- Get link
- X
- Other Apps
সরকারি দলিল বা সার্বজনীন দলিল ও বেসরকারি দলিল কাকে বলে?
একটি বেসরকারি দলিল কে প্রমাণ করতে পারে? এটি প্রমাণে সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী কে?
কখন একটি দলিল পুরাতন হিসেবে গণ্য হয়? সরকারি দলিল ও বেসরকারি দলিলের পার্থক্য কি?
সরকারি দলিল (Public Docurients) বা সার্বজনীন দলিল কাকে বলে:
সাক্ষ্য
আইনের ৭৪ ধারা অনুযায়ী নিম্নের দলিলগুলি সরকারি দলিল :
(১)
সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের কাজ : সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের কাজের লিখিত বিবরণ, নথিপত্র, সংসদে
প্রণীত আইন সরকারি দলিল হিসেবে গণ্য।
(২)
বিভিন্ন বিভাগের কাজ : বিচার বিভাগীয় বা শাসন বিভাগীয় কোন কর্মচারির কাজের লিখিত
বিবরণ সরকারি দলিল হিসেবে গণ্য।
(৩)
বাংলাদেশ বা কমনওয়েলথের কাজ : বাংলাদেশ বা কমনওয়েলথের বিভিন্ন বিভাগের কাজের
লিখিত বিবরণ সরকারি দলিল হিসেবে গণ্য।
(৪)
সরকারের নিকট রক্ষিত দলিল : সরকারের হেফাজতে রক্ষিত
ব্যক্তিগত
দলিলও সরকারি দলিল হিসেবে গণ্য।
(৫)
সরকারি সংস্থা ও ট্রাইব্যুনালের কাজ : সরকারি কোন সংস্থা ও ট্রাইব্যুনালের কাজের লিখিত
বিবরণ সরকারি দলিল হিসেবে গণ্য।
বেসরকারি দলিল কাকে বলে:
সাক্ষ্য
আইনের ৭৫ ধারা অনুযায়ী- সরকারি দলিল ব্যতীত অন্য সকল
দলিলকে
বেসরকারি দলিল বলে। অর্থাৎ সরকারি দলিল ছাড়া অন্যান্য
সকল দলিল হলো বেসরকারি দলিল। যেমন : আদম শুমারী নিবন্ধন।
একটি বেসরকারি দলিল যিনি প্রমাণ করতে পারেন:
নিম্নের
ব্যক্তিগণ একটি বেসরকারি দলিল প্রমাণ করতে পারেন :
*
বেসরকারি দলিলের দাবীদার যে কোন ব্যক্তি, বেসরকারি দলিল প্রমাণ করতে
পারেন।
*
উক্ত দাবীদারের বৈধ প্রতিনিধি বেসরকারি দলিল প্রমাণ করতে পারেন।
*
স্বার্থ আছে এমন যে কোন ব্যক্তি বেসরকারি দলিল প্রমাণ করতে
পারেন।
বেসরকারি দলিল প্রমাণে সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী:
নিম্নের ব্যক্তিগণ একটি বেসরকারি দলিল
প্রমাণের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী হিসেবে গণ্য :
(১)দলিল
সম্পাদনকারী নিজে : যিনি স্বাক্ষর দ্বারা নিজে দলিল সম্পাদন করেছেন তিনি আদালতে
সাক্ষ্য প্রদান করলে সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন।
(২) যার সম্মুখে দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছে : যার
সম্মুখে দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছে তিনি আদালতে সাক্ষ্য
প্রদান করলে সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন।
(৩) পূর্বের স্বীকৃত স্বাক্ষর উপস্থাপনকারী : কোন
দলিলের স্বাক্ষরের সাথে পূর্বের কোন স্বীকৃত স্বাক্ষর
মিলিয়ে দলিল প্রমাণ করা যায়। যনি এরূপ স্বাক্ষর উপস্থাপন করবেন তিনি সর্বোৎকৃষ্ট
সাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন।
(৪) হস্তলিপি বিশেষজ্ঞ : হস্তলিপি বিশেষজ্ঞগণ
আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করলে সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী হিসেবে
গণ্য হবেন।
(৫) হস্তলিপির সাথে পরিচিত ব্যক্তি : দলিলের
হস্তলিপির সাথে পরিচিত ব্যক্তি আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করলে সর্বোৎকৃষ্ট
সাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন।
(৬) দলিল সম্পাদনকারীর নির্দেশে স্বাক্ষরকারী
ব্যক্তি : দলিল সম্পাদনকারীর নির্দেশে যদি অন্য কোন ব্যক্তি স্বাক্ষর করেন
তাহলে উক্ত ব্যক্তি আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করলে সর্বোৎকষ্ট
সাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন।
(৭) মৃত দলিল লেখক : মৃত দলিল লেখক মুহরীর
বিবৃতিতে যদি তর্কিত দলিল সম্পাদন করেন তাহলে তা সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী
হিসেবে গণ্য হবেন।
যখন একটি দলিল পুরাতন হিসেবে গণ্য হয়:
একটি দলিল কখন পুরাতন দলিল হিসেবে গণ্য হবে
সাক্ষ্য আইনে তা নির্দিষ্ট করা হয় নি। তবে এই আইনের ৯০ ধারায় ৩০ বছর বা
তার চেয়ে বেশি সময়ের দলিল সম্পর্কে আলোচনা করা
হয়েছে।
সাক্ষ্য আইনের ৯০ ধারা অনুযায়ী- ৩০ বছর বা তার
চেয়ে বেশি সময়ের দলিল আদালতে দাখিল করা হলে তা অন্যান্য দলিলের
ন্যায় সাক্ষী দ্বারা প্রমাণ করতে হয় না। কার হেফাজতে ছিল
শুধু তাই প্রমাণ করতে পারলেই হয়। এই অবস্থায় দলিলটি
আদালতে সাক্ষ্যরূপে প্রমাণে গৃহীত
হবে। সাধারণ
ব্যক্তিদের সুবিধার জন্য এই নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। কারণ
৩০ বছর পূর্বের ব্যক্তিদের বা তারও আগের ব্যক্তিদের জীবিত না-ও
পাওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ দীর্ঘদিন পর কোন দলিলের লিখন বা সম্পাদন প্রমাণ
কঠিন হয়ে যেতে পারে। উপরোক্ত আলোচনায় ৩০ বছর বা তার
চেয়ে বেশি সময়ের দলিলকে পুরাতন দলিল হিসেবে গণ্য
করা যেতে পারে।