, পুনরায় বা দ্বিতীয় বার বিচার করা যায় না। অর্থাৎ যার বিচার একবার করা হয়েছে, সে একই বিষয়ে পুনরায় মামলা করলে রেস জুডিকাটা নীতি প্রয়ােগ হবে।
শর্তসমূহ:
১। পূর্ববর্তী মামলা এবং পরবর্তী মামলার বিচার্য বিষয় একই হতে হবে।
২। পূর্ববর্তী মামলা এবং পরবর্তী মামলার পক্ষসমূহ একই হতে হবে।
৩। পূর্ববর্তী মামলাটি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তিকৃত।
পুনরায় মামলা করার বাধা (Bar to Further Suit) ধারা-১২
যখন বাদী কোন বিধি অনুসারে কোন বিশেষ কারনে পুনরায় মামলা দায়ের করা নিষিদ্ধ হয়, তখন যে আদালতের প্রতি এই আইন প্রযােজ্য, সেরূপ কোন আদালতে তিনি সে একই কারনে পুনরায় মামলা দায়ের করতে পারবে না।
আদি এখতিয়ার বা মূল এখতিয়ার (Original Jusrisdiction)
যে সকল আদালতের প্রাথমকিভাবে দেওয়ানি মামলা বিচারের জন্য আমলে নেওয়ার এখতিয়ার থাকে, তাকে আদি এখতিয়ার বা মূল এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত বলে। নিম্নলিখিত দেওয়ানি আদালতে প্রাথমিক ভাবে মূল দেওয়ানি মামলা দায়ের করা যায় অর্থাৎ আদি এখতিয়ার আছেঃ
১। যুগ্ম জেলা জজ আদালত।
২। সিনিয়র সহকারী জজ আদালত।
৩। সহকারী জজ আদালত।
জেলা জজ
সাধারণত জেলা জজের ট্রেডমার্ক আইন, কপিরাইট আইন, প্রবেট (উইল সংক্রান্ত দলিল) বিষয়ে আদি এখতিয়ার আছে।
অতিরিক্ত জেলা জজ
অতিরিক্ত জেলা জজ, জেলা জজ কর্তৃক প্রদত্ত মামলার বিচার করে থাকেন। কিন্তু অতিরিক্ত জেলা জজের কোন মূল এখতিয়ার নেই। সুতরাং এই আদালতে কোন মূল মামলা দায়ের করা যাবে না।
আর্থিক এখতিয়ার (Pecuinary Jurisdiction)
দেওয়ানি কার্যবিধির ১৫ ধারা অনুসারে, প্রত্যেকটি মামলা বিচার করার যােগ্যতাসম্পন্ন সর্বনিম্ন পর্যায়ের (Lowest Grade of Competent Court) আদালতে দায়ের করতে হবে। আদালতের আর্থিক এখতিয়ার নির্ধারনের মাধ্যমে সর্বনিম্ন স্তরের আদালত নির্ধারণ করা হয়। ধারা ৬ অনুসারে, কোন আদালত তার জন্য নির্ধারিত আর্থিক এখতিয়ারের বাইরে বেশি মূল্যসম্পন্ন বিষয়বস্তু বিষয়ক মামলার বিচার করবে না।
১। সহকারী জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ারঃ ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত [(Civil Court (Amendment) Act, 2021) এর ধারা ১৯]
২। সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ারঃ ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত)। [(Civil Court (Amendment) Act, 2021) এর ধারা ১৯]
৩। যুগ্ম জেলা জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ারঃ সীমাহীন। [(Civil Court (Amendment) Act, 2021) এর ধারা ১৮]
আপিল এখতিয়ার (Appeallate Jurisdiction)
যে সকল আদালতের আপিল শুনানী এবং নিষ্পত্তি করার এখতিয়ার থাকে, তাকে আপিল এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত বলে। দেওয়ানি মামলার আপিল আমলে নেওয়ার এখতিয়ার আছে দুইটি ২টি আদালতের।
১। হাইকোর্ট বিভাগ।
২। জেলা জজ।
কখন, কোথায় আপিল দায়ের করতে হবে
১। সহকারী জজ এবং সিনিয়র সহকারী জজ দেওয়ানি মামলা বিচার করার পর যে রায় প্রদান করবেন, সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হবে জেলা জজের আদালতে।
২। যুগ্ম জেলা জজের মামলার বিষয়বস্তুর মূল্যমান ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে, উক্ত মামলার রায়ের বিরদ্ধে আপিল দায়ের করতে হবে জেলা জজের আদালতে। কিন্তু ৫ কোটি টাকার অধিক মূল্যমানের মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করতে হবে হাইকোর্ট ডিভিশনে। (Civil Court (Amendment) Act, 2021)
আঞ্চলিক এখতিয়ার (Territorial Jurisdiction) ধারা-১৬-২০
সরকার অফিসিয়াল গেজেটে নােটিফিকেশনের মাধ্যমে, দেওয়ানি আদালত সমূহের আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণ এবং পরিবর্তন করতে পারেন। [ধারা ১৩, Civil Court Act, 1857]
যেখানে মামলার বিষয় অবস্থিত সেখানে মামলা দায়ের করতে হয়। ধারা- ১৬।
(১) স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের মামলা,
(২) স্থাবর সম্পত্তি বাটোয়ারার জন্য মামলা,
(৩) স্থাবর সম্পত্তির বন্ধক বিক্রয় বা বন্ধক মুক্তির মামলা,
(৪) স্থাবর সম্পত্তিতে অন্য প্রকার স্বত্ব বা অধিকার নির্ণয়ের মামলা,
(৫) স্থাবর সম্পত্তি অনিষ্টের (ক্ষতি) জন্য ক্ষতিপূরনের মামলা
(৬) শুধুমাত্র ক্রোককৃত বা আটককৃত অস্থাবর সম্পত্তির উদ্ধারের বা ফেরৎ পাবার জন্য মামলার ক্ষেত্রে যে আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে উক্ত সম্পত্তি অবস্থিত, ঐ আদালতে মামলা রজু বা দায়ের করতে হবে। তবে স্থাবর সম্পত্তি অনিষ্টের জন্য ক্ষতিপূরনের মামলার ক্ষেত্রে যেই স্থানে পূর্ণ বা আংশিকভাবে মামলার কারন উদ্ভব হয়েছে বা যে আদালতের স্থানীয় এখতিয়ারে বিবাদী বাস করে বা ব্যবসা-বাণিজ্য করে ব| লাভজনক কাজ করে সেখানে মামলা করা যাবে। এই ধারায় সম্পত্তি বলতে বাংলাদেশে অবস্থিত সম্পত্তিকে বুঝায়।
ভিন্ন ভিন্ন আদালতের এখতিয়ারে অবস্থিত স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে মামলা। ধারা-১৭
একাধিক আদালতের এখতিয়ারে স্থাবর সম্পত্তি থাকলে তাদের ভিতর যে কোন আদালতে মামলা দায়ের করে যাবে।
স্থানীয় সীমানার এখতিয়ার অনিশ্চিত (Uncertain of local limit)। ধারা-১৮
কোন স্থাবর সম্পত্তি যখন দুই বা ততােধিক আদালতের কোনটির স্থানীয় সীমানার এখতিয়ারে অবস্থিত, সে সম্পর্কে অনিশ্চতা দেখা দেয়, তখন যে কোন একটি আদালতে মামলা দায়ের করা যায়।
ব্যক্তির বা অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করলে, ক্ষতিপূরনের মামলা। ধারা- ১৯
কোন ব্যক্তি বা কোন অস্থাবর সম্পত্তির প্রতি এক আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় সীমারেখার ভিতর ক্ষতিসাধন করা হলে, এবং বিবাদী অপর আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় সীমারেখার ভিতর -
ক) বসবাস করলে বা
খ) ব্যবসা করলে বা
গ) লাভজনক কাজ করলে।
ফরিয়াদি বা বাদী দুই আদালতের যে কোন একটিতে ক্ষতিপূরনের মামলা করতে পারে।
অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে। ধারা ২০
যেখানে বিবাদীগণ বাস করে বা নালিশের কারন উদ্ভব হয়, সেখানে মামলা দায়ের করতে হয়।
মােকদ্দমা স্থানান্তরের ক্ষমতা।
একাধিক আদালতে যে মামলা দায়ের করা যায় এরপ মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা। ধারা ২২
দুই বা ততােধিক আদালতের যে কোন একটিতে যখন কোন মামলা দায়ের করা যায় এবং মামলাটি তার মধ্যে যে কোন একটি আদালতে দায়ের করা হয়, তখন যে কোন বিবাদী অপর পক্ষকে নােটিশ দিয়ে প্রথম সম্ভাব্য সুযােগ ও বিচার্য বিষয় নির্ধারনের সময় বা পূর্বে অপর একটি আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে।
কোন আদালতে আবেদন করা যায়। ধারা ২৩
১। যখন এখতিয়ার সম্পন্ন একাধিক আদালত একই আপিল আদালতের অধীন হয়, তখন উক্ত আপিল আদালতে ২২ ধারা অনুসারে আবেদন পেশ করতে হবে।
২। যখন এখতিয়ার সম্পন্ন একাধিক আদালত ভিন্ন ভিন্ন আপিল আদালতের আওতাধীন হয়, তখন হাইকোর্ট ডিভিশনে আবেদন পেশ করতে হয় ।
দেওয়ানি মামলার আপিল আদালত দুটিঃ
১। জেলা জজ আদালত;
২। হাইকোর্ট বিভাগ;
একই জেলার অধীন এক আদালত থেকে অন্য আদালতে মামলা স্থানান্তর করতে হলে জেলা জজের নিকট আবেদন করতে হবে। কারন জেলার দেওয়ানি আদালত গুলো জেলা জজের আপিল এখতিয়ারধীন। অপরদিকে এক জেলার দেওয়ানি আদালত থেকে অন্য জেলার দেওয়ানি আদালতে মামলা স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে হৰে হাইকোর্ট বিভাগের নিকট।
স্হানান্তর ও প্রত্যাহারের সাধারণ ক্ষমতা। ধারা-২৪
হাইকোর্ট বিভাগ বা জেলা জজ আদালত যে কোন সময় তার নিকট বিচারের জন্য বা নিষ্পত্তির জন্য বিচারাধিন কোন মামলা আপিল এবং যে কোন কার্যক্রম তার অধীনস্থ এখতিয়ার সম্পন্ন কোন আদালতে স্থানান্তরিত করতে পারেন অথবা কোন অধীনস্থ আদালত থেকে কোন মামলা আপিল ৰা যে কোন কার্যক্রম প্রত্যাহার করে তা নিজে বিচার করতে পারেন অথবা এখতিয়ার সম্পন্ন অন্য কোন আদালতে স্থানান্তর করতে পারেন। এই ধারার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত জেলা জজকে জেলা জজের অধঃস্থন ধরা হবে ।
