- Get link
- X
- Other Apps
Statement admission confession definition evidence Act 1872
সাক্ষ্য আইনের বিবৃতি স্বীকৃতি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির দোষ স্বীকারোক্তি কাকে বলে?
প্রশ্ন: বিবৃতি বা Statement কাকে বলে:
উত্তর: সাক্ষ্য আইনে বিবৃতির নির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি, তবে বিভিন্ন পর্যালোচনায় বলা যায়- উচ্চারিত শব্দ, লিখিত বক্তব্য, কোন উক্তি, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা ইঙ্গিত ইত্যাদি বিবৃতির অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন:স্বীকৃতি বা Admission কাকে বলে?
উত্তর: সাক্ষ্য আইনের 17 ধারা স্বীকৃতির সংজ্ঞা উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত ধারা অনুযায়ী কোন মামলার বিষয়ে কোনো বিবৃতি প্রদান করা হলে উক্ত বিবৃতি যদি সেই মামলার বিচার্য বিষয় সম্পর্কে ইঙ্গিত বহন করে তাহলে তাকে স্বীকৃতি বলে। সাক্ষ্য আইনের ভাষায়-An admission is a statement, oral or documentary which suggest any inference as to any fact in issue or relevant fact and which is made by any of the persons and under the circumstances hereinafter mentioned (section 18 to 20)
অর্থাৎ স্বীকৃতি হলো মৌখিক বা লিখিত বক্তব্য যা বিচার্য বিষয় সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তের সূচনা করে এবং এই আইনের ১৮ থেকে ২০ ধারা অনুযায়ী প্রদান করা হয়।
প্রশ্ন: অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তি বা দোষ স্বীকার কাকে বলে?
উত্তর: সাক্ষ্য আইনের 17 ধারায় স্বীকৃতির সংজ্ঞা প্রদান করা হলেও স্বীকারোক্তি বা দোষ স্বীকার এর কোনো সংজ্ঞা সাক্ষ্য আইনে দেওয়া হয়নি। তবে বিভিন্ন ধারা পর্যালোচনা করে বলা যায় - কোন উক্তি বা বিবৃতি দ্বারা যদি অপরাধ স্বীকার করা হয় তাহলে তাকে স্বীকারোক্তি বা দোষ স্বীকার বলে। দোষ স্বীকার সম্পূর্ণ বা আংশিক হতে পারে। অর্থাৎ কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যদি তিনি আংশিক বা সম্পূর্ণ স্বীকার করে নেন তাহলে তাকে স্বীকারোক্তি বা দোষ স্বীকার বলে। দোষ স্বীকার দুই প্রকার হতে পারে যথা (ক) বিচারক স্বীকারোক্তি judicial confession (খ) বিচার-বর্হিত স্বীকারোক্তি Extra judicial confession
প্রশ্ন: কার দ্বারা এবং কোন পরিস্থিতিতে স্বীকৃতি হতে পারে?
উত্তর: সাক্ষ্য আইনের ১৮ ধারা অনুযায়ী নিম্নের ব্যক্তি স্বীকৃতি প্রদান করতে পারেন। ১। মামলার কোনো পক্ষ ২। মামলার পক্ষের উপযুক্ত প্রতিনিধি ৩। মামলার বিষয়বস্তুতে স্বার্থ আছে এমন ব্যক্তি যার যার নিকট থেকে সার্থক পাওয়া গেছে ৫। আদালত কোন ব্যক্তিকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত মনে করলে।
প্রশ্ন: প্রলোভন, ভীতিপ্রদর্শন বা প্রতিশ্রুতির দ্বারা পুলিশ অফিসারের নিকট প্রদত্ত স্বীকারোক্তি কি গ্রহণযোগ্য?
