- Get link
- X
- Other Apps
How Vaccine Works in our Body. কিভাবে টিকা বা ভেকসিন আমাদের দেহে কাজ করে এটা কিভাবে সম্ভব
How it Works. What is Herd Immunity and how it saves millions of people of the world.
ব্রাইটন ইংলিশ বিডি পরিচালিত প্রোগ্রামে আপনাদের আমি শামীম সারোয়ার স্বাগত জানাচ্ছি। আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে-একটা টিকা বা ভ্যাকসিন কিভাবে আমাদের সুরক্ষা দেয়।
ভ্যাকসিন আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে প্যাথোজেন শনাক্ত ও আক্রমণ করার জন্য প্রশিক্ষিত করে তোলে
ইনফেকশন থেকে রক্ষা করার জন্য ভ্যাকসিন একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু কীভাবে তারা কাজ করে? খুব সাধারণভাবে বলতে গেলে ভ্যাকসিন আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে প্যাথোজেন শনাক্ত ও আক্রমণ করার জন্য প্রশিক্ষিত করে তোলে এবং এই ভিডিওতে আমি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই বিষয়টি তুলে ধরবো।
ইমিউন সিস্টেম হচ্ছে মলেকিউলস ও সেলের একটা বিস্ময়কর জটিল নেটওয়ার্ক
আমাদের ইমিউন সিস্টেম হচ্ছে মলেকিউলস ও সেলের একটা বিস্ময়কর জটিল নেটওয়ার্ক যাদের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। ইমিউন সিস্টেমের যে অংশকে ভ্যাকসিন প্রশিক্ষণ দেয় তাকে বলে অ্যাডাপটিভ ইমিউন সিস্টেম। এর প্রথম কাজ হলো আক্রমণকারীকে শনাক্ত করা এবং ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে মলিকুলার মার্কার নামক এন্টিজেন কে শনাক্ত করা, যে অ্যান্টিজেন সমস্ত প্যাথোজেন এর একটি অংশ।
বি সেলগুলি প্লাসমা সেলে পরিনত হয় এবং এন্টিবডি নামক প্রোটিন উৎপাদন শুরু করে
এন্টিজেনকে শনাক্ত করার পর ইমিউন সিস্টেমের অ্যাডাপটিভ অংশ তাকে প্রদত্ত আদেশ অনুযায়ী কাজ করা শুরু করে। বি সেলগুলি প্লাসমা সেলে পরিনত হয় এবং এন্টিবডি নামক প্রোটিন উৎপাদন শুরু করে, যেটা এন্টিজেন ও ভেভোসাইট নামক ইমিউন সিস্টেমের সাথে যুক্ত হয়ে অ্যান্টিবডি গঠন করেন ও প্যাথোজেনকে ধ্বংস করে। অ্যাডাপটিভ ইমিউন সিস্টেম কিলার টি সেল উৎপাদন শুরু করে। এই কিলার টি সেল গুলি প্যাথোজেন দ্বারা আক্রান্ত সেলগুলোক শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ভবিষ্যতে আবারও আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য এই অ্যাডাপটিভ ইমিউন সিস্টেমের একটা মেমোরি থাকে, এই মেমোরি থেকে দীর্ঘস্থায়ী মেমোরি নির্গত করে,যা সঠিক এন্টিবডি নিঃসরণ করার জন্য অপেক্ষায় থাকে- যদি একই ধরনের প্যাথোজেন কে আবার দেখা যায়। এটাকেই বলা হয় ইমিউনিটি।অ্যাডাপটিভ ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করার মাধ্যমে ভ্যাকসিন কাজ করে
অ্যাডাপটিভ ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করার মাধ্যমে ভ্যাকসিন কাজ করে এবং এভাবেই ইমিউনিটি তৈরি হয়। তারা এন্টিজেন কে নির্দেশ দেয় ইমিউন সিস্টেমকে ট্রেইনআপ করার জন্য। এতে করে ভবিষ্যতে রিয়েল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়।এরপর দেখা যাক- একটা ভ্যাকসিন এর ভিতরে কি ঘটে। বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিনের মধ্যে সবচেয়ে কমন যে ভ্যাকসিন সেটাকে বলা হয় লাইভ এটেনিউয়েটেড ভ্যাকসিন। এদের মধ্যে থাকে এমএমআর বা বিসিজি। জীবন্ত প্যাথোজেনের দুর্বল ভার্শন শরীরে প্রবেশের মাধ্যমে লাইভ এটেনিউয়েটেড ভ্যাকসিন কাজ করে। এই এটেনিউয়েটেড ভ্যাকসিন হেলদি ইমিউন সিস্টেমের লোকদের দেহে রোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় না কিন্তু তারা শক্ত ইমিউন প্রদান করে। একই ধরনের মেমোরি সেল গঠন করার মাধ্যমে লাইভ এটেনিউয়েটেড ভ্যাকসিন রিয়েল ইনফেকশনের ক্ষেত্রে সঠিক ইমিউন রেসপন্স দিয়ে থাকে। তার মানে একটা বা দুইটা ডোজ নেওয়ার পর এটা সারাজীবনের জন্য সুরক্ষা দেয়।