মামলার প্রয়ােজনীয় পক্ষ (Necessary Parties)ঃ
যে পক্ষের উপস্থিতি মামলা গঠনের জন্য প্রয়ােজনীয় এবং যার উপস্থিতি ছাড়া কোন ডিক্তি দেওয়া যায় না, তাকে প্রয়ােজনীয় পক্ষ বলে ।
মামলার যথাপোযুক্ত পক্ষ (Proper Parties)ঃ
যে পক্ষের উপস্থিতি ছাড়া আদালত কার্যকরী আদেশ দিতে পারে, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ এবং চূড়ান্ত রায় দিতে পারে না, তাকে যথাপােযুক্ত পক্ষ ৰলে ।
অ-সংযুক্ত এবং অপসংযােগ পক্ষসমূহ (Non Joinder and Mis Joinder of Parties)। বিধি-৯, আদেশ-১
মামলার প্রয়ােজনীয় বা যথাযুক্ত পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত না করলে তাকে পক্ষ সমূহের অসংযুক্তি বা পক্ষসমূহের অভাব (Non-Joinder) বলে। অপরদিকে প্রয়ােজনীয় বা যথাযুক্ত পক্ষ ছাড়া অন্যকোন ব্যক্তি যার প্রয়ােজন নাই, তাকে পক্ষভুক্ত করলে, সেটাকে পক্ষসমূহের অপসংযােগ বলে (Mis-Joinder)।
অপসংযােগ বা অ-সংযুক্ত সম্পর্কে আপত্তি (Objection as to Non-Joinder or Mis Joinder): বিধি-১৩, আদেশ-১
ভুল উপায়ে কাউকে মামলার পক্ষ করা হলে বা পক্ষ থেকে কর্তন বা বাতিল করা হলে, আপত্তি করতে হবে সম্ভাব্য প্রথম সুযােগে এবং যে ক্ষেত্রে বিচার্য বিষয় ধার্য করা হবে, সেক্ষেত্রে তা নির্ধারিত হবার সময় বা পূর্বে আপত্তি উত্থাপন করতে হবে।
প্রতিনিধিত্বমূলক মামলা (Representative suit) বিধি-৮, আদেশ-১
এক ব্যক্তি জনস্বার্থ সংশিষ্ট ব্যাপারে অন্যান্য সবার পক্ষে মামলা করতে বা জবাব প্রদান করতে পারে। এরপ মামলার জন্য আদালতের অনুমতি নেয়া প্রয়োজন এবং যাদের পক্ষে মামলা করা হবে তাদের সবার একই স্বার্থ বা সাধারণ স্বার্থ থাকতে হবে।
মামলা গঠন, আদেশ-২
কোন মামলার গঠন এমনভাবে কার্যকর করতে হবে, যাতে বিরোধভূক্ত বিষয়টি (The subject in dispute) সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়।
সমন (Summon)
বাদী মামলা করার পর আদালত যে দলিলের মাধ্যমে বিবাদীকে একটি নিদিষ্ট তারিখে হাজির হয়ে লিখিত জবাব দিতে আদেশ প্রদান করেন, উক্ত দলিলকে সমন বলে।
বিবাদীর প্রতি সমন। ধারা-২৭
যেখানে মামলা সঠিকভাবে দায়ের করা হয়েছে, সেখানে বিবাদীকে উপস্থিত এবং দাবীর জবাব দেওয়ার জন্য সমন দেওয়া যেতে পারে।
বিধি-১, আদেশ-৫ ২০১২ সালে সংশােধনের পর
১। আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অফিসার বিবাদীর কাছে সমন প্রেরণ করবে।
২। মােকদ্দমা সঠিকভাবে রজু ৰা দায়ের করার পর ৫ (পাঁচ) কার্য দিবসের (Working day) মধ্যে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অফিসার বািদীকে উপস্থিত হওয়ার উদ্দেশ্যে এবং দাবীর জবাব দেওয়ার জন্য সমন জারি করবেন। সমন জারি করা বাধ্যতামূলক।
৩। ৫ কার্যদিবসের মধ্যে সমন জারি (Issue) করতে না পারলে আদালত দ্বারা নিয়ােগপ্রাপ্ত অফিসার অসদাচরনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবেন।
৪। বিবাদী যদি আরজি দাখিল করার সময়ে উপস্থিত হয়ে বাদীর দাবী স্বীকার করে নিলে সমন প্রেরণ করা যাবে না।
৫। প্রতিটি সমনে বিচারক বা বিচার দ্বারা নিযুক্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর এবং আদালতের সীলমােহরে মােহরাঙ্কিত (Sealed) থাকবে।
৬। বিবাদী হাজিরা দিতে পারেন ব্যক্তিগত ভাবে বা তার আইনজীবীর মাধ্যম।
সমন জারীর পদ্ধতি। বিধি ১০, আদেশ-৫
বিচারক দ্বারা স্বাক্ষরিত বা বিচারক দ্বারা নিয়ােগপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার স্বাক্ষর এবং আদালতের সিলমোহর সহ একটি নকল প্রেরণের মাধ্যমে সমন জারী করা যায়।
বহুসংখ্যক বিবাদীর প্রতি সমন জারি বিধি ১১, আদেশ ৫
বিবাদীর সংখ্যা একাধিক থাকলে প্রত্যেকের উপর সমন জারি করতে হবে।
বিধি ১৩, আদেশ ৫
বিবাদীর যে প্রতিনিধি তার ব্যবসা পরিচালনা করে, তার উপর সমন প্রেরণ করলে উত্তম জারী (Duly Served) হিসেবে গন্য হবে।
বিধি-১৪, আদেশ- ৫
স্থাবর সম্পত্তির জন্য মামলার দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধির উপর সমন জারী করা যাবে।
বিধি-১৫, আদেশ-৫
২০১২ সালে সংশােধনের পর যখন বিবাদীর বা সমগ্রহনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত তার কোন প্রতিনিধির উপর ব্যক্তিগতভাবে সমন জারী করা যায় না। তখন পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক (Adult Member) ব্যক্তির উপর সমন জারি করা যাবে। ভৃত্য (Servent) পরিবারের সদস্য হিসাবে গণ্য হবে না। ২০১২ সালের পূর্বে Adult Male Member এর নিকট সমন প্রদানের বিধান ছিল।
বিধি ১৬, আদেশ-৫
সমন প্রেরণকারী কর্মকর্তা (Serving officer) সমন প্রেরনের পর সমন গ্রহনকারী ব্যক্তির থেকে প্রাপ্তি স্বীকারমূলক স্বাক্ষর গ্রহন করবে।
বিধি-১৭, আদেশ-৫; সমন নিতে অস্বীকার অথবা যখন বিবাদীকে খুঁজে পাওয়া যায় না
যেক্ষেত্রে বিবাদী বা তার প্রতিনিধি সমন নিতে অস্বীকার অথবা যখন বিবাদীকে খুঁজে পাওয়া যায় না এবং বিবাদীর পক্ষে সমন গ্রহনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি পাওয়া যায় না, সেক্ষেত্রে যে গৃহে বিবাদী সাধারণত বসবাস করে বা ব্যবসা করে সেখানকার কোন প্রকাশ্য স্থানে সমনের একটি নকল ঝুলিয়ে বা টানিয়ে সমন জারি করা যাবে। ১৭ বিধি অনুসারে সমন ফেরৎ আসলে সমনজারি কারক কর্মকর্তাকে আদালত পরীক্ষা করতে পারেন। [বিধি ১৯, আদেশ-৫]। যে ব্যক্তির উপস্থিতিতে সমনের নকল ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বা বিবাদীর গৃহ সনাক্ত করা হয়, উক্ত ব্যক্তির নামও ঠিকানা লিখে নিতে হবে।
বিধি-১৯খ, আদেশ-৫
ব্যক্তিগত জারীর অতিরিক্ত হিসেবে ডাকযােগে ও যুগপৎভাবে (Simultaneously) সমন ইস্যু করতে হবে। তবে আদালত চাইলে তা দরকার হবে না।
ঝুলিয়ে জারী বা বিকল্প সমন জারি (Substituted Service) বিধি-২০, আদেশ ৫
যেক্ষেত্রে আদালত যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্বাস করে যে, বিবাদী সমন এড়ানাের উদ্দেশ্যে নিজেকে গােপন রাখছে, বা অপর কোন কারনে স্বাভাবিক ভাবে সমন জারি করা যাচ্ছে না, সেক্ষেত্রে আদালতের কোন প্রকাশ্য স্থানে বা বিবাদী যেখানে বসবাস করে বা ব্যবসা বা ব্যক্তিগত লাভের জন্য কোন কাজ করে সেই স্থানের প্রকাশ্য অংশে সমনের একটি নকল টাঙ্গিয়ে বা ঝুলিয়ে জারী করার জন্য আদালত আদেশ দিবেন।
২। আদালত দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সমন জারীর আদেশ প্রদান। করতে পারেন। তবে সংবাদপত্রটির প্রচার থাকতে হবে বিবাদীর বসবাস স্থানে বা ব্যবসা পরিচালনার স্থানে।
৩। সমন ঝুলিয়ে জারি করলে তা বিবাদীর উপর ব্যক্তিগতভাবে জারি করার মত কার্যকরী হবে।
বিধি-২১, আদশে-৫, বিবাদী অপর আদালতের এখতিয়ারে বসবাস করলে-
বিবাদী অপর আদালতের এখতিয়ারে বসবাস করলে, সমন জারীকারি আদালত বিবাদীর বাসস্থানের উপর এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের নিকট অথবা কোন কর্মচারীর মাধ্যমে অথবা ডাকযােগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সমন প্রেরণ করতে পারবেন ।
বিধি-২৪, আদেশ- ৫। বিবাদী কারাগারে থাকলে-
বিবাদী কারাগারে থাকলে সমন ইস্যু বা প্রেরণ করতে হবে কারাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে । অথবা ডাকযােগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বা অপর কোন উপায়ে কারাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করত হবে।
বিধি ২৫, আদেশ ৫ । বিবাদী বাংলাদেশে বাইরে থাকলে-
যেক্ষেত্রে বিবাদী বাংলাদেশের বাইরে বসবাস এবং তার কোন প্রতিনিধি থাকে না, সেক্ষেত্রে সমন জারি করতে হবে, বিবাদীর বাসস্থানের ঠিকানা বরাবর ডাকযােগে অথবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে।
বিধি-২৮ আদেশ ৫ । সৈনিক, নাবিক বা বৈমানিকের উপর সমন জারি-
বিবাদী যদি সৈনিক, নাবিক বা বৈমানিক হয় তাহলে সমন প্রেরণ করতে হবে তার অধিনায়ক কর্মকর্তার (Commading Officer) নিকট।
বিধি-৩০, আদশে-৫
Substitution of letter for Summons (সমনের পত্র) আদালত বিবাদীর মর্যাদা বিবেচনা করে তার প্রতি সমন না দিয়ে তার পরিবর্তে পত্র প্রেরণ করতে পারেন। তবে উক্ত পত্রটি সমন হিসেবেই গন্য হবে।
প্লিডিংস (Pleadings) আদেশ-৬
