- Get link
- X
- Other Apps
অজাত ব্যক্তি ।
সম্পত্তি হস্তান্তর।
আংশিক সম্পাদন নীতি।
কোনাে অজাত ব্যক্তির অনুকুলে কি আইনসংগভাৰে কোনাে সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায়? যদি পারা যায় তবে কীভাবে? অজাত ব্যক্তি বা বাস্তবে অস্তিত্ব নেই এমন ব্যক্তির ‘আংশিক সম্পাদন নীতি' টি ব্যাখ্যা পূর্বক আলোচনা।
অজাত ব্যক্তির অনুকুলে আইনসংগতভাবে কোনাে সম্পত্তি হস্তান্তর:
উত্তর: সম্পত্তি হস্তান্তর আইন অনুযায়ী অজাত ব্যক্তির অনুকূলে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় না। যেমন এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন জীবিত ব্যক্তি শুধু কোন জীবিত ব্যক্তিকে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে। কিন্তু এই আইনের ১৩ এবং ১৪ ধারা অনুযায়ী কিছু শর্ত সাপেক্ষে অজাত ব্যক্তির অনুকূলে সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায়। আবার ২০ ধারায় বলা হয়েছে- কোন সম্পত্তি হস্তান্তর দ্বারা যদি অজাত ব্যক্তির স্বার্থ সৃষ্টি করা হয় বা তার লাভের জন্য করা হয় তাহলে জন্ম হওয়ার সাথে সাথে সে উক্ত সম্পত্তিতে কায়েমী স্বার্থ লাভ করবে। তবে ভােগ-দখলের অধিকারী হবে না। পরিশেষে বলা যায়- সাধারণভাবে অজাত ব্যক্তির অনুকূলে সম্পত্তি হস্তান্তর করা না গেলেও শর্ত সাপেক্ষে করা যায়।
যদি পারা যায় তবে কীভাবে?
নিমোক্তভাবে বা নিম্নোক্ত শর্তে অজাত ব্যক্তির বরাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় :
(i) অজাত ব্যক্তিকে সম্পত্তি হস্তান্তরের পূর্বে এক বা একাধিক ব্যক্তির অনুকূলে জীবনস্বত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
(ii) যাদের অনুকূলে জীবনস্বত্ব সৃষ্টি করা হয় তাদের জীবিত থাকতে হবে।
(iii) জীবনস্বত্ব শেষ হওয়ার আগে অজাত ব্যক্তির জন্ম হতে হবে।
(iv) শেষ জীবনস্বত্ব পরিসমাপ্তির সময় থেকে একজনের নাবালকত্ব সময়ের মধ্যে তাকে সাবালক হতে হবে।
অজাত ব্যক্তি বা বাস্তবে অস্তিত্ব নেই এমন ব্যক্তির অনুকূলে কতটুকু সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় ?
উত্তর: অত্র আইনের ১৩ ধারায় বলা হয়েছে কোন সম্পত্তির হস্তান্তর দ্বারা পূর্বের কোন স্বত্ব সৃষ্টি সাপেক্ষে অজাত ব্যক্তির সুবিধার জন্য স্বত্ব সৃষ্টি করা হলে, যে ব্যক্তি হস্তান্তরের তারিখ পর্যন্ত জন্মগ্রহণ করেনি, তার ক্ষেত্রে সম্পত্তি দাতার অবশিষ্ট সকল সম্পত্তি হস্তান্তরের অন্তর্ভুক্ত করা না হলে তা কার্যকর হবে না। সুতরাং বলা যায়- অজাত ব্যক্তির অনুকূলে বা বাস্তবে নেই এমন ব্যক্তির অনুকুলে হস্তান্তর করতে হলে দাতার অবশিষ্ট সকল সম্পত্তি হস্তান্তর করতে হবে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৩(ক) ধারায় উল্লিখিত "আংশিক সম্পাদন নীতির" ব্যাখ্যা:
উত্তর: সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের সংশােধিত ৫৩(ক) ধারা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা। এই ধারা অনুযায়ী বাদী হয়ে মামলা করা না গেলেও বিবাদী হিসেবে দখল রক্ষা করা যায়। এই ধারা মূলত বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে সম্পত্তির দখললাভকারী ক্রেতাতে রক্ষা করে থাকে। কেউ যদি বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তর করে এবং হস্তান্তর গ্রহীতা যদি ঐ চুক্তির আংশিক পূরণের মাধ্যমে সম্পত্তির দখল গ্রহণ করেন তাহলে হস্তান্তরকারী সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির ব্যাপারে গ্রহীতার নিকট অন্য কোন অধিকার দাবী করতে পারে না। ৫৩(খ) ধারা অনুযায়ী ২০০৫ সালের জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বায়না করা হলে উক্ত বায়না বলবৎ থাকাকালে বায়নার জমি তৃতীয় কোন পক্ষের নিকট বিক্রয় করা যাবে না। যদি কেউ বিক্রয় করে তাহলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। আর ৫৩(ক) ধারা অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তির বিক্রয় চুক্তি অবশ্যই লিখিত ও রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে। উপরােক্তভাবে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৩(ক) ধারায় উল্লিখিত “আংশিক সম্পাদন নীতি ব্যাখ্যা করা যায়।
আংশিক সম্পাদন নীতি প্রয়ােগের জন্য প্রয়ােজনীয় উপাদানঃ
উত্তর: আংশিক সম্পাদন নীতির ক্ষেত্রে নিম্নের উপাদান থাকতে হবে ।
(i) এই নীতির মধ্যে একটি চুক্তি থাকতে হবে,
(ii) চুক্তিটি আংশিক সম্পাদিত হতে হবে,
(iii) এই নীতি স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত হতে হবে,
(iv) এটি মূল্যের বিনিময়ে হতে হবে,
(v) এটি লিখিত হতে হবে,
(vi) এটি রেজিষ্ট্রিকৃত হতে হবে,
(vii) হস্তান্তরকারী কর্তৃক বা তার পক্ষে কোন ব্যক্তি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে,
(viii) হস্তান্তর গ্রহণকারীকে দখল অর্পণ করতে হবে ।
এই নীতির (আংশিক সম্পাদন নীতি) উদ্দেশ্য:
উত্তর: কেউ যদি বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তর করে এবং হস্তান্তর গ্রহীতা যদি ঐ চুক্তির আংশিক পূরণের মাধ্যমে সম্পত্তির দখল গ্রহণ করেন তাহলে হস্তান্তরকারী সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির ব্যাপারে গ্রহীতার নিকট অন্য কোন অধিকার দাবী করতে পারে না। এই ধারা অনুযায়ী বাদী হয়ে মামলা করা না গেলেও বিবাদী হিসেবে দখল রক্ষা করা যায়। এই ধারা মূলত: বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে সম্পত্তির দখললাভকারী ক্রেতাতে রক্ষা করে থাকে। সুতরাং বলা যায় ৫৩(ক) ধারায় উল্লিখিত আংশিক সম্পাদন নীতির উদ্দেশ্য হলাে, বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে সম্পত্তির দখললাভকারীকে রক্ষা করা।