- Get link
- X
- Other Apps
Hearsay Evidence, Video Short Notes on Law
জনশ্রুতি কাকে বলে? কখন জনশ্রুতি সাক্ষ্য হিসেবে বর্জনীয় হয়? জনশ্রুতি কোন সাক্ষ্য নয়- এই নীতির ব্যতিক্রমসমূহ কি কি? অথবা কোন্ কোন্ অবস্থায় জনশ্রুতি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণীয় হয়।
জনশ্রুতি (Hearsay) কাকে বলে:
কোন সাক্ষী যা নিজে দেখেনি বা নিজে শুনেনি বা নিজে উপলব্ধি করেনি এমন সাক্ষ্য প্রদান করলে তা জনশ্রুতি হিসেবে গণ্য হয়। অর্থাৎ সাক্ষী যে বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান করবেন তা যদি দেখার বিষয় হয় তাহলে তাকে নিজ চোখে দেখতে হবে, যদি শোনার বিষয় হয় তাহলে তাকে নিজ কানে শুনতে হবে, যদি ইন্দ্রীয় দিয়ে উপলব্ধি বা জিহ্বা দ্বারা স্বাদ নেয়ার বিষয় হয় তাহলে তাকে নিজে উপলব্ধি বা স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। যদি এগুলি অন্যের দেখা বা অন্যের শোনা বা অন্যের উপলব্ধি বা অন্যের স্বাদ নেয়া হয় তাহলে তাকে জনশ্রুতি বলে। বিচারপতি বেস্ট এর মতে, জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য হলো এমন ধরনের সাক্ষ্য যা সাক্ষী নিজ চোখে দেখেনি বা নিজ কানে শোনেনি বা ঐ ঘটনার সাথে তিনি সংশ্লিষ্ট ছিলেন না তবে এমন ঘটনা ঘটেছে এবং সাক্ষী তা তৃতীয় ব্যক্তির নিকট থেকে শুনেছেন।
কখন জনশ্রুতি সাক্ষ্য হিসেবে বর্জনীয় হয়:
সাক্ষ্য আইনের ৬০ ধারা অনুযায়ী মৌখিক সাক্ষ্য সর্বদা প্রত্যক্ষ হতে হবে। অর্থাৎ দেখার বিষয় হলে সাক্ষীকে নিজ চোখে দেখতে হবে, যদি শোনার বিষয় হয়, নিজ কানে শুনতে হবে, ইন্দ্রিয় দিয়ে উপলব্ধির বিষয় হলে বা জিহ্বা দ্বারা স্বাদ নেয়ার বিষয় হলে তাকে নিজে উপলব্ধি করতে হবে বা নিজে স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথা আদালতে তা গ্রহণীয় হয় না।
জনশ্রুতি সাক্ষ্য হিসেবে বর্জনীয় হওয়ার বিভিন্ন কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
(১) প্রত্যক্ষ সাক্ষী নয় : জনশ্রুতি প্রত্যক্ষ সাক্ষী নয় যার ফলে আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
(২) সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত নয় : জনশ্রুতি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত নয় যার ফলে আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
(৩) সাক্ষীকে শপথ করতে হয় না : জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সাক্ষীকে শপথ পাঠ করতে হয় না যার ফলে এই ধরনের সাক্ষ্য আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
(৪) উৎকষ্ট সাক্ষ্য নয় : জনশ্রুতি উৎকৃষ্ট সাক্ষ্যের পরিপন্থি যার ফলে আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
(৫) শঠতার সুযোগ থাকে : জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্যে শঠতার আশ্রয় নেয়ার সুযোগ থাকে যায় ফলে আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
(৬) মূল ব্যক্তিকে জেরা করা যায় না : জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্যে যিনি নিজে দেখেছেন বা শুনেছেন বা উপলব্ধি করেছেন তাকে জেরা করা যায় না যার ফলে আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
(৭) স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য থাকে : জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্যে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য থাকে যার ফলে আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