আরজি বা জবাবকেই বলা হয় প্লিডিংস। দেওয়ানি প্রকৃতির প্রত্যেক মামলায় বাদীকে প্রয়ােজনীয় বিবরণসহ নালিশের কারন উলেৱখ করে একটি আরজি উপস্থাপন বা পেশ করতে হয়। অপরদিকে বিবাদীকে তার প্রতিপক্ষের আরজির বিরদ্ধে জবাব হিসেবে লিখিতভাবে একটি বিবৃতি প্রদান করতে হয়। অতএব, বাদীর আরজি এবং বিবাদীর লিখিত জবাবের সমন্বয়ে প্লিডিংস গঠিত হয়।
প্লিডিংস স্বাক্ষরিত হবে, বিধি-১৪, আদেশ-৬
প্রত্যেক আরজি এবং জবাব সংশ্লিষ্ট পক্ষ বা তার প্রতিনিধি দ্বারা এবং উকিল (যদি থাকে) দ্বারা স্বারিত হবে। প্লিডিংস এর সত্যপাঠ/সত্যাখ্যান/সত্যতা প্রতিপাদন আরজিতে মামলার বাদী এবং লিখিত জবাবের নিচে বিবাদী সত্যপাঠ এবং স্বাক্ষর অথবা অন্য কোন ব্যক্তি যে মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানে, সে আরজি বা লিখিত জবাবে সত্যপাঠ এবং স্বাক্ষর বা দস্তখত করবে।
প্লিডিংস কর্তন (Striking Out Pleadings) বিধি-১৬, আদশে-৬
আদালত মামলার যে কোন পর্যায়ে নিম্নবর্নিত কারনে প্লিডিংস (আরজি বা জবাব) বর্ণিত কোন বিষয় কেটে দেয়ার বা সংশােধন করার আদেশ দিতে পারেন।
ক) অনাবশ্যকীয় বা অপ্রয়ােজনীয় বিষয় (Unnecessary Matter)
খ) কুৎসাজনক (Scandalous)
গ) যা মামলার সুষ্ঠু বিচার ক্ষতিগ্রস্থ বিভ্রান্ত বা বিলম্বিত করে (Tend to prejudice, embarrass or delay the fair trail of the suit)
প্লিডিংস সংশােধন (Amendment of Pleadings) বিধি ১৭, আদেশ-৬
১। মামলার যে কোন পর্যায়ে আদালত যে কোন পক্ষকে আরজি বা জবাবের ন্যায়সঙ্গত পরিবর্তন বা সংশােধন করার অনুমতি দিতে পারেন।
২। বাদী বা বিবাদী উভয় পক্ষের বিরােধের প্রকৃত প্রশ্ন নির্ধারনের জন্য প্রয়ােজনীয় যাবতীয় সংশােধন করা যাবে।
৩। আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতার উপর আরজি জবাব সংশােধনের আদেশ নির্ভর করে ।
৪। প্লিডিংস সংশােধনের দরখাস্ত দাখিল করতে হয় বিচারিক আদালতে ।
প্লিডিংস সংশােধনের সময়। বিধি-১৮, আদেশ-৬
১। আদেশের মধ্যে উল্লেখিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আরজি বা জবাব সংশােধন করতে হবে অথবা
২। আদেশের মধ্যে যদি সময় নির্ধারিত বা উল্লেখ করা না হয়, সেক্ষেত্রে আদেশের তারিখ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সংশােধন করতে হবে। উক্ত সময় পার হলে এবং আদালত যদি আর সময় বর্ধিত না করে তাহলে প্লিডিংস সংশােধন করা যাবে না।
আরজি (Plaint)ঃ অর্ডার-৭
আরজি বলতে কোন বাদী কর্তৃক আনীত কোন বিশেষ দাবী সম্বলিত এমন এক বিবৃতিকে বুঝায় যা বাদী কর্তৃক লিখিতভাবে আদালতে পেশ করার মাধ্যমে দেওয়ানি মামলা দায়ের করা হয়।
আরজিতে যেসব বিষয়ের উল্লেখ করতে হয়। বিধি-১, আদেশ ৭
১। যে আদালতে মামলা করা হয় তার নাম, বাদী এবং বিবাদীর নাম, পরিচয় ও বসবাসের স্থান, মামলার কারন (Cause of Action), কারন সৃষ্টির সময় উল্লেখ থাকবে।
২। বাদী বা বিবাদী নাবালক বা মানসিক বিকারগ্রস্থ বা প্রতিবন্ধি হলে সে বিষয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ থাকবে ।
৩। আদালতের এখতিয়ার এবং বাদীর প্রতিকার উল্লেখ থাকবে।
৪। আদালতের এখতিয়ার নির্ধারনের এবং কোর্ট ফি নির্ধারনের জন্য মামলার বিষয়বস্তু মূল্যমান সম্পর্কে বিবৃতি আরজিতে উল্লেখ থাকবে।
৫। অর্থের মামলার ক্ষেত্রে, আরজিতে দাবীকৃত অর্থের যথাযথ পরিমান উল্লেখ করতে হবে। তবে অর্থের পরিমান অমিমাংসিত থাকলে আনুমানিক অর্থের পরিমান লিখতে হবে (Approximate amount) বিধি-২, আদেশ-৭।
৬। স্থাবর সম্পত্তির মামলার ক্ষেত্রে আরজিতে উল্লেখ করতে হবে
১। উক্ত সম্পত্তির সনাক্ত করার যথাযথ বর্ণনা, এবং
২। উক্ত সম্পত্তির সীমানা বা সেটেলমেন্ট পর্চার উল্লেখিত নম্বর উল্লেখ করতে হবে। [বিধি-৩, আদেশ-৭]
৭। বাদী যে প্রতিকার দাবী করবে তা স্পষ্টভাবে বা সুনির্দিষ্টভাবে বর্ণনা করতে। হবে। [বিধি-৭, আদেশ ৭]
আরজি ফেরৎ (Return of Plaint)
১। বাদী যদি এখতিয়ারহীন আদালতে আরজি দায়ের করে, তাহলে আদালত উক্ত আরজি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে পেশ করার জন্য বাদীকে ফেরত প্রদান করবে।
২। আরজি ফেরৎ প্রদানের সময় বিচারক আরজি পেশ করার এবং ফেরৎ দেওয়ার তারিখ, আরজি দাখিলকারির নাম এবং ফেরৎ দেওয়ার কারন সংক্ষেপে লিখবেন।
আরজি ফেরতের প্রতিকার-
আরজি ফেরতের আদেশটি আপিলযােগ্য আদেশ (Appelable Order) । [বিধি-১, আদেশ ৪৩]
আরজি নাকচ বা প্রত্যাখান বা খারিজ/বাতিল (Rejection of Plaint)
আদালত নিম্নেবর্ণিত ৪টি কারনে আরজি নাকচ করবেন।
১। আরজিতে মামলার কারন উল্লেখ না থাকলে।
২। আরজিতে দাবীকৃত প্রতিকারের মূল্য কম উল্লেখ করা হলে এবং আদালতের নির্দেশ দেয়ার পরও বাদী যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সঠিক মূল্য লিখতে ব্যর্থ হলে ।
৩। প্রয়ােজন অপেক্ষা কম মূল্যের স্ট্যাম্পযুক্ত কাগজে আরজি লিখলে এবং আদালত নির্দেশ প্রদানের পরও বাদী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়ােজনীয় স্টাম্প পেপার সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে।
৪। মামলাটি যদি আইন অনুসারে নিষিদ্ধ বা বারিত হয় (Barred by any law)।
আরজি নাকচ হলে প্রতিকার-
১। আরজি নাকচ হলে বাদী নতুন আরজি দাখিল করতে পারবে। [বিধি ১৩, আদেশ ৭]
২। আরজি প্রত্যাখান বা খারিজের আদেশ একটি ডিক্রি [ধারা ২ (১)]। আরজি নাকচ করে মূল এখতিয়ার প্রয়ােগকারী আদালত। সুতরাং আরজি নাকচের আদেশের বিরদ্ধে আপিল করা যাবে।
লিখিত জবাব (Written Statement) আদেশ-৮
১। বিবাদীর সমন প্রাপ্তির পর ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে হবে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দাখিলে ব্যর্থ হলে আদালত আরাে ৩০ কার্যদিবস পর্যন্ত সময় দিতে পারে। লিখিত জবাব দাখিলের জন্য বিবাদী সর্বমােট ৬০ কার্যদিবস পর্যন্ত সময় পেতে পারেন।
২। বিবাদী যদি ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মামলাটি একতরফা নিষ্পত্তি হবে। বিবাদী লিখিত জবাব দাখিলে ব্যর্থ হওয়ার কারনে একতরফা নিষ্পত্তি করলে আপিল করা যাবে।
৩। সাক্ষ্য হিসাবে দাবীর সমর্থনে ব্যবহারের জন্য বিবাদীর দখলে থাকা দলিলসমূহ লিখিত জবাব পেশ করার সময় আদালতে হাজির করবেন এবং তখন দলিলগুলাে লিখিত জবাবের সাথে নথিভুক্ত করবেন। তবে উক্ত দলিল দখলে না থাকলে, সেক্ষেত্রে লিখিত বিবৃতির সাথে দলিলাদির তালিকা অন্তর্ভূক্ত করবেন এবং উক্ত দলিলসমূহ কার দখলে আছে তা বর্ণনা করবেন। এরপ দলিলসমূহ লিখিত জবাব দাখিলের সময় তালিকাভূক্ত না করলে পরবর্তীতে আদালতের অনুমতি ছাড়া সাক্ষ্য হিসাবে গৃহীত হবে না।
৪। লিখিত জবাবে বিবাদী নতুন ঘটনা অবশ্যই স্পষ্টভাবে উল্লেখ করবে। [বিধি ২ আদেশ ৮]
৫। বিবাদী ক্ষতিপূরণের বিষয় ব্যতীত বাদীর দাবী অস্বীকার সুনির্দিষ্ট হতে হবে। [বিধি ৩, আদেশ ৮]
৬। বিবাদী, বাদীর আরজিতে আনীত অভিযােগ সুনির্দিষ্টভাবে অস্বীকার না করলে, ধরে নেওয়া হবে বিবাদী তা স্বীকার করেছে বলে বিবেচিত হবে। [বিধি ৫, আদেশ ৮]
৭। সরকার কিংবা সরকারি কর্মচারীর বিরদ্ধে কোন মামলা করতে হলে লিখিত নােটিশ প্রদানের ২ মাস পর মামলা করা যাবে। যদি নােটিশ ছাড়া সরকারের বিরদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় তাহলে আদালত সরকারকে লিখিত বিবৃতি পেশ করার জন্য ৩ মাস সময় মঞ্জুর করবে। [ধারা ৮০]
৮। বিবাদী তার লিখিত জবাবে বাদীর দাবী চাতুরীপূর্ণভাবে অস্বীকার করবে না।
পারস্পারিক দায় শােধ (Set off)। বিধি-৬, আদেশ-৮
যখন বাদী বিবাদীর বিরদ্ধে অর্থ আদায়ের মামলা করে তখন বাদীর দাবীকৃত অর্থের সাথে বিবাদীর দাবীকৃত অর্থের সমন্বয় করার জন্য বিবাদী লিখিত আবেদন করতে পারেন প্রথম শুনানীর দিন। সেট অফ মামলার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাদীর বিবাদীর কাছে টাকা পাওনা থাকে না, বিবাদীও বাদীর নিকট টাকা পাওনা থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে বিবাদীর দাবি, বাদীর দাবির সমান বা কম হতে হবে।
কাউন্টার কেম/Counter Claim
যে অর্থ মামলার ক্ষেত্রে বাদীর দাবীকৃত পাওনা টাকার থেকে বিবাদীর দাবীকৃত পাওনা টাকার পরিমান বেশি হয়, তখন তাকে Counter Claim বলে। সেট অফ কোন Counter Claim নয়।
বিকল্প বিরােধ নিষ্পত্তি Alternative Dispute Resolution
