- Get link
- X
- Other Apps
Relevancy of character in civil and criminal law চরিত্রের প্রাসঙ্গিকতা।
চরিত্র বলতে কি বুঝায়? কেন বলা হয় "আদালতের দায়িত্বগুলো মামলার বিচার করা মানুষের নয়।" ভালো চরিত্র বলতে শুধু সাধারণ খ্যাতিকেই বোঝায় না বরং সাধারন প্রকৃতিকেও বুঝায় - একথা দিয়ে আমরা কি বুঝি। কখন দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলায় চরিত্র সংক্রান্ত সাক্ষ্য প্রাসঙ্গিক? পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশ কি খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসেবে প্রাসঙ্গিক?
প্রশ্ন: চরিত্র (character) কাকে বলে?
সাক্ষ্য আইনে চরিত্রের সুনিদৃষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করা হয়নি। তবে এই আইনের ৫৫ ধারায় চরিত্র সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে চরিত্র বলতে খ্যাতি এবং প্রকৃতি কে বুঝায়। খ্যাতি বা Reputation হল কোন ব্যক্তি সম্পর্কে অন্যরা যা অনুমান করে বা ধারণা পোষণ করে। প্রকৃতি বা Disposition হল কোন ব্যক্তির স্বভাব সম্পর্কে অন্যদের অভিমত। সুতরাং কোন ব্যক্তির খ্যাতি এবং প্রকৃতি উভয়কে একত্রে চরিত্র বলা হয়।
প্রশ্ন: কেন বলা হয় - "আদালতের দায়িত্ব হলো মামলার বিচার করা মানুষের নয়।"
উত্তর: ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য মানুষ আদালতে আসে। একজন খারাপ মানুষ যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সেও ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে আসে। এটি তার অধিকার। অর্থাৎ মানুষের চরিত্র খারাপ হোক বা ভাল হোক ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার। কোন ব্যক্তি কোন অভিযোগ নিয়ে আদালতে আসলে উক্ত ব্যক্তির চরিত্র আদালতের বিচার্য বিষয় নয়। যেমন কোন ব্যক্তি তার নিজের সম্পত্তি থেকে বেদখল হলে আদালত তাকে তার সম্পদের দখল ফিরিয়ে দিবেন। কিন্তু উক্ত ব্যক্তির চরিত্র ভালো নয় বলে তার সম্পত্তির দখল দিবেন না বা তার পক্ষে রায় দিবেন না, এমনটি হয় না। আবার কোন ব্যক্তির সম্পদ চুরি হলে বা অন্যায় ভাবে তাকে কেউ আঘাত করলে, চরিত্র ভালো নয় বলে তিনি ও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন না। কোন ব্যক্তি খারাপ হতে পারে, তাই বলে তার জানমাল অন্য কেউ অন্যায় ভাবে হরণ করবে এটি ও আইনের পরিপন্থী কাজ। যে দাবী নিয়ে কোন ব্যক্তি আদালতে আসেন, সেই বিষয়ে উক্ত ব্যক্তি প্রতিকার পাবেন কিনা এটি আদালতের বিবেচ্য বিষয়। তার চরিত্র কেমন এটি আদালতের বিবেচ্য বিষয় হয় না। যেমন একজন পতিতাকে যদি কেউ জোরপর্বক অপহরণ করে, তাহলে পতিতা বলে সে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম আছে। যেমন সাক্ষ্য আইনের ৫৫ ধারা অনুযায়ী মানহানির বিচারের ক্ষেত্রে চরিত্র প্রাসঙ্গিক হয়। এক্ষেত্রে একটি মামলার উল্লেখ করা যেতে পারে। আমেরিকার থম্পসন বনাম চার্জ মামলার সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে বলা যায়-সাধারনত চরিত্র মামলার বিচার্য বিষয় নয়। আদালতের করণীয় হলো মামলার বিচার করা মানুষের নয়।
প্রশ্ন: ভালো চরিত্র বলতে শুধু সাধারণ খ্যাতিকে বুঝায় না, বরং সাধারণ প্রকৃতিকেও বুঝায় -আলোচনা:
উত্তর: সাক্ষ্য আইনে চরিত্র শব্দের নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। তবে এই আইনের ৫৫ ধারার ব্যাখ্যা অনুযায়ী চরিত্র শব্দের দুটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়-১। খ্যাতি: কোন ব্যক্তি সম্পর্কে অন্য ব্যক্তিরা যা ধারণা করে তাহলো সেই ব্যক্তির খ্যাতি। ২। প্রকৃতি: কোন ব্যক্তির স্বভাব সম্পর্কে অন্য ব্যক্তিরা যা ধারণা করে তাহলে সেই ব্যক্তির প্রকৃতি। সুতরাং বলা যায় চরিত্র হলো মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতির বৈশিষ্ট্য একজন থেকে অন্যজনে কে আলাদা করে।
