- Get link
- X
- Other Apps
ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বলতে কি বুঝ?
সাক্ষীকে কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়? সাক্ষীকে কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায় না?
কোন কোন্ উপায়ে একজন সাক্ষীর সাক্ষ্যের মূল্যকে হ্রাস করা যায় অথবা সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা কিভাবে হরণ করা যায়? অনুচিত প্রশ্ন বাধাদানে আদালতের কি কি অধিকার আছে অথবা কি কি কারণে একজন বিচারক অশালীন ও কুৎসামূলক প্রশ্ন করতে বাধা দিতে পারেন?
সাক্ষীকে প্রশ্ন করার জন্য বিচারকের সাধারণ ক্ষমতায় কি কি সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে অথবা প্রশ্ন আইনসঙ্গত ও প্রাসঙ্গিক হওয়া সত্ত্বেও কখন সাক্ষীকে প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যায় না অথবা বিচারিক কার্যক্রমে কেন কিছু প্রশ্ন করা যায় না?
ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন (Leading question) কাকে বলে:
সাক্ষ্য আইনের ১৪১ ধারায় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্নের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ধারা অনুযায়ী-কোন প্রশ্নকর্তা তার প্রশ্নের যে উত্তর আশা করেন, প্রশ্নের মধ্যে যদি তার ইঙ্গিত থাকে তাহলে সেই প্রশ্নকে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যে প্রশ্নের উত্তর শুধু ‘হ্যা অথবা ‘না দ্বারা দেয়া যায় সেই প্রশ্নকে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বলে।
সাক্ষীকে কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়?:
সাক্ষ্য আইনের ১৪৩ ধারা অনুযায়ী জেরার সময় সাক্ষীকে ইঙ্গিতৰাহী প্রশ্ন করা যায়। তবে দুই বা ততোধিক ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন একত্র করে প্রশ্নাকারে করা যাবে না।সাক্ষীকে কখন ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায় না:
সাক্ষ্য আইনের ১৪২ ধারা অনুযায়ী জবানবন্দী এবং পুন:জবানবন্দীর সময় আদালতের অনুমতি ব্যতীত সাক্ষীকে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যাবে না।
কোন্ কোন্ উপায়ে একজন সাক্ষীর সাক্ষ্যের মূল্যকে হ্রাস করা যায় অথবা সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা কিভাবে হরণ করা যায়?
সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ধারা অনুযায়ী নিন্মোক্তভাবে সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা হরণ করা যায় :(১) পরস্পর বিরোধী বিবৃতি : কোন সাক্ষীর বিবৃতি যদি তার পূর্ববর্তী কোন বিবৃতির বিরোধী হয় তাহলে তা প্রমাণ করে উক্ত সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা হরণ করা যায়।
(২) অন্যায় প্রলোভনে সম্মত হলে : কোন সাক্ষীকে অন্যায় প্রলোভন, ঘুয ইত্যাদিতে সম্মত করে তা প্রমাণের মাধ্যমে তার বিশ্বাসযোগ্যতা হরণ করা যায়।
(৩) দুশ্চরিত্র প্রমাণ করে : মামলা যদি কোন নারী ধর্ষণ বা নারী ধর্ষণের প্রচেষ্টা হয় তাহলে উক্ত নারী দুশ্চরিত্রা প্রকৃতির এই সাক্ষ্য প্রদান করে তার বিশ্বাসযোগ্যতা হরণ করা যায়।
(৪) সাক্ষীকে বিশ্বাসের অযোগ্য প্রমাণ করে : যে বা যারা সাক্ষ্য প্রদান করবে তারা যে বিশ্বাসের অযোগ্য ব্যক্তি, এই বিষয়ে যাদের জানা আছে তাদের দিয়ে সাক্ষ্য প্রদান করে তার বা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হরণ করা যায়।
অনুচিত প্রশ্ন বাধাদানে আদালতের কি কি অধিকার আছে অথবা কি কি কারণে একজন বিচারক অশালীন ও কুৎসামূলক প্রশ্ন করতে বাধা দিতে পারেন?
কিছু কিছু প্রশ্ন আছে যা করা উচিত নয়। এগুলোকে বলা হয় অনুচিত প্রশ্ন। কোন সাক্ষীকে অনুচিত প্রশ্ন করা হলে আদালত বাধা প্রদান করতে পারেন। যেমন :(ক) যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া প্রশ্ন : আদালত যদি মনে করেন যে কোন আইনজীবী যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছে তাহলে সেই আইনজীবী পেশাগতভাবে যে হাইকোর্ট বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন আদালত সেই কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট করতে পারেন। [ধারা-১৫০]
(খ) অশালীন ও কুৎসামূলক প্রশ্ন : আদালত যদি কোন প্রশ্নকে অশালীন ও কুৎসামূলক প্রশ্ন বলে মনে করেন তাহলে তা জিজ্ঞাসা করা আদালত নিষিদ্ধ করতে পারেন। (ধারা-১৫১]
(গ) অপমান বা উত্যক্ত করার জন্য প্রশ্ন : কোন ব্যক্তিকে অপমান করার জন্য বা উত্যক্ত করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন প্রশ্ন করা হলে আদালত তা নিষিদ্ধ করতে পারেন। [ধারা-১৫২]
সাক্ষীকে প্রশ্ন করার জন্য বিচারকের সাধারণ ক্ষমতায় কি কি সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। অথবা প্রশ্ন আইনসঙ্গত ও প্রাসঙ্গিক হওয়া সত্বেও কখন সাক্ষীকে প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যায় না অথবা বিচারিক কার্যক্রমে কেন কিছু প্রশ্ন করা যায় না:
আদালত যে কোন ব্যক্তিকে যে কোন সময় যে কোন প্রশ্ন করতে পারেন। আদালত কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে সাক্ষীগণ তার উত্তর দিতে বাধ্য থাকেন। তবে ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের বিভিন্ন ধারায় যে কোন প্রশ্ন করতে আদালতের কিছু বাধ্যবাধকতা বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো:
১২১ ধারা : সাক্ষী যদি বিচারক হন তাহলে আদালত বিচার সম্পর্কিত কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে তাকে বাধ্য করতে পারেন না।
১২২ ধারা : বিবাহ বলবৎ থাকা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার কোন তথ্যের উপর আদালত প্রশ্ন করতে পারবেন না।
১২৩, ১২৪ ধারা : রাষ্ট্রীয় গােপন তথ্য বা চিঠিপত্র সম্পর্কে আদালত প্রশ্ন করতে পারবেন না।
১২৫ ধারা : ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ বা রাজস্ব অফিসারকে তাদের সংগৃহীত তথ্যের উৎস সম্পর্কে আদালত প্রশ্ন করতে পারবেন না।
১২৬ থেকে ১২৯ ধারা : আইনজীবী ও মক্কেলের মধ্যকার সংবাদ আদান-প্রদান সম্পর্কে আদালত প্রশ্ন করতে পারবেন না।
১৩০, ১৩১ ধারা : মামলার পক্ষ নয় এমন ব্যক্তি বা তার প্রতিনিধিকে দলিল দাখিল করতে আদালত বাধ্য করতে পারবেন না।
১৪৮, ১৪৯ ধারা : কারো চরিত্রের উপর কটাক্ষ করে আদালত প্রশ্ন করতে পারবেন না।