বর্তমান ২০১২ সালের সংশােধনীর পর দেওয়ানি মামলাতে বিকল্প বিরােধ নিষ্পত্তির বিধানটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিকল্প বিরােধ নিষ্পত্তিতে কে মধ্যস্থতাকারি হবে
১। জেলা জজ কর্তৃক প্রণয়নকৃত প্যানেল থেকে মধ্যস্থতাকারি নিয়ােগ দিতে পারে। বা
২। অবসরপ্রাপ্ত জজকে নিয়ােগ দিতে পারে বা,
৩। তাদের নিযুক্ত উকিল ব্যতিত অন্য কোন উকিলকে নিয়ােগ দিতে পারে ।
কতদিনের মধ্যে মধ্যস্থতাকারি নিয়ােগের বিষয়ে আদালতকে জানাতে হয়
রেফারেন্স গ্রহনের তারিখ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতকে লিখিত ভাবে জানাতে হয়। তবে পক্ষসমুহ মধ্যস্থতাকারি নিয়ােগ করতে ব্যর্থ হলে আদালত ৭ দিনের মধ্যে একজন মধ্যস্থতাকারি নিয়ােগ দিবেন। অর্থাৎ মধ্যস্থতাকারি নিয়ােগের জন্য সর্বোচ্চ ১৭ দিন সময় পক্ষগন পেতে পারেন।
মধ্যস্থতার প্যানেল তৈরি
জেলা জজ জেলা বার এসােসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এর সাথে পরামর্শ করে অবসরপ্রাপ্ত জজ, বিরােধ নিষ্পত্তি করতে পারে এমন ব্যক্তি বা প্রজাতন্ত্রে লাভজনক পদে নিযুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদের মধ্যস্থতাকারি প্যানেল তৈরি করতে পারেন।
মধ্যস্থতা কতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে
৬০ দিনের মধ্যে মধ্যস্থতা নিষ্পত্তি করতে হবে। তবে উক্ত সময়ের মধ্যে মধ্যস্থতা নিষ্পত্তিতে ব্যর্থ হলে আদালত অনধিক ৩০ দিন সময় বর্ধিত করতে পারে। অর্থাৎ মধ্যস্থতার জন্য সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
মধ্যস্থতার ফলাফল
> মধ্যস্থতার পক্ষসমুহের আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতকে মধ্যস্থতা সম্পাদনের রিপাের্ট পেশ করবেন।
> উক্ত রিপাের্ট পক্ষ সমুহের ও সাক্ষী হিসাবে আইনজীবীগনের ও মধ্যস্থতাকারীর দস্তখত বা বৃদ্ধাংগুলির ছাপ থাকবে।
> প্রতিবেদন প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে আদালত আদেশ বা ডিক্রি প্রদান করবেন।
ADR সংক্রান্ত বিধান
১। দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ = ধারা ৮৯ক-৮৯চ
২। পারিবারিক আদালত অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫, ধারা ১০-১১
৩। গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬
৪। অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ = ধারা ২২-২৫
সালিসী (Arbitration); ধারা ৮৯খ
বিরােধ নিষ্পত্তির জন্য মামলার কার্যপদ্ধতির যে কোন পর্যায়ে মামলাটি তুলে নেওয়ার আবেদন করলে আদালত অনুমতি দিবে। পরবর্তীতে মামলাটি সালিসী আইন ২০০১ মােতাবেক নিষ্পত্তি করতে হবে।
শুধুমাত্র বাদি উপস্থিত কিন্তু বিবাদী অনুপস্থিত। বিধি-৬, আদেশ-৯
১। যদি সমন যথাযথ ভাবে জারী করা হয়, তাহলে আদালত একতরফা বিচার বা একতরফা ডিক্রি দিতে পারবেন।
২। যদি সমন যথাযথভাবে জারী না হয় সে ক্ষেত্রে আদালত বাদীকে বিবাদীর বরাবর দ্বিতীয়বার সমন জারী করার নির্দেশ দিবেন।
৩। যদি সমন যথাযথভাবে জারী হয়, কিন্তু বিবাদীকে নির্দিষ্ট দিনে হাজির হয়ে জবাব দেয়ার জন্য যথেষ্ট প্রদান করা হয় নাই, তবে আদালত মামলার শুনানী মূলতবী রাখবে এবং পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করবে।
৪। বাদীর ত্রুটির জন্য সমন জারি না হয় বা পর্যাপ্ত সময় দিয়ে জারি না হলে মামলার শুনানী স্থগিত রাখার জন্য যে খরচ হবে, বাদী তা বহন করবেন।
একতরফা ডিক্রির বিরদ্ধে বিবাদীর প্রতিকার
১। বিধি-১৩ - বিবাদী ১৩ বিধি, আদেশ ৯ অধীনে ডিক্রিদানকারী আদালতে একতরফা ডিক্রি রদ করার জন্য দরখাস্ত করতে পারবে ডিক্রিদানকারি আদালতে অর্থাৎ ছানি মামলা করবে যথাযথ কারন দেখিয়ে। অথবা
২। বিধি-১৩ক - বিধি- ১৩ক আদেশ ৯ অধীনে এক তরফা ডিক্রি সরাসরি রদ বা রহিত করার জন্য বিবাদী আবেদন করতে পারবে। সরাসরি রদ করার ক্ষেত্রে নিম্নের শর্তগুলাে পূরণ করতে হবে:
ক) আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে।
খ) দরখাস্তটির সাথে এফিডেভিট থাকতে হবে।
গ) অপর পকে নােটিশ দিতে হবে বিধি-১৪
> আদালত সরাসরি একতরফা ডিক্রি রদরে আদেশের সাথে বিবাদীকে অনধিক ৩০০০ টাকা খরচ প্রদানের আদেশ দিতে পারেন।
> একতরফা ডিক্রি সরাসরি রহিতের আদেশ একবারের বেশি হবে না।
> আদালতকে সন্তুষ্ট করার জন্য বিবাদীর অনুপস্থিতির কারন প্রমাণের জন্য সাক্ষ্য উপস্থাপন এর দরকার নেই।
৩) আপিল: যেহেতু একতরফা ডিক্রি মূল আদালত থেকে প্রদান করা হয়। সুতরাং এরপ ডিক্রির বিরদ্ধে আপিল করা যাবে। [ধারা ৯৬ (১)]
৪। রিভিউ: একতরফা ডিক্রিদানকারী আদালতে রিভিউর আবেদন করা যাবে।
৫ রিভিশনঃ যে ক্ষেত্রে আপিল করা যাবে না, তখন রিভিশন দায়ের করা যাবে।
৬ প্রবঞ্চনার (Fraud) ক্ষেত্রে একতরফা ডিক্রি রদ করার জন্য দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১৫১ এর অধীনে মামলা করা যায়।
শুধুমাত্র বিবাদী উপস্থিত কিন্তু বাদী অনুপস্থিত। বিধি-৮, আদেশ-৯
মামলার শুনানীর দিন শুধুমাত্র বিবাদী হাজির কিন্তু বাদী অনুপস্থিত। সে ক্ষেত্রে বিবাদী বাদীর দাবী মেনে নিলে বাদীর পক্ষে ডিক্রি প্রদান করবেন এবং বাদীর দাবী অস্বীকার করলে মামলা খারিজের আদেশ দিবেন ।
বাদীর প্রতিকারঃ
১। বিধি-৯ - বিধি ৮ এর অধীনে মামলা খারিজ হলে বাদী নতুন মামলা দায়ের করতে পারবে না। কিন্তু মামলা খারিজের আদেশ রদ করার জন্য দরখাস্ত করতে পারবে, যথাযথ কারন দেখিয়ে। বাদীর দরখাস্ত সম্পর্কে বিবাদীকে নােটিশ না দিয়ে আদালত মামলা খারিজের আদেশ বাতিল করবে না অথবা
২। বিধি ৯ক - বাদী মামলা খারিজের আদেশ সরাসরি রদ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে নিম্নের শর্তগুলো পূরণ করতে হবেঃ
ক) আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে।
খ) দরখাস্তটির সাথে এফিডেভিট যুক্ত থাকবে ।
গ) অপরপকে নােটিশ দিতে হবে। আদালত সরাসরি খারিজ আদেশ রদ করার আদেশের সাথে বাদীকে অনধিক ১০০০ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ দিতে পারেন।
> মামলা খারিজের আদেশ সরাসরি রদ বা বাতিলের আদেশ একবারের বেশি হবে না।
> আদালতকে সন্তুষ্ট করার জন্য বাদীর অনুপস্থিতির কারন, প্রমাণের জন্য সাক্ষ্য উপস্থাপনের দরকার নেই।
আবিষ্কার, উদঘাটন এবং পরিদর্শন। আদেশ-১১
মােকদ্দমার এক পক্ষ অপর পক্ষকে মামলার বিষয়ে লিখিতভাবে প্রশ্ন করতে পারেন এবং উক্ত প্রশ্নের প্রেক্ষিতে অপর পক্ষকেও লিখিত ভাবে উত্তর দিতে হয়। একপক্ষ প্রশ্নের মাধ্যমে কোন ঘটনার উদঘাটন করা হয়। এমনকি এক পক্ষ অপর পক্ষের দলিল প্রকাশ করতে বাধ্য করার জন্য বা দলিলপর্যালােচনা করার বা পড়ার বা উহার নকল নেওয়ার অনুমতির জন্য আদালতে প্রার্থনা করতে পারেন। ইহাকে দলিল উদঘাটন বলে।আরজি-জবাব বা দরখাস্তে বা এফিডেভিটে যদি কোন দলিলের বিষয় উলেৱখ করা হয়, তবে অপর পক্ষ, উক্ত দলিল পরিদর্শনের (Inspection) বা নকল পাবার জন্য প্রথম পক্ষকে নােটিশ প্রদান করতে পারেন, যদি নােটিশ অমান্য করেন, তবে পরিবর্তিতে উক্ত দলিল স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেনা। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে আদালত অনুমতি দিতে পারেন। নােটিশ প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে নােটিশ প্রদানকারি পক্ষকে জানতে হবে একটি নােটিশের মাধ্যমে যে ৩ দিনের মধ্যে তারা উকিলের কার্যালয় এসে দলিল পরিদর্শন করতে পারবেন।
বিচার্য বিষয় গঠন (Framing of Issues)
ঘটনা বা আইনের গুরত্বপূর্ণ বিষয়ে একপক্ষ দৃঢ়ভাবে ঘােষণা করে এবং অপরপক্ষ অস্বীকার করে, তখনই বিচার্য বিষয় সৃষ্টি হয়। একপক্ষ দ্বারা দৃঢ়ভাবে ঘােষিত এবং অপরপক্ষ দ্বারা অস্বীকৃত প্রত্যেক গুরত্বপূর্ণ বিষয় এক একটি আলাদা বিচার্য বিষয়ের সৃষ্টি করবে।
বিচার্য বিষয়ের প্রকারভেদ। [বিধি-১, আদেশ ১৪]
বিচার্য বিষয় দুই প্রকারের যথা-
১। ঘটনা বিষয়ক বিচার্য বিষয় (Issues of fact)
২। আইন বিষয়ক বিচার্য বিষয় (Issues of law)
বিচার্য বিষয় নির্ধারনের সময়। [বিধি-১, আদেশ-১৪]
মামলার লিখিত জবাব দাখিলের দিন বা মামলার প্রথম শুনানীর দিন (যেটা আগে ঘটে) থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বিচার্য বিষয় প্রণয়ন বা নির্ধারণ করতে হবে।
বিচার্য বিষয় সংশােধন এবং কর্তনের ক্ষমতা। বিধি-৫, আদেশ-১৪
আদালত ডিক্রি প্রদানের আগে যে কোন সময় বিচার্য বিষয় সংশােধন বা অতিরিক্ত বিচার্য বিষয় গঠন এবং কর্তন করতে পারে ।