অনেক মামলার ক্ষেত্রে চারিত্রীক স্বভাব বা প্রকৃতি গুরুত্ব পূর্ণ না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেমন মানহানির মামলা। মানহানির মামলায় ক্ষতিপূরণের জন্য তাদের চরিত্র বা খ্যাতি অবশ্যই প্রাসঙ্গিক একটি বিষয়। তিনি যত ভালো চরিত্রের বা অধিক খ্যাতির অধিকারী তিনি ততবেশি ক্ষতিপূরণের দাবিদার। দেওয়ানী মামলায় চরিত্রের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে সাক্ষ্য আইনের ৫২ এবং ৫৫ ধারায় বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। ফৌজদারি মামলায় চরিত্রের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে সাক্ষ্য আইনের ৫৩ এবং ৫৪ ধারায় বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, ভালো চরিত্র বলতে শুধু সাধারণ খ্যাতিকেই বুঝায় না, বরং সাধারণ প্রকৃতিকেও বুঝায়।
প্রশ্ন: কখন দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলায় চরিত্র সংক্রান্ত সাক্ষ্য প্রাসঙ্গিক:
উত্তর: দেওয়ানী মামলায় চরিত্র সংক্রান্ত সাক্ষ্য যখন প্রাসঙ্গিক: সাক্ষ্য আইনের ৫২ ও ৫৫ ধারায় দেওয়ানী মোকদ্দমায় চরিত্র সংক্রান্ত এর প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করা হয়েছে।
ক) ৫২ ধারা: দেওয়ানী মোকদ্দমায় কোনো ব্যক্তি বা কোন পক্ষ বিচার্য বিষয় হয় না। যেহেতু কোনো ব্যক্তি বা পক্ষ বিচার্য বিষয় না, সেহেতু তাদের চরিত্র এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয় না। কারণ একজন খারাপ বা মন্দ চরিত্রের ব্যক্তির কোন সম্পত্তিতে উত্তম স্বত্ব থাকতে পারে।
খ) ৫৫ ধারা: দেওয়ানী মোকদ্দমায় কোনো ব্যক্তি বা পক্ষের চরিত্র যদি এমন হয় যে, তার দ্বারা দাবীকৃত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ প্রভাবিত হয় তাহলে সেক্ষেত্রে চরিত্র বিষয়ে সাক্ষ্য প্রাসঙ্গিক হবে।
ফৌজদারী মোকদ্দমার চরিত্র সংক্রান্ত সাক্ষ্য যখন প্রাসঙ্গিক:
সাক্ষ্য আইনের ৫৩ ও ৫৪ ধারায় ফৌজদারি মামলায় চরিত্র সংক্রান্ত সাক্ষ্যের প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করা হয়েছে।
ক) ৫৩ ধারা: ফৌজদারি মামলায় কোন ব্যক্তি বা পক্ষের ভালো চরিত্র প্রাসঙ্গিক হয়। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির চরিত্র ভালো এই বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান করা যায়।
খ) ৫৪ ধারা: সাধারনত আসামি চরিত্রহীন এই জাতীয় স্বার্থ প্রাসঙ্গিক নয়। তবে আসামির চরিত্র ভালো এই বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়া হলে তার খারাপ চরিত্র প্রাসঙ্গিক হবে।
প্রশ্ন: পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশকে খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসেবে প্রাসঙ্গিক?
উত্তর: সাধারণত পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশ খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসেবে প্রাসঙ্গিক হয়না। কিন্তু আসামির চরিত্র ভালো এই বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়া হলে তার খারাপ চরিত্র প্রাসঙ্গিক হবে। সাক্ষ্য আইনে কয়েকটি ধারা উল্লেখ পূর্বক বিষয়টি বর্ণনা করা হলো।
ধারা ৮: এই ধারা অনুযায়ী পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশ খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসাবে প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
ধারা ১৪: কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার কলে তার পূর্বের কৃত অপরাধ এই ধারা অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক হবে। ব্যাখ্যা ২
ধারা ৪৩: এই ধারা অনুযায়ী পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশ খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসাবে প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
ধারা ৫৪: এই ধারা অনুযায়ী পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশ খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসাবে প্রাসঙ্গিক হবে। ব্যাখ্যা ২
ধারা ১৫৩: এই ধারা অনুযায়ী কোন সাক্ষীকে যদি এমন প্রশ্ন করা হয় যে, সে পূর্বে কোন অপরাধে দণ্ডিত হয়েছিল কিনা এবং উক্ত সাক্ষী যদি তা অস্বীকার করে তাহলে পূর্বের দণ্ডাদেশ প্রমাণ করা যাবে না। ব্যাখ্যা ১
এছাড়া দণ্ডবিধির ৭৫ ধারা অনুযায়ী পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশ খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসেবে প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
Video Relevancy of character in civil and criminal law চরিত্রের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কিত বিধান