(৮) বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় : জনশ্রুতিমূলক সাক্ষ্যের সাক্ষ্যগত মূল্য খুবই নগণ্য। এটি বিচারপ্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে যার ফলে আদালতে গ্রহণীয় হয় না।
জনশ্রুতি কোন সাক্ষ্য নয় – এই নীতির ব্যতিক্রমসমূহ অথবা জনশ্রুতি কোন্ কোন্ অবস্থায় সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণীয় হয় :
সাক্ষ্য আইনের ৬০ ধারা অনুযায়ী মৌখিক সাক্ষ্য সর্বদা প্রত্যক্ষ হতে হবে। অর্থাৎ দেখার বিষয় হলে সাক্ষীকে নিজ চোখে দেখতে হবে, শোনার বিষয় হলে নিজ কানে শুনতে হবে, ইন্দ্রিয় দিয়ে উপলব্ধি বিষয় হলে বা জিহ্বা দ্বারা স্বাদ নেয়ার বিষয় হলে তাকে নিজে উপলব্ধি করতে হবে বা নিজে স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথা আদালতে তা গ্রহণীয় হয় না: কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে জনশ্রুতি সাক্ষ্য হিসেবে আদালতে গ্রহণীয় হয়। যেমন : সাক্ষ্য আইনের ৩২ এবং ৩৩ ধারা।
জনশ্রুতি যে সকল ক্ষেত্রে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণীয় হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
(১) স্বাভাবিক কাজের বর্ণনা : যদি কোন সাক্ষী তার স্বাভাবিক কাজের বর্ণণা প্রদান করেন তাহলে মৌখিক সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ না হওয়া সত্ত্বেও আদালতে তা গ্রহণীয় হয়।
(২) খাতা বা ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ বিষয় : স্বাভাবিক নিয়মে কোন-ব্যক্তি যদি খাতা বা ডায়েরিতে কোন বিষয় লিখে রাখেন তাহলে মৌখিক সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ না হওয়া সত্ত্বেও আদালতে তা গ্রহণীয় হয়।
(৩) মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া বিবৃতি : মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত রেখে যাওয়া বিবৃতি আদালতে গ্রহণীয় হয়।
(৪) নিজের স্বার্থ বিরোধী বিবৃতি : কোন সাক্ষী যদি নিজের স্বার্থ বিরোধী কোন বিবৃতি প্রদান করে তাহলে আদালতে তা গ্রহণীয় হয়।
(৫) দলিল বা উইলের বিবৃতি : দলিল বা উইল দ্বারা বিবৃতি আদালতে গ্রহণীয় হয়।
(৬) অনেক ব্যক্তির বিবৃতি : অনেক লোক যখন কোন বিবৃতি প্রদান করে তখন আদালতে তা গ্রহণীয় হয়। এখানে অনেক লোক বলতে কত লোক বোঝানো হয়েছে তা নির্দিষ্ট করা হয় নি। আদালতই তা নির্ধারণ করবেন।
(৭) জনগণের স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয় : কোন বিবৃতি যদি জনগণের স্বার্থের পক্ষে প্রদান করা হয় তাহলে আদালতে তা গ্রহণীয় হয়।
(৮) আত্মীয়তার অস্তিত্ব সম্পর্কিত বিষয় : রক্তের সম্পর্ক বা বৈবাহিক বা দত্তক সম্পর্কিত বিষয়ের অস্তিত্বের প্রশ্ন হলে উক্ত বিষয়ে অবগত আছেন এমন ব্যক্তি যদি বিরোধ সৃষ্টির পূর্বে কোন বিবৃতি প্রদান করেন তাহলে আদালতে তা গ্রহণীয় হয়।
(৯) উপরের বিষয়ের লিখিত বিবৃতি : উপরের বিষয়ে যদি কোন লিখিত বিবৃতি থাকে এবং তা বিরোধ সৃষ্টির পূর্বে হয় তাহলে আদালতে তা গ্রহণীয় হয়।
(১০) গ্রন্থে প্রকাশিত অভিমত : কান ব্যক্তির গ্রন্থে প্রকাশিত অভিমত যদি সাক্ষ্যের বিষয় হয় এবং উক্ত গ্রন্থ যদি বাজারে বিক্রি হয় তাহলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে উক্ত গ্রন্থকারকে আদালতে হাজীর না করে তার গ্রন্থ আদালতে দাখিল করা যেতে পারে। যেমন : উক্ত ব্যক্তি মৃত হলে, উক্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া না গেলে, উক্ত ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদানে অসামর্থ হলে, আদালতের বিবেচনায় উক্ত ব্যক্তিকে হাজির করানো ব্যয় ও সময় সাপেক্ষ হলে ইত্যাদি।