চূড়ান্ত শুনানীর তারিখ নির্ধারণ। বিধি ৮ আদশে ১৪
বিচার্য বিষয় প্রণয়নের পর ১২০ দিনের ভিতরে মামলার শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
যে সব বিষয় হতে বিচার্য বিষয় প্রণয়ন করা যায়। বিধি-৩, আদেশ ১৪
১। পক্ষগণ বা তাদের প্রতিনিধি বা তাদের আইনজীবী দ্বারা শপথের মাধ্যমে উত্থাপিত অভিযােগসমূহ থেকে।
২। আরজি বা লিখিত জবাব অথবা মামলায় প্রদত্ত প্রশ্নমালার উত্তরে রচিত অভিযােগ গুলাে থেকে।
৩। কোন পক্ষ দ্বারা দাখিলকৃত দলিল পত্রের বিষয়বস্তু থেকে ।
প্রথম শুনানীতে মামলা নিষ্পত্তি
মােকদ্দমার প্রথম শুনানীর সময় আদালত মামলা নিষ্পত্তি বা রায় ঘােষনা করতে পারেন যদি দেখেন পক্ষগণের মধ্যে কোন আইন বিষয়ক বা ঘটনা বিষয়ক বিচার্য বিষয় নেই।
খরচ (Cost) ধারা-৩৫
আদালত মামলার খরচার উপর সুদ প্রদান করতে পারে বার্ষিক অনধিক ৬% হারে।
ধারা-৩৫ক
মােকদ্দমায় বা জারির কার্যপদ্ধতিতে (আপিল বাদে) কোন পক্ষের আরজিতে বা জবাবে মিথ্যা বা বিব্রতকর বা বিরক্তিকর দাবী করলে আদালত এরপ দাবী উত্থাপনকারিকে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরন মূলক খরচ দেওয়ার আদেশ দিতে পারে।
ধারা-৩৫খ
১। আদালতের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোন পক্ষ যদি মামলার যে কোন পর্যায়ে কোন আবেদন বা লিখিত জবাব দাখিলে ব্যর্থ হলে আদালত সর্বোচ্চ ২,০০০ টাকা খরচা প্রদানের আদেশ দিতে পারে।
২। লিখিত জবাব পেশ করার পূর্বেই যে দরখাস্ত পেশ করা যেত, তা যদি লিখিত জবাব পেশ করার পর দাখিল করা হয়, তাহলে আদালত অপর পকে সর্বোচ্চ ৩,০০০ টাকা খরচা প্রদানের শর্তে গ্রহণ করতে পারে। খরচা প্রদানে ব্যর্থ হলে উক্ত দরখাস্ত বাতিল হবে।
মূলতবী (Adjournment)। বিধি ১, আদেশ ১৭
১। আদালত মামলার যে কোন স্তরে সময় মঞ্জুর এবং মামলা মূলতবি রাখতে পারে।
চূড়ান্ত শুনানী বা দোতরফা শুনানীর আগে (Before Peremptory Hearing)
১। দোতরফা শুনানীর আগে আদালত ৬টির বেশি মূলতবি অনুমােদন করবে না।
২। তবে অন্যূন ২০০ টাকা (২০০ টাকার কম না) এবং অনুর্ধ্ব ১০০০ টাকা (১০০০ টাকার বেশি না) খরচসহ আদালত কোন পক্ষকে ৩টির বেশি মূলতবি অনুমােদন করবে না।
৩। মূলতবির খরচ যদি বাদী দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মামলা খারিজ হবে। কিন্তু খরচ বিবাদী দিতে ব্যর্থ হলে মামলা একতরফা নিষ্পত্তি হবে।
দোতরফা শুনানীর সময়/চূড়ান্ত শুনানীর সময়। বিধি-১, আদেশ-১৭
১। সুষ্ঠু বা ন্যায় বিচারের স্বার্থে অন্যূন ২০০ টাকা এবং অনুর্ধ্ব ১,০০০ টাকা খরচসহ আদালত কোন পক্ষকে ৩টির বেশি মূলতবি অনুমােদন করবে না।
২। মূলতবির খরচ যদি বাদী দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে মামলা খারিজ হবে। কিন্তু খরচ বিবাদী দিতে ব্যর্থ হলে মামলা একতরফা নিষ্পত্তি হবে ।
প্রতিকার
যদি বিধি ১ এর উপবিধি ৩ এবং ৪ এর অধীনে মামলা খারিজ বা এক তরফা নিষ্পত্তি হয় তবে যে পক্ষের কারনে মােকদ্দমা খারিজ বা একতরফা নিষ্পত্তি হয়, সেই পক্ষ ৩০ দিনের মধ্যে ২,০০০ টাকা ব্যয়সহ খরচ জমা দিয়ে মামলাটি পূর্নবহালের আবেদন করতে পারেন।
মামলা শুনানী ও সাক্ষীদের পরীক্ষা
১। দেওয়ানি মামলা শুরু করার অধিকার সাধারণত বাদী পক্ষের থাকে। তবে বিবাদী যদি এরপ যুক্তি প্রদর্শন করে যে, আইনগত প্রশ্ন অথবা বিবাদী কর্তৃক উত্থাপিত কোন ঘটনামূলক অভিযােগ বিবেচনায় বাদী তার দাবীকৃত প্রতিকার লাভের অধিকারী নয়, তবে সে ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষই প্রথম বক্তব্য পেশ করবেন। [বিধি-১, আদেশ- ১৮]।
২। আপিলযােগ্য মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে প্রশ্ন ও উত্তর আকারে নয় কিন্তু বিবৃতিমূলকভাবে। [বিধি-৫, আদেশ- ১৮]।
৩। যখন বিচারক দ্বারা সাক্ষ্য লিখিত হয় না, তখন প্রতিটি সাক্ষীর জবানবন্দীর একটি স্মারকলিপি (Memorandum) তৈরি করা বাধ্যতামূলক এবং এরপ মেমােরেন্ডাম বিচারক কর্তৃক স্বাক্ষরিত এবং লিখিত হবে। [বিধি-৮, আদেশ- ১৮]
৪। সাক্ষীর আচরণ (Demeanour of Witnesses) গুরত্বপূর্ণ মনে হলে আদালতে মন্তব্যকারে লিখিত রাখবে। [বিধি-১২, আদেশ- ১৮]
৫। আপিল অযােগ্য মামলায় সাক্ষীর স্মারক (Memorandum) বিস্তারিতভাবে লেখার দরকার হবে না। [বিধি- ১৩, আদেশ-১৮]।
৬। আদালত সাক্ষীকে পূন: আহ্বান এবং জবানবন্দি নিতে পারেন ।(বিধি- ১৭, আদেশ-১৮]
৭। আদালত চূড়ান্ত শুনানীর দিন ধার্য হওয়ার পর ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার শুনানী শেষ করতে পারে। [বিধি- ১৯, আদেশ- ১৮]
৮। কোন আদালত দৈনিক কার্যতালিকায় ৫টির বেশি মামলা চূড়ান্ত শুনানীর (For Peremptory Hearing) জন্য ধার্য করবে না। [বিধি- ২০, আদেশ- ১৮]
৯। কোন আদালত দৈনিক কার্যতালিকায় মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ে (In The Peremptory Hearing Stage) ১০০টির বেশি মামলা ধার্য করবে না। যদি চূড়ান্ত পর্যায়ের মামলার সংখ্যা ৭০টির নিচে নেমে আসে তাহলে আদালত চূড়ান্ত পর্যায়ে আরাে মামলা আনার ব্যবস্থা করবে।
১০। হাজির হওয়া সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিচারকের উপস্থিতিতে এবং প্রকাশ্য আদালতে মৌখিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। [বিধি-৪, আদেশ-১৮)
১১। সাক্ষী যে ভাষায় জবানবন্দি দেয়, সেই ভাষা ছাড়া ভিন্ন কোন ভাষায় জবানবন্দি লিখিত করা হলে তা সাক্ষীকে অনুবাদ করে শুনাতে হবে। [বিধি-৬, আদেশ-১৮]
১২। ১৩৮ ধারার ইংরেজিতে রেকর্ডকৃত সাক্ষ্য পড়ে শুনাতে হবে এবং স্বাক্ষর করতে হবে, দরকার পড়লে অনুবাদ করতে হবে। [বিধি-৭, আদেশ-১৮]
১৩। যেক্ষেত্রে কোন বিচারক মৃত্যু, বদলী বা অপর কোন কারনে বিচার শেষ করতে বাধাপ্রাপ্ত হন, সেক্ষেত্রে তার স্থলাভিষিক্ত বিচারক পূর্ববর্তী বিচার যে পর্যায়ে তা পরিত্যাগ করেছিলেন, সে পর্যায় হতে মামলার কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করতে পারে। [বিধি-১৫, আদেশ-১৮)।
হলফনামা (Affidavit)। ধারা-১৩৯ ও আদেশ ১৯
হলফনামা (Affidavit) বা শপথনামা সম্পর্কিত বিধান বর্নিত আছে দেওয়ানি কার্যবিধির ১৩৯ ধারায় এবং ১৯ আদেশে।
এফিডেভিটের শপথ কে পরিচালনা করবেন। ধারা ১৩৯
ক) যে কোন আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট
খ) যে কোন অফিসার বা অপর কোন ব্যক্তি যাকে সুপ্রীম কোর্ট হলফনামার শপথ পরিচালনা করার জন্য নিয়ােগ প্রদান করেন।
গ) সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত আদালত যে ব্যক্তিকে হলফনামার শপথ পরিচালনা করার জন্য নিয়ােগ প্রদান করেন।
কোন বিষয়ে এফিডেভিট দ্বারা প্রমানের জন্য আদেশ দানের ক্ষমতা। আদেশ ১৯, বিধি ১
আদালত প্রয়ােজন মনে করলে মামলার যে কোন পর্যায়ে কোন শর্ত বা ঘটনাকে এফিডেভিট দ্বারা প্রমান করার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে নির্দেশ দিতে পারবেন এবং উক্ত সাক্ষ্য আদালতে পাঠ করা যাবে। তবে কোনপক্ষ যদি জেরা করার উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তিকে হাজির করা সম্ভব, এমন সাক্ষীর ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়ার জন্য আবেদন করেন, সে ক্ষেত্রে উক্ত সাক্ষীর জবানবন্দি এফিডেভিটের মাধ্যমে গ্রহনের আদেশ দেওয়া যাবে না।
মিথ্যা এফিডেভিট প্রদানের শাস্তি
মিথ্যা এফিডেভিট প্রদান করলে দন্ডবিধির ১৯৩ ধারানুসারে দন্ডিত করা যাবে। বিচারিক কার্যক্রমে মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা জরিমানা হতে পারে।
এফিডেভিটে জবানবন্দি দাতাকে জেরা করার উদ্দেশ্যে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ। বিধি ২, আদেশ ১৯
এফিডেভিটের সাহায্যে সাক্ষ্যদানকারী সাক্ষীকে জেরা করার উদ্দেশ্যে আদালতে হাজির করার জন্য আবেদন করলে, আদালত তাকে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দিতে পারবেন।
যে যে বিষয়ে এফিডেভিট করা যাবে। বিধি ৩, আদেশ ১৯
১। এফিডেভিটকারী ঐ সকল তথ্য এফিডেভিট উল্লেখ করবে, যা সে প্রমান করতে পারবে। তবে অন্তবর্তীকালিন কোন আবেদন সম্পর্কে এফিডেভিট করলে তিনি যা বিশ্বাস করেন তাও উল্লেখ করতে পারবেন, কিন্তু সে ক্ষেত্রে তিনি তার বিশ্বাসের কারন গুলি লিপিবদ্ধ করবেন।