উত্তর: আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী পুলিশ অফিসারের নিকট প্রদত্ত দোষ স্বীকার সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। এমনকি পুলিশ হেফাজতে থাকা কালিন অন্য ব্যক্তির নিকট দোষ স্বীকার করলেও তা গ্রহণীয় হয়না। তবে ব্রিটেনে পুলিশ অফিসারের নিকট প্রদত্ত দোষ স্বীকার গ্রহণীয় হয়।
সাক্ষ্য আইনের ২৫ ধারা অনুযায়ী কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশ অফিসারের নিকট দোষ স্বীকার করে বিবৃতি প্রদান করলে তা উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রমাণ করা যাবে না। কিন্তু সাক্ষ্য আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুলিশ অফিসারের নিকট দোষ স্বীকার করে বিবৃতি প্রদান করলে তা গ্রহণীয় হবে। আবার সাক্ষ্য আইনের ২৭ ধারা অনুযায়ী পুলিশ অফিসারের নিকট কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির দোষ স্বীকার অনুযায়ী কোনো আলামত উদ্ধার হলে সাক্ষ্য হিসেবে তা গ্রহণীয় হবে। এক্ষেত্রে আলামত এর সাথে সংশ্লিষ্ট অংশই শুধু গ্রহণীয় হবে। সুতরাং বলা যায় কোন আলামত উদ্ধার না হলে বা ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত না থাকলে পুলিশ অফিসারের নিকট প্রদত্ত দোষ স্বীকার সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রশ্ন: স্বীকৃতির সাক্ষ্যগত মূল্য কতটুকু?
উত্তর: সাক্ষ্য আইন ৩১ ধারায় স্বীকৃতির সাক্ষ্যগত মূল্য সম্পর্কে বলা হয়েছে। উক্ত ধারা অনুযায়ী স্বীকৃতি একটি খন্ডন যোগ্য প্রমাণ। এটি কোন চূড়ান্ত প্রমাণ নয় অর্থাৎ স্বীকৃতিকারী যে বিষয় সম্পর্কে স্বীকৃতি দিয়েছেন তিনি বিচারকালে দেখাতে পারেন যে তিনি অজ্ঞতাবশত বা ভুল করে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে স্বীকৃতিকে চূড়ান্ত প্রমাণ বলা যায় না। তবে স্বীকৃতি যদি স্বীকৃতিদাতার বিরুদ্ধে কাজ করে তাহলে তাকে চূড়ান্ত প্রমাণ বলা যায় অর্থাৎ স্বীকৃতি কখনো কখনো এস্টপেল বা প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করতে পারে। সুতরাং বলা যায় স্বীকৃতি একটি চূড়ান্ত প্রমাণ না হলেও এর সাক্ষ্যগত মূল্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: অপরাধ স্বীকারোক্তি ও স্বীকৃতির পার্থক্য কি?
উত্তর: ১। কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে বিবৃতি প্রদান করলে তাকে স্বীকারোক্তি বা দোষ স্বীকার বলে
কিন্তু
কোন মামলার বিষয়ে কোনো বিবৃতি প্রদান করা হলে উক্ত বিবৃতি যদি সেই মামলার বিচার্য বিষয় সম্পর্কে ইঙ্গিত বহন করে তাহলে তাকে স্বীকৃতি বলে।
২। স্বীকারোক্তি বা দোষ স্বীকার কে ইংরেজিতে confession বলে
কিন্তু
স্বীকৃতি কে ইংরেজিতে admission বলে।
৩। সকল স্বীকারোক্তি অবশ্যই স্বীকৃতি
কিন্তু
সকল স্বীকৃতি স্বীকারোক্তি নয়।
৪। স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে প্রমাণের প্রয়োজন
কিন্তু
স্বীকৃতির ক্ষেত্রে প্রমাণের প্রয়োজন হয় না।
৫। স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে শাস্তি হওয়ার আশঙ্কা থাকে কিন্তু স্বীকৃতিতে দোষ স্বীকার না থাকলে শাস্তি হয় না।
৬। স্বীকারোক্তি শুধু ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
কিন্তু
স্বীকৃতি ফৌজদারি ও দেওয়ানী উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
৭। স্বীকারোক্তি সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহৃত হয়
কিন্তু
স্বীকৃতি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়।
৮। স্বীকারোক্তিতে অবশ্যই দোষ স্বীকার থাকে কিন্তু স্বীকৃতিতে দোষ স্বীকার থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে।