সাব ইউনিট বা রিকম্বিনেন্ড ভ্যাকসিন
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ভ্যাকসিন হচ্ছে সাব ইউনিট বা রিকম্বিনেন্ড ভ্যাকসিন। তারা ভিন্ন ভাবে কাজ করে। লাইভ স্যাম্পল এর পরিবর্তে সাব ইউনিট ভ্যাকসিন এর মধ্যে থাকে প্যাথোজেন এর কিছু অংশ, উদাহরণস্বরূপ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি। তারা প্রোটিনে তৈরি ভাইরাসের কনা যেটা এইচপিভি তে দেখা যায়। এই সাব ইউনিট ভ্যাকসিন গুলি একাকী ইমিউন সিস্টেম কে মজবুত করতে পারে না। যার কারণে তাদের অন্য ধরনের উপাদান এর সাহায্য নিতে হয়। যেটাকে অ্যাডজুভেন্ট বলে। অ্যাডজুভেন্ট ইমিউন সিস্টেমকে জাগ্রত করে সাব ইউনিট এন্টিজেন এর সাথে মোকাবেলা করায়। তখনই তৈরি হতে থাকে এন্টিবডি ও মেমোরিসেল। সাব ইউনিট ভ্যাকসিনে লাইভ প্যাথোজেন থাকে না ফলে জেনেটিক ইনফর্মেশন না থাকার কারণে নিজের মতো আরো ভ্যাকসিন এর জন্ম দিতে পারে না। এরা দুর্বল সিস্টেমের লোকদের জন্য প্রযোজ্য। ভালো কিন্তু এরা সাধারণত লাইভ এটেনিউয়েটেড এর ভ্যাকসিন এর মত মেমোরি সেল বের করতে সক্ষম হয় না এবং এ কারণেই দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে পারেনা।হার্ড প্রটেকশন বা হার্ড ইমিউনিটি
ভ্যাক্সিনেশন দ্বারা ইমিউন সিস্টেমকে ট্রেইনিং দেওয়ার মাধ্যমে রোগের সংক্রমণ থেকে ব্যক্তি কে রক্ষা করা হয়। ভ্যাকসিনে সুরক্ষিত করে তাদেরও যারা ভ্যাকসিন নেয় না। এটাকে বলা হয় হার্ড প্রটেকশন বা হার্ড ইমিউনিটি। হার্ড ইমিউনিটি গঠিত হয় যখন জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ একটা রোগের ইমিউনিটি গ্রো করে। এটা সংরক্ষণের চেইন বা ধারাবাহিকতাকে বিঘ্নিত করে। যেহেতু আক্রমণ করার মতো নতুন কোনো হোস্টকে খুঁজে পায়না, আর এ কারণে প্যাথোজেন বেঁচে থাকতে পারে না। তার মানে যদি একটি প্যাথোজেন কাউকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে যে অলরেডি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে এবং দেহে ইমিউনিটি বিদ্যমান আছে, তখন এটা মৃত্যুবরণ করে এবং এর আক্রমণের ধারাবাহিকতা ভেঙে যায়। যদি একটা জনসংখ্যার মধ্যে সংক্রমনের এই ধারাবাহিকতা ক্রমাগত ভেঙে চলতে থাকে, তখন এইটা প্যাথোজেনের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায় তার কাছে যেতে, যার দেহে ভ্যাকসিন বা ইমিউনিটি নেই। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষকে হার্ড ইমিউনিটি রক্ষা করে। কিন্তু যদি ভ্যাকসিনেশনের হার হ্রাস পায় তখন রোগটি আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা থেকে যায়। যেমন 2000 সালে হামকে নির্মূল করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রে যখন দাবি করা হয়েছিল, তখন থেকেই ভ্যাকসিনেশনের হার হ্রাস পাবার কারণে এই রোগটির আবার সংক্রমণ হতে দেখা যায় এবং ৩১ টি স্টেটে হামের মহামারী দেখা দেয়।
যদি হার্ড ইমিউনিটি দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষা করা যায়, শুধুমাত্র তখনই রোগটি সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ গুটিবসন্ত যেটা বিংশ শতাব্দীতে প্রায় 30 কোটি লোকের মৃত্যু ঘটিয়ে ছিল কিন্তু এটা এখন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত বলে ধরা হয় যা ভ্যাক্সিনেশন, ট্রেনিং এবং বিস্ময়কর হার্ড ইমিউনিটি দ্বারা সম্ভব হয়েছে।
ধন্যবাদ
Shameem Sarwar
Shameem.sarwar@yahoo.com