২। এফিডেভিট যদি অযথা কোন বিষয় বা দলিলের অংশ উদ্ধৃত করা হয়, তাহলে উক্ত এফিডেভিট দাখিলকারি পক্ষ এফিডেভিটের খরচ বহন করবেন।
রায়, ডিক্রি ও আদেশ। আদেশ ২০
মামলা শুনানীর পর আদালত রায় ঘােষণা করবে এবং এরপ রায়ের ভিত্তিতে ডিক্রি প্রদান করবে।
সুদ (Interest)। ধারা ৩৪
অর্থের মামলার ক্ষেত্রে মামলার তারিখ থেকে ডিক্রির তারিখ পর্যন্ত যে সুদ হয়, তা প্রদানের জন্য আদালত ডিক্রিতে উল্লেখ করে দিতে পারেন। তবে আদালত ডিক্রির মধ্যে সুদ সম্পর্কে উল্লেখ না করলে বা নিরব থাকলে আদালত সুদ অগ্রাহ্য করেছে বলেবিবেচিত হবে।
ডিক্রি প্রদানকারী আদালতের সংজ্ঞা। ধারা ৩৭
ডিক্রিজারি বিচারকারী আদালতই করবে। অনুরূপ ডিক্রির বিপক্ষে আপিল হলেও এই আপিল আদালতের ডিক্রিও মূল আদালতকেই জারি করতে হবে অর্থাৎ উচ্চতর আদালতে কোনোরূপ আপিল করা হলে, সেক্ষেত্রেও মূল আদালতই ডিক্রি জারি করবে। আপিল আদালতের ডিক্রিকে প্রাথমিক আদালতের ডিক্রি হিসাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
রায় (Judgment) কখন ঘােষিত হয়। বিধি-১, আদেশ-২০
১। মােকদ্দমার শুনানী সমাপ্ত হবার পর আদালত সাথে সাথে (at once) অথবা পরবর্তী কোন তারিখে, যা ৭ দিনের বেশি হবে না, প্রকাশ্যভাবে মামলার রায় প্রদান করবেন। রায় প্রকাশ্য আদালতে ঘােষিত হবে।
২। রায় বিচারক দ্বারা তারিখসহ স্বাক্ষরযুক্ত হবে। [বিধি-৩, আদেশ-২০]।
ডিক্রি প্রস্তুত। বিধি- ৫ক, আদেশ-২০
রায় ঘােষণার তারিখ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রি প্রণয়ন বা প্রস্তুত করতে হবে।
স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ডিক্রি। বিধি-৯, আদেশ-২০
স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ডিক্রি দিলে সে ক্ষেত্রে উক্ত স্থাবর সম্পত্তি সনাক্ত করার জন্য যথেষ্ট বর্ণনা থাকতে হবে এবং সম্পত্তির চৌহদ্দি বা সেটেলমেন্ট রেকর্ডের নম্বর বা জরিপের সংখ্যা ডিক্রিতে উল্লেখ থাকবে ।
অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ডিক্রি। বিধি-১০, আদেশ-২০
অস্থাবর সম্পত্তি অর্পনের (Delivery) ডিক্রিতে বিকল্প প্রতিকার হিসেবে টাকার পরিমান উলেৱখ থাকবে।
রায়, ডিক্রি বা আদশেগুলাের সংশোধন। ধারা-১৫২
রায়, ডিক্রি বা আদেশ সংশােধন যে কোন সময় আদালত নিজস্ব উদ্যেগে (Own motion) বা কোন পক্ষের আবেদনে করতে পারে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
১। কেরানীর ভুল (Clarical Mistakes)
২। গানিতিকভুল (Arithmetical Mistakes)
৩। আকস্মিক ভুল (Accidental Slip) বা বিচ্যুতির (Omission) কারনে রায় ডিক্রি বা আদেশে ভুল হলে।
ডিক্রি এবং আদেশ জারি। আদেশ-২১
১। যে আদালত ডিক্রি প্রদান করেছে।
২। যে আদালতে ডিক্রি জারী করার জন্য পাঠানাে বা স্থানান্তর করা হয়েছে।
ডিক্রি জারীকারি আদালতের ডিক্রির বিষয়বস্তুর বাইরে কোন বিষয় বিবেচনা করার এখতিয়ার থাকবে না।
ডিক্রি স্থানান্তরের আবেদন কে করবেন।
১। মামলার পসমূহ অথবা।
২। আদালত নিজেই (Suo motu/ own motion)।
যে আদালতে ডিক্রি জারীর আবেদন করতে হয়। বিধি-১০, আদেশ-২১
১। ডিক্রি প্রদানকারী আদালত।
২। এই মর্মে নিযুক্ত অফিসারের নিকট।
৩। যে আদালতে ডিক্রি জারির জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে, সেই আদালত বা উক্ত আদালতের কর্মকর্তার নিকট।
ডিক্রি জারীর দরখাস্ত। বিধি-১১, আদেশ-২১
১। অর্থ পরিশােধের মামলায় ডিক্রি জারির আবেদন মৌখিকভাবে করা যায় ।
২। অন্যান্য মামলার ডিক্রি জারির আবেদন লিখিতভাবে করতে হয়।
ডিক্রি স্থানান্তরের পদ্ধতি। বিধি-৫, আদেশ-২১
১। যেক্ষেত্রে ডিক্রি প্রদানকারী আদালত এবং যে আদালতে ডিক্রিজারী করার জন্য স্থানান্তর করা হবে, তা একই জেলায় অবস্থিত, সেক্ষেত্রে ডিক্রিদানকারী আদালত সরাসরি ডিক্রি হস্তান্তর করতে পারবে।
২। যেক্ষেত্রে ডিক্রি প্রদানকারী আদালতে এবং যে আদালতে ডিক্রিজারী করার জন্য স্থানান্তর করা হবে, তা অন্য জেলায় অবস্থিত, সেক্ষেত্রে ডিক্রিদানকারী আদালত ডিক্রি জারীর জন্য ডিক্রিটি উক্ত জেলার জেলা আদালতের (জেলা জজ) নিকট স্থানান্তর করবে এবং জেলা আদালত সংশ্লিষ্ট আদালতে ডিক্রিটি প্রেরণ করবেন।
স্থানান্তরিত ডিক্রিজারিকারী আদালতের ক্ষমতা। ধারা-৪২
এইক্ষেত্রে ডিক্রি প্রদানকারী আদালত এবং স্থানান্তরিত ডিক্রিজারীকারী আদালতের ক্ষমতা একই থাকবে । (ধারা ৪২) তবে উক্ত আদালত ডিক্রি জারি করতে ব্যর্থ হলে ডিক্রি প্রদানকারী আদালতকে অবহিত করবেন। (ধারা-৪১)
বিচারকের আদেশ পত্র/আদেশনামা (Precepts)। ধারা- ৪৬
Decree Holder এর আবেদনক্রমে ডিক্রিদানকারী আদালত ডিক্রিজারী করতে পারে অন্য কোন উপযুক্ত আদালত কে Judgment debtor (যার বিরদ্ধে ডিক্রি দেয়া হয়) এর মালিকানাধীন সম্পত্তি ক্রোক করার জন্য আদেশপত্র জারি করতে পারেন। আদেশনামার আওতাধীন কোন ক্রোক আদেশ ২ মাসের বেশি কার্যকর থাকবে না।
ডিক্রিজারির তামাদি বা সময়সীমা। ধারা-৪৮
১। নিষেধাজ্ঞার ডিক্রি ছাড়া অন্যান্য ডিক্রি জারির আবেদন করতে হয়-সর্বোচ্চ ১২ বছরের মধ্যে।
২। সাব্যস্থ দেনাদার বা দায়িক (Judgment Debtor) যদি প্রতারণা বা প্রবঞ্চনা বা শক্তি প্রয়ােগ করে ডিক্রিজারীতে বাধা দেয় তাহলে ১২ বছরের পরও ডিক্রিজারীর আবেদন করা যাবে।
৩। জারীর দরখাস্ত ডিক্রির ২ বছর পর দায়ের করা হলে দায়িকের উপর নােটিশ জারী করতে হবে। [বিধি-২২, আদেশ- ২১]
৪। দেওয়ানি আদালতের যে ডিক্রিজারী বা আদেশ কার্যকর সম্পর্কে তামাদি আইনের ১৮৩ অনুচ্ছেদে বা দেওয়ানি কার্যবিধির ৪৮ ধারায় কোন বিধান নাই তা জারি বা কার্যকর করার জন্য দরখাস্ত ৩ বছরের মধ্যে করতে হবে। তবে যেখানে ডিক্রি বা আদেশের কপি রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ডিক্রি জারীর আবেদনটি ৬ বছরের মধ্যে দাখিল করতে হবে। [অনুচ্ছেদ ১৮২, তামাদি আইন ১৯০৮]
৫। তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১৮৩ অনুচ্ছেদ মতে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক সাধারণ আদি দেওয়ানি এখতিয়ার প্রয়ােগের সময় যে রায়, ডিক্রি বা আদেশ বা সুপ্রীম কোর্টের কোন আদেশ কার্যকর করার জন্য ১২ বছরের মধ্যে দরখাস্ত দায়ের করতে হবে।
মামলা প্রত্যাহার (Withdrawal of Suit)
১। আদালতের অনুমতি ছাড়া মামলা প্রত্যাহার করলে নতুন মামলা দায়ের করতে পারবে না। তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে মামলা প্রত্যাহার করলে নতুন মামলা দায়ের করতে পারবেন। [বিধি ১, আদেশ ২৩]।
২। একের অধিক বাদী থাকলে সকলের সম্মতি নিয়ে মামলা প্রত্যাহার করার আবেদন করতে হবে।
৩। আদালতের থেকে পুনরায় মামলা দাখিলের অনুমতি নিয়ে মামলা প্রত্যাহার করা হলে তামাদি আইনে প্রভাবিত করবে না। ধরে নিতে হবে যে প্রথম মামলা করা হয় নাই। (বিধি- ২, আদেশ ২৩]
৪। বাদী সম্পূর্ণ মামলাটি প্রত্যাহার বা তার দাবীর আংশিক পরিত্যাগ করতে পারে। [বিধি-১, আদেশ-২৩]
রিসিভার/তত্ত্বাবধায়ক নিয়ােগ (Appointment of Recivers): বিধি-১, আদেশ80
আদালতের নিকট ন্যায় সংগত ও সুবিধাজনক (Just and Conveninent) বলে মনে হলে আদালত আদেশ দিতে পারে:
১। ডিক্রির আগে বা পরে সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক নিয়ােগের ।
২। সম্পত্তির দখল বা তত্ত্বাবধান থেকে কোন ব্যক্তিকে অপসারণ করার।
৩। উক্ত সম্পত্তি রিসিভারের দখলে তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থাপনায় রাখার । এবং
৪। মামলা দাখিল ও আত্মপৰ সমর্থন সম্পর্কে এবং সম্পত্তি আদায়করণ ব্যবস্থাপনা নিরাপদ করণ, সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের জন্য খাজনা ও মুনাফার প্রয়ােগ হস্তান্তর এবং দলিল সম্পাদন সম্পর্কে মালিকের নিজের যেরূপ ক্ষমতা আছে সেরূপ ক্ষমতা যথাক্রমে মনে করে তত্ত্বাবধায়ক এর নিকট অনরূপ সব ক্ষমতা প্রদান করতে পারে।
প্রতিকার
রিসিভার নিয়ােগের আদেশের বিরদ্ধে আপিল করা যায়। [আদেশ ৪৩]
কালেক্টর যখন তত্ত্বাবধায়ক হতে পারে। বিধি-৫, আদেশ ৪০
সরকারের রাজস্ব প্রদানকারী ভূমি বা যে ভূমির রাজস্ব হস্তান্তরিত হয়েছে, সেই জমির ব্যবস্থাপনা করার জন্য কালেক্টরকে রিসিভার হিসাবে নিয়ােগ দিতে পারে।
সংবিধানের /শাসনতান্ত্রিক আইনের ব্যাখ্যা সম্পর্কে কোন মামলা