প্রশ্ন: স্বীকৃতিকারীর বিপক্ষে স্বীকৃতি প্রমাণ করা যায় কিন্তু পক্ষে নয় এর ব্যতিক্রম:
উত্তর: সাধারণ নিয়ম হলো স্বীকৃতিকারীর বিপক্ষে স্বীকৃতি প্রমাণ করা যায় কিন্তু পক্ষে প্রমাণ করা যায় না এই নীতির ব্যতিক্রম আছে। সাক্ষ্য আইনের ২১ ধারা অনুযায়ী উক্ত ব্যতিক্রম গুলি নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১। স্বীকৃতিকারীর স্বীকৃতি যদি এমন হয় যে স্বীকৃতিকারী মৃত্যু হলে তা প্রাসঙ্গিক হবে তাহলে স্বীকৃতিকারী বা তার প্রতিনিধির পক্ষে তা ব্যবহার করা যাবে।
2 স্বীকৃতিতে যদি মানসিক বা দৈহিক সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক কোন বিষয় উল্লেখ থাকে তাহলে উক্ত মানসিক বা দৈহিক বিশেষ অবস্থা বিদ্যমান থাকাকালীন কোন বিবৃতি প্রদান করলে এবং উক্ত বিবৃতি মিথ্যা মনে করা অসম্ভব হলে স্বীকৃতিকারীর পক্ষে তা প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
৩। স্বীকৃতি টি যদি স্বীকৃতি হিসেবে প্রাসঙ্গিক না হয়ে ভিন্নভাবে প্রাসঙ্গিক হয় তাহলে স্বীকৃতিকারী পক্ষে তা ব্যবহার করা যাবে।
প্রশ্ন: অস্বীকৃত অপরাধ স্বীকারোক্তি কাকে বলে?
উত্তর: অভিযুক্ত ব্যক্তি ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট অপরাধ স্বীকার করার পর বিচারের সময় বিচারকের নিকট পূর্বের স্বীকারোক্তি অস্বীকার করলে তাকে অস্বীকৃত অপরাধ স্বীকারোক্তি বলে। পূর্বে স্বীকারোক্তি যদি আইনসঙ্গত হয় তাহলে বিচারের সময় তা অস্বীকার করলে তার মূল্য কমে যায়। এ ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির উপর বিবৃতি যাচাই করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।
প্রশ্ন: বিচারিক এবং বিচার বহির্ভূত অপরাধ স্বীকারোক্তির পার্থক্য
উত্তর: ১। ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালত যদি কোন দোষ স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করেন তাহলে তাকে বিচারিক স্বীকারোক্তি বলে
কিন্তু
ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালত ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট কোন দোষ স্বীকার করলে তাকে বিচার বহির্ভূত স্বীকারোক্তি বলে।
২। বিচারক স্বীকারোক্তিকে ইংরেজিতে Judicial confession বলে
কিন্তু
বিচারবহির্ভূত স্বীকারোক্তিকে ইংরেজিতে extra-judicial confession বলে।
৩। বিচারক স্বীকারোক্তি সম্পর্কে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় উল্লেখ আছে
কিন্তু
বিচার বহির্ভূত স্বীকারোক্তি সম্পর্কে সাক্ষ্য আইনের ২৪ থেকে ২৯ ধারায় উল্লেখ রয়েছে।
৪ বিচারিক স্বীকারোক্তি ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের সামনে করা হয়
কিন্তু
বিচারবহির্ভূত স্বীকারোক্তি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ব্যতীত অন্য ব্যক্তির সামনে করা হয়।
৫। বিচারক স্বীকারোক্তি আদালতে গ্রহণীয় হয়
কিন্তু
বিচারবহির্ভূত স্বীকারোক্তি আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
৬। বিচারিক স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে অধিক সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়না
কিন্তু বিচারবহির্ভূত স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে অধিক সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়।
৭। বিচারিক স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে কোন ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদান করা যায়
কিন্তু
বিচারবহির্ভূত স্বীকারোক্তি অনিশ্চিত হলে তার উপর ভিত্তি করে কোন ব্যক্তি কে শাস্তি প্রদান করা যায় না।