১। সংবিধান বা শাসনতান্ত্রিক আইনের ব্যাখ্যা সম্পর্কিত গুরূত্বর্পণ প্রশ্নে কোন মামলায় জড়িত যা সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টরা, সেক্ষেত্রে এ্যাটর্নী জেনারেলকে নােটিশ না দিয়ে আদালত এরপ মামলা নিষ্পত্তি করবে না। [বিধি ১, আদেশ ২৭ক]।
২। এরপ মামলায় এ্যাটর্নী জেনারেল সরকারকে পক্ষ করার জন্য আবেদন করলে, আদালত প্রয়ােজন মনে করলে সরকারকে পক্ষভুক্ত করতে পারবেন।
মামলায় কে Next Friend বা অভিভাবক হতে পারে
১। সুস্হমনা ও প্রাপ্তবয়স্ক যে কোন ব্যক্তি যদি না তার স্বার্থ ও নাবালকের স্বার্থ পরস্পর বিরােধী হয় এবং উক্ত ব্যক্তি উক্ত মামলার কোন বাদী বা বিবাদী হবেন না।
২। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ দ্বারা নাবালকের অভিভাবক নিযুক্ত করলে তাকে আদালতের আদেশ ছাড়া অন্যকে অভিভাবক বা Next Friend হিসাবে নিযুক্ত হতে পারবে না।
৩। কোন ব্যক্তিকে তার সম্মতি ছাড়া অভিভাক করা হবে না।
৪। মামলায় নাবালকের পক্ষে অভিভাবক না পাওয়া গেলে আদালত তার কোন কর্মচারীকে অভিভাবক নিযুক্ত করতে পারবেন।
আসন্ন বন্ধু/অভিভাবকের অপসারণ। বিধি ৯, আদেশ ৩২
১। আদালত যদি দেখেন যে, অভিভাবক অযােগ্য বা কর্তব্য পালন করছেন না বা উক্ত অভিভাবক কর্তৃক নাবালকের স্বার্থ সংরক্ষণ সম্ভব না বা তিনি মামলা চলাকালীন সময় দেশের বাইরে থাকে, তাহলে আদালত যে কোন পক্ষের আবেদনক্রমে উক্ত অভিভাবককে অপসারণ করতে পারবেন।
২। অভিভাবকের অবসরগ্রহণ, অপসারণ বা মৃত্যু হলে আদালত নতুন অভিভাবক নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত' রাখবেন ।
নাবালক বাদি সাবালকত্ব অর্জন করলে
১। সাবালকত্ব অর্জনের পর নিজ নামে মামলা এবং অভিভাবক অপসারনের জন্য আবেদন করতে পারেন।
২। মামলার কার্যক্রম স্থগিত করতে চেয়ে আবেদন করলে, আদালত খরচ প্রদানের নির্দেশ দিয়ে মামলা খারিজ করতে পারেন। তবে খরচ প্রদান না করলে আবেদনপত্রটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
নিঃস্ব ব্যক্তি (Pauppers)। বিধি ১, আদেশ ৩৩
যে ব্যক্তির মামলার আরজির জন্য নির্ধারিত ফি প্রদানের ক্ষমতা নেই বা সে ক্ষেত্রে পরিধেয় বস্ত্রাদি এবং মামলার বিষয়বস্তু ব্যতীত ৫,০০০ টাকা মূল্যের কোন সম্পত্তি নেই, তাকে নিঃস্ব ব্যক্তি বলে। নিঃস্ব ব্যক্তি যে কোন মামলা দায়ের করতে পারে।
নিঃস্বতার অবসান (Dispauppering)
১। মামলা চলাকালে বাদী অসঙ্গত বা বিরক্তিকর আচারণ করলে।
২। যদি বাদীর কোর্ট ফি দেয়ার মত ক্ষমতা থাকে ।
৩। যদি বাদী মামলার বিষয়বস্তু হস্তান্তর বা হস্তান্তর করার চুক্তি করে।
আপিল (Appeal)
নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন মামলার রায়ের বিরদ্ধে যে কোন সংক্ষুদ্ধ পক্ষ উক্ত মামলার রায় বাতিল বা সংশােধন বা বিচারিক পর্যালােচনার জন্য উচ্চ আদালতে মেমােরেন্ডামের আকারে যে দরখাস্ত দাখিল করা হয়, তাকে আপিল বলে ।
আপিল করা যায়
১। মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল (ধারা ৯৬-৯৯, আদেশ ৪১)
২। আদেশের বিরুদ্ধে আপিল (ধারা ১০৪-১০৬, আদেশ ৪৩)
কে আপিল করতে পারে
১। ডিক্রি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ বা তার বৈধ প্রতিনিধি
২। রায় বা ডিক্রি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ গ্রহীতা।
৩। স্বার্থ আছে এমন যে কোন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি আদালতের অনুমতি নিয়ে ।
৪। নাবালকের ক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত আইনগত অভিভাবক।
মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল। ধারা- ৯৬
১। মূল এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের প্রত্যেক ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। [৯৬ (১)]
২। একতরফা ভাবে প্রদত্ত মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল চলবে । [৯৬(২)]
কখন আপিল চলবে না
১। পক্ষগণের সম্মতির ভিত্তিতে প্রদত্ত ডিক্রি অর্থাৎ সােলে ডিক্রির (Compromise Decree) বিরুদ্ধে। ধারা ৯৬(৩)]
২। ক্ষুদ্রবিষয়ক আদালতের ডিক্রির বিরদ্ধে।
৩। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারার অধীনে প্রদত্ত আদালতের সিদ্ধান্তের বিরদ্ধে।
প্রাথমিক ডিক্রি থেকে আপিল না করলে। ধারা- ৯৭
প্রাথমিক ডিক্রিতে যে বিষয় নিষ্পত্তি হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আপিল না করলে চূড়ান্ত ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করে উক্ত বিষয়ে আপত্তি বা সংশােধন করা যাবে না।
ডিক্রি পরিবর্তন বা সংশােধন। ধারা-৯৯
মামলার Merit বা আদালতের এখতিয়ারকে ক্ষুন্ন না করলে সাধারণ ভুল, ত্রুটির জন্য বা অনিয়মের জন্য ডিক্রি পরিবর্তণ বা সংশােধন করা যায় না।
আপিলে মুলতবি (Adjournment in Appeal)
১। কোন পক্ষের অনুরােধে আপিল আদালত সর্বোচ্চ ৩ বার মূলতবী অনুমােদন করতে পারে।
২। তবে আদালত এই ক্ষেত্রে মূলতবী দাবীকারি পক্ষকে ২০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১,০০০ টাকা খরচ অপর পক্ষকে প্রদানের নির্দেশ দিবেন ।
৩। Appellant এরপ নির্দেশ অমান্য করলে আপিলটি খারিজ হয়ে যাবে এবং Respondent এরূপ নির্দেশ অমান্য করলে আপিলটি একতরফা নিষ্পত্তি হবে।
৪। একতরফা আপিলটি খারিজ বা নিষ্পত্তি হলে তা পুনরুজ্জীবিত করতে হলে ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। আদালত আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করলে অন্যূন ২০০ টাকা এবং অনধিক ১,০০০ টাকা খরচা প্রদানের আদেশ দিবেন। তবে এরূপ পুনরুজ্জীবিত ১ বারের বেশি করা যাবে না।
আপিলকারির প্রতিকার। বিধি ১৯ ও ১৯ক
১। আপিল খারিজ হলে আপিলকারি যথাযথ কারন দেখিয়ে পুনরায় আপিল মঞ্জুরের জন্য আপিল আদালতে আবেদন করতে পারবেন। [বিধি ১৯] । তবে আবেদন পুনরায় মঞ্জুর করতে আদালত অস্বীকার করলে, উক্ত আদেশের বিরদ্ধে আপিল চলবে। আদেশ ৪৩।
২। আপিল খারিজ হলে, আপিলকারী যথাযথ কারন উল্লেখ না করে সরাসরি আপিল পুন:গ্রহনের আবেদন করতে পারেন। তবে আবেদনটি এফিডেভিট সহযােগে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে। তবে ১৯ক বিধির অধীনে এক বারের বেশি সরাসরি আপিল পুন:গ্রহনের আবেদন করা যাবে না।
আদালত দ্বারা মামলা পুন:বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে প্রেরণ
আপিল আদালত যদি মনে করেন যে, কতকগুলাে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আদালত মামলা নিষ্পত্তি করার সময় বিবেচনায় নেয়নি, তাহলে আপিল আদালত উক্ত মামলার বিচার্য বিষয় নির্ধারণ করে নিম্ন আদালতে পুনরায় বিচার করার জন্য প্রেরণ করতে পারেন। যা আইনের ভাষায় Remand বলে বিবেচিত হয়। আপিলযােগ্য মামলার ক্ষেত্রে এরূপ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল চলবে।
যেক্ষেত্রে আপিল আদালতের অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারে- বিধি-২৭, আদেশ - ৪১
১। ডিক্রি প্রদানকারি আদালত এমন সাক্ষ্য প্রমান গ্রহণ করতে অস্বীকার করে যা গ্রহণ করা উচিত ছিল।
২। রায় প্রদানের সুবিধার জন্য আপিল আদালতে দলিল দাখিল বা কোন জবানবন্দী গ্রহনের দরকার হলে।
আদেশের বিরদ্ধে আপিল। ধারা- ১০৪, ১০৬ এবং আদেশ ৪৩
যে সকল আদেশ থেকে আপিল করা যায়। ধারা ১০৪
১। ৩৫ক ধারার আওতায় প্রদত্ত আদেশ।
২। ৯৫ ধারার আওতায় প্রদত্ত আদেশ।
৩। ডিক্রি জারিতে গ্রেফতার বা দেওয়ানি কারাগারে আটকের আদেশ ছাড়া আইনের যে কোন বিধানের আওতায় জরিমানার বা কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার বা দেওয়ানি কারাগারে আটক করার নির্দেশমূলক আদেশ।
৪। যেখানে নিয়মাবলীর দ্বারা আপিল ব্যক্তভাবে মঞ্জুর করা হয়।
আদেশগুলাে হতে আপিল ৪
১০৪ ধারা অনুযায়ী নিম্নোক্ত আদেশসমূহের বিরুদ্ধে আপিল করা চলবে, যথা-
ক) আদেশ-৭ এর ১০ অনুযায়ী যথাযথ আদালতে পেশ করার জন্য আরজি ফেরত প্রদানের আদেশ;
খ) আদেশ-৮ এর ১০ অনুযায়ী কোন পক্ষের বিরুদ্ধে রায়সহ আদেশ
গ) আদেশ-৯ এর ৯ অনুযায়ী মামলা খারিজ আদেশ রদ করার জন্য দরখাস্ত (আপিলযােগ্য মামলায়) অগ্রাহ্য করে প্রদত্ত আদেশ;
ঘ) আদেশ-৯এর ১৩ অনুযায়ী একতরফা প্রদত্ত ডিক্রি রদ করতে আদেশের জন্য দরখাস্ত (আপিলযােগ্য মামলায়) অগ্রাহ্য করে প্রদত্ত আদেশ;
ঙ) আদেশ-১০ এর ৪ অনুযায়ী কোন পক্ষের বিরুদ্ধে প্রদত্ত রায় সম্বলিত আদেশ
চ) আদেশ-১১ এর ২১ অনুযায়ী আদেশ
ছ) আদেশ-১৬ এর ১০ অনুযায়ী সম্পত্তি ক্রোকের জন্য প্রদত্ত আদেশ
জ) আদেশ-১৬ এর ২০ অনুযায়ী কোন পক্ষের বিরুদ্ধে রায় সম্বলিত আদেশ,
১) আদেশ-২১ এর ৩৪ অনুযায়ী কোন দলিলের বা পৃষ্ঠালিপির আরজির বিরুদ্ধে আপত্তি প্রসঙ্গে আদেশ;
২) আদেশ-২১ এর ৬০ অনুযায়ী ক্রোক হতে সম্পত্তি মুক্ত করা;
৩) আদেশ-২১ এর ৬১ অনুযায়ী সম্পত্তি ক্রোকের নালিশ প্রত্যাখ্যান করা
ঞ) আদেশ ২১ এর ৭২ এ নিয়ম ৯২ অনুযায়ী নিলাম বিক্রয় রদ করে বা রদ করতে অস্বীকার করে আদেশ,
ট) আদেশ-২২ এর ৯ অনুযায়ী বিলুপ্তিকরণ বা মামলা রহিত রদ করতে অস্বীকার করে আদেশ
ঠ) আদেশ-২২ এর ১০ অনুযায়ী অনুমতি দিয়ে বা অনুমতি দিতে অস্বীকার করে কোন আদেশ
ড) আদেশ-২৩ এর ৩ অনুযায়ী কোন চুক্তিপত্র, আপসনামা বা পরিতুষ্টি লিখিত করে বা লিখিত করতে অস্বীকার করে কোন আদেশ;
ঢ) আদেশ-২৫ এর ২ অনুযায়ী মামলা বাতিলের আদেশ রদ করার জন্য কোন আবেদনপত্র (আপিলে উন্মুক্ত মামলার বেলায়) নাকচ করে কোন আদেশ
ণ) আদেশ-৩৪ এর ২, ৪ বা ৭ অনুযায়ী বন্ধকী অর্থ পরিশােধের সময়সীমা বর্ধিত করা অগ্রাহ্য করে কোন আদেশ;
ত) আদেশ-৩৫ এর ৩, ৪ বা ৬ অনুযায়ী স্বার্থবিহীন মামলায় কোন আদেশ
থ) আদেশ-৩৮ এর ২, ৩ ৰা ৬ অনুযায়ী কোন আদেশ;
দ) আদেশ-৩৯ এর ১, ২, ৪ বা ১০ অনুযায়ী কোন আদেশ;
ধ) আদেশ-৪০ এর ১ বা ৪ অনুযায়ী কোন আদেশ;
ন) আদেশ-৪১ এর ১৯ অনুযায়ী পুনঃগ্রহণ বা আদেশ-৪১ এর ২১ অনুযায়ী কোন আপিলে পুনঃশুনানীর অস্বীকার সম্বলিত কোন আদেশ;
প) যেক্ষেত্রে আপিল আদালতের ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করা চলে, সেক্ষেত্রে আদেশ-৪১ এর ২৩ অনুযায়ী মামলা পুনঃবিচারের জন্য প্রেরণের আদেশ;
ফ) আদেশ-৪৫ এর ৬ অনুযায়ী প্রত্যয়নপত্র প্রদান করতে অস্বীকার করে হাইকোর্ট ছাড়া অপর কোন আদালত দ্বারা প্রদত্ত আদেশ;
ব) পুনর্বিচারের আবেদন অনুমােদন করে আদেশ-৪৭ এর ৪ অনুযায়ী প্রদত্ত আদেশ।
আপিল আদালতের ক্ষমতা। ধারা ১০৭, বিধি-৩৩, আদেশ-৪১
১। মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করার।
২। মামলা পূর্নবিচারে প্রেরণ করার।
৩। বিচার্য বিষয় গঠন ও সেগুলি বিচারের জন্য প্রেরণ করার।
৪। অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্ৰহণ বা অনরূপ সাক্ষ্য গ্রহণ করার জন্য তলব করার ক্ষমতা।
কখন সুপ্রীম কোর্টের নিকট আপিল চলবে। ধারা-১০৯
আপিল কোন আদালতে করতে হবে s. 21, The Civil Court Act,1887
১। সহকারী জজ, সিনিয়র সহকারী জজ এবং যুগ্ম জজ আদালতের ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করতে হবে জেলা জজের আদালতে।
২। তবে যুগ্ম জেলা জজের ডিক্রি বা আদেশের মূল্যমান ৫ কোটি টাকার অধিক হলে আপিল দায়ের করতে হবে হাইকোর্ট বিভাগে।
৩। জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের রায় বা ডিক্রির বিরদ্ধে আপিল যাবে হাইকোর্ট বিভাগে।
আপিল দায়েরের তামাদি
১। জেলা জজের নিকট কোন রায়, ডিক্রি বা আদেশের বিরদ্ধে আপিল করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। [অনুচ্ছেদ ১৫২, তামাদি আইন ১৯০৮)।
২। হাইকোর্ট বিভাগে কোন রায়, ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে হয় ৯০ দিনের মধ্যে। [অনুচ্ছেদ ১৫৬, তামাদি আইন ১৯০৮)
রেফারেন্স (Referance) ১১৩ ধারা ও আদেশ ৪৬
অভিমত বা Referance কি
অধ:স্তন কোন আদালত কোন সময়ে যদি প্রয়ােজন মনে করে, তাহলে মােকদ্দমার বিষয়ে মতামতের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করতে পারে। হাইকোর্ট বিভাগে এরূপ অভিমত চাওয়াকে Referance বলে।
রেফারেন্স সম্পর্কিত বিধান
দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১১৩ ও আদেশ ৪৬।
রেফারেন্সের আবেদন কে করতে পারে?
হাইকোর্ট বিভাগের অধ:স্তন আদালত।
কি বিষয়ে রেফারেন্স চাওয়া যায়
তথ্যগত ও আইনগত জটিল প্রশ্ন বিষয়ে।
রেফারেন্স চাওয়া হয় কোন আদালতে
হাইকোর্ট বিভাগে রেফারেন্স চাওয়া হয়।
রিভিউ (Review) ১১৪ ধারা, আদেশ ৪৭
রিভিউ (Review) কি
সাধারণত রিভিউ বলতে বুঝায় যে আদালত রায় প্রদান করেছে, উক্ত আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় পুর্ণবিবেচনা বা পুনরায় দেখা বা বিচারক পর্যালােচনা কে রিভিউ বলে।
রিভিউ সম্পর্কিত বিধান
দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১১৪ এবং আদেশ ৪৭ রিভিউ সম্পর্কিত বিধান নিয়ে আলােচনা করে।
কে রিভিউ আবেদন করবে?
যে পক্ষ আদালতের ডিক্রি বা আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ হয়, সেই পক্ষ রিভিউ আবেদন করতে পারে।
কোথায় রিভিউ আবেদন করতে হয়?
যে আদালত ডিক্রি বা আদেশ প্রদান করে, সেই একই আদালতে রিভিউর আবেদন করতে হয়।
কখন রিভিউ আবেদন করা যায়
১। যে ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা চলে কিন্তু আপিল করা হয় নাই।
২। যে ডিক্রি বা আদেশের বিরদ্ধে আপিল চলে না।
৩। ক্ষুদ্ৰ বিয়ষকে আদালতে রেফারেন্স প্রদত্ত সিদ্ধান্ত।
রিভিউ আবেদন করার শর্তসমূহ
১। মামলা সম্পর্কে নতুন এবং গুরত্বপূর্ণ কোন বিষয় আবিষ্কার হলে।
২। মামলার নথিতে ভুল বা স্পষ্টত কোন ভ্রান্তি থাকলে।
৩। অন্য কোন পর্যাপ্ত কারনে।
রিভিউ আবেদনের সময়সীমা
ডিক্রি বা আদেশ প্রদানের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে হয়।
প্রতিকার
১। রিভিউ আবেদন মঞ্জুর করলে তার বিরুদ্ধে আপিল চলে। [আদেশ ৪৩] তবে রিভিউর আবেদন না মঞ্জুর করলে রিভিশন চলবে।
রিভিশন (Revision) ১১৫ ধারা
রিভিশন (Revision) কি।
রিভিশন বলতে বুঝায়, নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডিক্রি বা আদেশ উচ্চ আদালত কর্তৃক বিচারিক প্রতিকার সংশােধন করা।
রিভিশন সম্পর্কিত বিধান
দেওয়ানি কার্যবিধির ১১৫ ধারায় রিভিশন সম্পর্কিত বিধান আছে।
কে রিভিশন আবেদন করবে
ডিক্রি বা আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ যে কোন পক্ষ।
কোথায় রিভিশন আবেদন করতে হয়
নিম্ন আদালতের ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়ের করতে হয়।
কোন আদালতগুলােকে রিভিশন এখতিয়ার দেওয়া আছে।
২টি আদালতকে যথা:
১। হাইকোর্ট বিভাগ
২। জেলা জজ আদালত।
রিভিশন দায়েরে শর্তসমুহঃ
১। নিম্ন আদালত কর্তৃক ডিক্রি বা আদেশ প্রদত্ত হবে।
২ ডিক্রি বা আদেশ আলিযােগ্য নয়
৩। গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রশ্নে ভুল ও ন্যায় বিচার বিঘ্ন ঘটে।
হাইকোর্ট বিভাগে যখন রিভিশন দায়ের করতে হয়। ধারা-১১৫
হাইকোর্ট বিভাগে নিম্নে বর্ণিত ক্ষেত্রে রিভিশন দায়েরের আবেদন করা যাবে।
ক) জেলা জজ আদালত বা অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে
খ) সহকারি জজ আদালত বা সিনিয়র সহকারী জজ আদালত বা যুগ্ম জেলা জজ আদালতের ডিক্রির বিরুদ্ধে।
জেলা জজ আদালতে যখন রিভিশন দায়ের করতে হয়। ধারা-১১৫
নিম্নে বর্ণিত আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করা যায় জেলা জজ আদালতে
ক) সহকারী জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে
খ) সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে
গ) যুগ্ম জেলা জজের আদেশ বিরুদ্ধে
পুনরুদ্ধারের জন্য আবেদন। ধারা ১৪৪
Restitution (প্রত্যার্পণ)
১। যদি কোন ডিক্রি বা আদেশ পরিবর্তন বা রদ করা হয় এবং অনুরূপ ডিক্রি বা আদেশের দ্বারা (যার পক্ষে ডিক্রি বা আদেশ পরিবর্তন বা রদ করা হয়) ঐ পক্ষ কোন সুবিধা পাবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, তিনি তা ফিরে পাবার জন্য প্রত্যার্পনের দরখাস্ত করতে পারেন।
২। দখল প্রত্যার্পনের আদেশ আদালতের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা নয় বরং আইনানুগভাবে আদালতের উপর ন্যাস্ত।
৩। প্রত্যার্পনের দরখাস্তে ১৪৪ ও ১৫১ ধারা উল্লেখ করা যেতে পারে।
দেওয়ানি আদালতের সহজাত ক্ষমতা। দেওয়ানী কার্যবিধি - ধারা ১৫১
অন্তর্নিহিত/সহজাত ক্ষমতা inherent power
কোন দেওয়ানি আদালত কর্তৃক ন্যায় সংগতভাবে বিচারকার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে উক্ত আদালতের উপর অর্পিত বিশেষ এখতিয়ার সম্পন্ন ক্ষমতা প্রয়ােগ করার অধিকারকে সহজাত ক্ষমতা বলে।
শর্ত সমূহ:
১। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে অথবা
২। আদালতের কার্যপ্রণালীর অপব্যবহার রােধ করার জন্য